Saturday, February 29, 2020

করোনার রোগী আনা হচ্ছে সন্দেহে হাসপাতালে অগ্নিসংযোগ

ফাতেহ ডেস্ক

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের এনে হাসপাতালের কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে এমন খবর পেয়ে হাসপাতালে আগুন দিয়েছে বিক্ষুব্ধরা। গতকাল শুক্রবার এ ঘটনা ঘটেছে ইরানের হরমুজগান প্রদেশের তৌহিদ ক্লিনিকে। খবর ফার্স নিউজ এজেন্সি।

জানা যায়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে প্রানঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ১০ জন রোগীকে হাসপাতালে আনা হচ্ছে। তাদের এখানে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হবে। গুজবটি এত তীব্র আকার ধারণ করে যে রাস্তায় নেমে পড়েন বিক্ষুব্ধরা। হাসপাতালে ভাঙচুরের পর আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়।

এ ঘটনার পর ফার্স নিউজ এজেন্সি দাবি করছে, ঘটনাটি পুরোটাই গুজব।

এ বিষয়ে হরমুজগান মেডিকেল সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা ফাতিমা নুরুজিয়ান বলেন, হাসপাতালে করোনারোগী আনা হচ্ছে বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা। কোনো একটি মহল উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এ গুজবটি ছড়িয়েছে।

এদিকে, ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে খবরে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে মারা গেছেন ৯ জন। দেশটিতে এখন পর্যন্ত এ ভাইরাসের কারণে মৃত্যু হয়েছে মোট ৪৩ জনের। আক্রান্ত অবস্থায় আছেন ৫৯৩ জন।

গতকাল শুক্রবারই ইউরোপ, আমেরিকা ও আফ্রিকার ছয়টি দেশে প্রথমবারের মতো করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। বিশ্বব্যাপী আক্রান্ত হয়েছে প্রায় ৮৪ হাজার। মারা গেছে ২ হাজার ৮৭২ জনেরও বেশি।

-এ

The post করোনার রোগী আনা হচ্ছে সন্দেহে হাসপাতালে অগ্নিসংযোগ appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%95%e0%a6%b0%e0%a7%8b%e0%a6%a8%e0%a6%be%e0%a6%b0-%e0%a6%b0%e0%a7%8b%e0%a6%97%e0%a7%80-%e0%a6%86%e0%a6%a8%e0%a6%be-%e0%a6%b9%e0%a6%9a%e0%a7%8d%e0%a6%9b%e0%a7%87-%e0%a6%b8%e0%a6%a8%e0%a7%8d/

দিল্লি সহিংসতা: স্বাভাবিক হচ্ছে জনজীবন, ১৪৪ ধারা শিথিল

ফাতেহ ডেস্ক

দেশের শান্তি ফেরাতে অমিত শাহের প্রতি মমতার আহ্বান। ভারতের নাগরিকত্ব আইন নিয়ে সমর্থক ও বিরোধীদের মধ্যে সংঘর্ষের পর অনেকটাই আজ শান্তিপূর্ণ দিল্লির উত্তর পূর্বাঞ্চল। জনজীবন স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছে পুলিশ।

খুলেছে বেশ কয়েকটি দোকানপাট। তবে রাস্তাঘাটে এখনও থমথমে রয়েছে। পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় শুক্রবার ১৪৪ ধারা শিথিল করা হয়েছে।

ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সহিংসতা ছড়িয়ে পড়া এলাকায় ৭০ কোম্পানি আধা-সামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। সহিংসতার ঘটনায় দিল্লি পুলিশ ৪৮টি মামলা দায়ের করে। গত কয়েকদিনের সংঘর্ষের ঘটনায় এ পর্যন্ত আটক করা হয়েছে ছয় শতাধিক মানুষকে। সিসিটিভির ফুটেজ খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, মানুষের উচিত হবে গুজবে কান না দেয়া এবং যে দুষ্কৃতীরা সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা বাড়াতে চাইছে তাদের ফাঁদে পা না দেয়া। দু’জন নিরাপত্তা কর্মী মারা গিয়েছেন। আহত প্রায় ৭০। আহতদের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় সব রকম পদক্ষেপ করা হচ্ছে।

এদিকে, দেশের শান্তি বজায় রাখতে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন, পশ্চীমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার ভুবনেশ্বরে পূর্বাঞ্চলীয় আন্তঃরাজ্য পরিষদের বৈঠকে এ আহ্বান জানান মমতা।

প্রসঙ্গত, বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) ঘিরে বিক্ষোভ নিয়ে দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনে মুসলিমবিদ্বেষী ঘৃণাবাদী বক্তব্য দেন বিজেপি নেতারা। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর, উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথসহ বহু নেতা ঘৃণাবাদী বক্তব্য দেন। এরই ধারাবাহিকতায় গত রবিবার সহিংসতায় উসকানি ছড়ান দিল্লির বিজেপি নেতা কপিল মিশ্র। এরপরই দিল্লির পূর্ব অংশে শুরু হয় নজিরবিহীন সহিংসতা। এই সহিংসতায় নিহত হয় ৪২ জন।

-এ

The post দিল্লি সহিংসতা: স্বাভাবিক হচ্ছে জনজীবন, ১৪৪ ধারা শিথিল appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%a6%e0%a6%bf%e0%a6%b2%e0%a7%8d%e0%a6%b2%e0%a6%bf-%e0%a6%b8%e0%a6%b9%e0%a6%bf%e0%a6%82%e0%a6%b8%e0%a6%a4%e0%a6%be-%e0%a6%b8%e0%a7%8d%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%ad%e0%a6%be%e0%a6%ac%e0%a6%bf/

৬ জেলায় সড়কে প্রাণ গেল ১৮ জনের

ফাতেহ ডেস্ক

পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় দেশের ছয় জেলায় ১৮ জন নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে রাজশাহীতে সাতজন, নেত্রকোনায় পাঁচজন, কুমিল্লায় তিনজন, মানিকগঞ্জে একজন, কুড়িগ্রামে একজন এবং বগুড়ায় একজন।

গতকাল শনিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৭টা থেকে রাত সোয়া ৯টা পর্যন্ত এসব দুর্ঘটনা ঘটে।

রাজশাহী
দুপুর পৌনে ১টার দিকে রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে কাদিপুর এলাকায় একটি যাত্রীবাহী মাইক্রোবাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে চালকসহ সাত জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন আরও একজন।

নিহতরা হলেন- রাজশাহী মহানগরীর মুন্নাফের মোড় এলাকার মুসাব্বের আকাশ আলী (৪০), তার স্ত্রী হাসনারা বেগম (৩৫), মেয়ে মুসফিরা খাতুন (৮) ও চারমাস বয়সী ছেলে হাসান আল আদিব, গোদাগাড়ী উপজেলার কেল্লাবাড়ইপাড়ার রমজান আলীর স্ত্রী আসিয়া (৩০), তার দুই বছরের মেয়ে রাফিয়া খাতুন এবং গাড়ির চালক ও মহানগরীর মেহেরচণ্ডী এলাকার মাহবুবুর রহমান (৪০)।

এ ঘটনায় গুরুতর আহত রমজান আলী রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার অবস্থা এখনো আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন কর্তব্যরত চিকিৎসক।

নেত্রকোনা
রাত সোয়া ৯টার দিকে নেত্রকোনার দুর্গাপুরে বালুবাহী ট্রাকচাপায় পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ১৫ জন। আহতদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সকালে ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার শালিহর গ্রাম থেকে ২৫ জন পিকআপ যোগে দুর্গাপুরে পিকনিকে যান। রাতে ফেরার পথে দুর্গাপুরের কালা মার্কেট এলাকায় একটি বালুবাহী ট্রাক পিকআপটিকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলে পাঁচজন নিহত হন। এছাড়া আহত হন আরও ১৫ জন। আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

কুমিল্লা
সকাল ৭টায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে কুমিল্লার দাউদকান্দিতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি যাত্রীবাহী পিকনিকের বাস রাস্তার পাশে খাদে পড়ে তিন যাত্রী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও অন্তত ২০ জন। নিহতদের মধ্যে দুইজন বাসযাত্রী ও একজন পথচারী বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

বাসের যাত্রী দুজন হলেন- ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের মো. শফিকুল ইসলাম (৩১), মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার কাঁঠালতলি গ্রামের রমজান মিয়া (৪০) ও পথচারী দাউদকান্দি উপজেলার সান্দ্রা গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক শহীদ মোল্লা (৬১)। হাইওয়ে পুলিশ দুর্ঘটনা কবলিত খাদিজা ভিআইপি পরিবহনের বাসটি উদ্ধার করেছে।

মানিকগঞ্জ
বেলা ১১টার দিকে ঢাকা আরিচা মহাসড়কের মানিকগঞ্জের শিবালয়ে পাটুরিয়ামুখী একটি বাসের চাপায় মাসুদ রানা জীবন (২৫) নামে এক মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। নিহত মাসুদ রানা জীবন মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার মুলজান এলাকার শফিকুল ইসলামের ছেলে। মাসুদ রানা বিকাশের একজন কর্মী ছিলেন।

কুড়িগ্রাম
সকাল ১০টার দিকে কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে উত্তর ব্যাপারীহাট কদমতলা এলাকায় মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে এক ছাত্রের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। এতে গুরুতর আহত এক ছাত্রকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তারা দুজনই নাগেশ্বরী বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।

বগুড়া
রাত ৮টার দিকে বগুড়ার শাজাহানপুরে বয়ড়াদিঘী নামক স্থানে ট্রাকের চাপায় আবু সাঈদ (৪৮) নামে এক সংবাদপত্র বিক্রেতা নিহত হয়েছেন। নিহত আবু সাঈদ বগুড়া শহরের মালগ্রাম চাপড়পাড়ার বাসিন্দা এবং বগুড়া জেলা জাতীয়তাবাদী সংবাদপত্র হকার্স ইউনিয়নের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক।

-এ

The post ৬ জেলায় সড়কে প্রাণ গেল ১৮ জনের appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a7%ac-%e0%a6%9c%e0%a7%87%e0%a6%b2%e0%a6%be%e0%a7%9f-%e0%a6%b8%e0%a7%9c%e0%a6%95%e0%a7%87-%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%be%e0%a6%a3-%e0%a6%97%e0%a7%87%e0%a6%b2-%e0%a7%a7%e0%a7%ae-%e0%a6%9c/

দেশের জনগণ মোদিকে দেখতে চায় না: আল্লামা বাবুনগরী

ফাতেহ ডেস্ক

দেশের জনগণ রাষ্ট্রীয় অতিথি হিসেবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে দেখতে চায় না বলে মন্তব্য করেছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব জুনায়েদ বাবুনগরী। শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এমনটি বলেন।

বিবৃতিতে তিনি উল্লেখ করেন, ‘মুসলমানদের রক্তে যে ব্যক্তির হাত রঞ্জিত তাকে রাষ্ট্রীয় অতিথি হিসেবে বাংলাদেশের জনগণ দেখতে চায় না। তারপরও তাকে আমন্ত্রণ জানালে এর প্রতিবাদে দেশজুড়ে বিক্ষোভ করবে মুসলিম জনতা। সরকারের শুভবুদ্ধির উদয় হবে বলে আশা করছি।’

তিনি বলেন, সম্প্রতি ভারতে মুসলিমবিরোধী বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের (সিএএ) প্রতিবাদ করায় রাজধানী দিল্লিতে মুসলমানদের রক্তাক্ত করা হয়েছে। অসংখ্য মুসলমান শহীদ হয়েছেন। মসজিদ পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। মিনারে গেরুয়া পতাকা উড়ানো হয়েছে। এ ঘটনার ধিক্কার জানানোর ভাষা নেই।

তিনি আরো বলেন, ভারতে মুসলমানদের ওপর রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস চালাচ্ছে হিন্দুত্ববাদী বিজেপি সরকার। তারা গো-হত্যার মিথ্যা অভিযোগ তুলে বিভিন্ন সময় মুসলমানদের ওপর নির্যাতন চালিয়েছে। কাশ্মিরে ইতিহাসের নিকৃষ্টতম বর্বরতা চালাচ্ছে মোদি-অমিত শাহ সরকার।

মুসলমানদের ভারত ছাড়া করার হীন উদ্দেশ্যে মুসলিমবিরোধী নাগরিকত্ব বিল পাশ করা হয়েছে দাবি করে ইসলামী এই নেতা বলেন, এ আইনের প্রতিবাদ করায় দিল্লিতে মুসলমানদের হত্যা করা হচ্ছে। তাদের ওপর বর্বরোচিত হামলা, নৃশংস হত্যা, মসজিদে ভাঙচুর করায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি।

মুসলমানদের ওপর অত্যাচার, নির্যাতন বন্ধ না হলে ভারতের বিরুদ্ধে দূর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন হেফাজতে ইসলামীর এই নেতা।

-এ

The post দেশের জনগণ মোদিকে দেখতে চায় না: আল্লামা বাবুনগরী appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%a6%e0%a7%87%e0%a6%b6%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%9c%e0%a6%a8%e0%a6%97%e0%a6%a3-%e0%a6%ae%e0%a7%8b%e0%a6%a6%e0%a6%bf%e0%a6%95%e0%a7%87-%e0%a6%a6%e0%a7%87%e0%a6%96%e0%a6%a4%e0%a7%87-%e0%a6%9a/

‘রাশিয়ার সাথে ১৬ বার যুদ্ধ করেছি, আবারো লড়াই করবো’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

রাশিয়ার সাথে ১৬ বার যুদ্ধ করেছি, আবারো লড়াই করবো বলে জানিয়েছেন এরদোগানের উপদেষ্টা মেসুত হাক্কি। খবর, আরটি

খবরে বলা হয়, ২৮ ফেব্রুয়রি বাশার প্রশাসন কর্তৃক ইদলিবে অবস্থানরত তুর্কি সেনারা আক্রান্ত হওয়ার পর এরদোগানের উপদেষ্টা মেসুত হাক্কি এই মন্তব্য করেন।

সিরিয়ার বিদ্রোহীদের সর্বশেষ ঘাটি ইদলিবে সোচি ও আস্তানা চুক্তির আলোকে তুরস্ক যুদ্ধবিরতি পর্যবেক্ষণ করছিল। কিন্তু বাশার বাহিনী দ্বারা তুরস্ক আক্রান্ত হন।

রাশিয়া ও তুরস্ক পরষ্পরের বিরুদ্ধে চুক্তি প্রতিপালনে ব্যর্থতার অভিযোগ তোলার পর থেকেই উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। সিরিয়ায় বাশার প্রশাসন থাকলেও মূলত রাশিয়ার নির্দেশনার বাহিরে বাশার প্রশাসনের কিছু করার সুযোগ কিংবা অধিকার আর নেই বলে তুরস্কসহ বিশ্লেষকগণ দাবী করছেন।

উল্লেখ্য, রাশিয়া এবং তুরস্কের মধ্যে ষোড়শ শতাব্দী থেমে থেমে লড়াই হয়েছে। সর্বশেষ যুদ্ধ প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় সংগঠিত হয়।

