Monday, April 17, 2023

চার শতাব্দী পুরোনো মসজিদ : বরুণা বড়ো জামে মসজিদ

হাবীব হুবায়বী

মসজিদ হলো আল্লাহর নিকট সবচেয়ে প্রিয় ও পবিত্র জায়গা। পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায়সহ মুসলমানরা মসজিদে বিভিন্ন ইবাদত বন্দেগি, যিকির আযকার করে থাকেন। মসজিদ যে শুধু ইবাদতের জায়গা— এমন নয়, এটি ইসলামি সমাজের একটি প্রতিচ্ছবিও। তাছাড়া প্রাচীন স্থাপত্যশৈলীর মসজিদগুলো শতাব্দীর পর শতাব্দী ইসলামি ঐতিহ্য বহন করে আসছে। এমনই একটি প্রাচীন মসজিদ হলো বরুণা মসজিদ। ঐতিহাসিক স্থাপত্যে নির্মিত চারশো বছরের পুরোনো ‘বরুণা বড়ো জামে মসজিদ’।

অবস্থা ও অবস্থান

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার কালাপুর ইউনিয়নের বরুণা গ্রামে অবস্থিত এই মসজিদটির নাম ‘বরুণা বড়ো জামে মসজিদ’। প্রায় ষাট শতাংশ জায়গায় নির্মিত মসজিদটির উপরে তিনটি দৃষ্টিনন্দন গম্বুজ রয়েছে। গম্বুজ ছাড়াও এর বিভিন্ন দিকের কারুকাজ দর্শনার্থীদের মন কাড়ে। এই স্থাপত্যের অবকাঠামো নির্মাণে পোড়ামাটি, চুন ও ইট ব্যবহার করা হয়েছে। বারান্দায় কাঠের উপর টিনের ছাউনি— যা মূল ভবনের সঙ্গে পরবর্তীতে সংযুক্ত করা হয়েছে বলে জানান মুসল্লিরা। অবাক করা বিষয় হলো— মসজিদটি নির্মাণে কোনো রড ব্যবহার করা হয়নি।

মসজিদ পরিচালনা কমিটির একজন সদস্য ফাতেহকে জানান, এই মসজিদটিতে কোনো রড ব্যবহার করা হয়নি। মসজিদটির দৈর্ঘ্য প্রায় ৭০ ফুট, প্রস্থ ৫৫ ফুট, আর দেয়াল ৩-৪ ফুট প্রশস্ত। পুরোটাই চুন-সুরকি দ্বারা তৈরি করা হয়েছে। তিনি বলেন— ‘ভিতরে কুরআন শরিফ রাখার কয়েকটি খোপও রয়েছে। রয়েছে মোমবাতি রাখারও খোপ। প্রত্যেক গম্বুজের ভিতরে গোল অংশে নান্দনিক কারুকাজ। তাছাড়া গম্বুজের উপরের অংশ বেশ বড়, যা এখন সবুজ রং করে রাখা হয়েছে।

স্থাপত্যকাল

এটি কতো আগের মসজিদ? কেই বা নির্মাণ করলেন? এর কোনো সঠিক তথ্য স্থানীয়দের কাছে নেই। তবে মসজিদের প্রধান ফটকে আবছা করে একটি সন লেখা রয়েছে। এর দ্বারা বুঝা যায়, ১৫৯৩ ঈসায়ি সনে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়। এলাকার মাদ্রাসা পড়ুয়া ছাত্র রায়হান রাহিমী ফাতেহকে বলেন— ‘এই মসজিদটির স্থাপত্য সম্পর্কিত সঠিক কোনো তথ্য আজ অবদি পাওয়া যায়নি। কিন্তু অনেকেই ধারণা করেন মসজিদটি গায়েবি। যা আদৌ সত্য নয়।’ তিনি জানান, এরশাদ সরকারের আমলে একজন প্রকৌশলী পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানতে পারেন, আনুমানিক চারশো বছর পূর্বে মসজিদটি স্থাপিত হয়। রায়হান ফাতেহকে বলেন— ‘মসজিদটি এখনো অনেক মজবুত। প্রায়ই দূর দুরান্ত থেকে দর্শনার্থীরা এখানে ছুটে আসেন।’

ভেতরে এসি না থাকলেও গরম নেই একটুও

চার শতাব্দি পুরোনো এই মসজিদটিতে প্রবেশের জন্য তিনটি দরজা, উভয় পাশে দুটি জানালা রয়েছে। এখানে প্রায় সাতশো জন মুসল্লি একসাথে নামাজ আদায় করতে পারেন। বিগত আট-নয় বছর পূর্বে মসজিদের সামনের প্রাচীর এবং প্রাচীরের উপরে থাকা মিনারটি ভেঙে পড়ে। অতঃপর ২০১৬ সালে প্রবেশপথে মসজিদ কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে প্রায় পঞ্চাশ ফুট লম্বা নয়নাভিরাম মিনার নির্মাণ করা হয়। তাছাড়া সামনের প্রাচীর সরিয়ে সেখানে মসজিদ থেকে একই বাউন্ডারিতে স্থাপিত হয়েছে ঈদগাহ মাঠ। যেখানে প্রায় দুই থেকে আড়াই হাজার মুসল্লি একসাথে ঈদের নামাজ আদায় করতে পারেন। চারশো বছর পূর্বের পুরোনো এই মসজিদটিতে নামাজ আদায় করতে কেমন লাগে? প্রশ্ন করলে একজন মুসল্লি বলেন— ‘মসজিদের ভেতর সব সময় ঠান্ডা থাকে। ভেতরে কোনো এসি না থাকলেও এমন মনে হয় যে এসির নিচে দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ছি।’

The post চার শতাব্দী পুরোনো মসজিদ : বরুণা বড়ো জামে মসজিদ appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%9a%e0%a6%be%e0%a6%b0-%e0%a6%b6%e0%a6%a4%e0%a6%be%e0%a6%ac%e0%a7%8d%e0%a6%a6%e0%a7%80-%e0%a6%aa%e0%a7%81%e0%a6%b0%e0%a7%8b%e0%a6%a8%e0%a7%8b-%e0%a6%ae%e0%a6%b8%e0%a6%9c%e0%a6%bf%e0%a6%a6/

Sunday, April 9, 2023

যেমন ছিলেন অধ্যাপক মাওলানা জোবায়ের আহমদ চৌধুরী

যুবাইর ইসহাক

অধ্যাপক মাওলানা জোবায়ের আহমদ ছিলেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির ও বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়ার সাবেক মহাপরিচালক। লেখাপড়া করেছেন কওমি ও জেনারেল ধারায়। শিক্ষকতাও করেছেন উভয় ধারাতেই। এক বর্ণাট্য জীবন শেষে শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মাওলানা জোবায়ের আহমদ গত শুক্রবার সাত এপ্রিল ইফতারের মুহূর্তে ইন্তেকাল করেন।

