Tuesday, February 28, 2023

ঢাকায় কম ওজনের শিশু জন্মের কারণ বায়ুদূষণ: গবেষণা

ফাতেহ ডেস্ক:

ঢাকায় সন্তানসম্ভবা মায়েদের ওপর বায়ুদূষণের বিরূপ প্রভাব পড়ছে। রাজধানীতে জন্ম নেওয়া ৩ হাজার ২০৬টি নবজাতককে নিয়ে করা এক গবেষণায় দেখা গেছে, গর্ভাবস্থায় বেশি বায়ুদূষণের শিকার মায়েদের মধ্যে কম ওজনের শিশু জন্ম দেওয়ার হার বেশি। অকালে সন্তান জন্মদানের ঝুঁকিও তাঁদের মধ্যে বেশি।

গবেষণাটি করেছেন আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) গবেষকেরা। গতকাল মঙ্গলবার আইসিডিডিআরবিতে এক অনুষ্ঠানে এই গবেষণার বিস্তারিত আলোচনা হয়। অবশ্য গত নভেম্বরে গবেষণাটির ওপর ভিত্তি করে ‘ঢাকায় বায়ুদূষণ ও গর্ভাবস্থার ফলাফল’ শিরোনামে আট পৃষ্ঠার একটি নিবন্ধ সুপরিচিত সাময়িকী দ্য জার্নাল অব ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড হেলথ-এ প্রকাশিত হয়েছে।

রাজধানীর বায়ুদূষণের তথ্য-উপাত্ত নেয়া হয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তরের উৎস থেকে। আর মা ও নবজাতকের তথ্য-উপাত্ত নেওয়া হয়েছে রাজধানীর আজিমপুরের মা ও শিশু স্বাস্থ্য প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট থেকে।

সাম্প্রতিককালে ঢাকার বায়ুদষণ বড় ধরনের উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফেব্রুয়ারি মাসের ২৮ দিনের মধ্যে এক দিনও ঢাকাবাসী নির্মল বায়ু পাননি। এ মাসে ঢাকার বাতাস অস্বাস্থ্যকর ছিল ১০ দিন, খুবই অস্বাস্থ্যকর ছিল ১৫ দিন এবং দুর্যোগপূর্ণ ছিল ৩ দিন। এর আগে ঢাকায় গত জানুয়ারি মাসে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক দিন দুর্যোগপূর্ণ বায়ুর মধ্যে কাটিয়েছে নগরবাসী। ওই মাসে মোট ৯ দিন রাজধানীর বায়ুর মান দুর্যোগপূর্ণ ছিল, যা গত সাত বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের বায়ুমান গবেষণাকেন্দ্রের হিসাবে, ধুলা ও ধোঁয়া ঢাকার বায়ুদূষণের ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ ভূমিকা রাখে। এ ধুলার বড় উৎস অব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে নির্মাণকাজ, পুরোনো যানবাহনের দূষিত বায়ু; আর ৪০ শতাংশ দূষণের উৎস খড়, কাঠ ও তুষের মতো জৈববস্তুর ধোঁয়া ও সূক্ষ্ম বস্তুকণা। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করেন, দূষণ নিয়ন্ত্রণে সরকারের তেমন কোনো উদ্যোগ না থাকায় এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

The post ঢাকায় কম ওজনের শিশু জন্মের কারণ বায়ুদূষণ: গবেষণা appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%a2%e0%a6%be%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%af%e0%a6%bc-%e0%a6%95%e0%a6%ae-%e0%a6%93%e0%a6%9c%e0%a6%a8%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%b6%e0%a6%bf%e0%a6%b6%e0%a7%81-%e0%a6%9c%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%ae/

সুদানে কাগজের সংবাদপত্রের চাহিদা কমেছে

মুনশী নাঈম:

সুদানে একসময়ের সমৃদ্ধ কাগজের সংবাদপত্র শিল্প হ্রাস পাচ্ছে। গভীর অর্থনৈতিক সঙ্কট এবং অনলাইন পত্রিকার সহজলভ্যতার কারণে এমনটা ঘটছে। সুদানের সংবাদপত্র বিক্রেতা, সম্পাদক ও ইউনিয়নের কর্মকর্তারা বলছেন, সুদানের প্রিন্ট সংবাদপত্রগুলো বছরের পর বছর রাজনৈতিক সেন্সরশিপ এবং অর্থনৈতিক কষ্টের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নাগরিকরা এখন প্রধানত ইন্টারনেটের মাধ্যমে, কখনও কখনও অনলাইন সংবাদপত্র ও সোশ্যাল মিডিয়া থেকে খবর পায়।

অস্তিত্বগত চ্যালেঞ্জ

গত বছর পুনর্গঠিত সুদানী সাংবাদিক সিন্ডিকেটের সেক্রেটারি-জেনারেল মোহাম্মদ আবদেল আজিজ আর জাজিরাকে বলেছেন, ‘প্রথমত, এটা স্পষ্ট যে, মুদ্রণ সাংবাদিকতা গুরুতর অস্তিত্বের চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। পত্রিকার মুদ্রণকপির পরিসংখ্যান দেখলেই তা বুঝা যায়। দ্বিতীয়ত, মুদ্রিত কপির সংখ্যা হ্রাস। যদি আমরা সংবাদপত্রের কথা বলি, তাহলে বিগত বছরগুলোতে মুদ্রিত সংখ্যা প্রায় ১ লাখ ছুঁয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে এই সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। এখন সবচে বেশি মুদ্রিত পত্রিকার মুদ্রণকপি হবে সর্বোচ্চ ১০ হাজার কপি।’

সুদানে ইতোমধ্যেই শত শত সাংবাদিক সাংবাদিকতার পেশা ত্যাগ করে অন্য পেশার পথে হাঁটছে। কেউ চাকরি হারিয়েছে, কেউ ইচ্ছে করেই পেশা ত্যাগ করেছে। ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে সেখানের সংবাদিকদের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি।

মোহাম্মদ আবদেল আজিজের মতে, ছাপাখানা এবং এতে কর্মরত সাংবাদিকদের সমস্যা সমাধান না করে এই সমস্যার সমাধান করা যাবে না। এরমধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হলো, প্রেসের প্রতি সরকারের বিনিয়োগ দৃষ্টি দিতে হবে। এটাকে কেবল নাগরিক জনমতকে আলোড়িত করার পরিষেবা হিসাবে নিলে হবে না।’

সুদান গত চার বছরে একটি জনপ্রিয় অভ্যুত্থান এবং দুটি অভ্যুত্থান সহ বছরের পর বছর ধরে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিরতার সাক্ষী হয়ে আসছে। জ্বালানি ও মৌলিক পণ্যের খরচ বেড়ে যাওয়ায় সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সুদানি মুদ্রার পতন ঘটেছে। বর্তমানে সুদানে একটি কাগজের সংবাদপত্রের দাম প্রায় ৩০০ সুদানিজ পাউন্ড (০.৫৩ ডলার)।

কাগজের প্রেস

কাগজের সংবাদপত্র হিসাবে শুরু হলেও রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কারণে অনলাইনভিত্তিক হয়ে গেছে আল-হাদাসা পত্রিকা। এর প্রধান সম্পাদক ইউসুফ হামাদ আল জাজিরাকে বলেন, ‘আসলে, আমি মুদ্রণ সাংবাদিকতার পক্ষপাতী। আমি আশা করি, কাগজের পত্রিকা কখনও হারিয়ে যাবে না। কারণ, আমাদের সমাজে কাগজের পত্রিকার সরবরাহ করা বিশ্বাসযোগ্যতা প্রয়োজন। আমরা আল হাদাসা পত্রিকা কাগজেই শুরু করেছিলাম। কিন্তু রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে এটি বন্ধ হয়ে যায়। পরে কোভিড ১৯-এর সময় অর্থনৈতিক সমস্যায় পড়ে। ফলে এখন এটি অনলাইনেই কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।’

হামাদ বলেন, রাজধানীর বাইরে সংবাদপত্র বিতরণ দুষ্প্রাপ্য হয়ে পড়েছে।

যে কয়েকজন নাগরিক এখনও কাগজের সংবাদপত্র কেনেন, তাদের মধ্যে একজন আবদেলকাদের হেম্মত। তার মতে, সংবাদপত্র অন্য যে কোনো মাধ্যমের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এগুলো বাস্তবে সংরক্ষণ করা যায়।

তিনি আল জাজিরাকে বলেন, ‘আমি আমার দিনের কাজের শুরু করতাম সংবাদপত্রের শিরোনাম পড়ে। এখন কাগজের ছাপা শেষ হয়েছে। সেখানে ইলেকট্রনিক প্রেস, হোয়াটসঅ্যাপ এবং অন্যান্য মিডিয়া রয়েছে। সেখানেই খবর খুঁজে পাওয়া যায়। তবে কাগজের পত্রিকা অন্যসব পত্রিকা থেকে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এটি ইতিহাস সংরক্ষণ করে। অনলাইনে যে কোনও উপাদান মুছে ফেলা যেতে পারে। কিন্তু কাগজ থেকে মুছে ফেলা যায় না। তাই ইতিহাস এবং বিজ্ঞানের প্রধান মাধ্যম হলো কাগজ।’

মুহাম্মদ নামে একজন সংবাদপত্র বিক্রেতা বলেন, ‘ইলেকট্রনিক প্রেস এবং পঙ্গু অর্থনৈতিক অবস্থা সহ বেশ কিছু কারণে সংবাদপত্র আগের বছরের তুলনায় অনেক বেশি শতাংশ কমে গেছে। ইলেকট্রনিক প্রেসই একমাত্র কারণ নয়। এমন অনেক মানুষ আছেন, যারা এখনও কাগজের সংবাদপত্র পড়েন অভ্যাসবশত। অনেকে কাগজের পত্রিকা কিনেন বিশেষ কোনো সার্কুলার দেখার জন্য। তবে খবর জানার দরকার হলে তারা অনলাইন মিডিয়াতেই ঢুঁ মারে। শিরোনাম পছন্দ হলে তারা পুরো খবর পড়ে। খবরের কাগজের প্রতি মানুষের এখন কোনো অনুরাগ নেই।’ৎ

সূত্র: আল জাজিরা

The post সুদানে কাগজের সংবাদপত্রের চাহিদা কমেছে appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%b8%e0%a7%81%e0%a6%a6%e0%a6%be%e0%a6%a8%e0%a7%87-%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%97%e0%a6%9c%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%b8%e0%a6%82%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%a6%e0%a6%aa%e0%a6%a4%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a7%87/

Monday, February 27, 2023

দেশের ৬২% মানুষ জানে না তারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত

ফাতেহ ডেস্ক:

দেশের ৬১ দশমিক ৫ শতাংশ মানুষ জানে না তাদের ডায়াবেটিস রয়েছে, অর্থাৎ ১০০ রোগীর মধ্যে ৬২ জনই জানে না তারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। গত বছরের এপ্রিলে প্রকাশিত বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার একটি গবেষক দলের এক গবেষণায় এ তথ্য পাওয়া গেছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও ডায়াবেটিস রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. শাহজাদা সেলিম গণমাধ্যমকে বলেন, সারা দেশের বিভিন্ন শহরে এই গবেষণা করা হয়। তাতে দেখা গেছে, ৬২ শতাংশ রোগী তাদের ডায়াবেটিস সম্পর্কে সচেতন না। অথচ এসব রোগীর কিছুদিন পর কিডনি ও চোখ নষ্ট হবে, হার্ট অ্যাটাক হবে, স্ট্রোক হবে। কাজেই তাদের চিকিৎসা শুরু করতে হবে। কিন্তু যেহেতু তার রোগ সম্পর্কে জানে না, তাই সে চিকিৎসাও করাবে না।

২০২০ সালের তথ্যের ভিত্তিতে ইন্টারন্যাশনাল ডায়াবেটিস ফেডারেশন ২০২১ সালে যে হিসাব প্রকাশ করেছিল, তাতে বাংলাদেশে ১ কোটি ৩১ লাখ মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত বলে উল্লেখ করা হয়। এরপর বারডেম একটা গবেষণা করে। সেখানে মোট জনসংখ্যার ২৫ দশমিক ২ শতাংশ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত বলে উল্লেখ করা হয়। সেই হিসাবে বাংলাদেশে ৩ কোটির বেশি ডায়াবেটিস রোগী।

দুটি বিষয় বাংলাদেশে ডায়াবেটিসে বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি করেছে বলে মনে করেন ডায়াবেটিস রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. শাহজাদা সেলিম। তিনি বলেন, একটি হলো কম বয়সীদের বেশির ভাগের ডায়াবেটিস হচ্ছে। বিশ্বের বেশির ভাগ দেশে এ রকম নেই। টাইপ-২ ধরনের ডায়াবেটিস সাধারণত একটু বেশি বয়সীদের হয়। কিন্তু আমাদের এখানে ৭, ১০ ও ১২ বছর বয়সী, অর্থাৎ কম বয়সীদের হচ্ছে।

ডায়াবেটিসের ঝুঁকি সম্পর্কে এই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বলেন, ইন্টারন্যাশনাল ডায়াবেটিস ফেডারেশনের তথ্য অনুযায়ী, ৫০ বছর বয়সেও যদি কারও ডায়াবেটিস হয় এবং ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারে, তাহলে পুরুষদের ক্ষেত্রে সাড়ে ৫ বছর ও নারীদের ক্ষেত্রে সাড়ে ৬ বছর আয়ু কমে যায়। সে হিসাবে আমাদের দেশের কম বয়সীরা ১২-১৫ বছর আগেই মারা যাবে। অথচ দেশের মানুষের গড় আয়ু বেড়েছে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকলে তারা আরও অনেক দিন বাঁচত।

The post দেশের ৬২% মানুষ জানে না তারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%a6%e0%a7%87%e0%a6%b6%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a7%ac%e0%a7%a8-%e0%a6%ae%e0%a6%be%e0%a6%a8%e0%a7%81%e0%a6%b7-%e0%a6%9c%e0%a6%be%e0%a6%a8%e0%a7%87-%e0%a6%a8%e0%a6%be-%e0%a6%a4%e0%a6%be%e0%a6%b0/

দেশের ১০৮ এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনা বেশি হয়: গবেষণা

ফাতেহ ডেস্ক:

দেশের ১০৮টি স্থানকে অতি দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করেছে বেসরকারি সংগঠন রোড সেফটি ফাউন্ডেশন। তিন বছরব্যাপী গণমাধ্যমে প্রকাশিত সড়ক দুর্ঘটনার স্থানগুলো পর্যবেক্ষণ করে সারা দেশে ২২৯টি দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকা চিহ্নিত করেছে সংগঠনটি। দুর্ঘটনার ধরন ও মাত্রা বিশ্লেষণের মাধ্যমে ১০৮টিকে অতি দুর্ঘটনাপ্রবণ ও ১২১টিকে সাধারণ দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকা হিসেবে বিবেচনা করেছে।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের গবেষণায় অতি দুর্ঘটনাপ্রবণ যে ১০৮টি স্থানের তালিকা তুলে ধরা হয়েছে, তার মধ্যে সাত জেলায় সবচেয়ে বেশি, অর্থাৎ চারটি করে উপজেলায় দুর্ঘটনা সবচেয়ে বেশি হয়। এ সাত জেলা হলো টাঙ্গাইল, চট্টগ্রাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, দিনাজপুর, রংপুর, ময়মনসিংহ ও কুমিল্লা। এই সাত জেলায় টাঙ্গাইলের উপজেলাগুলোর মধ্যে বেশি দুর্ঘটনাপ্রবণ ভূঞাপুর, কালিহাতী, ঘাটাইল ও মির্জাপুর। চট্টগ্রামের মীরসরাই, সীতাকুণ্ড, পটিয়া ও চন্দনাইশ উপজেলায় বেশি দুর্ঘটনা হয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার চার দুর্ঘটনাপ্রবণ উপজেলার মধ্যে আছে সরাইল, নবীগঞ্জ, বিজয়নগর ও আখাউড়া। চিরিরবন্দর, বীরগঞ্জ, বিরামপুর ও ফুলবাড়ী—দিনাজপুরের এই চার উপজেলা অতি দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। রংপুরের চার উপজেলা হলো পীরগঞ্জ, কাউনিয়া, পীরগাছা ও বদরগঞ্জ। ময়মনসিংহের চার উপজেলার মধ্যে আছে ভালুকা, গফরগাঁও, নান্দাইল ও ত্রিশাল। আর অতি দুর্ঘটনাপ্রবণ কুমিল্লার চার উপজেলার মধ্যে আছে চান্দিনা, চৌদ্দগ্রাম, ব্রাহ্মণপাড়া ও বুড়িচং।

যেসব এলাকায় বেশি দুর্ঘটনা ঘটছে, তার সাতটি কারণ তুলে ধরেছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন। এর মধ্যে প্রধান কারণ হলো এলাকার সড়কের নকশা ও অবকাঠামোগত ত্রুটি। দ্বিতীয় কারণ হলো সড়কের পারিপার্শ্বিক বিরূপ অবস্থা। গবেষণায় দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সড়ক নিরাপত্তাসংক্রান্ত ব্যবস্থা না থাকা বা ঘাটতি (সাইন, মার্কিং, সড়ক বিভাজক, পূর্বসতর্কতামূলক নির্দেশনা বোর্ড) দুর্ঘটনার একটি কারণ। আবার যানবাহনের উচ্চগতি নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা না থাকা এবং একই সড়কে বিভিন্ন ধরনের যানবাহনের বাধাহীন ও বেপরোয়া চলাচলও দুর্ঘটনার নেপথ্যে কাজ করে। সমস্যা আছে—এমন স্থানে যানবাহন চালনার ক্ষেত্রে চালকদের সক্ষমতার অভাব বা অদক্ষতা থাকলে দুর্ঘটনা ঘটে বলে গবেষণায় দেখা গেছে। এ ছাড়া সড়কের পার্শ্ববর্তী বা সড়কঘেঁষা জনবসতি থাকলে তা দুর্ঘটনা ঘটাতে ভূমিকা রাখে।

এর আগে ২০১৪ সালে ‘সড়কে নিরাপত্তা: বাস্তবতা এবং প্রতিবন্ধকতাসমূহ’ নামের এক গবেষণায় দেখা যায়, দেশের ২০০৯ সালের প্রায় ৫৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা হয়। ব্র্যাকের সহযোগিতায় এ গবেষণা করে পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি)। ওই গবেষণায় দেখা যায় দেশের পাঁচটি জেলা সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনাপ্রবণ। এগুলো হলো কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ ও ঢাকা।

