Friday, December 30, 2022

‘থার্টি ফার্স্ট নাইটে ফানুস ওড়ানো-আতশবাজি ফোটানো যাবে না’

ফাতেহ ডেস্ক:

থার্টি ফার্স্ট নাইটে উন্মুক্ত স্থানে কোনো অনুষ্ঠান না করার অনুরোধ জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক। নগরবাসীকে অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, থার্টি ফার্স্ট উপলক্ষে কোনো আতশবাজি, পটকা কিংবা ফানুস ওড়ানো যাবে না।

শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) বেলা ১১টা ১৫ মিনিটে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে থার্টি ফার্স্ট নাইট-২০২২ উদযাপন উপলক্ষে কমিশনারস মিট দ্য প্রেসে ডিএমপি কমিশনার এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টার পর ঢাকা মহানগরীর কোনো বার খোলা রাখা যাবে না।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, পর্যাপ্ত পোশাকে ও সাদা পোশাকে রাজধানীজুড়ে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সোয়াত, বোম ডিসপোজাল ইউনিট ও ডগ স্কোয়াড প্রস্তুত থাকবে।

হাতিরঝিল এলাকায় গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকবে। কোনো গাড়ি রাফ চালানো যাবে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় সন্ধ্যা ৬টার পরে বহিরাগত কোনো ব্যক্তি বা যানবাহন প্রবেশ করতে পারবে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক এলাকায় বসবাসরত শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গাড়ি নির্ধারিত সময়ের পর পরিচয় প্রদান সাপেক্ষে শাহবাগ ক্রসিং দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে। পরিচয় প্রদান সাপেক্ষে নীলক্ষেত ক্রসিং দিয়ে হেঁটেও প্রবেশ করতে পারবেন তারা।

The post ‘থার্টি ফার্স্ট নাইটে ফানুস ওড়ানো-আতশবাজি ফোটানো যাবে না’ appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%a5%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%9f%e0%a6%bf-%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%b8%e0%a7%8d%e0%a6%9f-%e0%a6%a8%e0%a6%be%e0%a6%87%e0%a6%9f%e0%a7%87-%e0%a6%ab%e0%a6%be/

Wednesday, December 28, 2022

বাইশের মুসলিম বিশ্ব: আলোচিত যত ঘটনা

মুনশী নাঈম:

বিদায় নিচ্ছে খ্রিষ্টীয় সাল ২০২২। প্রতিটা সালই বিশ্ব পরিস্থিতিতে নানা ঘটনা-উপঘটনার জন্ম দিয়ে মহাকালের ঠিকানায় হারিয়ে যায়। ২০২২-এও পৃথিবীর নানা প্রান্তে সংঘটিত হয়েছে এমন অসংখ্য ঘটনা, যার কোনোটি আলোচনার আলোয় এসেছে, আর কোনোটি থেকে গেছে অনালোচিতই। ঊনিশে মুসলিম বিশ্বে আলোচিত এমন তেরোটি ঘটনার উল্লেখ নিয়েই আমাদের আজকের আয়োজন।

১. কর্ণাটকে হিজাব বিতর্ক

ভারতের বিজেপিশাসিত কর্ণাটকে হিজাব বিতর্ক ছিল আলোচনার শীর্ষে। ২০২১ সালে ডিসেম্বরের শেষ দিকে এবং ২০২২ সালের জানুয়ারী মাসের প্রথম দিকে, রাজ্যের অনেক কলেজে হিজাব নিয়ে ছাত্রী এবং প্রশাসনের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। কিন্তু ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারির শুরুতে, বিতর্ক আরও তীব্রতর হয়। উদুপি জেলার এক কলেজ কর্তৃপক্ষ হিজাব নিষিদ্ধ করে। প্রতিবাদে উদুপির এক মুসলমান ছাত্রী কর্ণাটক হাইকোর্টে মামলা করে।

সবচে বেশি আলোচনায় আসে মান্ডিয়ার কলেজের বিবি মুসকান খান নামের এক মুসলিম ছাত্রী। একটি ভিডিওতে দেখা যায়, মুসকান একটি স্কুটিতে চালিয়ে কলেজে প্রবেশ করেন। তাকে প্রবেশ করতে দেখে গেরুয়া ওড়না পরা একদল তরুণ তাকে উদ্দেশ্য করে জয় শ্রীরাম স্লোগান দিতে শুরু করে। একটা পর্যায়ে তাদের স্লোগানের জবাবে মুসকান আল্লাহু আকবার বলে স্লোগান দেন। ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে পড়ে। হিজাব বিতর্ক আরও চাঙ্গা হয়ে উঠে। হিজাবের দাবিতে বিক্ষোভ করায় তুমাকুরু জেলার একটি সরকারি প্রি ইউনিভার্সিটি কলেজের ১০ জন মুসলিম ছাত্রীর নামে পুলিশ মামলা করে। রাজ্যের শিভামোগ্গা জেলার শিরালাকোপ্পার একটি সরকারি কলেজে হিজাব পরে আসায় ৫৮ জন ছাত্রীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করে।

হিজাব পরার অধিকার চেয়ে ছাত্রীরা কর্নাটক হাইকোর্টে যে মামলা করেছিল, তার অন্তর্বর্তী আদেশে আদালত বলেছিল মামলাটি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত কোনও ধরনের ধর্মীয় পোশাক পরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাওয়া যাবে না। ১৫ মার্চ ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের উচ্চ আদালত ক্লাসে হিজাব পরা নিষিদ্ধের পক্ষে রায় দেয়। প্রধান বিচারপতি রিতু রাজ অসথি, বিচারপতি কৃষ্ণ এস দীক্ষিত এবং জেএম খাজির সমন্বয়ে গঠিত তিন বিচারপতির বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতের মতে, হিজাব পরা অপরিহার্য ধর্মীয় অনুশীলন নয়। তাই এটি নিষিদ্ধ করা বা না করার এখতিয়ার রাখে স্কুল বা কলেজ কর্তৃপক্ষ।

২. নবীকে নিয়ে বিজেপির দুই নেতার মন্তব্যে ক্ষুব্ধ মুসলিম বিশ্ব

চলতি বছরের জুনে ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির দু’জন নেতা ইসলামের নবী মোহাম্মদ সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য করার পর উত্তাল হয়ে উঠেছিল মুসলিম বিশ্ব। প্রথমে নবিজিকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেন বিজেপির মুখপাত্র নূপুর শর্মা। পরে ওই একই ইস্যুতে দলটির দিল্লি ইউনিটের প্রধান নাভিন জিন্দাল টুইট করার পর বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোড়ন উঠে। নবি অবমাননার প্রতিবাদ জানায় সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান, ইন্দোনেশিয়া, ইরাক, মালদ্বীপ, জর্ডান, লিবিয়া ও বাহরাইনসহ আরও অনেক মুসলিম দেশ। কাতার বলেছে, তারা প্রত্যাশা করে ভারত যেন এ বিষয়ে প্রকাশ্যে ক্ষমা চায়। সৌদি আরবও তাদের দেয়া বিবৃতিতে বেশ কঠোর ভাষা ব্যবহার করেছে। ওআইসি এবং পাকিস্তানও ভারতের সমালোচনা করেছে। এমনকি বিজেপির দুই নেতার বিতর্কিত মন্তব্যের প্রতিবাদে ঢাকায় বিক্ষোভ হয়। বিক্ষোভ করে হেফাজতে ইসলাম ও জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি ইসলামপন্থী দল।

আরব বিশ্বের ক্ষোভ দমাতে বিজেপি নুপুর শর্মার সদস্য পদ বাতিল করে। পাশাপাশি নবীন জিন্দালকে দল থেকে বহিষ্কার করে।

৩. ইস্তাম্বুল ঘোষণা

২২ অক্টোবর, ইসলাম সম্পর্কে সঠিক তথ্য তুলে ধরতে এবং ইসলামফোবিয়া ও বিভ্রান্তিমূলক তথ্য প্রতিরোধ করতে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিত ওআইসিভুক্ত দেশগুলোর তথ্যমন্ত্রীদের ১২তম ইসলামী সম্মেলনে একটি ঘোষণাপত্র গৃহীত। এই ঘোষণাপত্রকেই বলা হয় ‘ইস্তাম্বুল ঘোষণাপত্র’

ইস্তাম্বুল ঘোষণায় ভুল তথ্যরোধ এবং ইসলামফোবিয়া থামাতে মিডিয়ার সঠিক ব্যবহারের উপর জোর দেয়া হয়েছে। নিচে ঘোষণার গুরুত্বপূর্ণ ধারাগুলো তুলে ধরা হলো।

১. পোস্ট-ট্রুথ এরা বা সত্য-উত্তরকালের ডিজইনফরমেশন এবং এর সঙ্গে সম্পর্কিত চ্যালেঞ্জগুলির বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য ওআইসির সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে সহযোগিতার গুরুত্বের উপর জোর দেয়া। পাশাপাশি লড়াইয়ের স্বল্প, মধ্যম এবং দীর্ঘমেয়াদী কৌশল প্রণয়ণ করা। উল্লেখ্য, পোস্ট-ট্রুথ এমন একটা পরিস্থিতি, যখন মানুষ সঠিক তথ্য ও প্রকৃত ঘটনার ওপর নয়, বরং তার বিশ্বাস ও আবেগের ওপর ভিত্তি করে কোনো বিষয়কে গ্রহণ বা বর্জন করে। এই পরিস্থিতিতে যেকোনো বিষয়ের বিশ্লেষণে মানুষের কাছে তাঁর আবেগ ও বিশ্বাসই প্রধান ভিত্তি হয়ে দাঁড়ায়।
২. স্বল্প সময়ে নির্দিষ্ট সমস্যা এবং সম্ভাব্য পরিস্থিতি বুঝতে হবে। মধ্যম সময়ে তথ্যের যথার্থতা যাচাইয়ে যোগাযোগ ও কৌশল বাড়াতে হবে। তারপর দীর্ঘমেয়াদী মিডিয়া কন্টেন্ট সরবরাহ করতে হবে।
৩. ইসলাম সম্পর্কে সঠিক তথ্য তুলে ধরতে এবং ইসলামফোবিয়া বিরুদ্ধে লড়াই করতে নতুন এবং আধুনিক টেকনোলজি ব্যবহার করতে হবে।
৪. মুসলিম দেশগুলোর মিডিয়ায় ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি আগ্রাসনের বাস্তব চিত্র তুলে ধরতে হবে। পাশাপাশি ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলি দখলদারিত্বের অবসান ঘটাতে ফিলিস্তিনি জনগণের বৈধ দাবির স্বপক্ষে প্রচারণা চালাতে হবে।
৫. শরণার্থী, আশ্রয়প্রার্থী ব্যক্তিদের, বিশেষ করে ওআইসি সদস্য দেশগুলোর শরণার্থীদের সমর্থন করার জন্য মিডিয়ায় আন্তর্জাতিক সংহতি এবং সহায়তার গুরুত্ব তুলে ধরতে হবে।
৬.ইসলামী সংস্কৃতি এবং বিশ্বের অন্যান্য সংস্কৃতির মধ্যে ডায়ালগ বাড়াতে হবে।
৭. অমুসলিম দেশগুলোতে যে ইসলামিক কালচার এবং ধর্মীয় ঐতিহ্য ধ্বংযজ্ঞের শিকার হচ্ছে, মিডিয়ায় তার বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী সচেতনতা বাড়াতে হবে। বিশেষ করে সেইসব এলাকায়, যেখানে আদিবাসী মুসলিম সম্প্রদায় জাতিগত নির্মূলের শিকার হয়েছিল৷
৮. ওআইসি মিডিয়া ফোরাম (ওএমএফ)-এ সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মিডিয়া প্রতিষ্ঠানকে যুক্ত করা।।

৪. মালয়েশিয়ার নির্বাচন

১৯ নভেম্বর মালয়েশিয়ায় অত্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ একটি সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে আবারও অংশ নিচ্ছেন দেশটির প্রায় শতবর্ষীয় প্রবীণ রাজনীতিবিদ মাহাথির মোহাম্মদ। তবে কোনো দলই ২২২ আসনের পার্লামেন্টে সরকার গঠনে প্রয়োজনীয় সমর্থন দেখাতে পারেনি। দেশটিতে সরকার গঠনে ১১২ আসন নিশ্চিত করতে হয়। নির্বাচনে আনোয়ার ইব্রাহিমের দল পাকাতান হারাপান (পিএইচ) জোট ৮২টি আসনে জয় পায়। অন্যদিকে মুহিউদ্দিন ইয়াসিনের দল পেরিকাতান ন্যাসিওনাল (পিএন) পায় ৭৩ আসন।

জাতীয় নির্বাচনে কোনো দল বা জোট সরকার গঠনের জন্য সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারেনি। ফলে দেশটিতে নজিরবিহীন ঝুলন্ত পার্লামেন্ট তৈরি হয়। রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের মধ্যে আলোচনার ভিত্তিতে সরকার গঠনের জন্য সমঝোতায় পৌঁছাতেও ব্যর্থ হয়। তাই মালয়েশিয়ার রাজা সুলতান আব্দুল্লাহ জাতীয় ঐক্যের সরকার গঠনের জন্য কয়েকদিনের আলোচনা শেষে দেশটির বিরোধী নেতা আনোয়ার ইব্রাহিমকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ঘোষণা করেন। মি. আনোয়ার প্রায় সিকি-শতাব্দী ধরে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য রাজনীতি করে আসছিলেন।

৫. কাতারে বিশ্বকাপ, পশ্চিমাদের বয়কট

তবে সব ইস্যু ছাপিয়ে গেছে কাতারের ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজন। নভেম্বর-ডিসেম্বররে অনুষ্ঠিত হওয়া বিশ্বকাপের পক্ষে-বিপক্ষে নানা মত তৈরী হয়েছে। উপসাগরীয় ও আরব অঞ্চলে ফুটবল বিশ্বকাপের মতো অনুষ্ঠান আয়োজনকে ইউরোপ স্বাভাবিকভাবে নিতে পারেনি। ফ্রান্সে ইসলামফোবিক একটি ম্যাগাজিনের একটি কার্টুনে কাতার জাতীয় ফুটবল দলকে সন্ত্রাস হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়। পুরো বিশ্বকাপ জুড়েই কাতারের বিরুদ্ধে নেতিবাচক প্রচারণায় লিপ্ত হতে দেখা যায় পশ্চিমা গণমাধ্যমগুলোকে। মূলত কাতারে গণতন্ত্রের অনুপস্থিতি, নারী স্বাধীনতা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার বিষয়ে দেশটির অবস্থান, ইসলামি শরীয়াহ আইন, সমকামিতার বিপক্ষ অবস্থান ও অভিবাসী শ্রমিকদের প্রতি দেশটির আচরণ বিষয়ে অভিযোগ তুলে তারা। বিবিসি, গার্ডিয়ানের মতো গণমাধ্যম প্রায়ই নানা ইস্যুতে কাতারে বিশ্বকাপ আয়োজনের নেতিবাচক দিক তুলে ধরে। এমনকি কাতার বিশ্বকাপ বয়কটেরও ডাক দেয় তারা।

কিন্তু পশ্চিমাদের নেতিবাচক প্রচারণা এবং বয়কটের ডাক মাঠে মারা যায়। বিশ্বকাপের আয়োজন এবং ব্যবস্থাপনা নিয়ে সবাই সন্তুষ্টি প্রকাশ করে। পাশাপাশি কাতার বিশ্ব দরবারে প্রশংসিত হয়।

৬. বিশ্বকাপে ফিলিস্তিন

কাতার বিশ্বকাপে ফিলিস্তিন ইস্যুটি বেশ শক্তিশালী সমর্থন এবং স্বীকৃতি পেয়েছে। যার প্রমাণ স্টেডিয়ামে স্টেডিয়ামে ফিলিস্তিনের পক্ষে জয়ধ্বনি। প্রতিটি ম্যাচের প্রতিটি সেকেন্ড-মিনিটে লাখো-কোটি মানুষের কণ্ঠে উচ্চারিত হয়েছে একটি নাম, ‘ফিলিস্তিন! ফিলিস্তিন’। স্বাধীনতার সংগ্রাম, বর্ণবাদবিরোধিতা ও উপনিবেশবাদের নিগড় থেকে মুক্তির লড়াইয়ে একাকার যে ভূখণ্ডের নাম–তারই পতাকা জড়িয়ে বিশ্বকাপের গ্যালারিতে হাজির হয়েছেন ফুটবল ভক্ত-সমর্থকরা। ম্যাচ যে দেশেরই হোক, গ্যালারিতে ভালোভাবে চোখ রাখলেই নজরে পড়েছে ফিলিস্তিনের পতাকা, পতাকার রঙের আর্মব্যান্ড ও ব্রেসলেট। কান পাতলেই শোনা গেছে ‘ফিলিস্তিন মুক্ত করো’ ধবনি। শুধু স্টেডিয়ামেই নয়, কাতারের রাস্তায় রাস্তায় ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে শোনা গেছে ফিলিস্তিনেরই জয়ধ্বনি।

ফিলিস্তিনি সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড সার্ভে স্টাডিজের একটি জরিপের ফলাফলে বলা হয়েছে, এই বিশ্বকাপের পর আরব জনগণের প্রতি আস্থা ফিরে পেয়েছে ফিলিস্তিনিরা। ইজরাইলের সঙ্গে আরব দেশগুলোর সম্পর্ক স্বাভাবিক করার মিছিল দেখে হতাশ হয়েছিল তারা। ৬৬ শতাংশ ফিলিস্তিনি এখন মনে করেন, তাদের আশা পুনরুদ্ধার হয়েছে। ২১ শতাংশ শতাংশ ফিলিস্তিনি মনে করেন, তাদের আশা কিছুটা পুনরুদ্ধার হয়েছে। জরিপের আয়োজকরা বলেছেন, কাতারে ফিফা বিশ্বকাপের ম্যাচগুলোতে ফিলিস্তিনের ব্যাপক সমর্থনে ফিলিস্তিনি জনগণ মনে করছে, তারা ন্যায়বিচার পাবে। তারা একা নয়। তারা সমস্ত সম্ভাব্য উপায়ে দখলদারিত্বের অবসান চায়। এটা তাদের অধিকার।

৭. তালেবানের নারীশিক্ষা

নভিম্বরে আফগানিস্তানের বিশ্ববিদ্যালয়ে নারীদের নিষিদ্ধ করেছে তালেবান। তালেবানের উচ্চ শিক্ষামন্ত্রীর একটি চিঠিতে এ নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। খবর বিবিসির। চিঠিতে বলা হয়েছে, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত আফগানিস্তানে নারীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকবে।

বিভিন্ন দেশ ইতিমধ্যেই আফগানিস্তানে নারীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া নিষিদ্ধ করার পদক্ষেপের নিন্দা করেছে। তবে তালেবানের উচ্চশিক্ষাবিষয়ক মন্ত্রী নেদা মোহাম্মদ নাদিম বলেন, মেয়েরা পোশাকসংক্রান্ত নিয়মকানুন মেনে চলছিল না বলেই এ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। নেদা মোহাম্মদ নাদিম আরও বলেন, কিছু নারী শিক্ষার্থী এমন পোশাক পরছিল, যাতে মনে হতো যেন তারা কোনো বিয়ের অনুষ্ঠানে যাচ্ছে। বিজ্ঞানের মতো কিছু বিষয় আছে, যা মেয়েদের পড়ানোর উপযুক্ত নয়।

