Thursday, September 29, 2022

আজানের সময় পূজামণ্ডপে বাদ্যযন্ত্রের শব্দ সহনীয় রাখার নির্দেশ

ফাতেহ ডেস্ক:

আজানের সময় পূজামণ্ডপে বাদ্যযন্ত্রের শব্দ সহনীয় রাখতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। গত ১১ সেপ্টেম্বর দুর্গাপূজার নিরাপত্তা বিষয়ক বৈঠকের পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ৯টি নির্দেশনা প্রদান করেন। তারমধ্যে অন্যতম একটি ছিল, আজানের সময় পূজামণ্ডপে বাদ্যযন্ত্রের শব্দ সহনীয় রাখা।

এছাড়া বাকি নির্দেশনাগুলো হলো,পূজামণ্ডপে অন্য বাহিনীর ছাড়াও ২৪ ঘণ্টা আনসার বাহিনী দায়িত্ব পালন করবে, গোয়েন্দা বিভাগের সদস্যরা নজরদারি করবে, সব মণ্ডপে বাধ্যতামূলক সিসি ক্যামেরা লাগাতে হবে, এমন জায়গায় পূজামণ্ডপ করা যাবে না যেখানে গাড়ি প্রবেশ করতে পারে না, পূজামণ্ডপের স্বেচ্ছাসেবকদের বাধ্যতামূলকভাবে হাতে আর্মব্যান্ড পরতে হবে, যেকোনো গুজবের ব্যাপারে সতর্ক নজর রাখা হবে, বিশেষ করে ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম মনিটরিং করা হবে, কোনো ধরনের গুজব ছড়ানোকে কঠোর হাতে দমন করা হবে।

উল্লেখ্য, দুর্গাপূজা ঘিরে মণ্ডপগুলোতে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যে নির্দেশনা ছিল, তা বাস্তবায়ন করা হয়নি বলে জানানো হয়েছে একটি প্রতিবেদনে। সম্প্রতি প্রতিবেদনটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, ‘সরকারি নির্দেশনা থাকার পরও অনেক পূজা মণ্ডপেই এখন পর্যন্ত স্থাপন করা হয়নি সিসি ক্যামেরা, গঠন করা হয়নি স্বেচ্ছাসেবক দল এবং অনিরাপদ স্থানে স্থাপন করা হচ্ছে অস্থায়ী পূজামণ্ডপ। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুসরণ না করে মণ্ডপের নিরাপত্তা ব্যবস্থা বিঘ্নিত করলে যেকোনো ধরনের দুর্ঘটনার দায়ভার সংশ্লিষ্ট পূজা উদযাপন কমিটিকেই নিতে হবে, যে বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রেস ব্রিফিংয়ে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে।’

প্রতিবেদনের শেষের অংশে বলা হয়েছে, পূজা শুরু হওয়ার আগেই কমিটি বিষয়ক দ্বন্দ্ব সমাধান করে দুর্গাপূজা নির্বিঘ্ন করা প্রয়োজন। নানা সময় ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে নিজেদের মধ্যকার কিংবা স্থানীয় মুসলমানদের সাথে দ্বন্দ্বের বিষয়গুলোকে সাম্প্রদায়িক রূপ দিয়ে ফেসবুকসহ বিভিন্ন অনলাইন পোর্টালে প্রচার করা হয়। যেকোন সাম্প্রদায়িক অপপ্রচারের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বার্তা প্রদান করা হয়েছে।’

The post আজানের সময় পূজামণ্ডপে বাদ্যযন্ত্রের শব্দ সহনীয় রাখার নির্দেশ appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%86%e0%a6%9c%e0%a6%be%e0%a6%a8%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%b8%e0%a6%ae%e0%a7%9f-%e0%a6%aa%e0%a7%82%e0%a6%9c%e0%a6%be%e0%a6%ae%e0%a6%a3%e0%a7%8d%e0%a6%a1%e0%a6%aa%e0%a7%87-%e0%a6%ac%e0%a6%be/

‘মিরপুরে নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল’ : ভালো নেই খাদেম-মুয়াজ্জিনরা

রাকিবুল হাসান নাঈম:

এসি বন্ধ করতে দেরী হবার কারণে মসজিদের খাদেমকে নির্যাতন করেছে মসজিদের সভাপতি। ঘটনাটি ঘটেছে মিরপুর ২ নং কাঠালবাগ বাইতুল জান্নাত জামে মসজিদে। দুদিন আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, খাদেম আবদুল মতিনকে বিভিন্নভাবে নির্যাতন করছে মসজিদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবদুল কাদের। খাদেম রুম থেকে বের হয়ে যেতে চাইলে সভাপতি তাকে ধরে এনে গলা চেপে ধরেন। কখনও দেন কিল, ঘুষি, থাপ্পর।

ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর প্রতিবাদ জানাচ্ছেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। তারা বলছেন, যুগ যুগ ধরে চলে আসা সভাপতিদের স্বেচ্ছাচারী মনোভাবের ফল এই ঘটনা। চোখের আড়ালে দেশজুড়ে এমন হাজার হাজার ঘটনা ঘটে চলছে। কিন্তু মুআজ্জিন-খাদেমদের দেখার কেউ নেই।

তাদের চাকরি সভাপতিদের হাতে জিম্মি

এ প্রসঙ্গে কথা হয় মিরপুর দারুল উলুম ঢাকার প্রিন্সিপাল, মিরপুর ১৩ সেন্ট্রাল জামে মসজিদের খতিব, মুফতী রেজাউল হক মুহাম্মদের সঙ্গে। তিনি মিরপুরের ঘটনাটিকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা মানতে নারাজ। তিনি ফাতেহকে বলেন, দেশের আনাচে-কানাচে এমন ঘটনা প্রায়ই ঘটে চলেছে। প্রায় মসজিদের খাদেম-মুআজ্জিনরা এ ঘটনার শিকার। তারা মসজিদের সভাপতি-মুতাওয়াল্লির হাতে সামান্য সামান্য বিষয়ে নির্যাতিত হয়। তাদের চাকরি সভাপতিদের হাতে জিম্মি।’

বাইরের দেশের অভিজ্ঞতা শেয়ার করে তিনি বলেন, ‘আমি বাইরের দেশে ইমামতি করেছি। দেখেছি, তারা ইমাম এবং খাদেমদের কতটা সম্মান দেয়। আমি নামাজ পড়িয়ে বের হলে তারা আমাকে বলতো,জাজাকাল্লাহ। তাদের মধ্যে কতটা কৃতজ্ঞতাবোধ এবং সম্মান! এই সম্মানটা আমাদের দেশের মানুষ দিতে পারে না। তারা ইমাম-মুআজ্জিন-খাদেমদের চাকর মনে করে। ফলে তাদের সেবাকে তারা মূল্যায়ন করে না। অথচ হাদিসে মুআজ্জিনের সম্মান ঘোষণা করা হয়েছে অনেক উচ্চ সম্মান।’

সভাপতি-মুতাওয়াল্লিদের মনোভাব না পরিবর্তন হলে এর বিহিত সম্ভব না বলেও মনে করেন তিনি।

মসজিদ পরিচালনার জন্য গাইডলাইন নেই

মিরপুরের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ ইমাম সমিতি। সমিতির সভাপতি হাফেজ মাওলানা লুৎফর রহমান ফাতেহকে বলেন, ‘বাংলাদেশে মসজিদকে ঘিরে এত বিশাল আয়োজন, অথচ মসজিদ পরিচালিত হয় যাদের মাধ্যমে, সেসব ইমাম-মুআজ্জিন-খাদেমরা সবচে বেশি অবহেলিত। এ দেশে মসজিদ আছে ৪ লাখের বেশী। ৪ লাখ মসজিদে খাদেম-মুআজ্জিন হবে কমেও দশ লাখের বেশী। কোনো কোনো মসজিদে দু’তিনজন খাদেম থাকে। এত বিশাল একটা জনগোষ্ঠী অবহেলার শিকার, এটা আমাদের জন্যই লজ্জার।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ ইমাম সমিতির সভাপতি হিসেবে আমার কাছে অনেক অভিযোগ আসে। বিভিন্ন মসজিদে খাদেম-মুআজ্জিনরা সভাপতি-মুতাওয়াল্লিদের নির্যাতনের শিকার হন। কখনও মৌখিক, কখনও শারীরীক। খাদেম-মুআজ্জিনের ক্ষেত্রে পান থেকে চুন খসলেই হিসাব-নিকাশ শুরু হয়ে যায়। তাদেরকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করতে থাকে কর্তৃপক্ষ। অথচ এমনও জানি, অনেক সভাপতি-মুতাওয়াল্লি বছরের পর বছর মসজিদের টাকার হিসাব দেন না।

মাওলানা লুৎফর রহমান বলেন, দেশের শহরাঞ্চলে মসজিদগুলোর ইমামদের বেতন ৭ থেকে ১৫ হাজার টাকা বা কমবেশি। খাদেম-মুয়াজ্জিনদের বেতন ৪ থেকে ৮ হাজার টাকা। আর গ্রাম্য এলাকার মসজিদগুলোর ইমামদের বেতন ৩ থেকে ৬ হাজার টাকা এবং খাদেম-মুয়াজ্জিনদের বেতন ২ থেকে ৪ হাজার টাকা। গ্রামে অনেক সময় দেখা যায় ইমাম এবং মুয়াজ্জিনের কাজ একই ব্যক্তি করছেন। মসজিদ পরিচ্ছন্ন করার কাজও করছেন ইমাম। এই স্বল্প টাকায় তারা সমাজের জন্য যে সেবাটা দিয়ে যান, তার মূল্যায়ন কেউ করে না। তারা কাজ করেন সমাজের হয়ে। কিন্তু সভাপতি-মুতাওয়াল্লিরা তাদেরকে নিজেদের সম্পত্তি মনে যাচ্ছেতাই আচরণ করেন। সব ঘটনা প্রকাশ পায় না। কিছু কিছু প্রকাশ পায়। কখনও তাদেরকে বিনা নোটিশে বরখাস্ত করা হয়। এতে বিপাকে পড়েন স্বল্প আয়ের এই মানুষেরা।

সবশেষে বাংলাদেশ ইমাম সমিতির সভাপতি বলেন, দেশে যেকোনো প্রতিষ্ঠান চালাতে সরকারের নির্দিষ্ট গাইডলাইন আছে কিন্তু মসজিদ পরিচালনার জন্য কোন গাইডলাইন নেই। দেশের ছোট-বড় সব মসজিদের তালিকা করে শ্রেণিভেদে ইমাম-মুআজ্জিন-খাদেমদের বেতন কাঠামো তৈরি করা সময়ের দাবি। সরকারেরর কাছে আমরা বিভিন্ন সময় এ দাবি জানিয়েছি।

The post ‘মিরপুরে নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল’ : ভালো নেই খাদেম-মুয়াজ্জিনরা appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%ae%e0%a6%bf%e0%a6%b0%e0%a6%aa%e0%a7%81%e0%a6%b0%e0%a7%87-%e0%a6%a8%e0%a6%bf%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%a8%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%ad%e0%a6%bf%e0%a6%a1%e0%a6%bf/

আইএফএন অ্যাওয়ার্ডস ২০২২-এ মনোনয়ন পেয়েছে আইএফএ কনসালটেন্সি

ফাতেহ ডেস্ক:

IFA Consultancy ইসলামিক ফাইন্যান্স নিউজ (IFN) অ্যাওয়ার্ডস ২০২২-এর জন্য বাংলাদেশ থেকে একমাত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে “Best Islamic Consultancy Firm” বিভাগে পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছে।

Islamic Finance News (IFN) ২০০৬ সাল থেকে ইসলামিক আর্থিক সেক্টরের সেরাদের সম্মানিত করে এবং বিশ্বব্যাপী ইসলামিক ফাইন্যান্সের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কারগুলির মধ্যে একটি।

IFA Consultancy বাংলাদেশের প্রথম এবং একমাত্র সরকার নিবন্ধিত শরীয়াহ পরামর্শসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে ইসলামি অর্থনীতির ওপর ট্রেইনিং, কন্সালটেন্সি ও গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করে।

The post আইএফএন অ্যাওয়ার্ডস ২০২২-এ মনোনয়ন পেয়েছে আইএফএ কনসালটেন্সি appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%86%e0%a6%87%e0%a6%8f%e0%a6%ab%e0%a6%8f%e0%a6%a8-%e0%a6%85%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%93%e0%a6%af%e0%a6%bc%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%a1%e0%a6%b8-%e0%a7%a8%e0%a7%a6%e0%a7%a8%e0%a7%a8/

Wednesday, September 28, 2022

ইডেনছাত্রীদের দিয়ে জোরপূর্বক দেহব্যবসার অভিযোগ, আলেমরা যা বলছেন

ফাতেহ ডেস্ক:

ইডেন মহিলা কলেজে পড়ুয়া ছাত্রীদের জোর করে দলের শীর্ষ নেতাদের বিছানায় পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে কলেজের নেত্রীদের বিরুদ্ধে। কেউ নেতাদের বিছানায় যেতে না চাইলে তাকে নির্যাতন করা হয় বলেও বক্তব্য দিয়েছে শিক্ষার্থীরা।

ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভা ও সাধারণ সম্পাদক রাজিয়া সুলতানা সুন্দরীদের ছবি তোলেন এবং ব্যবসা করাতে চান বলে অভিযোগ করেছেন ইডেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সামিয়া আক্তার বৈশাখী। তার অভিযোগর পরই ঢালাওভাবে ইডেনের ছাত্রীদের দোষারোপ করতে দেখা যায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীদের। আলেমরা বলছেন, ঢালাওভাবে সবাইকে দোষারোপ কর যাবে না।

আইএফএ কনসালটেন্সির সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক মুফতি ইউসুফ সুলতান বলেন, ইসলামে মানুষের সম্মান রক্ষা করা অত‍্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। মানুষের চূড়ান্ত সম্মানহানি হয় যে বিষয়ে— অবৈধ শারীরীক সম্পর্কের অভিযোগ— এ ক্ষেত্রে অভিযোগ প্রমাণে ও শাস্তি কার্যকরে কঠিন রিকোয়ারমেন্ট আছে। বরং কোনো সতী নারীকে যিনার অপবাদ দিয়ে প্রমাণিত না হলে উল্টো অপবাদকারীর ওপর অপবাদের নির্ধারিত শাস্তি প্রযোজ‍্য হয়। সম্প্রতি ইডেনে আমাদের বোনদের নিগ্রহের যে সব সংবাদ সামনে আসছে, আমরা এতে অত‍্যন্ত মর্মাহত। নারীর সম্মান ও নিরাপত্তায় ইসলাম সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে। সমাজের কোনো বিবেববানই এ ক্ষেত্রে ভিন্ন চিন্তা করতে পারেন না। আমরা আশা করি, অথোরিটি বিষয়টা খতিয়ে দেখবেন এবং তাদের সম্পূর্ণ সম্মান ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন। একই সঙ্গে আমাদের বোনদের আরো সতর্ক হতে এবং শরীয়াহ পরিপালনের পরামর্শ দেব এবং তাদের গার্ডিয়ানদের তাদের সম্মান ও নিরাপত্তার পূর্ণ খেয়াল রাখতে অনুরোধ করবো। তবে এ অভিযোগের ভিত্তিতে ঢালাওভাবে কোনো কলেজ বা প্রতিষ্ঠানের সকল ছাত্রীর ব‍্যাপারে এ অভিযোগ তোলা ইসলামের দৃষ্টিতে অত‍্যন্ত ঘৃণ‍্য কাজ।’

কবি ও গবেষক মুসা আল হাফিজ বলেন, ইডেনপ্রশ্নে ঢালাও প্রচারণা খুবই অন্যায়। সেখানে অনাচারকারীদের সংখ্যা অনেক। কিন্তু নিজের আত্মমর্যাদা, শ্লীলতা ও দায়িত্বসচেতন মেয়েরা ঢালাও তুহমতের শিকার না হোক। তাদের সংখ্যাও অনেক। এমন বহু পরিবার আমার জানা, আমার সাথে যোগাযোগ রাখেন তারা। মেয়ে ইডেনে পড়ে। কিন্তু তাকওয়ার প্রশ্নেও সচেতন থাকতে চান। মাহরাম আত্মীয় ছাড়া অন্য সব আত্মীয়ের ক্ষেত্রেও তারা সিরিয়াস। প্রশ্নটা মেয়েদের। অভিযোগটা সতিত্ব নিয়ে। একটু রয়ে সয়ে মন্তব্য করার পরামর্শ দেন তিনি।

অনলাইন এক্টিভিস্ট মাওলানা রুহুল আমিন সাদী বলেন, মহানবী সা. এর প্রতি কটুক্তির প্রতিবাদে ইডেন কলেজ থেকেও মিছিল বের হয়েছিল। এবং সেখানে হিজাবে আবৃত বোনদের মিছিলে উচ্চকিত হতে দেখেছি আমরা। কয়েক হাজার ছাত্রী ইডেনে পড়াশোনা করেন। সেজন্য ইডেন নিয়ে কথা বলার ক্ষেত্রে এইসব বোনদের ব্যাপারটাও মাথায় রাখতে হবে। আমাদের বলা ও লিখার কারণে বাকি বোনেরা যেনো সামাজিক হেনস্তার মুখোমুখি না হন, সেটা খেয়াল রাখতে হবে।

The post ইডেনছাত্রীদের দিয়ে জোরপূর্বক দেহব্যবসার অভিযোগ, আলেমরা যা বলছেন appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%87%e0%a6%a1%e0%a7%87%e0%a6%a8%e0%a6%9b%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a7%80%e0%a6%a6%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%a6%e0%a6%bf%e0%a7%9f%e0%a7%87-%e0%a6%9c%e0%a7%8b%e0%a6%b0%e0%a6%aa%e0%a7%82/

Tuesday, September 27, 2022

‘আমেরিকায় এক চতুর্থাংশ ধর্মহীন’ : ঈমান হারাচ্ছে প্রবাসী মুসলমানদের সন্তানরা

মুনশী নাঈম:

আমেরিকায় বেড়ে ওঠা প্রায় এক-চতুর্থাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মুসলিম ধর্মহীন হয়ে যাচ্ছে। তাদের অধিকাংশই প্রবাসী পরিবারের সন্তান। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক পিউ রিসার্চ সেন্টারের সর্বশেষ এক সমীক্ষায় এ তথ্য উঠে এসেছে। সমীক্ষায় বলা হয়েছে, ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করা এসব মুসলিমদের অধিকাংশই থেকে যাচ্ছে নাস্তিক হিসেবে। তারা কোনো ধর্মই গ্রহণ করছে না। তবে ইসলাম ত্যাগকারীদের সমান অনুপাতে ইসলাম গ্রহণও করছে মানুষ। কিন্তু তাতে মুসলমানদের সংখ্যা বৃদ্ধিতে খুব বেশি প্রভাব ফেলছে না।

সমীক্ষা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, যারা ইসলাম ত্যাগ করছে, ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবনে তাদের ইসলামের চর্চা না থাকার কারণে বিজাতীয় ধর্ম ও দর্শনের প্রভাবিত হয়ে তারা ইসলাম ত্যাগ করছে।

২০২০ সালের সরকারি পরিসংখ্যান মতে, আমেরিকার মাত্র এক ভাগ মুসিলম। ২০১৯ সালের পিউ রিসার্চের তথ্য অনুসারে, আমেরিকার বেশির ভাগ প্রাপ্তবয়স্ক মনে করেন, মুসলিমরা অনেক বেশি বৈষম্যের শিকার। আর বিরাশি শতাংশ মনে করেন, মুসলিমরা কিছুটা বৈষম্যের শিকার।

ধর্মহীন হয়ে যাচ্ছে চব্বিশ শতাংশ মুসলিম

মার্কিন মুসলিমদের উপর ২০১৪ সালের একটি সমীক্ষা অনুসারে, আমেরিকায় বেড়ে ওঠা প্রায় এক-চতুর্থাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মুসলিম ধর্মহীন হয়ে যাচ্ছে। তাদের হার তেইশ শতাংশ। ২০১৭ সালে পিউ রিসার্চ সেন্টারের সমীক্ষায় ২০১৪ সালের সমীক্ষার চেয়ে সামান্য ভিন্ন প্রশ্ন ব্যবহার করা হয়। এ সমীক্ষা অনুযায়ী, ধর্মহীন হয়ে যাচ্ছে চব্বিশ শতাংশ মুসলিম।

যারা ইসলাম ত্যাগ করছে, তাদের মধ্যে পঞ্চান্ন শতাংশ থেকে যাচ্ছে নাস্তিক। তারা কোনো ধর্মই গ্রহণ করছে না। বাইশ শতাংশ গ্রহণ করছে খৃস্টধর্ম। একুশ শতাংশ গ্রহণ করছে বৌদ্ধ, হিন্দু, ইহুদি ধর্মসহ আরও বিভিন্ন ধর্ম।

কেন ইসলাম ত্যাগ করছে?