পিপিআরসির গবেষণা ও রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের গবেষণার ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত ৯ বছরে দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকার সংখ্যা বেড়েছে ২০টি।

দুর্বল অবকাঠামোর কারণে সড়কে দুর্ঘটনা ঘটে। তাই সড়কের যেসব স্থানে অহরহ দুর্ঘটনা ঘটছে, সেসব স্থানের নকশা ও অবকাঠামোগত সমস্যার সমাধান করা দরকার বলে রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের সুপারিশে উঠে এসেছে। এ ছাড়া তাদের দেওয়া সুপারিশের মধ্যে আছে সড়ক নিরাপত্তাসংক্রান্ত ঘাটতি নিরসন করা, যানবাহনের গতিসীমা নিয়ন্ত্রণে প্রযুক্তির ব্যবহার করা, একই সড়কে নানা ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধে সার্ভিস লেন অথবা সড়ক বিভাজক তৈরি করা।

রোড সেফটির ফাউন্ডেশনের আগের এক গবেষণায় দেখা গেছে, দেশে কয়েক বছর ধরেই মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার সংখ্যা ও মৃত্যু বাড়ছে। বিশেষ করে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় কিশোর-তরুণদের মৃত্যুর ঘটনা বেশি। গত বছরের (২০২২) জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ১০ মাসে দেশে ২ হাজার ৩টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ২ হাজার ৯৭ জন। তার আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় দুর্ঘটনা ২১ শতাংশ এবং প্রাণহানি ১৯ শতাংশ বেড়েছে।

সড়ক দুর্ঘটনা রোধে তাই এলাকার অপ্রাপ্তবয়স্কদের মোটরসাইকেলসহ অন্যান্য যানবাহন চালানো বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করার সুপারিশ উঠে এসেছে গবেষণায়। সেখানে আর যে দুটি সুপারিশ আছে, সেগুলো হলো সড়কের পার্শ্ববর্তী এলাকার মানুষের মধ্যে নিরাপদে সড়ক ব্যবহার বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করা এবং দুর্ঘটনাপ্রবণ স্থানগুলো আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নজরদারির আওতায় নিয়ে আসা।

The post দেশের ১০৮ এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনা বেশি হয়: গবেষণা appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%a6%e0%a7%87%e0%a6%b6%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a7%a7%e0%a7%a6%e0%a7%ae-%e0%a6%8f%e0%a6%b2%e0%a6%be%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%af%e0%a6%bc-%e0%a6%b8%e0%a6%a1%e0%a6%bc%e0%a6%95-%e0%a6%a6%e0%a7%81/

ভূমিকম্পের পর তুরস্ক কিভাবে বাজার স্থিতিশীল রেখেছিল?

মুনশী নাঈম:

তুরস্ক যখন দেশের দক্ষিণে ৬ ফেব্রুয়ারির ভূমিকম্পের ধ্বংসস্তুপে বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের খুঁজছিল, ক্ষতিগ্রস্থদের সরানোর যুদ্ধে নিযুক্ত ছিল, দেশটি ঠিক একই সময়ে ধ্বংসস্তূপের উপর সমান গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধে ঘাম ঝরাচ্ছিল। তা হলো—ভূমিকম্পে গৃহহীন হয়ে পড়া মানুষদের মাথা গোঁজার ঠাই দেয়া এবং দেশের বাজার স্থিতিশীল রাখা।

এই ভূমিকম্পে দেশটির ১৯ হাজারের বেশি ভবন সম্পূর্ণভাবে ভেঙে গেছে। ৪৭ হজাার ২১১টি ভবন গুরুতর ক্ষতির কারণে আবাসনের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান ১২ হাজার ২৩৫টি যান, ৭৬টি বিমান, ১২১টি হেলিকপ্টার, ২৬টি জাহাজ এবং ৪৫টি ড্রোন ছাড়াও ৩৫ হাজারের বেশি অভিজ্ঞ উদ্ধার বিশেষজ্ঞ সহ এই অঞ্চলে আড়াই লাখের বেশি সরকারি কর্মচারি উদ্ধার কাজে লাগিয়েছেন। ঘোষণা করেন ৪ নং বিপদ সংকেত। আহ্বান করেন আন্তর্জাতিক সহায়তা। এরমধ্যে ১০০টি দেশ তার আহ্বানে সাড়া দিয়েছে। তাদের মধ্যে ৮৪টি দেশ পাঠিয়েছে ১১ হাজার উদ্ধারকর্মী। ৬১টি দেশ ৪৪৪টি ফ্লাইটে নিয়ে এসেছে ত্রাণ। এরদোগান ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্থ দশটি প্রদেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন এবং এক সপ্তাহের জন্য সারা দেশে শোক ও দুই সপ্তাহের জন্য সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেন।

১১টি রাজ্যে আঘাত হানা ভূমিকম্পের ধ্বংসাত্মক প্রতিক্রিয়া থেকে তুর্কি অর্থনীতি মুক্ত ছিল না। কারণ, আক্রান্ত অঞ্চলেই রয়েছে বৃহত্তম তুর্কি কারখানার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। বিশেষ করে গাজিয়ান্তেপ এবং কাহরামানমারাশে। ভূমিকম্পের পর মাত্র তিনদিনে ১৫ শতাংশ পতন হয়েছিল ইস্তাম্বুল স্টক এক্সচেঞ্জ সূচকে। ডলারের বিপরীতে তুর্কি লিরার মান কমে গিয়েছিল এক শতাংশ।

বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করেন, ভূমিকম্পের প্রতিক্রিয়ায় আঙ্কারার গৃহীত পদক্ষেপগুলোর ফলে কিছুটা স্থিতিশীলতা এসেছে। এতে স্থানীয় অর্থনীতির মোট ক্ষতি সীমিত থেকেছে।

আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছে সরকার

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগান ভূমিকম্পের পর প্রথম দিনই অনুসন্ধান, উদ্ধার ও ত্রাণ কাজের জন্য ১০০ বিলিয়ন লিরার (৫ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি) একটি তহবিল ঘোষণা করেন।

আবাদ সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের অর্থনৈতিক বিষয়ের গবেষক খালেদ তুর্কাউই আল জাজিরাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘তুর্কি প্রেসিডেন্টের এই তহবিল ঘোষণা ছিল বাজার সুরক্ষার জন্য সরকারের নেওয়া সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এই তহবিল ঘোষণা মানুষকে ভরসা দিয়েছিল যে, সমস্ত সঙ্কটে রাষ্ট্র তাদের পাশে আছে।’

অর্থনীতিতে আরও আত্মবিশ্বাস জাগিয়ে তোলার এবং ক্ষয়ক্ষতি নিয়ন্ত্রণের প্রয়াসে তুর্কি সরকার ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য আর্থিক সহায়তার একটি প্যাকেজও ঘোষণা করেছে। পদক্ষেপ নিয়েছে আর্থিক ও পণ্যের বাজারকে স্থিতিশীল করার। ১৫ ফেব্রুয়ারী থেকে সরকার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের অ্যাকাউন্টে ১০০০০ লিরা (৫৩০ ডলারের সমতুল্য) জমা করা শুরু করে। এর আগেই এরদোগান ঘোষণা করেছিলেন, ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত সকলকে সরকার আবাসন প্রদান করবে।

আর্থিক ও পণ্যের বাজারকে স্থিতিশীল রাখার প্রচেষ্টা

আর্থিক ও পণ্যের বাজারকে স্থিতিশীল রাখতে ১০ ফেব্রুয়ারি তুরস্কের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ করে। দুর্যোগের সুযোগ নিয়ে পণ্যের দাম অত্যধিক বাড়িয়ে দেয়া ৩৫৩টি কোম্পানিকে ৮৫ মিলিয়ন লিরা জরিমানা করে।

মন্ত্রণালয়ের ভাষ্যমতে, এটি অত্যধিক মূল্যবৃদ্ধি এবং একচেটিয়া চর্চা রোধ করতে সাহায্য করেছে। নাগরিকদের প্রতি অবিচার রোধ ও অন্যায্য মূল্য নির্ধারণ করতে বাধা দিয়েছে।

জরুরী প্রয়োজনীয় ত্রাণ হিসেবে মন্ত্রণালয় দিয়েছে—গরম করার হিটার, তৈরি করা খাবারের পার্সেল, কম্বল, রেইনকোট, হাইজিন কিট, মহিলা এবং বয়স্কদের জন্য স্বাস্থ্যবিধি কিট, স্লিপিং ব্যাগ, শিশুর খাবার, চার্জিং ব্যাটারি, শীতের জুতা এবং আরও অনেক কিছু।

স্থানীয় চাহিদা মেটাতে এবং ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ৩ মাসের জন্য কন্টেইনার হোম এবং প্রিফেব্রিকেটেড বিল্ডিং রপ্তানি নিষিদ্ধ করেছে। ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকায় দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের সাথে সম্পর্কিত উদ্যোগ ও সংস্থার জন্য কন্টেইনার এবং প্রিফেব্রিকেটেড বাড়ির উপর মূল্য সংযোজন কর বছরের শেষ নাগাদ ১৮ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১ শতাংশ করা হয়েছে।

তুর্কি সেন্টার ফর পলিটিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক স্টাডিজ (SITA) এর অর্থনৈতিক বিষয়ের গবেষক ডেনিজ ইস্তিকবাল আল জাজিরাকে বলেন, ‘পণ্য বিক্রেতাদের উপর ভূমিকম্পের পরে আরোপিত জরিমানা জনসাধারণের কাছে পণ্য সহজলভ্য করতে সহায়তা করেছে। সরকারের গৃহীত কিছু পদক্ষেপ ভূমিকম্পের পরে যে কোনও সংকট বা আতঙ্ক রোধ করেছে। সরকারের এসব পদক্ষেপের কারণে ভূমিকম্পের সময় মোকাবেলা করা সহজ হয়েছে।’

অভ্যন্তরীণ আঘাত প্রতিরোধ

অর্থনৈতিক ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা জালাল বক্করের মতে, ভূমিকম্পের পরে তুর্কি অর্থনীতি বেশ একটা ধাক্কা খেয়েছিল। কিন্তু তুর্কি সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণ করে এবং ইস্তাম্বুল স্টক এক্সচেঞ্জে কিছু স্টকের ব্যবসা বন্ধ করে এই ধাক্কা সামলানোর চেষ্টা করে। ফলে তারা আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলির কাছ থেকে ঋণ গ্রহণ ছাড়াই অভ্যন্তরীণভাবে সংকট নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছে।

ভূমিকম্পের পর মাত্র তিনদিনে ১৫ শতাংশ পতন হয় ইস্তাম্বুল স্টক এক্সচেঞ্জ সূচকে। ফলে সরকার ইস্তাম্বুল স্টক এক্সচেঞ্জ আংশিকভাবে বন্ধ করে দেয়। এতে অর্থনীতি কিছুটা রক্ষা পায়। তবে তুরস্কের কিছু প্রধান শহর এবং রাজ্য, যেমন গাজিয়ান্তেপে কাজ স্থগিত করার কারণে, বিশেষত উৎপাদনের স্তরে অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়।

তুর্কি ভাইস প্রেসিডেন্ট ফুয়াদ ওকতে ভূমিকম্পের পরে যারা ভাড়া বাড়ায়, তাদের শাস্তি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেছেন, ‘জনগণের চাহিদা এবং ভূমিকম্পের এলাকা থেকে বাস্তুচ্যুতদের সুবিধা নিয়ে যারা ভাড়া বাড়ায়, আমরা তাদের জবাবদিহি করব।’

গাজিয়ান্তেপে গভর্নর দাউদ গুল ঘোষণা করেছিলেন, রাজ্যের মধ্যে বাড়ি স্থানান্তরের ফি-তে একটি সর্বোচ্চ সীমা নির্ধারণ করা হবে। যাতে বাস্তুচ্যুতদের নির্দিষ্ট দিকে সরে যাওয়ার বিষয়টি দাম বাড়ানোর কারণ হয়।

১৪ ফেব্রুয়ারি বুধবার একযোগে তুরস্ক, তুর্কি সাইপ্রাস এবং আজারবাইজানের সমস্ত মিডিয়ায় ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ফান্ড রাইজিং করা হয়। এতে অনুদান সংগ্রহ করা হয় ৬ বিলিয়ন ডলার। বিধ্বংসী ভূমিকম্পের দুই সপ্তাহ পর তুর্কি কেন্দ্রীয় ব্যাংক পরিসংখ্যানে বলেছে, এই বছরের শেষে দেশটিতে মুদ্রাস্ফীতি হবে ৩৫. ৭৬ শতাংশ। ডলারের মান হবে ২২.৮৪ লিরা।

সূত্র: আলি জাজিরা

The post ভূমিকম্পের পর তুরস্ক কিভাবে বাজার স্থিতিশীল রেখেছিল? appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%ad%e0%a7%82%e0%a6%ae%e0%a6%bf%e0%a6%95%e0%a6%ae%e0%a7%8d%e0%a6%aa%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%aa%e0%a6%b0-%e0%a6%a4%e0%a7%81%e0%a6%b0%e0%a6%b8%e0%a7%8d%e0%a6%95-%e0%a6%95%e0%a6%bf%e0%a6%ad/

কেন্দ্রীয় পরীক্ষাগুলো কতটা যোগ্যতা যাচাই করতে পারছে?

রাকিবুল হাসান নাঈম:

কওমি মাদরাসার কেন্দ্রীয় পরীক্ষাগুলো ছাত্রদের যোগ্যতা সঠিকভাবে যাচাই করতে পারছে না। এক্ষেত্রে সিলেবাস এবং পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের ধরণকে দায়ি করছেন শিক্ষকরা। তারা বলছেন, জেনারেল ধারার শিক্ষার মতো এখানেও ঢুকে গেছে পরীক্ষায় ভালো করার গতানুগতিক প্রতিযোগিতা। ফলে বাড়ছে নোট-গাইড নির্ভরশীলতা এবং আরবি বাদ দিয়ে বাংলায় লেখার প্রবণতা।

কেন্দ্রীয় পরীক্ষাগুলোর মধ্যে বেফাকের অধীনে পরীক্ষা হয় তাইসির, নাহবেমির, শরহেবেকায়া এবং মেশকাতে। তাকমিলের পরীক্ষা হয় হাইয়াতুল উলয়ার অধীনে। নাহবেমিরের প্রশ্নপত্র হয় বাংলায়। ছাত্ররাও পরীক্ষা দেয় বাংলায়। শরহেবেকায়া, মেশকাত ও তাকমিলে প্রশ্নপত্র আরবিতে হলেও অধিকাংশ ছাত্রই উত্তরপত্র লিখে বাংলায়। হাইআতুল উলইয়ার পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এবং সহপরিচালকের সঙ্গে কথা বলে এই চিত্র পাওয়া গেছে।

এ প্রসঙ্গে কথা হয় জামিয়া আরাবিয়া ইমদাদুল উলুম ফরিদাবাদ মাদরাসার সিনিয়র মুহাদ্দিস মাওলানা নজরুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি ফাতেহকে বলেন, ‘মূলত কওমি ধারায় পরীক্ষাটা মূল লক্ষ্য না। মূল লক্ষ্য থাকে ছাত্রদের যোগ্য করে তোলা। তাই শিক্ষকরাও পরীক্ষার ‍উপর জোর দেন না। জোর দেন নিয়মিত ক্লাসে উপস্থিত থাকাকে। তবে যারা সারাবছর ভালো করে পড়াশোনা করে, তার পরীক্ষাতে ভালো করেই।’

যোগ্যতার ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ‘কওমি ধারায় চেষ্টা করা হয়, একজন ছাত্র যেন আরবিতে পূর্ণ যোগ্য হয়ে উঠে। যেহেতু ইসলামের মূল ভাষ্য আরবিতে, তাই। শিক্ষকরা এটাই চেষ্টা করেন। কিন্তু পরীক্ষায় যে বাংলায় লেখার স্রোত তৈরী হয়েছে, এটা হয়েছে অসুস্থ এক প্রতিযোগিতার কারণে। এখন জেনারেল শিক্ষার মতো কওমি শিক্ষাতেও ভালো রেজাল্ট নিয়ে তোড়জোড় দেখা যায়। ছাত্রের মৌলিক যোগ্যতা থাকুক বা না থাকুক। ফলে অনেকে নোট-গাইড পড়ে পরীক্ষায় ভালো করে ফেলছে।’

কেন্দ্রীয় পরীক্ষাগুলো ছাত্রদের যোগ্যতা সঠিকভাবে যাচাই করতে পারছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যোগ্যতা সঠিকভাবে যাচাই করতে পারছে এটা বলা যাবে না। এই না পারার পেছনে দুটি কারণ আছে।

প্রথমত, প্রশ্নপত্রের ধরণ এবং পরীক্ষা সিস্টেম। নাহবেমিরে আরবি পড়া শুরু হয়। ব্যাকরণের প্রথম গ্রন্থ পড়ানো হয়। তাই প্রথম বই পড়েই তাদেরকে কেন্দ্রীয় পরীক্ষায় বসতে হচ্ছে। ফলে তারা আরবিতে লিখতে পারছে না। প্রশ্নপত্রও ঠিকভাবে করা যাচ্ছে না। সহজ করতে হচ্ছে। ফলে যোগ্যতা যাচাইয়ের মানদণ্ড ব্যহত হচ্ছে। এটা না করে যদি হেদায়াতুন্নাহু কিংবা কাফিয়াতে কেন্দ্রীয় পরীক্ষাটা নেয়া হতো, তাহলে যোগ্যতা যাচাইয়ের প্রশ্ন ছিল। কারণ, তখন সে নাহু-সরফের বেশ কয়েকটি কিতাব পড়ে ফেলে। তখন মন খুলে যেমন প্রশ্ন করা যায়, ছাত্ররাও উত্তর দিতে পারে। নাহবেমিরে সে সুযোগ নেই।