৮. মিয়ানমারে গণহত্যায় ইজরাইলের সমর্থন, গোপন নথি

মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যের ইহুদীবাদি রাষ্ট্র ইসরাইলের আতাঁতের খবর পুরানো হলেও এ সংক্রান্ত নিশ্চিত কোনো ডাটা এতদিন পাওয়া যায়নি। কিন্তু চলতি বছর সেপ্টেম্বরে এই গভীর সম্পর্কের প্রায় ২৫ হাজার গুরুত্বপূর্ণ নথি প্রকাশ করেছে ইসরাইলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

নথিতে বলা হয়, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর দুর্নীতি সত্ত্বেও রাজনৈতিক সমর্থনের বিনিময়ে অস্ত্র বিক্রির গোপন চুক্তিতে আবদ্ধ হয়েছিল ইসরায়েল। ইসরায়েলের প্রতিটি সরকার মিয়ানমারের সামরিক জান্তার সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখেছে। মিয়ানমার মানবতাবিরোধী অপরাধে এই অস্ত্র ব্যবহার করছে জেনেও তারা মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে এবং তাদের কাছে অস্ত্র বিক্রি করেছে। ইসরায়েল এ ব্যাপারে কোনো খবরই রাখেনি, বার্মিজ সেনাবাহিনীর জন্য অস্ত্র সরবরাহ, সমর্থন এবং সামরিক প্রশিক্ষণ দেশটিকে কোনও বাহ্যিক হুমকি থেকে রক্ষা করার জন্য ছিল না। বরং অস্ত্র, অভিজ্ঞতা ও প্রশিক্ষণ খোদ মিয়ানমারের জনগণের বিরুদ্ধেই ব্যবহৃত হচ্ছে। সেই সময় কোনো ইসরাইলি প্রতিনিধি মিয়ানমারের কাছে অস্ত্র বিক্রি বিষয়ে কোনো আপত্তি জানায়নি।

২০১৭ সালে রোহিঙ্গা জনগণের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালানোর অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও ইসরায়েল মিয়ানমারের সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছে। , ২০১৯ সালের নভেম্বরে নির্যাতিত রোহিঙ্গা জনগণের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালানোর অভিযোগে হেগের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে মামলা হয়েছিল সেখানে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর জন্য ‘শুভকামনা’ জানিয়েছিলেন মিয়ানমারে ইসরাইলের রাষ্ট্রদূত রনেন গিলর। ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি, মিয়ানমার সেনাবাহিনী এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশটির নিয়ন্ত্রণ দখল করে। জাতিসংঘের অনুমান অনুসারে, এখন পর্যন্ত ১৪ হাজার স্থানীয় বাসিন্দাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সেই সঙ্গে সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে ২ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। তবে ইসরাইলি সরকার এই অভ্যুত্থান ও নৃশংসতার নিন্দা করতে অস্বীকার করেছে।

৯. ভারতীয় মাদরাসাগুলোতে অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে মাধ্যমিক

শিক্ষার্থীদেরকে এসএসসি লেভেল পর্যন্ত জেনারেল সিলেবাস পাঠদান এবং এসএসসি লেভেলের পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সার্টিফিকেট নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দ মাদরাসা। ১৮ আগস্ট দেওবন্দের এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকে পাশাপাশি অন্যান্য মাদ্রাসাগুলোকেও বিষয়টি আমলে নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। দেওবন্দের এই সিদ্ধান্তের পর তুমুল আলোচনা শুরু হয়েছে বাংলাদেশেও।

বাংলাদেশের উম্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো ভারতের একটি প্রতিষ্ঠানের নাম ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ওপেন স্কুলিং (এনআইওএস)। এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমেই মূলত মাদ্রাসাগুলো এসএসসি লেভেলের পরীক্ষায় অংশ নেবে। ইতিমধ্যেই এনআইওএসের সঙ্গে একটি সমঝোতাও হয়ে গেছে। এই প্রকল্পের পেছনে রয়েছে ভারতের মুসলিমদের সবচেয়ে বড় প্লাটফর্ম জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ। জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের আরও কয়েকটি শিক্ষাপ্রকল্প রয়েছে। এটি সর্বশেষ সংযোজন। এই প্রকল্পের নাম ‘জমিয়ত ওপেন স্কুল’।

এর আগে ২২ অক্টোবর ২০২০ অনুষ্ঠিত জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের মজলিসে আমেলার সিদ্ধান্ত মতে—২৫ নভেম্বর ২০২০ এনআইওএস-এর অধীনে মাদ্রাসা-শিক্ষার্থীদের এসএসসি লেভেল পর্যন্ত শিক্ষা দেওয়া বিষয়ক পরামর্শ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় এনআইওএস-এর অধীনে মাদ্রাসা-শিক্ষার্থীদের এসএসসি লেভেল পর্যন্ত পড়ানোর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

১০. আসামে এবার কওমি মাদরাসা বন্ধ

উত্তর-পূর্ব ভারতের আসাম রাজ্যের সরকারি আলিয়া মাদরাসা বন্ধের পর এবার কওমি মাদরাসা বন্ধের তোড়জোড় শুরু করেছে বিজেপি সরকার। শুধু আগস্টেই তিনটি মাদরাসা বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দিয়েছে প্রশাসন। মাদরাসার ছাত্রদের বাড়ি পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে কিংবা কোনো স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি গ্রেফতার করা হচ্ছে ইমাম ও শিক্ষকদের।

এর আগে ২০২০ সালে মাদরাসা শিক্ষা আইন পরিবর্তন করে রাজ্য সরকারের অনুদানপ্রাপ্ত মাদরাসাগুলোকে সাধারণ স্কুলে পরিণত করে আসাম সরকার। সে সময় আসামের শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন হিমন্ত বিশ্বশর্মা। এরপর ২০২১ সালে নির্বাচনে জয়ী হয়ে মুখ্যমন্ত্রী হন তিনি। এর এক বছর পরেই ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে এই আইনের বৈধতার স্বীকৃতি দেন গুয়াহাটি হাইকোর্ট। মুসলমান সমাজের একটা অংশ ও বিরোধীরা এই আইন এবং রায়ের বিরোধিতা করলেও তাতে কোনো লাভ হয়নি। ফলে আসামে সরকারি মাদরাসা স্তরে ধর্মীয় শিক্ষা দেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়।

আগস্টে পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেল ভাস্কর জ্যোতি মোহন্ত ও গোয়েন্দা বিভাগের দায়িত্বে থাকা হীরেন নাথ কওমি মাদরাসা বোর্ড অল আসাম তনজিম কওমি মাদরাসার সচিব মাওলানা আবদুল কাদিরের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে সব কওমি মাদরাসার তালিকা চাওয়া হয়। পাশাপাশি ইমাম-শিক্ষক নিয়োগে পুলিশ ভেরিফিকেশন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে আসামে। বাইরের রাজ্য থেকে কোনো ইমাম বা মাদরাসার শিক্ষক আসামে এলে তাকে আগে পরীক্ষা করবে পুলিশ। তারপর তাকে নিয়োগ দেয়া হবে।

১১. আল-কায়েদার শীর্ষ নেতা জাওয়াহিরির শাহাদাত

আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ’র হামলায় আল-কায়েদার শীর্ষ নেতা আয়মান আল-জাওয়াহিরি নিহত হওয়ার ঘটনাটি ছিল একটি বিস্ফারিত ইস্যু। পয়লা আগস্ট টেলিভিশনে দেওয়া এক বক্তব্যে জাওয়াহিরির মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকজন কর্মকর্তার বরাতে বলা গণমাধ্যমে বলা হয়, হামলার সময় আল–কায়েদার এই নেতা কাবুলে একটি বাড়ির ব্যালকনিতে অবস্থান করছিলেন। এ সময় ড্রোন থেকে তাকে লক্ষ্য করে দুটি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়। এতে জাওয়াহিরির মৃত্যু হয়। ওই বাড়িতে তার পরিবারের অন্য সদস্যরাও ছিলেন। তবে হামলায় তাদের কোনো ক্ষতি হয়নি।

আল জাজিরা জানিয়েছে, তাদের কাছে কিছু ছবি এসেছে। ছবিতে আল-কায়েদা নেতা যেখানে লুকিয়ে ছিলেন সেখান থেকে ধোঁয়া উঠতে দেখা গেছে। আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে মার্কিন দূতাবাসের কাছে কূটনৈতিক জেলার একটি বাড়ি লক্ষ্য করে এ অভিযান চালানো হয়।

১২. ইমরান খানের পরাজয়

এ বছরের এপ্রিলে পাকিস্তান পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটে হেরে ক্ষমতা হারিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। এতে দেশটিতে কোনো প্রধানমন্ত্রীই পাঁচ বছরের মেয়াদ পূর্ণ করতে পারেননি। ইমরান খান অবশ্য ক্ষমতা হারিয়ে চুপ থাকেননি। তিনি উত্তরসূরি প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফকে ক্ষমতাচ্যুত করতে ইসলামাবাদে ধারাবাহিক প্রতিবাদ মিছিলে নেতৃত্ব দেন। আগস্টে তার বিরুদ্ধে পাকিস্তানের সন্ত্রাসবিরোধী আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ আনে সরকার। নভেম্বরে তাকে হত্যার চেষ্টা ব্যর্থ হয় এবং তিনি আহত হন। এ হামলার জন্য শরীফ ও জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তাদের দায়ী করেন এবং দেশে আগাম নির্বাচনের দাবি জানান ইমরান খান।

১৩. ইরানে হিজাববিরোধী বিক্ষোভ

১৬ সেপ্টেম্বর পুলিশ হেফাজতে কুর্দি তরুণী মাহসা আমিনির মৃত্যুর পর থেকেই হিজাব-বিরোধী আন্দোলনে উত্তাল হয়ে আছে ইরান। এ আন্দোলনে এখন পর্যন্ত ৩০০-এর বেশি বিক্ষোভকারীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা। তবে আন্দোলনে ২০০ জন বিক্ষোভকারীর মৃত্যু হয়েছে বলে শনিবার (৩ ডিসেম্বর) জানিয়েছে দেশটির সরকার।

যেই নৈতিকতা পুলিশ নিয়ে ইরানে বিতর্ক, দেশটিতে তাদের বলা হয় গাশত-ই এরশাদ (গাইডেন্স পেট্রল)। এটি পুলিশেরই একটি বিশেষ ইউনিট, যাদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে ইসলামিক নৈতিকতার সম্মান নিশ্চিত করার এবং পোশাকবিধি অনুসরণ না করা ব্যক্তিদের আটক করার। ২০০৫ সালে পুলিশের এই বিশেষায়িত বাহিনী প্রতিষ্ঠা করা হয়। শরিয়ার ব্যাখ্যার ভিত্তিতে তৈরি করা আইনের অধীনে একজন নারীকে তাদের চুল ঢেকে (হিজাব বা মাথার স্কার্ফ দিয়ে) রাখতে হয় এবং লম্বা ও ঢিলেঢালা পোশাক পরতে হয়। আর তারই বাস্তবায়নের দায়িত্ব বর্তায় নৈতিকতা পুলিশের ওপর। ১৩ সেপ্টেম্বর তেহরানের নৈতিকতা পুলিশ যখন তাকে গ্রেপ্তার করেছিল তখন আমিনির মাথার স্কার্ফের নিচে কিছু চুল দৃশ্যমান ছিল। পরে তাকে আটক করা হলে সেখান থেকে তাকে হাসপাতালে নেয়া হলে ৩ দিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় থাকার পর তিনি মারা যান।

মাহশা মারা যাবার পর বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে দাবানলের মতো। বিক্ষোভে সংহতি জানায় বিভিন্ন দেশের নারীরা। চলচ্চিত্র অভিনেত্রীসহ তারকা সংগীতশিল্পীরাও নিজেদের চুল কেটে ইরানি নারীদের সমর্থন জানান। এমনকি এই তালিকায় যুক্ত হন ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের সদস্য আবির আল-সাহলানিও। ফলে ইরানে হিজাব এখন ধর্মীয় প্রতীক নয় কেবল, রাজনৈতিক পরিবর্তনের প্রতীক হিসেবেও বরিত হচ্ছে।

The post বাইশের মুসলিম বিশ্ব: আলোচিত যত ঘটনা appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%87%e0%a6%b6%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%ae%e0%a7%81%e0%a6%b8%e0%a6%b2%e0%a6%bf%e0%a6%ae-%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%b6%e0%a7%8d%e0%a6%ac-%e0%a6%86%e0%a6%b2%e0%a7%8b%e0%a6%9a/

বাইশের ধর্মীয় ইস্যু: আলোচিত যত ঘটনা

মুনশী নাঈম:

নানা ঘটনা ও উপঘটনায় সরব ছিল দুই হাজার বাইশ। ঝিমিয়ে পড়া সময় যায়নি, কোনো না কোনো ইস্যুতে, কোনো না কোনো আন্দোলনে জেগে ছিল বাংলাদেশ। বিশেষ করে বাংলাদেশের ইসলামি অঙ্গন। অন্যান্য বছরের চেয়ে এবারের বাইশ যেন একটু ভিন্ন, একটু অনন্য। এই ফিচারে দুই হাজার উনিশের গুরুত্বপূর্ণ ১০ ঘটনার দিকে ফিরে তাকিয়েছি আমরা। নীচে তার বৃত্তান্ত রইলো।

১. বাইতুল মোকাররমের খতিব নিয়োগ

৩১ মার্চ জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিব পদে নিয়োগ দেয়া হয় মোজাহেদে আজম আল্লামা শামছুল হক ফরিদপুরী ছদর ছাহেব রহ.-এর ছাহেবজাদা ও গোপালগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী গওহরডাঙ্গা মাদরাসার প্রিন্সিপাল মুফতি রুহুল আমীনকে। বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের প্রাক্তন খতিব প্রফেসর মাওলানা সালাহ উদ্দিন ৩ ফেব্রুয়ারি ইন্তেকাল করলে খতিবের পদটি শূন্য হয়ে যায়।

কে হচ্ছেন বাইতুল মোকাররমের খতিব, এই নিয়ে বেশ আলোচনা চলছিল। আলোচনায় ছিল মাওলানা মাহমুদুল হাসান, মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ, মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভি, মুফতি ড. ওয়ালীউর রহমান খান নদভী, মাওলানা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী, মাওলানা সাজিদুর রহমান এবং মাওলানা রুহুল আমিন সহ আরও কয়েকজনের নাম। অবশেষে অনেক আলোচনার পর মুফতি রুহুল আমীনকে খতিব পদে নিয়োগ দেয়া হয়। বছরের শুরুতে বাইতুল মোকাররমের খতিব নিয়োগের বিষয়টি ছিল আলোচনার শীর্ষে।

২. গণকমিশনের শ্বেতপত্র, দুদকের তদন্ত

১২ মার্চ ‘বাংলাদেশে মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের ২০০০ দিন’ শীর্ষক শ্বেতপত্র প্রকাশ করে গণকমিশন। এতে ১১৬ আলেমের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে দুদককে তদন্ত করতে বলা হয়।

তালিকায় যাদের নাম ছিল:

১. মাওলানা নূরুল ইসলাম ওলিপুরী, ২. মাওলানা সাজিদুর রহমান, ৩. মুফতি রেজাউল করিম, ৪. মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করিম, ৫. মাওলানা খোরশেদ আলম কাসেমী, ৬. মাওলানা আবুল কালাম আজাদ (বাশার), ৭. মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব, ৮. মুফতি দিলওয়ার হোসাইন সাইফী, ৯. মাওলানা সাইয়্যেদ কামাল উদ্দিন জাফরী, ১০. মাওলানা মাহমুদুল হাসান ভূজপুরী, ১১. মাওলানা মাহমুদুল হাসান ফতেহপুরী, ১২. মাওলানা মুহিব খান, ১৩. মুফতি সাঈদ আহমদ কলরব, ১৪. মুফতি দিলাওয়ার হোসাইন, ১৫. মাওলানা গিয়াস উদ্দিন তাহেরী, ১৬. মাওলানা আব্দুর রহিম বিপ্লবী, ১৭. মাওলানা আরিফ বিল্লাহ, ১৮. মাওলানা বজলুর রশিদ, ১৯. মুফতি নাজিবুল্লাহ আফসারী, ২০. মাওলানা ওয়াসেক বিল্লাহ নোমানী, ২১. মুফতি নূর হোসেন নুরানী, ২২. মুফতি কাজী ইব্রাহিম, ২৩. মাওলানা গোলাম রাব্বানী, ২৪. মাওলানা মুজাফফর বিন মহসিন, ২৫. মাওলানা মোস্তফা মাহবুবুল আলম, ২৬. মাওলানা মাহমুদুল হাসান গুনবি, ২৭. মাওলানা শায়েখ সিফাত হাসান, ২৮. মাওলানা মোহাম্মদ রাকিব ইবনে সিরাজ, ২৯. মাওলানা ফয়সাল আহমদ হেলাল, ৩০. মাওলানা মতিউর রহমান মাদানী, ৩১. মাওলানা মুজিবুর রহমান, ৩২. মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবী, ৩৩. মাওলানা হাফিজুর রহমান ছিদ্দীকী, ৩৪. মাওলানা আজিজুল ইসলাম জালালী, ৩৫. মাওলানা মেরাজুল হক কাসেমী, ৩৬. মুফতি মুহসিনুল করিম, ৩৭. মাওলানা আব্দুল বাসেত খান, ৩৮. মাওলানা আবদুল খালেক সাহেব শরিয়তপুরী, ৩৯. মুফতি মাহমুদ উল্লাহ আতিকী, ৪০. মুফতি উসমান গণি মুছাপুরী, ৪১. মাওলানা আবু নাঈম মুহাম্মাদ তানভীর, ৪২. মুফতি শিহাবুদ্দীন, ৪৩. মুফতি মুসতাঈন বিল্লাহ আল-উসওয়ায়ী, ৪৪. মাওলানা আশরাফ আলী হরষপুরী, ৪৫. মাওলানা জাকারিয়া, ৪৬. মুফতি আমজাদ হোসাইন আশরাফী, ৪৭. মুফতি আনোয়ার হোসাইন চিশতী, ৪৮. মাওলানা আতিকুল্লাহ, ৪৯. মাওলানা বশির আহমদ, ৫০. মাওলানা সিরাজুল ইসলাম মিরপুরী, ৫১. মাওলানা রিজওয়ান রফিকী, ৫২. মাওলানা আবরারুল হক হাতেমী, ৫৩. মাওলানা রাফি বিন মুনির, ৫৪. মাওলানা আনোয়ারুল ইসলাম জাবেরী, ৫৫. মাওলানা মোতাসিম বিল্লাহ আতিকী, ৫৬. মুফতি শেখ হামিদুর রহমান সাইফী, ৫৭. মাওলানা আজহারুল ইসলাম আজমী, ৫৮. মাওলানা কামাল উদ্দিন দায়েমী, ৫৯. মাওলানা কামাল উদ্দিন কাসেমী, ৬০. মাওলানা মুফতি রুহুল আমিন নুরী, ৬১. মাওলানা মাজহারুল ইসলাম মাজহারী, ৬২. মাওলানা মাহমুদুল হাসান ফেরদাউস, ৬৩. মুফতি এহসানুল হক জিলানী, ৬৪. মাওলানা মাহবুবুর রহমান জিহাদি, ৬৫. মুফতি আব্দুল হক, ৬৬. মুফতি শাহিদুর রহমান মাহমুদাবাদী, ৬৭. মাওলানা ইসমাঈল বুখারী, ৬৮. মাওলানা জয়নুল আবেদীন হাবিবী, ৬৯. মাওলানা ইউসুফ বিন এনাম, ৭০. মাওলানা শাববীর আহমদ উসমানী, ৭১. মুফতি জাহিদুল ইসলাম যায়েদ, ৭২. মাওলানা আব্দুল কাইয়ুম জামী, ৭৩. মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, ৭৪. মাওলানা ইসমাইল হোসাইন, ৭৫. মুফতি আব্দুর রহিম হেলালী, ৭৬. মুফতি ওমর ফারুক যুক্তিবাদী, ৭৭. মাওলানা মুশাহিদ আহমদ উজিরপুরী, ৭৮. মাওলানা কাজিম উদ্দীন (অন্ধ হাফেজ), ৭৯. মাওলানা ফেরদাউসুর রহমান, ৮০. মুফতি হারুনুর রশিদ, ৮১. মাওলানা আবুল কাসেম, ৮২. মুফতি ওয়ালী উল্লাহ, ৮৩. মাওলানা আবু নাঈম মুহাম্মাদ তানভীর, ৮৪. মাওলানা জাকারিয়া নাটোর, ৮৫. মাওলানা আবুল হাসান (সাদী), ৮৬. মুফতি রুহুল আমিন নুরী, ৮৭. মুফতি মামুনুর রশিদ কামালী, ৮৮. মাওলানা আবদুল কালাম আজাদ, ৮৯. মাওলানা ডা. সিরাজুল ইসলাম সিরাজী (নওমুসলিম), ৯০. মাওলানা শামসুল হক যশোরী (নওমুসলিম), ৯১. মুফতি হাবিবুর রহমান মিসবাহ, ৯২. মাওলানা মুফতি ওলিউল্লাহ, ৯৩. মাওলানা বেলাল হুসাইন ফারুকী, ৯৪. মুফতি ওমর ফারুক যুক্তিবাদী, ৯৫. মাওলানা আমির হামজা, ৯৬. মাওলানা মিজানুর রহমান আযহারী, ৯৭. মাওলানা তারেক মনোয়ার, ৯৮. মাওলানা আব্দুল হালিম বোখারী, ৯৯. মাওলানা আতাউল্লাহ হাদেমী, ১০০. মাওলানা আ ফ ম খালিদ হোসেন, ১০১. মাওলানা মামুনুল হক, ১০২. মুজিবুর রহমান হামিদী, ১০৩. মাওলানা মুশতাকুন্নবী, ১০৪. মাওলানা সালাহ উদ্দীন নানুপুরী, ১০৫. মাওলানা কুতুব উদ্দীন নানুপুরী, ১০৬. মাওলানা বেলাল উদ্দীন, ১০৭. মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানী, ১০৮. মাওলানা রুহুল আমিন যুক্তিবাদী, ১০৯. মাওলানা আবুল কালাম বয়ানী, ১১০. মাওলানা রফিকুল্লাহ আফসারী, ১১১. মাওলানা আব্দুল্লাহ আল-আমিন, ১১২. মাওলানা মোয়াজ্জেম হোসাইন সাইফী, ১১৩. মাওলানা আলাউদ্দীন জিহাদি, ১১৪. মাওলানা আবু বকর মোহাম্মদ জাকারিয়া, ১১৫. জৈনপুরী সিলসিলার মাওলানা এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী এবং ১১৬. মাওলানা মাহবুবুর রহমান জৈনপুরী।