জন্ম

অধ্যাপক জোবায়ের আহমদ চৌধুরী ১৯৫০ সালের ১ ডিসেম্বর মৌলভীবাজার শহরের শাহ মোস্তফা রোডস্থ বাসায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম মাওলানা আবদুর নূর। তিনি প্রখ্যাত আলেম ও শায়খে কৌড়িয়ার বিশিষ্ট খলিফা ছিলেন।
তার মাতা কারী রুহেলা খানম চৌধুরী।

শিক্ষা

অধ্যাপক জোবায়ের আহমদ পিতার কাছে ১৯৬৬ সালে মৌলভীবাজারের আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদরাসায় প্রাথমিক শিক্ষা অর্জন করেন।
পরবর্তীতে ঢাকার আশরাফুল উলূম মাদরাসা, জামেয়া কুরআনিয়া লালবাগ মাদরাসা ও জামিয়া হোসাইনিয়া আরাবিয়া গহরপুর মাদরাসায় লেখাপড়া করেন। ১৯৭২ সালে জামেয়া আনোয়ারুল উলুম বরুণা মাদরাসা থেকে ১ম স্থান অধিকার করে দাওরায়ে হাদিস সম্পন্ন করেন। পাশাপাশি সোনামুড়ি আলিয়া মাদরাসা থেকে কামিল সমাপ্ত করেন।

কর্মজীবন

অধ্যাপক জোবায়ের আহমদ কর্মজীবনে বহু মাদরাসায় শিক্ষকতা করেছেন। লেখাপড়া সমাপ্ত করে, ১৯৭৩ সালে নেত্রকোনার মৌ মাদরাসার মধ্য দিয়ে তার শিক্ষকতা শুরু হয়। ১৯৭৫ সালে মৌলভীবাজার ডিগ্রী কলেজে ইসলামিয়াত ও ইসলামিক হিস্ট্রি বিভাগে অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। ১৯৯০ সালে মৌলভীবাজার জামেয়া দ্বীনিয়া মাদরাসা প্রতিষ্ঠায় অংশ নেন। তিনি সেখানে সদরুল মুহাদ্দীস ছিলেন। ১৯৯৫ সালে বর্ষিজোড়ায় হাফিজিয়া মদীনাতুল উলুম প্রতিষ্ঠা করেন, ১৯৯৭ সাল থেকে এই মাদরাসায় অধ্যক্ষ হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এ ছাড়া তিনি কমলগঞ্জের জামিয়া ইসলামিয়া দারুল হাদিস মুন্সিবাজারের শায়খুল হাদিস হিসেবেও কর্মরত ছিলেন।

২০১৪ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের সহকারি মহাপরিচলকের দায়িত্বে ছিলেন। ২০১৬ সালে বেফাকের মহাপরিচালক হিসেবে নিয়োগ হন, ২০২২ সাল পর্যন্ত এ দায়িত্ব পালন করেন।

রাজনীতি

অধ্যাপক মাওলানা জোবায়ের আহমদ ছাত্রজীবনে জমিয়তে তোলাবায়ে আরাবিয়ার সাথে জড়িত ছিলেন। ১৯৮৯ সাল থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত খেলাফত মজলিসের মৌলভীবাজার জেলা সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৭ সালের দিকে কেন্দ্রীয় কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হন। ২০২১-২২ সেশনে দলের সিনিয়র আমির হিসেবে দায়িত্ব লাভ করেন। ২০২৩ সালে খেলাফত মজলিসের আমির নির্বাচিত হন, আমৃত্যু এই দায়িত্ব পালন করেন।

পরিবার

অধ্যাপক জোবায়ের আহমদ চৌধুরী ১৯৭৬ সালে বর্ষিজোড়া টিলাবাড়ির ডা: মাওলানা আ.ফ.ম আবদুল বারীর কন্যার সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পর ফুফাতো বোনের সঙ্গে তার দ্বিতীয় বিবাহ হয়। সাংসারিক জীবনে তিনি চার ছেলে-তিন মেয়ের বাবা।

রচনা

মাওলানা জোবায়ের আহমদ ইসলামী ফাউন্ডেশন বাংলাদেশে তাফসীর গবেষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ইফা থেকে প্রকাশিত তারযুমানুস সুন্নাহ ২য় খণ্ডের অনুবাদ করেন। তাছাড়া তিনি ইসলামী বিশ্বকোষের একজন অনুবাদ ও নিবন্ধকার ছিলেন।

কেমন ছিলেন তিনি

বেফাকের সহকারী মহাপরিচালক মাওলানা মুহাম্মদ যোবায়ের ফাতেহকে জানান, ‘অধ্যাপক জোবায়ের আহমদ পরিচালক হিসেবে অত্যন্ত দক্ষ ছিলেন। অফিসের সবগুলো শাখায় তার জানাশোনা ছিল। আমি তাকে অল্প দিন পেয়েছি। অফিসিয়াল কাজে তার মধ্যে দক্ষতার কোন ঘাটতি ছিল না।’

খেলাফত মজলিস মৌলভীবাজার জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা জিয়া উদ্দীন ফাতেহকে বলেন, ‘মাওলানা জোবায়ের আহমদ ছিলেন বিচক্ষণ,শিক্ষাবিদ, নীতিতে অটল। কোনো অনিয়ম মেনে নিতে পারতেন না। তার জীবন যাপন ছিল খুব সহজ, স্বাভাবিক। সহজে তার সঙ্গে মেশা যেত। কোনো বিষয়ে আলোচনা করা যেত।সাংগঠনিক হিসেবে কর্মঠ, কর্মীবান্ধব ও আন্তরিক ছিলেন।

মাওলানা জোবায়ের আহমদ চৌধুরীর ছাত্র মাওলানা ইয়াহইয়া মাহমুদ জানান, ‘আমাদের উস্তাদ সদালাপী ও আন্তরিক ছিলেন। সহজে আপন করে নিতেন যে কাউকে। শিক্ষক হিসেবে দক্ষ ও যোগ্য ছিলেন। তার প্রতিভা ছিল বহুমূখী, সফল সংগঠক, দক্ষ রাজনৈতিক ও যোগ্য শিক্ষক। তার আচরণে বংশীয় আভিজাত্য প্রকাশ পেত।’

মাওলানা জোবায়ের চৌধুরীর ছেলে ইমতিয়াজ আহমদ চৌধুরী মুরাদ ফাতেহকে বলেন, ‘আমাদের বাবা সদাসর্বদা দ্বীনের প্রতি উৎসর্গিত ছিলেন। হাদীস কীভাবে সহজে মানুষ বুঝতে পারে, এ চেষ্টা করেতেন। হাদীসের উপর একটি গবেষণাগ্রন্থ তৈরি করেছিলেন, যা প্রকাশ করে যেতে পারেন নি।