-এ

The post ‘রাশিয়ার সাথে ১৬ বার যুদ্ধ করেছি, আবারো লড়াই করবো’ appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%b0%e0%a6%be%e0%a6%b6%e0%a6%bf%e0%a7%9f%e0%a6%be%e0%a6%b0-%e0%a6%b8%e0%a6%be%e0%a6%a5%e0%a7%87-%e0%a7%a7%e0%a7%ac-%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%b0-%e0%a6%af%e0%a7%81%e0%a6%a6%e0%a7%8d/

কয়েক ঘন্টায় ১৮ হাজার শরণার্থীর ইউরোপ গমন: গ্রীস সীমান্তে শরণার্থী ও নিরাপত্তাবাহিনীর সংঘর্ষ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

শরণার্থীদের আর চাপ নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোগান। খবর, ডেইলি সাবাহ

এরদোগান বলেন, কয়েক ঘন্টায় আঠার হাজার মানুষ ইউরোপ যেতে তুর্কি সীমান্ত অতিক্রম করেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রতিশ্রুতি রক্ষা না করায় তুরস্ক শরণার্থী-বিষয়ক চুক্তি মানতে আর বাধ্য নয়।

প্রেসিডেন্ট জানান, হয়তো আজই ২৫ থেকে ৩০ হাজার শরণার্থী সীমান্ত অতিক্রম করবে। সীমান্ত অতিক্রমকারী শরণার্থীদের লক্ষ্য করে গ্রীসের নিরাপত্তাবাহিনী কাঁদুসে গ্যাস ছোড়ার প্রতিবাদে শরণার্থীরা পাথর ছুড়ে প্রতিবাদ জানায়।

গ্রীসের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, অবৈধ কিন্তু সংগঠিত অনুপ্রবেশের ঘটনা শুক্রবার রাত থেকে আমরা লক্ষ করছি।  ইতোমধ্যে চার হাজার মানুষকে বাঁধা দিতে সক্ষম হয়েছি।

উল্লেখ্য, সিরীয় সংকট শুরু হলে ইউরোপে শরণার্থীদের প্রবেশ ঠেকাতে ইউরোপ ও তুরস্ক চুক্তি করে। সহযোগিতার বিনিময়ে তুরস্ক শরণার্থীদের ইউরোপ-গমণরোধ করবে। কিন্তু রাশিয়ার সাথে তুরস্কের সাম্প্রতিক উত্তেজনার কারণে ইদলিবের অসংখ্য মানুষ তুর্কি সীমান্তের দিকে আসতে থাকে।

ইদলিব সংকটে ইউরোপের উল্লেখ্যযোগ্য কোন সহযোগিতা না পাওয়ায় অঘোষিতভাবে তুরস্ক তাদের সীমানা উন্মুক্ত করে দেয়। শরণার্থী ইস্যুতে ইউরোপের লিবারেল ও ডানপন্থীদের মধ্যে বেশ বিতর্ক রয়েছে। যা যেকোন সরকারের জন্য বড় ধরণের হুমকিস্বরূপ। ধারণা করা যাচ্ছে, তুরস্ক ইউরোপকে দৃশ্যমান ভূমিকায় আনতে এই পদক্ষেপ গ্রহন করছে।

-এটি

The post কয়েক ঘন্টায় ১৮ হাজার শরণার্থীর ইউরোপ গমন: গ্রীস সীমান্তে শরণার্থী ও নিরাপত্তাবাহিনীর সংঘর্ষ appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%95%e0%a7%9f%e0%a7%87%e0%a6%95-%e0%a6%98%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%9f%e0%a6%be%e0%a7%9f-%e0%a7%a7%e0%a7%ae-%e0%a6%b9%e0%a6%be%e0%a6%9c%e0%a6%be%e0%a6%b0-%e0%a6%b6%e0%a6%b0%e0%a6%a3%e0%a6%be/

ইসলামী চিন্তাবিদ শায়েখ মুহাম্মাদ ইমারাহ আর নেই

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

বিখ্যাত ইসলামী চিন্তাবিদ শায়েখ মুহাম্মাদ ইমারাহ তিন সপ্তাহের অসুস্থতার পর ২৮ ফে্রেুয়ারী, শুক্রবার ৮৯ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন। এবং শনিবার জোহর নামাজের পর  ‘মসজিদুল হামদ’ এ তাঁর জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। জানাযায় আযহারের উর্ধতন কর্মকর্তারাসহ অসংখ্য মানুষ অংশগ্রহন করেন।  খবর আলজাজিরা

মিসরের কুফরুশ শায়খে ১৯৩১ সালে জন্মগ্রহনকারী মরহুম সম্পর্কে তাঁর সন্তান খালিদ ইমারাহ ফেসবুক পোস্টে জানান, “আমার পিতা কোন কষ্ট ছাড়াই তার ছোট পরিবারের সকলের উপস্থিতিতে ইন্তেকাল করেছেন। তিনি আমার মা,  সকল সন্তান, নাতীনাতনী ও শুভানুধ্যায়ীদের জন্য দোয়া করেন। ইন্তেকালের সময় তিনি সকলের প্রতি সন্তুষ্ট ছিলেন। সকলকে ক্ষমা করেছেন। এমনকি যারা তাকে বিব্রত করেছে অথবা জুলুম করেছে তাদেরকেও তিনি ক্ষমা করেছেন। তিনি কারো প্রতি অন্তরে কষ্ট নিয়ে বিদায় নেননি।”

ইমারাহ আল আযহার বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাপরিষদ ও সিনিয়র স্কলার অথরিটির সদস্য ছিলেন। মিসরের মার্কসীয় চিন্তার বিপরীত মেরুতে অবস্থান গ্রহনকারী হিসেবে তিনি পরিচিত। আধুনিক বিভিন্ন সংশয়ের জবাব দিতে তিনি ছিলেন মিসরীয় সমাজে অতুলনীয় ব্যক্তি।

তার ছয় দশকের লেখনীর সংখ্যা ২৪০ এর মতো।  ‘ইসলামের মার্কসীয় ব্যাখ্যা’  ‘ইসলাম ও ভবিষ্যত’ ‘ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ও জাতীয়তাবাদী তত্ত্ব’ অন্যতম।

তাঁর মৃত্যুতে আল আযহার শোক প্রকাশ করে উম্মতের ‘ফাকীদ’ বলে অভিহিত করেন।

উল্লেখ্য, তিনি মিসরের সাবেক স্বৈরশাসক হোসনী মোবারক বিরোধী বিপ্লবে সমর্থন দেন। এবং মিসরের ইতিহাসে প্রথম গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত মুরসির অপসারণকে বেআইনি বলে অভিহিত করেন।

The post ইসলামী চিন্তাবিদ শায়েখ মুহাম্মাদ ইমারাহ আর নেই appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%87%e0%a6%b8%e0%a6%b2%e0%a6%be%e0%a6%ae%e0%a7%80-%e0%a6%9a%e0%a6%bf%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%a4%e0%a6%be%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%a6-%e0%a6%b6%e0%a6%be%e0%a7%9f%e0%a7%87%e0%a6%96-%e0%a6%ae/

প্যারোলে মুক্তির বিষয়ে খালেদা জিয়াকে রাজি করাতে পারছেন না স্বজনরা

ফাতেহ ডেস্ক

খালেদা জিয়ার আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, ম্যাডাম প্যারোলে মুক্তি নিতে রাজি নন। তবে সরকার চাইলে বয়স ও মানবিক বিবেচনায় ফৌজদারী কার্যবিধির ৪০১ ধারায় নির্বাহী ক্ষমতায় বেগম জিয়াকে জামিন দিতে পারে। আমি মনে করি, সরকারের উচিৎ জামিন দিয়ে ম্যাডামের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা।

খালেদা জিয়ার বোন সেলিমা ইসলাম বলেন, এই অবস্থায় তাকে এখানে আর বেশিদিন রাখা ঠিক হবে না। কি করা যায় এসব বিষয়ে চিন্তা করছি, তবে এখন কিছু ঠিক করিনি।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, উনার শারীরিক অবস্থা যে অবস্থায় চলে গেছে এখানে প্যারোল আর জামিনের মধ্যে কোন তফাৎ দেখি না। প্যারোল নিয়ে তিনি বাড়ি গেলে দেশ বাঁচবে তিনিও বাঁচবেন। আন্দোলন কখন টার্ন নিবে, তা বলা যায় না। বেগম জিয়া জেলে থাকবে আর এদেশের মানুষ বের হবে না, তা হয় না।

দ্বিমত পোষণ করে খন্দকার মাহবুব বলেন, নেতৃত্বে যারা আছে তারা বারবার ব্যর্থ হয়েছে। তারা আন্দোলন করে ম্যাডামকে মুক্ত করবেন এটা আমি বিশ্বাস করি না। বিএনপির নেতৃত্ব আরও সৎ এবং সাহসী হতে হবে। তাহলেই রাজপথ উত্তপ্ত করে তাকে মুক্ত করা সম্ভব হবে।

-এ

The post প্যারোলে মুক্তির বিষয়ে খালেদা জিয়াকে রাজি করাতে পারছেন না স্বজনরা appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a7%8b%e0%a6%b2%e0%a7%87-%e0%a6%ae%e0%a7%81%e0%a6%95%e0%a7%8d%e0%a6%a4%e0%a6%bf%e0%a6%b0-%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%b7%e0%a7%9f%e0%a7%87-%e0%a6%96/

পাঁচদিন পর মুখ খুলে বিতর্কে অমিত শাহ

ফাতেহ ডেস্ক

দিল্লির যখন জ্বলছে তখন মোদি চুপ ছিলেন, চুপ ছিলেন অমিত শাহ। অবশেষে ঘটনার পাঁচদিন পর মুখ খুললেও উলটো বিতর্কিত মন্তব্য করলেন অমিত। দিল্লির দেখভালের দায়িত্বে থাকা একজন হয়েও তিনি যে নীরবতা দেখালেন তা নজিরবিহীন বলেই মন্তব্য করেছেন বিশ্লেষকরা।

মুখ খুলেই এ সহিংসতার জন্য বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে দায়ী করেছেন তিনি। উড়িষ্যার এক জনসভায় শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) অমিত শাহ বলেন, ‘বিরোধীরা নাগরিকত্ব আইন নিয়ে জনগণের মধ্যে ভুল ধারণা ছড়াচ্ছে। তারা মানুষকে উসকানি দিয়েছেন। আর সেই উসকানিতে দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে দিল্লিতে। এ দাঙ্গার জন্য প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বিরোধীরাই দায়ী।’

অমিত শাহ বলেন, ‘নাগরিকত্ব কেড়ে নেয়ার জন্য সিএএ নয়, বরং নাগরিকত্ব দেয়ার জন্য এটি করা’। দিল্লির এই দাঙ্গায় এখন পর্যন্ত ৪২ জন নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। দুই শতাধিক মানুষ আহত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

-এ

The post পাঁচদিন পর মুখ খুলে বিতর্কে অমিত শাহ appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%aa%e0%a6%be%e0%a6%81%e0%a6%9a%e0%a6%a6%e0%a6%bf%e0%a6%a8-%e0%a6%aa%e0%a6%b0-%e0%a6%ae%e0%a7%81%e0%a6%96-%e0%a6%96%e0%a7%81%e0%a6%b2%e0%a7%87-%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%a4%e0%a6%b0%e0%a7%8d/

যোদ্ধাদের সব ধরণের হামলা বন্ধের নির্দেশ দিল তালেবান

ফাতেহ ডেস্ক

নিজেদের সব যোদ্ধাকে সব ধরণের হামলা বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে আফগান তালেবান। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শান্তি চুক্তিকে সামনে রেখে শনিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) এ আদেশ দেয় তালেবান নেতৃত্ব। খবর ডনের।

তালেবানের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ রয়টার্সকে বলেন, আফগান জাতীর শান্তির জন্য আজ সব তালেবান যোদ্ধাকে সকল ধরণের হামলা থেকে বিরত থাকতে আদেশ দেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, সবচেয়ে বড় ব্যাপার হল আমরা আশা করছি সমঝোতা এবং চুক্তির আওতায় যুক্তরাষ্ট্র তাদের সব প্রতিশ্রুতি পালন করবে।

তিনি এও বলেছেন, এখনো তালেবান নিয়ন্ত্রিত এলাকার ওপর দিয়ে বিদেশি সেনাদের যুদ্ধবিমান উড়ছে। এটা উস্কানিমূলক।

-এ

The post যোদ্ধাদের সব ধরণের হামলা বন্ধের নির্দেশ দিল তালেবান appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%af%e0%a7%8b%e0%a6%a6%e0%a7%8d%e0%a6%a7%e0%a6%be%e0%a6%a6%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%b8%e0%a6%ac-%e0%a6%a7%e0%a6%b0%e0%a6%a3%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%b9%e0%a6%be%e0%a6%ae%e0%a6%b2%e0%a6%be/

ফ্রান্সের গোপন সামরিক ঘাঁটিতে করোনা ভাইরাস

ফাতেহ ডেস্ক

ফ্রান্সের একটি গোপন সামরিক ঘাঁটিতে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ফ্লোরেন্স পার্লি। শনিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) ইরানি সংবাদমাধ্যমে এ খবর প্রকাশ করা হয়েছে।

খবরে বলা হয়েছে, প্যারিসের উপকণ্ঠে অবস্থিত ফরাসি একটি গোপন সামরিক ঘাঁটিতে করোনাভাইরাসের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। ফলে ঘাঁটির তৎপরতা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

ফরাসি রাজধানীর উত্তরে অবস্থিত ১১০ ক্রিল বিমান ঘাঁটির কয়েকজন করোনাভাইরাসের আক্রান্ত হয়েছে বলে জানান প্রতিরক্ষমন্ত্রী। তবে আক্রান্তদের সঠিক সংখ্যা উল্লেখ করেন নি তিনি।

স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, একজন বেসামরিক কর্মীসহ অন্তত চার ব্যক্তি করোনার কবলে পড়েছে।

ঘাঁটিতে আসা-যাওয়াসহ সব তৎপরতা বন্ধ করে দেয়ার কথা উল্লেখ করে ফ্লোরেন্স পার্লি বলেন, মহামারী ছড়িয়ে পড়া সংক্রান্ত তদন্ত চলছে। একই সঙ্গে ফরাসি অন্যান্য সামরিক ঘাঁটিতে প্রতিরোধক ব্যবস্থা নেয়ার কথাও জানান তিনি।

-এ

The post ফ্রান্সের গোপন সামরিক ঘাঁটিতে করোনা ভাইরাস appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%ab%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%be%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%b8%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%97%e0%a7%8b%e0%a6%aa%e0%a6%a8-%e0%a6%b8%e0%a6%be%e0%a6%ae%e0%a6%b0%e0%a6%bf%e0%a6%95-%e0%a6%98%e0%a6%be/

সেই আনোয়ারের সমর্থন নিয়ে ফের প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন মাহাথির