যারা ইসলাম ত্যাগ করছে, তাদের বড় একটি অংশ ধর্মকেই অপছন্দ করে। কেউ কেউ পারিবারিকভাবে ধর্মীয় চর্চা না থাকার কথাও বলেছে। ২০১৭ সালের সমীক্ষায় ইসলাম থেকে ধর্মান্তরিতদের তাদের নিজস্ব ভাষায় ধর্ম ত্যাগ করার কারণ ব্যাখ্যা করতে বলা হয়েছিল। এরমধ্যে বারো শতাংশ বলেছে, তারা ধর্মকে অপছন্দ করে। আট শতাংশ বলেছে, তারা আল্লাহতে বিশ্বাস করে না। পাঁচ শতাংশ বলেছে, তারা ধর্ম পালনে অভ্যস্ত ছিল না।

সমীক্ষায় পাঁচজনের একজন ইসলাম ত্যাগের নির্দিষ্ট কারণ উল্লেখ করেছে। তাদের মধ্যে নয় শতাংশ বলেছে, তারা মুসলিম হিসেবে বেড়ে উঠেছে ঠিক, কিন্তু কখনোই ইসলামি আচারে যুক্ত হয়নি। সাত শতাংশ বলেছে, তারা ইসলামি শিক্ষার সাথে দ্বিমত পোষণ করে। ষোলো শতাংশ বলেছে, তারা অন্যান্য ধর্ম বা দর্শন লালন করে। চৌদ্দ শতাংশ বলেছে, তারা তাদের ব্যক্তিগত মত এবং স্টাডির উপর ভিত্তি করে ইসলাম ত্যাগ করেছে।

ইসলাম গ্রহণ করছে তেইশ শতাংশ

আমেরিকায় যারা ইসলাম গ্রহণ করছে, তাদের সংখ্যা ইসলাম ত্যাগকারীদের সমান। তারা সংখ্যায় তেইশ শতাংশ। তাদের অধিকাংশই খৃস্টধর্ম থেকে ইসলামে ধর্মান্তরিত।

সমীক্ষায় বলা হয়, ইসলামে গ্রহণকারীদের তেপ্পান্ন শতাংশ আগে প্রোটেস্ট্যান্ট খৃস্টান ছিল। বিশ শতাংশ ছিল ক্যাথলিক। পাঁচজনের একজন বলেছে, ইসলামে ধর্মান্তরিত হওয়ার আগে তাদের কোনো ধর্ম ছিল না। তাদের হার উনিশ শতাংশ। এছাড়াও অর্থোডক্স খ্রিস্টান, বৌদ্ধ, ইহুদি বা অন্য কোনো ধর্ম থেকে ইসলামে ধর্মান্তরিত হয়েছে।

সমীক্ষায় কেন তারা মুসলিম হয়েছে, তা উল্লেখ করতে বলা হয়। তাদের প্রায় এক-চতুর্থাংশ বলেছে, তারা তাদের পূর্বের ধর্মের থেকে ইসলামের বিশ্বাস বা শিক্ষাকে প্রাধান্য দিয়েছে। একুশ শতাংশ বলেছে, তারা ধর্ম পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ইসলামের ধর্মীয় গ্রন্থ বা ইসলাম বিষয়ক অধ্যয়ন করেছিল। দশ শতাংশ বলেছে, তারা কোনো একটা কমিউনিটিতে যুক্ত হতে ইসলাম গ্রহণ করেছে। নয় শতাংশ বলেছে, তাদের ইসলাম গ্রহণের পেছনে মূল প্রেরণা ছিল বিবাহ। নয় শতাংশ বলেছে, তারা ইসলাম জেনেছিল কোনো বন্ধুর কাছে।

ধর্মান্তরের হার প্রবাসীদের মধ্যে বেশী

সমীক্ষায় বলা হয়, প্রবাসীদের মধ্যে ইসলাম ত্যাগের প্রবণতা বেশী। এরমধ্যে সবচে বেশি ইসলাম ত্যাগ করছে ইরান থেকে আসা অভিভাসীরা। তাদের ইসলাম ত্যাগের হার বাইশ শতাংশ। ইসলামে টিকে থাকছে মাত্র আট শতাংশ। ১৯৭৮ এবং ১৯৭৯ সালের ইরানী বিপ্লবের পর ইরান থেকে অভিবাসন বৃদ্ধির ফলে আমেরিকায় ইরানি প্রবাসী বাড়ে। যারা ইসলাম ত্যাগ করছে, তাদের অনেকে সেক্যুলার ইরানি। এছাড়াও আর বিভিন্ন দেশ থেকে আসা প্রবাসীদের সন্তানরাও ইসলাম ত্যাগ করছে।

এদিকে যদিও এক চতুর্থাংশ মুসলমান ইসলাম থেকে সরে যাচ্ছে, তাদের অধিকাংশই খ্রিস্টান হচ্ছে না। যারা ইসলাম থেকে ধর্মান্তরিত হয়েছে, তাদের মধ্যে মাত্র বাইশ শতাংশ খ্রিস্টান অনুসারী হচ্ছে। পঞ্চান্ন শতাংশ কোনো ধর্মই গ্রহণ করছে না।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, আমেরিকান মুসলমানদের সংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে বছরে এক লাখ। কিন্তু ইসলামে প্রবেশকারী এবং ত্যাগকারী লোকেদের ভাগ মোটামুটি সমান। ফলে মুসলমানদের সামগ্রিক বৃদ্ধিতে এই সংখ্যা সামান্যই প্রভাব ফেলছে।

The post ‘আমেরিকায় এক চতুর্থাংশ ধর্মহীন’ : ঈমান হারাচ্ছে প্রবাসী মুসলমানদের সন্তানরা appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%86%e0%a6%ae%e0%a7%87%e0%a6%b0%e0%a6%bf%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a7%9f-%e0%a6%8f%e0%a6%95-%e0%a6%9a%e0%a6%a4%e0%a7%81%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%a5%e0%a6%be%e0%a6%82%e0%a6%b6-%e0%a6%a7%e0%a6%b0/

ইডেনের ছাত্রীদের দিয়ে জোরপূর্বক দেহব্যবসার অভিযোগ

ফাতেহ ডেস্ক:

ইডেন মহিলা কলেজে পড়ুয়া ছাত্রীদের জোর করে দলের শীর্ষ নেতাদের বিছানায় পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে কলেজের নেত্রীদের বিরুদ্ধে। কেউ নেতাদের বিছানায় যেতে না চাইলে তাকে নির্যাতন করা হয় বলেও বক্তব্য দিয়েছে শিক্ষার্থীরা।

ইডেন মহিলা কলেজের প্রশাসন ও ছাত্রী হলগুলোর নিয়ন্ত্রণ কার্যত ছাত্রলীগের হাতে। নানাভাবে সাধারণ ছাত্রীদের হয়রানি করা হয়। হলে সিটে কে থাকবেন, কার নামে সিট দেয়া হবে সবকিছু ছাত্রলীগের নেত্রীরা দেখাশোনা করেন। শুধু তাই নয়, নিজেদের অবস্থান ধরে রাখতে কলেজের প্রিন্সিপাল সুপ্রিয়া ভট্টাচার্য থেকে শুরু করে বেশির ভাগ শিক্ষক নেত্রীদের তোয়াজ করে থাকেন।

ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভা ও সাধারণ সম্পাদক রাজিয়া সুলতানা সুন্দরীদের ছবি তোলেন এবং ব্যবসা করাতে চান বলে অভিযোগ করেছেন ইডেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সামিয়া আক্তার বৈশাখী। কলেজটির ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের এমন সহিংস আচরণ নতুন নয় জানিয়ে বৈশাখী বলেন, ‘আগেও এমন অনেক ঘটনা ঘটেছে। আমাদের রুমের মেয়েদেরকে তারা নিয়ে যেতে চেয়েছেন। কিন্তু মেয়েরা তো তাদের কাছে নিরাপদ মনে করেন না। কারণ তারা ওই মেয়েদেরকে দিয়ে বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা করাতে চান। বৈধ রুমের মেয়েরা উপস্থিতি খাতায় স্বাক্ষর করার সময় সভাপতির অনুসারীরা তাদের ছবি তুলে রাখেন। সেখান থেকে কোন মেয়েটা সুন্দর তা নির্বাচন করে রাখা হয়। তারপর সেই মেয়েদেরকে রুমে নিয়ে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দেয়া হয়। খারাপ উদ্দেশ্যে তাদেরকে বিভিন্ন ধরনের প্রস্তাব দেয়া হয়। কিছুদিন আগে একজন মেয়ে কান্না করতে করতে এ বিষয়ে বিবৃতিও দিয়েছেন।

ইডেন কলেজের একাধিক ছাত্রী নাম না প্রকাশ করার শর্তে গণমাধ্যমকে জানান, কলেজে পড়ুয়া যে ছাত্রীরা সুন্দর চেহারা তাদের নানাভাবে টার্গেট করা হয়। ছাত্রলীগের কলেজ শাখার নেত্রীরা হলে হলে গিয়ে সুন্দরি ছাত্রীদের ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের বিছানায় যেতে চাপ দেন। কেউ অবাধ্য হলে তাদের ওপর নেমে আসে অমানসিক নির্যাতন।

এদিকে গত দু’তিন ধরে চলা সহিংসতার সময় ছাত্রীদেরকে দেহব্যবসার বিরুদ্ধে প্ল্যাকার্ড হাতে প্রতিবাদ করতেও দেখা গেছে। প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল: ‘ইডেন কলেজে ছাত্রলীগ নেত্রীর দেহব্যবসা, এ লজ্জা কার?’ আরেকজনের প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল: দেহব্যবসায়ী প্রেসিডেন্ট চাই না।

 

The post ইডেনের ছাত্রীদের দিয়ে জোরপূর্বক দেহব্যবসার অভিযোগ appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%87%e0%a6%a1%e0%a7%87%e0%a6%a8%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%9b%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a7%80%e0%a6%a6%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%a6%e0%a6%bf%e0%a7%9f%e0%a7%87-%e0%a6%9c%e0%a7%8b/

হাফেজ তাকরীমকে রাষ্ট্রীয় সংবর্ধনা

ফাতেহ ডেস্ক:

সৌদি আরবে কোরআন তেলাওয়াত প্রতিযোগিতায় ১১১টি দেশের মধ্যে সম্মিলিতভাবে তৃতীয় স্থান অর্জনকারী হাফেজ সালেহ আহমেদ তাকরীমকে সংবর্ধনা দিয়েছে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন। এসময় তার হাতে ২ লাখ টাকার একটি চেক ও ক্রেস্ট তুলে দেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান।

মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে এ সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী বলেন, পবিত্র কোরআনুল কারীম মানবজাতির হেদায়েতের নির্দেশনা। ইসলামের প্রসারে বঙ্গবন্ধু ইসলামিক ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারাদেশে ৫৬৩টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপন করেছেন।

তিনি বলেন, আজকের অনুষ্ঠান থেকে আমি বিভিন্ন সময়ে বিশ্বজয়ী হাফেজ ও কারীদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। আমরা প্রতিযোগিতার জন্য বিভিন্ন দেশে ১১৮ জন হাফেজ পাঠিয়েছি। এর মধ্যে ৯৬ জন হাফেজ প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অর্জন করেছেন। বিশ্বজয়ী হাফেজ তাকরীমকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানাই। পাশাপাশি তার বাবা-মা ও শিক্ষকদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।

তাকরীমের বাবা হাফেজ আবদুর রহমান নিজের অনুভূতি প্রকাশ করে বলেন, তাকরীম আমার মেজো ছেলে। সে বিশ্ব দরবারে বাংলার পতাকাকে উড্ডীন করেছেন। ওস্তাদদের পরিশ্রম ও ১৭ কোটি মানুষের দোয়ায় আমার ছেলে এই সফলতা অর্জন করেছে। আমি আমার ছেলের জন্য দোয়া চাই।

হাফেজ তাকরীমের শিক্ষক ও তার মাদরাসার মুহতামীম মুরতাজা হাসান ফয়েজী বলেন, এই সংবর্ধনার জন্য আমরা ধর্ম মন্ত্রণালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। তাকরীমের প্রথম শিক্ষক তার বাবা। তিনি সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করেছেন এই সফলতায়। তিনি সঠিক প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষক নির্বাচন করতে পেরেছিলেন।

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক ড. মো. মুশফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত সচিব আবদুল আউয়াল হাওলাদার। এসময় উপস্থিত ছিলেন বায়তুল মোকাররমের খতিব মুফতি রুহুল আমীন, পিএইচপি গ্রুপের চেয়ারম্যান সুফী মিজানুর রহমানসহ বিভিন্ন মাদরাসা থেকে আগত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

The post হাফেজ তাকরীমকে রাষ্ট্রীয় সংবর্ধনা appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%b9%e0%a6%be%e0%a6%ab%e0%a7%87%e0%a6%9c-%e0%a6%a4%e0%a6%be%e0%a6%95%e0%a6%b0%e0%a7%80%e0%a6%ae%e0%a6%95%e0%a7%87-%e0%a6%b0%e0%a6%be%e0%a6%b7%e0%a7%8d%e0%a6%9f%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a7%80%e0%a7%9f/

Monday, September 26, 2022

শায়খ ইউসুফ আল কারজাভির ইন্তেকাল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

বিশ্ববিখ্যাত মুসলিম স্কলার ও ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন অব মুসলিম স্কলার্সের সাবেক প্রেসিডেন্ট এবং বর্ষীয়ান আলেমেদ্বীন শায়খ ইউসুফ আল কারজাভি ইন্তেকাল করেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৬ বছর। তার টুইটার একাউন্টে মৃত্যুর বিষয়টি সুনিশ্চিত করা হয়।

আইইউএমএসের টুইটার হ্যান্ডেলে বলা হয়েছে, ‘মুসলমানরা তাদের সবচেয়ে আন্তরিক এবং গুণী আলেমদের একজনকে হারিয়েছে।’

ড. ইউসুফ আবদুল্লাহ আল-কারজাভি মিশরীয় বংশোদ্ভূত একজন প্রভাবশালী আধুনিক ইসলামি তাত্ত্বিক ও আইনজ্ঞ। মুসলিম ধর্মতত্ত্বিকদের অভিজাত সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন অব মুসলিম স্কলার্সে (International Union of Muslim scholars)-এর সাবেক চেয়ারম্যান। আধুনিক উদ্ভূত নানা জটিল সমস্যার সাবলীল ও গভীর ইজতিহাদভিত্তিক সমাধানমূলক শতাধিক গবেষণা-গ্রন্থের রচয়িতা তিনি। তার গ্রন্থগুলো প্রকাশের পরপরই পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়ে জ্ঞানী, গবেষক, বোদ্ধামহল ও সাধারণ মানুষের কাছে ব্যাপক পাঠকপ্রিয়তা লাভ করে।

ইসলামের পুনর্জাগরণে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক সমন্বিত পরিকল্পিত আন্দোলনকামী ব্যক্তিত্ব হিসেবে শায়খ ইউসুফ আল-কারাজাভি বর্তমানে সারা পৃথিবীতে অনন্য ছিলেন। স্বৈরশাসন বিরোধী অবস্থানের কারণে মাতৃভূমি ছেড়ে তিনি চলে যেতে বাধ্য হন। বর্তমানে কাতারে তিন দশকের নির্বাসিত জীবনযাপন করছিলেন।

শায়খ কারাজাভির জন্ম ১৯২৬ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর। মিসরের উত্তর নীলনদের তীরবর্তী সাফাত তোরাব গ্রামে। দুই বছর বয়সে বাবা ইন্তিকাল করলে চাচা তার লালন-পালন করেন। দশ বছর বয়সে তিনি সম্পূর্ণ কোরআন হিফজ করেন। হিফজ সম্পন্ন করে আল-আজহার কারিকুলামে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পড়াশোনা করেন। উচ্চ মাধ্যমিকে জাতীয় মেধায় দ্বিতীয় হন। প্রাচীন ইসলামী বিদ্যাপীঠ আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উসুলুদ দ্বীন অনুষদ থেকে অনার্স, আরবি ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতকোত্তর ডিপ্লোমা এবং পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।

মিসরের ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অধীন ‘Institute of Imams’ এর পরিদর্শক হিসেবে কর্মজীবনে পদার্পণ করেন। কিছুদিন তিনি আওকাফ মন্ত্রণালয়ের ‘Board of Religious Affairs’ এ কর্মরত ছিলেন । ১৯৭৭ সালে তিনি কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘শরীয়াহ এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ অনুষদের প্রতিষ্ঠাকালীন ডীন নিযুক্ত হন । ১৯৯০ পর্যন্ত তিনি এখানে কর্মরত থাকেন এবং একই বছর তাঁর নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত হয় ‘সীরাত ও সুন্নাহ গবেষণা কেন্দ্র’। ১৯৯০-৯১ সালে আলজেরিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের Scientific Council এর চেয়ারম্যান হিসেবে কাজ করেন । ১৯৯২ সালে কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সীরাত ও সুন্নাহ গবেষণা কেন্দ্রের ডিরেক্টর হিসেবে পুনরায় কাতার ফিরে আসেন । বর্তমানে সেখানে কর্মরত আছেন।

শায়খ ইউসুফ কারাজাভি আন্তর্জাতিক বিভিন্ন একাডেমিক সংস্থার সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় সম্পৃক্ত আছেন। তিনি জর্ডানের রয়্যাল অ্যাকাডেমি ফর ইসলামিক কালচারাল অ্যান্ড রিচার্জ (Royal academy for Islamic culture and research), ইসলামি সম্মেলন সংস্থা (OIC), রাবেতা আল-আলম আল-ইসলামি এবং ইসলামিক স্টাডিজ সেন্টার, অক্সফোর্ড এর সম্মানিত সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

তিনি আয়ারল্যান্ডভিত্তিক আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থা ইউরোপিয়ান কাউন্সিল ফর ফাতওয়া অ্যান্ড রিচার্জের (European Council For Fatwa and Research) প্রধান হিসেবেও কর্মরত।