‘পিতা হিসেবে আমরা তাকে আদর্শবান পেয়েছি। তিনি আমাদেরকে ন্যায়পরায়ণতা, সত্যের উপর অটলতার শিক্ষা দিতেন। ব্যক্তিজীবনে প্রচারবিমুখ ছিলেন। বাসায় এলে আমাদের সময় দিতেন। দূরে থাকলেও নিয়মিত খোঁজ নিতেন।’

জানাজা ও দাফন

৮ এপ্রিল বিকেল তিনটায় মৌলভীবাজার সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অধ্যাপক মাওলানা জোবায়ের আহমদ চৌধুরীর নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। জানাযা শেষে তাকে বর্ষিজোড়া টিলাবাড়ি পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

The post যেমন ছিলেন অধ্যাপক মাওলানা জোবায়ের আহমদ চৌধুরী appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%af%e0%a7%87%e0%a6%ae%e0%a6%a8-%e0%a6%9b%e0%a6%bf%e0%a6%b2%e0%a7%87%e0%a6%a8-%e0%a6%85%e0%a6%a7%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%aa%e0%a6%95-%e0%a6%ae%e0%a6%be%e0%a6%93%e0%a6%b2%e0%a6%be/

Wednesday, April 5, 2023

কেমন ছিলেন মুফতি নূর আহমদ

যুবাইর ইসহাক

মুফতি নূর আহমদ ছিলেন দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদরাসার মুহাদ্দিস ও প্রধান মুফতি। তিনি মুফতি আযম ফয়জুল্লাহ ও মুফতি আহমাদুল হকের সাহচর্য পেয়েছেন। হাটহাজারী মাদরাসায় শিক্ষকতা করেছেন দীর্ঘ ৩৮ বছর। একটি কর্মব্যস্ত জীবন শেষে গত ৩১ মার্চ শুক্রবার ভোররাতে মহান প্রভুর ডাকে সাড়া দিয়ে পরপারে পাড়ি জমান।

জন্ম

মুফতি নূর আহমদ চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার চেছুরিয়া গ্রামের চৌধুরীপাড়ায় ১৯৩৮ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা আবদুস সামাদ ও মাতা আরেফা খাতুন।

লেখাপড়া 

মুফতি নূর আহমদ চার বছর বয়সে মাওলানা আবদুল মালেক রহ. -এর কাছে লেখাপড়ার হাতেখড়ি করেন। প্রাথমিক শিক্ষা সমাপ্তের পর ১৩৭১ হিজরিতে হাটহাজারী মাদরাসায় ‘কানয’ জামাতে ভর্তি হন। হাটহাজারীতে তিনি ‘কানয’ জামাত থেকে ‘দাওরায়ে হাদীস’ পর্যন্ত লেখাপড়া করে। সেসময় মুফতি আযম ফয়জুল্লাহ, মুফতি আযমে সানি আহমদুল হকসহ প্রসিদ্ধ ও জ্ঞানী আলেমের কাছ থেকে ইলম অর্জন করেন। ১৯৬০ সালে হাটহাজারী মাদরাসা থেকে তার দাওরায়ে হাদীস সমাপ্ত হয়।

কর্মজীবন

দাওরা ও তাফসির সমাপ্ত করে হাটহাজারী মাদরাসায় খেতমতের মধ্য দিয়ে তার কর্মজীবন শুরু হয়। কর্মজীবনের পাশাপাশি তখন তিনি ইফতার তামরিনও করতেন।
১৯৬৪ সালে মুফতি ফয়জুল্লাহ নির্দেশে মাহমুদিয়া মদিনাতুল উলূম বাথুয়া মাদরাসায় শিক্ষকতা শুরু করেন। ১৯৬৪ সাল থেকে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত ২০ বছর বাথুয়া মাদরাসায় শিক্ষকতা করেছেন। ১৯৮৪ সালে পুনরায় হাটহাজারী মাদরাসায় মুফতি ও মুহাদ্দিস পদে নিয়োগ হন। সে থেকে পরবর্তী ৩৮ বছর হাটহাজারীতে শিক্ষক হিসেবে ছিলেন। এ সময় তিনি ফতোয়া বিভাগের প্রধান মুফতি, শিক্ষাসচিব, কোষাধ্যক্ষসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন।

রচনা

মুফতি নূর আহমদ বিভিন্ন মাসয়ালার সমাধানের উপর অনেক ফতোয়া লিখেছেন। তাছাড়া সমকালীন অনেক ভ্রান্ত মতবাদ ও ধর্মীয় বিভিন্ন প্রসঙ্গে প্রায় ত্রিশটি গ্রন্থ রচনা করেছেন। উর্দু ভাষায় ছয়খণ্ডে সংকলিত ফতোয়া সমগ্র ‘আশরাফুল ফতাওয়া’ তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ।

পরিবার

মুফতি নূর আহমদ মাহমুদিয়া মদিনাতুল উলূম বাথুয়া মাদরাসায় শিক্ষক থাকাকালীন হাটহাজারী মাদরাসার সাবেক মুহতামিম মাওলানা হামেদ রহ.-এর মেয়ের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের পরিবারে ৪ ছেলে ও ৫ মেয়ে জন্ম গ্রহণ করেন।

কেমন ছিলেন তিনি

মাওলানা আশরাফ আলী নিজামপুরী বলেন, ‘হুজুর সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত শব্দ বলা সম্ভব নয়। তিনি সাধাসিধে দরবেশী জীবন যাপন করেছেন। জ্ঞানে তার গভীরতা ছিল। ব্যক্তি জীবনে ছিলেন অত্যন্ত একনিষ্ঠ।’

মুফতি নূর আহমদের ছেলে মাওলানা মঞ্জুর আহমদ জানান, ‘আব্বা প্রচুর ব্যস্ততার ভেতরেও পরিবারকে সময় দিতেন। ছেলেমেয়েদের শাসনের প্রয়োজন হলে হেকমতে বুঝাতেন। তিনি সরল মানুষ ছিলেন, মনে হিংসা-বিদ্বেষ ছিল না। সবসময় আত্মীয়স্জবনের খোঁজ নিতেন। ছুটিতে গ্রামে গেলে সহজে সবার সঙ্গে মিশতেন।
সাধারণত তার তাহাজ্জুত ছুটতো না। শেষের তিন বছর খুব অসুস্থ ছিলেন। এই অসুস্থতার ভেতরও তাহাজ্জুদ ও সুন্নতের প্রতি যত্মবান ছিলেন তিনি।’