ফাতেহ ডেস্ক

সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক সরকারের দুর্নীতি ঠেকাতে দুই বছর আগে আনোয়ার ইব্রাহিমের সমর্থন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী হন ৯৪ বছর বয়সী মাহাথির মোহাম্মাদ। কথা ছিল তিনি পদত্যাগ করলে আনোয়ার হবেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু সেটা হয়নি।

কিছু দিন আগে ক্ষমতাসীন জোট ছেড়ে নতুন জোট করার উদ্যোগ নেন বিশ্বে সবচেয়ে বয়সী প্রধানমন্ত্রী মাহাথির। তখনই বাধে বিপত্তি। এ নিয়ে গত কয়েক দিন ধরেই মালয়েশিয়ার রাজনীতিতে চলছে তোলপাড়।

এমনই প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন ড. মাহাথির। কিন্তু দেশটির রাজা তাকে অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেন।

কিন্তু বেঁকে বসে নিজের প্রতিষ্ঠিত দল পার্টি প্রিবুমি বেরসাতু মালয়েশিয়া। তার থেকে সমর্থন তুলে নেয়। পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে দলের পক্ষ থেকে মাহয়িদ্দিন ইয়াসিনকে প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী করা হয়। অন্যদিকে, জোটের পক্ষ থেকে আনোয়ার ইব্রাহিমকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয়।

কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যে আবার পাল্টে গেছে দৃশ্যপট। সর্বশেষ খবরে বলা হচ্ছে, ফের আনোয়ার ইব্রাহিমের সমর্থন নিয়েই প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন মাহাথির মোহাম্মদ।

আল জাজিরা বলছে, শেষ পর্যন্ত নিজের সব সময়ের ছায়া প্রতিদ্বন্দ্বী আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে হাত মেলাতে বাধ্য হন মাহাথির। আর রাজনৈতিক পরিস্থিতি যতদূর সম্ভব নিজের অনুকূলে রাখতে আনোয়ার ইব্রাহিমও প্রার্থিতা তুলে নিয়ে ৯৪ বছর বয়সী এই নেতাকে সমর্থন দেন।

সদ্য ত্যাগ করে আসা পাকাতান হারাপান জোট থেকেই প্রধানমন্ত্রী হতে নিজের সম্মতির কথা জানিয়ে শনিবার মাহাথির বলেন, ‘প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার বিষয়ে আমি আত্মবিশ্বাসী।’

অন্যদিকে, জোটের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘প্রধানমন্ত্রী পদে ড. মাহাথিরকে পূর্ণ সমর্থন দিচ্ছে পাকাতান হারাপান।’

আনোয়ার ইব্রাহিমও ওই বিব্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করে বলেছেন, সরকারের মূলনীতি প্রতিষ্ঠায় প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে তাদের জোট।

-এ

The post সেই আনোয়ারের সমর্থন নিয়ে ফের প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন মাহাথির appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%b8%e0%a7%87%e0%a6%87-%e0%a6%86%e0%a6%a8%e0%a7%8b%e0%a7%9f%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%b8%e0%a6%ae%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%a5%e0%a6%a8-%e0%a6%a8%e0%a6%bf%e0%a7%9f%e0%a7%87/

দিল্লি সহিংসতায় ৮০ মুসলিমকে বাঁচিয়েছেন এই শিখ

ফাতেহ ডেস্ক

ভারতের দিল্লিতে চলমান সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে শত শত মুসলিম ঘরবাড়ি, লুটপাট হয়েছে দোকান, হত্যা ছাড়াও দাঙ্গাকারীদের লাথি খেয়ে জন্মেছে ‘মিরাকল শিশু’।

‘জয় শ্রী রাম’ ধ্বনি যখন মুসলিমদের জন্য আতঙ্কের কারণ তখন হিন্দুদেরই কেউ কেউ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নজির স্থাপন করেছেন। তাদেরই একজন উত্তর-পূর্ব দিল্লির গোকুলপুরীর বাসিন্দা মাহিন্দর সিং।

ভারতের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ‘শিখ নিউজ এক্সপ্রেস’ এ প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উগ্র হিন্দুত্ববাদী হাত থেকে গত ৬০-৮০ জন মুসলিমকে প্রাণে বাঁচিয়ে তাদের নিরাপদ আশ্রয়ে পৌঁছে দিয়েছেন মাহিন্দর এবং তার ছেলে ইন্দ্রজিৎ সিং।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি হিন্দু অধ্যুষিত গোলকপুরী এলাকায় বসবাসকারী মুসলিমদের বাড়িতে অজ্ঞাত পরিচয়ের দাঙ্গাকারীরা হামলা চালাচ্ছে বলে খবর পান মাহিন্দর। সঙ্গে সঙ্গে ছেলে ইন্দ্রজিৎকে ডেকে নিয়ে স্থানীয় মুসলিমদের বাড়িতে বাড়িতে পৌঁছে যান।

তারপর ছেলের বুলেট মোটরসাইকেল ও নিজের স্কুটিতে করে ৬০ থেকে ৮০ জন মুসলিম প্রতিবেশীকে গোকুলপুরী থেকে এক কিলোমিটার দূরে অবস্থিত মুসলিম অধ্যুষিত এলাকা করদমপুরে নিরাপদ আশ্রয়ে নামিয়ে দিয়ে আসেন।

মাহিন্দর বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতি দেখে ১৯৮৪ সালে দিল্লিতে হওয়া শিখ নিধন যজ্ঞের কথা মনে পড়ে যাচ্ছিল আমার। তাই হিন্দু বা মুসলিম কিছু দেখিনি। আমার চোখে শুধু মানুষ ভাসছিল। শুধু ছোট ছোট শিশুর মুখ চোখে পড়ছিল।

এসব দেখে আমার মনে হয়, এরা সবাই আমার সন্তান। এদের কোনো ক্ষতি হতে দেব না আমি। মানবিকতার তাগিদেই প্রয়োজনের সময় তাদের সাহায্য করেছি আমরা। এছাড়া আর কী বা বলতে পারি?’

নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) ও জাতীয় নাগরিক নিবন্ধনকে (এনআরসি) কেন্দ্র করে উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে গত কয়েকদিন ধরে চলা সাম্প্রদায়িক অশান্তির জেরে এখনও পর্যন্ত ৪৩ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। আহত হয়েছেন অন্তত ৩০০ শতাধিক।

-এ

The post দিল্লি সহিংসতায় ৮০ মুসলিমকে বাঁচিয়েছেন এই শিখ appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%a6%e0%a6%bf%e0%a6%b2%e0%a7%8d%e0%a6%b2%e0%a6%bf-%e0%a6%b8%e0%a6%b9%e0%a6%bf%e0%a6%82%e0%a6%b8%e0%a6%a4%e0%a6%be%e0%a7%9f-%e0%a7%ae%e0%a7%a6-%e0%a6%ae%e0%a7%81%e0%a6%b8%e0%a6%b2%e0%a6%bf/

করোনাভাইরাস: একদিনে দক্ষিণ কোরিয়ায় সর্বোচ্চ আক্রান্ত ৫৯৪

ফাতেহ ডেস্ক

পূর্ব এশিয়ার দেশ দক্ষিণ কোরিয়ায় বাড়ছে করোনায় আক্রান্তের পরিমাণ। শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দেশটিতে নতুন করে ৫৯৪ জন আক্রান্তকে শনাক্ত করা গেছে। যা একদিনের মধ্যে দেশটিতে সর্বোচ্চ।

দক্ষিণ কোরিয়ায় রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ সেন্টারের (কেসিডিসি) তথ্য মতে, দেশটিতে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা দুই হাজার ৯৩১ জন। আর মৃতের সংখ্যা ১৭। চীনের বাইরে দক্ষিণ কোরিয়ায় এখন করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা সর্বোচ্চ।

দেশটিতে নতুন আক্রান্তের বেশিরভাগই রোগটির প্রাদুর্ভাবের অঞ্চল দায়েগুর খ্রিস্টানদের শিনচেওঞ্জি চার্চের সঙ্গে যুক্ত। দক্ষিণ কোরিয়ায় স্বাস্থ্য অধিদফতর বিশ্বাস ওই চার্চের ৬১ বছর বয়সী এক নারী দ্বারা ভাইরাসটি ছড়িয়েছে।

এদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া ও ওরেগণ রাজ্যেও করোনায় উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। ক্যালিফোর্নিয়ায় এখন পর্যন্ত দুইজন ব্যক্তিকে শনাক্ত করা গেছে। এছাড়া ওরেগণ রাজ্যেও একজন আক্রান্ত রোগীকে চিহ্নিত করা গেছে।

শুক্রবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানায়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৫৯ করোনায় আক্রান্ত রোগীকে শনাক্ত করা গেছে। এর আগে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মার্কিন স্বাস্থ্য বিভাগ ও মানব সেবা বিভাগের এক কর্মকর্তা অভিযোগ করে জানান, মার্কিনীদের যথাযথ সুরক্ষা গিয়ার সরবরাহ করা হয়নি। তবে মার্কিন স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান এই অভিযোগকে অস্বীকার করেছেন।

এদিকে শুক্রবার চীনে করোনায় আক্রান্ত হয়ে নতুন করে মারা গেছে ৪৭ জন। এর মধ্যে ভাইরাসটির উৎপত্তিস্থল হুবেই প্রদেশেই ৪৫ জন মারা গেছে। এছাড়া নতুন করে দেশটিতে আক্রান্ত হয়েছে ৪২৭ জন। চীনের পর সর্বোচ্চ মৃত্যুর সংখ্যা মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইরানে। করোনায় আক্রান্ত হয়ে দেশটিতে এখন পর্যন্ত মারা গেছে ২১০ জন। তবে মৃতের বিষয়টি অস্বীকার করেছে ইরানি কর্তৃপক্ষ।

চীন বাদে বিশ্বের ৫১টি দেশে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়েছে। বিশ্বব্যাপী করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ৮৩ হাজার ৬৫০ জন। যার মধ্যে ৭৮ হাজার ৯৬১ জন চীনের। এছাড়া ভাইরাসটি দ্বারা বিশ্বব্যাপী মারা গেছে দুই হাজার ৭৯১ জন।

এদিকে করোনার আতঙ্কে বিশ্বব্যাপী শেয়ারবাজারগুলো নিম্নমুখী অবস্থানে রয়েছে। গত সপ্তাহে লন্ডনের এফটিসিই শেয়ার বাজারের শেয়ারের দাম ১৩ শতাংশ কমেছে।

-এ

The post করোনাভাইরাস: একদিনে দক্ষিণ কোরিয়ায় সর্বোচ্চ আক্রান্ত ৫৯৪ appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%95%e0%a6%b0%e0%a7%8b%e0%a6%a8%e0%a6%be%e0%a6%ad%e0%a6%be%e0%a6%87%e0%a6%b0%e0%a6%be%e0%a6%b8-%e0%a6%8f%e0%a6%95%e0%a6%a6%e0%a6%bf%e0%a6%a8%e0%a7%87-%e0%a6%a6%e0%a6%95%e0%a7%8d%e0%a6%b7/

রাজশাহীতে মাইক্রোবাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে, নিহত ৬

ফাতেহ ডেস্ক

রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে একটি যাত্রীবাহী মাইক্রোবাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে চালকসহ ৬ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন আরও ২ জন।

শনিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ১২টা ৪৫ মিনিটের দিকে রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ মহাসড়কের কাদিপুর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন, গোদাগাড়ীর কেল্লাবারইপাড়া এলাকার রমজান আলীর স্ত্রী আছিয়া বেগম (৩৫), রাজশাহী নগরীর মুন্নাফের মোড় এলাকার ফজলুর রহমানের ছেলে আক্কাস আলী (৪০), মেহেরচন্ডী এলাকার মতিউর রহমানের ছেলে মাহবুবুর রহমান (৩৫)। নিহত অপর তিনজনের মধ্যে দু’জন নারী ও দেড় বছরের এক শিশু রয়েছে। তাদের পরিচয় এখনও নিশ্চিত হওয়া যায় নি।

গোদাগাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খাইরুল ইসলাম বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। মরদেহগুলো উদ্ধার প্রক্রিয়া চলছে। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, মাইক্রোবাসে মোট আট জন যাত্রী ছিলেন। ঘটনাস্থলেই তিনজন মারা যায়। বাকি পাঁচজনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। ১টা ১৫ মিনিটের দিকে আরও তিনজন মারা যান। আহত বাকি দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজন

-এ

The post রাজশাহীতে মাইক্রোবাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে, নিহত ৬ appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%b0%e0%a6%be%e0%a6%9c%e0%a6%b6%e0%a6%be%e0%a6%b9%e0%a7%80%e0%a6%a4%e0%a7%87-%e0%a6%ae%e0%a6%be%e0%a6%87%e0%a6%95%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a7%8b%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%b8-%e0%a6%a8%e0%a6%bf%e0%a6%af/

Friday, February 28, 2020

শিক্ষায় মুসলিমদের ৫ শতাংশ কোটা দেওয়ার ঘোষণা মহারাষ্ট্রের

ফাতেহ ডেস্ক

ভারতের মহারাষ্ট্র সরকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মুসলিমদের পাঁচ শতাংশ কোটা দেবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী নবাব মালিক।

গতকাল শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) এক বিবৃতিতে এ ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

তিনি জানান, মহারাষ্ট্র বিধানসভার চলমান বাজেট অধিবেশনে মহারাষ্ট্রের তিনদলের মহাজোট মহাবিকাশ আঘাদি (এমভিএ) সরকার এ বিল উত্থাপন করবে।

এমভিএ-এর তিন জোটের অন্যতম সদস্য – জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস পার্টির নেতা মালিক বলেন, তারা চাকরিতে কোটা সংরক্ষণের সুযোগ দেওয়ারও পরিকল্পনা করছেন এবং সরকার এর জন্য আইনি পরামর্শ চাইছে।

-এ

The post শিক্ষায় মুসলিমদের ৫ শতাংশ কোটা দেওয়ার ঘোষণা মহারাষ্ট্রের appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%b6%e0%a6%bf%e0%a6%95%e0%a7%8d%e0%a6%b7%e0%a6%be%e0%a7%9f-%e0%a6%ae%e0%a7%81%e0%a6%b8%e0%a6%b2%e0%a6%bf%e0%a6%ae%e0%a6%a6%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a7%ab-%e0%a6%b6%e0%a6%a4%e0%a6%be%e0%a6%82/

‘সর্বোচ্চ ঝুঁকি’ হিসেবে করোনাভাইরাসকে চিহ্নিত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার

ফাতেহ ডেস্ক

বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবকে ‘সর্বোচ্চ ঝুঁকি’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।

সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় এক সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান ড. টেড্রস অ্যাডহানম গেব্রেইয়েসুস এই ঘোষণা দেন। বিবিসি তাদের এক প্রতিবেদনে বিষয়টি নিশ্চিত করে।

ড. টেড্রস বলেন , ‘বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এই ভাইরাস চিহ্নিত করা যাচ্ছে।’