তবে এ তালিকার বিরুদ্ধে সম্মিলিতভাবে প্রতিবাদ জানান আলেমরা। তর্কে-বিতর্কে উত্তপ্ত থাকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। বিভিন্ন বিতর্কের পর ষরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এ তালিকার কোনো ভিত্তি নেই। দুদকও তদন্ত করা থেকে সরে আসে। এটি ছিল ২০২২ সালের আলোচিত ঘটনাগুলোর অন্যতম একটি।

৩. জনশুমারি: দেশে মুসলিম জনসংখ্যা বেড়েছে

আলোচনায় ছিল চলতি বছর দেশের সর্বশেষ জনশুমারির প্রসঙ্গও। জনশুমারিতে দেখা যায়, দেশে ইসলাম ধর্মাবলম্বী জনসংখ্যা এক দশকে বেড়েছে ০ দশমিক ৩৯ শতাংশ। একই সময়ে কমেছে অন্য ধর্মাবলম্বী জনসংখ্যা। ২০২২ এর জনশুমারি অনুযায়ী, দেশের জনসংখ্যার ৯১ দশমিক ০৪ শতাংশ মুসলমান, ৭ দশমিক ৯৫ শতাংশ হিন্দু, ০ দশমিক ৬২ শতাংশ বৌদ্ধ, ০ দশমিক ৩০ শতাংশ খ্রিস্টান এবং অন্যান্য ০ দশমিক ১২ শতাংশ। অন্যদিকে ২০১১ সালে এই হার ছিল যথাক্রমে ৯০ দশমিক ৩৯ শতাংশ, ৮ দশমিক ৫৪ শতাংশ, ০ দশমিক ৬২ শতাংশ, ০ দশমিক ৩১ শতাংশ ও ০ দশমিক ১৪ শতাংশ।

দেশে হিন্দুদের জনসংখ্যার হার কমা এবং মুসলিম জনসংখ্যার হার বাড়া নিয়ে একটি বিতর্ক তৈরী হয়। কিছুদিন আলোচনায় ছিল এটিও।

৪. সিলেটে আলেমদের ত্রাণ বিতরণ

চলতি বছরের জুনে দেশের সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা ও কুড়িগ্রামে আকস্মিক ও ভয়াবহ বন্যা দেখা দিলে বন্যার্ত মানুষের জন্য যারা কাজ করেছে তাদের ভেতর আলেমসমাজের ভূমিকা ছিল অগ্রগণ্য। সংকটের প্রথম দিন থেকে তাঁরা মাঠে থেকে কাজ করেছেন। সঙ্কটাপন্ন মানুষের পাশে আলেমদের দাঁড়ানোর বিষয়টি সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে। অন্যদিকে এবারের ত্রাণ কার্যক্রমে কথায় কথায় আলেম সমাজের সমালোচনা করা, তাদের চরমপন্থী হিসেবে উপস্থাপনকারী সেকুলারদের দেখা মেলে নি। এ নিয়েও ক্ষোভ জানিয়েছেন নেটিজেনরা।

এরমধ্যে আস সুন্নাহ ট্রাস্ট-এর উদ্যোগে সাড়ে ৬ কোটি টাকার ত্রাণ বিতরণ নজর কাড়ে দেশের আপামর জনতার। ত্রাণ বিতরণ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামি, খেলাফত মজলিশ, চরমোনাই পীরের ইসলামি আন্দোলন, ইসলামি ঐক্যজোট, পিসব। এছাড়াও বিভিন্ন সংগঠন, মাদরাসা, ব্যক্তি উদ্যোগে ত্রাণ বিতরণ করা হয়।

৫. ওয়াজ মাহফিলে জুতা নিক্ষেপ

কিশোরগঞ্জ-২ (কটিয়াদী-পাকুন্দিয়া) আসনে বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য মেজর (অব.) আক্তারুজ্জামান রঞ্জনকে ওয়াজ মাহফিলে জুতা নিক্ষেপের ঘটনাটি সামাজিক যোগযোগমাধ্যমে আলোচিত ছিল বেশ। ৩০ অক্টোবর কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে একটি ওয়াজ মাহফিলে মুফতি আরিফ বিন হাবীবকে আসম্মান করায় এ ঘটনা ঘটে।

মুফতী আরিফ বিন হাবীব পবিত্র কুরআন ও সহিহ্ হাদিসের প্রমাণ দিয়ে কিছু জাল হাদিস এবং বহুল প্রসিদ্ধ কিছু ভুল তথ্য নিয়ে গঠনমূলক বয়ান করেন মাহফিলে। বয়ান শেষে সাবেক সংসদ সদস্য আক্তারুজ্জামান রঞ্জন মাইক হাতে নিয়ে অসম্মানজনকভাবে এই বয়ানের বিষয়ে আপত্তি তোলেন। একপর্যায়ে উপস্থিত জনতা তার প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে জুতা নিক্ষেপ করা শুরু করেন।

তবে এ ঘটনায় পরে ক্ষমা চেয়েছেন আক্তারুজ্জামান রঞ্জন। ফেসবুক লাইভে এসে তিনি বলেন, ‘আমার কোনো বক্তব্য ও ভুল-ভ্রান্তি যদি আপনাদের মনোপীড়ার কারণ হয়ে থাকে, যে কারণে আপনারা কষ্ট পেয়ে আমাকে যে গালিগালাজ করেছেন—তার জন্য আমার কোনো অভিযোগ নাই। আপনাদের কথা আমি মাথা পেতে নিলাম। আমি যদি আপনাদের কষ্ট দিয়ে থাকি, আমার কথায় আপনারা যদি কষ্ট পেয়ে থাকেন, মনে আঘাত পেয়ে থাকেন, আমি আপনাদের সবার কাছে আন্তরিকভাবে ক্ষমা চাচ্ছি।’

৬. হেফাজতের উলামা সম্মেলন

১৭ ডিসেম্বর রাজধানীর কাজী বশির মিলনায়তনে হেফাজতের জাতীয় ওলামা মাশায়েখ সম্মেলনও ছিল আলোচনায়। সম্মেলন থেকে ৭ দফা দাবি জানানো হয়। ৭ দফার মধ্যে রয়েছে:

এক. কারাবন্দী হেফাজত নেতা-কর্মীদের মুক্তি দিতে হবে।
দুই. হেফাজতের নামে ২০১৩ সাল থেকে আজ পর্যন্ত হওয়া সব মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।
তিন. নবী সা.কে কটূক্তিকারীদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান চালু করতে হবে।
চার. কাদিয়ানিদের রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণা করতে হবে।
পাঁচ. জাতীয় শিক্ষানীতিতে ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে।
ছয়. জাতীয় শিক্ষা কমিশনে হাইয়াতুল উলিয়ার নেতৃবৃন্দের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।
সাত. আসন্ন ইজতেমায় দিল্লীর মাওলানা সাদ কান্ধলভিকে বাংলাদেশে আসার অনুমতি প্রদান থেকে সরকারকে বিরত থাকতে হবে।

এছাড়া হেফাজতে ইসলামের পরবর্তী কর্মসূচী বিষয়ে সম্মেলনে জানানো হয়, অনতিবিলম্বে হেফাজতের জেলা-উপজেলা কমিটি পূনর্গঠন করা হবে। জেলায় জেলায় শানে রিসালাত সম্মেলন করা হবে। তাছাড়া ঢাকায় জাতীয় শানে রিসালাত সম্মেলন করা হবে।

৭. হিন্দু থেকে মুসলিম তরুণী

বছরের শেষদিকে ময়মনসিংহে ধর্ম পরিবর্তন করে হিন্দু থেকে মুসলিম হওয়া ফাতেমা রহমানকে নিয়ে আলোচনা ছিল শীর্ষে।

ফাতেমা রহমান গত ৫ ডিসেম্বর ময়মনসিংহের চিফ জুডিশিয়াল মেজিস্ট্রেট আদালতে উপস্থিত হয়ে হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম গ্রহণ করেন। এফিডেভিটে তিনি নিজেকে প্রাপ্ত বয়স্কা উল্লেখ করে কোনো চাপ ছাড়াই নিজের ইচ্ছায় ধর্ম পরিবর্তনের সিদ্ধান্তের কথা জানান। এরপর ঘটনাটি ফাতেমা ওরফে অর্পার পরিবার জানলে তারা ক্ষিপ্ত হন এবং তার ধর্ম পালনে বাধা দেন। ৫ ডিসেম্বর রাতে জাতীয় জরুরি সেবা ‘৯৯৯’ নম্বর থেকে কল পেয়ে কোতয়ালি মডেল থানা পুলিশের একটি টিম রাতেই ফাতেমাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। এ ঘটনায় সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) ফাতেমা ওরফে অর্পাকে ময়মনসিংহের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় আদালতের বিজ্ঞ বিচারক তার জবানবন্দি নিতে তাকে সেফ হোমে রাখার আদেশ দেন। মামলার পুরো প্রক্রিয়াটিতে ময়মনসিংহের আলেমরা বেশ সক্রিয় ছিলেন।

৮. বেফাকের মহাপরিচালক নিয়োগ

বেফাকের মহাপরিচালক পদে মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভীর নিয়োগটিও ছিল আলোচনায়। তার নিয়োগে কওমি তরুণরা আশান্বিত হয়। ফেসবুকে অভিনন্দনের জোয়ার বয়ে যায়। কওমি তরুণদের পক্ষ থেকে তার কাছে স্মারকলিপিও দেয়া হয়।

১৬ অক্টোবর রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর ভাঙ্গাপ্রেসে বেফাকের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভীকে দেশের কওমি মাদরাসাভিত্তিক সর্ববৃহৎ শিক্ষা বোর্ড বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের মহাপরিচালক হিসেবে নিয়োগের সিদ্ধান্ত হয়। ৬ নভেম্বর থেকে তিনি অফিসে যোগদান করেন। এর আগে ২০২০ সালের ২৩ নভেম্বর বেফাকের মহাপরিচালকের পদ থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেন অধ্যাপক মাওলানা জোবায়ের আহমদ চৌধুরী। এরপর থেকে সহকারী মহাপরিচালক মাওলানা মুহাম্মদ জোবায়ের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করছিলেন।

৯. ঢাবিতে হিজাব নিষিদ্ধ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হিজাব-নিকাবে বাধা ইস্যুতে পুরো বছরই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছিল আলোচনায়। ১৪ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় সেমিস্টারের ভাইভা দিতে যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বাংলা ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের এক নারী শিক্ষার্থী। ভাইভা বোর্ডের সদস্যরা চেহারা দেখতে চাইলে পর্দা (নিকাব) করার কারণে ওই শিক্ষার্থী তাতে অসম্মতি জানায়। ফলে ওই শিক্ষার্থীকে ভাইভাতে অনুপস্থিত দেখায় ভাইভা বোর্ড। এবং একই কারণে আগের সেমিস্টারের ভাইভাতে উপস্থিত থেকেও অনুপস্থিত হয় ওই শিক্ষার্থী। পরে এক সংবাদ সম্মেলনে হিজাব পরার স্বাধীনতা চায় শিক্ষার্থীরা। সম্মেলনে প্রকাশিত এক জরিপে বলা হয়, হিজাব-নিকাবের কারণে শিক্ষক, কর্মচারী বা সহপাঠীর বিরূপ মন্তব্যের শিকার হয়েছেন ২১১ জনের মধ্যে ১৪১ জনই।

পত্রিকা এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ ব্যাপারে লেখালেখি করা হলে উল্টো ১৮.৯.২০২২ তারিখে মৌখিক এবং ৬.১২.২০২২ লিখিত নোটিশ দিয়ে মুখ খুলে পরীক্ষা দেয়াকে বাধ্যতামূলক করে দেয়া হয় ঢাবির বাংলা বিভাগে। পরে বিষয়টির প্রতিবাদ জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির কাছে স্মারকলিপি দেয় শিক্ষার্থীরা।

ফাতেহে এক প্রতিবেদনে ঢাবিতে হিজাববিদ্বেষের ভয়াল চিত্র উঠে আসে। তাতে বলা হয়, হিজাব-নিকাব নিয়ে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়তে হয় সমাজবিজ্ঞান অনুষদে। অনুষদের বাংলা বিভাগ, সংস্কৃত বিভাগে ছাত্রীরা হেনস্থা হয় সবচেয়ে বেশি। এছাড়াও লোক প্রশাসন বিভাগ, শিক্ষা ও গবেষণা বিভাগ, টুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগও রয়েছে এই তালিকায়। এমনকি ইসলামিক এবং আরবি বিভাগেও এমন ঘটনা ঘটে। ছাত্রীরা সবচে বেশি হেনস্থা হন এবং বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েন ভাইভা বোর্ডে। তারপর পরীক্ষার হলে। এছাড়া ক্লাসরুম এবং প্রেজেন্টেশনেও এমন পরিস্থিতিতে পড়তে হয়। তবে সবচে বেশি সমস্যায় পড়তে হয় ভাইবা বোর্ডে।

১০. কাবিননামায় ‘কুমারি’ শব্দ বাতিল

মুসলিম বিয়ের ক্ষেত্রে কাবিননামার ৫ নম্বর কলামে থাকা ‘কুমারি’ শব্দটি সংবিধান পরিপন্থি এবং তা বাতিল ঘোষণা করে গত ১৭ নভেম্বর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেন হাইকোর্ট। রায়ে বলা হয়েছে, ‘কাবিননামায় কুমারি শব্দ থাকা নারীর জন্য অপমানজনক, বৈষম্যমূলক, পক্ষপাতদুষ্ট এবং সংবিধান ও সিডও সনদের (বৈষম্য বিলোপ সনদ) পরিপন্থি’। এ কারণে ছয় মাসের মধ্যে কাবিননামার ফরম থেকে ‘কুমারি’ শব্দ বাদ দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সরকারকে নির্দেশ দেন উচ্চ আদালত। বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি খিজির আহমেদ চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় প্রকাশ করেন।

২০১৯ সালের ২৫ আগস্ট বিয়ের কাবিননামার ফরমের পাঁচ নম্বর কলামে কনে কুমারী কি না, এ শব্দ উঠিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। কুমারী শব্দের জায়গায় অবিবাহিত লিখতে বলা হয়। ওই সময় এ বিষয়ে রুলও জারি করেছিলেন আদালত। জারি করা ওই রুল নিষ্পত্তি করে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।

বেঞ্চের কনিষ্ঠ বিচারপতি খিজির আহমেদ চৌধুরী তার পর্যবেক্ষণে বলেছেন, মুসলিম বিবাহ ও তালাক রেজিস্ট্রেশন আইন ২০০৯ এর রুলসের অধীনে প্রণীত নিকাহনামায় কন্যার ক্ষেত্রে কুমারী কি না কলাম রাখা হয়েছে। কিন্তু একই ফর্মে পুরুষের ক্ষেত্রে এ ধরনের কোনো কলাম নেই, যা সংবিধানের ২৭, ২৮ ও ৩১ অনুচ্ছেদের পরিপন্থি। মুসলিম বিবাহ একটি চুক্তি ও পারস্পরিক সম্মতির মাধ্যমে হয়। এই বিবাহের ক্ষেত্রে পূর্ববর্তী সময়ে রেজিস্ট্রির কোনো বিধান ছিল না। জটিলতা এড়ানোর জন্য ১৯৭৪ সালের মুসলিম বিবাহ ও তালাক রেজিস্ট্রেশন আইনে বিবাহ ও তালাক রেজিস্ট্রির বিধান রাখা হয়েছে। সুতরাং সার্বিক সমন্বয়ের জন্য বর ও কনের সার্বিক অবস্থা সমন্বিতভাবে হওয়া উচিত। এ কারণে কন্যা কুমারী কি না, এই শব্দ বাদ দিয়ে বাকি বর্ণনা বলবৎ থাকবে।

 

The post বাইশের ধর্মীয় ইস্যু: আলোচিত যত ঘটনা appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/85080-2/

Tuesday, December 27, 2022

মেট্রোরেল উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

ফাতেহ ডেস্ক:

রাজধানীবাসীর বহুল প্রতীক্ষিত মেট্রোরেল উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার সকালে দেশের প্রথম মেট্রোরেল পরিষেবা উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী।

সকাল ১১টায় উত্তরার দিয়াবাড়িতে বর্ণাঢ্য উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মেট্রোরেল কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়।

উদ্বোধনের পর রুটের মধ্যবর্তী স্টেশনে কোনো স্টপেজ ছাড়াই উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত চলবে মেট্রোরেল। পরদিন (বৃহস্পতিবার) থেকে যাত্রীরা মেট্রোরেলে যাতায়াত করতে পারবেন।
প্রাথমিকভাবে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ছয়টি বগিবিশিষ্ট ১০ সেট ট্রেন চলাচল করবে। পরে চলাচলের সময় বাড়ানো হবে এবং চাহিদা অনুযায়ী ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানো হবে।