হাটহাজারী মাদরাসার ইফতার ছাত্র মাওলানা আবদুর রহমান জানান, ‘হুজুর শেষদিকে এসে খুব বেশি ক্লাস নিতে পারেন নি। আমরা তার রুমে গিয়ে দরস করতাম। তিনি বাহরুল উলুম নামে প্রসিদ্ধ ছিলেন। উর্দুতে দরস দিতেন। তার দরস কেবল কিতাবে সীমাবদ্ধ থাকতো না। বরং পাশাপাশি অনেক প্রসঙ্গিত আলোচনা করতেন। আমল আখলাকের প্রতি উদ্বুদ্ধ করতেন।’

মুফতি নূর আহমদ অসংখ্য ছাত্র ও ভক্ত রেখে গেছেন। শুক্রবার বাদ আসর হাটহাজারী মাদরাসার মাঠে তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। নামাজে জানাজা শেষে তার লাশ হাটহাজারী মাদরাসার কবরস্থান ‘মাকবারায়ে জামেয়ায়’ দাফন করা হয়।

The post কেমন ছিলেন মুফতি নূর আহমদ appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%95%e0%a7%87%e0%a6%ae%e0%a6%a8-%e0%a6%9b%e0%a6%bf%e0%a6%b2%e0%a7%87%e0%a6%a8-%e0%a6%ae%e0%a7%81%e0%a6%ab%e0%a6%a4%e0%a6%bf-%e0%a6%a8%e0%a7%82%e0%a6%b0-%e0%a6%86%e0%a6%b9%e0%a6%ae%e0%a6%a6/

Friday, March 24, 2023

হুমকির মুখে মুসলমানদের প্রথম পাঠশালা : হারিয়ে যাচ্ছে মক্তবের ঐতিহ্য

হাবীব হুবায়বী

ন্যূনতম দ্বীনের জ্ঞান রাখেন এমন ব্যক্তিকে যদি প্রশ্ন করা হয়, বাংলাদেশে ‘কুরআন শেখার প্রাথমিক পাঠশালা কোনটি?’ নিশ্চয়ই তিনি উত্তর দেবেন, ‘সকালের মক্তব’। ছোট ছোট ছেলে-মেয়ের সহিহ শুদ্ধ করে কুরআন তেলাওয়াত শেখার পাশাপাশি শরিয়তের মৌলিক বিষয়াদি সম্পর্কে প্রাথমিক জ্ঞান লাভের কারখানা হলো ভোরের এই পাঠশালা।

মক্তবের গুরুত্ব

মক্তব থেকে শিশুরা নামাজ রোজার নিয়ম-কানুন, হালাল হারামের ভেদাভেদ, শরিয়তের জরুরি মাসায়িল এবং বিভিন্ন দুয়া কালাম শিখতে পারে। নিকট অতীতেও বাংলার প্রায় প্রতিটি পাড়ামহল্লায় সবাহি মক্তবের ব্যাপক চর্চা ছিল। বাংলার পথে-ঘাটে ভোরের পাখিদের সঙ্গে মক্তবগামী কুরআনের পাখিদের দেখা মিলত। মসজিদের মুসল্লায় বসে মাথা দুলিয়ে দুলিয়ে তারা জপত— বা, অর্ধ বা, যুক্ত বা…

হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যের অবিচ্ছেদ্য ধারা

দুঃখের বিষয় হলো, ধর্মীয় ঐতিহ্যের ধারক ভোর সকালের এসব মক্তব ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে অনেক মসজিদে এমনিতেই মক্তবগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। আবার কোনো কোনো মসজিদে যা-ও চালু আছে, সেগুলোতেও আগের মতো জৌলুশ নেই। শিশুদের উপস্থিতি নেই বললেই চলে। নামেমাত্র চলছে সেগুলো। এক্ষেত্রে অভিভাবকদের অবেহলাসহ নানান কারণ উল্লেখ করেছেন মসজিদের ইমাম সাহেবগণ। ফাতেহের কাছে তুলে ধরেছেন নিজেদের অভিজ্ঞতার কথা।

মক্তব কেন জৌলুস হারাচ্ছে?

একসময় মসজিদে মক্তব পড়তে আসত শত-শত ছাত্র, আধুনিক কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলোর কারণে আজ সেই মসজিদের বারান্দায় দু-চারজন শিশু রেহাল নিয়ে বসে আছে। চিত্রটি বাংলাদেশের চায়ের রাজধানী খ্যাত শ্রীমঙ্গল শহরের একটি মসজিদের। মসজিদের ইমাম মাওলানা আব্দুর রব ফাতেহকে জানান, ‘গত সাত আট বছর আগেও মসজিদের বারান্দায় ছাত্রদের জায়গা দেওয়া সম্ভব হতো না। ছাত্র সংকুলানের জন্য বাইরে কার্পেট বিছানো লাগত। কিন্তু বিগত চার পাঁচ বছরে ছাত্র সংখ্যা কমতে কমতে এই আটজনে এসে ঠেকেছে।’

মাওলানা আব্দুর রব বিগত দেড় যুগ ধরে এই মসজিদে ইমামতি করছেন। পাশাপাশি একটি এতিমখানার দায়িত্বে আছেন তিনি। দিনদিন বাচ্চাদের মক্তববিমুখ হওয়ার পেছনের কারণ জানতে চাইলে তিনি বললেন— ‘বাচ্চাদেরকে আধুনিক করতে অভিভাবকদের বেপরোয়া অভিপ্রায়ই মূলত এর জন্য দায়ী। যে বাচ্চার ঘুম থেকে উঠে মক্তবে আসার কথা ছিল, তাকে তারা কিন্ডারগার্টেন স্কুলে পাঠাচ্ছেন। সুতরাং সে মক্তববিমুখ হবে, এটা তো স্বাভাবিক।’

দায়ী স্কুলের মর্নিং শিফটও

মাওলানা আব্দুর রব মনে করেন— কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলোতে মর্নিং শিফট চালু হওয়ার পর থেকেই মক্তবগুলো জৌলুশ হারাচ্ছে। শিশুরা ধর্মীয় প্রয়োজনীয় ইলম-কালাম শেখা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। যে শিশু ঘুম থেকে উঠে নিজে অজু করে মক্তবে যেত, তাকে জোর করে ঘুম থেকে তোলে গোছগাছ করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে স্কুলে। শিশিরভেজা মেঠোপথ অথবা ধুলিউড়া সড়ক মাড়িয়ে এখন কেউ মক্তবে যায় না, কথা বলতে শেখার আগেই পাঠিয়ে দেওয়া হয় স্কুলে। বাচ্চাদের বুকে দ্বীনি জ্ঞান প্রবেশের আর সুযোগ হয়ে ওঠে না।

অভিভাবকদের অবহেলা

ফাতেহের প্রতিনিধি শ্রীমঙ্গল শহরের আরো কয়েকটি মসজিদ পর্যবেক্ষণ করেন। হবিগঞ্জ রোডস্থ অনেকগুলো মসজিদ থেকে সাবাহি মক্তবের প্রচলন উঠে গেছে। অভিভাবকদের অবহেলার কারণে মসজিদের ইমাম সাহেবরা এখন মক্তবে কুরআন পড়ানোর আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন বলে উল্লেখ করেছেন শ্রীমঙ্গলের হবিগঞ্জ রোডস্থ পিজিসিবি মসজিদের ইমাম। তিনি ফাতেহকে জানান, সকালের মক্তবে একজন দুজন ছাত্র আসে, তা-ও কোনোদিন আসে না। হুজুরকে বসে থাকতে হয়।

মক্তবে ছাত্র আসে না বা আসতে চায় না কেন? এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন— ‘বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে এখন অভিভাবকেরা কঁচিকাঁচা শিশুদের মক্তবে পাঠাতে চান না। তাছাড়া সকালে ঘুম থেকে উঠে বাচ্চাদের স্কুলের কোচিং অথবা ক্লাসের সময় হয়ে যায়, ফলে তার আর মক্তব পড়া হয় না।’

মক্তব হারালে ক্ষতি কী?