এখন পর্যন্ত ৫৭ দেশে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ইরানে ২১০ জন রোগীর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে বিবিসি। যদিও দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ৩৪ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী এখন পর্যন্ত বিশ্বে করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৮২ হাজার ২৯৪ জন। একদিনে অর্থ্যাৎ ২৪ ঘণ্টায় সারাবিশ্বে নতুন ১১৮৫ রোগী শনাক্ত করা হয়েছে।

করোনাভাইরাসে এখন পর্যন্ত চীনে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৭৮ হাজার ৬৩০ জন। আক্রান্ত রোগীর মধ্যে মোট সংখ্যা ২ হাজার ৮০৪ জন। নতুন করে নয়টি দেশে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে, ব্রাজিল (১), ডেনমার্ক (১), এস্তোনিয়া (১), জর্জিয়া(১), গ্রিস (১), নরওয়ে (১), পাকিস্তান (২), রোমানিয়া (১), উত্তর মেসিডোনিয়া (১)।

-এ

The post ‘সর্বোচ্চ ঝুঁকি’ হিসেবে করোনাভাইরাসকে চিহ্নিত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%b8%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%ac%e0%a7%8b%e0%a6%9a%e0%a7%8d%e0%a6%9a-%e0%a6%9d%e0%a7%81%e0%a6%81%e0%a6%95%e0%a6%bf-%e0%a6%b9%e0%a6%bf%e0%a6%b8%e0%a7%87%e0%a6%ac%e0%a7%87/

পাঠ্যসূচিতে ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’র অন্তর্ভুক্তি চেয়ে আইনি নোটিশ

ফাতেহ ডেস্ক

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ বইটি পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করতে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তানজিম আল ইসলাম শিক্ষাসচিব, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের চেয়ারম্যানকে এ নোটিশ পাঠান।

নোটিশে বঙ্গবন্ধুর লেখা ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ গ্রন্থের কিছু অংশ উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে এবং বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের প্রতিটি বিভাগে পাঠ্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে প্রয়োজনীয় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়েছে।

নোটিশকারী উল্লেখ করেন, ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ বইটি উচ্চ মাধ্যমিক এবং বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে পাঠ্য করার বিষয়ে উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কয়েকজন অধ্যক্ষকে নিয়ে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে কয়েকজন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান এবং সাবেক কয়েকজন ভাইস চ্যান্সেলরকে (উপাচার্য) নিয়ে একটি বিশেষ কমিটি গঠন করে তাদের মতামত নিয়ে বিষয়টি চূড়ান্ত করার জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে।

অন্যথায় এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে উচ্চ আদালতে রিট আবেদন করা হবে বলে জানান অ্যাডভোকেট তানজিম আল ইসলাম।

-এ

The post পাঠ্যসূচিতে ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’র অন্তর্ভুক্তি চেয়ে আইনি নোটিশ appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%aa%e0%a6%be%e0%a6%a0%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%b8%e0%a7%82%e0%a6%9a%e0%a6%bf%e0%a6%a4%e0%a7%87-%e0%a6%85%e0%a6%b8%e0%a6%ae%e0%a6%be%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%a4-%e0%a6%86%e0%a6%a4%e0%a7%8d/

নিহত ৩৪ তুর্কি সেনার দায় নেবে না রাশিয়া

ফাতেহ ডেস্ক

সিরিয়ায় বিমান হামলায় নিহত ৩৪ তুর্কি সেনার দায় নেবে না রাশিয়া। শুক্রবার রাশিয়ান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতির মাধ্যমে এ তথ্য জানায়। খবর এবিসি নিউজ।

গতকাল সিরিয়ার ইদলিব প্রদেশে বিমান হামলায় ৩৪ তুর্কি সেনার সদস্য নিহত হয়। আহত হয়েছে ৫০ এর অধিক সেনা সদস্য। এ হামলার পর তুরস্ক দাবি করে, সিরিয়ার আকাশে সিরীয় বিমানের পাশাপাশি রাশিয়ার বিমানও ছিল। সেসব বিমান থেকে কিছু বোমাও ফেলা হয়।

তবে তুরস্কের এমন অভিযোগ নাকচ করেছে রাশিয়া। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, গতকাল বৃহস্পতিবার সিরিয়ার ইদলিব প্রদেশে তুর্কি সেনাদের লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালানো হয়। এ ঘটনায় রাশিয়ার কোনো বিমান অংশ নেয়নি। সিরিয়ার বিমান ওই হামলাগুলো করেছে। হতাহতের ঘটনার জন্য তুর্কি সেনারাই দায়ী। কারণ তারা ওই হামলা সম্পর্কে রাশিয়াকে কিছুই জানায়নি। যদি তারা তাদের অবস্থান সম্পর্কে আমাদের জানাতো তাহলে হয়তো এতো ক্ষয়ক্ষতি হতো না।

এতে আরো বলা হয়, রাশিয়ার কাছে এ ঘটনার খবর আসার পরপরই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। যার কারণে তুর্কি সেনারা সেখান থেকে সরে যেতে পেরেছে।

-এ

The post নিহত ৩৪ তুর্কি সেনার দায় নেবে না রাশিয়া appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%a8%e0%a6%bf%e0%a6%b9%e0%a6%a4-%e0%a7%a9%e0%a7%aa-%e0%a6%a4%e0%a7%81%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%95%e0%a6%bf-%e0%a6%b8%e0%a7%87%e0%a6%a8%e0%a6%be%e0%a6%b0-%e0%a6%a6%e0%a6%be%e0%a7%9f-%e0%a6%a8/

তুর্কি হামলায় তিন শতাধিক সৈনিক নিহত ও বিপুল ক্ষয়ক্ষতি বাশার বাহিনীর (ভিডিও)

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

পাল্টা হামলায় বাশার বাহিনীর ৩০৯ সৈন্য হত্যা, ২৩ টি ট্যাংক, ২৩ টি আর্টিলারি ইউনিট ও ২ টি বিমান-প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ধংস করাসহ পাঁচটি হেলিক্যাপ্টার ভূপাতিত করেছে তুরস্ক।

আনাদুলা এজেন্সির বরাতে আহবাল জানায়, তুর্কি প্রতিরক্ষামন্ত্রী খুলুসী আকার আজ বৃহস্পতিবার বলেন, অন্যায়ভাবে ইদলিবে তুর্কি সেনাদের ওপর বাশার বাহিনীর পাল্টা জবাব তুরস্ক দিযেছে। আজ ২৮ ফেব্রুয়ারী হামলায় বাশার বাহিনীর ৩০৯ সৈন্যকে হত্যা, ২৩ টি ট্যাংক, ২৩ টি আর্টিলারি ইউনিট ও ২ টি বিমান-প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ধংসকরাসহ পাঁচটি হেলিক্যাপ্টার ভূপাতিত করেছে তুরস্ক।

আনাদুলা এজেন্সি একটি ভিডিও ক্লিপ প্রকাশ করে, যেখানে দেখা যায়, তুর্কি বাহিনী বাশার বাহিনীর ওপর এয়ার স্ট্রাইক চালাচ্ছে।

দেখুন-ভিডিও

The post তুর্কি হামলায় তিন শতাধিক সৈনিক নিহত ও বিপুল ক্ষয়ক্ষতি বাশার বাহিনীর (ভিডিও) appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%a4%e0%a7%81%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%95%e0%a6%bf-%e0%a6%b9%e0%a6%be%e0%a6%ae%e0%a6%b2%e0%a6%be%e0%a7%9f-%e0%a6%a4%e0%a6%bf%e0%a6%a8-%e0%a6%b6%e0%a6%a4%e0%a6%be%e0%a6%a7%e0%a6%bf%e0%a6%95/

আত্মপরিচয় প্রশ্ন : ধর্মনিরপেক্ষতার বিপদ

ইফতেখার জামিল :

ধর্মনিরপেক্ষতা সমকালীন মুসলিম চিন্তায় এক বিশেষ প্রশ্ন ও সংশয় তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে। যে প্রশ্ন ও সংশয়ে মুসলমানরা নিজেদের ইসলামি পরিচয় ও বক্তব্যে দ্বিধা করতে শুরু করেছে; তারা নাস্তিক বা অমুসলিম হয়ে যায় নি, ইসলামকে গুরুত্বহীনও মনে করে নি, তবে জনপরিসরে তাত্ত্বিক ও রাজনৈতিক গ্রহণযোগ্যতার জন্য ইসলামি পরিচয় ও বক্তব্যের বিকল্প অনুসন্ধানকে জরুরী মনে করছে। এক কথায় একেই আত্মপরিচয় প্রশ্ন ও সংশয় হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়।

আত্মপরিচয় কেন গুরুত্বপূর্ণ?

যে কোন সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রকল্পে আত্মপরিচয়ের প্রশ্ন পরিষ্কার থাকা অনেক বেশী জরুরী; আপনি কে, কেন ও কী বক্তব্য পেশ করবেন, আত্মপরিচয়ে তার প্রস্তাবনা থাকে। আত্মপরিচয় থেকেই প্রকল্প তার তাত্ত্বিক ও রাজনৈতিক বৈধতাগ্রহণ করে। আত্মপরিচয়ের পাটাতনে দাঁড়িয়ে সাহিত্য, ইতিহাস ও ঐতিহ্য থেকে বক্তব্য তৈরি করা যায়। পাশাপাশি আত্মপরিচয়ে বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর সাথে সংযোগ ও সম্পর্কের প্রশ্নেরও প্রাথমিক ও মৌলিক সমাধান থাকে।

আত্মপরিচয়ের প্রস্তাবনা পরিষ্কার না থাকলে বহির্গত বিজয়ী সংস্কৃতির মাধ্যমে প্রভাবিত হওয়ার আশঙ্কা প্রবল হয়। মানুষ বিজয়ী সংস্কৃতির মোকাবেলার যুক্তি ও বৈধতা তৈরি করতে পারে না। স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় ধীরে ধীরে বিজয়ীর সংস্কৃতি ও পরিচয় গ্রহণ করে। তখন মোকাবেলার কোনো অর্থ বাকি থাকে না। বহির্গত আগ্রাসন নিছক রাজনৈতিক সংঘর্ষ হিসেবে আখ্যা পেতে থাকে। একে দখল ও জুলুম হিসেবে দেখার প্রবণতা শেষ হয়ে যায়।

এর পাশাপাশি আত্মপরিচয়ের প্রস্তাব পরিষ্কার না থাকলে নতুন কোনো সামাজিক বা রাজনৈতিক আন্দোলনের প্রস্তাব বা প্রস্তাবের প্রয়োজন প্রমাণ করা যায় না। কেননা আত্মপরিচয়ের প্রশ্ন নতুন আন্দোলনের ফাউন্ডেশন ও ভিতের মতো কাজ করে। ফাউন্ডেশন ও ভিত ছাড়া যেমন বড় ইমারত গড়া যায় না, তেমনি আত্মপরিচয়ের ভিত্তি ছাড়া কোনো আন্দোলন গড়ে তোলা সম্ভব নয়। সামাজিক জীবনের ক্লান্তি ও রাজনৈতিক পরাজয় পার্থিব জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ, আত্মপরিচয় ছাড়া মানুষ ব্যর্থতা ভুলতে পারে না। ইতিবাচক ও ঝুঁকিপূর্ণ সিদ্ধান্তগ্রহণ করতে পারে না।

ইসলাম ও আত্মপরিচয়

সাম্প্রতিককালের আগে মুসলমানদের আত্মপরিচয় কী, এই প্রশ্ন অর্থহীন ও অপ্রয়োজনীয় ছিল। কেননা মুসলমানদের মধ্যে এ নিয়ে কোনো সংশয় ও প্রশ্ন ছিল না। মুসলমানদের পরিচয় তারা মুসলমান, তাদের একমাত্র প্রস্তাবনা তো ইসলাম; আগে নাস্তিকতা ও ফাসেকি ছাড়া এই বাক্যে কারো কোনো সংশয় ছিল না। বরং মুসলমানরা এই বাক্যের বিশেষ তাত্ত্বিক প্রস্তাবনা দাঁড় করিয়েছিল, যাকে ওয়ালা-বারা নামে আখ্যা দেওয়া হয়। এখন, ফাসেক-ফুজ্জাররা তো বটেই, অনেক নিয়মিত ধার্মিক মুসলমানরাও মুসলিম পরিচয়ে সংশয় পোষণ করেন। স্বতন্ত্র জাতীয়তাবাদী পরিচয় গ্রহণের চেষ্টা করেন।

মানুষের একাধিক ঠিকানা থাকতে পারে, কাল-দেশ-ভাষা ভেদ মানুষের পার্থিব জীবনের মৌলিক বৈশিষ্ট্য। এসব ঠিকানা বা পরিচয়ে জাতীয়তাবাদ হয় না। জাতীয়তাবাদ মানে আপনি আপনার জাতীয় পরিচয়কে মৌল ভিত্তি হিসেবে দেখছেন, আপনি আপনার ভাষা, দেশ বা জাতিভিত্তিক বর্গকে মনে করেন সকল প্রশ্নের ঊর্ধ্বে; আপনি এখানে কোনো বিবেচনা বা পর্যালোচনায় আগ্রহী না। পর্যালোচনাহীন অন্ধ জাতিগত প্রস্তাবে ধর্মও জাতীয়তাবাদে রূপান্তরিত হয় বা হতে পারে।

ধর্মনিরপেক্ষতাবাদীরা ধর্মীয় জাতিবাদের সমালোচনা করলেও স্বয়ং নিজেরা কখনো জাতীয়তাবাদ থেকে বের হতে পারে না। এটা শুধু সততার প্রশ্নই নয়, মানুষের আদর্শিক ভিত্তি না থাকলে জাতীয়তাবাদই হয়ে ওঠে তার অস্তিত্ব, বৈধতা, আবেগ ও প্রয়োজনীয়তার মূল প্রস্তাব। সৃষ্টির শুরু-শেষ ও জীবন-জগতের মর্ম ব্যাখ্যা ছাড়া মানুষের অস্তিত্বের প্রশ্নের উত্তর অনুসন্ধান সম্ভব নয়। এভাবে আধুনিক ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ অল্প কিছু ব্যতিক্রম বাদ দিলে জাতীয়তাবাদের ভিত্তি ও সমর্থন ছাড়া টিকে থাকতে পারে না।

ইসলাম জাতীয়তাবাদকে জাহেলিয়াত হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। নবীজি বলেন, হে মানব সম্প্রদায়, তোমাদের রব একজন, আদিপিতাও একজন, কোনো আরবের ওপর অনারবের, কোনো অনারবের ওপর আরবের, কোনো সাদার ওপর কালোর, কোনো কালোর ওপর সাদার প্রাধান্য নাই–শুধু তাকওয়া ও ধার্মিকতাই তোমাদের মধ্যে প্রাধান্যতার মাপকাঠি হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। বিলাল রাদিয়াল্লাহু আনহুকে কালো বলে ঠাট্টা করা হলে নবীজি একে জাহেলিয়াত হিসেবে আখ্যা দেন।