সম্পূর্ণভাবে মেট্রোরেল চলাচল শুরু হলে প্রতি সাড়ে তিন মিনিট অন্তর একটি ট্রেন চলবে। প্রতিটি স্টেশনে, যাত্রীদের ওঠা ও নামা সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত ট্রেনটি অপেক্ষা করবে। প্রতিটি ট্রেন ২,৩০০ জন যাত্রী নিয়ে ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১১০ কিলোমিটার গতিতে চলতে পারে।

The post মেট্রোরেল উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%ae%e0%a7%87%e0%a6%9f%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a7%8b%e0%a6%b0%e0%a7%87%e0%a6%b2-%e0%a6%89%e0%a6%a6%e0%a7%8d%e0%a6%ac%e0%a7%8b%e0%a6%a7%e0%a6%a8-%e0%a6%95%e0%a6%b0%e0%a6%b2%e0%a7%87%e0%a6%a8/

বাইশে হারালাম যাদের

মুনশী নাঈম:

বিদায় নিতে যাচ্ছে আরও একটি বছর। নতুন সম্ভাবনা নিয়ে আগত ২০২৩। তবে যদি একটু ফিরে তাকাই পেছনে, ২০২২-এ অনেক বিদগ্ধ আলেম আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। মাউতুল আলিম মউতুল আলম–একজন আলেমের মৃত্যু মানে একটি পৃথিবীর মৃত্যু। সে হিসেবে তাদের হারানো আমাদের জন্য জন্য অপূরণীয় ক্ষতি।

বছরের শেষদিকে এলেই আমাদের প্রাপ্তির সঙ্গে হারানোর হিসাব কষতে হয়। চোখের জলে লিখতে হয়, কাকে কাকে হারালাম। নতুন বছরে নতুন প্রত্যয় নিতে প্রাপ্তির সঙ্গে হারানোর হিসাব করাটাও বোধহয় দরকারি। তাই যাদের হারিয়েছি বাইশে, তাদের সংক্ষিপ্ত পরিচয় তুলে ধরছি।

খতিব মাওলানা সালাহউদ্দিন

৩ ফেব্রুয়ারি ইন্তেকাল করেন জাতীয় মসজিদের বায়তুল মোকাররম খতিব অধ্যাপক মাওলানা মুহাম্মদ সালাহউদ্দিন। তিনি ঢাকা আলিয়া মাদরাসার ৪৪তম অধ্যক্ষ ছিলেন। ১৯৯০ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত তিনি এই পদে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া তিনি রাজধানীর মহাখালীর গাউসুল আজম মসজিদের খতিবের দায়িত্বও পালন করেছেন। ২০০৯ সালের ৫ জানুয়ারি ধর্ম মন্ত্রণালয়ের এক আদেশে ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ মাওলানা সালাহউদ্দিনকে বায়তুল মোকাররমের খতিব নিয়োগ দেয়।

মাওলানা মুস্তাফিজ

১৯ ফেব্রুয়ারি ইন্তেকাল করেন ময়মনসিংহের প্রখ্যাত আলেম মাওলানা মুস্তাফিজুর রহমান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭০ বছর। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ফুসফুসের ক্যান্সারে ভুগছিলেন। ময়মনসিংহের জামিয়া ইসলামিয়ার সাবেক মুহাদ্দিস, ময়মনসিংহ গাঙ্গিনাপার মসজিদের ইমাম ও খতিব এবং সোহাগীর জামিয়া দারুস সালাম মাদরাসার সাবেক মুহতামিম ছিলেন।

আবদুল বারী ধর্মপুরী

৬ এপ্রিল ইন্তেকাল করেন মৌলভীবাজার জেলার আলেমদের শীর্ষ মুরুব্বি, জেলা ওলামা পরিষদের সভাপতি ও সর্বজন শ্রদ্ধেয় শায়খুল হাদিস আল্লামা আব্দুল বারী (৮৭) ধর্মপুরী। মৃত্যুর সময় তিনি মৃত্যুকালে তিনি ৮ মেয়ে ও ৩ ছেলে রেখে গেছেন।

আল্লামা আবদুল হালিম বোখারী

২১ জুন আল্লামা মুফতি আবদুল হালিম বোখারী (৭৭) ইন্তেকাল করেন। তিনি ছিলেন দেশের দ্বিতীয় শীর্ষ ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আল জামিয়া আল ইসলামিয়া পটিয়ার মহাপরিচালক, সম্মিলিত কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড আঞ্জুমানে ইত্তেহাদুল মাদারিস বাংলাদেশের মহাসচিব। এছাড়াও তিনি শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের শরীয়াহ সুপারভাইজারি কমিটির সভাপতি, ইসলামি সম্মেলন সংস্থা বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ তাহফিজুল কুরআন সংস্থার সভাপতি এবং জামিয়া পটিয়ার মুখপাত্র মাসিক আত তাওহীদের প্রধান সম্পাদক ছিলেন।

শায়েখ হাফিযুল্লাহ

৯ জুলাই ইন্তেকাল করেন নরসিংদীর জামিয়া ইসলামিয়া আরাবিয়া মির্জানগর মাদরাসার মুহতামিম, শত শত হাফেজে কুরআন গড়ার কারিগর শায়েখ হাফিযুল্লাহ।

মাওলানা ফজলুর রহমান

২৭ জুলাই ইন্তেকাল করেন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা ইমাম সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, বদিকোনা জামে মসজিদের খতিব মাওলানা ফজলুর রহমান। তিনি ছিলেন খেলাফত মজলিস কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সাবেক সভাপতি। এছাড়াও তিনি পাড়ুয়া ফুরকানিয়া হাফিজিয়া মাদরাসার সভাপতি ছিলেন।

মাওলানা মো. ফখরুদ্দীন

২৪ আগস্ট ইন্তেকাল করেন মানিকগঞ্জের বর্ষীয়ান আলেমে দ্বীন মাওলানা মো. ফখরুদ্দীন। তিনি তার জীবনের উল্লেখযোগ্য সময় ঘিওর বাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের পেশ ইমাম ও খতিব ছিলেন। এ ছাড়া কুস্তা জামেয়া আশরাফুল উলুম মাদ্রাসা, হিজুলিয়া হিলফুল ফুজুল মাদ্রাসা ও ঘিওর উম্মে সালমা মহিলা মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন।

মাওলানা সামছুল হক কাদিরপুরী

২৬ আগস্ট ইন্তেকাল করেন নোয়াখালী পন্ডিতপুর দারুল উলূম ছিদ্দিকিয়া মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ও ফেনী জেলার সোনাগাজী থানার অন্তর্গত দারুল উলুম আল-হোসাইনিয়া ওলামা বাজার মাদরাসার সাবেক শিক্ষক, মাওলানা সামছুল হক কাদিরপুরী। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৮৭ বছর। ব্যক্তিজীবনে ৬ ছেলে ও ২ মেয়ের জনক ছিলেন মাওলানা কাদিরপুরী।

মুফতী ইবরাহীম খান

৬ সেপ্টেম্বর ইন্তেকাল করেন চট্টগ্রাম মেখল হামিউচ্ছুন্নাহ মাদরাসার প্রধান মুফতী, মুফতিয়ে আজম ফয়জুল্লাহ রহ.-এর একান্ত শিষ্য মুফতী ইবরাহীম খান। তিনি ছিলেন একজন প্রবীণ আলেম। যিনি মাসলাকে মেখলের অন্যতম ধারক বাহক ছিলেন। সুন্নাহভিত্তিক জীবন যাপন করা এবং বিদআতের বিরুদ্ধে তিনি ছিলেন সদা তৎপর। তিনি বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

মাওলানা তাজুল ইসলাম

১১ সেপ্টেম্বর ইন্তেকাল করেন টেকনাফের ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জামিয়া ইমদাদিয়া লেঙ্গুরবিল বড় মাদ্রাসার প্রবীণ শিক্ষক মাওলানা তাজুল ইসলাম। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর । তিনি ২ ছেলে, ৬ মেয়ে রেখে গেছেন । মৃত্যুর আগ পর্যন্ত টেকনাফের ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জামিয়া ইমদাদিয়া লেঙ্গুরবিল বড় মাদ্রাসাসহ প্রায় চল্লিশ বছর যাবৎ মাদ্রাসার খেদমতে নিয়োজিত ছিলেন ৷

মাওলানা নোমান হাবিবী

১১ নভেম্বর ইন্তেকাল করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জামিয়া ইউনুসিয়ার সিনিয়র মুহাদ্দিস, খ্যতিমান ওয়ায়েজ ও আরবি ভাষাবিদ মাওলানা নোমান হাবিবী। মৃত্যুর সময় তার বয়স হয়েছে ৫২ বছর। তিনি স্ত্রী ও দুই ছেলে দুই মেয়ে রেখে যান।

দাদা হুজুর

১২ নভেম্বর ইন্তেকাল করেন যাত্রাবাড়ি মাদরাসার প্রধান মুফতি মুফতি সাদেকুল ইসলাম। যাত্রাবাড়ী মাদরাসায় যত বিজ্ঞ আলেম— তাদের প্রায় সবাই দাদা হুজুরের ছাত্র। যাত্রাবাড়ীর মুরব্বি উস্তাদরাও দাদা হুজুরের ছাত্র। এজন্যই মূলত তিনি ‘দাদা হুজুর’ নামে পরিচিত। তিনি ছিলেন পাকিস্তানের মুফতিয়ে আজম, দারুল উলুম দেওবন্দের সাবেক প্রধান মুফতি মুফতি শফী রহ.-এর বিশিষ্ট খাদেম।

মুফতি নূরুল আমীন

১২ নভেম্বর, শনিবার রাজধানীর আজগর আলী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তিকাল করেন আল-হাইআতুল উলয়া লিল-জামি‘আতিল কওমিয়া বাংলাদেশ এর অন্যতম সদস্য, বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ এর সহকারী মহাসচিব, ফরিদাবাদ মাদরাসার নায়েবে মুহতামিম হযরত মাওলানা মুফতি নূরুল আমীন সাহেব। মৃত্যুকালে তার বয়স ছিল ৬৫ বছর।

হাজী সাহেব হুজুর

২২ নভেম্বর মঙ্গলবার রাত ১২.২০ মিনিটে রাজধানী ঢাকার গেন্ডারিয়াস্থ আসগর আলী হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন জামিয়া কুরআনিয়া আরাবিয়া লালবাগ মাদরাসার সদরে শুরা ও শায়খুল হাদিস মাওলানা হাজী হাবীবুর রহমান। মাদরাসায় তিনি হাজী সাহেব হুজুর বলে খ্যাত ছিলেন। লালবাগ মাদরাসায় তার শিক্ষকতার বয়স অর্ধ শতাব্দী।

আত্মীয়তার সম্পর্কে তিনি ছিলেন হযরত হাফিজ্জী হুজুর রহ-এর নাতনি-জামাই। তার তিন সন্তান এবং এক মেয়ে।

মাওলানা মুহাম্মদ হোসাইন

মাওলানা মুহাম্মদ হোসাইন ইন্তেকাল করেন ২৮ নভেম্বর। তিনি ছিলেন তাবলীগ জামাতের কাকরাইল শুরার প্রবীণ মুরুব্বী । রাজধানীর আজগর আলী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন।

আলবিদা

এই চলে যাওয়ার ধারা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে। একজন আলেম চলে যাওয়া মানে মাথার ওপর থেকে একখণ্ড শীতল মেঘ সরে যাওয়া। একটি ঝলমলে প্রদীপ নিভে যাওয়া। এক এক করে বাংলাদেশ হারাচ্ছে তার ধর্মীয় অভিভাবক। আলো ও ছায়ার বটবৃক্ষ। শূন্যতা গ্রাস করছে, হাহাকার বাড়ছে। উল্লেখিত আলেম ছাড়া আরও অনেক আলেম, মসজিদের ইমাম, মোয়াজ্জিনকে আমরা হারিয়েছি।

আমাদেরই প্রয়োজনে-কল্যানে তাদের বেঁচে থাকাটা খুব দরকার। দোয়ায় প্রার্থনায় তাদের বেঁচে থাকার মিনতি হয়ে উঠুক আমাদের কান্না, আমাদের অশ্রু। যারা চলে গেছে আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে, তাদের মাগফেরাতের জন্য আমাদের হাত উঠুক মহামহিমের দরবারে। তার দরবার হতে, কেউ ফেরে না খালি হাতে।

The post বাইশে হারালাম যাদের appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/85066-2/

জরিপ: বিশ্বকাপ ফিলিস্তিনিদের ন্যায়বিচারের আস্থা বাড়িয়েছে

মুনশী নাঈম:

কাতার বিশ্বকাপে ফিলিস্তিন ইস্যুটি বেশ শক্তিশালী সমর্থন এবং স্বীকৃতি পেয়েছে। যার প্রমাণ স্টেডিয়ামে স্টেডিয়ামে ফিলিস্তিনের পক্ষে জয়ধ্বনি। প্রতিটি ম্যাচের প্রতিটি সেকেন্ড-মিনিটে লাখো-কোটি মানুষের কণ্ঠে উচ্চারিত হয়েছে একটি নাম, ‘ফিলিস্তিন! ফিলিস্তিন’। স্বাধীনতার সংগ্রাম, বর্ণবাদবিরোধিতা ও উপনিবেশবাদের নিগড় থেকে মুক্তির লড়াইয়ে একাকার যে ভূখণ্ডের নাম–তারই পতাকা জড়িয়ে বিশ্বকাপের গ্যালারিতে হাজির হয়েছেন ফুটবল ভক্ত-সমর্থকরা। ম্যাচ যে দেশেরই হোক, গ্যালারিতে ভালোভাবে চোখ রাখলেই নজরে পড়েছে ফিলিস্তিনের পতাকা, পতাকার রঙের আর্মব্যান্ড ও ব্রেসলেট। কান পাতলেই শোনা গেছে ‘ফিলিস্তিন মুক্ত করো’ ধবনি। শুধু স্টেডিয়ামেই নয়, কাতারের রাস্তায় রাস্তায় ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ফিলিস্তিনেরই জয়ধ্বনি। যা প্রমাণ করে, আরব শাসকরা যতই অবহেলা করুন বা ইসরাইলি কর্তৃপক্ষের ঘনিষ্ঠতা বাড়াক না কেন, আরব জনগণ এখনও ফিলিস্তিনের পাশেই আছে।

ফিলিস্তিনি সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড সার্ভে স্টাডিজের একটি জরিপের ফলাফলে বলা হয়েছে, এই বিশ্বকাপের পর আরব জনগণের প্রতি আস্থা ফিরে পেয়েছে ফিলিস্তিনিরা। ইজরাইলের সঙ্গে আরব দেশগুলোর সম্পর্ক স্বাভাবিক করার মিছিল দেখে হতাশ হয়েছিল তারা। ৬৬ শতাংশ ফিলিস্তিনি এখন মনে করেন, তাদের আশা পুনরুদ্ধার হয়েছে। ২১ শতাংশ শতাংশ ফিলিস্তিনি মনে করেন, তাদের আশা কিছুটা পুনরুদ্ধার হয়েছে। ৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি মনে করেন, এখনও তাদের আশা ফিরে আসেনি। ৪ শতাংশ ফিলিস্তিনি বলেন, এখনও আরব বিশ্বের প্রতি তাদের আস্থা নেই।

পশ্চিম তীর এবং গাজা উপত্যকার ১২০টি আবাসিক এলাকায় এই সমীক্ষা চালানো হয়। ৭-১০ ডিসেম্বরে এই জরিপ পরিচালনা করা হয়। এতে অংশ নেয় ১২০০ ফিলিস্তিনি।

জরিপের আয়োজকরা বলেছেন, কাতারে ফিফা বিশ্বকাপের ম্যাচগুলোতে ফিলিস্তিনের ব্যাপক সমর্থনে ফিলিস্তিনি জনগণ মনে করছে, তারা ন্যায়বিচার পাবে। তারা একা নয়। তারা সমস্ত সম্ভাব্য উপায়ে দখলদারিত্বের অবসান চায়। এটা তাদের অধিকার।

সমীক্ষায় কাতার নিয়ে একটি প্রশ্ন ছিল। ৬৮ শতাংশ ফিলিস্তিনি জনসাধারণ বিশ্বাস করেন, কাতারের আন্তর্জাতিক অবস্থান আগের তুলনায় অনেক উন্নত হয়েছে। ১৭ শতাংশ ফিলিস্তিনি জনসাধারণ বিশ্বাস করেন, কিছুটা উন্নত হয়েছে। ৮ শতাংশ ফিলিস্তিনি জনসাধারণ মনে করেন, বিশ্বকাপের আগে যেমন ছিল তেমনই রয়েছে।

সশস্ত্র প্রতিরোধের সমর্থন

জরিপের ফলাফলে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনি জনসাধারণ দখলদারিত্বের অবসান ঘটাতে সশস্ত্র পদক্ষেপের কার্যকারিতায় আরও বেশি বিশ্বাসী বলে মনে হচ্ছে। তারা দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান চায় না এখন। ৭২ শতাংশ ফিলিস্তিনি জনগণ আল-আকসা শহীদ ব্রিগেডের সামরিক শাখা লায়ন্স ডেন গ্রুপকে সমর্থন করে। ২২ শতাংশ ফিলিস্তিনি এদের বিরুদ্ধে। ৮৭ শতাংশ মনে করেন, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের এই সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যদের ইসরায়েলের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া থেকে বিরত রাখতে বা তাদের সুরক্ষা প্রদান করার জন্য তাদের গ্রেপ্তার করার কোন অধিকার নেই। ১০ শতাংশ ফিলিস্তিনি মনে করেন, এই গোষ্ঠীর সদস্যদের গ্রেপ্তার বা নিরস্ত্র করার অধিকার ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের রয়েছে।

৫৯ শতাংশ ফিলিস্তিনি মনে করেন, সশস্ত্র সংস্থাগুলো পশ্চিম তীরের অন্যান্য অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়বে। ১৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি মনে করেন, ইসরাইল তাদের সদস্যদের গ্রেপ্তার বা হত্যা করতে সফল হবে।

দখলদারিত্বের অবসান এবং একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সর্বোত্তম উপায় সম্পর্কে করা এক প্রশ্নে ৫১ শতাংশ সশস্ত্র পদক্ষেপকে সমর্থন করে। ২১ শতাংশ আলোচনায় বিশ্বাসী। ২৩ শতাংশ শান্তিপূর্ণ জনপ্রিয় প্রতিরোধে বিশ্বাসী। ৬১ শতাংশ ফিলিস্তিনি মনে করেন, নতুন ইজরাইলি সরকার আরও চরম এবং আগ্রাসী হয়ে উঠবে। ৫৮ শতাংশ ফিলিস্তিনি মনে করেন, ইজরাইলের পরবর্তী সরকার আল-আকসায় স্থিতাবস্থা বজায় রাখবে না। সেখানে ইহুদিদের প্রার্থনা করার অনুমতি দিবে। ৬৪ শতাংশ ফিলিস্তিনি মনে করেন, শেখ জাররাহ পাড়া থেকে ইসরায়েলি সরকার ফিলিস্তিনি পরিবারগুলোকে বহিষ্কার করবে। ঠিক একই পরিমাণে জনগণ বিশ্বাস করে, জেরুজালেমের আশেপাশে বসবাসকারী ফিলিস্তিনি বেদুইনদের নির্বাসিত করবে। ৬৯ শতাংশ ফিলিস্তিনি মনে করেন, জর্ডান উপত্যকাকে ইসরায়েলের সাথে সংযুক্ত করবে।

অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি

সমীক্ষায় ফিলিস্তিনের নির্বাচন নিয়েও প্রশ্ন ছিল। তাতে দেখা গেছে, ৬৯ শতাংশ ফিলিস্তিনি নতুন করে আইনসভা এবং রাষ্ট্রপতি নির্বাচন সমর্থন করে। ৬৩ শতাংশ ফিলিস্তিনি মনে করেন, এই ধরনের নির্বাচন শীঘ্রই অনুষ্ঠিত হবে না।

রাষ্ট্রপতি মাহমুদ আব্বাসের কর্মক্ষমতা নিয়ে জন-অসন্তোষ বেড়েছে ৭৩ শতাংশ। ২৩ শতাংশ প্রকাশ করেছে সন্তুষ্টি। ৭৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বলেন, তারা রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ চান। ২০ শতাংশ তার পদত্যাগ চান না। যদি আজ নতুন সংসদীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, তাতে অংশগ্রহণ করবে ৬৫ শতাংশ জনগণ। এতে হামাসের রয়েছে ৩৪ শতাংশ, ফাতাহের ৩৪ শতাংশ। এবং অন্যান্য তালিকা থেকে ১০ শতাংশ।

২৮ শতাংশ ফিলিস্তিনি মনে করেন, হামাস আজ ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতিনিধিত্ব এবং নেতৃত্ব দেওয়ার সবচেয়ে যোগ্য। ২৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি মনে করেন, রাষ্ট্রপতি আব্বাসের নেতৃত্বে ফাতাহ আন্দোলন সবচে সবচেয়ে বেশি যোগ্য। ৪০ শতাংশ ফিলিস্তিনি মনে করেন, এ দুটির কোনোটিই যোগ্য নয়।

ফিলিস্তিনিরা বহু বছর ধরে যে চ্যানেলগুলো দেখে আসছে, তার তালিকায় সবার আগে রয়েছে আল-জাজিরা। গত তিন মাসে ফিলিস্তিনিরা সবচেয়ে বেশি কোন টিভি দেখেছে, এমন এক প্রশ্নে ৩১ শতাংশ বলেছে তারা আল-জাজিরা টিভি দেখে। এটাই সর্বোচ্চ। ১৩ শতাংশ দেখে প্যালেস্টাইন টিভি। আল-আকসা টিভি দেখে ১১ শতাংশ। প্যালেস্টাইন টুডে দেখে ৯ শতাংশ। মা’ন ৬ শতাংশ, আল-আরাবিয়া ৬ শতাংশ এবং আল-মায়াদিন ২ শতাংশ ফিলিস্তিনি দেখে।

সূত্র : আল জাজিরা

The post জরিপ: বিশ্বকাপ ফিলিস্তিনিদের ন্যায়বিচারের আস্থা বাড়িয়েছে appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%9c%e0%a6%b0%e0%a6%bf%e0%a6%aa-%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%b6%e0%a7%8d%e0%a6%ac%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%aa-%e0%a6%ab%e0%a6%bf%e0%a6%b2%e0%a6%bf%e0%a6%b8%e0%a7%8d%e0%a6%a4%e0%a6%bf%e0%a6%a8/

তারল্যঘাটতিতে ইসলামী ব্যাংকসহ ৫ ব্যাংক, গুনছে জরিমানা

ফাতেহ ডেস্ক:

ইসলামি ধারার পাঁচ ব্যাংক তারল্যঘাটতিতে পড়েছে। এসব ব্যাংক আমানতের বিপরীতে চাহিদানুযায়ী প্রতিদিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকে নগদ জমা (সিআরআর) রাখতে পারছে না। ফলে তাদের জরিমানা গুনতে হচ্ছে। তবে গ্রাহকদের টাকা জমা ও উত্তোলনে কোনো সমস্যা হচ্ছে না।

এখন ইসলামি ধারার ব্যাংকগুলোকে দৈনিক ভিত্তিতে আমানতের ন্যূনতম সাড়ে ৩ শতাংশ ও দ্বিসাপ্তাহিক ভিত্তিতে ৪ শতাংশ অর্থ কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা রাখতে হয়। চাহিদা অনুযায়ী জমা রাখতে ব্যর্থ হলে গুনতে হয় জরিমানা।

গত সপ্তাহের বেশির ভাগ দিনই এই পাঁচ ব্যাংক চাহিদা অনুযায়ী সিআরআর রাখতে পারেনি। বৃহস্পতিবার ইসলামী ব্যাংকের ৫ হাজার ৫০ কোটি টাকা, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ১ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা, ইউনিয়ন ব্যাংকের ৫৪১ কোটি টাকা, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের ৩০৫ কোটি টাকা ও গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের ৮২ কোটি টাকা সিআরআর ঘাটতি ছিল।

ঘাটতিতে পড়া এই পাঁচ ব্যাংক হলো ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড (এসআইবিএল), ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ও ইউনিয়ন ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংক চলতি মাসের মাঝামাঝি থেকে এই ৫ ব্যাংকের ১০ কোটি টাকার বেশি ঋণ বিতরণ ও আদায়ের তথ্য সংগ্রহ করা শুরু করেছে, পাশাপাশি ইসলামী ব্যাংক ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকে পর্যবেক্ষক বসিয়েছে।

এর মধ্যে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ দেশের সবচেয়ে বড় ব্যাংক। এটি দেশে ইসলামি ধারার ব্যাংকগুলোর অন্যতম অর্থ জোগানদাতাও। তাই এটি তারল্যসংকটে পড়ায় অন্য ইসলামি ব্যাংকগুলোয় প্রভাব পড়েছে। এসব ব্যাংককে প্রায় আট হাজার কোটি টাকা জমা ও ধার দিয়েছে ইসলামী ব্যাংক, যা ফেরত পাচ্ছে না। এতে দেশের বৃহত্তম ব্যাংকটির সংকট প্রকট হচ্ছে।

The post তারল্যঘাটতিতে ইসলামী ব্যাংকসহ ৫ ব্যাংক, গুনছে জরিমানা appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%a4%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a6%b2%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%98%e0%a6%be%e0%a6%9f%e0%a6%a4%e0%a6%bf%e0%a6%a4%e0%a7%87-%e0%a6%87%e0%a6%b8%e0%a6%b2%e0%a6%be%e0%a6%ae%e0%a7%80-%e0%a6%ac%e0%a7%8d%e0%a6%af/

মেট্রোরেলে শিক্ষার্থীদের হাফ ভাড়া থাকবে না: কাদের

ফাতেহ ডেস্ক:

ঢাকায় শিক্ষার্থীদের জন্য বাসে হাফ পাস থাকলেও মেট্রোরেলে কোনো হাফ ভাড়া থাকবে না বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, আগামীকাল বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মেট্রোরেল উদ্বোধন করবেন। আগারগাঁও থেকে দিয়াবাড়ী পর্যন্ত চলবে ট্রেন। মাঝের কোনো স্টেশনে আগামী তিনমাস যাত্রী ওঠানামা করানো হবে না।

মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁও মেট্রোরেল স্টেশনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, মেট্রোরেলে শিক্ষার্থীদের কোনো হাফ ভাড়া থাকবে না। যারা র‌্যাপিড পাস কিনবেন তারা ১০ শতাংশ ছাড় পাবেন। তিন ফুটের কম উচ্চতার শিশুরা বাবা-মায়ের সঙ্গে ভ্রমণ করলে ভাড়া ফ্রি।

বর্তমান বাস্তবতায় আধুনিক বিশ্বের সঙ্গে তুলনা করলে ঢাকায় মেট্রোরেলের ভাড়া বেশি না বলেও জানান সড়ক পরিবহন মন্ত্রী।

The post মেট্রোরেলে শিক্ষার্থীদের হাফ ভাড়া থাকবে না: কাদের appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%ae%e0%a7%87%e0%a6%9f%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a7%8b%e0%a6%b0%e0%a7%87%e0%a6%b2%e0%a7%87-%e0%a6%b6%e0%a6%bf%e0%a6%95%e0%a7%8d%e0%a6%b7%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%a5%e0%a7%80%e0%a6%a6%e0%a7%87/

Monday, December 26, 2022

সালতামাামি: ফিলিস্তিনিদের শাহাদাত ও প্রতিরোধের বছর ২০২২

মুনশী নাঈম:

গাজার জামিল নাজম (৪ বছর) এবং আলা আবদুল্লাহ কাদ্দুম (৫ বছর), পশ্চিম তীরের রায়ান ইয়াসির সালমান (৭ বছর) এবং মাহমুদ সামুদি (১২ বছর)। এই শিশুদের ছাড়াই ফিলিস্তিন নতুন একটি বছরে প্রবেশ করবে। শুধু এই চারজনই নয়, এই তালিকায় থাকবে ফিলিস্তিনে ইহুদি দখলদারিত্বের ছুরি এবং বন্দুকের আঘাতে প্রাণ হারানো আরও অনেক শিশু। ইজরাইলি আর্মি রেডিওর ভাষ্যমতে, ২০০৫ সালের পর ইহুদি দখলদারদের হাতে সবচে বেশি ফিলিস্তিনি শহীদ হয়েছে এ বছর।

ফিলিস্তিন, ইজরাইল এবং জাতিসংঘের সূত্র থেকে ২০২২ সালের একটি পরিসংখ্যান তুরে ধরা হলো।

শহীদ, আহত ও বন্দী

২০২২ সালে ফিলিস্তিনে ২৩০ জন শহীদ হয়। তারমধ্যে পশ্চিম তীরে ১৭১ জন। গাজায় ৫৩ জন। এদের বেশিরভাগই আগস্টে ইসরায়েলি আগ্রাসনে শহীদ হয়। ৬ জন রয়েছে অন্যান্য। ২০০৫ সালে জাতিসংঘ ফিলিস্তিনে নিহতের রেকর্ড রাখতে শুরু করে। রেকর্ড শুরু করার পর সবচেয়ে বেশি শহীদ হয়েছে ২০২২ সালে।

এ বছর ইসরায়েলি দখলদার সেনাবাহিনীর সাথে সংঘর্ষে বা ফিলিস্তিনি এলাকায় তাদের অনুপ্রবেশের সময় প্রতিরোধে ৯৩৩৫ জন ফিলিস্তিনি আহত হয়েছে। ইজরাইল এ বছর গ্রেফতার করেছে ৬৫০০ ফিলিস্তিনি। এর মধ্যে প্রায় ৪৭০০ জন এখনও ইসরায়েলি কারাগারে রয়েছে।

গুঁড়িয়ে দেয়া, বসতি আক্রমণ, ক্ষয়ক্ষতি

জেরুজালেমের পূর্বাঞ্চলসহ পশ্চিম তীরে দখলদাররা ৮৩৩টি ফিলিস্তিনি ভবন গুঁড়িয়ে দিয়েছে। দখলদাররা আক্রমণ করেছে ৭৯৩টি। এরমধ্যে ৫৮২টি আক্রমণেই ফিলিস্তিনি সম্পত্তির ক্ষতি হয়েছে। ২১১টি আক্রমণে ফিলিস্তিনিরা আহত হয়েছে। দখলদাররা ১৩১৩০টি জলপাই গাছ ধ্বংস বা উপড়ে ফেলেছে।

ফিলিস্তিনিদের প্রতিরোধ

স্থানীয় ফ্রিডম নিউজ সংস্থার পরিসংখ্যান অনুসারে, প্রায় ৭২০০ ফিলিস্তিনি প্রতিরোধকর্ম সংগঠিত হয়েছে। এরমধ্যে ৪১৩ টি গুলিবর্ষণের ঘটনা রয়েছে। বিশেষ করে রিমোট বোমা হামলাও করেছে তারা। মার্চের শেষে এবং এপ্রিলের শুরুতে ডিজেনগফ স্ট্রিট এবং বনেই ব্র্যাক অপারেশনের মতো ইসরায়েলিদের মধ্যে ঢুকে ফিলিস্তিনি গেরিলাদের দ্বারা পরিচালিত আক্রমণও রয়েছে। ।

ইসরায়েলি নিহত ও আহত

পশ্চিম তীরে এবং গ্রিন লাইনের ভিতরে কমান্ডো অভিযান এবং সশস্ত্র হামলা সহ ৩১ জন ইসরায়েলি নিহত এবং প্রায় ৫০০ জন আহত হয়েছে। সংখ্যাটি ২০১৫ সালের পর সর্বোচ্চ সংখ্যা।

ফিলিস্তিনিদের প্রতিরোধ অভিযান ব্যর্থ করার জন্য নিরাপত্তা সংস্থা এবং ইসরায়েলি সেনা বাহিনীর পরিচালিত অভিযানের সংখা ৪৫০টি। এরমধ্যে বিস্ফোরক ডিভাইসের আক্রমণ রয়েছে ৩৬টি। ৩০০ এর অধিক রয়েছে গুলিবর্ষণের ঘটনা। এছাড়াও রয়েছে অসংখ্য অপহরণ প্রচেষ্টা এবং ছুরিকাঘাত।

বিশেষ প্রতিরোধের অপারেশন

২২ মার্চ: দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর বের্শেবাতে সংঘর্ষ এবং ছুরিকাঘাতে ৪ ইসরায়েলি নিহত এবং ৩ জন আহত হয়।

২৭ মার্চ: হাদেরা শহরে উম আল-ফাহমের দুই সশস্ত্র ফিলিস্তিনিদের হামলায় দুই ইসরায়েলি সেনা নিহত এবং ১০ জন আহত হয়।

২৯ মার্চ: তেল আবিবের কাছে বনেই ব্রাক এলাকায় জেনিনের একজন ফিলিস্তিনির চালানো হামলায় ৫ ইসরায়েলি নিহত এবং ২ জন আহত হয়।

৭ এপ্রিল: তেল আবিবের ডিজেনগফ স্ট্রিটে জেনিন শরণার্থী শিবির থেকে একজন কমান্ডোর সশস্ত্র হামলায় ৩ ইসরায়েলি নিহত এবং ১০ জনেরও বেশি আহত হয়।

৫মে: অভ্যন্তরীণ অংশে লোদ শহরের কাছে এলাদ এলাকায় জেনিনের দুই ফিলিস্তিনির হামলায় ৩ ইসরায়েলি নিহত এবং ৪ জন আহত হয়।

১৪ সেপ্টেম্বর: আল-জালামা চেকপয়েন্টে সশস্ত্র সংঘর্ষে একজন ইসরায়েলি অফিসার নিহত হয় এবং জেনিনের দুই প্রতিরোধ যোদ্ধা নিহত হয়।

৯ অক্টোবর: জেরুজালেমের পূর্বে শুয়াফাত চেকপয়েন্টে উদয় আল-তামিমির গুলিতে একজন ইসরায়েলি মহিলা সৈন্য নিহত এবং ৫ সৈন্য আহত হয়।

১১ অক্টোবর: নাবলুসের উত্তর-পশ্চিমে শাভেহ শোমরন বসতির কাছে এক ফিলিস্তিনির গুলিতে একজন ইসরায়েলি সৈন্য নিহত হয়।

২৯ অক্টোবর: কিরয়াত আরবা বসতিতে হেবরনের একজন কমান্ডোর সশস্ত্র অভিযানে একজন বসতি স্থাপনকারী নিহত এবং ৩ জন আহত হয়।

১৫ নভেম্বর: উত্তর পশ্চিম তীরে এরিয়েল সেটেলমেন্টের কাছে দ্বৈত অভিযানে ৩ জন বসতি স্থাপনকারী নিহত এবং আরও কয়েকজন আহত হয়।

২৩ নভেম্বর: জেরুজালেমে একটি দ্বৈত বোমা হামলায় একজন বসতি স্থাপনকারী নিহত এবং ২০ জন আহত হয়। পরে আহতদের একজনের মৃত্যু ঘোষণা করা হয়।

আরব রিপোটার্স ফর ইভেস্টিগেটিভ জার্নালিজম (এআরআইজে) ইনস্টিটিউটের তথ্যমতে, ২০২২ সালের শুরু থেকে অক্টোবরের শেষ পর্যন্ত ৯৭০০টি ফিলিস্তিনি জমিতে ১৩ হাজার ইজরাইলিকে সেটেল করতে ১১৬ টি বসতি নির্মাণের পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে ইজরাইল।

গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা

১১ মে: দখলদাররা আল-জাজিরার সংবাদদাতা শেরিন আবু আকেলাহ এবং আহত সাংবাদিক আলী আল-সামুদিকে হত্যা করে। তারা তখন জেনিন ক্যাম্পের কভারিং করছিলেন। আল জাজিরা এই হত্যাকান্ডের বিচার চেয়ে হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে ইজরাইলের বিরুদ্ধে মামলা করেছে।

৫ আগস্ট: ইসরায়েলি দখলদারদের আক্রমণে গাজায় ১৬ জন শিশুসহ ৫০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়। এ আক্রমণে আল-কুদস ব্রিগেডের বিশিষ্ট সামরিক নেতাদের লক্ষ্যবস্তু করা হয়।

উপসংহার

নতুন একটি বছর আসছে। তবে কিছু সমস্যা নিয়ে নতুন বছরে পদার্পণ করতে হচ্ছে ফিলিস্তিনি জনগণের। সমস্যাগুলো তুলে ধরা হলো।

আল- আকসা মসজিদ : যে চরমপন্থী ইসরায়েলি দল গত সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়েছে এবং বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে পরবর্তী সরকারী জোটের অংশ হবে, তারা সারাদিন আল-আকসায় আরও অনুপ্রবেশের হুমকি দিচ্ছে। যখন-তখন ঢুকে পড়ছে। তার নির্দিষ্ট কোনো সময় নেই।

গাজা স্ট্রিপ : হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে বন্দী বিনিময়ের বিষয়টি অমীমাংসিত রয়ে গেছে। তবে এবার হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ারের হুমকির কারণে এই পথটি বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে এখন বন্দীদের মুক্ত করার নতুন উপায় সন্ধান করতে হবে।

দখলদারিত্ব: বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে ইসরায়েলে ডানপন্থী সরকারের গঠিত জোটের মধ্যে ঐকমত্যের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর মধ্যে বসতি স্থাপনকে বেগবান করার বিষয়টি রয়েছে।

সূত্র: আল-জাজিরা

The post সালতামাামি: ফিলিস্তিনিদের শাহাদাত ও প্রতিরোধের বছর ২০২২ appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%b8%e0%a6%be%e0%a6%b2%e0%a6%a4%e0%a6%be%e0%a6%ae%e0%a6%be%e0%a6%be%e0%a6%ae%e0%a6%bf-%e0%a6%ab%e0%a6%bf%e0%a6%b2%e0%a6%bf%e0%a6%b8%e0%a7%8d%e0%a6%a4%e0%a6%bf%e0%a6%a8%e0%a6%bf%e0%a6%a6%e0%a7%87/

নূরানী তালিমুল কুরআন বোর্ডের ফল প্রকাশ

ফাতেহ ডেস্ক:

নূরানী তালীমুল কুরআন বোর্ড বাংলাদেশের (এন. টি.কিউ.বি) সমাপনী পরীক্ষা ২০২২-এর ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। পরীক্ষায় পাসের হার ৮৫.৯২ শতাংশ।

সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) ফলাফল প্রকাশ উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

বোর্ডের পরিচালক মাওলানা ইসমাইল বেলায়েত হুসাইন জানান, এ বছর সারাদেশে প্রায় ৪১৬টি কেন্দ্রে মোট ২৬ হাজার ২৭৩ জন ছাত্রছাত্রী সমাপনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে। আরবি-তরিকে তালিমের পাশাপাশি বাংলা, ইংরেজি, গণিতসহ মোট ছয়টি বিষয়ে পরীক্ষা দিয়েছে তারা । এছাড়া সারাদেশের টপটেনে জায়গা পেয়েছে ৯৯ জন ছাত্রছাত্রী।

ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি শায়খুল কুরআন আল্লামা ক্বারী বেলায়েত হুসাইন রহ.-এর ছেলে ও বোর্ডের মহাপরিচালক মদীনা প্রবাসী মাওলানা মাসীহুল্লাহ মাদানী নূরানী বোর্ডের নিজস্ব ওয়েবসাইটে সবার জন্য ফলাফল উন্মুক্ত করেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাওলানা মাসীহুল্লাহ বলেন, অবহেলিত জনগোষ্ঠীর জন্য কুরআন শিক্ষাকে সহজাতকরণে নূরানী তালিমুল কুরআন বোর্ড বিশেষ ভূমিকা রাখছে। সারাদেশে নিজস্ব সিলেবাসে বাংলা ইংরেজি ও গণিতকে গুরুত্ব দিয়ে আমরা কাজ করছি। শিক্ষকদের উন্নত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রেখেছি। আগামী দিনেও কুরআনের খেদমতে শায়খুল কুরআনের পরিবার বিশেষ ভূমিকা রাখবে ইনশাআল্লাহ।

সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা কালীমুল্লাহ জামিল হুসাইন বলেন, আমাদের শিশু-কিশোরদের মাঝে আদব আখলাক ও সুস্থ সংস্কৃতির বিকাশ প্রয়োজন। আগামী প্রজন্মকে কুরআনিক সোসাইটি হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। শিক্ষিত শান্তিপ্রিয় দেশপ্রেমিক নিবেদিতপ্রাণ জনবল তৈরি করছে নূরানী বোর্ড।

মুখ্য আলোচকের ভাষণে বোর্ড পরিচালক মাওলানা ইসমাইল বেলায়েত বলেন, নিরক্ষরতা দূরীকরণ, ঘরে ঘরে শিক্ষার আলো পৌঁছানো, প্রতিটি গ্রামীণ জনপদে কুরআনের মক্তব প্রতিষ্ঠা এবং আগামী প্রজন্মের সন্তানদের বুকে ঈমানের সবুজ চারা রোপণ করতে আমরা কাজ করছি। শায়খুল কুরআন আল্লামা ক্বারী বেলায়েত রহ.-এর ত্যাগ, কুরবানি ও ইখলাসের ফসল আজকের নূরানী তালিমুল কুরআন বোর্ড। তিনি উত্তীর্ণ ছাত্রছাত্রীদের আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান।

The post নূরানী তালিমুল কুরআন বোর্ডের ফল প্রকাশ appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%a8%e0%a7%82%e0%a6%b0%e0%a6%be%e0%a6%a8%e0%a7%80-%e0%a6%a4%e0%a6%be%e0%a6%b2%e0%a6%bf%e0%a6%ae%e0%a7%81%e0%a6%b2-%e0%a6%95%e0%a7%81%e0%a6%b0%e0%a6%86%e0%a6%a8-%e0%a6%ac%e0%a7%8b%e0%a6%b0/

Sunday, December 25, 2022

তুরাগ তীরে বিশ্ব ইজতেমার জোর প্রস্তুতি চলছে

ফাতেহ ডেস্ক:

মহামারি করোনাভাইরাসের প্রকোপের কারণে টানা দুই বছর অনুষ্ঠিত হয়নি বিশ্ব ইজতেমা। নতুন বছরের শুরুতেই বিশ্ব ইজতেমার সিদ্ধান্ত হয়েছে। জানুয়ারিতে দুই পর্বে হবে এই ইজতেমা। ইতোমধ্যে টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরে ইজতেমার প্রস্তুতি পুরোদমে শুরু হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ইজতেমা ময়দানের নিচু জমি ভরাট, সামিয়ানা টানানো, রাস্তাঘাট মেরামত ও পয়ঃনিষ্কাশনের কাজ চলছে দ্রুতগতিতে।

তাবলিগের দায়িত্বশীলরা জানান, গাজীপুর, ঢাকা ও আশপাশের এলাকা থেকে বিপুলসংখ্যক মানুষ স্বেচ্ছাশ্রমে অংশ নিচ্ছেন ইজতেমার প্রস্তুতির কাজে। পাশাপাশি তাবলিগ জামাতের সাথীরাও যোগ দিয়েছেন। এছাড়া সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বিভিন্ন মাদরাসার ছাত্ররাও ইজতেমার কাজ করছেন।

বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব শুরু হবে ১৩ জানুয়ারি। চলবে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত। মাঝে চার দিন বিরতি দিয়ে দ্বিতীয় পর্ব শুরু হবে ২০ জানুয়ারি। চলবে ২২ জানুয়ারি পর্যন্ত। দুই পর্বেই পৃথক পৃথক আখেরি মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে।

টঙ্গী পশ্চিম থানার ওসি মো. শাহ আলম জানান, বিশ্ব ইজতেমা সঠিকভাবে বাস্তবায়নের লক্ষে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ-জিএমপি ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে। ময়দানের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ইজতেমার শেষ দিন পর্যন্ত পুলিশ সক্রিয় থাকবে।

ঢাকা থেকে ২২ কিলোমিটার উত্তরে টঙ্গী তুরাগ নদীর তীরে টঙ্গীর বিশাল ময়দানে তাবলিগ জামাতের বিশ্ব ইজতেমা ১৯৬৭ সাল থেকে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। ২০১১ সাল থেকে বিশ্ব ইজতেমা দুই পর্বে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।

The post তুরাগ তীরে বিশ্ব ইজতেমার জোর প্রস্তুতি চলছে appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%a4%e0%a7%81%e0%a6%b0%e0%a6%be%e0%a6%97-%e0%a6%a4%e0%a7%80%e0%a6%b0%e0%a7%87-%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%b6%e0%a7%8d%e0%a6%ac-%e0%a6%87%e0%a6%9c%e0%a6%a4%e0%a7%87%e0%a6%ae%e0%a6%be%e0%a6%b0/

বাণিজ্যমেলা শুরু ১ জানুয়ারি

ফাতেহ ডেস্ক:

পূর্বাচলের বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে (বিবিসিএফইসি) শুরু হবে ২০২৩ সালের বাণিজ্যমেলা। আগামী ১ জানুয়ারি বাণিজ্যমেলার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রোববার (২৫ ডিসেম্বর) রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সচিব ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী জাগো নিউজকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, আগামী ১ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণিজ্যমেলার উদ্বোধন করবেন। পূর্বাচলে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী এক্সিবিশন সেন্টারে (বিবিসিএফইসি) মাসব্যাপী এই মেলা চলবে।

The post বাণিজ্যমেলা শুরু ১ জানুয়ারি appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%a3%e0%a6%bf%e0%a6%9c%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%ae%e0%a7%87%e0%a6%b2%e0%a6%be-%e0%a6%b6%e0%a7%81%e0%a6%b0%e0%a7%81-%e0%a7%a7-%e0%a6%9c%e0%a6%be%e0%a6%a8%e0%a7%81%e0%a6%af/

ঢাবিতে হিজাববিদ্বেষের ভয়াল চিত্র

রাকিবুল হাসান নাঈম:

প্রথম বর্ষ ২য় সেমিস্টারের ডিপার্টমেন্ট ভাইভা। ডিপার্টমেন্টের নামের শুরুতে ইসলামও আছে। ভাইভা বোর্ডে ৩-৪ জন স্যার ছিলেন। ভাইভায় এক ছাত্রী হিজাব ও নিকার পরে গেলে তারা তাকে নিকাব খুলতে বললেন। ছাত্রীটি রাজি না হওয়াতে একজন স্যার বললেন, তুমি চলে যাও। তোমাকে ভাইভা দিতে হবেনা। এমনকি একজন স্যার ভাইভার হাজিরা খাতাতে স্বাক্ষর করতে দেওয়া হবে না বলে হুমকি দিলেন। আরেকজন বললেন, স্যাররা বাবার মতো। কেন তাদের সামনে মুখ খুলতে পারবা না? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সময় কি মুখ খুলে ছবি তুলোনি? তাহলে এখন কী সমস্যা? তৃতীয় এক স্যার বললেন, ভাইভার ফর্মাল লুক থাকে। আর সেখানে কেনো মুখ ঢাকা থাকবে? মুখ ঢাকা থাকলে চিনবে কী করে যে, ডিপার্টমেন্ট এর ছাত্রী কিনা। ছাত্রীর অনড় অবস্থান দেখে দুয়েকটা দায়সারা গোছের প্রশ্ন করে তাকে উঠিয়ে দেন ভাইবা বোর্ডের সদস্যরা।

দৃশ্যটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের। একটি প্রতিষ্ঠানের জরিপমতে, শুধু একটি ঘটনা নয়, এমন শত শত ঘটনা ঘটছে এই বিশ্ববিদ্যালয়টিতে। হিজাবি-নিকাবি ছাত্রীদের জন্য ভাইভা বোর্ড যেন এক আতঙ্কের নাম। পরীক্ষার হল যেন জাহান্নামের অগ্নিকুন্ড। ভুক্তোভোগীরা বলছেন, হিজাব-নিকাবের বিরোধিতা স্যাররা যেমন করেন, তেমনি বিরোধিতা করেন ম্যমরাও। স্যার-ম্যামদের সঙ্গে লড়াই করে কেউ হিজাব ধরে রাখেন, কেউ পারেন না। যারা হিজাব ধরে রাখেন, তাদের অনেককে চুকাতে হয় মাশুল। কাউকে কাউকে ছেড়ে দিতে হয় পড়াশোনা। সম্প্রতি হিজাব ইস্যুতে ভাইবায় বসতে না পেরে হল ছেড়েছেন এক শিক্ষার্থী।

সমাজবিজ্ঞানে সবচেয়ে বেশি হেনস্থা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গত এক বছর ধরে হিজাব সংক্রান্ত ঘটনাবলী নিয়ে কাজ করছেন জামালুদ্দিন মুহাম্মদ খালিদ। প্রায় অর্ধ শতাধিক কেস স্টাডি করে তার মতামত হলো, হিজাব-নিকাব নিয়ে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়তে হয় সমাজবিজ্ঞান অনুষদে। সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন সাদেকা হালিমা হিজাব-নিকাবের বিরুদ্ধে সবচেয়ে সোচ্চার। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ সবচেয়ে বেশি।

অনুষদের বাংলা বিভাগ, সংস্কৃত বিভাগে ছাত্রীরা হেনস্থা হয় সবচেয়ে বেশি। এছাড়াও লোক প্রশাসন বিভাগ, শিক্ষা ও গবেষণা বিভাগ, টুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগও রয়েছে এই তালিকায়। এমনকি ইসলামিক এবং আরবি বিভাগেও এমন ঘটনা ঘটে।‘

তার দাবি হলো, সাইন্স বিভাগ ছাত্রীদের জন্য অনেকটাই নিরাপদ। সেখানে হিজাব-নিকাব নিয়ে সবচে কম সমস্যা হয়।

সংস্কৃত বিভাগের এক ছাত্রীর বক্তব্য হলো, আমাদের সেকেন্ড সেমিস্টার ফাইনাল চলছিল। সেদিন ১০৫ নং কোর্সের পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে একজন ম্যাম আমাকে নিকাব খুলতে বাধ্য করেন। এই ম্যাম ছাড়াও আমাদের ডিপার্টমেন্টে যেসব ম্যাম আছেন, সবাই ইসলাম বিদ্বেষী। ভাইবাতে গেলেও পুরুষ টিচারের সামনে নেকাব খুলতে বলেন। ডিপার্ট্মেন্টের চেয়ারম্যান তো বেশি হেজিটেড বোরকা নিকাব নিয়ে।

লোক প্রশাসন বিভাগের এক শিক্ষার্থীর বক্তব্য হলো, এক ভাইভাতে ম্যাম বলছিলেন, মুখ দেখাতেই হবে। যদি মুখ না দেখাই তাহলে তারা আমার ভাইভা নিবেন না। ভাইবা বোর্ডে স্যারও ছিলেন দুজন। আমি তখন বললাম, ম্যাম মুখ একবার দেখিয়েই আবার ঢেকে ফেললে হবে? তিনি বললেন, ‘ না, তুমি যতক্ষণ ভাইভা দিবে ততক্ষণ মুখ খুলে রাখতে হবে’! আমি তখন ভাবছিলাম কী করবো! এদিকে ম্যাম তাগাদা দিচ্ছেন তাড়াতাড়ি করতে। এটাও বলছিলেন, আমি যদি নিকাব না খুলতে চাই তাহলে ভাইভা না দিতে। ভাবলাম, ৫ নাম্বারের ভাইভা বাদ দিলে কিছু হবে না। তাই ভাইভা না দিয়েই বের হয়ে এসেছিলাম।

এক আতঙ্কের নাম ভাইভা বোর্ড

জামালুদ্দিন মুহাম্মদ খালিদ বলেন, ‘ছাত্রীরা সবচে বেশি হেনস্থা হন এবং বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েন ভাইভা বোর্ডে। তারপর পরীক্ষার হলে। এছাড়া ক্লাসরুম এবং প্রেজেন্টেশনেও এমন পরিস্থিতিতে পড়তে হয়। তবে সবচে বেশি সমস্যায় পড়তে হয় ভাইবা বোর্ডে। এই ভাইভা প্রথম বর্ষের যেমন হতে পারে, তেমনি ফাইনাল ভাইভাও হতে পারে। এমনকি মাস্টার্স শেষ ভাইভাতেও এমন ঘটনা ঘটেছে।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক লোক প্রশাসন বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, ষষ্ঠ সেমিস্টারের ভাইভা বোর্ডে এক্সটার্নালসহ ৪ জন শিক্ষকই আমার চেহারা আবৃত থাকায় বিরক্তি প্রকাশ করলেন এবং প্রত্যেকেই তাদের জ্ঞানের বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে লাগলেন। এমনও বললেন, পড়ালেখা শেষ হলে আমি যেন তাদের ছাত্রী হিসেবে নিজেকে পরিচয় না দেই। এমনকি সূরা নূর এবং সূরা আহযাব থেকে পর্দার বিধান সংক্রান্ত আয়াতগুলো নিজেদের সুবিধামাফিক ব্যাখ্যা করতেও ছাড়লেন না। এসব করেই সময় যাচ্ছিল। শেষে একটি একাডেমিক প্রশ্ন করে ভাইভার ইতি টানলেন। পরবর্তী ভাইভাসমূহেও একাডেমিক প্রশ্ন করার ব্যাপারে শিক্ষকদের আগ্রহের ঘাটতি দেখেছি।

এই শিক্ষার্থী আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শেষ ভাইভায় অর্থাৎ মাস্টার্স দ্বিতীয় সেমিস্টারের ভাইভা বোর্ডে চেয়ারম্যান (ফিমেল) সাফ জানিয়ে দিলেন, চেহারা খোলা না রাখলে উনি ২৫ মার্কের ভাইভা নিবেন না। সেখানে একজন ছিলেন পুরুষ শিক্ষক। যিনি আগেও আমাকে হেনস্থা করেছিলেন। তাই আমি চেহারা খুলতে পারছিলাম না। শেষ পর্যন্ত তিনি তার চেয়ার থেকে উঠে গিয়ে অন্যত্র বসলে আমার ভাইভা নেওয়া হয়।

শিক্ষা ও গবেষণা বিভাগের এক শিক্ষার্থীর বক্তব্য হলো, ভাইভা বোর্ডে তাকে ১৫ মিনিটি তাকে তার হিজাব নিয়ে কটাক্ষ করা হয়। বিভিন্ন বিব্রতকর প্রশ্ন করে বিব্রত করা হয়। হেনস্থার পর তারা কোর্স রিলেটেড প্রশ্ন করেছিলেন মাত্র ৫ মিনিট। অথচ যারা শাড়ি, সালোয়ার কামিজ পরে ভাইভা দিতে এসেছিল, তাদের সবাইকে কোর্স রিলেটেড প্রশ্নই করা হয়েছিল কেবল।

ক্লাসেও হিজাব নিকাব নিয়ে হেনস্থার মুখোমুখি হতে হয়। খাদ্য ও পুষ্টি বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, আমি ফার্স্ট ইয়ারে যখন ক্লাস করতাম, তখন ডিপার্টমেন্টের একজন টিচার আমাকে নিকাব পরিহিত অবস্থায় ক্লাস করতে দেখলেই বলতেন, এভাবে মুখ ঢেকে ক্লাস করলে উনি আমাকে এটেনডেন্স দিবেন না। এবং আমি উনার ক্লাসে সশরীরে উপস্থিত থেকে রোল কলের সময় এটেনডেন্স দেওয়া সত্ত্বেও স্যার আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘তুমি মুখ না খুললে আমি তোমাকে এটেনডেন্স দিবো না।’ এভাবে দু-একটি ক্লাস করার পরও উনি আমাকে এটেনডেন্স দিলেন না। এরপর একদিন ক্লাসে এসে বললেন, ‘হয় ক্লাসে তুমি থাকবা নাহয় আমি।’ এটা শুনে আমি হতভম্ব ও বিমর্ষ হয়ে চুপচাপ বসে ছিলাম। বের হচ্ছিলাম না দেখে তখন তিনি বলে উঠলেন, ‘আমি কি বের হয়ে যাব? হয় তুমি থাকবা নাহয় আমি থাকবো।’ স্যারের এমন কর্কশ ও রুক্ষ মেজাজ দেখে আমি ক্লাস থেকে বের হয়ে গেলাম।

কী বলে হেনস্থা করা হয়

প্রায় অর্ধ শতাধিক কেস স্টাডি করে জামালুদ্দিন মুহাম্মদ খালিদের মতামত হলো, ছাত্রীদেরকে প্রায়ই বিভিন্ন যুক্তি দেখিয়ে বিব্রত করা হয়। যেমন, ‘শিক্ষকগণ পিতার মত, তাদের সামনে চেহারা কেন ঢাকতে হবে?’, ‘হজেও তো চেহারা খোলা রাখতে হয়’, ‘না খুললে তোমাকে চিনব কিভাবে?’ ইত্যাদি বলা হয়। শিক্ষকরা পর্দার বিধান সংক্রান্ত আয়াতগুলো নিজেদের সুবিধামাফিক ব্যাখ্যাও প্রদান করেন।

আইন বিভাগের এক শিক্ষার্থীর বলেন, ডি-ইউনিটের ভাইভা হচ্ছিলো। ভাইভায় মুখোমুখি আমি ও তৎকালীন সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন সাদেকা হালিম। তিনি প্রশ্ন শুরু করলেন, তুমি যে বোরকা হিজাব পরেছো, তার মানে কি তুমি একা বেহেশতে যাবা, আমি তো টিপ পরেছি আমি তাহলে বেহেশতে যেতে পারবো না? আমরা কি যুদ্ধ করেছি, বোরকা পরার জন্য নাকি শাড়ি পরার জন্য? তুমি কেন এসব (হিজাব, নিকাব, বোরকা) পরো? আমি তো একদম নতুন। মাত্র ডি ইউনিটের ভাইভা আমার। তাই খুব অপ্রস্তুত অবস্থায় ছিলাম। নার্ভাস ছিলাম। যার ফলে গুছিয়ে উত্তর দিতে পারিনি। তৃতীয় বা শেষ প্রশ্নের উত্তর দিয়েছিলাম, ‘ফ্যামিলির সবাই বোরকা, হিজাব পরে তো, এজন্য আমিও পরি।’ এ উত্তর শুনে উনি (সাদেকা হালিম) বললেন, ‘তোমার ফ্যামিলির সবাই জঙ্গি হলে তুমিও কি জঙ্গি হবে?’