শুভ্র-শান্ত সকালটাকে গিলে ফেলেছে আধুনিক শিক্ষার নামে নানান প্রতিষ্ঠান। দ্বীনি ঐতিহ্যবাহী প্রাক প্রাথমিক এ পাঠশালাগুলো যদি এভাবে হারিয়ে যেতে থাকে, তাহলে ইসলামের বুনিয়াদি শিক্ষার ঐতিহ্যগত প্রতিষ্ঠান চিরতরে বন্ধ হয়ে যাবে। এই ব্যাপারে মাওলানা আব্দুর রব বলেন, ‘যদি মক্তব এভাবে তার জৌলুশ হারাতে থাকে, তাহলে এর প্রভাবে মুসলমানদের মাঝে ধর্মীয় জ্ঞানশূন্য একটি বিশাল জনগোষ্ঠী তৈরী হবে।’

দ্বীনের সামান্যতম জ্ঞান না থাকায় একসময় মুসলিম ছেলেমেয়েরা ঈমান হারাও হতে পারে বলে মনে করেন তিনি।

এই সংকট থেকে পরিত্রাণের উপায় জানতে চাইলে এই ইমাম বলেন— ‘সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, দায়িত্ববান অভিভাবকদের সঙ্গে পরামর্শ করে প্রভাতি মক্তবগুলো জমজমাট রাখার ব্যবস্থা করা। এবং যেই মক্তবগুলো বন্ধ হয়ে গেছে সেগুলোও চালু করা। পাড়ায় পাড়ায় নতুন নতুন সাবাহি মক্তব প্রতিষ্ঠা করা।’

বঙ্গ দেশে ইসলাম ওলী-দরবেশদের মাধ্যমে এলেও ইসলামের প্রচার প্রসারের ক্ষেত্রে মক্তব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। সত্যিকার অর্থে একজন ভালো মানুষ তৈরীর জন্য মক্তব চালু করার বিকল্প নেই। নৈতিক মূল্যবোধ মানুষের মধ্যে গড়ে তোলার পেছনে মক্তব শিক্ষা বিশেষ ভূমিকা পালন করে। সহজেই সুহ্রদয় দিয়ে সকল প্রতিবন্ধকতার সহজ সমাধান করে মক্তবগুলো আবার আমরা চালু করতে পারি। এতে সমাজের সকল শ্রেণীর শিশুদের জন্য দ্বীনি শিক্ষার বুনিয়াদ গড়ে ওঠবে। আবারও পাড়ামহল্লায় ছোট ছোট শিশুর কন্ঠে কুরআনের ধ্বনি উচ্চারিত হবে। তারা পাবে একটি সুন্দর দ্বীনি পরিবেশ। একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যত। মক্তব বেঁচে থেকে বাঁচিয়ে দেবে আমাদের ঈমান, আদর্শ, আত্মগৌরব।

The post হুমকির মুখে মুসলমানদের প্রথম পাঠশালা : হারিয়ে যাচ্ছে মক্তবের ঐতিহ্য appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%b9%e0%a7%81%e0%a6%ae%e0%a6%95%e0%a6%bf%e0%a6%b0-%e0%a6%ae%e0%a7%81%e0%a6%96%e0%a7%87-%e0%a6%ae%e0%a7%81%e0%a6%b8%e0%a6%b2%e0%a6%ae%e0%a6%be%e0%a6%a8%e0%a6%a6%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%aa/

Sunday, March 19, 2023

রমজানে তারাবি পাচ্ছেন না হাফেজগণ

যুবাইর ইসহাক

দরজায় কড়া নাড়ছে রমজান। এ সময়ে অন্যদের মতো হাফেজদেরও ব্যস্ততা বেড়েছে। তাদের অনেকে তারাবির জন্য মসজিদ ঠিক করছেন, তারাবির প্রস্তুতি নিচ্ছেন।  রমজানের তারাবি হাফেজদের জন্য সুবর্ণ সুযোগ। তারাবির মাধ্যমে হাফেজরা সারা বছরের তেলাওয়াতের ঘাটতি কাটিয়ে ওঠেন।

তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অনেক হাফেজ তারাবি পাচ্ছেন না। আগে তারাবি পড়ালেও বর্তমানে তারাবির বাইরে থেকে যাচ্ছেন তারা। হাফেজদের তুলনায় পর্যাপ্ত মসজিদে খতমে তারাবি না হওয়ার পাশাপাশি স্বজনপ্রীতিসহ নানান কারণ উল্লেখ করেছেন হাফেজগণ। ফাতেহের কাছে তুলে ধরেছেন ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা।


কেন তারাবি হচ্ছে না?

হাফেজ মাওলানা মামনূন মারজান। বর্তমানে কওমি ধারার উচ্চমাধ্যমিক স্তরের একটি মাদরাসায় শিক্ষকতা করছেন। হিফজ শেষ করেছেন ১২ বছর আগে। এরপর থেকে নিয়মিত খতমে তারাবি পড়িয়ে আসছিলেন। কিন্তু দুই হাজার বিশ ও বাইশ সালে তার তারাবির পড়ানো হয় নি। এবার এখনো তারাবির ব্যাপারে নিশ্চিত নন।

তারাবি না হওয়া প্রসঙ্গে তিনি ফাতেহকে জানান, ‘আমাদের দেশে এখন হাফেজের সংখ্যা অনেক। প্রতি বছর নতুন অনেকে হিফজ শেষ করে বের হচ্ছেন। কিন্তু সে অনুপাতে মসজিদগুলোতে খতমে তারাবি হচ্ছে না। বিশেষ করে, করোনার পর সে সংখ্যা আরো কমে গেছে। আগে অনেক জামে মসজিদে খতমে তারাবি হলেও এখন তারা নিজেদের ইমাম দিয়ে সুরা তারাবি আদায় করেন।’