দ্বিতীয়ত, আমাদের সিলেবাস। প্রশ্নপত্রের মান উন্নত করতে বোর্ড যেমন তৎপরতা দেখায়, বিভিন্ন সময় উদ্যোগ নেয়, সিলেবাস পরিমার্জন কিংবা উন্নত করতে এই উদ্যোগ দেখা যায় না। ফলে অস্থিরতা তৈরী হয়। মিজনা-নাহবেমির কিতাব দুটি ফারসি ভাষায় লেখা। অনেকেই ফারসি পড়ান না। বাংলায় কিংবা আরবিতে পড়ান। এছাড়াও বিভিন্ন ক্লাসে বিভিন্ন কিতাব পরিমার্জন করা যেতে পারে। যেগুলো ছাত্রদের যোগ্যতা বৃদ্ধি করবে।’

তবে বেফাক বোর্ড মহাপরিচালকের দাবি, চলতি বছর শুরু হওয়া বেফাক পরীক্ষার ধরণে বেশ পরিবর্তন এনেছেন তারা। এতে ছাত্রদের যোগ্যতা যাচাই হবে। মহাপরিচালক মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভি ফাতেহকে বলেন, ‘এবারের প্রশ্নগুলো লক্ষ্য করলে দেখবেন, যারা গাইড নির্ভর পড়াশোনা করেছে, তারা আটকে যাচ্ছে। তারা লিখতে পারছে না। আমরা এবার প্রশ্নপত্রের ধরণ বদলে দিয়েছি। ফলে মূল বই না পড়ে পরীক্ষায় বসলে সে লিখতে পারবে না। সামনে এটা আরও পরিবর্তন হবে।’

কয়েকজন শিক্ষক ফাতেহকে জানিয়েছেন, এবারের বেফাক পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের ধরণ বদলেছে। যারা গাইডনির্ভর পড়াশোনা করেছে, তারা ভালো করতে পারছে না। বরং যারা মুল কিতাব ভালো করে পড়েছে, তারাই ভালো করছে।

The post কেন্দ্রীয় পরীক্ষাগুলো কতটা যোগ্যতা যাচাই করতে পারছে? appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%95%e0%a7%87%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%a6%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a7%80%e0%a6%af%e0%a6%bc-%e0%a6%aa%e0%a6%b0%e0%a7%80%e0%a6%95%e0%a7%8d%e0%a6%b7%e0%a6%be%e0%a6%97%e0%a7%81%e0%a6%b2%e0%a7%8b-%e0%a6%95/

Sunday, February 26, 2023

ফাঁকা নাগরিক সনদপত্রে স্বাক্ষর করতে পারবেন না ইউপি চেয়ারম্যানরা

ফাতেহ ডেস্ক:

সাতক্ষীরা জেলার সদর উপজেলার কুশখালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আব্দুল গফফার একটি অপূরণকৃত নাগরিক সনদপত্র স্বাক্ষর করেন। এ কারণে তাকে সতর্ক করার পর দেশের অন্য ইউপি চেয়ারম্যানদের এ কাজ না করতে নির্দেশনা দিয়ে চিঠি দিয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ।

সম্প্রতি স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে দেশের সব জেলা প্রশাসককে এ চিঠি পাঠানো হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়, সাতক্ষীরা জেলার সদর উপজেলার কুশখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আব্দুল গফফার গত ১৬ জুন একটি অপূরণকৃত নাগরিক সনদপত্র স্বাক্ষর করেন। এ অভিযোগে তাকে ১৯ জুলাই এ বিভাগ থেকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। তার প্রেক্ষিতে তিনি জবাব প্রেরণ করেন এবং নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন।

‘উপজেলা নির্বাহী অফিসারের পাঠানো প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বর্ণিত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে অপূরণকৃত নাগরিক সনদপত্র স্বাক্ষর করে জারি করার অভিযোগে এর আগে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় থেকে সতর্ক করা হলে তারপর থেকে আর কোনো অপূরণকৃত নাগরিক সনদ বা প্রত্যয়নপত্রে স্বাক্ষর করেননি। কুশখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আব্দুল গফফার ভবিষ্যতে সরকারি দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন এবং বিধি-বিধান অনুসরণের নির্দেশনা প্রদান করে এ বিভাগ থেকে কঠোরভাবে সতর্ক করা হয়েছে।’

এতে আরও বলা হয়, এ অবস্থায় সাতক্ষীরা জেলার সদর উপজেলার কুশখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আব্দুল গফফারের মতো কোনো ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অপূরণ করা নাগরিক সনদপত্র স্বাক্ষর করে যেন জারি না করেন, সে বিষয়ে তার জেলাধীন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের নির্দেশনা দেওয়ার জন্য নির্দেশক্রমে সবিনয়ে অনুরোধ করা হলো।

The post ফাঁকা নাগরিক সনদপত্রে স্বাক্ষর করতে পারবেন না ইউপি চেয়ারম্যানরা appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%81%e0%a6%95%e0%a6%be-%e0%a6%a8%e0%a6%be%e0%a6%97%e0%a6%b0%e0%a6%bf%e0%a6%95-%e0%a6%b8%e0%a6%a8%e0%a6%a6%e0%a6%aa%e0%a6%a4%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a7%87-%e0%a6%b8%e0%a7%8d/

ইসরাইলের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক না করার প্রতিশ্রুতি ওমানের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

ইসরাইলের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক না করার প্রতিশ্রুতি ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে দিয়েছে ওমান। সামা নিউজ এ খবর জানিয়েছে।

ইসরাইলি চ্যানেল ১২, সামা নিউজ জানায়, ইসরাইলি বিমানকে ওমান তার আকাশের ওপর দিয়ে উড্ডয়নের অনুমতি দেয়ার পর দেশটি এই প্রতিশ্রুতি দেয়।

চ্যানেল ১২ জানঅয়, এই প্রতিশ্রুতির বিনিময়েই ইসরাইলি এয়ারলাইন্সগুলোর জন্য আকাশপথ খুলে দেয়ার ওমানি সিদ্ধান্তের নিন্দা করেনি ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ।

গত বৃহস্পতিবার ইসরাইলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইলি কোহেন ঘোষণা করেন, ওমান তার আকাশপথ দিয়ে ইসরাইলি বিমান চলাচলের অনুমতি দিয়েছে। তিনি একে ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত হিসেবে অভিহিত করে জানান, এর ফলে এশিয়ার বিভিন্ন দেশে আরো কম সময়ে চলাচল করতে পারবে ইসরাইলি বিমান।

সূত্র : মিডল ইস্ট মনিটর

The post ইসরাইলের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক না করার প্রতিশ্রুতি ওমানের appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%87%e0%a6%b8%e0%a6%b0%e0%a6%be%e0%a6%87%e0%a6%b2%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%b8%e0%a6%be%e0%a6%a5%e0%a7%87-%e0%a6%b8%e0%a6%ae%e0%a7%8d%e0%a6%aa%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%95-%e0%a6%b8%e0%a7%8d/

Saturday, February 25, 2023

বাংলাদেশি হাজিদের বিমানভাড়া এত বেশি কেন?

মুনশী নাঈম:

প্রতি বছর বাড়ছে হজে যাওয়ার খরচ। বিমান ভাড়াসহ সব খরচ মিলিয়ে চলতি বছর হজ প্যাকেজ ৬ লাখ ৮৩ হাজার ১৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় ১ লাখ ৫৫ হাজার ৬৭৫ টাকা বেশি। এর মধ্যে গত বছরের চেয়ে চলতি বছর বিমানের ভাড়াই বেড়েছে ৫৮ হাজার টাকা। গত চার বছরে হজ প্যাকেজের মূল্য বেড়েছে ৩ লাখ ৩৮ হাজার টাকা। আর ২০১৭ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বিমান ভাড়া বেড়েছে ৭৯ হাজার ২৬৩ টাকা। এই ভাড়া গত বছরের চেয়ে বেড়েছে ৫৮ হাজার টাকা।

হাব ও হজ এজেন্সিগুলো বলছে, সরকার চাইলে বিমান ভাড়া আরও কমাতে পারতো। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে হজের ভাড়া কম। দেশের মানুষের কথা চিন্তা করে তারা ভর্তুকি দেয়। না হলে অন্তত যা খরচ হয় সেই ভাড়া নির্ধারণ করে। কিন্তু বাংলাদেশে রাষ্ট্রায়ত্ত এয়ারলাইন্স বিমান এককভাবে অতিরিক্ত মুনাফায় ভাড়া প্রস্তাব করে। সারা বছর লোকসান কমায় হজের মৌসুমে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করে। হজ ফ্লাইট থেকে বিমান ৮০-১৫০ কোটি টাকা পর্যন্ত মুনাফা করে। বিমানের আয়ের ১৫ শতাংশ হয় হজ ফ্লাইট থেকে।

জানা গেছে, চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে হজ করতে যাবেন ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন। তাদের বহন করবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, সৌদি আরবের সৌদি ও ফ্লাইনাস এয়ারলাইন্স। বিমান ৫০ শতাংশ যাত্রী বহন করবে। বিমানের প্রস্তাবিত ভাড়ার ভিত্তিতে ভাড়া নির্ধারণ করে ধর্ম মন্ত্রণালয়। চলতি বছর ভাড়া ৭০ হাজার টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব দেয় বিমান। এর প্রেক্ষিতে ৫৮ হাজার টাকা বৃদ্ধি করে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

বিমান কর্তৃপক্ষের দাবি

বিমান কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সাধারণ ফ্লাইটের চাইতে হজ ফ্লাইটে খরচ অনেক বেশি হয়। ফ্লাইট এমনভাবে পরিচালনা করা হয় যেখানে সাধারণত অন্যান্য যাত্রীদের নেয়া হয় না। হজ ফ্লাইটে যাত্রীদের সৌদি নামিয়ে খালি ফিরতে হয়, অন্যদিকে আনতে যাওয়ার সময়ও যেতে হয় খালি। তাদের হিসেবে যেহেতু যাত্রীপ্রতি চারবার বিমান উড্ডয়ন করা হচ্ছে সেহেতু ভাড়া সর্বোচ্চ দ্বিগুণ হয়।

তবে প্রতিবেশী দেশ ভারতে হজের সাধারণ সময়কার সমানই বিমান ভাড়া নেয় হাজিদের থেকে। বাংলাদেশের তুলনায় দেশটি থেকে হজে বেশি সংখ্যক মানুষ যান। ইন্দোনেশিয়া এবং পাকিস্তানেও ভাড়া নেয়া হয় অন্যান্য সময়ের মতোই।

দ্বিগুণ ভাড়া কেন নেয়া হয় জানতে চাইলে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের জনসংযোগ কর্মকর্তা শাকিল মিরাজ এ প্রশ্নের জবাবে ফাতেহকে বলেন, ‘বিমান বাংলাদেশ অন্যান্য দেশের এয়ারলাইন্স প্রতিষ্ঠানগুলোর তুলনায় ভিন্ন। কারণ বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এবং সৌদি এয়ারলাইন্স হাজিদের জন্য সরাসরি ফ্লাইটের ব্যবস্থা করে। এর মানে হলো ফ্লাইটগুলো কোথাও ট্রানজিট নেয় না। তবে ভারতীয় এবং ইন্দোনেশিয়ার হাজিরা এ সুবিধা পান না। যখন কোনো বিমান ট্রানজিট নেয় তখন সেটি গন্তব্যে পৌঁছাতে চার থেকে ছয় ঘণ্টা বেশি সময় নেয়। এটা হাজিদের ভোগান্তিতে ফেলে। আর বাংলাদেশ থেকে হজে যাওয়ার ব্যক্তিরা অন্যান্য দেশের হাজিদের তুলনায় বেশি বয়স্ক থাকেন। এছাড়া চলতি বছর জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির বিষয়টি তো আছেই। এ কারণেই মূলত এ বছর এত বেশি ভাড়া রাখতে হয়েছে।’

বিশেষজ্ঞরা বলছেন ‘কমানো যেতে পারতো’

এয়ারলাইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিমানের খরচ অনেকটা কমানো যেতে পারে। কিভাবে কমানো যেতে পারে তা উল্লেখ করে বাংলাদেশ বিমানের সাবেক পরিচালক নাফিস উদ্দিন ইমতিয়াজ বলেন, ফ্লাইটগুলোকে এয়ারপোর্টকে টাকা দিতে হয় সেখানে কতজন যাত্রী রয়েছেন তা এবং ওজনের ওপর নির্ভর করে। কিন্তু হজ ফ্লাইটের চারবার যাত্রার দুইবারেরই যাত্রী থাকছে না। এছাড়া যাত্রীরা টার্মিনাল ব্যবহার করায়ও যে ফি বিমানবন্দরকে দিতে হয় তাও দিতে হচ্ছে না দুইবার। এছাড়া হজ ফ্লাইটগুলো পরিচালনার জন্য বিমানবন্দরে বিমান তেমন হ্যাংগিং অবস্থায় রাখার দরকার না হওয়ায় এক্ষেত্রেও বেশকিছুটা টাকা বেঁচে যায় এয়ারলাইনগুলোর। এতক্ষেত্র থেকে টাকা বেঁচে যাওয়ায় সৌদি কর্তৃপক্ষকে হজ র‌য়্যালটি ফি দিতে হলেও স্বাভাবিক হিসেবই বলছে বিমান চাইলে যাত্রীপ্রতি অন্তত ২৫ হাজার টাকা কমাতে পারে বিমান কর্তৃপক্ষ।

ট্র্যাভেল এজেন্সিদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ট্র্যাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশের (আটাব) নেতৃবৃন্দ প্রধানমন্ত্রীর কাছে দেওয়া লিখিত আবেদনে বলেছেন, হজযাত্রীদের বিমান ভাড়া এবার অনেক বেশি ধরা হয়েছে। সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রায় প্রত্যেক হজযাত্রীর ব্যয় হবে ৬ লাখ ৮৩ হাজার ১৫ টাকা। পাশাপাশি পশু কোরবানির জন্য ন্যূনতম খরচ হবে ২৮ হাজার ৩৯০ টাকা। গত বছর কোরবানির খরচ ছিল ১৯ হাজার ৬৮৩ টাকা। এ বছর বেড়েছে ৮ হাজার ৭০৭ টাকা। ফলে গত বছরের তুলনায় এবার খরচ বেড়েছে ১ লাখ ৭০ হাজার ৫৭২ টাকা। বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রীদের জন্য সর্বনিম্ন প্যাকেজমূল্য ৬ লাখ ৭২ হাজার ৬১৮ টাকা নির্ধারণ করেছে হাব। এর সঙ্গে কোরবানির খরচ যুক্ত হবে। এ বছর হজযাত্রী বিমানভাড়া ধরা হয়েছে ১ লাখ ৯৭ হাজার ৭৯৭ টাকা, যা গত বছর থেকে ৫৭ হাজার ৭৯৭ টাকা বেশি। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে হজের ব্যয় বেড়েছে ৩ লাখ ৩৮ হাজার ১৫ টাকা। যদিও এ বছর সৌদি সরকার হজের আনুষঙ্গিক ব্যয় কমিয়েছে। বিমানভাড়া যৌক্তিক পর্যায়ে নির্ধারিত করা হলে হজযাত্রীদের আর্থিক ও মানসিক চাপ অনেকটাই হ্রাস পাবে।

এ বিষয়ে আটাবের মহাসচিব আব্দুস সালাম আরেফ ফাতেহকে বলেন, এ বছর হজে খরচ অনেক বেশি ধরা হয়েছে। আগে যেখানে প্রিমিয়াম প্যাকেজের যাত্রীরা ৬-৭ লাখ টাকায় যেতেন, এবার সেখানে সাধারণ প্যাকেজেই খরচ পড়বে ৭ লাখ টাকা। বিশেষ করে বিমানভাড়া অত্যধিক বেশি ধরা হয়েছে। এজন্য হজযাত্রীরা অনেকেই মত পরিবর্তন করেছেন। তারা হজে যেতে পারবেন না বুঝতে পেরে এখন ওমরায় যাচ্ছেন। এ জন্য ওমরাহ যাত্রী এখন অনেক বেড়ে গেছে। হজে বিমানভাড়া সর্বোচ্চ ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা হতে পারত। কিন্তু প্রায় ৩৮ হাজার টাকা বেশি নেওয়া হচ্ছে। হজে খরচ এত বেশি ধরায় এবার ৩০ হাজারের বেশি হজযাত্রী পাওয়া যাবে না বলেও তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।

হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম গণমাধ্যমকে বলেছেন, করোনার আগে যারা হজে যাওয়ার আশায় প্রাক-নিবন্ধন করেছিলেন তাদের বাজেটে টান পড়েছে। তারা যে বাজেটে হজে যাওয়ার টার্গেট করে রেখেছিলেন তার প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে এবারের হজ প্যাকেজ ও বিমানভাড়া। ২০১৯ সালের তুলনায় এই ২০২৩ সালে হজের মাথাপিছু ব্যয় বেড়েছে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ টাকা। সৌদি আরব হজের খরচ না বাড়ালেও টাকার সঙ্গে ডলার ও রিয়ালের বিনিময় হার বেড়েছে। এর চাপ এসে পড়েছে প্যাকেজে। তবে প্রধানমন্ত্রী যদি বিমানভাড়া কমানোর ব্যবস্থা নেন, তাহলে সংগতি হীন হজযাত্রীদের জন্য হজ করার পথ সুগম হতে পারে। হজযাত্রীরা অনেক উপকৃত হবেন এবং তার জন্য দোয়া করবেন।

The post বাংলাদেশি হাজিদের বিমানভাড়া এত বেশি কেন? appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%82%e0%a6%b2%e0%a6%be%e0%a6%a6%e0%a7%87%e0%a6%b6%e0%a6%bf-%e0%a6%b9%e0%a6%be%e0%a6%9c%e0%a6%bf%e0%a6%a6%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%ae%e0%a6%be%e0%a6%a8%e0%a6%ad/

Friday, February 24, 2023

বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানাল রাশিয়া

ফাতেহ ডেস্ক:

ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে উত্থাপিত রেজুলেশনের পক্ষে-বিপক্ষে ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকায় বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানিয়েছে রাশিয়া।

যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেন থেকে রাশিয়ার সেনা প্রত্যাহারের দাবিতে জাতিসংঘে বৃহস্পতিবার একটি প্রস্তাব পাস হয়। ইউক্রেনের উপর মস্কোর আগ্রাসনের বর্ষপূর্তিতে রাশিয়াকে হামলা বন্ধ করতে এবং তার প্রতিবেশী দেশ থেকে সেনা প্রত্যাহার করার জন্য প্রস্তাবটি উত্থাপন করা হয়।