শায়খ ইউসুফ কারাজাভি ১৪১১ হিজরিতে ইসলামী অর্থনীতিতে অবদান রাখায় ব্যাংক ফয়সল পুরষ্কার লাভ করেন। ইসলামি শিক্ষায় অবদানের জন্য ১৪১৩ হিজরিতে মুসলিম বিশ্বের নোবেল খ্যাত কিং ফয়সাল অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন । ১৯৯৭ সালে ব্রুনাই সরকার তাকে ‘হাসান বাকলি’ পুরষ্কারে ভূষিত করে। এছাড়াও তার বৈচিত্র্যময় পাণ্ডিত্যের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি নানা পদক ও সম্মাননায় ভূষিত হন । তার অন্যতম কিছু আন্তর্জাতিক পুরস্কার : এক. কিং ফয়সাল ইন্টারন্যাশনাল প্রাইজ । দুই. ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় পদক, মালয়েশিয়া। তিন. আন্তর্জাতিক পবিত্র কোরআন সম্মাননা পুরস্কার, দুবাই । চার. সুলতান হাসান আল বলকিয়াহ সম্মাননা, ব্রুনাই। পাঁচ. আল-ওয়াইস পদক, সংযুক্ত আরব আমিরাত। ছয়. জর্ডানের মেডেল অব ইন্ডিপেন্ডেন্স ।

The post শায়খ ইউসুফ আল কারজাভির ইন্তেকাল appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%b6%e0%a6%be%e0%a7%9f%e0%a6%96-%e0%a6%87%e0%a6%89%e0%a6%b8%e0%a7%81%e0%a6%ab-%e0%a6%86%e0%a6%b2-%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a6%9c%e0%a6%be%e0%a6%ad%e0%a6%bf%e0%a6%b0-%e0%a6%87%e0%a6%a8/

Sunday, September 25, 2022

জন্মনিয়ন্ত্রণ সেবা নেওয়া কমেছে ২৪ শতাংশ

ফাতেহ ডেস্ক:

সারা দেশে সরকারি জন্মনিয়ন্ত্রণ সেবা নেওয়ার হার কমছে। পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, গত পাঁচ বছরে সাত ধরনের সেবা নেওয়ার হার কমেছে প্রায় ২৪ শতাংশ। আর ছয় বছরের হিসাব করলে এসব সেবা নেওয়ার হার কমে দাঁড়ায় প্রায় ৩৭ শতাংশ। সেবাগুলো হলো খাওয়ার বড়ি, কনডম, দীর্ঘমেয়াদি পদ্ধতির ইনজেকশন, ইন্ট্রা–ইউটেরিন ডিভাইস (আইডি) বা কপার টি, ইমপ্ল্যান্ট, স্থায়ী পদ্ধতি ও জরুরি বড়ি।

করোনা সংক্রমণের সময় জন্মনিয়ন্ত্রণ সেবা নেওয়ার হার আরও কমে যায়। আর এ পর্যন্ত তা করোনাকালের আগের অবস্থায় ফিরে যায়নি। তবে গত ছয় বছরে জরুরি বড়ি নেওয়ার হার ব্যাপকহারে বেড়েছে। অপরিকল্পিত যৌনমিলনের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে এই বড়ি খেতে হয়। সরকারিভাবে ২০১৬–২০১৭ অর্থবছরে শুধু ঢাকায় জরুরি বড়ি দেওয়া শুরু হয়। সে সময় ১৫২টি বড়ি সরবরাহ করা হয়েছিল। ২০২১–২২ অর্থবছরে সারা দেশে জরুরি বড়ি সরবরাহ করা হয় পৌনে চার লাখের বেশি।

পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর অর্থবছর ধরে জন্মনিয়ন্ত্রণ সেবা দেওয়ার হিসাব করে। অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে, ২০১৭–১৮ অর্থবছরের তুলনায় ২০২১–২২ অর্থবছরে অর্থাৎ গত পাঁচ বছরে খাওয়ার বড়ি নেওয়ার হার ৩৭ শতাংশ কমেছে। এ সময়ে স্থায়ী পদ্ধতি নেওয়ার হার কমেছে ৩৩ শতাংশ। এ ছাড়া কপার টি প্রায় ২৯ শতাংশ, ইমপ্ল্যান্ট প্রায় ১৯ শতাংশ, ইনজেকশন ১৭ শতাংশ ও কনডম নেওয়ার হার কমেছে ১৪ শতাংশ। অবশ্য ইমপ্ল্যান্ট সেবা নেওয়ার হার ধারাবাহিকভাবে কমেনি; এর হারে ওঠা–নামা আছে।

২০১৬-১৭ অর্থবছরের সঙ্গে তুলনা করলে সেবা নেওয়ার হারের পার্থক্য আরও বাড়ে। ওই অর্থবছরের তুলনায় ২০২১–২২ অর্থবছরে খাওয়ার বড়ি ৪৩ শতাংশ, কনডম ৩৪ শতাংশ, ইনজেকশন ২৭ শতাংশ, কপার টি ৩৭ শতাংশ ও স্থায়ী পদ্ধতি প্রায় ৩৬ শতাংশ কমেছে। শুধু ইমপ্ল্যান্টের পার্থক্য কম, ৯ শতাংশ।

The post জন্মনিয়ন্ত্রণ সেবা নেওয়া কমেছে ২৪ শতাংশ appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%9c%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%ae%e0%a6%a8%e0%a6%bf%e0%a7%9f%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%a4%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%a3-%e0%a6%b8%e0%a7%87%e0%a6%ac%e0%a6%be-%e0%a6%a8%e0%a7%87%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be/

পঞ্চগড়ে নৌকাডুবি: মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৮, এখনো নিখোঁজ ৬৫

ফাতেহ ডেস্ক:

পঞ্চগড়ের বোদায় নৌকাডুবির ঘটনায় আরও তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকালে উপজেলার আওলিয়াঘাট থেকে ১৬ কিলোমিটার দূরে দেবীগঞ্জ ব্রিজ সংলগ্ন এলাকা থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

এদের মধ্যে একজন পুরুষ, এক শিশু ও একজন নারী। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ২৮ জনে। তবে তাৎক্ষণিক তাদের পরিচয় পাওয়া যায়নি।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সহকারী উপ-পরিচালক শেখ মো. মাহাবুবুল আলম জানান, সকাল থেকে পঞ্চগড়সহ আশপাশের জেলার ফায়ার সার্ভিসের আট ইউনিট উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছেন। এর বাইরেও রংপুর, কুড়িগ্রাম ও রাজশাহী থেকে আসা তিনটি দলের ৯ ডুবুরি উদ্ধার কাজে অংশ নিচ্ছেন। এখনও তালিকাভুক্ত ৬৫জন নিখোঁজ রয়েছেন।

নিহতদের মধ্যে পলি রানী (১৪), লক্ষ্মী রানী (২৫), অমল চন্দ্র (৩৫), শোভা রানী (২৭), দিপঙ্কর (৫), প্রিয়ান্তা রানী (৫), খুকি রানী (৩৫), প্রলিমা রানী (৫৫), তারা রানী (২৪), শোনেকা রানী (৬০), ফাল্গুনি রানী (৫৫), প্রমিলা রানী (৭০), ধনবালা (৪৭), সুমিত্রা রানী (৫৭), সফলতা রানী (৪০), শিমলা রানী (৩৫), নৌকার মাঝি হাসান আলী (৫২), উশোষী রানী (২), তনুশ্রি রানী (২), শ্রেয়শী রানী (২), বিমল চন্দ্র (৪৫), শ্যামলি রানী (৩৫), জোতিষ চন্দ্র (৫৫) রূপালি রানীর (৩৫) পরিচয় শনাক্ত হয়েছেন।

এর আগে রোববার দুপুরে উপজেলার বদ্বেশ্বরী মন্দিরে মহালয়া উৎসবে যোগ দিতে নৌকায় করে যাচ্ছিলেনে দেড় শতাধিক সনাতন ধর্মালম্বী। অতিরিক্ত যাত্রীর বহন করায় নৌকাটি করতোয়া নদী আওলিয়াঘাট এলাকায় ডুবে যায়।

The post পঞ্চগড়ে নৌকাডুবি: মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৮, এখনো নিখোঁজ ৬৫ appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%aa%e0%a6%9e%e0%a7%8d%e0%a6%9a%e0%a6%97%e0%a7%9c%e0%a7%87-%e0%a6%a8%e0%a7%8c%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%a1%e0%a7%81%e0%a6%ac%e0%a6%bf-%e0%a6%ae%e0%a7%83%e0%a6%a4%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%b8/

হেফজখানায় নিরাপত্তা ঝুঁকি কাটছে না : কী করছে নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো?

রাকিবুল হাসান নাঈম:

রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর মারকাজুত তাহফিজ ইন্টারন্যাশনাল মাদরাসায় দুই ছাত্রকে বলাৎকারের অভিযোগ তুলে দুই শিক্ষককে নির্যাতন করেছে কয়েকজন অভিভাবক এবং দুবৃত্তরা। যাদের বিরুদ্ধে বলাৎকারের অভিযোগ, তারা হলেন ওই মাদরাসার শিক্ষক আবু বকর ও আল আমীন। অভিভাবকদের দাবির প্রেক্ষিতে তৎক্ষণাৎ দুই শিক্ষককে বরখাস্ত করা হয়। তবে মাদরাসা কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, দুই শিক্ষককে যারা নির্যাতন করেছে, তাদের মধ্যে অভিভাবক ছাড়াও বাইরের লোক ছিল। ঘটনা তদন্ত ছাড়াই তারা এসে চড়াও হয়। তাদের সঙ্গে মিডিয়ার লোকও এসেছিল।

কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, দেশের হেফজখানাগুলো সম্পর্কে বারবার এ ধরনের অভিযোগ উঠলেও কর্তৃপক্ষ সতর্ক হচ্ছে না কেন? কী করছে মাদরাসা-নিয়ন্ত্রক-সংস্থা বেফাক এবং হাইয়াতুল উলয়া? অভিভাবকগণ বলছেন, হেফজখানার নিরাপদ কোনো মডেল দাঁড় করানো এখন সময়ের দাবি। নয়তো তারা তাদের সন্তানদের নিয়ে নিশ্চিন্ত থাকতে পারছেন না। নিয়ন্ত্রক সংস্থা কি নতুন নিরাপদ কোনো মডেল আদৌ দাঁড় করাতে পারছে?

তাহফিজ কর্তৃপক্ষ কী বলছেন?

তাহফিজ কর্তৃপক্ষ বলছেন, যে দুজন ছাত্র শিক্ষকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে, তারা কারা সেটা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। অভিভাবকরা যখন এসে আমাদেরকে জানায়, তাদের দাবির প্রেক্ষিতে শিক্ষক দুজনকে বহিষ্কার করা হয়।

মারকাজুত তাহফিজ ইন্টারন্যাশনাল মাদরাসার পরিচালক নেসার আহমদ আন নাছিরীকে ফোন দিলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তাই কথা হয় তার একান্ত কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ হাসানের সঙ্গে। নাসিরির পর মাদরাসায় বিষয়-আশয় তিনিই দেখে থাকেন। প্রতিবেদককে তিনি জানান, অভিভাবকরা আসেন আসরের পর, মাগরিবের আগে। পরিচালক তখন মাদরাসায় ছিলেন। তিনি শিক্ষক দুজনকে বহিষ্কার করেন অভিভাবকদের সামনে। বিষয়টি নিয়ে আর কথা না বলার অনুরোধও জানান তিনি। পরে তিনি মাগরিব নামাজ পড়তে চলে যান। ঠিক এসময় আরও আট-দশজন লোক মাদরাসায় ঢুকে। তাদের সঙ্গে ঢুকে সাংবাদিকও। লোকগুলো এসে শিক্ষককে মারধর করেন। সাংবাদিকরা ছবি তুলেন। আগ্রাসীভাবে এটা-সেটা জিজ্ঞেস করেন।’

সাংবাদিকরা কর্তৃপক্ষের বক্তব্য নেননি বলেও জানান আব্দুল্লাহ হাসান। তিনি ফাতেহকে বলেন, ‘একাত্তর টিভির প্রতিবেদন দেখলে বুঝবেন, শিক্ষক কিন্তু অভিযোগ স্বীকার করেননি। তিনি বলেছেন, ছাত্ররা তাকে ব্ল্যাকমেইল করেছে। ধরলাম, শিক্ষক আসলেই অপরাধ করেছে, তাহলে তো আইন ছিল, আদালত ছিল, ইনভেস্টিগেশন ছিল। কোনো তদন্ত ছাড়াই অভিযোগ তুলে দেয়াও একটা ক্রাইম।’

আব্দুল্লাহ হাসান আরও জানান, স্থানীয় কমিশনার সেদিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। তিনিও উত্তেজিত লোকদের বুঝানোর চেষ্টা করছিলেন, বিষয়টি প্রশাসন দেখবে। এটা নিয়ে যেন বড় কোনো ইস্যু তৈরী করা না হয়। কিন্তু কেউ শোনেনি।

এই ঘটনার পর ৪০০ ছাত্রকে এসে অভিভাবকরা এসে নিয়ে গেছে বলে যে অভিযোগ করা হয়েছে, তাও অস্বীকার করেন আব্দুল্লাহ হাসান। তিনি বলেন, কিছু অভিভাবক শঙ্কিত হয়ে তাদের ছাত্র নিয়ে গেছে। হাতেগোণা কয়েকজন।

কী করছে নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো?

এখন প্রায়শই এ ধরনের অভিযোগ উঠছে বিভিন্ন হেফজখানার উপর। মাদরাসাগুলো যেহেতু বেফাক এবং হাইয়াতুল উলয়ার অধীন, সেখানে কী হচ্ছে, মাদ্রাসার শিক্ষা পদ্ধতি, কর্মপদ্ধতি বা অন্য কোনো সংকট আছে কি না, নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে সেগুলো নিয়ে কাজ করার দায়িত্ব সংস্থাগুলোর। বিভিন্ন সময় এসব ঘটনায় তোলপাড় হলেও তেমন কোনো উদ্যোগ নিতে দেখা যায়নি সংস্থাগুলোকে।

বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক মাওলানা যুবায়ের আহমাদের সঙ্গে কথা হয়। তিনি ফাতেহকে জানান, এ বিষয়ে বেফাকের কোনো উদ্যোগ নেই। মুরুব্বিদেরও উল্লেখযোগ্য কোনো প্রস্তাবনা নেই। তবে তার ব্যক্তিগত মতামত হলো, হেফজখানায় যারা শিক্ষক হন, তারা অধিকাংশই কেবল হাফেজ। হিফজবিষয়ক জ্ঞান ছাড়া তাদের আর কোনো জ্ঞান থাকে না। তাদের মধ্যে শিক্ষা স্বল্প বলে ম্যানার, তাকওয়া-তাহারাতও কম থাকে। ফলে এ ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা বেশি ঘটে।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, বিগত সময়ে এসব অপরাধের অভিযোগ যাদের বিরুদ্ধে উঠেছে, তাদের অনেকেই ছিলেন হেফজ শেষ করে মাওলানা পাশও। বেফাকের এই দায়িত্বশীল আর কোনো প্রশ্নের উত্তর দিতে চাননি। ব্যস্ত আছেন বলে ফোন রেখে দেন।

এসব অভিযোগ অনেকাংশে সত্য হলেও কোনো কোনো ঘটনা ষড়যন্ত্র করে ঘটানো হয় বলে মন্তব্য করেন জামিয়া রাহমানিয়া আজিজিয়ার প্রিন্সিপাল ও কওমি মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড বেফাক ও হাইয়াতুল উলয়ার মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক। তিনি ফাতেহকে বলেন, অনেক জায়গায় অভিযোগ প্রমাণিত হবার আগেই অভিযুক্ত শিক্ষককে মারধর করেন অভিভাবকরা। তাদের চাপে কিংবা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে শিক্ষককে তৎক্ষণাৎ বহিষ্কারও করা হয়। পরে দেখা যায়, শিক্ষক নির্দোষ।

এই ঘটনা রোধপ্রকল্পে তাকওয়া-তাহারাতের বোধ শাণিত করার কোনে বিকল্প নেই বলে জানান হাইয়াতুল উলয়ার মহাসচিব। পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থাপনার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থাপনাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিষ্ঠানকে পরিকল্পনামাফিক তাদের ছাত্রদের আবাসন ব্যবস্থাপনা সাজাতে হবে। কিভাবে ব্যবস্থাপনা করলে অপরাধের সুযোগ কমবে, সেভাবে ব্যবস্থাপনা করতে হবে। অনেকে মাদরাসাগুলো সম্পূর্ণ অনাবাসিক করে দেয়ার পরামর্শ দেন। আমি বলি, বর্তমানের আবাসিক সিস্টেমে পড়াশোনা করে ছাত্ররা যতটা উপকৃত হচ্ছে, অনাবাসিক করে দিলে তারা সেই উপকারটা পাবে না। এই উন্নতিটা বজায় থাকবে না। তাই পরিকল্পনা নিতে হবে, আবাসিক ব্যবস্থাপনাটাকেই কিভাবে সুসজ্জিত সুনিরাপদ করা যায়।’

মডেল হিসেবে সিলেটের একটি মাদরাসার চিত্রও তুলে ধরেন মাওলানা মাহফুজুল হক। তিনি বলেন, সেদিন সিলেটের জামিয়া ইসলামিয়া ফরিদাবাদ মাদরাসায় গেলাম। মাদরাসার আবাসন ব্যবস্থাপনাটা ভালো লাগলো। সেখানে শিক্ষকদের রুম ছাত্রদের রুম থেকে আলাদা। দরজাও আলাদা। শিক্ষকদের রুমের সঙ্গে ছাত্রদের রুমের কোনো সংযোগ নেই। একরুমে দুজন করে শিক্ষক থাকেন। এখানে দুজনের জায়গায় তিনজনও থাকতে পারে। এই সিস্টেমটা করা গেলে অপরাধের সুযোগ শিক্ষকরা কম পাবেন। শুধু এটা না, এমন আরও বিভিন্ন সিস্টেম করা যেতে পারে।’

The post হেফজখানায় নিরাপত্তা ঝুঁকি কাটছে না : কী করছে নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো? appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%b9%e0%a7%87%e0%a6%ab%e0%a6%9c%e0%a6%96%e0%a6%be%e0%a6%a8%e0%a6%be%e0%a7%9f-%e0%a6%a8%e0%a6%bf%e0%a6%b0%e0%a6%be%e0%a6%aa%e0%a6%a4%e0%a7%8d%e0%a6%a4%e0%a6%be-%e0%a6%9d%e0%a7%81%e0%a6%81%e0%a6%95/

কোনো সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অংশ নেবে না বিশ্বজয়ী হাফেজ সালেহ আহমাদ তাকরীম

ফাতেহ ডেস্ক:

আপাতত নিজ মাদরাসার বাইরে কোথাও কোনো সংবর্ধনা, মাহফিল, সভা, সেমিনারে অংশ নেবে না বিশ্বজয়ী হাফেজ সালেহ আহমাদ তাকরীম। বিশ্বজয়ী হাফেজের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মারকাযু ফয়জিল কুরআন আল ইসলামী ঢাকা গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

প্রতিষ্ঠানটি বলছে, যে কয়েকটি বিশেষ লক্ষ্য নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির সূচনা হয়েছিল তার মধ্যে অন্যতম একটি হলো, সময়ে সময়ে যে সকল হাফেজে কুরআন দেশ -বিশ্ব সেরা হয়ে কালের গহবরে হারিয়ে যায় তাদেরকে যোগ্য আলেম হিসেবে গড়ে তোলা। আলহামদুলিল্লাহ, প্রতিষ্ঠানটির অনেক ছাত্র ইতোমধ্যেই দেশ সেরা হাফেজ হয়েও বাংলাদেশ কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড বেফাকের কিতাব বিভাগের কেন্দ্রীয় পরীক্ষায় ২য়, ৩য়, ৫ম সহ শীর্ষ মেধাতালিকায় স্থান করে নিতে সক্ষম হয়েছে। প্রথম বছরের ছাত্ররাই আসন্ন বেফাক পরীক্ষায় মেশকাত জামাতে অংশগ্রহণ করবে। পাশাপাশি আগামী শিক্ষাবর্ষে দাওরায় হাদিসও খোলা হবে ইনশাআল্লাহ।