মামনূন মারজান সহজে তারাবির না পাওয়ার ব্যাপারে মসজিদ কমিটির সমস্যার কথাও উল্লেখ করেন। তিনি জানান, ‘ অনেক মসজিদে কমিটির  প্রভাবশালীরা নিজেদের পরিচিত হাফেজ রাখতে চান। কখনো এ নিয়ে তাদের মধ্যে মতবিরোধও দেখা দেয়। ফলে বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা থেকে বাঁচতে খতমে তারাবি বন্ধ হয়ে যায়।’

হাফেজ মাওলানা উবায়দুল্লাহ তাসনিম প্রতি বছর নতুন হাফেজ বের হচ্ছে, একে ইতিবাচক চিত্র হিসেবেই দেখেন। তবে তাদের তারাবি না হওয়ার পেছনে স্বজনপ্রীতিকে উল্লেখ করেন। তার মতে, তারাবি দিন দিন চাকরির বাজারের মতো হয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘প্রভাবশালী আত্মীয়-স্বজন না থাকলে যেমন চাকরি হয় না, এখন দেখা যাচ্ছে, আত্মীয়-স্বজন না থাকলে তারাবিও হয় না।’  বিপরীতে যাদের হচ্ছে, অনেক ক্ষেত্রেই তাদের সাপোর্টার অথবা আত্মীয়স্বজনের সুবাদে সুযোগ মিলছে।  মানে, ব্যাপারটা পুরো চাকরির বাজারে পরিণত হয়েছে।’ 

হাফেজ মাওলানা ফয়সল আহমদ হাফেজ বৃদ্ধির পাশাপাশি মসজিদের নিয়মিত ইমাম ও মুসল্লিদের অনীহার কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘অনেক ইমাম সাহেব মসজিদে খতমে তারাবি চান না। এতে রমজানে তার সুযোগ কমে যায়। অবশ্য এ সংখ্যা নগন্য। পাশাপাশি অনেক মসজিদে বৃদ্ধ মুসল্লিদের কথা ভেবে খতমে তারাবির আয়োজন করা হয় না। আবার কোনো কোনো দরিদ্র এলাকায় মুসল্লিগণের জন্য হাদিয়া দেওয়া কষ্টকর হয়ে পড়ে। তাই তারা খতমে তারাবি পড়তে চান না।’

হাফেজ জাকির সোহরাব হাফেজের আধিক্যতা ও স্বজনপ্রীতির পাশাপাশি কমিটির চাহিদার কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘কমিটির চাহিদা থাকে বেশি। দেখা যায়, বর্তমানে খুব ছোটবেলায় ছাত্ররা হিফজে ভর্তি হয়ে দশবারো বা তারচেয়েও কম বয়সে হাফিজ হয়ে যায়। এ বয়সে দাড়ি না থাকা বা গায়েগতরে একটু কমজোর হওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু এটা কমিটির প্রধান সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়।”হাফিজ সাহেব তো ছোট! দাড়ি নেই। পড়াতে পারবেন তো?” তারা আরো নানান যুক্তি দেখান।’

তারাবি না পড়ানোর ক্ষতি 

মাওলানা মারজান মনে করেন, তারাবি পড়ানোর ফলে সারা বছর নিয়মিত তেলাওয়াত না করায় যে ঘাটতি সৃষ্টি হয়, সেটা কাটিয়ে উঠা যায়। তারাবির জন্য প্রস্তুতি নিলে হিফজের দুর্বলতা কেটে যায়। বিপরীতে তারাবি না হলে  সে সুযোগ হয়ে উঠে না। ফলে হিফজ দুর্বল হতে থাকে। 

উবায়দুল্লাহ তাসনিম বলেন, ‘সবচে’ বড় সমস্যা আমার কাছে যা মনে হয়, তারাবি না হওয়ায় আমরা কুরআন নাজিলের মহিমান্বিত মাসেও কুরআন তিলাওয়াতের সাথে জুড়তে পারি না।  আলসেমি বা দুনিয়ার নানা জঞ্জালে পড়ে বলতে গেলে সারা বছর আমাদের কুরআন তিলাওয়াতের সাথে সম্পৃক্ততা থাকে না। রমজানই যা ভরসা। দেখা যায়, তারাবি না হলে এ মাসেও খুব একটা তেলাওয়াত হয় না’

ফয়সল আহমদ তেলাওয়াতের ঘাটতির পাশাপাশি সামাজিক তাচ্ছিল্যের বিষয়টিও উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘অনেক সময় যে হাফেজ সাহেবদের তারাবি হয় না, তাদেরকে সমাজে কিছুটা ছোট করে দেখেন।’

জাকির সোহরাবের মতে, ‘ মুখস্থ শক্তির হ্রাস পায়, এটি প্রধান সমস্যা। এক বছর তারাবি না পড়ালে কী পরিমাণ ক্ষতি হয়, তা পরবর্তী বছর তারাবি পড়াতে গেলে বুঝা যায়। হিফজ শেষ করে হাফিজ সাহেবরা কেউ কেউ কিতাব বিভাগে অধ্যায়নে যান। কেউ কেউ অন্যান্য পেশায় নিজেকে জড়িয়ে নেন। এ কারণে কোরআন শরিফের পেছনে প্রয়োজন অনুযায়ী মেহনত করা হয় না। এছাড়া তারাবি না হলে আশেপাশের লোকদের খোঁচানো, কটু কথায় রীতিমতো মানসিক অশান্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।’

সমাধান কি সম্ভব? 

মামনূন মারজান মনে করেন, প্রত্যেক জামে মসজিদে যথাসম্ভব খতমে তারাবির আয়োজন করতে হবে। যেসব মসজিদে হাদিয়ার কারণে তারাবি হয় না, সেক্ষেত্রে তিনি হাফেজদের অর্থনৈতিক মানসিকতা থেকে বের হয়ে আসার কথা বলেন। হাফেজ নিয়োগে অধিকতর স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে, তিনি এ বিষয়েও জোর দেন।

ফয়সল আহমদ বলছেন, তারাবির ক্ষেত্রে দুয়েকজন হাফেজ নির্ধারণ না করে তিনচার জন হাফেজ নিয়োগ দিলে তারাবি না পাওয়া হাফেজের সংখ্যা অনেক কমে আসবে। তাছাড়া যে এলাকায় হাদিয়ার জটিলতায় তারাবি হচ্ছে না, তারা যদি আগে বলে হাদিয়া ছাড়া পড়াতে রাজি এমন হাফেজ নিয়োগ নেন, তাহলে সেখানেও তারাবি আয়োজন সম্ভব। তবে নিয়োগের ক্ষেত্রে কমিটির মধ্যে স্বচ্ছতা থাকা জরুরি।

তারাবির বাইরে থাকা হাফেজগণ তারাবিতে ফিরতে চান। তারা রমজান মাসে নিজেকে কুরআন তেলাওয়াত ও কুরআনের খেতমতে ব্যস্ত রাখতে আগ্রহী। তারাবি না হলে হাফেজরা ভুগেন নানাবিধ সামাজিক-ব্যক্তিগত জটিলতায়।