কিন্তু জাতিসংঘে উত্থাপিত প্রস্তাবের পক্ষে বা বিপক্ষে অবস্থান না নিয়ে ‘অ্যাবস্টেনশান’তথা ভোটদানে বিরত ছিল বাংলাদেশ।
এ কারণে এক টুইট বার্তায় বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানিয়েছে ঢাকার রাশিয়া দূতাবাস।

১৯৩ সদস্য দেশের মধ্যে জাতিসংঘের ওই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয় ১৪১ সদস্য। বিপক্ষে ভোট দেয় ৭ দেশ। বিপক্ষে অবস্থান নেওয়া দেশগুলো হল- রাশিয়া, বেলারুশ, উত্তর কোরিয়া, ইরিত্রিয়া, মালি, নিকারাগুয়া ও সিরিয়া।

তবে ভারত-চীন-বাংলাদেশসহ ৩২টি সদস্য এই ভোটদান প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করেনি। ভোটদানে বিরত থাকা দেশগুলো হল-আলজেরিয়া, অ্যাঙ্গোলা, আরমেনিয়া, বাংলাদেশ, বলিভিয়া, বুরুন্ডি, সেন্ট্রাল আফ্রিকা রিপাবলিক, চীন, কঙ্গো, কিউবা, এল সালভাদর, ইথিউপিয়া, গ্যাবন, গিনি বিসাউ, ভারত, ইরান, কাজাখাস্তান, কিরগিজিস্তান, লাওস, মঙ্গোলিয়া, মোজাম্বিক, নামিবিয়া, পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলঙ্কা, সুদান, তাজিকিস্তান, টোগো, উগান্ডা, উজবেকিস্তান, ভিয়েতনাম ও জিম্বাবুয়ে।

উল্লেখ্য, গতকাল ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ নামে রুশ আগ্রাসনের এক বছর পূর্ণ হয়েছে।

The post বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানাল রাশিয়া appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%82%e0%a6%b2%e0%a6%be%e0%a6%a6%e0%a7%87%e0%a6%b6%e0%a6%95%e0%a7%87-%e0%a6%a7%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%a6-%e0%a6%9c%e0%a6%be%e0%a6%a8%e0%a6%be%e0%a6%b2/

Thursday, February 23, 2023

বইমেলায় ইসলামি প্রকাশনী: গতবারের তুলনায় দ্বিগুণ বিক্রি

রাকিবুল হাসান নাঈম:

ঢাকার বাতাসে এখন নতুন বইয়ের ঘ্রাণ আর মলাট উলটানোর শব্দ। দেশের সবচেয়ে বড় বইয়ের মেলা এখন বাংলা একাডেমি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। সপ্তাহ খানেক পরই বইমেলার পর্দা উঠবে। এবারের বইমেলায় গত বইমেলার তুলনায় দ্বিগুণ বই বিক্রি হয়েছে ইসলামী প্রকাশনীর স্টলগুলোতে। প্রকাশনা কর্তৃপক্ষ বলছেন, গতবারের তুলনায় এবারের বিক্রিবাট্টা বেশ ভালো। সেটা দ্বিগুণেরও বেশি।

অমর একুশে এ গ্রন্থমেলায় প্রায় ছয়শটি স্টল থাকলেও ইসলামি প্রকাশনীগুলোর মধ্যে স্টল বরাদ্দ পেয়েছে মাত্র আটটি প্রকাশনী। স্টল বরাদ্দ পাওয়া ইসলামি প্রকাশনাগুলো হলো: রাহনুমা প্রকাশনী, সিয়ান পাবলিকেশন, হুদহুদ প্রকাশন, সন্দ্বীপন প্রকাশন, সত্যায়ন প্রকাশন, বইঘর, বিশ্বকল্যান পাবলিকেশন্স এবং বাড কম্প্রিন্ট এন্ড পাবলিকেশন্স।

কথা হয় সন্দ্বীপন প্রকাশনের কর্ণধার রুকনুদ্দিনের সঙ্গে। বইমেলার বেচাবিক্রি সম্পর্কে জানতে চাইলে ফাতেহকে তিনি বলেন, ‘এবার বেশ ভালো বই বিক্রি হচ্ছে।’ ভালো বলতে দ্বিগুণ হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দ্বিগুণের চেয়ে বেশি হবে।’

এবারের মেলায় সন্দ্বীপনের নতুন দুটি বই ‘প্রাচ্যবাদের ইতিকথা’ এবং ‘ইমোশনাল ইন্টেলিজেন্স’ বেশ ভালো বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও বিক্রি হচ্ছে ‘বিপদ যখন নেয়ামত’ এবং ‘হিজাব আমার পরিচয়’ বই দুটি। মেলার শেষ শুক্রবারে ‘প্রোপাগান্ডা’ এবং ‘মিশন ইসলাম’ নামে আরও দুটি বই প্রকাশ পাবে। তবে সন্দ্বীপনের শিশুতোষ বইগুলো বেশ ভালো যাচ্ছে বলেও জানান তিনি।

গতবারের তুলনায় এবার দ্বিগুণের বেশি বিক্রি হয়েছে সত্যায়নের বইও। এবার প্রকাশনীটি থেকে আরিফ আজাদের ‘কুরআনে থেকে নেওয়া জীবনের পাঠ’ বইটি প্রকাশিত হয়েছে। ফলে তাদের বিক্রিও বেড়েছে আশাতীত। প্রকাশনী সূত্রে জানা গেছে, এবার মেলায় তাদের বিক্রির তালিকায় বেশ ভালো অবস্থানে আছে ‘পরিমিত খাবার গ্রহণ’ ‘থামুন, পথ দেখাবে কুরআন’ এবং ‘ইসলামি জীবন ব্যবস্থার মূলনীতি’ বইটি।

বইমেলায় ইসলামী বই গতবারের তুলনায় দ্বিগুণের বেশি বিক্রির বিষয়টি স্বীকার করেছেন হুদহুদ প্রকাশনের কর্ণধার দিলাওয়ার হোসাইনও। তিনি ফাতেহকে বলেন, ‘এবারের বেচাবিক্রি বেশ ভালো। বলা যায়, দ্বিগুণের চেয়ে বেশি গতবারের তুলনায়।’ কারা বেশি বই কিনছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের নিয়মিত পাঠক যারা, তারা অনলাইন কিংবা বাংলাবাজার থেকেই বেশি বই কেনেন। বইমেলায় যারা বই কিনছেন, তাদের অধিকাংশই সাধারণ মানুষ। মাদরাসা পড়ুয়া না। তারা সোৎসাহে বই কিনছেন। এতে আমাদের পাঠকমহল বড় হচ্ছে।’ তাদের মোটিভেশনাল বইগুলো সবচে বেশি বিক্রি হয় বলে জানান তিনি।

রাহনুমা কর্তৃপক্ষ জানায়, এবারের মেলায় তাদের বইও বেশ ভালো যাচ্ছে। মেলার শেষ শুক্রবার রাহনুমা থেকে প্রকাশিত হবে ‘ভিন্ন চোখে’ এবং ‘নারী নাস্তিক মিডিয়াও সংস্কৃতি’ নামে কবি মুহিব খানের দুটি বই। এছাড়াও প্রকাশিত হবে ৮ খণ্ডে রচিত ইয়াহইয়া ইউসুফ নদভীর বই ‘আশারায়ে মুবাশশারা’, সাবের চৌধুরীর অনূদিত বই ‘অটুট পাথর’। আনাস চৌধুরীর অনূদিত বই ‘কুরআন অনুধাবন’।

কয়েকটি ইসলামি প্রকাশনীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা মেলায় স্টল বরাদ্দ না পেলেও বিভিন্ন স্টলকে পরিবেশক রেখে বই বিক্রি করছে। তাদের বইও কন্টেন্ট ভেদে ভালো বিক্রি হচ্ছে।

এবারের মেলায় বই দ্বিগুণ কেন বিক্রি হলো, জানতে চাইলে সন্দ্বীপন প্রকাশনের কর্ণধার বলেন, ‘আমি মনে করি, এটা কন্টেন্টের জোর। আমাদের ইসলামি লেখকরা দারুণ দারুণ সব কন্টেন্ট লিখছেন। যেগুলো মানুষকে খোরাক দিচ্ছে। যেগুলো মানুষকে কিছু শেখাচ্ছে, কিছু ভাবাচ্ছে। ফলে মানুষ এসব বই কিনে মনে করে নিজের উপকার হচ্ছে। ফলে স্বাভাবিক নিয়মেই বইয়ের বিক্রি বেড়ে যাচ্ছে। মানুষকে যদি আমরা তেমন ভালো কন্টেন্ট দিতে না পারতাম, তাহলে বই এত বিক্রি হতো না।’

The post বইমেলায় ইসলামি প্রকাশনী: গতবারের তুলনায় দ্বিগুণ বিক্রি appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%ac%e0%a6%87%e0%a6%ae%e0%a7%87%e0%a6%b2%e0%a6%be%e0%a6%af%e0%a6%bc-%e0%a6%87%e0%a6%b8%e0%a6%b2%e0%a6%be%e0%a6%ae%e0%a6%bf-%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%b6%e0%a6%a8%e0%a7%80/

Wednesday, February 22, 2023

এবার শক্তিশালী ভূমিকম্পে কাঁপল তাজিকিস্তান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

মধ্য এশিয়ার দেশ তাজিকিস্তানে শক্তিশালী ভূমিকম্পের আঘাত হেনেছে। ভূমিকম্পে রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ২। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার সকাল ৫টা ৩৭ মিনিটে দেশটিতে শক্তিশালী এ ভূমিকম্প আঘাত হনে। খবর রয়টার্সের।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের ভূমিকম্প নেটওয়ার্ক কেন্দ্রের বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার চীনের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন সিসিটিভি তাজিকিস্তানে ভূমিকম্পের এই তথ্য সামনে এনেছে।

চীনা এই রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন জানিয়েছে, তাজিকিস্তানে সকাল ৫টা ৩৭ মিনিটে প্রায় ৭ দশমিক ২ মাত্রার একটি ভূমিকম্প হয়েছে।

সিসিটিভি আরও জানিয়েছে, ভূমিকেন্দ্রটির কেন্দ্রস্থল ছিল চীনের নিকটতম সীমান্ত থেকে প্রায় ৮২ কিলোমিটার দূরে এবং জিনজিয়াং অঞ্চলের পশ্চিমাঞ্চলের কাশগড় ও আর্টাক্সে তীব্রভাবে কম্পন অনুভূত হয়েছে।

তবে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।

এর আগে গত ৬ ফেব্রুয়ারি ৭ দশমিক ৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে তুরস্ক ও সিরিয়া। এতে এখন পর্যন্ত ৪৬ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে কেবল তুরস্কেই প্রাণ হারিয়েছেন ৩৮ হাজারের বেশি মানুষ। আহত হয়েছেন আরও লাখ লাখ মানুষ।

এর পর গত মঙ্গলবার তুরস্ক-সিরিয়া সীমান্তে ফের শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ৬ দশমিক ৪ ছিল বলে সেসময় জানায় ইউরোপিয়ান মেডিটেরিয়ান সেন্টার। এ ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা দাড়িয়েছে ৮ জনে।

The post এবার শক্তিশালী ভূমিকম্পে কাঁপল তাজিকিস্তান appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%8f%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%b0-%e0%a6%b6%e0%a6%95%e0%a7%8d%e0%a6%a4%e0%a6%bf%e0%a6%b6%e0%a6%be%e0%a6%b2%e0%a7%80-%e0%a6%ad%e0%a7%82%e0%a6%ae%e0%a6%bf%e0%a6%95%e0%a6%ae%e0%a7%8d%e0%a6%aa%e0%a7%87/

চড়া হজের খরচ, নিবন্ধন করার সাহস করছে না হাজিরা

মুনশী নাঈম:

হজযাত্রীদের চূড়ান্ত নিবন্ধনের সময় শেষের দিকে হলেও এখনও মাত্র সাত শতাংশ হজযাত্রী নিবন্ধন করেছে। গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে হজযাত্রীদের চূড়ান্ত নিবন্ধন শুরু হয়। শেষ হবে আগামীকাল ২৩ ফেব্রুয়ারি। কিন্তু গত ১৪ দিনে মাত্র ৮ হাজার ৮২৭ জন নিবন্ধন করেছেন। অর্থাৎ মোট হজযাত্রীর মাত্র সাত শতাংশ নিবন্ধন হয়েছে।

কোনো ব্যক্তিকে হজে যেতে এখন প্রাক-নিবন্ধন ও নিবন্ধন দু’টি ধাপ পার হতে হয়। প্রাক-নিবন্ধন সারা বছরই চলে। ৩০ হাজার টাকা দিয়ে প্রাক-নিবন্ধনয় করা যায়। হজের আগে প্রাক-নিবন্ধিত ব্যক্তিকে চূড়ান্ত নিবন্ধন করতে হয়।

হজ এজেন্সির মালিকরা বলছেন, হজের খরচ বেড়ে যাওয়ায় মানুষের জন্য ব্যয় মেটানো কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। এজন্য যারা প্রাক-নিবন্ধন করেছেন তাদের অনেকেই এত টাকা খরচ করে হজে যেতে চাচ্ছেন না। তারা এখন ওমরাহ পালনে যেতে চাচ্ছেন। এ কারণে এখন ওমরাহ যাত্রী অনেক বেড়ে গেছে।

এ বছর আগেভাগেই হজের কার্যক্রম শুরু করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। গত ১ ফেব্রুয়ারি সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যেতে খরচের প্যাকেজ ঘোষণা করেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী। তিনি জানান, এ বছর সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যেতে একটি মাত্র প্যাকেজে খরচ হবে ৬ লাখ ৮৩ হাজার ১৫ টাকা। এর সাথে কোরবানির খরচ ২৮ হাজার ৩৯০ টাকা যুক্ত হবে। যাতে হজযাত্রীরা সি ক্যাটাগরির সুবিধা পাবেন। গত বছরের তুলনায় এবার খরচ বেড়েছে এক লাখ ৭০ হাজার ৫৭২ টাকা। সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যাওয়ার সর্বনিম্ন প্যাকেজ ৬ লাখ ৮৩ হাজার ১৮ টাকা। এছাড়া বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় প্যাকেজের মূল্য ৬ লাখ ৫৭ হাজার টাকা।

এ প্রসঙ্গে কথা হয় ইউনিভার্সাল হজ এজেন্সির মালিক তানভির আহমেদের সঙ্গে। ফাতেহকে তিনি বলেন, ‘অন্যবারের তুলনায় এবার হজের খরচ বেশি। তাই মানুষ নিবন্ধন করতে সাহস পাচ্ছে না। নিবন্ধনের সময় আরও বাড়ানো হবে৷ আশা করি, পূর্ণ হয়ে যাবে।’

কোন খাতে কত খরচ হচ্ছে, তা তুলে ধরেছেন তানভির আহমেদ। বিভিন্ন খাতের খরচ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিমান ভাড়া ১ লাখ ৯৭ হাজার ৭৯৭ টাকা। মক্কা ও মদীনায় বাড়িভাড়া বাবদ ২ লাখ ৪ হাজার ৪৪ টাকা। জেদ্দা-মক্কা-মদিনা ও মিনা-আরাফা-মুজদালিফায় যাতয়াত ভাড়া ৩৫ হাজার ১৬২ টাকা। বাস সার্ভিস বাবদ ২৮৩৯ টাকা। জমজম পানি ৪২৫ টাকা। সার্ভিস চার্জ তাবুর সি ক্যাটাগরী অনুসারে ১ লাখ ৬০ হাজার ৬৩০ টাকা। মক্কা রুট সার্ভিস ৫২৭। উন্নতমানের বাসভাড়া ১৯ হাজার ৩৩৩ টাকা। দেশে ফেরার লাগেজ ভাড়া ৮৫১ টাকা। ভিসা ফি ৮৫১৭ টাকা৷ স্বাস্থ্য বিমা ৯৪৬ টাকা। এছাড়াও রয়েছে আইডি কার্ড ও ট্যাপ খরচ ৮০০ টাকা। প্রশিক্ষণ ফি ৩০০ টাকা। খাওয়া খরচ ৩৫ হাজার টাকা। হজ গাইড ১৫ হাজার ১৭৫ টাকা। এই মোট ৬ লাখ ৮৩ হাজার ১৪ টাকা।’

তিনি আরও বলেন, ‘হজের পাঁচ দিনে মিনা, আরাফাহ ও মুজদালিফায় মোয়াল্লেমের সেবার ভিত্তিতে চারটি ক্যাটাগরি করা হয়েছে। সর্বনিম্ন ডি ক্যাটাগরির জন্য পাঁচ দিনে খরচ ধরা হয়েছে এক লাখ ৩৬ হাজার ১৩০ টাকা, সি ক্যাটাগরির জন্য এক লাখ ৬০ হাজার ৬৩০ টাকা, বি ক্যাটাগরির জন্য খরচ হবে দুই লাখ ২৪ হাজার ৬২১ টাকা এবং এ ক্যাটাগরির জন্য খরচ ধরা হয়েছে দুই লাখ ৯০ হাজার ৯৩০ টাকা।’

The post চড়া হজের খরচ, নিবন্ধন করার সাহস করছে না হাজিরা appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%9a%e0%a6%a1%e0%a6%bc%e0%a6%be-%e0%a6%b9%e0%a6%9c%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%96%e0%a6%b0%e0%a6%9a-%e0%a6%a8%e0%a6%bf%e0%a6%ac%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%a7%e0%a6%a8-%e0%a6%95%e0%a6%b0%e0%a6%be/

Tuesday, February 21, 2023

সৌদিতে ফেসবুক লাইভে এসে বাংলাদেশি যুবকের আত্মহত্যা

ফাতেহ ডেস্ক:

সৌদি আরবের দাম্মাম ফেসবুকে লাইভ করে আত্মহত্যা করেছেন হাজীগঞ্জের যুবক আরিফুল ইসলাম নয়ন।

তিনি হাজীগঞ্জ উপজেলার ২নং বাকিলা ইউনিয়নের দক্ষিণ শ্রীপুর গ্রামের খানবাড়ির সিরাজুল ইসলামের ছেলে। তার স্ত্রী ও দুই কন্যাসন্তান রয়েছে। তিন ভাইয়ের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়।

আত্মহত্যার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম খান। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে সৌদি আরবের দাম্মামে ভাড়া বাসায় গলায় গামছা পেঁচিয়ে ফেসবুক লাইভে এসে আত্মহত্যা করেন তিনি।