তাকরিমের শিক্ষক হাফেজ মাওলানা আব্দুল্লাহ আল মামুন গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘অল্পবয়সে মাত্রাতিরিক্ত খ্যাতি ও প্রসিদ্ধি তাকরিমের ভবিষ্যৎ জীবন গঠনে মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। সে আশঙ্কা থেকেই মাদরাসা কর্তৃপক্ষ ও তাকরিমের পরিবার যৌথভাবে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান না করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আপাতত মাদরাসার বাইরে কোথাও কোনো সংবর্ধনা, মাহফিল, সভা, সেমিনারে তাকরিম অংশগ্রহণ করবে না। তবে এক্ষেত্রে ‘রাষ্ট্রীয় প্রোগ্রাম ভিন্ন।

 

The post কোনো সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অংশ নেবে না বিশ্বজয়ী হাফেজ সালেহ আহমাদ তাকরীম appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%95%e0%a7%8b%e0%a6%a8%e0%a7%8b-%e0%a6%b8%e0%a6%82%e0%a6%ac%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%a7%e0%a6%a8%e0%a6%be-%e0%a6%85%e0%a6%a8%e0%a7%81%e0%a6%b7%e0%a7%8d%e0%a6%a0%e0%a6%be%e0%a6%a8%e0%a7%87/

‘বাড়ছে প্রাইভেট হেফজখানার গুরুত্ব’ : গরিবদের সুযোগ কমছে

রাকিবুল হাসান নাঈম:

বর্তমানে নানা কারণেই বাড়ছে প্রাইভেট হেফজখানার গুরুত্ব। খরচের পরিমাণ বেশি হলেও অভিভাবকরা এসব হেফজখানাকেই সন্তানদের জন্য নিরাপদ ও উপকারী ভাবছেন। সংশ্লিষ্টগণ বলছেন, প্রাইভেট মাদরাসায় সাধারণ মাদরাসার তুলনায় শিক্ষা, আবাসন ব্যবস্থা এবং তত্ত্বাবধানের মান বেশি হবার কারণে অভিভাবকদের আগ্রহ দিনদিন বাড়ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দুই ধরনের প্রাইভেট হেফজখানা আছে। এক. যারা সম্পূর্ণ অনুদানমুক্ত। কেবল ছাত্রদের বেতনেই চলে। দুই. যারা অনুদান গ্রহণ করেন কিছু কিছু। ব্যাপকভাবে কালেকশন করেন না। প্রথম ধরণের মাদরাসায় একমাত্র সচ্ছল পরিবারের সন্তানরাই পড়তে পারে। আর দ্বিতীয় ধরণের মাদরাসায় পড়তে পারে অপেক্ষাকৃত কম সচ্ছল পরিবারের সন্তানরা।

খরচ মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে

বেতন, সার্ভিস চার্জ, খাবার সব মিলিয়ে প্রাইভেট হেফজখানার খরচ এখন মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে। পরিচালকরা বলছেন, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির কারণে খরচ এখন আরও বেড়েছে। এই খরচ কমার কোনো সম্ভাবনা নেই।

যাত্রাবাড়ির কুতুবখালিতে মাদরাসাতুল কোরআন আল ইসলামিয়া মাদরাসাটি পরিচালনা করেন হাফেজ মাওলানা তাওহিদ বিন আলী লাহোরী। মাদরাসাটি প্রাইভেট, ভাড়া বাড়িতে তার অবস্থান। এখানে হেফজখানার ছাত্রদের মাসিক খরচ সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা। তাওহিদ বিন লাহোরী ফাতেহকে বলেন, ‘বর্তমান চড়ামূল্যের বাজারে এই টাকাতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে। কিন্তু এরচে কম টাকা নিলে সেবার মান ঠিক থাকছে না। ছাত্রদের নির্বিঘ্নে পড়াশোনার ব্যবস্থা করতে খরচ হয় প্রচুর।’

এ মাদরাসায় সাধারণত অনুদান নেয়া হয় না। ছাত্রদের বেতনেই চলে। তাই কেউ ভর্তি হতে এলে খরচ কূলাতে পারবে কিনা, জেনে নেয়া হয়। তবে অসচ্ছল আলেমের সন্তান হলে মাসিক খরচ কিছুটা কম রাখা হয় বলে জানান বিন লাহোরী।

মুহাম্মদপুরের আসসুন্নাহ কমপ্লেক্সে হেফজখানার ছাত্রদের মাসিক খরচ পাঁচ হাজার টাকা। তবে মাদরাসাটি কিছু কিছু অনুদান নেয়। ফলে এখানে মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান, যারা আড়াই থেকে তিন হাজার টাকার খরচ বহন করতে পারবে, তারাও পড়তে পারে। এখানকার হেফজখানার প্রধান শিক্ষক হাফেজ মাওলানা খাইরুল আমিন ফাতেহকে বলেন, ‘নির্ধারিত পাঁচ হাজার থাকলেও অনেকেই আড়াই কিংবা তিন হাজার দেয়। যেহেতু টুকটাক অনুদান নেয়া হয়, তাই এ ছাড়টুকু দেয়া যাচ্ছে। নতুবা দেয়া যেতো না।’

এছাড়া কাজলার মাদরাসাতুল ইতকানে হেফজখানার একজন ছাত্রের মাসিক খরচ সাড়ে সাত হাজার টাকা। মাদরাসাটি কোনো অনুদান গ্রহণ করে না। এখানকার হেফজখানার প্রধান শিক্ষক হাফেজ জহিরুল ইসলাম ফাতেহকে বলেন, ‘অনুদান সম্পূর্ণ নিষেধ। আমাদের লিফলেটেও এ নিষেধাজ্ঞা লিখে দেয়া হয়েছে। সুতরাং, সব খরচ ছাত্রদের বেতন থেকেই বহন করতে হয়। ফলে বেতন একটু বেশিই।’ খরচ বহনের সামর্থ্য আছে কিনা জেনেই ছাত্রদের ভর্তি নেয়া হয় এখানে।

মারকাজুত তাহফিজ ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসার মাসিক খরচ সাধারণের ক্ষমতার বাইরে। জানা গেছে, মাদরাসাটির খরচ ব্যয়বহুল। ভিআইপি হলে প্রতিমাসে খরচ ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা। আর সাধারণ হলে ১২ থেকে ১৪ হাজার টাকা।

প্রাইভেট হেফজখানার গুরুত্ব কেন বাড়ছে

আসসুন্নাহ কমপ্লেক্সের হেফজখানার প্রধান শিক্ষক খাইরুল আমিন বলেন, ‘অভিজ্ঞতায় যতটুকু দেখলাম, অভিভাবকরা ভালো একটা আবাসন ব্যবস্থাপনা চান। বিশেষ করে উচ্চবিত্ত এবং উচ্চ-মধ্যবিত্তরা। তারা নিশ্চিত করতে চান, আমার সন্তান ভালো একটা পরিবেশ পাচ্ছে, খাবার পাচ্ছে। প্রাইভেট হেফজখানাগুলো ভালো আবাসনব্যবস্থা দিচ্ছে, খাবার দিচ্ছে। ফলে এ ধরণের মাদরাসার প্রতি অভিভাবকদের আগ্রহ বাড়ছে। যেমন আমাদের ক্লাসরুম, ঘুমানোর রুম দেখলে সবারই ভালো লাগবে। দৈনিক খাবার দিচ্ছি পাঁচবেলা। তিনবেলা খাবার এবং দুই বেলা নাস্তা। অভিভাবক এ বিষয়গুলো খেয়াল করেন খুব।’

রাজধানীর প্রসিদ্ধ একটি মাদরাসার পরিচালক বলেন, প্রাইভেট হেফজখানার পড়াশোনা গুরুত্বপূর্ণ একটি দিক। পড়াশোনা দিয়েই মূলত হেফজখানাগুলো আলো ছড়াচ্ছে। যেমন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক হিফজ প্রতিযোগিতা এর বাস্তব প্রমাণ। প্রাইভেটের হাফেজরাই কিন্তু এসব প্রতিযোগিতায় ফার্স্ট হয়ে সম্মান বাড়াচ্ছে নিজের, দেশের। ফলে অভিভাবকরা এদিকেই বেশি ঝুঁকছে।

সাউদা বিনতে জামআহ রা. আন্তর্জাতিক বালিকা মাদরাসার পরিচালক মাওলানা ইসমাঈল হাসান ফাতেহকে বলেন, ‘প্রাইভেট হেফজখানাগুলো একটা লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে। ফলে পড়াশোনায় তারা বেশি নাম করছে। নিবিড় তত্ত্বাবধান, সঠিক গাইডলাইন এবং বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে পাঠদান—এসব হেফজখানার অন্যতম বৈশিষ্ট্য। সাধারণ মাদরাসায় হেফজ শেষ করতে একটা ছেলের যে সময় লাগে, প্রাইভেট মাদরাসায় হেফজ করতে তারচেয়ে কম সময় লাগে। পাশাপাশি সঠিক তত্ত্বাবধানের কারণে, পড়াশোনার সার্বিক মান ও ইয়াদ থাকে বেশি। তাই অভিভাবকরা এখন প্রাইভেট মাদরাসা নিজেদের সন্তানদের জন্য ভালো মনে করেন।’

তাওহিদ বিন লাহোরির মাদরাসায় পড়াশোনা করছে কাতারপ্রবাসী আলেম মাওলানা নাজমুল হাসানের ছেলে। তিনি ফাতেহকে বলেন, ‘আগে আমার ছেলে হোমনাতে এক মাদরাসায় পড়তো। গত তিন বছরে তার কোনো উন্নতিই হয়নি। মনে হয় কোনো লক্ষ্য নেই। কিন্তু ছেলেকে এখন প্রাইভেটে ভর্তি করিয়েছি। তিনমাসেই পরিবর্তন লক্ষ্য করতে পারছি। এখন ভাবছি, আরও আগে যদি এ মাদরসায় ভর্তি করাতাম, তাহলে আরও ভালো হতো।’

নারীদের জন্য প্রাইভেট হেফজখানা

অভিভাবকরা তাদের মেয়েকে হাফেজ বানানোর জন্য প্রাইভেট মাদরাসাকেই প্রথমে রাখেন বলে জানান সাউদা বিনতে জামআহ রা. আন্তর্জাতিক বালিকা মাদরাসার পরিচালক মাওলানা ইসমাঈল হাসান। তিনি ফাতেহকে বলেন, ‘নারী হেফজখানায় ছাত্রীদের চাপ খুব বেশী। কিন্তু মাঝেমধ্যে শিক্ষিকা সঙ্কটে পড়তে হয়। কারণ, যারা হাফেজ হচ্ছে, তাদের বিয়ে হয়ে যাচ্ছে। অনেকের স্বামী তাদেরকে পড়াতে দেয় না। কেউবা নিজেই মাদরাসা খুলছে। আমরা আমাদের নিজস্ব শিক্ষিকা দিয়ে পড়াচ্ছি।’

এখানে ছাত্রীদের মাসিক খরচ সাত হাজার টাকা। এর কমে কাউকে সুযোগ দেয়া যায় না জানিয়ে পরিচালক বলেন, ‘মাদরাসা যেহেতু অনুদানমুক্ত, ভাড়া বাসায়, ফলে খরচ সব ছাত্রীদের বেতন থেকেই মেটাতে হয়। ১০ জনের খাবার রান্না করলে একজন বেশি খাওয়ানো যায়। কিন্তু ১০ জনের জায়গায় ১১ জন ঘুমানো যায় না। তাই ভাড়া বাসা হলে খরচ কমে কাউকে সুযোগ দেয় যায় না।’

গরিবদের জন্য এসব হেফজখানায় পড়া দুঃসাধ্য হয়ে গেলো কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই। তাদের সামর্থ্য নেই এই খরচ কূলানোর। কিন্তু গরিব ঘরের সন্তানরাই কিন্তু মেধার স্বাক্ষর রাখে বেশি। আমি পরীক্ষা করে ভালো পেলে সুযোগ দেই। যেন আমাদের টাকাটা বৃথা না যায়।’

তবে নারীদের জন্য কিতাবখানা অনেক থাকলেও হেফজখানা এখনও বেশ অপ্রতুল। শিক্ষিকা সঙ্কট এর বড় কারণ বলে উল্লেখ করেন মাওলানা ইসলমাইল হাসান।

The post ‘বাড়ছে প্রাইভেট হেফজখানার গুরুত্ব’ : গরিবদের সুযোগ কমছে appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a7%9c%e0%a6%9b%e0%a7%87-%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%be%e0%a6%87%e0%a6%ad%e0%a7%87%e0%a6%9f-%e0%a6%b9%e0%a7%87%e0%a6%ab%e0%a6%9c%e0%a6%96%e0%a6%be%e0%a6%a8%e0%a6%be/

Saturday, September 24, 2022

জাতিসংঘে ভাষণ: ইসরায়েলকে শান্তি আলোচনার আহ্বান আব্বাসের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

ইসরায়েলকে অবিলম্বে শান্তি আলোচনা শুরুর আহ্বান জানালেন ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। জাতিসংঘের ৭৭তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে ইসরাইল-ফিলিস্তিন সংকট নিরসনে এই আহ্বান জানান তিনি।

মাহমুদ আব্বাস বলেন, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী ইয়ার লাপিদের দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের ডাক একটি ‘ইতিবাচক অগ্রগতি’। কিন্তু তিনি অবিলম্বে আলোচনার টেবিলে ফিরে আসলে তবেই এ ইতিবাচকতা প্রমাণ হবে।

এসময় ইসরায়েলের দখলদারিত্ব নীতির কারণে ন্যায়বিচার ও আন্তর্জাতিক আইনের ভিত্তিতে শান্তি অর্জনের আশা ক্ষীণ হয়ে আসছে বলেও মন্তব্য করেন মাহমুদ আব্বাস। বেশ কয়েকবছরের মধ্যে জাতিসংঘের অধিবেশনে এই প্রথম কোনো ইসরায়েলি নেতা ফিলিস্তিন প্রশ্নে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের কথা উল্লেখ করেন।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ভাষণে আব্বাস বলেন, এ অবস্থানে ইসরায়েল কতটা আন্তরিক এবং তাদের বিশ্বাসযোগ্যতা কতটুকু তার সত্যিকারের পরীক্ষা হচ্ছে, ইসরায়েল সরকারের অবিলম্বে আলোচনার টেবিলে ফিরে আসা।

১৯৬৭ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধে পূর্ব জেরুজালেম, পশ্চিম তীর ও গাজা দখর করে ইসরায়েল। এসব এলাকা নিয়েই ফিলিস্তিনিরা স্বাধীন রাষ্ট্র গড়তে চায়। যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে চলা শান্তি আলোচনা ২০১৪ সালে ভেস্তে গেছে।

The post জাতিসংঘে ভাষণ: ইসরায়েলকে শান্তি আলোচনার আহ্বান আব্বাসের appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%9c%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%bf%e0%a6%b8%e0%a6%82%e0%a6%98%e0%a7%87-%e0%a6%ad%e0%a6%be%e0%a6%b7%e0%a6%a3-%e0%a6%87%e0%a6%b8%e0%a6%b0%e0%a6%be%e0%a7%9f%e0%a7%87%e0%a6%b2%e0%a6%95%e0%a7%87/

শুভযাত্রা শুরু করলো ‘বাংলাদেশ ইসলামিক জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন’

ফাতেহ ডেস্ক:

দেশের প্রিন্ট ও অনলাইন মিডিয়ার ধর্ম বিভাগে কর্মরত লেখক, সম্পাদক ও সাংবাদিকদের সমন্বয়ে গঠিত হয়েছে ‘বাংলাদেশ ইসলামিক জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন’।

গত বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর ২০২২) রাতে রাজধানীর পল্টনের ওয়েস্টান রেস্টুুরেন্টে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সংগঠনটির কমিটি গঠিত হয়। এতে দেশের শীর্ষ জাতীয় দৈনিকের ধর্ম বিভাগের লেখক, সম্পাদক ও সাংবাদিকরা অংশ নেন।

সভায় জাতীয় দৈনিকে ধর্ম বিষয়ে আলেম সাংবাদিকদের অবদান ও তাদের উন্নতি-অগ্রগতি বিষয়ে কথা বলেন বক্তারা। এ ছাড়া আলেম লেখক ও সাংবাদিকদের সার্বিক নিরাপত্তা বিধান নিশ্চিতকরণসহ তাদের সামাজিক মর্যাদা ও অধিকার আদায়ের কথা ফুটে ওঠে আলোচনায়।

অনুষ্ঠানে দৈনিক যুগান্তরের সহসম্পাদক মাওলানা তোফায়েল গাজালিকে সভাপতি এবং দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশের সহসম্পাদক মুফতি মুনশি মুহাম্মদ উবাইদুল্লাহকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করা হয়। এ ছাড়া সিনিয়র সহসভাপতি হিসেবে দৈনিক কালের কণ্ঠের সহসম্পাদক মুফতি মুহাম্মদ মর্তুজা এবং দৈনিক ইত্তেফাকের সহসম্পাদক ফয়জুল ইসলামকে সহসভাপতি করে ৪১ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি ঘোষণা করা হয়।

এতে সিনিয়র সহসভাপতি হিসেবে দৈনিক কালের কণ্ঠের সহসম্পাদক মুফতি মুহাম্মদ মর্তুজা এবং সহসভাপতি হিসেবে দৈনিক ইত্তেফাকের সহসম্পাদক ফয়জুল ইসলাম, দৈনিক প্রথম আলোর ধর্মীয় কলাম লেখক মুফতি শাঈখ মুহাম্মদ উছমান গনী, আলেম লেখক ও আলোচক মুফতি মাকসূদুল হক, দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশের কলাম লেখক ও খতিব মুফতি আলী হায়দার, রেডিও একাত্তরের উপস্থাপক মাওলানা মামুন চৌধুরী, দৈনিক যুগান্তরের লেখক ও খতিব মুফতি ইমরানুল বারী সিরাজী এবং পাক্ষিক সবার খবর পত্রিকার সম্পাদক মাওলানা আবদুল গাফফারকে নির্বাচন করা হয়।

এ ছাড়া কমিটিতে দৈনিক আজকের পত্রিকার সহ সম্পাদক মাওলানা ইজাজুল হককে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, দৈনিক নয়া দিগন্তের সহসম্পাদক মাওলানা বেলায়েত হোসাইনকে সহ সাধারণ সম্পাদক, দৈনিক যুগান্তরের সহ সম্পাদক মুফতি তানজিল আমিরকে সাংগঠনিক সম্পাদক, আই নিউজ বিডির সহসম্পাদক সুফিয়ান ফারাবিকে সহ সাংগঠনিক সম্পাদক, আওয়ার ইসলাম টোয়েন্টিফোর ডটকমের নির্বাহী সম্পাদক মুফতি আবদুল্লাহ তামিমকে প্রচার সম্পাদক, দৈনিক বাংলাদেশের খবরের সহ সম্পাদক মাওলানা মাহফুজ হোসাইনীকে প্রশিক্ষণ সম্পাদক, দৈনিক কালবেলার স্টাফ রিপোর্টার মামুনুর রশীদ মামুনকে তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক, দৈনিক সমকালের স্টাফ রিপোর্টার জাকারিয়া ইবনে ইউসুফকে সমাজ কল্যাণ সম্পাদক, ফাতেহ টোয়েন্টিফোর ডটকমের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাওলানা রাকিবুল হাসান নাঈমকে সাহিত্য সম্পাদক, নতুন সময় ডটকমের সম্পাদক মুফতি সুহাইল আহমদকে দপ্তর সম্পাদক, ঢাকা পোস্ট টোয়েন্টিফোর ডটকমের সহ সম্পাদক নুরুদ্দীন তাসলিমকে আইন বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে নির্ধারণ করা হয়।