The post রমজানে তারাবি পাচ্ছেন না হাফেজগণ appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%b0%e0%a6%ae%e0%a6%9c%e0%a6%be%e0%a6%a8%e0%a7%87-%e0%a6%a4%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a6%be%e0%a6%ac%e0%a6%bf-%e0%a6%aa%e0%a6%be%e0%a6%9a%e0%a7%8d%e0%a6%9b%e0%a7%87%e0%a6%a8-%e0%a6%a8%e0%a6%be/

Thursday, March 9, 2023

কেন্দ্রীয় পরীক্ষাগুলোর প্রশ্নপত্রের ধরন বদলেছে

রাকিবুল হাসান নাঈম:

বেফাক এবং হাইয়াতুল উলয়ার চলতি বছরের কেন্দ্রীয় পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে পরিবর্তন এসেছে। কয়েকজন শিক্ষক ফাতেহকে জানিয়েছেন, এবারের কেন্দ্রীয় পরীক্ষাগুলোর প্রশ্নপত্রের ধরণ বদলেছে। যারা গাইডনির্ভর পড়াশোনা করেছে, তারা ভালো করতে পারছে না। বরং যারা মুল কিতাব ভালো করে পড়েছে, তারাই ভালো করছে।

বেফাক এবং হাইয়ার উর্ধ্বতন দায়িত্বশীলরা বলছেন, এই পরিবর্তন সচেতনভাবেই করা হয়েছে। ছাত্রদের গাইডমুখী প্রবণতা কমাতে এ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে কথা হয় পটিয়ার মাদরাসার সহকারী মুফতি যুবাইর হানিফের সঙ্গে। ফাতেহকে তিনি বলেন, ‘কওমি সনদ প্রবর্তিত হবার পর থেকেই গাইড প্রবণতা বেড়েছিল। এ প্রবণতা তৈরী করে দিয়েছে আল ফাতাহ’র মতো কিছু আধুনিক প্রকাশনী। তারা বিগত বছরের সব প্রশ্ন এবং উত্তরের বই করে ছড়িয়ে দেয়। ফলে এটার প্রভাব বেশ প্রকট হয়ে উঠে। গত বছর যখন এক মাদরাসায় হাইয়াতুল উলয়ার পরীক্ষা নিতে যাই, তখন দেখি পরীক্ষার আগেই ছাত্ররা তাদের মূল কিতাব লাইব্রেরীতে জমা দিয়ে কেবল গাইড নিয়ে বসে আছে। ভাষাভাষা দৃষ্টিতেও কিতাব দেখে না। অমাদের মাঝে বারবার আলোচনা হতো, কিভাবে ছাত্রদেরকে গাইডবিমুখ করা যায়। চলতি বছরের কেন্দ্রীয় পরীক্ষাগুলোতে ছাত্রদেরকে গাইডবিমুখ করার একটা প্রচেষ্টা দেখা গেছে।’

সেই প্রচেষ্টা কেমন জানতে চাইলে মুফতি যুবাইর হানিফ বলেন, ‘আগে হাইয়াতুল উলয়ার প্রশ্নে থাকতো, ‘হরকত যুক্ত করো এবং তরজমা করো।’ কিন্তু এখন কেবল এতটুকুই বলা হয় না। বরং তরজমাকৃত আরবি অংশের দুএকটি শব্দ উল্লেখ করে সেগুলোর ব্যাখ্যা এবং উদ্দেশ্য জানতে চাওয়া হয়। প্রতিটি প্রশ্নে এমন কিছু অংশ যুক্ত করা হয়, মূল কিতাব পড়া না থাকলে সেগুলোর উত্তর দিতে পারবে না কেউ। খানিকটা সৃজনশীল প্রশ্নের মতো। হয়ত উত্তরটা কোনো হাশিয়াতে ছিল, কিংবা আরবি মূল মতনে ছিল। কিন্তু গাইডে তো ভাষাভাষা উত্তর দেয়া থাক। কোনো জিনিসকে গভীর করে বোঝানো হয় না। তাই গাইড পড়ে এবার যারা পরীক্ষা দিতে যাচ্ছে, তারা সমস্যায় পড়ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘হাইয়াতুল উলয়া যে প্রচেষ্টা করছে, তা আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে। আশা করি, এর মাধ্যমে ছাত্ররা গাইড ছেড়ে কিতাবমুখী হবে। কারণ, যে সহজ ও সংক্ষিপ্ত উত্তরগুলো চাওয়া হচ্ছে, তা কেবল কিতাব পড়লেই পাওয়া যাবে। গাইড পড়ে পাওয়া যাবে না।’

এ প্রসঙ্গে কথা হয় কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড বেফাকের সহকারী পরিচালক মাওলানা যুবায়ের আহমাদের সঙ্গে। ফাতেহকে তিনি বলেন, ‘এবারের প্রশ্নগুলো লক্ষ্য করলে দেখবেন, যারা গাইড নির্ভর পড়াশোনা করেছে, তারা আটকে যাচ্ছে। তারা লিখতে পারছে না। আমরা এবার প্রশ্নপত্রের ধরণ বদলে দিয়েছি। ফলে মূল বই না পড়ে পরীক্ষায় বসলে সে লিখতে পারবে না। সামনে এটা আরও পরিবর্তন হবে।’

ছাত্রদের অবস্থা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘প্রথম পরীক্ষা যাবার পর এক ছাত্রের বাবা ফোন দিয়েছে আমাকে। বাবা বলছে, তার ছেলে পরীক্ষা দিতে ভয় করছে। কারণ, প্রশ্ন তো গাইড থেকে করা হচ্ছে না। আমি তাকে বললাম, ছেলেকে গাইড না পড়ে কিতাব পড়তেদ বলবেন, তাহলে এ সমস্যায় পড়তে হবে না।’

কওমি মাদরাসায় গাইড প্রবণতার কথা উল্লেখ করে মাওলানা যুবায়ের আহমাদ বলেন, ‘একটা সময় গাইড-নোট ছিল স্কুল-আলিয়ার নিদর্শন। আমরা ভাবতাম, এগুলো পড়েদে কেবলে স্কুল-কলেজ এবং আলিয়া মাদরাসার ছাত্ররা। কিন্তু এখন এই প্রবণতা কওমি মাদরাসাতেও ঢুকেছে। ফলে সেটাকে বের করা দরকার। তাই মুরুব্বিরা প্রশ্নপত্রে পরিবর্তন এনেছেন। আশা করি, এতে ভালো ফল আসবে।’