জামালুদ্দিন মুহাম্মদ খালিদ বলেন, ‘শিক্ষকরা মাঝেমধ্যে এক্সট্রিম লেবেলে গিয়ে হিজাব-নিকাবকে ‘জঙ্গিবাদী’ ‘আফগানিস্তানি’ ট্যাগ দিয়ে দেন। ভাইভায় কোর্স সংক্রান্ত প্রশ্নের চেয়ে হিজাব সংক্রান্ত প্রশ্নই বেশি করেন।’

চেহারা শনাক্তকরণের ভুয়া দাবি

জামালুদ্দিন মুহাম্মদ খালিদ বলেন, শিক্ষকরা হিজাবের বিরোধিতা করার পেছনে চেহারা শনাক্তকরণ এবং নকল প্রতিরোধে ডিভাইস রোধকরণকে কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন। কিন্তু এ দুটো সমস্যা নিরসনের আধুনিক নিয়ম আছে। তা পালন না করে একজন ছাত্রীর ধর্মীয় অধিকার খর্ব করে তারা কেবল হিজাবকেই দোষী করেন।’

তিনি বলেন, অধুনিক ডিভাইস ব্যবহার না করে যদি শিক্ষকরা সমাধান করতে চান, তাহলে শনাক্তকরণের জন্য মহিলা ম্যাম দিয়ে শিক্ষার্থীর পরিচয় শনাক্ত করানো যেতে পারে। সবসময় কেন মুখ খোলা রাখতে হবে। আর ব্লুটুথ হেডফোনে নকলের যে অভিযোগ তুলেন, সেটা একদমই অসম্ভব। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা হয় রচনামূলক। সেখানে ব্লুটুথে কিভাবে নকল করবে। এমসিকিউ হলে কথা ছিল।’

জামালুদ্দিন মুহাম্মদ খালিদ বলেন, ‘কর্তৃপক্ষ চাইলেই আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারেন। চেহারা শনাক্তকরণের জন্য ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা বায়োমেট্রিক পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারেন। আর নকলের জন্য কোনো ডিভাইস কেউ ব্যবহার করছে কিনা তা জানতে ব্যবহার করা যায় আরেকটি ডিভাইস। তার নাম: এন্টি স্পাই আরএস ডিটেক্টর ওয়ারলেস। এটি ব্যবহার করলেই সব ডিভাইস শনাক্ত করা যায়।’

তবে শিক্ষার্থীরা বলছেন, সবাই নেগেটিভ এমন নয়। পজেটিভ অনেক দৃশ্যও আছে। যারা পজেটিভ, তাদের কারণেই শিক্ষার্থীরা হিজাব-নিকাব পরতে পারছে। যারা নেগেটিভ, তাদের কারণে শিক্ষার্থীরা বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ছে।

‘হিজাব নিয়ে কটাক্ষ ইসলামবিদ্বেষীদের কর্মকাণ্ড’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা হিজাবের বিরোধিতা করে, হিজাব নিয়ে কটাক্ষ করে, তারা ইসলামাবিদ্বেষী বলে মন্তব্য করেছেন ঢাবির ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান ড. শামসুল আলম। ফাতেহকে তিনি বলেন, ‘হিজাব-নিকাব ইসলামী বিধান। এই বিধান পালন করতে হবে। পালনের সুযোগও দিতে হবে। আমরা যদি হিজাব-নিকাব না করতে দেই, আখেরাতে সেটার দায় কে নেবে? তাই ব্যক্তিগতভাবে আমি হিজাব-নিকাব সমর্থন করি। আমার ডিপার্টমেন্টে এগুলো নিয়ে কোনো সমস্যা হয় না।’

তিনি আরও বলেন, ‘ঢাবিতে যারা হিজাব নিয়ে সমস্যা করছে, ভাইবাতে নম্বর দিচ্ছে না, তারা আসলে ইসলামবিদ্বেষী। আমরা যদি পর্দাসহ ভাইভা নিতে পারি, তারা কেন নিতে পারবে না। ভাইভাতে যে মেয়েটি হিজাব পড়ে ঢুকছে, তার আগের বান্ধবিও তাকে চেনে। তার পরের বান্ধবিও তাকে চেনে। শিক্ষকরা কেন তাকে চিনবে না। তার পরিচয় নিতে কেন হিজাব খুলতে হবে। এটা বাংলাদেশ। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ। এটা ইন্ডিয়া না। এখানে হিজাব-নিকাবসহই পড়াশোনার অধিকার দিতে হবে। আমি সেটা মনে করি।’

পরিচয় শনাক্তকরণে আধুনিক ডিভাইস ব্যবহার প্রসঙ্গে ড. শামসুল আলম বলেন, ‘আমরা তাদেরকে পরিচয় শনাক্তকরণে আধুনিক ডিভাইস ব্যবহার করার পরামর্শ দিতে পারি। কিন্তু এই ডিভাইস ছাড়াও, পুরুষের সামনে মুখ খোলা ছাড়াও পরিচয় শনাক্ত করা যায়। সেটার চর্চা করতে হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পর্দা মানা শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বাড়ছে। তাদের পড়ালেখার উপযুক্ত পরিবেশ করে দিতে বিশ্ববিদ্যালয় বাধ্য।’

The post ঢাবিতে হিজাববিদ্বেষের ভয়াল চিত্র appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%a2%e0%a6%be%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%a4%e0%a7%87-%e0%a6%b9%e0%a6%bf%e0%a6%9c%e0%a6%be%e0%a6%ac%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%a6%e0%a7%8d%e0%a6%ac%e0%a7%87%e0%a6%b7%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%ad%e0%a6%af/

Saturday, December 24, 2022

মথুরার শাহি ঈদগাহ নিয়ে হিন্দুদের ষড়যন্ত্র, সার্ভের নির্দেশ আদালতের

ফাতেহ ডেস্ক:

ভারতের উত্তর প্রদেশে জ্ঞানবাপী মসজিদ বিতর্কিত করার চেষ্টার মধ্যেই হিন্দুত্ববাদীদের নজর পড়েছে মথুরায় শাহি ঈদগাহ মসজিদের ওপর। অনেকটা জ্ঞানবাপী মসজিদের ধাঁচেই মথুরার শাহি ঈদগাহ মসজিদে সার্ভের নির্দেশ দিয়েছে উত্তরপ্রদেশের এক আদালত। আগামী ২ জানুয়ারি অর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া ওই মসজিদ চত্বরে সমীক্ষা করবে।

আধ্যাত্মিক শহর মথুরাকে ঘিরে হিন্দুদের বিশ্বাস, ওই জায়গাটি শ্রীকৃষ্ণের জন্মস্থান। কৃষ্ণজন্মভূমি চত্বরেই রয়েছে শাহি ঈদগাহ মসজিদ। ইতিহাসবিদদের একাংশের দাবি, প্রাচীন কেশবনাথ মন্দির ভেঙেই মসজিদটি তৈরি করেন আওরঙ্গজেব। ১৯৩৫ সালে ওই মন্দির চত্বরের মালিকানা মথুরার রাজার হাতে সঁপে দেয় এলাহাবাদ হাই কোর্ট। পর্যায়ক্রমে সেই স্বত্ব বর্তায় বিশ্ব হিন্দু পরিষদের ঘনিষ্ঠ শ্রী কৃষ্ণভূমি ট্রাস্টের হাতে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই দুই ধর্মের মানুষের মধ্যে তৈরি হয় সংঘাত। অবশেষে ১৯৬৮ সালে এক চুক্তির মাধ্যমে জমির মালিকানা হিন্দুদের হাতে থাকলেও মসজিদটির রক্ষণাবেক্ষণ করার অধিকার পায় মুসলিম পক্ষ।

আপাতত মুসলিম পক্ষের হাতে মসজিদটির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব থাকলেও হিন্দুদের দাবি ওখানেই জন্ম হয়েছিল শ্রী কৃষ্ণের। একাধিক হিন্দু সংগঠন সপ্তদশ শতকের ওই মসজিদটি ভেঙে দেয়ার দাবিতে মথুরার ওই স্থানীয় আদালতে মামলা দায়ের করে। হিন্দু সেনা নামের একটি সংগঠনের তরফে মামলা দায়ের করেছিলেন আইনজীবী বিষ্ণু শর্মা। তার দায়ের করা মামলার ভিত্তিতে মথুরার স্থানীয় আদালত জানিয়ে দিয়েছে, আগামী ২ জানুয়ারি বিতর্কিত ওই মসজিদের সার্ভে করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে এএসআইকে। ২০ জানুয়ারির আগে আদালতে রিপোর্ট জমা দেবে অর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া।

‘বাবরি তো ঝাকি হ্যায়, মথুরা কাশী বাকি হ্যায়।’ নয়ের দশকে করসেবকদের এই হুঙ্কার ভোলার নয়। মথুরা ও কাশী নিয়ে হিন্দুত্ববাদীদের নানা দাবি এর আগেও শোনা গিয়েছে। ‘অল ইন্ডিয়া আখড়া পরিষদ’কে বলতে শোনা গিয়েছিল, রাম মন্দিরের নির্মাণ শেষ হলে মথুরা ও কাশীর মন্দিরগুলোকে ‘মুক্ত’ করা হবে। ওই বিতর্কের আবহে আদালতের এই নির্দেশ বেশ তাৎপর্যপূর্ণ।

সূত্র : সংবাদ প্রতিদিন

The post মথুরার শাহি ঈদগাহ নিয়ে হিন্দুদের ষড়যন্ত্র, সার্ভের নির্দেশ আদালতের appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%ae%e0%a6%a5%e0%a7%81%e0%a6%b0%e0%a6%be%e0%a6%b0-%e0%a6%b6%e0%a6%be%e0%a6%b9%e0%a6%bf-%e0%a6%88%e0%a6%a6%e0%a6%97%e0%a6%be%e0%a6%b9-%e0%a6%a8%e0%a6%bf%e0%a6%af%e0%a6%bc%e0%a7%87-%e0%a6%b9/

করোনার নতুন ধরন নিয়ে সরকার সতর্ক

ফাতেহ ডেস্ক:

চীনে করোনাভাইরাসের নতুন ধরন বিএফ-৭ দেখা দিয়েছে। এ ধরন নিয়ে সতর্ক রয়েছে বাংলাদেশ সরকার। নতুন এই সংক্রমণ ঠেকাতে বাংলাদেশ সরকার ব্যবস্থা নিচ্ছে।

আজ রবিবার সকালে স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক জরুরি ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানানো হয়। এতে বলা হয়েছে, টিকার মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়ে যে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে তার সুযোগ নেই। প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের পর্রামশেই যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নেওয়া হয়েছে। ফলে দ্বিধার কোনো সুযোগ নেই।

সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর বলেন, চীনে নতুন ধরন বিএফ ৭ শনাক্ত হয়েছে। এই ধরন ওমিক্রনের চেয়ে শক্তিশালী। কম সময়ে এই ধরন বেশি মানুষকে আক্রান্ত করতে পারে। যারা টিকা নেননি তাদের দ্রুত টিকা নিতে হবে।

তিনি বলেন, সরকার ইতোমধ্যে দ্বিতীয় বুস্টার বা চতুর্থ ডোজ টিকা দেয়া শুরু করেছে। বিশেষ করে সম্মুখসারীর ব্যক্তি, গর্ভবতী নারী, ষাটোর্ধ্ব নাগরিক, দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্তদের ক্ষেত্রে টিকার চতুর্থ ডোজ অগ্রাধিকার পাচ্ছে।

ডা. কবীর বলেন, করোনার নতুন ধরন ভারতেও শনাক্ত হয়েছে। ফলে দেশের সকল বন্দরে র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করা হচ্ছে। সন্দেহভাজনদের বিচ্ছিন্নকরণ বা আইসোলেশনে নেওয়া হচ্ছে। আক্রান্তদের নমুনার জেনোমিক সিকোয়েন্সিং করে এফবি ৭ করোনা ভাইরাস রয়েছে কি না তার জন্য রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটকে (আইইডিসিআর) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। হাসপাতালগুলোকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।

এ সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশিদ আলম, করোনার নিয়ন্ত্রণ সরকার গঠিত জাতীয় কারিগরি পর্রামশক কমিটি সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শহীদুল্লা, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলাম ও করোনার টিকা ব্যবস্থা কমিটির সদস্য সচিব ডা. মো. শামসুল হক প্রমুখ।

The post করোনার নতুন ধরন নিয়ে সরকার সতর্ক appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%95%e0%a6%b0%e0%a7%8b%e0%a6%a8%e0%a6%be%e0%a6%b0-%e0%a6%a8%e0%a6%a4%e0%a7%81%e0%a6%a8-%e0%a6%a7%e0%a6%b0%e0%a6%a8-%e0%a6%a8%e0%a6%bf%e0%a6%af%e0%a6%bc%e0%a7%87-%e0%a6%b8%e0%a6%b0%e0%a6%95/

Friday, December 23, 2022

আ.লীগের সম্মেলনে যাওয়ার পথে দুর্ঘটনায় আহত ৫

ফাতেহ ডেস্ক:

মাদারীপুরের শিবচর উপজেলা থেকে আওয়ামী লীগের সম্মেলনে যাওয়ার পথে প্রাইভেটকারে বাসের ধাক্কায় পাঁচ জন আহত হয়েছেন। শনিবার (২৪ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় মুন্সীগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহাসড়কের (ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে) টোলপ্লাজায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।

আহতদের মধ্যে রয়েছেন—শিবচর উপজেলার ভদ্রাসন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বজলুর রহমান (৪০), ভদ্রাসন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন (৪৫), ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতা বিপ্লব (৩৫) ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতা আকাশ মালো (৩৫)। আহত আরেকজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি। তাদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আহতদের মধ্যে বজলুর রহমান ও আবুল হোসেনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।

কেরানীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের ইনস্পেক্টর মো. হানিফ জানান, সকালে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের টোলপ্লাজার কেরানীগঞ্জ এলাকায় ঢাকাগামী যাত্রীবাহী একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রাইভেটকারে ধাক্কা দিলে পাঁচ জন আহত হন। একজন গাড়ির ভেতরে আটকা পড়েন। তাকে উদ্ধার করে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের (মিটফোর্ড হাসপাতাল) পাঠানো হয়েছে।

হাসাড়া হাইওয়ে পুলিশের ওসি জাকির হোসেন মোল্লা জানান, ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের টোলপ্লাজার কেরানীগঞ্জ এলাকায় দুর্ঘটনাকবলিত গাড়ি দুটি রেকার দিয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এখন যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।

The post আ.লীগের সম্মেলনে যাওয়ার পথে দুর্ঘটনায় আহত ৫ appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%86-%e0%a6%b2%e0%a7%80%e0%a6%97%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%b8%e0%a6%ae%e0%a7%8d%e0%a6%ae%e0%a7%87%e0%a6%b2%e0%a6%a8%e0%a7%87-%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%93%e0%a6%af%e0%a6%bc%e0%a6%be%e0%a6%b0/

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হিজাব-নিকাবে বাধা

রাকিবুল হাসান নাঈম:

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদেরকে টিউটোরিয়াল প্রেজেন্টেশন, মিডটার্ম পরীক্ষা, চূড়ান্ত পরীক্ষা এবং মৌখিক পরীক্ষার সময় কানসহ মুখমণ্ডল দৃশ্যমান রাখার নোটিশ দেয়া হয়েছে। প্রথমে মৌখিক ঘোষণা দেয়া হলেও কোন কোন শিক্ষার্থী নিকাব খুলতে রাজি না হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে ভার্সিটির ‘বিধি মোতাবেক’ ব্যবস্থা নেবার কথা জানিয়ে লিখিত নোটিশ দিয়েছে ডিপার্টমেন্ট।

ইতিপূর্বে ২০২০-২১ সেশনের একজন শিক্ষার্থীকে নিকাবের জন্য ভাইবা দিতে না দেয়ার অভিযোগ উঠেছিল এই বিভাগের বিরুদ্ধে। পত্রিকা এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ ব্যাপারে লেখালেখি করা হলে উল্টো ১৮.৯.২০২২ তারিখে মৌখিক এবং ৬.১২.২০২২ লিখিত নোটিশ দিয়ে মুখ খুলে পরীক্ষা দেয়াকে বাধ্যতামূলক করে দেয়া হয়।

এই ঘটনার মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হিজাব-নিকাব পরিধানে বাধাপ্রাপ্ত হওয়ার বিষয়টি আবার সামনে এলো।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, ‘হিজাববিদ্বেষ’

শিক্ষার্থীরা বিষয়টিকে হিজাববিদ্বেষ হিসেবে দেখছেন। ঢাবির আইন বিভাগের ছাত্রী সানজিদা আক্তার ফাতেহকে বলেন, ‘বাংলা বিভাগের এক ছাত্রীকে নিকাব পড়ায় ভাইবায় বসতে দেওয়া হয়নি কয়দিন আগে। বিষয়টি নিয়ে তখন পত্র-পত্রিকায় লেখালেখি হয়। তার প্রতিক্রিয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে মনে করছি। নয়ত ঢাবির আর সাতাশিটা ডিপার্টমেন্ট যদি নিকাবসহ পরীক্ষা নিতে পারে, বাংলা বিভাগ কেন পারবে না?’

সানজিদা আক্তার আরও বলেন, ‘ব্রিটিশদের প্রণীত আইনেও পর্দাশীলদের জন্য বিশেষ নিয়ম ছিল। বাংলাদেশের নিয়মেও ধর্মীয় রীতি পালনের অধিকার আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মেও নিকাব খুলে রাখতে হবে এমন কোনো নিয়ম নেই। শনাক্তকরণের নিয়ম আছে। শনাক্ত তো ফিঙ্গারপ্রিন্ট, বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতেও করা যায়। ঢাবি প্রশাসন কত অনুষ্ঠানে কতটাকা খরচ করে। আধুনিক এই পদ্ধতিগুলো চালু করলেই পারে।’

এ প্রসঙ্গে কথা হয় ঢাবির আইন বিভাগের শিক্ষার্থী মোল্লা মুহাম্মদ ফারুক আহসানের সঙ্গে। ফাতেহকে তিনি জানান, ‘বাংলাদেশের সংবিধানে পূর্ণাঙ্গ ধর্মীয় অধিকার দেয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সেটা দিতে বাধ্য। সিন্ডিকেটের অনুমোদন ছাড়া এমন গুরুত্বপূর্ণ একটি ধর্মীয় রীতির বিরুদ্ধে একটা বিভাগ নিয়ম করতে পারে না। পরিচয় শনাক্তের আধুনিক বিভিন্ন পদ্ধতি আছে। কর্তৃপক্ষ সেসব পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারছে না, সেটা তাদের ব্যর্থতা। সেজন্য তারা ছাত্রীদের অধিকার খর্ব করতে পারে না।’

ঢাবিতে হিজাব সংশ্লিষ্ট ঘটনাবলী নিয়ে কাজ করছেন জামালুদ্দিন মুহাম্মদ খালিদ। তিনি বলেন, এগুলো বিধির অনুসরণ নয়, এগুলো একেকটি ক্রাইম। এক বছরের বেশি সময় ধরে ঢাবিতে হিজাব সংশ্লিষ্ট ঘটনাবলী নিয়ে কাজ করছি। বাংলা বিভাগের নোটিশটি সম্প্রতি ভাইরাল হলেও ঘটনাপ্রবাহ কয়েক মাস পূর্ব থেকেই অবজারভেশন করছি। আমাদের হাতে প্রায় শতের কাছাকাছি কেস জমা হয়েছে। যদি ভিকটিমদের পড়াশোনা হুমকির মুখে পড়ার আশঙ্কা না থাকত, তাহলে জমা হওয়া কেসের সংখ্যা কয়েকশ হত বলে আমরা নিশ্চিত। এই জমা হওয়া প্রতিটি ঘটনাই হিজাব নিয়ে কটুক্তি, হেনস্থা ও হুমকি-ধমকির। এর একটাও পরিচয় শনাক্তকরণ অথবা নকল ঠেকানোর প্রয়োজনে ঘটা কোন কেস নয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘যে বোনটিকে কেন্দ্র করে সর্বশেষ স্টেপ নিল বাংলা বিভাগ, তাকে ফার্স্ট সেমিস্টারের ভাইবাতেও হেনস্থার শিকার হতে হয়েছিল। মূল্যায়ন করা হয়নি তার। দ্বিতীয় সেমিস্টারে যথাসম্ভব ভাইবা বোর্ডেই বসতে দেয়নি। অবশেষে সে পড়াশোনা ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে হল ছেড়ে চলে গেছে অলরেডি। আগামী ২৪ তারিখ বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের পরীক্ষা। নোটিশের পর ওরা এখন কান্নাকাটি করে অস্থির।’

হিজাব-বিষয়ক ‘বিধি’টা কী?