নবীজি ইরশাদ করেন, মহান আল্লাহ তোমাদের জাহিলী যুগের মিথ্যা অহংকার ও পূর্বপুরুষদেরকে নিয়ে গর্ব করার প্রথাকে বিলুপ্ত করেছেন। মু’মিন হলো আল্লাহভীরু আর পাপী হলো দুর্ভাগা। তোমরা সকলে আদম সন্তান আর আদম আলায়হিস সালাম মাটির তৈরি। লোকদের উচিৎ বিশেষ গোত্রের ভুক্ত হওয়াকে কেন্দ্র করে অহংকার না করা। এখন তো তারা জাহান্নামের কয়লায় পরিণত হয়েছে। অন্যথায় তোমরা মহান আল্লাহর নিকট ময়লার সেই কীটের চেয়েও জঘন্য গণ্য হবে যে তার নাক দিয়ে ময়লা ঠেলে নিয়ে যায়।

পাশাপাশি নবীজি মুসলমানদেরকে একক দেহের সাথে তুলনা দিয়েছেন, বিভক্তি ও অনৈক্যে ব্যাপক তিরস্কার করে আল্লাহর রজ্জুতে ঐক্যবদ্ধ হতে নির্দেশ দিয়েছেন। ওমর রাদি. নবীজির কাছে আসমানি কিতাবের বক্তব্য পেশ করলে নবীজি প্রচণ্ড রাগান্বিত হয়ে বলে উঠেন, এখন মুসা আলায়হিস সালম জীবিত থাকলেও আমার অনুসরণ করতেন। আল্লাহ ও রাসুলের ভালোবাসা ও আনুগত্যকে সবার আগে প্রাধান্য না দিলে ঈমান পরিপূর্ণ হবে না বলে সতর্ক করেছেন।

মোটকথা ইসলামি ইতিহাস ও চিন্তায় ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক পরিচয়, ঐক্য ও বক্তব্যকে আত্মপরিচয় হিসেবে আখ্যাদানের কোনো নিশানা পাওয়া যায় না।

যেভাবে আধুনিক আত্মপরিচয়ের সূচনা ও বিকাশ

বর্তমান পশ্চিমা সভ্যতা একসময় রোমান সাম্রাজ্যের অধীনে ছিল। যে সাম্রাজ্য নিছক ক্ষমতা ও আভিজাত্য দিয়ে একটা বিশাল অঞ্চল দখল করে রেখেছিল। মানুষ রোমান পরিচয়কে আত্মপরিচয় হিসেবে গ্রহণ করতে পারেনি। বরং প্রতিরোধ প্রকল্পে তাদের মধ্যে বিশেষভাবে জাতীয়তাবাদী চিন্তার প্রভাব ছিল। যদিও ৩২৫ খ্রিষ্টাব্দে রোমান সম্রাট খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করেন, তবে যেহেতু খ্রিষ্টধর্ম ঈসা আলায়হিস সালামের পরে বিকৃত হয়ে গিয়েছিল, তাই তার পক্ষে সামগ্রিকভাবে জাতীয়তাবাদের মোকাবেলা করা সম্ভব হয়নি।

একদিকে খ্রিষ্টধর্ম হয়ে উঠেছিল ব্যক্তিকেন্দ্রিক ধর্ম, পাশাপাশি তাতে সামাজিক ও রাজনৈতিক আইন অন্তর্ভুক্ত ছিল না, রোমান আইনেই চলত রাষ্ট্র ও দণ্ডবিধি। পাশাপাশি ধর্মীয় ভাষা ল্যাটিন বা গ্রীক, যার সাথে বৃহত্তর রোমান জনগোষ্ঠীর কোনো সম্পর্ক ছিল না। এভাবে ভাষা, আইন ও ধার্মিকতায় রোমান জাতীয়তাবাদকে মোকাবেলার পূর্ণ সক্ষমতা রোমান খ্রিষ্টধর্মের মধ্যে মজুদ ছিল না। পোপের ক্ষমতা ও প্রভাব ছিল, তবে সে ছিল ব্যক্তিগত ধার্মিক নেতৃত্বে; রাষ্ট্রীয় আত্মপরিচয়ে নয়।

অবশ্য রোমান সাম্রাজ্যের পতনের পর পোপ ও গির্জাব্যবস্থা বৃহত্তর রাজনৈতিক ক্ষমতায় রূপান্তরিত হয়। তবে রাষ্ট্রীয় ও আইনি বিষয়ে স্পষ্ট ধর্মীয় নির্দেশনা না থাকায় গির্জার স্বেচ্ছাচারিতার পরিসর অনেক বিস্তৃত ছিল। অনেক দার্শনিক ও চিন্তাবিদের প্রস্তাবে গির্জা ক্ষুব্ধ হয়, ব্যাপক অত্যাচার চালায়, জান্নাতের বেচাকেনার ব্যবসা শুরু করে, ব্যাপক সম্পত্তির মালিক হয়ে ওঠে। ক্রুসেড যুদ্ধসহ অনেক ক্ষেত্রে গির্জার একটা প্রভাব ও ঐক্যব্যবস্থা জারি ছিল। অবশ্য একসময় এতে সামন্ত সর্দাররা আপত্তি জানায়। তারা অধিকতর ক্ষমতা, সম্পদ ও ভূমির মালিকানা দাবি করে।

ক্রমশ আধুনিক দার্শনিক ও চিন্তাবিদদের সাথে সামন্ত সর্দারদের যোগসূত্রে গড়ে ওঠে আধুনিক আত্মপরিচয়, বিকল্প নাগরিকত্ব ও অধিকার ব্যবস্থা; ধর্মনিরপেক্ষ জাতীয়তাবাদ। ইউরোপ এই উগ্র জাতীয়তাবাদে ভুগেছেও অনেক। বছরের পর বছর রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে মেতেছে তারা। সর্বশেষ প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধও ছিল ইউরোপীয় জাতীয়তাবাদের বিস্তারের ফসল। আমার রক্ত ও রাষ্ট্রই শ্রেষ্ঠ; বংশ, গর্ব ও অহংকারে উন্মাদ হয়ে ওঠে ধর্মনিরপেক্ষ জাতীয়তাবাদ। যুদ্ধ ও গণহত্যার পরিসংখ্যানে দেখা যায়, মানব ইতিহাসে এই ধর্মনিরপেক্ষ জাতীয়তাবাদই সবচেয়ে বেশি হত্যাকাণ্ড ও ক্ষয়ক্ষতির জন্য দায়ী।

মুসলিম দেশগুলোতে ধর্মনিরপেক্ষ জাতীয়তাবাদ

ওপরের ব্যাখ্যায় স্পষ্টভাবে বোঝা যায়, ইসলাম কোনোভাবেই ধর্মনিরপেক্ষ জাতীয়তাবাদকে সমর্থন করতে পারে না। তবে গত শতকের ঐতিহাসিক ও রাজনৈতিক বাস্তবতায় মুসলিম দেশগুলোতে ধর্মনিরপেক্ষ জাতীয়তাবাদ আমদানি করা হয়। আগে যতবার পশ্চিমা শক্তিগুলো মুসলিম বিশ্বে আক্রমণ করেছে, ততবার শুধু সামরিক ও ধর্মীয় শক্তিতে জোর দিয়েছে। তবে এবার ধর্মীয় শক্তির পাশাপাশি ধর্মনিরপেক্ষ জাতীয়তাবাদে বিশেষভাবে জোর দিয়েছে; ‘মুসলমানদেরকে দীর্ঘদিন পরাধীন রাখা বা ধর্মান্তরিত করা সম্ভব নয়, মূল আঘাত হানতে হবে চিন্তায়, মুসলমানরা নামে মুসলমান থাকবে, তবে তার আত্মপরিচয় আর ইসলাম থাকতে দেওয়া যাবে না।’

১৮৩৫ সালে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে দেয়া বক্তৃতায় টমাস র‌্যাবিংটন মেকলে নীতিনির্ধারণী এক মিটিংয়ে বলেন, ‘বর্তমানে আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে এমন একটি শ্রেণী তৈরি করতে, যারা আমাদের এবং আমরা যাদের শাসন করছি তাদের মাঝে ব্যাখ্যাকার (দালাল) হিসেবে কাজ করবে। এটি এমন মানুষের শ্রেণী যারা রক্ত এবং বর্ণে ভারতীয়; কিন্তু রুচিতে, মতামতে, মূল্যবোধে এবং বুদ্ধিবৃত্তিতে হবে ইংলিশ’। তার এ বক্তৃতার মধ্য দিয়েই পশ্চিমা উপনিবেশের আসল উদ্দেশ্য স্পষ্ট হয়ে ওঠে। ধর্মনিরপেক্ষ জাতীয়তাবাদ ও ইসলামি আত্মপরিচয়ের সম্পর্ক ও সংঘর্ষ বুঝতে এই বক্তব্য বিশেষভাবে প্রাসঙ্গিক।

এভাবে মুসলমানরা উপনিবেশের বিরুদ্ধে যে লড়াই করেছে, সেটার নাম হয়েছে স্বাধীনতা যুদ্ধ, ইসলাম নয় ধর্মীয় জাতীয়তাবাদকে কেন্দ্রীয় ভিত্তি ও মেটাফর হিসেবে সামনে আনা হয়েছে। একে মনে করা হয়েছে রাজনৈতিক লড়াই, আদর্শিক ও ধর্মীয় যুদ্ধ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। তাতে শারীরিকভাবে উপনিবেশের পতন ঘটলেও রয়ে গেছে তার মগজ ও চিন্তা। বাংলাদেশের ইতিহাসের দৃষ্টান্তেও এটি স্পষ্ট হয়ে উঠবে।

বাংলাদেশ থেকে ব্রিটিশদের চলে যাবার পরেও রাষ্ট্র চালিয়েছে ব্রিটিশ প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা, আইন ও অর্থনীতিতে পরিবর্তন আসেনি। শিক্ষক, শিক্ষাব্যবস্থা, সিলেবাস ও কর্মসংস্থানে ভিন্নতা আসেনি। যে পাকিস্তান ইসলামের জাতিবাদী ও ধর্মীয় মিশ্র পরিচয়ে ব্রিটিশদের থেকে স্বাধীনতা লাভ করেছিল, তারা শাসক ও বিরোধীদল হিসেবে ইসলামকে প্রধান ও একমাত্র মাপকাঠি হিসেবে গ্রহণ করেনি। তাতে হয়েছে বড় রাজনৈতিক বিপর্যয়। পরবর্তীতে মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় চাপে ধর্মনিরপেক্ষ জাতীয়তাবাদকে সংবিধানের ভিত্তি বানাতে বাধ্য হয় বাংলাদেশ।

আধুনিক নাগরিকত্ব, ধর্মনিরপেক্ষ জাতীয়তাবাদ ও ইসলাম

ধর্মনিরপেক্ষ জাতীয়তাবাদ নাগরিকত্ব চিন্তার প্রস্তাব করেছে। তার প্রস্তাবে সামাজিক চুক্তির ভিত্তিতে নাগরিকত্ব রাষ্ট্র ও জনগণের মধ্যে সম্পর্ক নির্ধারণ করবে, এখানে ধর্মের কোন ভূমিকা থাকবে না। এভাবে রাষ্ট্রীয় আইন, প্রশাসন, শিক্ষা, অর্থনীতি ও অধিকারে ধর্মীয় পরিচয়ের প্রশ্ন গৌণ হয়ে যাবে। ধর্মকে সাম্প্রদায়িকতা হিসেবে আখ্যা দেওয়া হবে। ধর্মনিরপেক্ষ জাতীয়তাবাদ, তাদের মতে, নিরপেক্ষতার মাপকাঠি।

মুশকিল হচ্ছে, এই নাগরিকত্বের নিয়ন্ত্রণ টমাস র‌্যাবিংটন মেকলে কথিত দালালদের হাতে। তারা সাধারণ জনগণের সামনে দু’টি বিকল্প প্রস্তাব পেশ করে। এক, সামগ্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা ও নজরদারি। দুই, অনিয়ন্ত্রিত ভোগ।

আপনার কাছে ধর্মীয় পরিচয় নেই তো কী হয়েছে, রাষ্ট্র আপনার সবকিছু ঠিক করে দেবে। আপনি কত বছর বয়সে বিয়ে করবেন, কেমন শিক্ষাগ্রহণে আপনি চাকরী পাবেন, কেমন আইনে আপনার চলতে হবে, আপনার টিভিতে কোন চ্যানেল চলতে পারে, কোন বই ও পোশাক আপনি পরতে পারবেন, এ সব রাষ্ট্র আপনাকে ঠিক করে দেবে। তার বাইরে গেলেই আপনি জঙ্গি ও রাষ্ট্রবিরোধী বলে চিহ্নিত হবেন। বাকি সবকিছু রাষ্ট্রবিরোধী। মসজিদের বক্তব্য ও ধর্মীয় ব্যাখ্যাতেও রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ থাকবে।

বিনিময়ে রাষ্ট্র আপনাকে ভোগের সুযোগ দেবে। এখন ফার্স্টফুডের দোকানের ব্যাপক বিস্তার ঘটেছে। আপনি মুরগির গোশত খেতেই পারেন, তবে কোরবানি করলে সেখানে অনেকের আপত্তি তৈরি হবে। পতিতালয় এখন আইনিভাবে বৈধ, পতিতাবৃত্তিকে ঘৃণা করলে আপনি মানবতাকেই ঘৃণা করলেন, আপনি প্রেম করতে পারবেন, অবৈধ সঙ্গমেও রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ নেই, যত অসুবিধা বৈধ বিবাহে। আপনি পর্ণ দেখতে পারেন, সেটা আপনার ব্যক্তিগত ইচ্ছা, তবে স্কুলে আপনাকে নির্দিষ্ট পোশাক পরেই আসতে হবে। বোরকা বা হিজাবে রাষ্ট্র আপত্তি করতে পরে।

এভাবে তলিয়ে দেখলে বোঝা যাবে এসবই ধর্মনিরপেক্ষতার মুসিবত। এখানে আরও বেশকিছু প্রসঙ্গ রয়ে গেছে; সংখ্যালঘু ইস্যু ও জাতীয়তাবাদের ইসলামায়নের অপচেষ্টা; সামনে কখনো বিস্তারিত আলোচনার ইচ্ছা রইল।

(আলমানাতু মিনাদ দাখেলের মুশকিলাতুল হুবিউয়াহ অবলম্বনে)

The post আত্মপরিচয় প্রশ্ন : ধর্মনিরপেক্ষতার বিপদ appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%86%e0%a6%a4%e0%a7%8d%e0%a6%ae%e0%a6%aa%e0%a6%b0%e0%a6%bf%e0%a6%9a%e0%a7%9f-%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%b6%e0%a7%8d%e0%a6%a8-%e0%a6%a7%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%ae%e0%a6%a8%e0%a6%bf/

ভারত ও বাংলাদেশে ধর্মনিরপেক্ষতার তর্ক: আল মাসিরীর বিকল্প প্রস্তাব

রাকিবুল হাসান:

বাংলাদেশ এবং ভারত উভয় দেশের সংবিধানই এখন ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলে। বাংলাদেশের সংবিধান গৃহীত হয় ১৯৭২ সালের ৪ ডিসেম্বর। মৌলিক নীতি হিসেবে সংবিধানে উল্লেখ করা হয় জাতীয়তা, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার। যদিও গবেষকদের মতে ধর্মনিরপেক্ষতা মুক্তিযুদ্ধের মূল প্রতিশ্রুতিতে বর্ণিত ছিল না। অন্যদিকে ভারতের সংবিধানে ১৯৭৬ সালে ৪২ তম সংশোধনীর মাধ্যমে ধর্মনিপেক্ষতা যুক্ত হয়। এই ধর্মনিরপেক্ষতার অর্থ সংবিধানের মৌলিক অধিকারমালার মধ্যে ব্যক্তিমানুষের ধর্মীয় স্বাধীনতার উপর বিশেষ গুরুত্ব দেয়া।

ভারত-বাংলাদেশে ধর্মনিরপেক্ষতার স্বরূপ

ইংরেজি Secularism শব্দের বাংলারূপ হচ্ছে ধর্মনিরপেক্ষতা, আরবীতে যাকে বলা হয় ‘আলআলমানিয়্যাহ’। যদিও এই অনুবাদ নিয়ে অনেক গবেষক প্রশ্ন তুলেন। তাদের মতে নিরপেক্ষতার চেয়ে ধর্মহীনতাই Secularism মূল মর্ম।

২০১২ সালে জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী সাহেবের সম্পাদনায় প্রকাশিত বাংলা একাডেমীর ইংলিশ-বাংলা ডিকশনারীতে বলা হয়েছে—Secular-(অর্থ) পার্থিব, ইহজাগতিকতা, জড়, জাগতিক। Secular State ‘গীর্জার সঙ্গে বৈপরিত্যক্রমে রাষ্ট্র’। এ অর্থ অনুযায়ী মুসলিম দেশে এর ব্যাখ্যা হবে মসজিদের সঙ্গে বৈপরিত্যক্রমে রাষ্ট্র। Secularism নৈতিকতা ও শিক্ষা ধর্মকেন্দ্রিক হওয়া উচিৎ নয়-এই মতবাদ। জাগতিকতা, ইহবাদ।

স্যাকুলারিজম অর্থাৎ ধর্মনিরপেক্ষতার এইসব অর্থের দিকে তাকালে বাংলাদেশ ও ভারতে ধর্মনিরপেক্ষতা ইসলামের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে যায়। ইসলাম যেমন এই অর্থে ধর্মনিরপেক্ষতাকে তার বিরোধী এবং বিপক্ষ মনে করে, তেমনি ধর্মনিরপেক্ষতাও মূলত ইসলামকেই বিরোধী মনে করে। ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলে প্রকৃতপক্ষে সবাই ইসলামকেই তাড়াতে চায়। কেননা ইসলাম ছাড়া অন্য কোন ধর্মে রাষ্ট্র ও রাজনীতি সম্পর্কে বিস্তারিত নীতিমালা নেই, একই কারণে অন্য ধর্মগুলো ইসলামের মতো ধর্মনিরপেক্ষতার সমালোচনাও করে না।  উদাহরণ হিসেবে ভারতের সংবিধানের দিকে তাকানো যায়।

ভারতের সংবিধানে সব ধর্মের সমান অধিকারের কথা বলা হলেও আইন ব্যবস্থা হিন্দুধর্মাবলম্বীদের প্রতি পক্ষপাতদুষ্ট। যেমন সংবিধানের ১৫ (৪) এবং ১৬ (৪) ধারায় পিছিয়ে পড়া শ্রেণীদের জন্য শিক্ষা ও চাকুরীতে যে সংরক্ষণের অধিকার আছে, সরকারি নীতিতে এবং আইনে তা শুধু হিন্দু হিন্দুধর্মাবলম্বীদের জন্যই প্রয়োগ করা হয়, পিছিয়ে পড়া মুসলিম বা খ্রিস্টানদের জন্য তা প্রয়োগ করা হয় না। হিন্দুধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলিকে সরকারি অনুদানের ব্যবস্থা রয়েছে, অথচ মুসলিমদের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলিকে সেরকম অনুদানের কোনও বিধি নেই। আবার অবিভক্ত হিন্দু পরিবারের জন্য আয়কর আইনে কয়েকটি বিশেষ সুবিধা দেওয়া হয়েছে, যা অন্য ধর্মের মানুষের ক্ষেত্রে নেই। সর্বশেষ নাগরিকত্ব আইনে সব ধর্মের লোকদের সুবিধা দেয়া হলেও বাদ দেয়া হয়েছে মুসলিমদের। বাংলাদেশেও এমন বৈষম্য হচ্ছে কোথাও কোথাও।

অর্থাৎ ধর্মনিরপেক্ষতা বলতেই যেন আজ শুধু ইসলামহীন এক মতবাদ। উইকিপিডিয়ায় স্যাকুলারিজমের এক ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে ‘এন্টি ইসলাম’। সুতরাং এন্টি ইসলাম ইক্যুয়েল টু স্যাকুলারিজম।

আল মাসিরীর বিকল্প প্রস্তাব

স্যাকুলারিজমের যে অর্থ ও সংজ্ঞা উপরে বর্ণিত হয়েছে, মিসরের বিখ্যাত চিন্তাবিদ আবদুল ওহহাব আল মাসিরী তারচেয়েও বিস্তৃত অর্থ ও সংজ্ঞা বর্ণনা করেছেন। তার মতে, উপরে যা বর্ণিত হয়েছে, তা মূলত স্যাকুলারিজমের শাস্ত্রীয় অর্থ ও সংজ্ঞা। কিন্তু মনে রাখতে হবে, একটি শব্দ যখন কালপরিক্রমায় ব্যাপকতা লাভ করে, তখন শব্দের অর্থও ব্যাপকতা লাভ করে। তাই ‘রাষ্ট্র থেকে ধর্মকে আলাদা করে দেওয়া’/ ‘নৈতিক শিক্ষা ধর্মের ভিত্তিতে না হওয়া’ স্যাকুলারিজমের এই সংজ্ঞাগুলোও ঠিক থাকবে না।

কারণ কালপরিক্রমায় স্যাকুলারিজমের অর্থেও প্রবৃদ্ধি ঘটেছে। শব্দটি এখন আর রাষ্ট্রকে ধর্ম থেকে আলাদা করার সাথেই সীমাবদ্ধ না। বরং বরং তার অর্থ আরও বিস্তৃত, আরও সংগঠিত, আরও পরিপাটি হয়েছে। সুতরাং পুরোনো দৃষ্টিভঙ্গি ঝেড়ে ফেলে ধর্মনিরপেক্ষতার দিকে এখন নতুন দৃষ্টিতে তাকাতে হবে। নতুন সংজ্ঞা এবং নতুন অর্থ ও ক্ষেত্র খুঁজে বের করতে হবে।

দুটি কারণে মূলত আল মাসিরী ধর্মনিরপেক্ষতার দিকে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে তাকিয়েছেন। আসলে তাকাতে বাধ্য হয়েছেন।

ক)  ইউরোপীয় এনলাইটেনমেন্টের আশ্রয়েই ধর্মনিরপেক্ষতার জন্ম। কিন্তু এই এনলাইটেনমেন্টের আলোয় জন্ম নেয়া ধর্মনিরপেক্ষতা মানুষের মনে এবং প্রাত্যহিক জীবনে শান্তির বদলে আরও অস্থিরতা তৈরী করেছে। স্যাকুলারাইজেশন প্রক্রিয়ার অধীনে আস্থার সংকট, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি, নন-আদর্শিক মূল্যবোধ-সহ আরও অনেক জিনিস মানুষের দুর্দশা কেবল বাড়িয়েছে, কমায়নি। কারণ এখানে সেবার চেয়ে স্বার্থটা বেশি।

খ) ম্যক্স হর্কিহিমার ‘এনলাইটেনমেন্ট বিতর্ক’ বইয়ে বলেছেন, এনলাইটেনমেন্ট এটা একটা জ্ঞানীয় বৃত্তের বাইরে গিয়ে একটা মতাদর্শে পরিণত হয়েছে। যেই মতাদর্শকে প্রতিষ্ঠিত করেছে মেকি অভিনয়ের সিনেমা, রেডিও এবং বিভিন্ন সাংস্কৃতিক প্রোগ্রাম। এই বিষয়টি মাসিরীকে সন্দেহবাতিক করে তুলেছে—ধর্মনিরপেক্ষতা হলো যা ধর্ম নিরপেক্ষ হবে। কিন্তু এনলাইটেনমেন্টের তৈরী এই ধর্মনিরপেক্ষতা তো রাজনীতি থেকে ধর্মকে আলাদাই করে দিচ্ছে। এ যেন আরেক স্বৈরাচার। ধর্মহীন মানুষের ধর্মবাসনা।

এই বিষয়গুলোর কারণেই মূলত আল মাসিরী ধর্মনিরপেক্ষতার নিয়ে নতুন করে ভাবতে শুরু করেছেন। নতুন এক প্রস্তাব রেখেছেন পুরো বিশ্বের সামনে।

ধর্মনিরপেক্ষতার প্রকার

স্যাকুলারিজম অর্থাৎ ধর্মনিরপেক্ষতার শুধু ব্যাপকতা নিয়ে আলোচনা করেননি আল মাসিরী, বরং ধর্মনিরপেক্ষতার ভাগ ও পুনঃনামকরণ করেছেন তিনি। অর্থের ব্যাপকতার কারণেই তিনি এই ভাগ করেছেন।

ধর্মনিরপেক্ষতার দুটো ভাগ করেছেন তিনি। ১. আংশিক ধর্মনিরপেক্ষতা। ২. পূর্ণ ধর্মনিরপেক্ষতা। ‘রাষ্ট্র কিংবা অর্থনীতি থেকে ধর্মকে আলাদা করা’ হলো আংশিক ধর্মনিরপেক্ষতা। আর পূর্ণ ধর্মনিরপেক্ষতায় জড়িয়ে আছে একটি মানুষের পুরো লাইফস্টাইল। অর্থাৎ শুধু রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে নয়, বরং ব্যক্তিগত জীবনেও যদি ধর্মের আইনকে উপেক্ষা করে, চারিত্রিক পবিত্রতা নষ্ট করে, তাকেই পূর্ণ ধর্মনিরপেক্ষতার কাতারে ফেলা হবে। যেমন কেউ আমেরিকান মুভি দেখে, ডেশিং টি শার্ট পরে, যৌন উদ্দীপক বিজ্ঞাপন দেখে, এমনকি পর্ণগ্রাফির বিজ্ঞাপনও যদি দেখে, সেই প্রকৃত ধর্মনিরপেক্ষ বা পূর্ণ ধর্মনিরপেক্ষ।

সুতরাং ধর্মনিরপেক্ষতা কেবল রাজনীতি ও অর্থনীতির মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। এর পাশাপাশি ব্যক্তি জীবনে হস্তক্ষেপ করাও এর এক বিশেষ বৈশিষ্ট্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাষ্ট্র এত বিশাল ও বিপুল হয়ে উঠেছে যে, রাষ্ট্র থেকে ধর্মীয় বিশ্বাস পৃথক রাখা দূরে থাক, এখন ব্যক্তি থেকে রাষ্ট্রকে আলাদা করা যাচ্ছে না। ব্যক্তি চাইলেও স্বাধীনভাবে ধর্মবিশ্বাস পালন করতে পারছে না। যেমন কিছু কিছু ব্যবস্থা বস্তুবাদী সেকুলার দার্শনিক কাঠামোতেই গড়ে ওঠে, যাকে নাস্তিক্যবাদ বলা যায়।  দৃষ্টান্ত হিসেবে জার্মানির নাৎসি শাসনব্যবস্থা, ইতালির ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থা এবং রাশিয়ায় স্টালিনবাদী শাসনব্যবস্থার কথা বলা যায়।

এজন্যই আল মাসিরী দুটো ভাগ করেছেন। প্রথম ভাগে রেখেছেন ধর্মনিরপেক্ষতার পুরোনো অর্থ। অর্থাৎ রাজনীতি ও অর্থনীতি থেকে ধর্মকে আলাদা করা। দ্বিতীয় ভাগে রেখেছেন তার নতুন প্রস্তাবকে। এখানে তিনি দেখিয়েছেন, ধর্মনিরপেক্ষতা কেবল রাজনীতিতেই সীমাবদ্ধ না, বরং ব্যক্তিজীবনের প্রতিটি আচরণের সঙ্গেই এটি ওতপ্রোতভাবে জড়িত।

ইসলামপন্থী এবং ধর্মনিরপেক্ষদের সমালোচনা

কিন্তু ধর্মনিরপেক্ষতার এই দিকটি একজন ইসলামি লোক যেমন জানে না, তেমনি একজন ধর্মনিরপেক্ষ লোকও জানে না। দুদল ধর্মনিরপেক্ষতাকে একই অর্থে দেখে; সেই পুরোনো অর্থ, পুরোনো সংজ্ঞা। ইসলামিরা ভাবে, ধর্মনিরপেক্ষতা ইসলামের বিরোধী। ধর্মনিরপেক্ষরা ভাবে, ধর্মনিরপেক্ষতাই গণতন্ত্র, উন্নতি ও সমৃদ্ধির মাধ্যম। এই দুদলের পুরোনো দৃষ্টিভঙ্গির বাইরে গিয়ে আল মাসিরী তৃতীয় একটি দৃষ্টিভঙ্গি নির্মাণ করেছেন। আর তা হলো—ধর্মনিরপেক্ষতা কেবল রাজনীতিতেই সীমাবদ্ধ নয়। বরং রাজনীতির বাইরেও যাবতীয় বিষয়ের সঙ্গে জড়িত আছে। যা তার ব্যক্তিগত জীবনে খুব সুক্ষ্ম প্রভাব ফেলে। যেমন পর্ণ দেখা; এটা রাজনীতির কোনো বিষয় না। কিন্তু তবুও আল মাসিরীর কাছে এটা ধর্মনিরপেক্ষতা। কারণ এটা মানুষের পবিত্রতা নষ্ট করে। মানুষকে বস্তুবাদী, প্রবৃত্তিপূজারী বানিয়ে ফেলে। এতে মানুষ ব্যক্তিগত কর্মকাণ্ডকে নৈতিক বিচারে বিচারের প্রয়োজনীয়তা হারিয়ে ফেলে।

সমাজবিজ্ঞানীরাও তাদের বইয়ে এই বিষয়টি কখনো উল্লেখ করে না। আংশিক এবং পুরোনো দৃষ্টিভঙ্গিকেই তারা ফুটিয়ে তুলে। এর বাইরে যে আমাদের বিস্তৃত জীবনে ধর্মনিরপেক্ষতার চর্চা করছি অজান্তে, তা তারা বরাবরই লুকিয়ে যায়। লুকিয়ে বড় একটি সত্য ঢেকে ফেলার এই প্রচেষ্টা মারাত্মক ভয়ংকর। সত্যটা সামনে না আসার কারণেই ইসলামপন্থীরা মনে করে, ধর্মনিরপেক্ষতার ষড়যন্ত্র কেবল সংবিধান ও সংসদেই সীমাবদ্ধ। অথচ তারা ব্যক্তিগত জীবনেও যে এর শিকার, এই সম্পর্কে উদাসীন।