স্থানীয়রা জানান, দক্ষিণ শ্রীপুর বাজারে তার একটি ফ্লেক্সিলোডের দোকান ছিল। গত ১০ মাস আগে ঋণ নিয়ে সৌদি আরবে চাকরির জন্য যান তিনি। কিন্তু ১০ মাসে আকামা না হওয়ায় বেতন পাননি তিনি। এ কারণে সংসার, ঋণের চাপে অসুস্থ হয়ে পড়েন নয়ন। সেই কারণ দেখিয়ে গলায় গামছা পেঁচিয়ে বাসার পাশে আত্মহত্যা করেন তিনি।

 

The post সৌদিতে ফেসবুক লাইভে এসে বাংলাদেশি যুবকের আত্মহত্যা appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%b8%e0%a7%8c%e0%a6%a6%e0%a6%bf%e0%a6%a4%e0%a7%87-%e0%a6%ab%e0%a7%87%e0%a6%b8%e0%a6%ac%e0%a7%81%e0%a6%95-%e0%a6%b2%e0%a6%be%e0%a6%87%e0%a6%ad%e0%a7%87-%e0%a6%8f%e0%a6%b8%e0%a7%87-%e0%a6%ac/

Monday, February 20, 2023

পাঠ্যপুস্তকের বিস্তারিত সংশোধনী দিবে জমিয়াতুল মোদার্রেছীন

রাকিবুল হাসান নাঈম:

পাঠ্যপুস্তক সংশোধন বিষয়ে বিস্তারিত সংশোধনী দিবে মাদরাসা শিক্ষক কর্মচারীদের পেশাজীবী অরাজনৈতিক সংগঠন বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীন। এই সংশোধনী তারা সরকারের গঠিত পুস্তক সংশোধনী কমিটির হাতে তুলে দিবে। এ লক্ষ্যে তারা কাজও শুরু করেছে।

নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পাঠ্যপুস্তকের ভুলগুলো শনাক্ত করতে তারা ১৯ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে। চলতি মাসের ১৭ তারিখ এই কমিটির প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সভায় কী আলোচনা হয়েছে জানতে চাইলে জমিয়াতুল মোদার্রেছীন কেন্দ্রীয় কমিটির মহাসচিব মাওলানা শাব্বির আহমদ মোমতাজী ফাতেহকে বলেন, ‘এটি ছিল ১৯ সদস্যের কমিটির প্রাথমিক সভা। এতে প্রতিটি বইয়ের জন্য আলাদা আলাদা কমিটি নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। তারা সবগুলো বইয়ের সংশোধনী চলতি মাসের ২৮ তারিখ জমা দিবে। এই সংশোধনীর রূপরেখা বিস্তারিত আমরা সরকার-গঠিত সংশোধনী কমিটির কাচে হস্তান্তর করবো।’

তবে পাঠ্যপুস্তকের ভুল সংশোধনের কমিটি নিয়ে সন্তুষ্ট নয় মাদরাসা শিক্ষক কর্মচারীদের এই সংগঠন। চলতি মাসের ৫ তারিখ এক বিবৃতিতে এই কমিটি পুনর্গঠনের জোর দাবি জানিয়েছেন তারা।

এ প্রসঙ্গে মাওলানা শাব্বির আহমদ মোমতাজী ফাতেহকে বলেন, ‘নতুন শিক্ষাক্রমের জন্য ছাপানো পাঠ্যপুস্তকে ইসলামি ঈমান-আকীদা পরিপন্থি বিষয় সন্নিবেশিত হওয়ায় দেশের আলেম-ওলামা, পীর-মাশায়েখ ও বিভিন্ন ইসলামি সংগঠনের পক্ষ থেকে তীব্র প্রতিবাদ উঠে। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর আশু হস্তক্ষেপ কামনা করায় সম্প্রতি ভুল সংশোধন ও ভুলের কারণ বের করার জন্য দুটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কিন্তু যাদের নিয়ে এ কমিটি গঠিত হয়েছে তাদের দ্বারা উদ্দিষ্ট লক্ষ্য আদৌ সম্ভব নয় বলে আমরা মনে করি ‘

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের এ দেশের কোনো পাঠ্যপুস্তকে এমন কোনো বিষয় থাকতে পারবে না যা ইসলামি ঈমান আকীদা, ইতিহাস ঐতিহ্য পরিপন্থি বা এসবের সাথে সাংঘর্ষিক। যাদের কারণে এমন সব বিষয় নতুন শিক্ষাক্রমের পুস্তকে সন্নিবেশিত হয়েছে তাদেরকে নবগঠিত কমিটিতে রেখে সংশোধনের উদ্যোগ নেয়া প্রহসন বৈ কিছুই নয়। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই।’

কমিটি পুনর্গঠনের জোর দাবি জানিয়ে জমিয়তের মহাসচিব বলেন, ‘কমিটিতে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের বিশেষজ্ঞগণের সাথে দেশের আস্থাভাজন বিশেষজ্ঞ আলিম প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। নতুন করে ভুল সংশোধন ও ভুলের কারণ নির্ণয়ের জন্য কমিটি পুনর্গঠন করতে হবে। আমরা মনে করি, আলেমদের অন্তর্ভুক্ত না করলে পাঠ্যপুস্তকে ভুল রয়েই যাবে। তাই আমরা সংশোধনীর বিস্তারিত বিবরণ সরকারের কমিটির হাতে তুলে দিব।’

এর আগে ১৩ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বাংলাদেশ আনজুমানে আল ইসলাহ সভাপতি মাওলানা হুশামুদ্দিন চৌধুরী ফুলতলীর নেতৃত্বে একটি দল সাক্ষাৎ করেন। তারপর প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু ২৪ জানুয়ারি সংবাদ সম্মেলন করে দুটি তদন্ত কমিটি গঠনের ঘোষণা দেন। ৩১ জানুয়ারি ওই কমিটির সদস্যদের নাম প্রকাশ করা হয়।

পাঠ্যপুস্তক সংশোধন এবং এতে বিতর্কিত পাঠ অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে যারা ভূমিকা রেখেছেন তাদের খুঁজে বের করতে গত ৩১ জানুয়ারি এ দুটি কমিটি গঠন করা হয়। একটির নাম ছিল বিশেষজ্ঞ কমিটি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) পরিচালক অধ্যাপক ড. আবদুল হালিম এই কমিটির প্রধান ছিলেন। কমিটিতে ৭ জন সদস্য ছিলেন। এছাড়া দায়ীদের চিহ্নিত করতে ৭ সদস্যের কমিটির প্রধান ছিলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব খালেদা আক্তার।

The post পাঠ্যপুস্তকের বিস্তারিত সংশোধনী দিবে জমিয়াতুল মোদার্রেছীন appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/85613-2/

রোহিঙ্গাদের ভাষানচর পাঠাতে জাতিসংঘের সহায়তা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী

ফাতেহ ডেস্ক:

মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আরও উন্নত ব্যবস্থার ভাষানচরে স্থানান্তর করতে বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারি গুয়েন লুইসের সহায়তা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সকালে গুয়েন লুইস প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে এলে শেখ হাসিনা এ আহ্বান জানান।

বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর স্পীচ রাইটার এম. নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

নজরুল ইসলাম প্রধানমন্ত্রীর উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছেন, শেখ হাসিনা বলেছেন, যেহেতু খুব শিগগির রোহিঙ্গাদের তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর কোনো নিশ্চয়তা নেই, তাই রোহিঙ্গাদের আরও উন্নত ব্যবস্থার ভাষানচরে স্থানান্তর করা উচিত এবং জাতিসংঘ বিষয়ে সহযোগিতা করতে পারে।

শেখ হাসিনা বলেন, দি রোহিঙ্গাদের বসবাসের জন্য জীবিকার ব্যবস্থা সম্পন্ন ভাষানচরে স্থানান্তর করা যায় করা যায়, তাহলে তারা বসবাসযোগ্য পরিবেশে মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপন করতে পারবেন। কারন, এখানে লাখেরও বেশি লোকের আবাসনের ব্যবস্থা রয়েছে। ভাষানচরে উন্নতমানের জীবন যাপন ও রোহিঙ্গা শিশুদের নিজস্ব ভাষায় শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানবিক কারণে বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে আশ্রয় দেওয়া হলেও তারা এখন বাংলাদেশের জন্য বড় ধরণের বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার পর থেকে সহযোগিতার জন্য জাতিসংঘকে ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী এবং জাতিসংঘ এ সহায়তা অব্যাহত রাখবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করে

The post রোহিঙ্গাদের ভাষানচর পাঠাতে জাতিসংঘের সহায়তা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%b0%e0%a7%8b%e0%a6%b9%e0%a6%bf%e0%a6%99%e0%a7%8d%e0%a6%97%e0%a6%be%e0%a6%a6%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%ad%e0%a6%be%e0%a6%b7%e0%a6%be%e0%a6%a8%e0%a6%9a%e0%a6%b0-%e0%a6%aa%e0%a6%be%e0%a6%a0%e0%a6%be/

Sunday, February 19, 2023

তুরস্কে ভূমিকম্প: বিপদগ্রস্তদের পাশে বাংলাদেশের আলেমরা

রাকিবুল হাসান নাঈম:

ভূমিকম্প দূর্গত তুরস্কের মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশের আলেম সমাজ। ইতোমধ্যেই ধাপে ধাপে তাদের ত্রাণ পৌঁছে যাচ্ছে দেশটির দুর্গত মানুষের কাছে। আলেমরা বলছেন, সুযোগ থাকলে তারা সিরিয়াতেও ত্রাণ পাঠাতেন। কিন্তু সুযোগ না থাকায় পারছেন না।

৬ ফেব্রুয়ারি, ভোররাতে তুরস্কের মানুষ যখন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন, তখন দেশটির অন্তত ১০টি প্রদেশে আঘাত হানে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প। ১৯৩৯ সালের পর দেশটির মানুষ এমন ভয়ঙ্কর দুর্যোগের মুখোমুখি হয়নি। ভয়াবহ এই দুর্যোগের ১২ দিন পর নিহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৪৬ হাজার। ধ্বংসস্তূপ থেকে এখনও মরদেহ বের করছে উদ্ধারকারীরা। আল জাজিরার মতে, এখন পর্যন্ত তুরস্কে নিহত হয়েছে ৪০ হাজার ৬৪২ জন। একই সময় পর্যন্ত সিরিয়ায় মৃত্যু হয়েছে ৫ হাজার ৮০০ জনের।

আস- সুন্নাহ ফাউন্ডেশন

ইউরোপিয়ান স্ট্যান্ডার্ডের মাইনাস টেন ডিগ্রিতে ব্যবহার উপযোগী মোট ৮০০০ হাজার জ্যাকেট ত্রাণ হিসেবে তুরস্কে পাঠিয়েছে আস- সুন্নাহ ফাউন্ডেশন।

প্রথম ধাপে তারা তুরস্কের বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে ২৪৭২ টি জ্যাকেট হস্তান্তর করে। জ্যাকেটগুলো ইউরোপিয়ান স্ট্যান্ডার্ডের মাইনাস টেন ডিগ্রিতে ব্যবহার উপযোগী। বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারী) তুরস্কের দূতাবাসের মাধ্যমে দ্বিতীয় ধাপে ৫৫২৮ টি জ্যাকেট সরবরাহ করা হয়েছে। দু’বারে মোট ৮০০০ টি জ্যাকেট হস্তান্তর করা হয়েছে।

আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়েখ আহমাদুল্লাহ জানান, ‘এই সহযোগিতা তুরস্কে ভূমিকম্প দূর্গত মানুষের জন্য আমাদের একটি প্রয়াস। আমার দূতাবাসের সাথে কথা বলে জানতে পারি যে সেখানে প্রচন্ড ঠান্ডায় মানুষ বরফ হয়ে যাবার মতো অবস্থা। সেখানে গরম কাপড়ের প্রয়োজনীয়তা বেশি। তাই আমরা আমাদের সাধ্যমতো জ্যাকেট পাঠানোর ব্যবস্থা করেছি।’

বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতিও এই ত্রাণে অংশগ্রহণ করেছে।

আল মারকাজুল ইসলামী

তুরস্কে ভয়াবহ ভূমিকম্পে শহীদদের জন্য বডি ব্যাগ প্রেরণ করেছে আল মারকাজুল ইসলামী (এএমআই)। আল মারকাজুল ইসলামী প্রথম ধাপে ২ হাজার বডি ব্যাগ পাঠিয়েছে। এরপর দ্বিতীয় ধাপে পাঠিয়েছে আরও ৩ হাজার বডি ব্যাগ। সব মিলিয়ে ৫ হাজার বডি ব্যাগ পাঠিয়েছে সংস্থাটি।

আল মারকাজুল ইসলামী জানায়, ‘স্থানীয় Tika তুর্কির সরকারী সংস্থার ডিপুটি কর্ডিনটার জানান, আমাদের দেশের জন্য বডি ব্যাগ পাঠান। এটাই সবচেয়ে উপকারী। তাই আমরা বডি ব্যাগ পাঠিয়েছি।’

প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান হামজা শহিদুল ইসলাম জানান, স্থানীয় দূতাবাস হতে জানানো হয়, ক্ষতিগ্রস্থ লোকদের অস্থায়ী তাঁবুর জন্য ছোট ছোট জেনেরেটরের প্রয়াজন। আমরা এখন জেনারেটরের চেষ্টা করছি।’

পিসব

তুর্কি নাগরিকদের জন্য সহযোগিতা পাঠাচ্ছে পিসব। প্রথম দিকে তারা তুর্কি দূতাবাসের চাহিদা মোতাবেক ডায়াপার, সেনিটেরি ন্যাপকিন ও জুস পাঠিয়েছিল। পাশাপাশি খেজুর পাঠানোরও চিন্তা করেছিল। কিন্তু দূতাবাসা ভিন্ন কিছু দিতে বলেছিল। পরে তারা কাঠ বাদাম ও কাজু বাদাম পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়।

পিসবের সাধারণ সম্পাদক ইমরান হুসাইন হাবিবী জানান, তারা ৪৬০ পরিবারের জন্য ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকার বাদাম কিনেছেন। আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা ‘গ্লোবাল রিলিফ ট্রাস্ট’-এর মাধ্যমে সিরিয়াতেও সহযোগিতা পাঠানোর চেষ্টা চলছে। এ ছাড়া পিসবের কর্মীরা বিমানবন্দরে ত্রাণ ব্যবস্থাপনায় তুর্কি দূতাবাসকে সহযোগিতা করছে। তারা সেখানে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করছে।

এম.ওয়াই. ফাউন্ডেশন

ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ত্রাণ সহায়তা দিয়েছেন দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ ইসলামী শিক্ষাকেন্দ্র জামিয়া আহলিয়া দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদ্রাসার মহাপরিচালক আল্লামা মুহাম্মদ ইয়াহইয়া প্রতিষ্ঠিত এম.ওয়াই. ফাউন্ডেশন।

এম ওয়াই ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মাওলানা মুহাম্মদ জুনায়েদ বিন ইয়াহইয়ার নেতৃত্বে ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধি দল ঢাকায় বারিধারাস্থ টার্কিশ কোঅপারেশন অ্যান্ড কোঅর্ডিনেশন এজেন্সির (টিআইকেএ) কার্যালয়ে প্রতিষ্ঠানটির কান্ট্রি কো-অর্ডিনেটর সেভকি মের্ট বারিসের কাছে এই ত্রাণ সহায়তার পণ্যসামগ্রী হস্তান্তর করেন। ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ৫০০ জ্যাকেট, ৩০০ টাউজার, ৫০০টি কম্বল, ১০০টি মশারী এবং ২০০ গরম পানি রাখার পট বিতরণের জন্য দেওয়া হয়।

সিম্পল রিজন

ভূমিকম্প দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন মাওলানা হুসাইন আহমদ ও তার চ্যারিটি প্রতিষ্ঠান সিম্পল রিজন। তিনি আল্লামা শায়খ বশির আহমদ শায়খে বাঘা রহ.-এর নাতি এবং একজন বাংলাদেশি বংশদ্ভূত বৃটিশ নাগরিক।

সিম্পল রিজন ব্রিটিশ সরকারের নিবন্ধিত ও বিশ্বস্ত একটি দাতব্য সংস্থা। সংস্থাটি ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্থান ও ফিলিস্তিনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তার কার্যক্রম পরিচালনা করছে। হুসাইন আহমদ ভূমিকম্পের একদিন পরেই তিনি ত্রাণ তৎপরতার জন্য তুরস্কে পৌঁছে এখনো অবস্থান করছেন।

হুসাইন আহমাদ ফাতেহকে জানান, ‘তুরস্কের ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন শহর ঘুরে ঘুরে দেখছি। মানুষকে খাবার কিনে দিচ্ছি। ৬ তারিখ ভূমিকম্প হয়েছে। আমি এসেছি ৮ তারিখ। ২৩ তারিখ পর্যন্ত থাকবো। আমরা গাজিয়ান্তেপ গিয়েছি, সেখানে ত্রাণ দিয়েছি। হাতায়া গিয়েছি। হাতায়াতে সবচে বেশি দালান-কোঠা ধ্বংস হয়েছে। দু’একদিনের মধ্যে আদিয়ামান যাব।’

সিরিয়াতেও কাজ করছে তার সংস্থা সিম্পল রিজন। তিনি বলেন, ‘সিরিয়াতে আমাদের ভলান্টিয়াররা কাজ করছে। প্রথমে আমরা সেখানে ৪ হাজার ডলার পাঠাই। আজ পাঠালাম আরও সাড়ে তিন হাজার ডলার। এই টাকায় সেখানে তাবু নির্মাণ হচ্ছে। তাবুগুলোর বৈশিষ্ট্য হলো, এগুলো ৫ বছর টিকে থাকবে। এগুলোতে বিছানা, কার্পেট, হিটার থাকে।’

তিনি আরও জানান, তিনি এখনও ফান্ড রাইজ করছেন। ইউকেতে ফিরে গিয়ে আরও ফান্ড রাইজ করবেন। ইউকেভিত্তিক কিছু চ্যারিটি প্রতিষ্ঠান তার প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ত্রাণ দিবে। তিনি আবার সেগুলো নিয়ে ফিরে আসবেন।