The post শুভযাত্রা শুরু করলো ‘বাংলাদেশ ইসলামিক জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন’ appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%b6%e0%a7%81%e0%a6%ad%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%be-%e0%a6%b6%e0%a7%81%e0%a6%b0%e0%a7%81-%e0%a6%95%e0%a6%b0%e0%a6%b2%e0%a7%8b-%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%82/

Thursday, September 22, 2022

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হিজাব-বিদ্বেষ: শিক্ষকরা বলছেন ‘আশঙ্কাজনক’

মুনশী নাঈম:

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) প্রতি তিনজন নারী শিক্ষার্থীর মধ্যে একজন পর্দা করার কারণে বিভিন্ন বৈষম্যের শিকার হন এবং তিনজনের মধ্যে একজনেরও বেশি শিক্ষার্থী বিরূপ মন্তব্যের শিকার হন বলে একটি জরিপে উঠে এসেছে। চলতি বছরের মার্চে বিশ্ববিদ্যালয়টির বিভিন্ন বিভাগের মেয়ে শিক্ষার্থীদের দ্বারা পরিচালিত এক জরিপে এ তথ্য উঠে আসে। এ জরিপ পরিচালনায় ছিলেন প্রটেস্ট সেল এগেইনস্ট হিজাবফোবিয়া ইন ডিউ নামক একটি সংগঠন।

জরিপে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘আমরা দুই মাস ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে হিজাবোফোবিয়া (হিজাবভীতি) নিয়ে একটি জরিপ পরিচালনা করেছি। এ প্রক্রিয়ায় আমরা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে যা জানতে পেরেছি তা থেকে বলা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হিজাব-নিকাব পরার অভিজ্ঞতা খুব একটা সুখকর নয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে নিকাব পরা অধিকাংশ ছাত্রী কখনো না কখনো অপমান, উত্ত্যক্ত, হেনস্তা বা বুলিংয়ের শিকার হন। সহপাঠী, সিনিয়র-জুনিয়র, কর্মকর্তা-কর্মচারী এমনকি শ্রেণিকক্ষে শিক্ষকদের কেউ কেউ হিজাব ও নিকাব পরা ছাত্রীর প্রতি বিরূপ আচরণ করেন।

জরিপে একটি প্রশ্ন ছিল, হিজাব-নিকাবের কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বা হলে আপনি কোনো বৈষম্যের সম্মুখীন হয়েছেন কি না। জরিপে অংশ নেওয়া ২২১ জন ছাত্রীর মধ্যে ‘হ্যাঁ’ বলেছেন ৭৩ জন, ‘না’ বলেছেন ১৪৮ জন। আরেকটি প্রশ্ন ছিল, হিজাব-নিকাবের কারণে কোনো শিক্ষক, কর্মচারী বা সহপাঠীর বিরূপ মন্তব্যের শিকার হয়েছেন কি না। এর উত্তরে ‘না’ বলেছেন ১৪১ জন ও ‘হ্যাঁ’ বলেছেন ৮০ জন।

ঢাবিতে হিজাব-নিকাবের অভিজ্ঞতা সুখকর নয়

ঢাবিতে হিজাব-নিকাবের অভিজ্ঞতা সুখকর নয়। চলতি বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় সেমিস্টারে পর্দা করায় ভাইভা বোর্ডে মুখ না খোলার কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বাংলা বিভাগের এক ছাত্রীকে ভাইভাতে অনুপস্থিত দেখানো হয়। ভাইভা বোর্ডের সদস্যরা চেহারা দেখতে চাইলে পর্দা (নিকাব) করার কারণে ওই শিক্ষার্থী তাতে অসম্মতি জানায়। ফলে ওই শিক্ষার্থীকে ভাইভাতে অনুপস্থিত দেখায় ভাইভা বোর্ড। এবং একই কারণে আগের সেমিস্টারের ভাইভাতেও উপস্থিত থেকেও অনুপস্থিত হয় ওই শিক্ষার্থী।

এর আগে ২০১৬ সালে হিজাব পরে ক্লাসে আসার কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্রীকে ক্লাস থেকে বের করে দিয়েছিলেন মনোবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর ড. আজিজুর রহমান। তিনি বলেছিলেন, হিজাব খুলে ক্লাসে আসলে হাজিরা দেয়া হবে, নতুবা হাজিরা দেয়া হবে না। এ ঘোষণার পর বেশ কয়েকটি ক্লাসে ছাত্রীটির ক্লাসে উপস্থিতি দেননি ওই শিক্ষক। এ ঘটনায় কয়েকজন ছাত্রী প্রতিবাদ করলে তাদেরও ক্লাস থেকে বের করে দেন ওই শিক্ষক। ২০১৫ সালেও আজিজুর রহমান বোরকা পরে আসার কারণে নাবিলা ইকবাল নামে তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্রীকে ক্লাস থেকে বের করে দেন।

‘বিষয়টি ‍আশংকাজনক এবং নৈতিকাতবিরোধী’

জরিপ প্রসঙ্গে আকর্ষণ করা হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানী ফাতেহকে বলেন, তিনি এই জরিপ সম্পর্কে জানেন না। এই জরিপ তিনি পড়েননি।’ জরিপ না পড়লেও এই অধ্যাপক বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো ড্রেসকোড নেই। বোরকা পরে যেমন আসতে পারে, অন্যান্য পোশাক পরেও আসতে পারে। তাতে বাধা দেয়ার অধিকার করও নেই। যারা এসব নিয়ে কথা বলে, তারা নৈতিকাতবিরোধী কাজ করে। এর বেশিকিছু বলব না।’

ক্যাম্পাসে পর্দা করতে বাধা দেয়ার বিষয়টিকে আশংকাজনক বলে মন্তব্য করেছেন ঢাবির ইসলামিক স্টাডিজের সহকারী অধ্যাপিক কাজি ফারজানা আফরিন। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি ফাতেহকে বলেন, ‘যে শিক্ষক ক্লাসে পর্দা সহ্য করতে পারে না, কিংবা পর্দা নিয়ে কটাক্ষ করে, তারা মূলত রুটলেস-শেকড়হীন। তারা নীতি-নৈতিকতা ধ্বংসের পাঁয়তারা করছে। তাদের কথা কানে নেয়া যাবে না।’ পর্দা প্রসঙ্গে এই শিক্ষিকা বলেন, ‘ছাত্রীরা ক্যাম্পাসে থাকুক কিংবা ক্লাসে থাকুক, তাকে পর্দা করতেই হবে। এটাতে ছাড় নেই।’

হিজাবোফোবিয়া বন্ধ চায় শিক্ষার্থীরা

শিক্ষার্থীরা বলছেন, হিজাব ও নিকাব নিয়ে যেন কোনো বিদ্বেষমূলক আচরণ, বাজে মন্তব্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সহ্য না করে। বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো ছাত্রীকে হিজাব খুলতে যেন কোনো শিক্ষক বাধ্য না করে। এর পরিবর্তে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যেন এমন ব্যবস্থা নেয় যাতে একজন ছাত্রীকে তার চেহারা দেখানো ছাড়াও বৈজ্ঞানিকভাবে সনাক্ত করা যায়। সেটি সম্ভব না হলে অন্তত একজন ম্যাডাম দ্বারা সেই ছাত্রীকে সনাক্ত করা হয়। তাও যেন কোনোমতেই একজন ছাত্রীকে গাইরে মাহরাম শিক্ষকের সামনে চেহারা খুলতে বাধ্য না করা হয়। তার ধর্মীয় অধিকার ক্ষুণ্ন না করা হয়। ক্লাসে যেন হিজাব নিকাবের কারণে কোনো ছাত্রীকে বের করে দেওয়া, বাজে কথা বলা না হয়। পর্দার কারণে যেন কোনো বৈষম্য দেখানো না হয়। একই দাবি হলের ক্ষেত্রেও।

হিজাবোফোবিয়া বন্ধের দাবি জানিয়ে এন্ট্রোপলজি বিভাগের শামসুন্নাহার বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে হিজাব ও নিকাব পরার স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে এবং যে বা যারা হিজাব ও নিকাব পরার কারণে কাউকে অপমান করবে, বিদ্রুপ-তাচ্ছিল্য করবে, বৈষম্যমূলক আচরণ করবে, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি প্রদর্শন করবে এবং শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে। এটাই আমাদের প্রাণের দাবি।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী আশফিকা তারান্নুম বলেন, হিজাব পড়াকে যখনি আমি আফগানি ও তালেবানি পোশাকের সাথে তুলনা করব তখন এটা হচ্ছে সাম্প্রদায়িকতার প্রতীক। আমরা যে অসাম্প্রদায়িকতার নামে বিদ্বেষ ছড়িয়ে দিচ্ছি সবার মনে এটাই সবচেয়ে বড় সহিংসতা। আমার দেশে ধর্মীয় সম্প্রীতি যখন থাকবে তখন আমি বোরকা পরব, আমার বান্ধবী সিঁদুর-শাখা পরবে, কেউ সেলাওয়ার-কামিজ পরবে।

The post ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হিজাব-বিদ্বেষ: শিক্ষকরা বলছেন ‘আশঙ্কাজনক’ appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%a2%e0%a6%be%e0%a6%95%e0%a6%be-%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%b6%e0%a7%8d%e0%a6%ac%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%a6%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%b2%e0%a7%9f%e0%a7%87-%e0%a6%b9%e0%a6%bf%e0%a6%9c%e0%a6%be/

পর্দা করায় ভাইবাতে শূন্য: ঢাবি ক্যাম্পাসে নারী সুরক্ষার অভাব

রাকিবুল হাসান নাঈম:

পর্দা করায় ভাইভা বোর্ডে মুখ না খোলার কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বাংলা বিভাগের এক ছাত্রীকে ভাইভাতে অনুপস্থিত দেখানোর অভিযোগ উঠেছে।

জানা গেছে, গত ১৪ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় সেমিস্টারের ভাইভা দিতে যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বাংলা ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের এক নারী শিক্ষার্থী। ভাইভা বোর্ডের সদস্যরা চেহারা দেখতে চাইলে পর্দা (নিকাব) করার কারণে ওই শিক্ষার্থী তাতে অসম্মতি জানায়। ফলে ওই শিক্ষার্থীকে ভাইভাতে অনুপস্থিত দেখায় ভাইভা বোর্ড। এবং একই কারণে আগের সেমিস্টারের ভাইভাতেও উপস্থিত থেকেও অনুপস্থিত হয় ওই শিক্ষার্থী।

দেশের আলেম এবং সচেতন মহল বলছেন, বিষয়টি অমানবিক এবং অপ্রত্যাশিত। ঢাবির মতো এমন একটি উদার বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ঘটনা মূলত ইসলামোফোবিয়াকেই উৎসাহিত করছে।

ভুক্তোভুগী কী বলছেন?

লিখিত বক্তব্যে ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী বলেন, আমি নিকাব করে ভাইভা পরীক্ষা দিতে গেলে শিক্ষকরা আমাকে নিকাব খোলা সাপেক্ষে উপস্থিতি স্বাক্ষর করতে বলেন। আমি বারবার তাদেরকে অনুরোধ করি যে, নন মাহরাম কারো সামনে আমি নিকাব খুলি না। আমি একাধিক ম্যাডামের সামনে আমার মুখ খুলে আমার পরিচয়ের সত্যতা নিশ্চিত করতে চাচ্ছি। কিন্তু শিক্ষকগণের বক্তব্য তারা আমার নিকাব খুলে চেহারা প্রদর্শন না করলে ভাইভা পরীক্ষা নিবেন না এবং উপস্থিতি স্বাক্ষর করতেও দিবেন না। আমি আবারো তাদের অনুরোধ জানাই যেন, একাধিক ম্যামের সামনে আমার চেহারা শনাক্ত করে নিকাব পরিহিত অবস্থায় আমার ভাইভা নেয়া হয়। কিন্তু তারা তাদের সিদ্ধান্তে অটল থাকেন এবং আমাকে গত ফার্স্ট সেমিস্টারসহ দুই সেমিস্টারের ভাইভাতে অনুপস্থিত করে দেন। আমি তাদের কাছে বার বার অনুরোধ করলেও তারা সাফ জানিয়ে দেয় যে আমার ভাইভা তারা আমার মুখ দেখা ছাড়া গ্রহণ করবে না।

ওই শিক্ষার্থী আরো বলেন, আমার পর্দা করা কি অন্যায়? আমি শুধু পর্দা করার কারণে ভাইভাতে উপস্থিত থেকেও কোন মার্ক পাচ্ছি না। যার ফলে এটি আমার রেজাল্টে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। আমি এর সুষ্ঠু সমাধান চাই।

কী বলছেন ভাইবা বোর্ডের সদস্যরা

দু’জন প্রফেসর ও দু’জন অ্যাসোসিয়েট প্রফেসরের সমন্বয়ে গঠিত ওই ভাইভা বোর্ডের প্রধান ছিলেন বাংলা বিভাগের প্রফেসর ড. মোহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন শামীম। অন্যান্য সদস্যরা হলেন প্রফেসর ড.ভীস্মদেব চৌধুরী, অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর সোহানা মেহবুব, অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ড.তারিক মনজুর।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে ওই নারী শিক্ষার্থী মিথ্যা বলছেন বলে মন্তব্য করেছেন ভাইবা বোর্ডের সদস্য অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর সোহানা মেহবুবা। তাকে ফোন করা হলে তিনি ফাতেহকে জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুয়ায়ী চেহারা ও কান দেখে পরীক্ষার্থীকে শনাক্ত করেই পরীক্ষায় বসতে দেয়া হয়। ঠিক অনুরূপভাবে ভাইভাতেও একই কাজ করা হয়। আমরা শনাক্ত করতে চেয়েছিলাম প্রবেশপত্রের সঙ্গে মিলে কিনা। সে নেকাব খুলতে চায়নি। সে বলেছে, নেকাব খোলা অসম্ভব। আমরা তাকে সময় দিয়ে বলেছি, নিজেকে বুঝিয়ে কিছুক্ষণ পর এসো। সে কিছুক্ষণ পর আবার ভাইবাতে আসে। কিন্তু এবারও নেকাব খোলা সম্ভব না বলে জানায়। আমরা তাকে আবার পরদিন ভাইবাতে আসার সুযোগ দেই। কিন্তু পরদিন আমরা বিকেল পর্যন্ত তার জন্য অপেক্ষা করলেও সে আসেনি।’

সোহানা মেহবুবা এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘উক্ত শিক্ষার্থী একবারও বলেনি, সে ম্যামদের চেহারা দেখাতে চায়। শিক্ষার্থী নির্ঘাত মিথ্যা বলছে।’

বিষয়টি অপ্রত্যাশিত এবং অমানবিক

ঘটনাটি অপ্রত্যাশিত বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ শফিক আহমেদ। ফাতেহকে তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ড্রেসকোড সুনির্দিষ্ট নেই। এতটুকু বলা আছে, পরিচয় সুনিশ্চিত করতে হবে। এখন ভাইবা বোর্ডে যদি নারী নাও থাকতো, তাহলেও বাইরে থেকে কোনো ম্যাম এনে তাকে দিয়ে পরিচয় নিশ্চিত করা যেতো। তারা বিষয়টি আরেকটু সহজ করলেই পারতো। এত জটিলতা তৈরী হতো না।’

ঘটনাটি অমানবিক বলে মন্তব্য করেছেন আলেম গবেষক ও অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. আ ফ ম খালিদ সাহেব। তিনি ফাতেহকে জানান, ‘ভাইবা বোর্ডে নারী সদস্য থাকা সত্ত্বেও এই ধরণের অজুহাত দেয়া মানা যায় না। তারা চাইলে, নারীকে দিয়ে ছাত্রীর পরিচয় নিশ্চিত করতে পারতো। অমুসলিম দেশে ইসলামোফোবিয়ার কারণে হিজাব এবং নিকাব দেখতে পারে না মানুষ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটা শিক্ষাঙ্গনে এতটা সংকীর্ণতা লজ্জাজনক।’

ঢাবিতে হিজাব বিষয়ক জরিপ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) প্রতি তিনজন নারী শিক্ষার্থীর মধ্যে একজন পর্দা করার কারণে বিভিন্ন বৈষম্যের শিকার হন এবং তিনজনের মধ্যে একজনেরও বেশি শিক্ষার্থী বিরূপ মন্তব্যের শিকার হন বলে একটি জরিপে উঠে এসেছে। চলতি বছরের মার্চে বিশ্ববিদ্যালয়টির বিভিন্ন বিভাগের মেয়ে শিক্ষার্থীদের দ্বারা পরিচালিত এক জরিপে এ তথ্য উঠে আসে। এ জরিপ পরিচালনায় ছিলেন প্রটেস্ট সেল এগেইনস্ট হিজাবফোবিয়া ইন ডিউ নামক একটি সংগঠন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে ( টিএসসি) অবস্থিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির ব্যানারে সাংবাদিকদের সামনে এসব তথ্য তুলে ধরেন সংগঠনটির সদস্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী সানজিদা আক্তার, অ্যাকাউন্ট এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের তাসফিহা তাহসিন ইমা, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী নাসিফা সিদ্দিকা ও নিশাত তামান্না।

জরিপ বিষয়ে তাহসিন ইমা বলেন, ‘আমরা দুই মাস ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে হিজাবোফোবিয়া (হিজাবভীতি) নিয়ে একটি জরিপ পরিচালনা করেছি। এ প্রক্রিয়ায় আমরা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে যা জানতে পেরেছি তা থেকে বলা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হিজাব-নিকাব পরার অভিজ্ঞতা খুব একটা সুখকর নয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে নিকাব পরা অধিকাংশ ছাত্রী কখনো না কখনো অপমান, উত্ত্যক্ত, হেনস্তা বা বুলিংয়ের শিকার হন। সহপাঠী, সিনিয়র-জুনিয়র, কর্মকর্তা-কর্মচারী এমনকি শ্রেণিকক্ষে শিক্ষকদের কেউ কেউ হিজাব ও নিকাব পরা ছাত্রীর প্রতি বিরূপ আচরণ করেন।

জরিপে একটি প্রশ্ন ছিল, হিজাব-নিকাবের কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বা হলে আপনি কোনো বৈষম্যের সম্মুখীন হয়েছেন কি না। জরিপে অংশ নেওয়া ২২১ জন ছাত্রীর মধ্যে ‘হ্যাঁ’ বলেছেন ৭৩ জন, ‘না’ বলেছেন ১৪৮ জন। আরেকটি প্রশ্ন ছিল, হিজাব-নিকাবের কারণে কোনো শিক্ষক, কর্মচারী বা সহপাঠীর বিরূপ মন্তব্যের শিকার হয়েছেন কি না। এর উত্তরে ‘না’ বলেছেন ১৪১ জন ও ‘হ্যাঁ’ বলেছেন ৮০ জন।