শেষকথা

আল মাসিরী ধর্মনিরপেক্ষতার নতুন এই দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেছেন, যেন আমরা ধর্মনিরপেক্ষতার ভয়াবহতা সম্পর্কে আরও সচেতন হই। আরও তৎপর এবং সাবধানী হই। তার কাছে রাষ্ট্র থেকে ধর্ম আলাদা করার ঘোষণার নামই কেবল ধর্মনিরপেক্ষতা নয়। বরং কখনো এমন হতে পারে একটি সংগঠনের নাম ইসলামি। কিন্তু দেখা গেলো সংগঠনের কাজ ও কর্মীদের অধিকাংশই ধর্মনিরপেক্ষ। কখনো এমন হতে পারে একটি সংগঠনের নাম অনৈসলামি। কিন্তু সংগঠনের কর্মীরা অধিকাংশই ধর্মনিরপেক্ষ নয়। তাই চিন্তার দুয়ার উন্মুক্ত হওয়ার জন্যই আল মাসিরীর বিকল্প এই চিন্তা।

The post ভারত ও বাংলাদেশে ধর্মনিরপেক্ষতার তর্ক: আল মাসিরীর বিকল্প প্রস্তাব appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%ad%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a6%a4-%e0%a6%93-%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%82%e0%a6%b2%e0%a6%be%e0%a6%a6%e0%a7%87%e0%a6%b6%e0%a7%87-%e0%a6%a7%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%ae%e0%a6%a8%e0%a6%bf%e0%a6%b0-2/

ইসলামি মহলে ধর্মনিরপেক্ষতা: আলেমরা যেভাবে দেখেন

মুসান্না মেহবুব :

বাংলাদেশের ইসলামি ঘরানায় ধর্মনিরপেক্ষতার চর্চা কমবেশি হচ্ছে। কেউ এই মতবাদের ভুল ব্যাখ্যা দাঁড় করিয়ে, কেউ-বা একে ‘প্রকারান্তরে ইসলামি মতবাদ’ আখ্যা দিয়ে এর পক্ষে অবস্থান নিচ্ছেন এবং একে ঢালাওভাবে সমর্থন করছেন। আবার উল্লেখযোগ্য একটি অংশ সরাসরি এই মতবাদ সমর্থন না করলেও, মতবাদটির বিভিন্ন রীতি-রেওয়াজ তাঁরা পালন করছেন, কোনো কোনো ক্ষেত্রে এসব রীতি-রেওয়াজকে ইসলামাইজেশনেরও চেষ্টা করছেন। তবে ইসলাম বিষয়ে বিশেষজ্ঞ উলামায়ে কেরাম বরাবরই এই প্রবণতার বিরোধিতা করে আসছেন। তাঁরা ধর্মনিরপেক্ষ মতবাদকে ইসলামের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হিসেবেই দেখে থাকেন।

কিন্তু তারপরও বাংলাদেশের প্রচলিত ধারার ইসলামি রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অনেকে ধর্মনিরপেক্ষতার ব্যাপারে অনেকটাই শিথিল। এই শিথিলতা থেকে ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন থেকেও দূরে সরে যাচ্ছেন অনেকে। ধর্মনিরপেক্ষতার মতবাদে প্রভাবিত হয়ে ধর্ম ও মতাদর্শের উর্ধ্বে উঠে ধর্মনিরপেক্ষ রাজনৈতিক দল গঠনের চেষ্টা করছে একটি গোষ্ঠী। গত কিছু দিন আগে জামায়াতের দলছুট একজন নেতা এ রকম একটি দল গঠনের নিজস্ব প্রক্রিয়ার কথা জানিয়েছিলেন। উদ্দেশ্য এবং লক্ষ্য মহৎ থাকলেও তাঁর এই প্রক্রিয়াটা স্পষ্টতই ধর্মনিরপেক্ষতার চিন্তা থেকে অনুপ্রাণিত, মন্তব্য বিশ্লেষকদের।

ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের বিভিন্ন কাজ, কর্মসূচি এবং মতবাদটির তৈরি সম্মানিত স্থানগুলো নিয়েও ইসলামি মহলের রাজনৈতিক ঘরানায় সবিশেষ আগ্রহ লক্ষ্য করা যায়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে এসব কর্মসূচি ও সম্মানিত স্থানকে ইসলামিকরণেরও চেষ্টা করা হচ্ছে। গত একুশে ফেব্রুয়ারিতে একটি ইসলামি রাজনৈতিক দলের ছাত্র সংগঠন প্রভাত ফেরিতে শহিদ মিনারে ফুল অর্পণের বদলে কুরআন তেলাওয়াতের আয়োজন করে। কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় তাদের নেতাকর্মীরা শহিদ মিনারের সামনে বসে প্রভাত ফেরিতে কুরআন তেলাওয়াত করে। এ ছাড়া শহিদ মিনারে একই সংগঠনের নেতাকর্মীদের জামাতের সাথে নামাজ আদায়ের একটি ছবিও সেসময় ব্যাপকভাবে ভাইরাল হয়েছিল অনলাইনে। সমালোচকরা বলেন, ওই রাজনৈতিক দলের এসব কর্মসূচি মূলত ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের কার্যক্রমকে ইসলামিকরণের নামান্তর, যা মূলত একধরনের হীনমন্যতার পরিচায়ক।

ইসলামি মহলে ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের প্রভাব এতোটাই বিস্তৃতি লাভ করেছে যে, কিছুদিন আগে চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদরাসার একটি মাহফিলে ধর্মনিরপেক্ষতার বিশ্লেষণ করতে গিয়ে একজন আলেম কসম খেয়ে বলেন, ধর্মহীনতার নীতি কুফরি মতবাদ, কিন্তু ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি কুফরি মতবাদ নয়, বরং এটাই ইসলামি মতবাদ।

তবে তাঁর এ বক্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেছেন দেশের অনেক ওলামায়ে কেরাম। এ ছাড়া বিজ্ঞ আলেমদের বিভিন্ন বক্তব্য, রচনা ও বয়ানে ধর্মনিরপেক্ষতার সঙ্গে ইসলামের সম্পর্কীহনতার কথা বারবার আলোচিত হয়েছে এবং হচ্ছে। উচ্চতর ইসলামি আইন ও গবেষণা কেন্দ্র মারকাযুদ দাওয়াহ আল ইসলামিয়া ঢাকা’র মুদীর মুফতি আবুল হাসান মুহাম্মদ আবদুল্লাহ তাঁর এক বক্তব্যে ধর্মনিরপেক্ষতার আলোচনা করতে গিয়ে বলেন, ইসলামে ধর্মনিরপেক্ষতা বলতে কিছু নেই। ইসলামের মূল ভিত্তি হল আল্লাহর কালাম কুরআন মজীদ।

তিনি বলেন, ধর্মনিরপেক্ষতা ও ধর্মহীনতা সমার্থবোধক। এবং এর সবচেয়ে হালকা ব্যাখ্যাদাতারও দাবি হল, রাষ্ট্রীয় কর্মকান্ডের সাথে ধর্মের কোনো সম্পর্ক থাকবে না। যা সুস্পষ্ট কুরআন-সুন্নাহ পরিপন্থী বক্তব্য। (ধর্মনিরপেক্ষতা, সংবিধান ও ইসলাম; মাসিক আল কাউসার, ফেব্রুয়ারি, ২০১৪)

ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ বিষয়ে একই বক্তব্য দেশের শীর্ষস্থানীয় মুফতী মাওলানা মিজানুর রহমান সাঈদেরও। এক আলাপচারিতায় তিনি ফাতেহ টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ আলাদা একটি মতবাদ, ইসলামের সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই। অনুরূপ এই মতবাদের কার্যক্রমের সঙ্গে ইসলামি রীতিনীতিকে সংশ্লিষ্ট করা উচিত হবে না।

শহিদ মিনারে ফুল অর্পণের বদলে কুরআন তেলাওয়াত ও নামাজ আদায়কে এ দৃষ্টিকোণ থেকেই তিনি বৈধ নয় বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, দেশের শীর্ষস্থানীয় এ মুফতি বলেন, শহিদ বা মৃতব্যক্তির জন্য তাদের কবর জিয়ারতে গিয়ে কুরআন তেলাওয়াত করে সওয়াব রেসানি করা যায়, অথবা ঘরে বসেও করা যায়। এটা ইসলাম সমর্থিত। কিন্তু শহিদ মিনারে গিয়ে, যেখানে শহিদদের কোনো কবর নেই, সম্মান ও স্মরণের জন্য এম্নিতেই একটি স্তম্ব বানিয়ে রাখা হয়েছে, ইসলামের সঙ্গে যার কোনো সাযুজ্য নেই, সেখানে গিয়ে আয়োজন করে শহিদদের স্মরণে কুরআন তেলাওয়াত, এটা ইসলামের দৃষ্টিতে আপত্তিজনক বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে আমার কাছে। কারণ, শহিদ মিনারে গিয়ে শহিদদের স্মরণ করার রেওয়াজ বিধর্মীদের কাছ থেকে এসেছে। আর বিধর্মীদের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ কাজ করা ইসলামি শরিয়াহ অনুযায়ী আপত্তিজনক।

মুফতী মিজানুর রহমান সাঈদ আরও বলেন, শহিদ মিনারে ঘটা করে নামাজ আদায়ের ব্যাপারেও একই কথা। এটা বাড়াবাড়ি। শহিদদের স্মরণের জন্য আলাদা স্তম্ভ বা জায়গা নির্দিষ্ট করার রেওয়াজ ইসলামে নেই। একই সঙ্গে সেই নির্দিষ্ট জায়গাকে নামাজ-কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে ইসলামিকিকরণেরও কোনো জরুরত নাই।

ইসলামি মহলে সরাসরি ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের পক্ষাবলম্বনকারী লোকজনের সংখ্যা অল্প থাকলেও, এই মতবাদের প্রভাবে প্রভাবিত মানুষের সংখ্যা কম নয় এবং এই সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। বলছেন ইসলাম বিষয়ক লেখক ও আলোচক মাওলানা শরীফ মুহাম্মদ। ফাতেহ টুয়েন্টি ফোরের সঙ্গে বিশেষ এক আলাপচারিতায় তিনি বলেন, ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের চর্চা ব্যাপক হবার কারণে এই চর্চায় ইসলামি ঘরানার তরুণ শ্রেণি নিজেদের জ্ঞাতে বা অজ্ঞাতে শরিক হচ্ছেন। আপাতদৃষ্টিতে ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের ভালো যে দিকগুলো, সেগুলোকে তারা ইসলামাইজেশন করছেন, এবং এটাকেই ইসলাম হিসেবে ব্যাখ্যা করছেন। এই প্রবণতাটা দিন দিন কিন্তু বাড়ছে। বিশেষত তরুণ শ্রেণির মধ্যে।

তরুণ শ্রেণিকে এ থেকে ফেরাতে ইসলাম ও পুঁজিবাদী মতবাদগুলোর মধ্যে পার্থক্য ও সংঘাত বিষয়ে ওলামায়ে কেরামকে আরও স্পষ্ট ও গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা ও বয়ান পেশ করা দরকার বলে মনে করেন মাওলানা শরীফ মুহাম্মদ। তিনি বলেন, তরুণ শ্রেণির বড় একটি অংশের মধ্যে ইসলামের চর্চা হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু পাশ্চাত্য উদ্ভাবিত মতবাদগুলোর বাহ্যিক চাকচিক্যের বেড়াজালে পড়ে তারা নানা ধরনের ভ্রান্তির শিকার হচ্ছে। ওলামায়ে কেরাম এসব চাকচিক্যের ফাঁদগুলো সম্পর্কে এই শ্রেণিকে আরও বেশি করে সচেতন করা সময়ের দাবি।

The post ইসলামি মহলে ধর্মনিরপেক্ষতা: আলেমরা যেভাবে দেখেন appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%87%e0%a6%b8%e0%a6%b2%e0%a6%be%e0%a6%ae%e0%a6%bf-%e0%a6%ae%e0%a6%b9%e0%a6%b2%e0%a7%87-%e0%a6%a7%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%ae%e0%a6%a8%e0%a6%bf%e0%a6%b0%e0%a6%aa%e0%a7%87%e0%a6%95%e0%a7%8d-2/

ধর্মীয় রাজনীতি ‘ইসলামের ক্ষতি করছে’, মরক্কোর ফরিদ আনসারীর বিকল্প ব্যাখ্যা

রাকিবুল হাসান:

২০১১ সালে মরক্কোর সংসদীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে ইসলামি দাওয়াতি আন্দোলন ‘আত-তাওহিদ ওয়াল ইসলাহ’ থেকে জন্ম নেয় ‘জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি’। নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে সরকার গঠনের সুযোগ পায় দলটি। ২০১৩ সাল পর্যন্ত এই সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন দলটির সেক্রেটারি আবদেল ইলাহ বেনকেরান। ২০১৭ সালে প্রধানমন্ত্রীত্ব অর্পণ করা হয় সাদুদ্দিন উসমানির হাতে।

মরক্কোয় জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির এই বিজয়কে অনেকেই ইসলামি রাজনীতির বিজয় হিসেবে দেখছেন। কেননা মরক্কোর ইসলামি আন্দোলনের ইতিহাসে এই প্রথম তারা সংসদীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠন করেছে।

রাজনীতির চাদর গায়ে জড়িয়ে ইসলামি দাওয়াতি আন্দোলনের এই অর্জনকে অনেকে বিজয় বলে অভিহিত করলেও মরক্কোর প্রসিদ্ধ আলেম ড. ফরিদ আনসারী এটিকে পরাজয় হিসেবেই দেখেছেন। তিনি বলেন, রাজনৈতিক সফলতা এবং পত্রিকার বয়ান দেখে সবাই ভাবছে ইসলামি রাজনীতি মরক্কোয় আগের চেয়েও আজ ভালো অবস্থানে আছে। অথচ বিষয়টি এমন নয়। বরং আগের চেয়ে আরও পিছিয়ে পড়েছে। ইসলামি দাওয়াতি আন্দোলনে ইসলামের সবকিছু নিয়ে কাজ করার প্রতিশ্রুতি ছিল। যেমন—সংস্কৃতি, সমাজ, অর্থনীতি, মিডিয়া, ব্যবসা, রাজনীতি। কিন্তু এই রাজনীতির সংস্পর্শে এসে এই আন্দোলন এখন রাজনীতিতেই সীমাবদ্ধ হয়ে গেছে। এখন রাজনীতিটাই মুখ্য, বাকি সব গৌণ। আন্দোলনের কর্মীরা মনে করছেন, আগে ক্ষমতায় যেতে হবে, রাষ্ট্র কায়েম করতে হবে, তারপর অন্যকিছু। রাজনীতি ছাড়া বাকিগুলোকে এতটাই গৌণ করে দিয়েছে, ওগুলো এখন আর তাদের মনোযোগ টানে না। আগে আন্দোলন দৃঢ় বিশ্বাস ও ইয়াকিনের সাথে কাজ করত। এখন কাজ করে দোদুল্যমান হয়ে এবং সন্দেহ নিয়ে। সবসময় তৎপর থাকতে হয় ক্ষমতা অক্ষুণ্ন রাখার প্রয়াসে। এখানেই ইসলামি দাওয়াতি আন্দোলনের পরাজয়। বড় একটি স্বপ্ন ছোট হতে হতে মিশে যাওয়ার উপক্রম।