সিরিয়ায় ত্রাণ দিতে চায় আলেম সমাজ

তুরস্কে ত্রাণ পাঠাতে পারলেও সিরিয়ায় ত্রাণ পাঠাতে পারছেন না আলেমরা। তবে ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে সিরিয়ায় ত্রাণ ও চিকিৎসাসামগ্রী পাঠানো হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে বড় তাঁবু, ছোট তাঁবু, কম্বল, সোয়েটার, শুকনা খাবার ও ওষুধসহ ১১টন সামগ্রী। বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর গ্রুপ ক্যাপ্টেন জামিল উদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে বিমানবাহিনীর ১৭ সদস্যের একটি দল এই ত্রাণসামগ্রী নিয়ে গেছেন।

আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়েখ আহমাদুল্লাহ বলেন, ‘সিরিয়ার চেয়ে ভূমিকম্পে বেশি ক্ষতি হয়েছে তুরস্কে। সেটা পরিসংখ্যান দেখলেই বুঝা যায়। আর তুরস্ক দূতাবাসও ত্রাণ নিচ্ছে। তাই আমরা সহজে তুরস্কে ত্রাণ পাঠাতে পেরেছি। কিন্তু আমরা সিরিয়ায় ত্রাণ পাঠাতে পারছি না। তবে পাঠাতে চাই। সরকার যদি ব্যবস্থা করে দেন, তাহলে আমরা পারব। সরকারে সহযোগিতা ছাড়া ত্রাণ পাঠানো যাবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘তুরস্কের চেয়ে সিরিয়ায় নিহতের সংখ্যা কম। আবার সিরিয়ায় এত বড় বড় দালানকোঠাও নেই। ফলে সেখানে ক্ষতিটাও কম হয়েছে। কিন্তু যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ সিরিয়া। তারা এমনিতেই সাহায্য পাবার যোগ্য। তার উপর ভূমিকম্প। সুতরাং সরকার ব্যবস্থা করে দিলে আমরা সিরিয়াতেও ত্রাণ পাঠাতে চাই।’

পিসবের সাধারণ সম্পাদক ইমরান হুসাইন হাবিবী জানান, তার সংগঠনও সিরিয়াতে ত্রাণ পাঠাতে চায়। তারা চেষ্টা করছেন। তবে সরকারের সহেযোগিতা লাগবে।

উল্লেখ্য, প্রতিবেদনে নাম নেই, এমন আরও অনেক আলেম-উলামা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানই ত্রাণ কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেছে।

The post তুরস্কে ভূমিকম্প: বিপদগ্রস্তদের পাশে বাংলাদেশের আলেমরা appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%a4%e0%a7%81%e0%a6%b0%e0%a6%b8%e0%a7%8d%e0%a6%95%e0%a7%87-%e0%a6%ad%e0%a7%82%e0%a6%ae%e0%a6%bf%e0%a6%95%e0%a6%ae%e0%a7%8d%e0%a6%aa-%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%aa%e0%a6%a6%e0%a6%97%e0%a7%8d/

Saturday, February 18, 2023

অবৈধ ভবন বৈধ করার সুপারিশ বাস্তবায়নের উদ্যোগ

ফাতেহ ডেস্ক:

অনুমোদন ছাড়া বা শর্ত ভেঙে নির্মাণ করা ভবন জরিমানার মাধ্যমে বৈধ করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এজন্য জরিমানার মাধ্যমে অবৈধ ভবন বৈধ করার প্রক্রিয়া নির্ধারণে একটি নীতিমালা করা হচ্ছে। গত ৩১ জানুয়ারি এ বিষয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে, যার প্রধান একজন অতিরিক্ত সচিব। নতুন বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা বা ড্যাপের (২০২২-২০৩৫) সুপারিশ অনুযায়ী এ উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।

বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, যথাযথ নিয়ম না মেনে ভবন নির্মাণের কারণে ভূমিকম্পে ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখে পড়েছে তুরস্ক। ভয়াবহ এ প্রাকৃতিক দুর্যোগে এরই মধ্যে মৃতের সংখ্যা ৪৫ হাজার ছাড়িয়েছে। তুরস্কেও জরিমানার মাধ্যমে বৈধ করা হয় নিয়ম না মেনে তৈরি করা হাজার হাজার ভবন।

বিগত কয়েক বছর ধরে ছোট ছোট ভূমিকম্প হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ বড় ধরনের ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে রয়েছে বলে সতর্ক করে আসছেন গবেষক ও বিশেষজ্ঞরা। এ পরিস্থিতিতে অবৈধ ভবন বৈধ করার মাধ্যমে বাংলাদেশও তুরস্কের পথে হাঁটছে কি না- তা ভেবে দেখা দরকার বলে মনে করছেন নগর বিশেষজ্ঞরা।

তবে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ঢাকায় ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ ভবনই নিয়ম না মেনে তৈরি করা। ফলে এসব ভবন যতই ঝুঁকি তৈরি করুক, অবৈধ হিসেবে এত বিপুল সংখ্যক ভবন ভেঙে ফেলা বাংলাদেশের মতো দেশের পক্ষে সম্ভব নয়। তাই জরিমানা ও সংস্কারের মাধ্যমে অবৈধ ভবনগুলোকে যতটা সম্ভব ঝুঁকিমুক্ত করা ছাড়া উপায় নেই। ভারতসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এটা স্বীকৃত বলেও জানান তারা।

নতুন ড্যাপে এ বিষয়ে রূপরেখা দেওয়া হয়েছে। তবে জরিমানার মাধ্যমে অবৈধ ভবন বৈধ করার বিষয়টি অনেক বড় সিদ্ধান্ত। সরকারের নীতি-নির্ধারণী পর্যায় থেকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসতে হবে।

The post অবৈধ ভবন বৈধ করার সুপারিশ বাস্তবায়নের উদ্যোগ appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%85%e0%a6%ac%e0%a7%88%e0%a6%a7-%e0%a6%ad%e0%a6%ac%e0%a6%a8-%e0%a6%ac%e0%a7%88%e0%a6%a7-%e0%a6%95%e0%a6%b0%e0%a6%be%e0%a6%b0-%e0%a6%b8%e0%a7%81%e0%a6%aa%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a6%bf%e0%a6%b6/

ভূমিকম্প: তুরস্কের রাজনীতিতে কতটা প্রভাব ফেলবে?

মুনশী নাঈম:

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মাত্র তিন মাস আগে ঘটে গেল শক্তিশালী ভূমিকম্প। ভূমিকম্পের এ প্রভাব পড়তে পারে দেশটির আসন্ন এ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে। কারণ, উদ্ধার তৎপরতায় ধীরগতির অভিযোগ ও ভবন নির্মাণে কঠোর আইন প্রণয়নে ব্যর্থতার আঙুল উঠেছে প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোয়ানের দিকে। প্রেসিডেন্ট এরদোগান নিজেও স্বীকার করেছেন, এ ধরনের দুর্যোগে যত তাড়াতাড়ি এবং যতটা বিস্তৃত পরিসরে সাড়া দেওয়া দরকার, সেটা করা সম্ভব হয়নি। তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন, এই ধরনের দুর্যোগের জন্য প্রস্তুত থাকা সম্ভব নয়।

৬ ফেব্রুয়ারি, ভোররাতে তুরস্কের মানুষ যখন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন, তখন দেশটির অন্তত ১০টি প্রদেশে আঘাত হানে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প। ১৯৩৯ সালের পর দেশটির মানুষ এমন ভয়ঙ্কর দুর্যোগের মুখোমুখি হয়নি। তুর্কি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত তার দেশে ৩৯ হাজার ৬৭২ জন মারা গেছে। এদিকে সিরিয়া সরকার এবং জাতিসংঘ বলছে, সিরিয়ায় ৫ হাজার ৮০০ এর বেশি প্রাণহানি হয়েছে।

১৯৯৯ সালের অভিজ্ঞতার পুনরাবৃত্তি হবে?

এরদোয়ান ২০০৩ সাল থেকে তুরস্কের ক্ষমতায় আছেন। তিনি প্রথমে প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। ২০১৪ সালের আগস্ট থেকে প্রেসিডেন্ট পদে আছেন। ভূমিকম্পের আগে তুরস্কে পরিচালিত জরিপে দেখা গেছে, আসন্ন নির্বাচন এরদোয়ানের জন্য সহজ হবে না। নির্বাচনে তাকে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখোমুখি হতে হবে। ভূমিকম্পের বিপর্যয়ের আগে থেকেই এরদোয়ানকে একের পর এক সংকট মোকাবিলা করতে হচ্ছিল। অর্থনৈতিক বিষয়ে তার নীতি দেশটিকে ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতির মধ্যে ফেলেছে। গত বছর দেশটিতে ভোগ্যপণ্যের দাম প্রায় ৮৫ শতাংশ বেড়েছে। একই সময়ে এরদোয়ানকে দাবানলসহ পরিবেশগত অন্যান্য বিপর্যয় মোকাবিলা করতে হয়েছে। নানামুখী চ্যালেঞ্জ আছে—তা এরদোয়ান নিজেও জানেন। সে অনুযায়ী, তিনি কাজ করে আসছিলেন। ভূমিকম্পের কয়েক ঘণ্টা পরই এরদোয়ান রাজধানী আঙ্কারায় একটি সংবাদ সম্মেলনে হাজির হন। পরবর্তী সময়েও তাকে তৎপর থাকতে দেখা গেছে।

এরদোগানের ভাষ্যমতে, ১৯ হাজারের বেশি ভবন সম্পূর্ণভাবে ভেঙে গেছে। ৪৭ হজাার ২১১টি ভবন গুরুতর ক্ষতির কারণে আবাসনের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। আতএব, এগুলো দ্রুত ভেঙে ফেলতে হবে। তিনি ১২ হাজার ২৩৫টি যান, ৭৬টি বিমান, ১২১টি হেলিকপ্টার, ২৬টি জাহাজ এবং ৪৫টি ড্রোন ছাড়াও ৩৫ হাজারের বেশি অভিজ্ঞ উদ্ধার বিশেষজ্ঞ সহ এই অঞ্চলে আড়াই লাখের বেশি সরকারি কর্মচারি উদ্ধার কাজে লাগিয়েছেন। তুরস্ক ঘোষণা করেছিল ৪ নং বিপদ সংকেত। আহ্বান করেছিল আন্তর্জাতিক সহায়তা। এরমধ্যে ১০০টি দেশ তার আহ্বানে সাড়া দিয়েছে। তাদের মধ্যে ৮৪টি দেশ পাঠিয়েছে ১১ হাজার উদ্ধারকর্মী। ৬১টি দেশ ৪৪৪টি ফ্লাইটে নিয়ে এসেছে ত্রাণ। এরদোগান ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্থ দশটি প্রদেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন এবং এক সপ্তাহের জন্য সারা দেশে শোক ও দুই সপ্তাহের জন্য সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেন।

তুরস্কে আগে বড় ধরনের ভূমিকম্প হয়েছিল ১৯৯৯ সালে। সেই ভূমিকম্পের পর উদ্ধার-ত্রাণ তৎপরতা নিয়ে তুমুলভাবে সমালোচিত হয়েছিলেন দেশটির তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বুলেন্ট ইসেভিট। সে সময় ভালোভাবে দেশ পরিচালনার প্রতিশ্রুতি দেয় এরদোয়ানের দল। ২০০২ সালের নির্বাচনে তার দল জয়ী হয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এরদোয়ান যদি বর্তমান সংকট ভালোভাবে মোকাবিলা করতে সক্ষম হন, তাহলে রাজনীতিতে তাঁর অবস্থান আরও শক্তিশালী হতে পারে। কিন্তু তিনি ব্যর্থ হলে তাঁকে ইসেভিটের পরিণতি ভোগ করতে হতে পারে।

রাজনৈতিক প্রভাব

আল জাজিরার বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, এতবড় একটি ঘটনা তুরস্কের রাজনীতিতে প্রভাব ফেলবে এটাই স্বাভাবিক। সরকারকে এর মাশুল দিতে হবে। ভূমিকম্পের রাজনৈতিক পরিণতির প্রথম লক্ষণ হল ক্ষমতাসীন দল এবং বিরোধী দলের মধ্যে মেরুকরণ। যা ঘটেছে তার জন্য সরকারকে সম্পূর্ণরূপে দায়ী করেছে বিরোধী দল। রাষ্ট্রপতি এবং সরকারকে বয়কট ঘোষণা করেছে। ভূমিকম্পের কয়েকদিন পর পিপলস পার্টির সাবেক প্রধান ডেনিজ বেকালের জানাজা নামাজের সময় বিরোধী দলের প্রধান কামাল কিলিচদারোগ্লু, ইস্তাম্বুলের মেয়র একরেম ইমামো’লু এবং আহমেত দাভুতোগ্লুর সঙ্গে করমর্দন এড়িয়ে যান এরদোগান।

নির্মাণ আইন এবং ভূমিকম্পের প্রস্তুতির আলোচনায় তুরস্কের ক্ষমতাসীন সরকার দায় এড়াতে পারবে না বলে উল্লেখ করেছে আল জাজিরা।

গার্ডিয়ান ও আর জাজিরার বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, সামাজিক ও পরিবেশগত ক্ষয়ক্ষতির তোয়াক্কা না করেই বিশালাকায় অবকাঠামো ও নির্মাণ প্রকল্পে মনোযোগ দিয়েছে তুরস্কের সরকার। এটিকে অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রধান খাতে পরিণত করা হয়েছে। ২০০৪ সাল থেকে এ পর্যন্ত সরকার নির্মাণ ও আবাসন খাত, স্থানীয় সরকার ও গৃহনির্মাণে অর্থায়নের ক্ষেত্রে নতুন আইন পাসের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট সংস্থায় কাঠামোগত সংস্কারও করেছে। এর মধ্য দিয়ে নগর প্রশাসন ও পৌর কর্তৃপক্ষগুলোকে নগরায়ণ ও নানা প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যাপক ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। নগর সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে ভবনগুলো ভূমিকম্প আর প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করতে সক্ষম কি না, সে বিবেচনা একেবারে করা হয়নি।

এ ছাড়া এরদোয়ান সরকারের আবাসন খাতে কথিত দায়মুক্তি নিয়েও সমালোচনা চলছে। ১৯৯৪ সালে তুরস্কে প্রথম ব্যাপকভাবে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের ভবনের ক্ষেত্রে এ ধরনের দায়মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। এটি নাগরিকদের জন্য সরকারি ‘উপহার’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এর মাধ্যমে অবৈধভাবে ও বিকল্প কাঠোমোয় নির্মিত ভবন সরকারকে কিছু ফি দেওয়ার বিনিময়ে বৈধ করার অনুমতি দেওয়া হয়। ২০১৮ সালে সাধারণ নির্বাচনের আগে অবকাঠামো খাতে সর্বশেষ দায়মুক্তি দেওয়া হয়। অবৈধ ভবনের ক্ষেত্রে ইতিহাসে সবচেয়ে বড় দায়মুক্তি দিয়ে ব্যাপক প্রশংসা কুড়ায় একেপি। একবারে ৭৪ লাখ অবৈধ ভবন বৈধ করা হয়। এর বিনিময়ে ২৪ দশমিক ১৯ বিলিয়ন লিরা রাজস্ব আয় করে সরকার। পরিবেশ ও নগরায়ণ মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, এই অর্থ তুরস্কের ভবনগুলো আরও বেশি ভূমিকম্প–সহনীয় করার কাজে ব্যয় করা হয়েছে। ভূমিকম্পের আগের সপ্তাহে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ২ লাখ ৯৪ হাজারের বেশি ভবনকে দায়মুক্তি আইনের আওতায় বৈধতা দেওয়া হয়েছে। ৬ ফেব্রুয়ারি ভূমিকম্প যখন আঘাত হানে সে সময়ে আরেকটি বড় দায়মুক্তি আইনের খসড়া আইনসভায় অনুমোদনের জন্য অপেক্ষাধীন ছিল।

তবে দীর্ঘমেয়াদী ব্যবস্থা, যেমন আশ্রয়, ক্ষতিপূরণ, পুনর্গঠন এবং কোনো গাফিলতি, অবহেলা বা দুর্নীতির জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিচার না করে সরকারের কর্মক্ষমতা মূল্যায়ন সম্পূর্ণ বা সঠিক নয়। অতএব, এক বছরের মধ্যে নির্মাণকাজ শেষ করার ক্ষমতা এবং কর্মকর্তাদের জবাবদিহি করার ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা সরকারের কর্মক্ষমতা মূল্যায়নের মৌলিক মানদণ্ডের মধ্যে থাকবে। তবে এটি যৌক্তিক যে, ভূমিকম্প এবং তার পরবর্তী ঘটনাগুলো আসন্ন নির্বাচনের এজেন্ডায় প্রথম এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ফাইল হবে। এখানে দুটি পক্ষ প্রতিযোগিতা করবে। বিরোধীরা বলবে, সরকার ব্যর্থ হয়েছে। তাদের অবহেলার কারণে বিপর্যয় ঘটেছে। সরকার বলবে, ভূমিকম্প যেকোনো সরকার বা দেশের মোকাবিলা করার ক্ষমতার চেয়ে বড় এবং বিরোধীরা রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য দুর্যোগকে কাজে লাগাতে চাইছে। ফলে তুর্কি বৈদেশিক নীতির উপর প্রভাব ছাড়াও অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক জীবনকে খুব দীর্ঘ সময়ের জন্য অস্থির করে রাখবে। আসন্ন নির্বাচনের ফলাফলে এই ভূমিকম্পের সুস্পষ্ট প্রভাব পড়বে এটা নিশ্চিত। তবে তা কতটুকু, এখনই বলা মুশকিল।

নির্বাচন কি পেছাবে?