ক্রিমিনাল অফেন্স সংক্রান্ত মামলা বিষয়ে ব্রিটিশরা ১৮৯৮ সালে যে আইন করেছিল,
তার নাম Code of Criminal procedure, সংক্ষেপে CrPC। ওই CrPC-ই পরবর্তীতে ভারত,পাকিস্তান ও স্বাধীন বাংলাদেশের আইন হিসাবে এখনও চলমান টুকটাক কিছু পরিবর্তন সাপেক্ষে।

CrPC এর ৪৮ নং ধারাতে বর্ণিত আছে, একজন আসামীকে ধরতে যাওয়ার সময় যদি উক্ত আসামী ঘরের দরজা জানালা বন্ধ করে রাখে এবং বলার পরও সেগুলো না খুলে প্রতিবন্ধকতা তৈরী করে রাখে, সেক্ষেত্রে জানালা কিংবা ঘরের কোনো অংশ ভেঙে পুলিশ ভেতরে প্রবেশ করে ওই আসামী ধরতে পারে। ঠিক ওই পরিস্থিতিতেও যদি এমন হয় যে, ওই ঘরে অভিযুক্ত ব্যক্তির সাথে এমন কোন নারী আছেন যিনি পর্দাশীল, তাহলে ওই ঘরের দরজা জানালা ভাঙার আগে অবশ্যই ওই পর্দানশীল নারীকে জানাতে হবে যে, রুমের ভেতর এইভাবে প্রবেশ করতে বাধ্য হচ্ছে তারা, তাই উনাকে সময় দেওয়া হচ্ছে যাতে করে উনি ওই সময়ের ভেতর নিজেকে সরিয়ে নিতে পারেন। যাতে করে তার ওই ধর্মীয় পর্দার কোন খেলাপ না হয়।

CrPC এর ৫২ ধারায় বলা আছে, কখনও যদি কোন নারীকে সার্চ করার দরকার হয়, অবশ্যই একজন নারী ব্যক্তি দিয়েই তা করাতে হবে এবং তা হতে হবে অত্যন্ত শালীনতা মেইনটেইন করে।

২০১০ সালে ফ্রান্স নিকাব পরা ব্যান করে একে ক্রিমিনাল অফেন্স হিসাবে ট্রিট করা শুরু করে। ফরাসি ওই আইন ধর্মীয় ও ব্যক্তি স্বাধীনতা হরণ করেছে বলে ফ্রান্সে বাস করা দুইজন মুসলিম নারী জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন (UNHRC) এর দারস্থ হয়। ২০১৮ সালে এসে দীর্ঘ তদন্তের পর
জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন এইমর্মে সিদ্ধান্ত দেয়, এটি ছিল ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সমতার পরিপন্থী।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যে আইনে চলে সেই আইনটার নাম ‘ঢাকা ইউনিভার্সিটি অর্ডার ১৯৭৩’। এই আইনের কোথাও কোনো পরীক্ষার নিকাব-হিজাব পরা নিষিদ্ধ করা হয়নি। তবে এক্সাম কমিটির একটা নিয়ম আছে, পরীক্ষার্থী অরিজিনাল কিনা যাচাই করে দেখা। এর মানে, যদি নিকাব পরিহিত কারো সত্যতা যাচাই করার প্রয়োজন হয়, সেক্ষেত্রে তাকে যাচাই করা যেতে পারে।
সেই যাচাই করার মেথড হতে হবে শালীন।

আলেমরা কী বলছেন

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন ফাতেহকে বলেন, এখন কোন বিশ্ববিদ্যালয় যদি বলে, একটা পর্দানশীল মেয়েকে পরীক্ষায় বসতে হলে তাকে শুধুমাত্র একজন ম্যাডাম নয়, বরং ওই বোর্ডের অন্য পুরুষ পরীক্ষক কর্তৃকও চেক করে দেখতে হবে, সেটা রীতিমতো অযৌক্তিক। পর্দানশীল কোন নারী শিক্ষার্থীকে পরীক্ষার হলে নিশ্চিত হওয়ার জন্য যদি মুখের নিকাব খুলে চেক করার প্রয়োজন পরে, সেক্ষেত্রে তাকে অন্য একজন নারী শিক্ষক কিংবা কোন নারী অফিসিয়াল স্টাফ দ্বারা চেক করে নিশ্চিত হওয়াটাই যথেষ্ট। আর কোন কর্তৃপক্ষের যদি নারী লোকবলের অভাব থাকে,তাহলে প্রযুক্তিগত বহু উপায় আছে, ফিঙ্গারপ্রিন্ট শনাক্তকরণ কোন প্রযুক্তি ব্যবহার করলেই হয়ে যায়।

তিনি আরও বলেন, ‘একজন মুসলিম মেয়ে হিজাব-নিকাব পরে পরীক্ষা দিতে পারবে না, কেমন কথা এটা। আমি মনে করি, এর বিরুদ্ধে সবার সজাগ হওয়া দরকার।’

সদুত্তর নেই কর্তৃপক্ষের

এ প্রসঙ্গে কথা হয় ঢাবি বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কানিজ ফাতেমার সঙ্গে। তিনি ফাতেহকে বলেন, ‘পরিচয় শনাক্তকরণের জন্য এ নিয়মটি করা হয়েছে। অনেকে পরীক্ষার সময় ব্লুটুথ হেডফোন ব্যবহার করে। তাদেরকে চেক দেয়ার জন্যই এ নিয়মের প্রবর্তন।’

গণমাধ্যমের খবর হলো, ঢাবিতে ছেলেরাও প্রক্সি দিচ্ছে। তাহলে নিকাব না পড়লেও প্রক্সি দেয়ার সম্ভাবনা আছে। কানিজ ফাতেমা বলেন, ‘যে ডিপার্টমেন্টে ছেলে প্রক্সি দিয়েছে, এটা তাদের ব্যর্থতা।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধিতে শনাক্তকরণের জন্য তো নিকাব খুলে রাখার নিয়ম নেই। হয়ত সামান্য সময়ের জন্য খোলা যেতে পারে, তাও নারী শিক্ষকের সামনে। কানিজ ফাতেমা বলেন, ‘নিকাব খুলে রাখার নিয়ম নেই। আমরা ক্লাসে ত খুলে রাখতে বলছি না। শুধু পরীক্ষায় খুলতে বলেছি।’

নিকাব না খুলেও আধুনিক টেকনোলজি ব্যবহার করে শনাক্ত করা যায়। সেটা ব্যবহার করা হচ্ছে না কেন? কানিজ ফাতেমা বলেন, ‘সেটা ত আমরা করতে পারব না। করবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কর্তৃপক্ষ সেটা কেন করছে না, তাতো আমি জানি না।’

The post ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হিজাব-নিকাবে বাধা appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%a2%e0%a6%be%e0%a6%95%e0%a6%be-%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%b6%e0%a7%8d%e0%a6%ac%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%a6%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%b2%e0%a6%af%e0%a6%bc%e0%a7%87-%e0%a6%b9%e0%a6%bf%e0%a6%9c/

Wednesday, December 21, 2022

খেলা নিয়ে উন্মাদনা বাড়ছে, আলেম সমাজের উদ্বেগ

মুনশী নাঈম:

চায়ের দোকানটায় একটা জটলা। কয়েকজন তরুণ উবু হয়ে মোবাইলে ক্রিকেট খেলা দেখছে। দোকানজুড়ে তারই আলোচনা। খোদ দোকানিও চা বানাতে বানাতে খেলার খোঁজ নিচ্ছেন। সেজন্য আমাকে চা দিতে খানিক দেরীই হলো। দেখে মনে হলো, ফুটবল বিশ্বকাপ শেষ হলেও শেষ হয়নি তার রেশ। অলিতে-গলিতে এখনও খেলার আলোচনা। বিশ্লেষকরা বলছেন, কেবল ফুটবল বিশ্বকাপই নয়, বাংলাদেশে বিভিন্ন জনরার খেলা নিয়ে ক্রমশ উন্মাদনা বাড়ছে।

বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দেশের আলেমরা। তারা বলছেন, খেলার উন্মাদনা সীমা ছড়িয়ে যাচ্ছে দিনদিন। এতে যেমন পার্থিব ক্ষতি হচ্ছে, তেমনি ক্ষতি হচ্ছে ব্যক্তিগত ঈমান-আমলেরও। এই ক্ষতিটা যখন প্রকট হয়ে প্রকাশ পাবে, সেটা হবে ভয়ংকর।

পার্থিব ও পরকালের ক্ষতি

এ প্রসঙ্গে কথা হয় মুফতি মিজানুর রহমান সাঈদের সঙ্গে। তিনি ফাতেহকে বলেন, ‘বিষয়টি ভয়ংকর উদ্বেগের। কারণ, ইসলাম খেলাধূলার অনুমতি দিয়েছে শর্তসাপেক্ষে। এই খেলার মাধ্যমে কারও কোনো ক্ষতি হতে পারবে না। রাসুল সা. এবং সাহাবিরা বিভিন্ন সময় তির এবং দৌড় খেলা খেলতেন। কুস্তি খেলা খেলতেন। রাসুল সা. হজরত আয়েশাকে সেই দেখাতেনও। কিন্তু বর্তমানে খেলা নিয়ে যে উস্মাদনা তৈরী হয়েছে, তা শরিয়তের সীমা ছাড়িয়ে গেছে। যেই খেলা ছিল মানসিক প্রশান্তির জন্য, তা আজ মানসিক প্রশান্তি বিনষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘খেলার উন্মাদনায় আমাদের আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে। যেমন আমরা গভীর রাতে খেলা দেখে দিনে অনেকেই দোকান খুলে না। জিজ্ঞেস করলে বলে, রাতে খেলা দেখেছি। তাই দোকান খুলতে দেরী হয়েছে। অনেকে প্রিয়দলের পতাকা টানিয়ে, বিভিন্ন আয়োজন করে টাকা উড়াচ্ছে। এই খেলাকে কেন্দ্র করে দেদারসে চলছে জুয়ার রমরমা বাজার। তারপর আবার প্রিয় দল খেলায় না জিতলে অনেকে হার্ট এট্যাক করে, কেউ আত্মহত্যা করে। অন্তত মানসিকভাবে কষ্ট পায় না, এম খুবই কম আছে। খেলা নিয়ে দ্বন্দ্বে অনেক জায়গায় ঝগড়া হয়, মানুষ শারীরীকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পার্থিব দিক দিয়ে তো ক্ষতি আর ক্ষতিই। লাভের কোনো দিক চোখ পড়ে না।’

মুফতি মিজানুর রহমান সাঈদ আরও বলেন, ‘শুধু পার্থিব ক্ষতি হচ্ছে না, ক্ষতি হচ্ছে ব্যক্তিগত ঈমান-আমলেরও। এসব খেলায় অনেকের সতর ঢাকা থাকে না। সেসব দৃশ্য আমরা দেখছি। দেখছি নারী-পুরুষের ফ্রি-মিক্সিংও। খেলার সময় নামাজের সময়ের খবর থাকে না। হারাম-হালালের কোনো তোয়াক্কা থাকে না। এমনকি খেলা দেখতে দেখতে ঈমান-আমলের কমতির অপরাধবোধও জন্ম নেয় না। এই খেলার উন্মাদনায় যে ফরজ নামাজ ছেড়ে দিচ্ছি, হারামে জড়িয়ে যাচ্ছি, তার কোনো অনুভূতি থাকে না। পাপের সবচে বড় ক্ষতিকর দিক হলো, মন থেকে পবিত্র অনুভূতিগুলো দূর করে দেয়। খেলা আমাদের সঙ্গে সেটাই করছে।’

‘কথিত’ বক্তাদের উসকানি

মাহফিলে বিভিন্ন বয়ানে কতিপয় বক্তা খেলা নিয়ে কথা বলেন। তাদের কথা বলার ভঙ্গি থাকে কৌতুকমূলক। তাদের কথা থেকেই নির্দিষ্ট দলের প্রতি তাদের পক্ষপাত বুঝা যায়। দেশে খেলার উন্মাদনা জিইয়ে রাখার পেছনে তাদের ভূমিকা আছে বলে মনে করেন মুফতি মিজানুর রহমান সাঈদ। তার মতে, এসব বক্তাদের কারণে খেলা নিয়ে ভয়ংকর উন্মাদনার বিষয়টি স্বাভাবিক হয়ে যাচ্ছে। তারা এমন হেসেখেলে খেলা নিয়ে কথা বলেন, মানুষ ভাবে, খেলা নিয়ে উন্মাদনা দেখানোই যায়। আমি ত নামাজ পড়ছি, রোজা রাখছি। এই খেলা আমার ক্ষতি করবে না।

তিনি আরও বলেন, ‘অনেকে আবার বেশি কঠিন করে ফেলেন। বয়ানে বসেই বলে দেন, খেলা হারাম। খেলা দেখাও হারাম। অথচ মূল বিষয়টি তো এমন নয়ত। খেলা তো ইসলামে জায়েজ। কিন্ত তা শরিয়তের সীমায় থেকে। শরিয়তের সীমা লঙ্ঘন করলে সেটা জায়েজ হবে না। জনগণকে এই নোক্তাটুকু বলে দিতে হবে। নয়ত জনগণ ভাববে, ইসলাম একটি নিরস ধর্ম। অথচ ইসলাম একটি স্বভাবজাত ধর্ম। বিনোদন ও উপভোগের শরিয়তসম্মত পদ্ধতি রয়েছে। এগুলোকে ইসলাম নিষেধ করেননি। কিন্তু ইসলাম যতটুকু অনুমতি দিয়েছে, ততটুকুই।’

নষ্ট হচ্ছে আবেগ

এ প্রসঙ্গে কথা হয় জামিয়া আরাবিয়া ইমদাদুল উলুম ফরিদাবাদ মাদরাসার সিনিয়র শিক্ষক মুফতি ইমাদুদ্দিন সাহেবের সঙ্গে। তিনি ফাতেহকে বলেন, ইসলামে খেলাধূলা মানসিক রিফ্রেশমেন্ট ও শরীর চর্চার একটি উপকরণ মাত্র। একজন মুসলিম শরীয়ার সীমানায় থেকেও তা থেকে উপকৃত হবেন। কিন্ত তা যদি হয়ে যায় উন্মাদনা, তাহলে সেটা ভয়ংকর। বর্তমানে আমাদের দেশের অবস্থা হচ্ছে, দেশে সংকটের অভাব নেই। তরুণদের সেসব নিয়ে ভাবনাও নেই। সে তার গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ আবেগ, উচ্ছ্বাস ও উদ্যম সব ব্যয় করছে খেলায়, খেলার বিশ্লষণে।

তিনি এই উন্মাদনার ক্ষতিকর দিক তুলে ধরে বলেন, খেলার উন্মাদনার ক্ষতিটা এক-দুইদিনে প্রকাশ নাও পেতে পারে। কিন্তু এর দীর্ঘমেয়দী প্রভাব আছে। দেখা যাবে কিছুদিন পর আমাদের ছেলেরা দেশের জরুরি রাজনৈতিক-ধর্মীয় জটিলতাগুলো নিয়ে ভাবছে না। আমরা একটা ঈমানী আন্দোলনের ডাক দিলে তারা আসছে না। ঈমানী আন্দোলনের গুরুত্বটাই অনুভব করতে পারছে না। এটা আমদের জন্য বিশাল ক্ষতি। আমাদের আগামী ভবিষ্যত তো তরুণ-যুবকদের হাতে। তারা যদি দেশ-ধর্ম নিয়ে না ভাবে, আর কে ভাববে?’

মুফতি মিজানুর রহমান সাঈদ বলেন, ‘আরেকটি ভয়ংকর দিক হলো, খেলা দেখে দেখে আমাদের তরুণরা খেলোয়ারদের অনুসরণ করছে। তাদের মতো চুল কাটছে, কাপড় পড়ছে। রাসুলের আদর্শ বাদ দিয়ে তারা খেলার মাঠের মানুষদের বানাচ্ছে আদর্শ। এই অনুকরণপ্রিয়তার মধ্য দিয়েই শুরু হয় সাংস্কৃতিক পতন। এই পতন ঠেকাতে রাষ্ট্রর সরকার, আলেম সমাজ এবং অভিভাবকদের ভূমিকা পালন করতে হবে। বিষয়টির ভয়াবহতা ফুটিয়ে তুলতে হবে। দেশের ‍উন্নয়নে, দেশের মেধার উন্নয়নে এর বিকল্প নেই।’

The post খেলা নিয়ে উন্মাদনা বাড়ছে, আলেম সমাজের উদ্বেগ appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%96%e0%a7%87%e0%a6%b2%e0%a6%be-%e0%a6%a8%e0%a6%bf%e0%a6%af%e0%a6%bc%e0%a7%87-%e0%a6%89%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%ae%e0%a6%be%e0%a6%a6%e0%a6%a8%e0%a6%be-%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%a1%e0%a6%bc/

Tuesday, December 20, 2022

ছাত্রলীগের নতুন সভাপতি সাদ্দাম, সম্পাদক ইনান

ফাতেহ ডেস্ক:

ছাত্রলীগের নতুন শীর্ষ নেতৃত্বের নাম ঘোষণা হয়েছে। এতে সভাপতি হয়েছেন সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান।

মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) রাতে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন গণভবন থেকে বের হয়ে তাদের নাম ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ছাত্রলীগের ৩০তম জাতীয় সম্মেলনের ১৩ দিন পর নতুন কমিটি ঘোষণা করা হলো।

এর আগে ৬ ডিসেম্বর রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্রলীগের জাতীয় সম্মেলন হয়। কিন্তু সম্মেলনে ছাত্রলীগের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়নি। তখন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন ২৪ ডিসেম্বরের আগেই নতুন কমিটি ঘোষণা করা হবে।

এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি হয়েছেন মাজহারুল কবির শয়ন এবং সম্পাদক হয়েছেন তানভীর হাসান সৈকত।

এছাড়া ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সভাপতি হয়েছেন রিয়াজ মাহমুদ, সাধারণ সম্পাদক পদে এসেছেন সাগর আহমেদ। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পেয়েছেন রাজীবুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন সজল কুন্ডু।

The post ছাত্রলীগের নতুন সভাপতি সাদ্দাম, সম্পাদক ইনান appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%9b%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%b2%e0%a7%80%e0%a6%97%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%a8%e0%a6%a4%e0%a7%81%e0%a6%a8-%e0%a6%b8%e0%a6%ad%e0%a6%be%e0%a6%aa%e0%a6%a4%e0%a6%bf-%e0%a6%b8/