The post পর্দা করায় ভাইবাতে শূন্য: ঢাবি ক্যাম্পাসে নারী সুরক্ষার অভাব appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%aa%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%a6%e0%a6%be-%e0%a6%95%e0%a6%b0%e0%a6%be%e0%a7%9f-%e0%a6%ad%e0%a6%be%e0%a6%87%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a7%87-%e0%a6%b6%e0%a7%82%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%af/

Wednesday, September 21, 2022

বয়সে ৩৯ মাস ছাড় পেলেন সরকারি চাকরি প্রার্থীরা

ফাতেহ ডেস্ক:

করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে নিয়োগ প্রক্রিয়া আটকে থাকায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রার্থীদের সরকারি চাকরিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে বয়সে ছাড় দিয়ে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এই নির্দেশনার চিঠি দেওয়া হয়েছে। তবে বিসিএস পরীক্ষা এর আওতায় আসবে না বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

মন্ত্রণালয় ও বিভাগ এবং সংস্থাগুলোকে আগামী বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত প্রকাশিতব্য বিজ্ঞপ্তিতে প্রার্থীদের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ২০২০ সালের ২৫ মার্চ নির্ধারণ করার জন্য বলেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। অর্থাৎ ২০২০ সালের ২৫ মার্চের পর থেকে যাদের চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়স ৩০ বছর পার হয়েছে বা হচ্ছে, তারা ২০২৩ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত জারি করা নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের যোগ্য হবেন।

এক্ষেত্রে চাকরি প্রার্থীরা করোনা মহামারীর কারণে বয়সের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৩৯ মাসের ছাড় পেলেন।

 

The post বয়সে ৩৯ মাস ছাড় পেলেন সরকারি চাকরি প্রার্থীরা appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%ac%e0%a7%9f%e0%a6%b8%e0%a7%87-%e0%a7%a9%e0%a7%af-%e0%a6%ae%e0%a6%be%e0%a6%b8-%e0%a6%9b%e0%a6%be%e0%a7%9c-%e0%a6%aa%e0%a7%87%e0%a6%b2%e0%a7%87%e0%a6%a8-%e0%a6%b8%e0%a6%b0%e0%a6%95%e0%a6%be/

হাফেজ তাকরিমের বিশ্বজয়, বাংলাদেশেরেই জয়

ফাতেহ ডেস্ক:

সৌদি সরকারের তত্ত্বাবধানে অনুষ্ঠিত ৪২তম বাদশাহ আবদুল আজিজ আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে তৃতীয় স্থান অর্জন করেছেন বাংলাদেশের হাফেজ সালেহ আহমদ তাকরীম। স্থানীয় সময় বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাতে মক্কার পবিত্র হারাম শরিফে অনুষ্ঠিত বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে চূড়ান্ত বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়। এসময় তাকে এক লাখ রিয়াল (প্রায় সাড়ে ২৭ লাখ টাকা) পুরস্কার ও সম্মাননা ক্রেস্ট দেওয়া হয়।

পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে সৌদি বাদশাহ সালমানের প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তাঁর উপদেষ্টা ও মক্কা নগরীর গভর্নর খালেদ আল ফয়সাল বিন আবদুল আজিজ এবং দেশটির ইসলাম ও দাওয়াহ বিষয়ক মন্ত্রী ড. আবদুল লতিফ বিন আবদুল আজিজ আলে শেখসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ।

গত ১০ সেপ্টেম্বর থেকে আন্তর্জাতিক এ প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে এর চূড়ান্ত পর্ব গতকাল সমাপ্ত হয়। এ প্রতিযোগিতায় বিশ্বের ১১১টি দেশ থেকে ১৫৩ জন অংশ নেন। চূড়ান্ত পর্বে উত্তীর্ণ ১৫ প্রতিযোগীকে ২৭ লাখ রিয়াল পুরস্কার দেওয়া হয়।

 

উল্লেখ্য, হাফেজ সালেহ আহমদ তাকরিম ঢাকার মারকাযু ফয়জিল কুরআন আল ইসলামী মাদরাসার শিক্ষার্থী। তার বাড়ি টাঙ্গাইলের নাগরপুর থানার ভাদ্রা গ্রামে। তার বাবা হাফেজ আব্দুর রহমান মাদরাসার শিক্ষক এবং মা গৃহিণী।

এর আগে গত ৫ মার্চ ইরানের তেহরানে অনুষ্ঠিত ৩৮তম আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় ২৯টি দেশের মধ্যে তাকরীম প্রথম হয়েছিল।

The post হাফেজ তাকরিমের বিশ্বজয়, বাংলাদেশেরেই জয় appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%b9%e0%a6%be%e0%a6%ab%e0%a7%87%e0%a6%9c-%e0%a6%a4%e0%a6%be%e0%a6%95%e0%a6%b0%e0%a6%bf%e0%a6%ae%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%b6%e0%a7%8d%e0%a6%ac%e0%a6%9c%e0%a7%9f-%e0%a6%ac/

Tuesday, September 20, 2022

মিয়ানমারে জান্তাবিরোধী পোস্টে ‘লাইক’ দিলেও ১০ বছরের জেল!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

মিয়ানমারে সামরিক বাহিনী শাসিত সরকারের বিরোধিতা কিংবা প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলোর প্রতি সমর্থন জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যেকোনো পোস্ট শেয়ার করা, এমনকি এ ধরনের পোস্টে লাইক দিলেও হতে পারে ১০ বছরের কারাদণ্ড। মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) এমনটাই হুমকি দিয়েছে জান্তা সরকার। খবর রয়টার্সের।

চলতি বছরের শুরুর দিকে সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকেই মিয়ানমারে বিক্ষোভ-সহিংসতা অব্যাহত রয়েছে। একটি ছায়া সরকার ও গণতন্ত্রপন্থি গোষ্ঠীগুলো সম্পর্কিত সশস্ত্র প্রতিরোধযোদ্ধাদের সঙ্গে জান্তা বাহিনীর সংঘর্ষের খবর শোনা যায় প্রায় প্রতিদিনই।

এ ধরনের জান্তাবিরোধী শক্তিগুলোকে ‘সন্ত্রাসী’ বলে উল্লেখ করে থাকেন সামরিক সরকারের নেতারা। মঙ্গলবার জান্তা সরকারের তথ্যমন্ত্রী ও মুখপাত্র জউ মিন তিন হুমকি দিয়ে বলেছেন, নিরপরাধ মানুষদের হত্যা করে মিয়ানমারকে অস্থিতিশীল করার জন্য তহবিল সংগ্রহের চেষ্টা করছে ‘সন্ত্রাসীরা’। এদের সমর্থকদের কঠোরভাবে মোকাবিলা করা হবে।

তিনি বলেছেন, জাতীয় ঐক্য সরকার (এনইউজি) অথবা এর সশস্ত্র সহযোগীদের পক্ষে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারণা চালালে তিন থেকে ১০ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে। গুনতে হতে পারে আর্থিক জরিমানাও।

টেলিভিশনে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে জান্তা মুখপাত্র বলেন, আপনি যদি অর্থপ্রদান করেন কিংবা সন্ত্রাসীদের ও তাদের কর্মকাণ্ডকে সমর্থন করেন, তাহলে কঠোর শাস্তির মুখে পড়বেন। আমরা নিরপরাধ বেসামরিক লোকদের রক্ষার জন্যই এটি করছি।

The post মিয়ানমারে জান্তাবিরোধী পোস্টে ‘লাইক’ দিলেও ১০ বছরের জেল! appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%ae%e0%a6%bf%e0%a7%9f%e0%a6%be%e0%a6%a8%e0%a6%ae%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a7%87-%e0%a6%9c%e0%a6%be%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%a4%e0%a6%be%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%b0%e0%a7%8b%e0%a6%a7%e0%a7%80-%e0%a6%aa/

আন্তর্জাতিক হেফজ প্রতিযোগিতা : বাংলাদেশি নারীদের ঈর্ষণীয় সাফল্য

মুনশী নাঈম:

বাংলাদেশের নারী হাফেজরা অংশ নিচ্ছেন আন্তর্জাতিক হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতায়। শতাধিক দেশকে পেছনে ফেলে হয়ে উঠছেন নাম্বার ওয়ান। পুরো বিশ্বের সামনে তখন ভেসে উঠছে লাল-সবুজের পতাকা। বাংলাদেশের কপালে এসব হাফেজরা একে একে যুক্ত করছেন গৌরব ও গর্বের রঙিন পালক। তারা বলছেন, আমরা যখন সব দেশের প্রতিযোগীদের পেছনে ফেলে বিজয়ী হই, আমাদের নামের আগে ঘোষিত হয় বাংলাদেশের নাম। স্ক্রিনে ভেসে ওঠে লাল-সবুজের পতাকা। সবার চোখে থাকে জল। অদ্ভুত ঈর্ষা নিয়ে বিদেশিরা তাকিয়ে থাকে বাংলাদেশি পতাকার দিকে।

সীমানা নেই নারী হাফেজদের

কোনো সীমানা নেই নারী হাফেজদের। তারা তাদের সুরের ডানায় ভর করে উড়ে বেড়ান দেশ থেকে দেশান্তর। শুধু উড়ে বেড়ানোই নয়, সব দেশের উচ্ছে তুলে ধরেন দেশের পতাকা। নিজের সবটুকু শ্রম দিয়ে ছিনিয়ে আনেন বিজেয়ের বরমাল্য।

হাফেজা ফারিহা তাসনিম ২০১৩ সালের ১৭ মে জর্দানের রাজধানী আম্মানে অনুষ্ঠিত ইন্টারন্যাশনাল গার্লস হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে প্রায় ৪৩টি দেশের হাফেজাদের পেছনে ফেলে প্রথম স্থান অর্জন করেন। ফারিহা মারকাজুত তাহফিজ ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসার ছাত্রী। একই মাদরাসার ছাত্রী হাফেজা রাফিয়া হাসান জিনাত ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর সংযুক্ত আরব আমিরাতে ‘ফাতেমা বিনতে মোবারক’ আন্তর্জাতিক পবিত্র কোরআন প্রতিযোগিতায় ৮৩টি দেশের মধ্যে নবম স্থান অর্জন করেন। ২০১৬ সালে জর্ডানের রাজধানী আম্মানে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় তৃতীয় স্থান লাভ করেন। এছাড়াও মাদরাসাটির আরও বিভিন্ন হাফেজা বিভিন্ন দেশে প্রতিযোগিতা করে বিজয় ছিনিয়ে এনেছেন। তাদের মধ্যে রয়েছে: হাফেজা শিফা হোসাইন (জর্ডান), আয়েশা বিনতে ইসলাম (ইরান), খাদিজাতুল কুবরা (ইরান)। খাদিজাতুল কুবরা এ বছরও ইরান প্রতিযোগিতায় অংশ করার জন্য নির্বাচিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন মাদরাসাটির পরিচালক হাফেজ নেসার আহমদ আন নাছিরী। তিনি জানান, গতকাল (১৯ সেপ্টেম্বর) ইসলামী ফাউন্ডেশন বায়তুল বায়তুল মুকাররমের বাছাইয়ে খাদিজা ইরানের জন্য নির্বাচিত হয়েছে।

নেসার আহমদ আন নাছিরী আরও জানান, খাদিজাতুল কুবরার মা-ও বিশ্বজয়ী হাফেজা কারিয়া। তার নাম শামসুন্নাহার সিদ্দিকা। তিনি মালয়েশিয়ায় আন্তর্জাতিক কেরাত প্রতিযোগিতায় ৭ বার তিনি চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন। ২০০৪ সাল থেকে টানা ২০০৯ সাল পর্যন্ত। সর্বশেষ ২০১৬ সালে। এর আগে ১৯৯৮ সালে হয়েছিলেন দ্বিতীয়। ইরানেও গিয়েছেন একবার।’

এদিকে ২০১৭ সালে জর্ডানের রাজধানী আম্মানে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় ৬৫টি দেশের নারী হাফেজদের পেছনে ফেলে ৫ম স্থান অর্জন করেন কারি সালামাত উল্লাহ পরিচালিত মারকাজুল হাফেজা ইন্টারন্যাশনাল হিফজ মহিলা মাদরাসার ছাত্রী হাফেজ আবিদা সুলতানা লিমা।

আন্তর্জাতিক হেফজ প্রতিযোগিতা বেশ সাফল্য দেখাতে পেরেছে ওয়ারীর সাউদা বিনতে জামআহ রা. আন্তর্জাতিক বালিকা মাদরাসার ছাত্রীরা। ২০০৭ সালে লিবিয়ায় অনুষ্ঠিত কোরআন প্রতিযোগিতায় ৯৬ টি দেশের প্রতিযোগিকে পেছেনে ফেলে প্রথম স্থান অধিকার করেন এ মাদরাসার শিক্ষার্থী হাফেজ সাজেদা খাতুন। পরে ২০০৯ সালে জর্দানে অনুষ্ঠিত কোরআন প্রতিযোগিতায় তিনি ২য় স্থান অর্জন করেন। সাজেদা খাতুন ২০১৮ সালে ইরানে অনুষ্ঠিত কোরআন প্রতিযোগিতায় ৪র্থ স্থান অর্জন করেন।

২০১৭ সালে দুবাই আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় ৭০টি দেশের প্রতিযোগীকে পেছনে ফেলে ৪র্থ স্থান অধিকার করেন একই মাদরাসার ছাত্রী হাফেজ খাদিজা বিনতে আহসান মোহাম্মদ আহসান উল্লাহ। ২০১৮ সালে জর্ডানের রাজধানী আম্মানে অনুষ্ঠিত ১৩তম আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় ৫ম স্থান অধিকার করেন একই মাদরাসার ছাত্রী হাফেজ তাফরিহা বিনতে তাবারক। একই মাদরাসার ছাত্রী ওয়াহিদা হাফসা ২০১৯ সালে ১০তম স্থান অধিকার করেন দুবাই আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায়।

কথা হয় সাউদা বিনতে জামআহ রা. আন্তর্জাতিক বালিকা মাদরাসার পরিচালক মাওলানা ইসমাঈল হাসানের সঙ্গে। তিনি জানান, ‘তার মাদরাসার হেফজখানায় ১৩০ জন ছাত্রী রয়েছে। এরমধ্যে ৫০ জন ছাত্রী হাফেজ। আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে হলে আগে ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ কর্তৃক নির্বাচিত হতে হয়। এবারও তার মাদরাসার ছাত্রীরা বিভিন্ন দেশের প্রতিযোগিতার প্রাক-বাছাইয়ে অংশ নিচ্ছে। তিনি আশা করছেন, এবারও তার মাদরাসা থেকে কেউ না কেউ আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নিবে।’

সাফল্য আসছে, জটিলতা কাটছে না

বিদেশের মাটিতে দেশের নাম উজ্জ্বল করলেও এসব হাফেজদের জাতীয় স্বীকৃতি নেই বলে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে বিভিন্ন জটিলতার মুখে পড়তে হয় বলে জানান শিক্ষকরা। সাউদা বিনতে জামআহ রা. আন্তর্জাতিক বালিকা মাদরাসার পরিচালক মাওলানা ইসমাঈল হাসান বলেন, ‘বাইরে যেতে বিভিন্ন কাগজপত্র নিয়েও বেশ ঝামেলা পোহাতে হয়। সরকার যদি প্রতিযোগিদের সব ব্যবস্থাপনা নিজে করে দিত, তাহলে প্রতিযোগীদের জন্য সুবিধা হতো। দিনশেষে বিদেশের মাটিতে তারা কিন্তু বাংলাদেশের পাতাকাকেই উর্ধ্বে তুলে ধরে।’

হাফেজ নেসার আহমদ আন নাছিরী ফাতেহকে বলেন, ‘অন্যান্য দেশের হাফেজ যখন আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় যাওয়ার জন্য নির্বাচিত হন, রাষ্ট্রীয়ভাবে তাদের সঙ্গে দু’জন কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়। একজন হাফেজদের কাগজপত্র রেডি করেন, আরেকজন বিদেশের মাটিতে তাদের সঙ্গে থাকেন। তাদের খাবার-দাবার, এমনকি প্রতিযোগিতার কোন দিন কোন পোশাক পরবে, তাও কর্মকর্তা নির্ধারণ করে দেন। কিন্তু আমাদের এখানে উলটো। বিদেশে যাওয়ার জন্য যখন নির্বাচিত হয়, ভিসার কাগজপত্র নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করতে করতেই পড়াশোনা লাটে ওঠে।’

আক্ষেপ করে নেসার আহমদ আন নাছিরী বলেন, ‘হাফেজরা যখন বাইরের দেশে যেতে চায়, ভিসা-টিকিট নিয়ে তাদের দৌড়াদৌড়ি করতে হয়। পড়াশোনায় তারা মন দিতে পারে না। পরে তারা যখন বিজয়ী হয়ে দেশে ফেরে, বিমানবন্দরে তাদের জন্য সামান্য সংবর্ধনাও দেওয়া হয় না। অথচ বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের একজন হাফেজ যখন বিজয়ী হয়, তার নাম কিংবা তার মাদ্রাসার নাম বলা হয় না। বলা হয় বাংলাদেশের কথা। তাই সরকারকে উদ্যোগী হয়ে দেশের নাম মহিমান্বিত করা হাফেজদের স্বীকৃতি দিতে হবে। প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে ছাত্র কেন দৌড়াদৌড়ি করবে। সরকার এর দায়িত্ব নেবে।’

শিক্ষকরা বলছেন, দেশকে যারা এমন ঈর্ষণীয় উচ্চতায় নিয়ে যান, তাদের জাতীয় স্বীকৃতি সময়ের দাবি। জাতীয় স্বীকৃতি ও সহযোগিতা পেলে আরও অনেকেই কুরআন প্রতিযোগিতায় উদ্বুদ্ধ হবে। আমাদের হাফেজদের যেহেতু আন্তর্জাতিক অঙ্গন স্বীকৃতি দিচ্ছে, তাদের এখন জাতীয় স্বীকৃতি প্রাপ্য।

The post আন্তর্জাতিক হেফজ প্রতিযোগিতা : বাংলাদেশি নারীদের ঈর্ষণীয় সাফল্য appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%86%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%a4%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%9c%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%bf%e0%a6%95-%e0%a6%b9%e0%a7%87%e0%a6%ab%e0%a6%9c-%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%a4%e0%a6%bf%e0%a6%af%e0%a7%8b/

Monday, September 19, 2022

ভারতীয় মাদরাসাগুলোতে অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে মাধ্যমিক : কী ভাবছে বাংলাদেশের আলেম সমাজ?