এছাড়াও ভূমিকম্পকে রাজনীতিকরণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হল নির্বাচন স্থগিত করার সম্ভাবনা, যা একটি জটিল আইনি এবং রাজনৈতিক বিষয়। অনেকেই বলছেন, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণা এবং ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া পরিচালনা করা সম্ভব নয়। সেখানে কোনও ভবন, প্রতিষ্ঠান বা সরকারী আমলাতন্ত্র নেই, সাধারণ পরিবেশও এর জন্য অনুপযুক্ত। অবার অনেকেই মনে করছেন, ভোটাররা অন্য শহরে চলে গেছে। সুতরাং তারা যেখনে আছে, সেখান থেকেই ভোট দিবে। তাহলে তাদের সংকটের জন্য দায়ী কে, তা তাদের ভোটে ফুটে উঠবে।

আইনত সংবিধানের ৭৮ অনুচ্ছেদে ‘যুদ্ধের কারণে তাদের সংগঠিত করা সম্ভব না হলে নির্বাচন স্থগিত করার সম্ভাবনার বিধান’। এবং এই স্থগিত করার ক্ষমতা একচেটিয়াভাবে তুর্কি গ্র্যান্ড পিপলস অ্যাসেম্বলির (সংসদ)। এর অর্থ, ভূমিকম্পের কারণে নির্বাচন স্থগিত করা যাবে না। তবে ‘সংগঠিত করার অক্ষমত’ এই কারণকে আমলে নিলে এই ভূমিকম্প বিধ্বংসী যুদ্ধের চেয়ে কম ভয়ংকর নয়। বলা হচ্ছে, ৫০০ পারমাণবিক বোমার আঘাতের মতো ছিল এই ভূমিকম্প। এরপর বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষেত্রে সংবিধান সংশোধন ও স্থগিতাদেশ কার্যকর করার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে উভয় উভয় ক্ষেত্রেই ক্ষমতাসীন জোটকে বিরোধী দল বা তার কয়েকটি দলের সঙ্গে একমত হতে হবে। সাংবিধানিক অনুচ্ছেদ সংশোধনের ক্ষমতার মতো সংখ্যাগরিষ্ঠতা সরকারের নেই।

আল জাজিরার বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, দীর্ঘমেয়াদী স্থগিতকরণ না হলেও অন্তত অল্প সময়ের জন্য স্থগিত করার সম্ভাবনা আছে। কারণ, সবাই চায় মানুষকে এই বার্তা দিতে—দুর্যোগের সময় মানুষ আগে, রাজনীতি ও ভোট আগে না।

The post ভূমিকম্প: তুরস্কের রাজনীতিতে কতটা প্রভাব ফেলবে? appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%ad%e0%a7%82%e0%a6%ae%e0%a6%bf%e0%a6%95%e0%a6%ae%e0%a7%8d%e0%a6%aa-%e0%a6%a4%e0%a7%81%e0%a6%b0%e0%a6%b8%e0%a7%8d%e0%a6%95%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%b0%e0%a6%be%e0%a6%9c%e0%a6%a8%e0%a7%80/

Friday, February 17, 2023

দিনাজপুর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি যুবক নিহত

ফাতেহ ডেস্ক:

দিনাজপুরের হাকিমপুর সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে শাহাবুল হোসেন বাবু (২৩) নামে এক বাংলাদেশি যুবক নিহত হয়েছেন। শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮টার দিকে উপজেলার ফকিরপাড়া ধরন্দা সীমান্তের ভারতের অভ্যন্তরে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত শাহাবুল হোসেন হাকিমপুর উপজেলার ধরন্দা ফকিরপাড়া এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে।

হাকিমপুর পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শফিকুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

জয়পুরহাট ২০ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল রফিকুল ইসলাম বলেন, হাকিমপুর উপজেলার ধরন্দা সীমান্তের ভারতীয় অংশে বিএসএফের গুলিতে এক যুবক নিহত হয়েছেন। তবে নিহত যুবক বাংলাদেশি নাকি ভারতীয় এটা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

The post দিনাজপুর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি যুবক নিহত appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%a6%e0%a6%bf%e0%a6%a8%e0%a6%be%e0%a6%9c%e0%a6%aa%e0%a7%81%e0%a6%b0-%e0%a6%b8%e0%a7%80%e0%a6%ae%e0%a6%be%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%a4%e0%a7%87-%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%8f%e0%a6%b8%e0%a6%8f%e0%a6%ab/

‘ধর্মীয় অনুশাসনের অভাব’: ঢাকায় বিবাহবিচ্ছেদ বাড়ছে

মুনশী নাঈম:

ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে নারীরা তালাকের রেকর্ড করেছেন। পুরুষের তুলনায় বিচ্ছেদের বিষয়ে আগ্রহ দেখাচ্ছেন বেশি নারীরা। বিচ্ছেদ প্রবণতার এই ক্রমবর্ধমান বিস্তারের পেছনে মূল কারণ হিসেবে ধর্মীয় অনুশাসনের অভাবকেই দায়ি করছেন আলেমরা। তারা বলছেন, বিশ্বাস ও মূল্যবোধ, জীবন-দর্শন ও জীবনধারায় ইসলামি অনুশাসন না থাকার কারণেই এত সম্পর্ক বিচ্ছেদের দিকে এগুচ্ছে। পরিসংখ্যানও বিষয়টিকে সমর্থন করে।

তালাকের আবেদনে এগিয়ে নারীরা

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) হিসাবে দেখা গেছে, ২০১১ সাল থেকে ২০২২ সালের নভেম্বর মাস পর্যন্ত প্রায় ১২ বছরে করপোরেশনের বিভিন্ন অঞ্চলে মোট ৫৮ হাজার ৩০টি তালাকের আবেদন পড়েছে। এর মধ্যে ৩৭ হাজার ৭৯২টি আবেদন করেছেন নারীরা। আর পুরুষরা করেছেন ১৮ হাজার ৬৬৪টি। একইভাবে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে (ডিএসসিসি) গত ৩ বছরে তালাকের আবেদন পড়েছে ২১ হাজার ২৮৮টি। এরমধ্যে ১৪ হাজার ৯৯৪টি করেছেন নারীরা আর ৬ হাজার ২৯৪টি আবেদন করেছেন পুরুষরা।

ডিএনসিসি’র হিসাবে দেখা গেছে, ২০১১ সালে ২ হাজার ৮৬৪টি তালাকের আবেদনের মধ্যে ১ হাজার ৯১টি আবেদন পুরুষ ও ১ হাজার ৭৭৩টি নারীরা করেছেন। একইভাবে ২০১২ সালে ২ হাজার ৮৮৪টি আবেদনের মধ্যে ১ হাজার ২৩টি পুরুষ ও ১ হাজার ৮৬১টি নারী। ২০১৩ সালে ৩ হাজার ২৩৮টির মধ্যে ১ হাজার ৭২টি পুরুষ ও ২ হাজার ১৬৬টি নারী। ২০১৪ সালে ৪ হাজার ৪৪৫টির মধ্যে ১৪৭৯টি পুরুষ ও ২৯৬৬টি নারী। ২০১৫ সালে ৪ হাজার ৭৭টি’র মধ্য ১ হাজার ৩০৩টি পুরুষ ও ২ হাজার ৭৭৪টি নারী। ২০১৬ সালে ৪ হাজার ৮৪৭টির মধ্যে ১ হাজার ৪২১টি পুরুষ ও ৩ হাজার ৪২৬টি নারী। ২০১৭ সালে ৫ হাজার ৪৬টির মধ্যে ১ হাজার ৫৫৬টি পুরুষ ও ৩ হাজার ৪৯০টি নারী। ২০১৮ সালে ৫ হাজার ৭৭৫টির মধ্যে ১ হাজার ৭২৪টি পুরুষ ও ৪০৫১টি নারী। ২০১৯ সালে ৬ হাজার ১৪৪টির মধ্যে ২৩২০টি পুরুষ ও ৩৮২৪টি নারী। ২০২০ সালে ৬ হাজার ১৬৮টির মধ্যে ২ হাজার ১১৫টি পুরুষ ও ৪ হাজার ৫৩টি নারী। ২০২১ সালে ৭ হাজার ৪১৬টির মধ্যে ১ হাজার ৭৬২টি পুরুষ ও ৪ হাজার ৮১টি নারী। ২০২২ সালের নভেম্বর পর্যন্ত ৫ হাজার ১২৬টির মধ্যে ১ হাজার ৭৯৮টি পুরুষ ও ৩ হাজার ৩২৭টি আবেদন নারীরা করেছেন।

একইভাবে ডিএসসিসি’র এক হিসাবে দেখা গেছে, ৩ বছরে করপোরেশনের বিভিন্ন অঞ্চলে তালাকের আবেদন জমা পড়েছে ২১ হাজার ২৮৮টি। এরমধ্যে ১৪ হাজার ৯৯৪টি আবেদন করেছেন নারীরা আর পুরুষরা করেছেন ৬ হাজার ২৯৪টি। এরমধ্যে ২০২০ সালের ৬ হাজার ৩৪৫টি আবেদনের মধ্যে ৪ হাজার ৪২৮টি নারী ও ১ হাজার ৯১৭টি পুরুষ। ২০২১ সালে ৭ হাজার ২৪৫টির মধ্যে ৫ হাজার ১৮৩টি নারী ও ২ হাজার ৬২টি পুরুষ এবং ২০২২ সালে ৭ হাজার ৬৯৮টির মধ্যে ৫ হাজার ৩৮৩টি নারী ও ২ হাজার ৩১৫টি আবেদন করেছেন পুরুষরা।

কী কারণে তালাকের আবেদন?

তালাকের নোটিশে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ঘুরে ফিরে একই সমস্যার কথা উল্লেখ করে নারীরা আবেদন করছেন। দেখা যায়, তালাকের কারণগুলো আগেই আইনজীবীদের কাছে প্রিন্ট করা থাকে। শুধু নাম ঠিকানার স্থান খালি রাখা হয়। সেখানে তালাক দাতা ও গ্রহীতার নাম ঠিকানা হাতে লিখে দেয়া হয়।

তালাকের কারণ হিসেবে বেশির ভাগই থাকে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বনিবনা না হওয়া। স্ত্রীর করা আবেদনে কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে- ভরণ-পোষণ না দেয়া, স্বামীর সন্দেহবাতিক মনোভাব, ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিবাহবন্ধনে আবব্ধকরণ, কাবিন না হওয়া, মাদকাসক্তি, পুরুষত্বহীনতা, স্ত্রীর ওপর নির্যাতন, যৌতুক, মানসিক পীড়ন, পরকীয়া, আর্থিক সমস্যা, ও ব্যক্তিত্বের সংঘাত। অন্যদিকে স্বামীরাও তাদের নোটিশে উল্লেখ করেছেন, পরকীয়া, আর্থিক সক্ষমতা কমে যাওয়া, বেপরোয়া জীবনযাপন, বদমেজাজ, সংসারের প্রতি উদাসীনতা, সন্তান না হওয়া, অবাধ্য হওয়া, টিকটকসহ সামাজিক মাধ্যমে অবাধ বিচরণ করা, ইসলামী শরীয়ত অনুযায়ী না চলাসহ বিভিন্ন কারণের কথা উল্লেখ করা হচ্ছে।

সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, তালাকের যেসব আবেদন সিটি করপোরেশনে জমা পড়ে, তার সবগুলো একই রকম। মাঝে-মধ্যে দু’-একটি কারণ এদিক-ওদিক হয়। আইনজীবীরা শুধু সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর নাম, পরিচয় বদলে একই ধাঁচে আবেদন করে থাকেন। যার ফলে তালাক নোটিশে ঘুরে-ফিরে একই কারণ দর্শানো হয়।

বিচ্ছেদের আবেদন পেলেই সংশ্লিষ্টকে নোটিশ করে সিটি করপোরেশনের আঞ্চলিক কর্মকর্তারা। তবে এসব নোটিশের সাড়া দেয় না কোনো পক্ষই। স্বামী বা স্ত্রীর মধ্যে যে কেউ আবেদন করলে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে তালাকের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করার আগে নোটিশ দেয়া হয়। তবে নোটিশ পেয়েও অনেক সময় উভয়পক্ষই অনুপস্থিত থাকেন। অনেক সময় স্ত্রীর আবেদনের নোটিশে স্বামী উপস্থিত হন না, স্বামীর নোটিশে স্ত্রীও আসেন না। ফলে উভয়ের মধ্যে যে বিবাদ তা মীমাংসা হচ্ছে না। এতে পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে তালাক কার্যকর হয়ে যাচ্ছে।

আলেমরা কী বলছেন?

বর্তমান সমাজে বিচ্ছেদ প্রবণতার এই ক্রমবর্ধমান বিস্তারের পেছনে মূল কারণ ধর্মীয় অনুশাসনের অভাব বলে মনে করছেন মারকাযুদ দাওয়াহ আল ইসলামিয়ার মুফতি আবুল হাসান মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ। তার মতে, এখন একক পরিবার হওয়ায় এবং বাইরে চাকরি-বাকরির ও সার্বিক স্বাধীনতার বিস্তার ঘটায় বাইরের মানুষের সাথে তাদের মেলামেশা বেড়েছে এবং স্বামীদের চেয়ে বাইরের বন্ধু-বান্ধবদের দিকে বেশি ঝুকছে। তাই পারিবারিক অবস্থা একটু খারাপ হলেই তালাকের চিন্তা করছে। আবার বর্তমানের মেয়েরা বিদেশী সিরিয়াল দেখে সাংস্কৃতিক দিক থেকে প্রভাবিত হচ্ছে।

এর সমাধান কী? প্রশ্নের উত্তরে তিনি ফাতেহকে বলেন, ‘এখানে তিনটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে।

প্রথমত, ইসলামে আয়-উপার্জন, জীবনমান ও জীবনধারার ক্ষেত্রে অল্পেতুষ্টির শিক্ষা দেয়া হয়েছে। অল্পেতুষ্টির পরিবর্তে যদি সম্পদ ও প্রাচুর্যের মোহ তৈরি হয়, বিপত্তি বাঁধা খুবই স্বাভাবিক। তদ্রূপ ইসলামী শিক্ষায় পারস্পরিক হক রক্ষার বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নিজের কর্তব্য পালন আর অন্যের অধিকার রক্ষায় সচেষ্ট হলেই সবার শান্তি আসতে পারে।

দ্বিতীয়ত, পরিবারের ভরণ-পোষণের সম্পূর্ণ দায়িত্ব পুরুষের। কিন্তু এখন নারীর স্বাবলম্বিতার নামে নারীকে উপার্জনে বের করা হয়েছে। সমাজ-চিন্তকেরা বলছেন, বিবাহ-বিচ্ছেদের এক বড় কারণ, নারী বাইরে বের হওয়া এবং পর-পুরুষের সাথে মেলামেশা। কাজেই গোড়া থেকেই সমস্যার সমাধান করতে হবে। একান্ত আর্থিক সমস্যা ছাড়া নারীদেরকে রোজগারের জন্য ঘরের বাইরে বের করবে না, বরং স্বামীরাই স্ত্রী-সন্তানের খরচাদির ব্যবস্থা করবে।

তৃতীয়ত, ইসলামী বিধানে তালাকের অধিকার পুরুষের হাতে ন্যস্ত করার পাশাপাশি পুরুষকে যে সকল গুণের অধিকারী হওয়ার এবং স্ত্রী ও পরিবার পরিচালনায় যে নীতি ও বিধান অনুসরণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে তা পালনের মাধ্যমে কাঙ্খিত সুফল পাওয়া সম্ভব।’

তালাক বিষয়ে সিটি কর্পোরেশনের সালিশির নিয়মটি ইসলামের বিপরীত বলে মনে করেন মুফতি আবুল হাসান মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ। তিনি বলেন, ‘নোটিশ দেয়ার পর এই শালিশী কাউন্সিল একটি শরীয়ত-বিরোধী আইনের ফসল, যা ১৯৬১ সনের মুসলিম পারিবারিক আইন নামে প্রসিদ্ধ। আইনটির বহুবিধ ত্রুটির মধ্যে এটিও একটি যে, এতে তালাকনামা লিখে নোটিশ পাঠাবার পর শালিসের কথা বলা হয়েছে। অথচ শরীয়া অনুযায়ী তালাকনামা লিখে দস্তখত করার পরই তালাক হয়ে যায়। তাহলে আর শালিস কিসের জন্য? আসলে শালিস হওয়া দরকার তালাকের পূর্বেই এবং তা হওয়া দরকার পারিবারিক ও সামাজিকভাবে। আইনের লোকদের দিয়ে নয়। এ সহজ কথাগুলো সংশ্লিষ্ট লোকজন যত তাড়াতাড়ি উপলব্ধি করবেন ততই জাতির মঙ্গল হবে।’

The post ‘ধর্মীয় অনুশাসনের অভাব’: ঢাকায় বিবাহবিচ্ছেদ বাড়ছে appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%a7%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%ae%e0%a7%80%e0%a6%af%e0%a6%bc-%e0%a6%85%e0%a6%a8%e0%a7%81%e0%a6%b6%e0%a6%be%e0%a6%b8%e0%a6%a8%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%85%e0%a6%ad%e0%a6%be%e0%a6%ac/

Thursday, February 16, 2023

‘শুহাদা-পরিসংখ্যান’: মুসলিম ইতিহাসে ভূমিকম্প

রাকিবুল হাসান নাঈম:

ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ায় নিহতের সংখ্যা ৪১ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। বড় ধরনের এই ভূমিকম্পে কেবল তুরস্কেই নিহত হয়েছেন ৩৫ হাজার ৪১৮ জন। যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ায় নিহত হয়েছেন ৫ হাজার ৮০০ জনের বেশি। ভবন ও অবকাঠামোরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বলা হচ্ছে, দশ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ আবাসন সঙ্কটে পড়বে। গত ৬ ফেব্রুয়ারি ভোরে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার এই ভূমিকম্প আঘাত হানে। এই প্রথম নয়, তুরস্ক তার ইতিহাসে কয়েক ডজন ধ্বংসাত্মক ভূমিকম্পের সাক্ষী হয়েছে।

মুসলমানদের ইতিহাসে জনসংখ্যা, সভ্যতা এবং নগরায়নকে প্রভাবিত করেছে ভূমিকম্প। শহরের পর শহর ধ্বংস করেছে। লাখ লাখ জনসংখ্যাকে বাস্তুচ্যুত করেছে এবং হত্যা করেছে। ভূমিকম্পের হাত থেকে বেঁচে থাকা লোকেরা তাদের ক্ষতগুলি সারিয়ে উঠেছে, পুনর্নির্মাণ করেছে তাদের বসতি। এই ধ্বংসাত্মক ভূমিকম্পের কারণে মুসলিম ভূমিতে যে বিপর্যয় ঘটেছে তার অনেক প্রমাণ রয়েছে। ইসলামি ইতিহাসের সূত্রে আমাদের কাছে সেসব হাজির রয়েছে।