The post কেন্দ্রীয় পরীক্ষাগুলোর প্রশ্নপত্রের ধরন বদলেছে appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%95%e0%a7%87%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%a6%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a7%80%e0%a6%af%e0%a6%bc-%e0%a6%aa%e0%a6%b0%e0%a7%80%e0%a6%95%e0%a7%8d%e0%a6%b7%e0%a6%be%e0%a6%97%e0%a7%81%e0%a6%b2%e0%a7%8b%e0%a6%b0/

Wednesday, March 8, 2023

বধিরদের কুরআন শেখায় যে মাদরাসা

রাকিবুল হাসান নাঈম:

দুটি রুমে শ খানেক ছাত্র। কিন্তু পুরো রুমজুড়ে নীরবতা। কোথাও কোনো শব্দ নেই। টিকটিকি ডাক দিলে সে শব্দও শোনা যায়। তাদের কেউ কুরআন পড়ছে, কেউ অংক করছে, কেউ দোয়া-কালামের বই পড়ছে। নীরবতার কারণ—তারা সবাই বধির এবং বোবা। তাদের মুখে যেমন বোল নেই, কানে নেই শ্রবণশক্তি। তারা আঙুলের ইশারায় কুরআন পড়ছে, অংক করছে, দোয়া মুখস্থ করছে।

দৃশ্যটি রাজধানীর মাতুয়াইলে অবস্থিত আল নূর এডুকেশন কমপ্লেক্সের দ্বীনিয়াত বধির মাদরসার। এর প্রতিষ্ঠাতা মুফতি সালমান আহমাদ জানালেন, ‘এখানে প্রায় শ খানেক বধির ও বোবা পড়াশোনা করে। তারা যেমন কুরআন হেফজ করছে, তেমনি দোয়া-কালাম মুখস্থ করছে। পড়ছে বাংলা-অংক-ইংরেজিও।’

মাদরাসাটিতে বিভিন্ন বয়সের ছাত্র রয়েছে। কেউ নতুন, কেউ পুরাতন। তারা কথা বলতে পারে না। কথা শুনতে পারে না। তবে অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকে। তাদের মুখের ভাঁজে ফুটে উঠে কথা বলতে না পারার দুঃখ, কথা শুনতে না পারার বেদনা। কিন্তু এতসব অক্ষমতা ও শারীরীক বাধা সত্ত্বেও তারা কুরআন হেফজ করতে এসেছে। তিনজন শিক্ষক সবসময় তাদের তদারকি করেন। শিক্ষকদেরও কথা বলতে হয় মূক ভাষায়।

তারা মুখস্থ করে কিভাবে? জানতে চাইলে মুফতি সালমান আহমাদ ছাত্রদের কাছে নিয়ে গেলেন। ছাত্ররা কুরাআন পড়ে শোনালো। মুখস্থ হাদিস শোনালো। নামাজে কিভাবে কেরাত পড়ে, দেখালো। সবকিছুই করছে তারা ইঙ্গিতে। মুখের বদলে ব্যবহার হচ্ছে দুই হাত। শিক্ষকদেরও পড়াতে হয় ইঙ্গিতে।

দ্বিতীয় বর্ষে পা রেখেছে এই বধির মাদরাসা। ইতোমধ্যে ১৫ জন বধির দুতিনবার করে কুরআন খতম করেছে। এখানের প্রায় সব ছাত্রই ১০টি করে সুরা মুখস্থ পারে। দোয়া-কালাম মুখস্থ পারে। মুখস্থ পারে ২০ করে হাদিস। এখানে বাংলা-অংক-ইংরেজি পড়ানো হয় স্কুলের সিলেবাসে।

এখানে যারা পড়তে আসে, তাদের সবাই নিম্নবিত্ত পরিবারের। তাই তাদের মাসিক পুরো খরচ বহন করেন মুফতি সালমান আহমাদ। সবাই যখন প্রাইভেট মাদরাসা খুলছে, তখন বধিরদের নিয়ে কাজ করার ইচ্ছে কিভাবে হলো? মুফতি সালমান আহমাদ বললেন, ‘দ্বীনিয়াত কোর্সের মাধ্যমে শুরু থেকেই চেষ্টা করছি জেনারেল সমন্বয়ে প্রাথমিক ধর্মীয় শিক্ষাটা যেন সবাই পায়। আমাদের সুষ্ঠু পরিমার্জিত এবং পরিকল্পিত একটা সিলেবাসও আছে। পুরো বাংলাদেশেই এটা কয়েক হাজার কেন্দ্রে চলছে। এখানে শিশুদের জন্য যেমন সিলেবাস রয়েছে, তেমনি বড়দের জন্যও সিলেবাস রয়েছে। সব স্তরের মানুষকে নিয়ে কাজ করতে গিয়ে বধিরদের নিয়ে কাজ শুরু করা।’

তিনি বলেন, ‘সবাই মেধাবীদের নিয়ে কাজ করতে চায়। কিন্তু বাংলাদেশে প্রায় ৩০ লক্ষ বধির রয়েছে, যারা শারীরীক সমস্যা নিয়ে জন্মগ্রহণ করেছে, কথা বলতে পারে না, কথা শুনতে পারে না। দেখা যাচ্ছে, তারা সব কাজ করতে পারে, কিন্তু অজুর নিয়মটা জানে না। গোসলের ফরজটা জানে না। যেহেতু আমরা সমাজের শতভাগ মানুষের কাছে ধর্মীয় শিক্ষাটা পৌঁছতে চাই, তাই বধিরদের নিয়ে কাজ শুরু করেছি।তারাও তো শিক্ষা গ্রহণ করে শিক্ষিত হতে পারে। সমাজের বোঝা কমাতে পারে।’

বধিরদের নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা কী? জানতে চাইলে মুফতি সালমান আহমাদ বলেন, ‘অভিজ্ঞতা খুবই ভালো। তবে তারা যেহেতু শুনতে পায় না, কথা বলতে পারে না, তারা অনেক সময় অনেক কিছু বুঝতে চায় না। তাদের সামলে রাখতে হয়। আমাদের শ্রম বেশি দিতে হয়। তবে দিনশেষে তারা গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাটা পাচ্ছে, এটাই সবচেয়ে আনন্দের।’

মুফতি সালমান আহমাদ আরও বলেন, ‘কারও সন্ধানে যদি এমন কোনো বধির থাকে, তারা তাদেরকে আমাদের কাছে নিয়ে আসতে পারে। ইনশাআল্লাহ, আমরা তাদেরকে গ্রহণ করবো।’

The post বধিরদের কুরআন শেখায় যে মাদরাসা appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%ac%e0%a6%a7%e0%a6%bf%e0%a6%b0%e0%a6%a6%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%95%e0%a7%81%e0%a6%b0%e0%a6%86%e0%a6%a8-%e0%a6%b6%e0%a7%87%e0%a6%96%e0%a6%be%e0%a6%af%e0%a6%bc-%e0%a6%af%e0%a7%87-%e0%a6%ae/