ইজাজুল হক, রাকিবুল হাসান:

শিক্ষার্থীদেরকে এসএসসি লেভেল পর্যন্ত জেনারেল সিলেবাস পাঠদান এবং এসএসসি লেভেলের পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সার্টিফিকেট নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দ মাদরাসা। গতকাল ১৮ আগস্ট দেওবন্দের এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকে পাশাপাশি অন্যান্য মাদ্রাসাগুলোকেও বিষয়টি আমলে নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। দেওবন্দের এই সিদ্ধান্তের পর তুমুল আলোচনা শুরু হয়েছে বাংলাদেশেও। প্রশ্ন উঠছে, বাংলাদেশের কওমি মাদ্রাসাগুলো যেহেতু সবক্ষেত্রেই দেওবন্দের অনুসরণ করে থাকে, এই ক্ষেত্রে তার অনুসরণ করবে কিনা। বাংলাদেশের আলেমদের মধ্যেও তৈরী হয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কেউ বলছেন, দেওবন্দসহ ভারতের কওমি মাদ্রাসাগুলোর এই পদক্ষেপ বাংলাদেশে বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে না। কেউ বলছেন, প্রভাব ফেলবে। কেন্দ্রীয়ভাবে বেফাক কিংবা হাইয়া যদি এই কাজ না করে, তাহলে সবকিছু এলোমেলো হয়ে যাবার সম্ভাবনা আছে। পাশাপাশি সরকারি হস্তক্ষেপের বিষয়টি আরও প্রবল হতে পারে।

ভারতের শিক্ষার্থীরা কোন বোর্ডে পরীক্ষা দেবে

জানা গেছে, বাংলাদেশের উম্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো ভারতের একটি প্রতিষ্ঠানের নাম ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ওপেন স্কুলিং (এনআইওএস)। এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমেই মূলত মাদ্রাসাগুলো এসএসসি লেভেলের পরীক্ষায় অংশ নেবে। ইতিমধ্যেই এনআইওএসের সঙ্গে একটি সমঝোতাও হয়ে গেছে। এই প্রকল্পের পেছনে রয়েছে ভারতের মুসলিমদের সবচেয়ে বড় প্লাটফর্ম জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ। জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের আরও কয়েকটি শিক্ষাপ্রকল্প রয়েছে। এটি সর্বশেষ সংযোজন। এই প্রকল্পের নাম ‘জমিয়ত ওপেন স্কুল’।

এর আগে ২২ অক্টোবর ২০২০ অনুষ্ঠিত জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের মজলিসে আমেলার সিদ্ধান্ত মতে—২৫ নভেম্বর ২০২০ এনআইওএস-এর অধীনে মাদ্রাসা-শিক্ষার্থীদের এসএসসি লেভেল পর্যন্ত শিক্ষা দেওয়া বিষয়ক পরামর্শ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় এনআইওএস-এর অধীনে মাদ্রাসা-শিক্ষার্থীদের এসএসসি লেভেল পর্যন্ত পড়ানোর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১, শুক্রবার জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের প্রধান কার্যালয়ের মাদানি হলে জমিয়ত ওপেন স্কুল উদ্বোধন করা হয়। এতে সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের সাবেক প্রধান মাওলানা কারি উসমান মনসুরপুরি সাহেব। এতে উত্তর প্রদেশ ও দিল্লির ১০০ মাদ্রাসার মুহতামিম ও সংশ্লিষ্ট বিষয়ের দায়িত্বশীলরা অংশ নেন।

জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য মতে, মাদ্রাসা-শিক্ষার্থী ও ফাজেলদের জেনারেল শিক্ষাদানের উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম—জমিয়ত ওপেন স্কুল। এ প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীদের এসএসসি লেভেল পাশ করার জন্য যোগ্য করে গড়ে তুলবে। এর মাধ্যমে ওই শিক্ষার্থীর জন্য অধিক উচ্চশিক্ষা অর্জনের পথ খুলে যাবে। একজন শিক্ষিত নাগরিক হিসেবে ধর্মীয় দায়িত্বগুলো আগের চেয়ে বেশি প্রভাব বিস্তার করে সম্পাদন করতে পারবে।

কিভাবে পরীক্ষায় অংশ নেবে

এনআইওএস সাধারণত বছরে দুইবার এসএসসি লেভেলের পরীক্ষা নেয়। প্রতিটি মাদ্রাসা নিজেদের সুবিধামতো ব্যাচ তৈরি করে একবার বা দুইবার পরীক্ষায় অংশ নেবে। পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন ফরম ফিলাপসহ এ সংক্রান্ত যাবতীয় কাজ মাদ্রাসার পক্ষ থেকে সম্পাদন করা হবে। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষই শিক্ষার্থীদের নার্সিং করে পরীক্ষার জন্য পূর্ণ প্রস্তুত করে তুলবে। জমিয়ত ওপেন স্কুল থেকে ইতিমধ্যেই দুই হাজার মতো শিক্ষার্থী চলতি শিক্ষাবর্ষে (২০২১-২২) দুইবার পরীক্ষায় অংশও নিয়ে ফেলেছে এবং ব্যাপক সাফল্যও এসেছে। জমিয়ত ওপেন স্কুলের টার্গেট হলো—২০২৫ সালের মধ্যে ৫০ হাজার মাদ্রাসা-শিক্ষার্থীকে নিজেদের তত্ত্বাবধানে এসএসসি লেভেল পাশ করানো। জমিয়ত কোটি টাকার বৃত্তির প্রজেক্টও চালু করেছে।

এনআইওএসের নির্ধারিত সিলেবাস আয়ত্ব করার কৌশল নিয়ে এখনও আলোচনা চলছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা হচ্ছে। প্রত্যেক মাদ্রাসায় নির্দিষ্ট শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে জমিয়ত ওপেন স্কুল। প্রতিটি মাদ্রাসায় একজন কো-অর্ডিনেটর থাকবেন। আবার প্রতি জেলায় একজন কো-অর্ডিনেটর থাকবেন। মাদ্রাসাগুলো পরীক্ষার্থীদের জন্য দৈনিক ২ ঘণ্টা বা তার চেয়ে বেশি সময় বের করবে। এনআইওএসের নির্ধারিত অ্যাপস থেকে ভিডিও লেকচার শুনিয়ে ছাত্রদের পাঠদান করা হবে। পাশাপাশি প্রশিক্ষিত শিক্ষকরা তাদের তত্ত্বাবধান করবেন এবং পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত করবেন। জেলা কো-অর্ডিনেটর মাদ্রাসাগুলো সমন্বয়, উন্নয়ন, অগ্রগতি তদারকি করবেন। সবকিছু সম্পন্ন হবে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায়। সরকারি কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ থাকবে না।

কেন্দ্রীয় অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলে কারা আছেন?

জমিয়ত ওপেন স্কুলের কেন্দ্রীয় অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলে রয়েছেন: ১. মাওলানা মুফতি আবুল কাসিম নুমানি, মুহতামিম, দারুল উলুম দেওবন্দ। ২. মাওলানা মাহমুদ আসআদ মাদানি, সভাপতি, জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ। ৩. মাওলানা মুফতি সাইয়্যেদ মুহাম্মদ সালমান মনসুরপুরি, নাজেমে আলা, দীনি তালিমি বোর্ড, জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ। ৪. মাওলানা মুহাম্মদ সালমান বিজনুরি, দারুল উলুম দেওবন্দ। ৫. জনাব ড. পিএ এনামদার, সভাপতি, এমসিএ সোসাইটি, পুনে। ৬. জনাব কামাল ফারুকি, সদস্য, মুসলিম প্রিন্সল ল বোর্ড। ৭. প্রফেসর আখতারুল ওয়াসে, সভাপতি, মাওলানা আযাদ ইউনিভার্সিটি, যুদপুর। ৮. মাওলানা শিব্বির আহমদ নদভি, মুহতামিম, মাদ্রাসা লিল-বানাত, বেঙ্গলুর। ৯. মুফতি আহমদ দেওলা, সভাপতি, তাহাফফুজে মাদারিস, গুজরাট। ১০. মাওলানা আবদুল কাদের, সেক্রেটারি, জমিয়তে উলামা, আসাম। ১১. মাওলানা কলিমুল্লাহ কাসেমি, সেক্রেটারি, জমিয়তে উলামা, উত্তর প্রদেশ। ১২. হাফেজ পীর শিব্বির সাহেব, সভাপতি, জমিয়তে উলামা, তেলেঙ্গানা। ১৩. মুফতি শামসুদ্দিন বাজলি কাসেমি, সেক্রেটারি, জমিয়তে উলামা, কর্নাটক। ১৪. মুফতি সাইয়েদ মুহাম্মদ আফফান মনসুরপুরি, সভাপতি, দীনি তালিমি বোর্ড, উত্তর প্রদেশ। ১৫. মাওলানা হাকিমুদ্দিন কাসেমি, জেনারেল সেক্রেটারি, জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ। ১৬. হাফেজ মাওলানা নদিম সিদ্দিকি, প্রেসিডেন্ট, জমিয়তে উলামা, মহারাষ্ট্র। ১৭. জনাব হাজি মুহাম্মদ হারুন সাহেব, সভাপতি, জমিয়তে উলামা, মধ্যপ্রদেশ। ১৮. মাওলানা নিয়াজ আহমদ ফারুকি, সেক্রেটারি, জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ ।

এ বিষয়ে প্রকল্পের স্বপ্নদ্রষ্টা মাওলানা মাহমুদ মাদানি বলেন, ‘আমাদের আকাবিররা সরকারি মাদ্রাসা বোর্ডের বিরোধিতা করেছিলেন। তাঁদের উদ্বেগগুলো সময়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রমাণিত হয়েছে। আসাম সরকারের সাম্প্রতিক কার্যক্রম তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ। আমরা মাদ্রাসায় সরকারি হস্তক্ষেপ মানব না। আধুনিক শিক্ষার জন্য আমরা আমাদের নিজস্ব পথ বেছে নিয়েছি। এটি আমাদের চাহিদা পূরণ করছে এবং আমাদের স্বতন্ত্র সিলেবাসেও কোনো হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে না।’

মাওলানা মাদানি আরও বলেন, ‘আজকের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে শিক্ষকের পাশাপাশি একজন ভালো দীনপ্রচারকেরও দরকার আছে। মূলধারার জ্ঞানের অভাবে তারা সমাজে মুখ্য ভূমিকা পালন করতে পারছে না। তাই জমিয়ত ওপেন স্কুলের মাধ্যমে মানসম্মত শিক্ষা দিয়ে তাদের দক্ষ করে গড়ে তোলা হবে।’

কী ভাবছে বাংলাদেশের আলেম সমাজ?

দেওবন্দের অনুসরণে বাংলাদেশের কওমি মাদরাসাতেও এসএসসি লেভেল পর্যন্ত জেনারেল সিলেবাস পাঠদান এবং এসএসসি লেভেলের পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সার্টিফিকেট নেয়া সময়ের দাবি বলে মনে করেন হাটহাজারী মাদরাসার মুহাদ্দিস মাওলানা আশরাফ আলী নিজামপুরী। ফাতেহকে তিনি বলেন, বাংলাদেশের মাদরাসাগুলো যদি দেওবন্দের অনুসরণ করে থাকে, তাহলে এই বিষয়টিরও অনুসরণ করতে হবে। কারণ, দেওবন্দ সবসময় সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নেয়। আমি নিজেও চাই, বাংলাদেশের মাদরাসাগুলোতে জেনারেল শিক্ষাটাকে চালু করা হোক। এটা এখন সময়ের দাবি।

তবে বর্তমান কওমি মাদরাসার সিলেবাসের সঙ্গে এসএসসি লেভেল পর্যন্ত জেনারেল সিলেবাস পাঠদান করানো সম্ভব না বলে মন্তব্য করেন কুমিল্লা মাদরাসায়ে আশরাফিয়ার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক হাফেজ মাওলানা মুফতী শামছুল ইসলাম জিলানী। তাহলে কিভাবে সম্ভব জানতে চাইলে তিনি ফাতেহকে বলেন, পড়াতে হলে সিলেবাস সমন্বয় করতে হবে। আমাদের সিলেবাসটাকে নতুন করে গোছাতে হবে।’ তবে সরকারের অধীনে এসএসসি এবং এইচএসসি স্তরের মান যদি কওমি মাদরাসাতেও দেয়া হয়, তাহলে বিপত্তি ঘটবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘জেনারেল শিক্ষাটা দরকার। কিন্তু সরকারি বোর্ডের অধীনে যেন এ পরীক্ষা দেয়া না হয়। বরং হাইয়া-বেফাকের মুরুব্বীরা বসে সিলেবাসটাকে আরেকটু সাজাতে পারেন জেনারেল বিষয়গুলো সমন্বয় করে। তাহলে আমাদের শিক্ষার্থীরা জেনারেল শিক্ষাটাও পেল। কিন্তু এমন যেন না হয়, আমাদের কোনো ক্লাসে এসএসসির বই ঢুকিয়ে সেই ক্লাসকে এসএসসির মান দেয়া হলো। তাহলে আলিয়া মাদরাসার মতো পরিণতি হবে ছাত্রদের। এই পরীক্ষা দিয়ে মাদরাসার পড়া শেষ না করেই অনেকে ভার্সিটি-কলেজে চলে যাবে।’

তবে অনেকে অনেক মতামত দিলেও বিষয়টি নিয়ে ভাবছে না বাংলাদশে কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া। বেফাকের মহাপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মাওলানা মুহাম্মদ যুবায়ের ফাতেহকে জানান, দেওবন্দ তাদের দেশের সরকারের চাপে অনেক সিদ্ধান্ত নেয়। যেমন, মাদরাসা হিন্দি শেখাতে হবে বলে চাপ দেয়া হচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশে বাংলা শেখাতে হবে বলে কোনো চাপ নেই। সুতরাং এসএসসি লেভেল পর্যন্ত জেনারেল সিলেবাস পাঠদান বিষয়টিও একই রকম। দেওবন্দের সিদ্ধান্তের কারণে বাংলাদেশে তার প্রভাব পড়বে না। মুরুব্বীরা এখনই বিষয়টি নিয়ে ভাববেন না।’

মাওলানা মুহাম্মদ যুবায়ের বলেন, ‘বেফাকের ক্লাস এইট পর্যন্ত সিলেবাস আছে। এরমধ্যে ক্লাস ফাইভ পর্যন্ত আছে সিলেবাসের পূর্ণাঙ্গ নিজস্ব বই। সিক্স, সেভেন, এইট এই তিনটি ক্লাসের বাংলা, অংক এবং ইংরেজি আছে, বাকি বিষয়গুলোর নিজস্ব বই বেফাকের নেই। এখন সিলেবাসভুক্ত বইগুলো পরিমার্জন করা হচ্ছে। আমাদের গবেষক টিম কাজ করছেন।’ বইয়ের মান নিয়ে প্রশ্ন তুললে তিনি বলেন, ‘আমাদের রচিত বইগুলো শতভাগ মানহীন এটা বলা যাবে না। বলতে পারেন, কিছু কিছু জায়গায় দুর্বলতা আছে। এগুলো পরিমার্জন করা হচ্ছে, পুননিরীক্ষা করা হচ্ছে। ঠিক হয়ে যাবে।’

The post ভারতীয় মাদরাসাগুলোতে অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে মাধ্যমিক : কী ভাবছে বাংলাদেশের আলেম সমাজ? appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%ad%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a6%a4%e0%a7%80%e0%a7%9f-%e0%a6%ae%e0%a6%be%e0%a6%a6%e0%a6%b0%e0%a6%be%e0%a6%b8%e0%a6%be%e0%a6%97%e0%a7%81%e0%a6%b2%e0%a7%8b%e0%a6%a4%e0%a7%87-%e0%a6%85%e0%a6%a8%e0%a7%8d/

Sunday, September 18, 2022

‘পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নাকি অভিভাবক প্রতিষ্ঠান’ : হাইয়ার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন অনেক

মুনশী নাঈম:

কওমি মাদরাসার সর্বোচ্চ স্তর দাওরায়ে হাদিসকে ইসলামিক স্টাডিজ ও আরবি মাস্টার্স ডিগ্রি সমমানের স্বীকৃতি দেওয়ার ছয় বছরের বেশি সময় অতিবাহিত হয়েছে। সঙ্গে ছয় বছর পার করেছে কওমি মাদরাসা ভিত্তিক সকল শিক্ষাবোর্ডের সমন্বয়ে গঠিত সম্মিলিত শিক্ষাবোর্ড আল-হাইআতুল উলইয়া লিল জামিআতিল কওমিয়া বাংলাদেশ। বর্তমানে কওমি মাদরাসার ৬ টি বোর্ডের অন্তর্ভুক্ত বাংলাদেশের সব ক’টি দাওরায়ে হাদীস কওমি মাদরাসা এই সম্মিলিত বোর্ডে নিবন্ধিত। মাদরাসা সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, হাইয়াতুল উলয়া সকল কওমি মাদরাসার অভিভাককের জায়গায় থাকলেও অভিভাবকের তৎপরতায় তাদের তেমন দেখা যায় না। কেবল কেন্দ্রীয় পরীক্ষা এলেই তাদের তোড়াজোড় শুরু হয়। প্রশ্ন উঠছে, হাইয়াতুল উলয়া কেবল পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নাকি অভিভাবক প্রতিষ্ঠানও?

হাইয়াতুল উলয়ার ওয়েবসাইট ঘুরে দেখা গেছে, সেখানে তাদের সব কার্যক্রম পরীক্ষা কেন্দ্রীক। তাতে হাইয়াতুল উলয়ার কমিটির তালিকা দিয়ে বলা হয়েছে, ‘বর্তমানে কওমি মাদরাসার ৬ টি বোর্ডের অন্তর্ভুক্ত বাংলাদেশের সব ক’টি দাওরায়ে হাদীস কওমি মাদরাসা অত্র কমিটি দ্বারা নিবন্ধিত। দাওরায়ে হাদীস (তাকমীল) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ছাত্র-ছাত্রীদের এ প্রতিষ্ঠানের তরফ থেকে সনদ দেয়া হয়।’ সরকারি গেজেটে এ কমিটিকে দাওরায়ে হাদিসের সনদের শিক্ষার মান নিশ্চিতকরণ এবং দাওরায়ে হাদিস সনদ বিষয়ক যাবতীয় কার্যক্রমের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। কিন্তু ছয় বছর পার হলেও কমিটিকে সনদের শিক্ষার মান উন্নয়ন কিংবা সনদকে কার্যকর করতে উল্লেখযোগ্য কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। এ নিয়ে সনদ গ্রহণকারীদের মধ্যেও একটা চাপা ক্ষোভ রয়েছে।

দেশীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে সনদ কার্যকরের উদ্যোগ নেই

তাকমিল যেহেতু মাস্টার্স সমমান, তাই তাকমিলের সনদ দিয়ে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এমফিল এবং পিএইচডি করার সুযোগ থাকার কথা। কিন্তু তাকমিলের সনদ দিয়ে তা করা যাচ্ছে না। বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ইউজিসির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগের উপপরিচালক মো. রুকনুজ্জামান এ ব্যাপারে কিছু জানেন না। দাওরার সার্টিফিকেট দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এমফিল করা যাবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমি কিছু জানি না।’

দেশীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সার্টিফিকেটের কার্যকারিতা নিয়ে কোনো পদক্ষেপ নেই সম্মিলিত শিক্ষাবোর্ড আল-হাইআতুল উলইয়া লিল জামিআতিল কওমিয়া বাংলাদেশের। মাঝেমধ্যে বোর্ডে এটা নিয়ে আলাপ হয়, কিন্তু কার্যকরী কোনো উদ্যোগ নেয়া হয় না। বিশ্ববিদ্যলয় এবং মন্ত্রণালয় বলছে, আলাপের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করতে হবে। হাইয়া কর্তৃপক্ষ তেমন আলাপ করেননি। বিষয়টি ফাতেহের কাছে স্বীকার করেছেন আল-হাইআতুল উলয়া লিল-জামি‘আতিল কওমিয়া বাংলাদেশের স্থায়ী কমিটির সদস্য হযরত মাওলানা মুফতী নূরুল আমীন।

বিদেশে উচ্চশিক্ষায় নেই কোলাবরেশন

কওমি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের জন্য বিদেশে উচ্চশিক্ষার সুযোগ একেবারেই সীমিত। তবুও ব্যক্তিগত প্রচেষ্টায় যারাই বিদেশে পড়তে যাচ্ছেন, তাদেরকেই পোহাতে হচ্ছে ভোগান্তি। সার্টিফিকেটের ইকোসিস্টেম ব্যালেন্সড না থাকা, সার্টিফিকেটের সমমান পরিপূর্ণভাবে নিশ্চিত না করা এবং দেশ-বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সাথে কোলাবরেশন না থাকার কারণেই এমনটি ঘটছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