ইসলামি দাওয়াতি আন্দোলনের রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়া নিয়ে যেহেতু বিতর্ক তৈরি হয়েছে, তাই মরক্কোয় ইসলামি আন্দোলনের উৎসটা একটু জানা দরকার। তাহলে স্পষ্ট হবে কোন পরিস্থিতিতে এবং কিভাবে ও কেন জন্ম ইসলামি আন্দোলনের।

মরক্কোয় ইসলামি আন্দোলনের বিকাশ

গত শতকের ষাটের দশকের শুরুতে যুবকদের মননে মার্কসবাদী চিন্তার জোয়ার বইছিল। ড. আহমাদ রাইসুনি বলেন, ‘এই সময়টা আমি প্রত্যক্ষ করেছি। ১৯৭৩ সালে যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হই, তখন সেখানে ধর্মতত্ত্বের বিষয় হিসেবে ছিল শুধু মার্কসবাদ ও নাস্তিক্যবাদ। ইসলামি ধর্মতত্ত্ব নিয়ে যারা পড়ত বা এই মনোভাব লালন করত, তাদের অনেক সংকট ও সমস্যার মধ্য দিয়ে যেতে হতো।’

তবে এই সময়ে কয়েকজন প্রসিদ্ধ ইসলামি ব্যক্তিত্ব অবশ্যই ছিলেন। যেমন—মরক্কোর মুহাদ্দিস আবু শোয়াইব দাক্কালি, মুহাম্মদ বিন আরাবি আলাভি, শায়খ মুহাম্মদ তকিউদ্দিন হেলালি। কিন্তু তাদের কার্যক্রম কেবল ইলমি পরিমণ্ডলেই সীমাবদ্ধ ছিল। আন্দোলন গড়ে তোলায় বিশেষ পরিকল্পনা ছিল না তাদের।

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে তখন ইসলামি এবং মার্কসবাদী ছাত্রদের মধ্যে বৈরী মনোভাব তৈরি হয়। মার্কসবাদ এবং নাস্তিক্যবাদের চ্যালেঞ্জের মোকাবেলায় তখন ইসলামি মনোভাবাপন্ন ছাত্রদের একটি সংঘ ও সংগঠনের প্রয়োজন দেখা দেয়। প্রয়োজনটা প্রাকৃতিক নয়, বরং মার্কসবাদের সঙ্গে লড়াই করার জন্য। কিন্তু মার্কসবাদের বিরুদ্ধে কোনো শক্তি তখনো প্রস্তুত হয়নি। তাই প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে সেই ষাটের দশকের শুরুতে ইসলামি ভাবধারার ছাত্ররা অন্যান্য ছাত্রদের ইসলামি শিক্ষার প্রতি দাওয়াত দিতে শুরু করে।

ঠিক সেই সময়ে, ১৯৬৪ সালে তাবলিগ জামাতের একজন আমির শায়েখ হামদাভি মরক্কোয় তাবলিগ জামাতের একটি শাখা প্রতিষ্ঠা করেন। এবং তিনি হন তার প্রধান। এরপর থেকেই দলে দলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা তাবলিগ জামাতে শরিক হতে থাকে। এই তাবলিগ জামাতটিই ছিল মরক্কোয় ইসলামি আন্দোলনের সূতিকাগার। আহমদ রাইসুনি বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে ইসলামি অন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছি তাবলিগ জামাতের কল্যাণে।’ ফরিদ আনসারীর বয়ান অনুসারে মার্কসবাদীরা তখন তাবলিগ জামাতের এই সরগরম কার্যক্রম দেখে বিস্মিত হয়ে পড়েছিল। তাবলিগ জামাতে যুক্ত হওয়া এই ছাত্ররাই ছিল মার্কসবাদী ধারার বিরুদ্ধে প্রথম চ্যালেঞ্জ গ্রহণকারী।

ফরিদ আনসারী বলেন, ‘১৯৮১ সালে যখন আমি মরক্কোর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি হই, তখন নাস্তিকতার ঢেউ বইছে চারদিকে। ইসলামি ভাবধারার ছাত্র এতটাই কম, তারা সবসময় ভয়ে চুপসে থাকত। মার্কসবাদ ছিল সর্বেসর্বা। সত্তরের দশকের শেষদিকে যখন ইসলামি ভাবধারার ছাত্ররা ক্যাম্পাসে আজান দেয়ার উদ্যোগ নেয়, তখন মার্কসবাদী এবং নাস্তিকরা হামলে পড়েছিল তাদের ওপর।’

১৯৬৯ সালে মসজিদুল আকসায় আগুন দেয়ার প্রতিক্রিয়ায় সত্তরের দশকের শুরুতে মরক্কোর রাবাত শহরে অনুষ্ঠিত হয় সর্বপ্রথম ইসলামি সম্মেলন। এই সম্মেলনের পরেই ইসলামি কাজের জন্য বিভিন্ন নামে বিভিন্ন সমিতি, সংগঠন তৈরি হয়। এদের মধ্যে আহমদ রাইসুনির নেতৃত্বে ‘ইসলামিক সোসাইটি’, আবদুল করিম মুতির নেতৃত্বে ‘যুব সমিতি’ অন্যতম। এ সময় উস্তাদ আবদুল করিম মুতি, ড. শাহেদ বুশাইখি, ড. আবদুস সালাম হাররাস-সহ এমন আরও অনেক ইসলামি আন্দোলনের নেতার উন্মেষ ঘটে। একসময় এই বিভক্ত দলগুলো নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় ইসলামি দাওয়াতি আন্দোলন ‘আত-তাহরিক ওয়াল ইসলাহ’। এই দল থেকে পরবর্তীতে জন্ম নেয় ‘জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি’। যারা আজ মরক্কোর শাসন ক্ষমতায়।

ইসলামি আন্দোলনে ফরিদ আনসারীর অংশগ্রহণ

ইসলামি আন্দোলনের ইতিহাস পড়ে এতটুকু অবশ্যই জানা যায়, এই আন্দোলন গড়ে ওঠার সময় থেকেই তিনি স্বশরীরে যুক্ত। বলতে গেলে তাঁদের হাতেই গড়ে উঠেছে সব। কিন্তু এই ইসলামি জাগরণ ও ইসলামি আন্দোলনে তিনি কতটুকু বিকশিত হয়েছেন, তিনি তাকে তিনটি পর্বে বিভক্ত করেছেন।

এক. বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবার আগে তিনি কেবল ইসলামি আন্দোলনের নামই শুনেছেন। যেহেতু তাঁর জন্ম ১৯৬০ সালে। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন ভর্তি হন, ছাত্রদের মাঝে এ নিয়ে বিতর্ক, নিন্দা, ডিফেন্স, অ্যাটাক শুনে শুনে তিনি আগ্রহী হয়ে ওঠেন ইসলামি আন্দোলন নামটির সাথে।

দুই. এই পর্বে তিনি ইসলামি আন্দোলনে তিনি সরাসরি যুক্ত হয়ে যান। মার্কসবাদীদের বিরুদ্ধে ইসলামি ভাবধারার ছাত্রদের মুখে মুখে তখন এই শ্লোগান—ইসলাম দীন এবং রাষ্ট্র। কোরআন এবং শাসন। রাজত্ব কেবল আল্লাহর।

এই পর্বের অভিজ্ঞতা শুনাতে গিয়ে তিনি বলেন, এই পর্বে আমি মুমিনের গুণের চেয়ে বেশি উকিলের গুণ অর্জন করেছিলাম। মার্কসবাদ, নাস্তিক্যবাদের মুকাবিলা করছি, রাজনীতি করছি। আমি দেখলাম, আমি মানুষের সঙ্গে বেশি সময় কাটাচ্ছি, আল্লাহর সঙ্গে সময় কাটাচ্ছি না। তখনকার মনোভাব ছিল এমন—আগে রাষ্ট্র কায়েম করি, তারপর অন্যসব। আসলে এই ভাবনাটা কর্মীদের দোষ না, বরং রাজনীতির দোষ। কলুষিত রাজনীতির আবহাওয়ায় তারা এমন ভাবতে বাধ্য হয়।

তিন. এই পর্বে ফরিদ আনসারী একটু নতুন দৃষ্টিতে তাকান ইসলামি আন্দোলনের দিকে। পুনরায় বিচার করতে শুরু করেন ইসলামি আন্দোলনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। তিনি যখন দেখলেন রাজনীতির ছোঁয়ায় ইসলামি আন্দোলন তাদের লক্ষ্য থেকে আপাতত দূরে এসে আরকিছুতে ব্যস্ত, তখন তিনি ইসলামি আন্দোলন ছেড়ে দেন। কোরআন-হাদিসের পাঠ ও পাঠদানে মনোনিবেশ করেন। তাজকিয়া, ইবাদাত এবং ইলম চর্চাকে তিনি ইসলামি রাজনীতির ওপর গুরুত্ব দিতে শুরু করেন।

মরক্কোয় ইসলামি আন্দোলনের সমালোচনায় ফরিদ আনসারীর গ্রন্থ

মরক্কোয় ইসলামি আন্দোলনের সমালোচনায় ফরিদ আনসারী বেশ কয়েকটি গ্রন্থ লিখেছেন। তারমধ্যে চারটি গ্রন্থের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দিচ্ছি।

১. আল-আখতাউস সিত্তাতু লিল হারাকাতিল ইসলামিয়্যাহ

ফরিদ আনসারী-রচিত গ্রন্থগুলোর মধ্যে সবচে কঠোর ভাষায় লেখা এই বইটি। ইসলামি আন্দোলন নিয়ে ইতিপূর্বে কেউ এমন কঠিন ভাষায় লেখার সাহস করেননি। ইসলামি আন্দোলনের সবচে বড় ভুল হিসেবে এতে আখ্যায়িত করা হয়েছে রাজনীতির সঙ্গে সংযুক্তি এবং রাজনৈতিক দল গঠন। তাঁর মতে যে স্বপ্ন দেখেছিল ‘আত-তাওহিদ ওয়াল ইসলাহ’, সে স্বপ্ন রাজনীতির সংস্পর্শে এখন নাই হয়ে যাওয়ার পথে।

ইসলামি আন্দোলনের ছয়টি ভুলের কথা তিনি এই গ্রন্থে বলেছেন। সংক্ষেপে ভুলগুলো হলো—

ক. দলগঠন করা। আনসারী বলেন, বাড়াবাড়ি না হলে আমি বলব, রাজনৈতিক দলগঠন ছিল ইসলামি আন্দোলনের সবচে বড় ভুল।

খ. কোনো বিবেচনা ছাড়াই ট্রেড ইউনিয়নে প্রবেশ করা। কারণ এটি নৈতিক ও ধর্মীয় ভারসাম্য বজায় রাখে শ্রেণিসংগ্রাম ও মার্কসবাদী অর্থনৈতিক চিন্তাধারা অনুসারে।

গ. নেতৃত্বের ব্যক্তিত্বকরণ। এর ফলে দল ইলমি এবং শরিয়তের অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে পরিচালিত হয় না।

ঘ. দলকে যান্ত্রিক সংস্থায় পরিণত করা।

ঙ. মুসলিম যুব সমিতির প্রতিষ্ঠাতা জনাব আবদুল করিম মুতির মানসিকতা লালন করা। কেননা সাংগঠনিক ও প্রশাসনিক দিক থেকে ইসলামিক ইস্যু মুকাবিলায় কৌশল এবং প্রতারণার আশ্রয় নেয়ার উপর ভিত্তি করেই এর পথচলা।

চ. সালাফি প্রবণতায় হাম্বলি মাজহাব গ্রহণ করা। তিনি বলেছেন, মাজহাবের পাথর তো সালাফিদের চিন্তাধারাকে চূর্ণ করে দিয়েছে। এরপরও দলটি সালাফি প্রবণতা গ্রহণ করে মরক্কোর মাজহাবি বৈশিষ্ট্যকে অপমান করেছে। কারণ মরক্কোয় মালেকি মাজহাবের কোনো বিশেষ আনুসরণ নেই।

২. আল-ফুজুরুস সিয়াসি ওয়াল হারাকাতুল ইসলামিয়্যাতু বিল মাগরিব

মুসলমি সমাজে চেপে বসা অনৈতিকতা নিয়ে লেখা এই গ্রন্থ। এতে তিনি ফুটিয়ে তুলেছেন ইসলামি আন্দোলন কিভাবে গুরুত্বপূর্ণ গঠনতন্ত্র থেকে সরে গেছে এবং কিভাবে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত হয়ে পড়েছে।

৩. আল-বয়ান আদ-দাওয়া।

২০০৩ সালে প্রকাশিত হয়েছে গ্রন্থটি। এটিকে ধরা হয় ‘আল-ফুজুরুস সিয়াসি’র সিক্যুয়েল।

৪. আল-ফাতরিয়্যাহ

ইসলামি আন্দোলন ছেড়ে দেবার পর ফরিদ আনসারীর যেসব অভিজ্ঞতা হয়েছে, যেসব চিন্তার বিনির্মাণ ঘটেছে, তারই একটি সারসংক্ষেপ এই বই। খোলাখুলিভাবে আনসারী বলেছেন, যান্ত্রিক পদ্ধতি থেকে বেরিয়ে ব্যাপক এবং উন্মুক্ত দাওয়াতের দিকে মনোযোগী হতে হবে।

The post ধর্মীয় রাজনীতি ‘ইসলামের ক্ষতি করছে’, মরক্কোর ফরিদ আনসারীর বিকল্প ব্যাখ্যা appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%a7%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%ae%e0%a7%80%e0%a7%9f-%e0%a6%b0%e0%a6%be%e0%a6%9c%e0%a6%a8%e0%a7%80%e0%a6%a4%e0%a6%bf-%e0%a6%87%e0%a6%b8%e0%a6%b2%e0%a6%be%e0%a6%ae%e0%a7%87%e0%a6%b0/

ইসলামি আইন বাস্তবায়ন : লক্ষ্য ও কৌশল

লেখাটি শিগগির অনলাইন করা হবে ।

The post ইসলামি আইন বাস্তবায়ন : লক্ষ্য ও কৌশল appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%87%e0%a6%b8%e0%a6%b2%e0%a6%be%e0%a6%ae%e0%a6%bf-%e0%a6%86%e0%a6%87%e0%a6%a8-%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%b8%e0%a7%8d%e0%a6%a4%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a7%9f%e0%a6%a8-%e0%a6%b2%e0%a6%95%e0%a7%8d/