চলতি বছর মিশরে উচ্চশিক্ষার জন্য গিয়েছে ইবনে আলী। জামিয়া আজহারে সানুবিয়াতে ভর্তিও সম্পন্ন করেছে। ফাতেহকে তিনি বলেন, আল-আজহারে কওমি সার্টিফিকেট দিয়ে অনার্সে সরাসরি ভর্তি হওয়া যায় না। মুআদালা নেই বলে এই ঝামেলা। তাই কওমি ছাত্রদের যোগ্যতা যাচাইয়ের বিভিন্ন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয়। অর্থাৎ, ইদাদি বা মাধ্যমিক লেভেল ও সানুবি বা ইন্টার লেভেলে স্তর যাচাইয়ের পরীক্ষা দিয়ে তারপর অনার্সে ভর্তি হওয়া যায়। অথচ আজহারের সঙ্গে যাদের মুআদালা আছে ইন্টার সমমানের, তারা সরাসরি অনার্সে ভর্তির সুযোগ পায়। কওমি মাদ্রাসার সানুবিয়ার সার্টিফিকেটকে ইন্টার সমমানের করলে এই ঝামেলা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।’

এ প্রসঙ্গে মদিনা ইসলামিক ইউনিভার্সিটির গ্রাজুয়েট ও মারকাযুল লুগাতিল আরাবিয়্যাহ বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক মাওলানা মহিউদ্দিন ফারুকী ফাতেহকে বলেন, সরকার কওমি সনদকে স্বীকৃতি দিয়েছে ঠিক, কিন্তু বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে কোলাবরেশনে আগ্রহী নয় হাইয়াতুল উলয়ার মুরুব্বীগণ। ফলে বাইরের দেশে কোথাও এই সার্টিফিকেট শো করেও লাভ হয় না। আমার তাজকিয়া নিয়ে অনেকে ব্যক্তিগত প্রচেষ্টায় মদীনাতে যাচ্ছে। তারা যাচ্ছে আলিমের সার্টিফিকেট দিয়ে। হাইয়া কর্তৃপক্ষকে বলেছিলাম, একটা কমিটি গঠন করে মদীনা ইউনিভার্সিটিতে আমাদের কাগজগুলো সাবমিট করি। আমি সহযোগিতা করব। কিন্তু তারা আগ্রহ দেখাননি।

২০১৯ সালের ১৭ মার্চ রাজধানীর ফরিদাবাদ মাদরাসায় অনুষ্ঠিত হাইয়াতুল উলয়ার তৎকালীন চেয়ারম্যান আল্লামা আহমদ শফীর সভাপতিত্বে একটি বৈঠক হয়। সেখানে কওমি মাদরাসা-শিক্ষার্থীদের বিদেশে উচ্চশিক্ষাগ্রহণের প্রক্রিয়া সুগম করার লক্ষ্যে ৬ সদস্য বিশিষ্ট বিশেষ একটি সাব-কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি গঠনের পর সাবকমিটির আর এ বিষয়ক বৈঠকই হয়নি।

মাদানী নেসাবের সঙ্গে সংলাপ নেই

তাকমিল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার জন্য ফযিলত (মেশকাত) ও সানাবিয়াতে (শরহেবেকায়া) উত্তীর্ণ হওয়া বাধ্যতামূলক করেছে হাইয়াতুল উলয়া এবং বেফাক। কয়েক বছর পর নাহবেমিরও বাধ্যতামূলক করার পরিকল্পনা আছে বলে জানিয়েছেন বেফাকের মহাপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মাওলানা মুহাম্মদ যুবায়ের। এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর আলোচনায় উঠে এসেছে মাদানি নেসাবের প্রসঙ্গটি। কারণ বেফাকের পাঠ্যক্রম এবং মাদানি নেসাবের পাঠ্যক্রম আলাদা। তাকমিল পরীক্ষায় বসতে লাগতো না আগের কোনো কেন্দ্রীয় পরীক্ষার সার্টিফিকেট। ফলে মাদানি নেসাব সমাপ্ত করে এসেও তাকমিল পরীক্ষায় বসতে পারতো শিক্ষার্থীরা। কিন্তু এখন বেফাক কেন্দ্রীয় পরীক্ষাগুলো বাধ্যতামূলক করায় জটিলতা তৈরী হয়েছে।

এক্ষেত্রে মাদানি নেসাব মাদরাসাগুলো বেফাক হাইয়ার সঙ্গে সমন্বয়ে আগ্রহী হলেও হাইয়া কিংবা বেফাক কর্তৃপক্ষ তাদের সঙ্গে কখনও কোনো সংলাপে বসেনি। মাদানি নেসাবের মাদরাসাগুলো নিজেরাই শরহেবেকায়া জামাত খুলে বেফাকের সঙ্গে সমন্বয় করছে। তবে নাহবেমির বাধ্যতামূলক করলে সমন্বয়ের আর কোনো পন্থা থাকবে না। নাহবেমির বাধ্যতামূলক করা হলে মাদানি নেসাবের শিক্ষার্থীরা বিপদে পড়েব। এ বিষয়ে বেফাক কর্তৃপক্ষের ভাবনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের কর্তৃপক্ষ মাদানি নেসাব নিয়ে আলাদা কোনো চিন্তা করছে না। তবে আমরা চাইছি, তারা তাদের সিলেবাসে একটু অদলবদল করে বেফাক বা হইয়ার সঙ্গে যুক্ত হয়ে যাক।’ তবে সিলেবাস, সমন্বয় ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে বোর্ডের সঙ্গে মাদানি নেবাসের কোনো আলোচনা হয়নি এবং এমন কোনো উদ্যোগও নেই বলে জানিয়েছেন বেফাকের মহাপরিচালক।

পড়ালেখা নিয়েও নেই উল্লেখযোগ্য নির্দেশনা

কওমি মাদরাসার ছাত্রদের মধ্যে মূল কিতাবের বাইরে গাইড নির্ভরতা বেড়েছে। যেকোনো কওমি মাদরাসাতে গেলেই চোখে পড়ে গাইড বইয়ের ছড়াছড়ি। বছর কয়েক ধরে বোর্ড পরীক্ষার জামাতগুলোর জন্য নতুন একধরনের বই এসেছে বাজারে। বোর্ডের বিগত বছরগুলোর পরীক্ষার প্রশ্ন ও উত্তর সম্বলিত এসব বই ব্যাপকভাবে সংগ্রহ করছেন সংশ্লিষ্ট জামাতের পরীক্ষার্থীরা। বিভিন্ন মাদরাসায় বাংলা সহায়কগ্রন্থ অধ্যয়ন একসময় কড়াভাবে নিষিদ্ধ থাকলেও সে নিষেধাজ্ঞার ওপর এখন শিথিলতা এসেছে। বোর্ডে ভালো রেজাল্টের জন্য দুর্বল ছাত্রের পাশাপাশি মেধাবী ছাত্ররাও এখন সংগ্রহ করছেন পরীক্ষার প্রশ্নোত্তর সম্বলিত এসব গাইড বই।

তবে গাইড বই নিষেধ করে কোনো নির্দেশনা কখনও দেয়নি বেফাক কিংবা হইয়াতুল উলয়া। কেবল পরীক্ষার সময় বলে দেয়া হয়, গাইড থেকে প্রশ্ন আসবে না। পরীক্ষার প্রসঙ্গ বাদে এমনিতে মাদরাসাগুলোতে গাইড নিষিদ্ধ করে বেফাকের কোনো নির্দেশনা দেয়া আছে কিনা জানতে চাইলে মাওলানা যুবায়ের আহমাদ বলেন, এমন কোনো নির্দেশনা বোর্ডের পক্ষ থেকে নেই। তবে বিষয়টি আমরা ভেবে দেখব। মাদরাসা কর্তৃপক্ষ যদি সতর্ক হন, তারা যদি তদারকি করেন, তাহলে বিষয়টি নিযন্ত্রণ করা সম্ভব। আমরা বিষয়টি আলোচনায় তুলব।’

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

The post ‘পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নাকি অভিভাবক প্রতিষ্ঠান’ : হাইয়ার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন অনেক appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%aa%e0%a6%b0%e0%a7%80%e0%a6%95%e0%a7%8d%e0%a6%b7%e0%a6%be-%e0%a6%a8%e0%a6%bf%e0%a7%9f%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%a4%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%95-%e0%a6%a8%e0%a6%be%e0%a6%95%e0%a6%bf-%e0%a6%85/

Saturday, September 17, 2022

বাংলাদেশে গুমের অভিযোগ বেড়েছে

ফাতেহ ডেস্ক:

জাতিসংঘের গুমবিষয়ক বিশেষজ্ঞ কমিটির কাছে বাংলাদেশে গুমের অভিযোগ বেড়েছে। কমিটির সর্ব সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছরের ২২ মে থেকে এ বছরের ১৩ মে পর্যন্ত এক বছরে কমিটির কাছে আসা বাংলাদেশে গুমের অভিযোগের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮৮, যা আগে ছিল ৭৬।

ওই সময় বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে কমিটিকে আটজনের বিষয়ে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে তথ্য দেওয়া হয়েছে। এখনো ৮১ জনের গুমের অভিযোগের কোনো সুরাহা হয়নি বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

জাতিসংঘের ‘ওয়ার্কিং গ্রুপ অন এনফোর্সড অর ইনভলান্টারি ডিজঅ্যাপিয়ারেন্স’ নামে পরিচিতি গুমবিষয়ক বিশেষজ্ঞ কমিটি গত শুক্রবার এ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। আগামী মঙ্গলবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় মানবাধিকার পরিষদে প্রতিবেদনটি পেশ করা হবে।

প্রতিবেদনে কমিটি বিভিন্ন দেশের গুমের অভিযোগ, নিষ্পত্তি হওয়া ও অনিষ্পন্ন অভিযোগের যে পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা যায়, বাংলাদেশ নির্ধারিত ছয় মাসের মধ্যে আটজনের বিষয়ে কমিটিকে তথ্য দিয়েছে। বাংলাদেশে যে ৮৮ জনের গুমের অভিযোগ কমিটি পেয়েছে, তাঁদের মধ্যে ২ জন ছিলেন নারী। এখন অনিষ্পন্ন হিসেবে যে ৮১ জনকে পরিসংখ্যানে দেখানো হয়েছে, তার মধ্যেও ১ জন নারী রয়েছেন। ওই হিসাবে দেখা যায়, তিনজন এখন মুক্ত এবং চারজন আটক আছেন।

কমিটি গুমের অভিযোগগুলো ও তাতে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‍্যাব) ভূমিকার স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তেরও আহ্বান জানিয়েছে। প্রতিবেদনে দেখা যায়, বিবেচ্য সময়ে কমিটি তিনবার সভায় মিলিত হয়েছে। এর মধ্যে গত ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় সভায় (১২৬তম) বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেছিল।

The post বাংলাদেশে গুমের অভিযোগ বেড়েছে appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%82%e0%a6%b2%e0%a6%be%e0%a6%a6%e0%a7%87%e0%a6%b6%e0%a7%87-%e0%a6%97%e0%a7%81%e0%a6%ae%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%85%e0%a6%ad%e0%a6%bf%e0%a6%af%e0%a7%8b%e0%a6%97-%e0%a6%ac/

Friday, September 16, 2022

ওমরা চলে যাচ্ছে মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে : তিন বছরে খরচ হয়েছে দ্বিগুণ

মুনশী নাঈম:

দিনদিন মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে ওমরাযাত্রার স্বপ্ন। ভিসার মূল্য, আবাসিক খরচ এবং বিমান টিকেটের দামবৃদ্ধির কারণে দুঃসাধ্য হয়ে যাচ্ছে মধ্যবিত্তের ওমরাযাত্রা। সংশ্লিষ্টগণ বলছেন, গেলো তিন বছরে ওমরার খরচ বেড়ে হয়েছে দ্বিগুণ। ফলে অনেকে ওমরায় যেতে চাইলেও এখন আর সাহস করতে পারছে না। দাম শুনেই আগ্রহীদের মুখে নামছে দীর্ঘশ্বাসের ছায়া।

কোভিড ১৯ এর কারণে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা দীর্ঘ দুই বছর ওমরা পালনের জন্য সৌদি আরবে যেতে পারেননি। ২০২২ সালে করোনা সংক্রমণ কমে যাওয়ার ফলে ওমরা ও হজ্বের অনুমতি দেয় সৌদি সরকার। ফলে ওমরা যাত্রী আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে কয়েকগুণ বেড়ে গেছে।

তিন বছরে খরচ বেড়েছে দ্বিগুণ

তিন বছরে ওমরার খরচ বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে বলে জানিয়েছেন সরকার নিবন্ধিত হজ এজেন্সি ইউনিভার্সাল ট্রাভেল বিডির পরিচালক তানভির আহমদ। ভিসা এবং টিকেট বৃদ্ধির কারণে এই খরচ বেড়েছে বলেও জানান তিনি। তিনি ফাতেহকে বলেন, ‘কোভিডের আগে ৮০ থেকে ৯০ হাজারের মধ্যে ভালো প্যাকেজ পাওয়া যেতো। কিন্তু এখন সবচে নিম্নমানের প্যাকেজটাই ১ লাখ ২০ হাজার থেকে শুরু। টিকেটের দাম বাড়ার কারণে এখন এটাও পারব না।’

সর্বশেষ ওমরাদলের বিবরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘গত ৬ সেপ্টেম্বর আমাদের সর্বশেষ ওমরাদল সৌদি গিয়েছে। এদের মধ্যে যারা আগে বুকিং দিয়েছিল, তারা ১ লাখ ২০ হাজারে পেয়েছে। পরে যারা এসেছে, তারা পেয়েছে ১ লাখ ২৫ হাজারে। এরও পর যারা এসেছে, টিকেট সঙ্কটের কারনে তাদের খরচ পড়ছে দেড় লাখের মতো। তার মানে কোভিডের আগের তুলনায় এটা দ্বিগুণ। এটা বললাম সর্বনিম্ন প্যাকেজ। ভালো প্যাকেজের দাম তো দুই লাখ ছুঁই ছুঁই।’

এই এজেন্সি মালিক জানান, ‘এখন ভিসার দামও বাড়িয়েছে সৌদি। রিয়ালের দাম বাড়ার কারণে বাড়ছে টিকেটের মূল্য। গত সপ্তাহে দু’তিনবার টিকেটের দাম বেড়েছে। বেড়েছে সৌদির আবাসন খরচ। সব মিলিয়ে সবচে কমের মধ্যে হলেও ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা লাগবে। যেটা মধ্যবিত্তের নাগালে নেই।’

এয়ারলাইনসের কারসাজিতে টিকেটের দাম বৃদ্ধি

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আগামী ১ অক্টোবর থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ওমরাযাত্রীদের টিকিটের দাম দেড়শ মার্কিন ডলার বৃদ্ধি করেছে।

সূত্র জানায়, সৌদিয়া এয়ারলাইন্স বর্তমানে জনপ্রতি ওমরা টিকিট ৭৫ হাজার টাকা, ৮০ হাজার টাকা এবং ৯০ হাজার টাকায় বিক্রি করছে। থার্ড ক্যারিয়ারগুলোও প্রায় ৮৮ হাজার টাকায় ওমরা টিকিট বিক্রি করছে। বিমান ওমরা টিকিট ৭২ হাজার টাকা ও ৭৮ হাজার টাকায় বিক্রি করছে। আগামী ১লা অক্টোবর থেকে বিমান ওমরাহ টিকিটের দাম বৃদ্ধি করে ৮৫ হাজার টাকা নির্ধারণ করেছে। এসব টিকিট কোনো সিন্ডিকেট চক্রের কাছ থেকে কিনতে হলে আরো অতিরিক্ত কয়েক হাজার টাকা গুনতে হবে।

ওমরা করে আসা এক হাজি ফাতেহকে জানিয়েছেন, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস ওমরা যাএীদের কাছ থেকে টিকেটের দাম বেশি রাখলেও তাদের সার্ভিস সন্তোষজনক নয়। বিমানের সিটগুলোর অবস্থা ভালো না। হেলান দেয়ার জন্য মুভ করা যায় না। সিটের স্ক্রিনগুলো বেশিরভাগ নষ্ট। ক্রুদের বললে তারা বলে নষ্ট করার কিছুই নাই। এক কথায় সার্ভিসের মান খুব খারাপ।

এজেন্সিগুলোর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আগামী ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত বিমানের কোনো সিট নেই। দেড় মাসের টিকিট নামে বেনামে সিন্ডিকেট চক্রের কাছে বিক্রি করে দিয়েছে বিমান অফিস। এতে ওমরা এজেন্সির মালিকরা বিমান অফিসে ধর্না দিয়েও ওমরাযাত্রীদের কোনো টিকিট পাচ্ছে না। আটাব ও হাব নেতৃবৃন্দ দাবি করেছেন, বিমানের দেড় মাসের ফ্লাইটগুলো যথাযথভাবে চেক করা হলেই থলের বিড়াল বেরিয়ে আসবে।

সংকট নিরসনে কে কী বলছেন

হাব নেতৃবৃন্দ বলছেন, ওমরা হজ্বযাত্রীদের চাপের কারণে ও যাত্রা নিশ্চিত করার জন্য বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স সিডিউল ফ্লাইট ছাড়াও সপ্তাহে ১টি করে অতিরিক্ত ফ্লাইট পরিচালনা করতে পারে। এছাড়াও চট্টগ্রাম থেকে জেদ্দা আগে সপ্তাহে তিনটি ফ্লাইট ছিল। বর্তমানে দুইটি চালু রয়েছে একটি বন্ধ। বন্ধ করা ফ্লাইটি প্রতি মঙ্গলবার চালু করে এবং চট্টগ্রাম-মদিনা-চট্টগ্রাম আরও একটি ফ্লাইট চালু করার জন্য জোর দাবি জানান।

অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ (আটাব) এর মহাসচিব আবদুস সালাম আরেফ ফাতেহকে বলেন, ‘টিকেটের এই দামবৃদ্ধি জুলুম। আমরা বিমানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। দাম কমানোর আবেদন জানিয়েছি। পাশাপাশি যাত্রীদের চাপ কমাতে ফ্লাইট বাড়ানো এবং বন্ধ ফ্লাইট চালু করারও আবেদন জানিয়েছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘সমহারে যদি এজেন্সিগুলোর জন্য টিকেট দেয়া হতো, কিংবা টিকেটের ক্রয়ক্ষমতা সরাসরি এজেন্সিকে দেয়া হতো, তাহলে এ সঙ্কট তৈরী হতো না। সব বিষয়ে ২৮ আগস্ট আমরা মন্ত্রণালয়ে চিঠিও দিয়েছি।’

জানা গেছে, গত মঙ্গলবার বেসামরিক বিমান প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলীর দপ্তরে তার সাথে বৈঠক করেন হাব সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম ও মহাসচিব ফারুক আহমদ সরদার। বৈঠকে তারা ওমরাযাত্রীদের অতিরিক্ত বিমান ভাড়া হ্রাস ও যৌক্তিক ভাড়া নির্ধারণের জন্য বিমান প্রতিমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানান।

The post ওমরা চলে যাচ্ছে মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে : তিন বছরে খরচ হয়েছে দ্বিগুণ appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%93%e0%a6%ae%e0%a6%b0%e0%a6%be-%e0%a6%9a%e0%a6%b2%e0%a7%87-%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%9a%e0%a7%8d%e0%a6%9b%e0%a7%87-%e0%a6%ae%e0%a6%a7%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%a4%e0%a7%8d/