ইতিহাসের ভয়াবহ পরিসংখ্যান

ভূমিকম্পগুলো বিখ্যাত আলেম এবং কবিদের প্রাণ কেড়েছে। পাশাপাশি শহর ও গ্রামের বাসিন্দাদেরও। যারা ছিল কারিগর, বণিক এবং কৃষক-সহ সাধারণ জনগণ। কোনো উৎসগ্রন্থ তাদের সম্পর্কে বলেছে, ‘ভূমিকম্পে অগণিত লোক মারা গেছে।’

মধ্য এশিয়ার ফারগানা অঞ্চলে একটি বড় ভূমিকম্প আঘাত হানে ২২৩ হিজরিতে। ‘নুজুমুজ জাহেরা’ গ্রন্থকার উল্লেখ করেন, ‘এই ভূমিকম্পে ১৫ হাজার লোক মারা যায়।’ শামের উত্তর থেকে দক্ষিণে ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিল ২৩৩ হিজরিতে। ঐতিহাসিকরা প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে উল্লেখ করেছেন, ‘দামেশকের কাছাকাছি শহরটি দুলছিল ভূমিকম্পের আঘাতে। তাতে শহরের অধিকাংশ লোক মারা পড়েছিল। নারীরা পালিয়ে গিয়েছিল। যারা শহরে ছিল, তারা ঈদগাহে গিয়ে দোয়া-কান্নায় রত থেকেছিল মাগরিব-ইশা পর্যন্ত। পরে পৃথিবী শান্ত হলে মৃতদেরকে বের করে দাফন করা হয়। এমনকি গৌতা গ্রামে বেঁচেছিল মাত্র একজন। ভূমিকম্পটি অ্যান্টিওক, মসুল এবং দক্ষিণ আনাতোলিয়া অঞ্চলেx আঘাত করেছিল। এতে মারা গিয়েছিল ৭০ হাজার লোক।’

আর্মেনিয়ার ইসলামিক অঞ্চলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শহর দুবাইলে একটি বিপর্যয়কর ভূমিকম্প হয়েছিল ২৮০ হিজরিতে। ইবনুল জাওজি লিখেন, ‘রাতে এক তৃতীয়াংশে এই ভূমিকম্প আঘাত হানে। শহরের মাত্র একশটি ঘরের মতো টিকে ছিল। বাকি সব ধ্বসে গেছে। একে একে পাঁচবার আঘাত হানে ভূমিকম্প। এতে ত্রিশ হাজার লোককে ধ্বংস্তুপ থেকে বের করে দাফন করা হয়। কেউ কেউ বলেন, যাদেরকে বের করে দাফন করা হয়, তাদের সংখ্যা ৫৫ হাজার।’

উত্তর ইরানের তাবরিজে আরেকটি বিপর্যয়কর ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিল ৪৩৪ হিজরিতে। মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যে এটি হাজার হাজার বাসিন্দা এবং নগরায়নকে নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছিল। পুরো শহর পরিণত হয়েছিল মৃত্যুপুরীতে। ভেঙে পড়েছিল সব দালানকোটা, বাড়িঘর। শহরের আমির রক্ষা পেয়েছিলেন বাগানে থাকার কারণে। ধ্বংস্তুপ থেকে যাদের বের করা হয়, তাদের সংখ্যা প্রায় ৫০ হাজার। ইমাম জাহাবি লিখেছেন, ‘আলেপ্পো শহরে ৫৬৫ হিজরিতে একটি ভূমিকম্প আঘাত হানে। তাতে মারা যায় ৮০ হাজার লোক।’

ঐতিহাসিক সূত্রগুলো আমাদেরকে বিভিন্ন সময়ে ইসলামিক বিশ্বের অনেক শহর ও অংশে ভূমিকম্পে নিহত মানুষের সংখ্যার পরিসংখ্যান প্রদান করেছে। এই পরিসংখ্যান বড্ড ভয়ংকর। দক্ষিণ আনাতোলিয়া এবং শামের উত্তরে ৩৯৩ হিজরির ভূমিকম্পে অনেক মানুষ মারা যায়।

৪৩৪ হিজরিতে শামে সংঘটিত ভূমিকম্প সম্পর্কে ইবনে তাগরি বারদি লিখেন, ‘পালমিরা এবং বালবেকও ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল এবং পালমিরার বেশিরভাগ লোক মারা গিয়েছিল।’ ৫৫২ হিজরির ভূমিকম্পটি ছিল সবচেয়ে বিপজ্জনক ভূমিকম্প যা পুরো শামে আঘাত হেনেছিল। ইবনুল আসির লিখেছেন, ‘তাদের মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক ছিল হামা শহর এবং শাইজার দুর্গ। কতজন মারা গেছে এই ভূমিকম্পে তা আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানেন না।’

৫৯৭ হিজরিতে শামে যে ভূমিকম্পে আঘাত হেনেছিল, তার প্রভাব মিশর এমনকি উচ্চ মিশরেও পড়েছিল। মিসরে বহু লোক ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল, তারপর নাবলুস ধ্বংস হয়েছিল। কোনো কোনো ঐতিহাসিক সেই প্রাণঘাতী ভূমিকম্পে মিশর ও শামে মৃতের সংখ্যা গণনা করে বলেছেন, নিহতের সংখ্যা কয়েক মিলিয়ন। মাগরেবেও ভূমিকম্প হয়েছে এবং ঐতিহাসিকরা সেখানকার মানুষের উপর যে বিপর্যয়, দুর্দশা ও মহামৃত্যু এসেছে, তারও উল্লেখ করেছেন। সালাবি ৪৭২ হিজরিতে আলমোরাভিডস রাজ্যে একটি বিশাল ভূমিকম্পের কথা উল্লেখ করেছেন। সালাবি লিখেন, মাগরেবে এমন ভয়ংকর ভূমিকম্প আগে কেউ দেখেনি। উক্ত বছর রবিউল আউয়াল থেকে জুমাদাল উখরা পর‌্যন্ত প্রতিদিন রাতে ও দিনে ভূমিকম্প হতো।

ভূমিকম্পে আহত-নিহত আলেম-সাহিত্যিক

এই ভূমিকম্পের ফলে সমগ্র ইসলামি বিশ্বে, পূর্ব ও পশ্চিমে কত লক্ষ সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল, তা কেবল তাদের স্রষ্টাই জানেন। এতে অনেক বড় বড় আলেম, কবি ও লেখকও মারা গিয়েছিলেন। তাদের মধ্যে তাবেঈ ও তাবেয়ীনদের বড় একটি দলও রয়েছে।

নিহতদের মধ্যে সবচে প্রসিদ্ধ হলেন মুফাসসির-মুহাদ্দিস-তাবেঈ মুহাম্মদ বিন কাব বিন হাইয়ান। ভূমিকম্পের সময় তিনি মসজিদে ছিলেন তার কিছু অনুসারীসহ। সবাই মারা যান। ইবনে আসাকিরের বর্ণনা সংক্ষিপ্ত করে ইবনে মানজুর মিসরি বলেন, ‘মুহাম্মদ ইবনে কাব ছিলেন বড় মুফাসসির। তিনি তার অনুসারীদের নিয়ে মদিনা মুনাওয়ারার নিকট মসজিদে রাবজায় বসে ছিলেন। তখনই ভূমিকম্প ঘটে। মসজিদটি তাদের উপর ভেঙে পড়লে তারা সবাই মারা যান।’

ভূমিকম্পে যে সকল হাদিস বিশারদদের মৃত্যু হয়েছিল তাদের মধ্যে ছিলেন আবু হুরায়রা নিশাপুরী আনাস বিন আবদুল খালেক বিন যাহির শাহামি। এটি ৫৫৭ হিজরির ঘটনা। ভূমিকম্পে যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে বিখ্যাত হাদীসবিশারদ আহমদ বিন সাঈদ মারওয়াযীও আছেন। তিনি তুস ভূমিকম্পে মারা গিয়েছিলেন।

১৩০হিজরিতে সংঘটিত শামের বড় ভূমিকম্পে আনসারদের অনেক ছেলে এবং তাবেঈদের অনেক বংশধরদের মৃত্যু হয়েছিল। জাহাবি লিখেছেন, ‘এই ভূমিকম্পের আঘাত সবচে বেশি ছিল বাইতুল মুকাদ্দাসে। অনসারসহ আরও যারা সেখানে ছিল, তাদের অধিকাংশই মারা যায়। সাহাবি শাদ্দাদ ইবনে আউস আনসারির ঘর ভেঙে পড়ে। মুহাম্মদ ইবনে শাদ্দাদ বেঁচে যান। ৫৫২ হিজরিতে শামে যে ভূমিকম্প হয়েছিল, তাতে মারা গিয়েছিলেনর কবি আবু সাহল আবদুর রহমান বিন মুদরিক মাআররি। ইবনে আসাকির হামা শহরে শামের আরেক কবির মৃত্যুর কথা লিখেছেন। তার নাম আলি বিন মুরজি তানুখি। তবে সেই ভূমিকম্পের নির্দিষ্ট কোনো সময় জানা যায়নি।

ভূমিকম্পের ভয়ে মানুষ প্রশস্ত জায়গায় এবং কাঠের বাড়িতে বাস করতে বাধ্য হয়েছিল। কারণ, ভারী দুর্গ হলে তা যেকোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে। ৫৫২ হিজরির ভূমিকম্পে আহত হন ইসমাইলি শিয়া সম্প্রদায়ের প্রধান এবং শামের ফাতেমি নিজারি প্রধান আবুল হাসান সিনান বিন সালমান বাসরি। ভূমিকম্পের সময় তার উপর একটি পাথর পড়ায় তিনি খোঁড়া হয়ে গিয়েছিলেন।

সূত্র: আল জাজিরা

The post ‘শুহাদা-পরিসংখ্যান’: মুসলিম ইতিহাসে ভূমিকম্প appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%b6%e0%a7%81%e0%a6%b9%e0%a6%be%e0%a6%a6%e0%a6%be-%e0%a6%aa%e0%a6%b0%e0%a6%bf%e0%a6%b8%e0%a6%82%e0%a6%96%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%a8-%e0%a6%ae%e0%a7%81%e0%a6%b8/

Wednesday, February 15, 2023

মেলায় রাকিবুল হাসানের ৬ বই

ফাতেহ ডেস্ক:

এক সিরিজে ছয়টি বই নিয়ে এবারের একুশে বইমেলায় হাজির হচ্ছেন লেখক ও সাংবাদিক রাকিবুল হাসান নাঈম। সিরিজটির নাম ‘গল্পকথায় ঈমান শিখি’। তিন বছর ধরে পেশাগত সাংবাদিকতা এবং লেখালেখিতে জড়িত থাকলেও এবারই প্রথম বইমেলায় তার বই প্রকাশিত হচ্ছে।

লেখকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সিরিজটি শিশুদের নিয়ে লেখা গল্প সিরিজ। সিরিজের ছয়টি বইয়ের নাম হলো—আল্লাহ আমার সব, দুই কাঁধে দুই ফেরেশতা, কুরআন আমার প্রাণ, শান্তির ফুল নবি-রাসুল, তাকদিরে লেখা সব এবং আখেরাতের কঠিন দিনে। সিরিজটি প্রকাশ করেছে রাহনুমা প্রকাশনী। বইটি মেলায় রাহনুমা প্রকাশনীর ২০৬—ঘ, ঙ স্টলে পাওয়া যাবে।

বইটির লেখক রাকিবুল হাসান বলেন, ‘শিশুরা গল্প শুনতে চায়, তাদের গল্পে গল্পে ভালো কিছু শেখানো উচিত। কাল্পনিক ভূতের কাহিনী তাদের বিভ্রান্ত ও ভীত করে তোলে। তাদের শোনাতে হবে সত্য ও সাহসের গল্প, আদর্শ ও বিশ্বাসের গল্প, আদব ও আখলাকের গল্প । এই সিরিজে শিশুদের গল্পে গল্পে ঈমানের ধারনা দেয়ার চেষ্টা করেছি। আশা করি, শিশুর পবিত্র মনন তৈরী করতে এবং তাদেরকে বড় বড় স্বপ্ন দেখাতে এই সিরিজটি বেশ উপকার করবে।’

প্রসঙ্গত, রাকিবুল হাসান দাওরায়ে হাদিস (মাস্টার্স) পড়েছেন ২০১৯ সালে। বর্তমানে তিনি ঢাকা কলেজে ইসলামিক স্টাডিজে পড়াশোনা করছেন। পেশা হিসেবে কর্মরত আছেন সাংবাদিকতা ও লেখালেখিতে।

The post মেলায় রাকিবুল হাসানের ৬ বই appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/85569-2/

জাপান থেকে ৬৯০ কোটি টাকার এলএনজি কিনবে সরকার

ফাতেহ ডেস্ক:

জাপান থেকে এক কার্গো বা ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এজন্য ব্যয় হবে ৬৯০ কোটি ৪২ লাখ ৯ হাজার ৩১২ টাকা। জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের অধীন পেট্রোবাংলার মাধ্যমে এই এলএনজি আমদানি করা হবে।

জাপান থেকে এই এলএনজি আমদানির অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভা শেষে সভার সিদ্ধান্ত জানান মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান। তিনি বলেন, আজকের সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় জাপানের জেরা কোম্পানির এক কার্গো এলএনজি আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের অধীন পেট্রোবাংলার মাধ্যমে এই এলএনজি আমদানি করা হবে।

তিনি আরও বলেন, মাস্টার সেল অ্যান্ড পার্চেজ অ্যাগ্রিমেন্ট বা মিলিত ক্রয়-বিক্রয় চুক্তিতে (এমএসপিএ) স্বাক্ষর করা প্রতিষ্ঠান থেকে কোটেশন সংগ্রহ করে ওই এলএনজি আমদানি করা হবে। জাপানের জেরা কোম্পানি থেকে ৬৯০ কোটি ৪২ লাখ ৯ হাজার ৩১২ টাকা ব্যয়ে এই এলএনজি আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানিতে খরচ হবে ১৬ দশমিক ৫০ ডলার।

গত ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় স্পট মার্কেট থেকে এক কার্গো এলএনজি আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়। মাস্টার সেল অ্যান্ড পার্চেজ অ্যাগ্রিমেন্ট বা মিলিত ক্রয়-বিক্রয় চুক্তিতে (এমএসপিএ) স্বাক্ষর করা প্রতিষ্ঠান থেকে কোটেশন সংগ্রহ করে ওই এলএনজি আমদানির সিদ্ধান্ত হয়।

The post জাপান থেকে ৬৯০ কোটি টাকার এলএনজি কিনবে সরকার appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%9c%e0%a6%be%e0%a6%aa%e0%a6%be%e0%a6%a8-%e0%a6%a5%e0%a7%87%e0%a6%95%e0%a7%87-%e0%a7%ac%e0%a7%af%e0%a7%a6-%e0%a6%95%e0%a7%8b%e0%a6%9f%e0%a6%bf-%e0%a6%9f%e0%a6%be%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%b0/

সোসিনিজম: খ্রিস্টান একেশ্বরবাদী আন্দোলনের ইতকথা

মুনশী নাঈম:

মধ্যযুগের শেষের দিকে ইউরোপীয় ইতিহাসে ঘটেছে বিশাল বিশাল ঘটনা। যেসব ঘটনা মহাদেশের সাংস্কৃতিক, বুদ্ধিবৃত্তিক এবং রাজনৈতিক চেতনায় গভীর পরিবর্তন ঘটায়। এই সচেতনতাকে সবচেয়ে বেশি জাগ্রত করেছিল আন্দালুসিয়া, সিসিলি, দক্ষিণ ভূমধ্যসাগর বা আনাতোলিয়া এবং পূর্ব ইউরোপ থেকে আসা মুসলিম প্রতিবেশীদের উপস্থিতি। যুদ্ধ ও ক্রুসেডের যুগে, মামলুক ও উসমানীয় যুগে এই সমস্ত মুসলিম, আরব এবং তুর্কিরা ইউরোপীয় চেতনায় ব্যাপক প্রভাব ফেলেছিল । কিন্তু ক্যাথলিক চার্চ এবং এর ইউরোপের নাগরিকদের মধ্যকার সম্পর্কও প্রত্যক্ষ করেছে পাদ্রী এবং সাধারণ জনগণের মধ্যে সম্পর্কের ইতিহাসে সবচেয়ে বৈপ্লবিক মিথস্ক্রিয়া।

রোমের ক্যাথলিক চার্চ তেরো শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে মানুষ ও পাথরকে নিয়ন্ত্রণ করেছে। ইতিহাসবিদ রেভারেন্ড অ্যান্ড্রু মিলার তার বই “অ্যা ব্রিফ হিস্ট্রি অফ দ্য চার্চ”-এ বলেছেন, ‘ষোড়শ শতাব্দী পর্যন্ত ইউরোপে কোনো প্রাণী স্বাধীন ছিল না। বরং, পুরোহিত ছিলেন ছোট-বড় সবকিছুর কর্তা। দেহ ও আত্মার উপর, বর্তমান ও অনন্তকালের উপর তার নিরঙ্কুশ কর্তৃত্ব ছিল। তাদের সামনে কারও দাঁড়ানোর সাহস ছিল না।’

মার্টিন লুথারের দিকে যাত্রা

ত্রয়োদশ, চতুর্দশ এবং পঞ্চদশ শতাব্দীতে বেশ কয়েকটি ঘটনা চার্চের ভাবমূর্তি এবং প্রভাবকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করেছিল। তার শীর্ষে ছিল খ্রিস্টের প্রকৃতি নিয়ে কনস্টান্টিনোপলের চার্চ এবং রোমের চার্চের মধ্যে পুরোনো বিরোধ। তারপরে অটোমানদের হাতে কনস্টান্টিনোপলের পতন এবং ইউরোপীয় ভূখণ্ডের গভীরে তাদের প্রবেশ।

তখন ফ্রান্সের ল্যাঙ্গুয়েডক অঞ্চলে একটি আন্দোলনের উত্থান ঘটে। আন্দোলনের কর্মীরা এক ঈশ্বরের অনুপস্থিতিকে প্রচার করতো। তারা বলতো, ভালো এবং মন্দ নামে দুটি শক্তি আছে। তারা তাদের নিজস্ব একটি গির্জা প্রতিষ্ঠা করেছিল। যেটি রোমের চার্চের কর্তৃত্বকে হুমকি দিতে শুরু করেছিল। তবে এই আন্দোলনকে অঙ্কুরেই নির্মূল করে দেয়া হয়।

তবে এর চেয়েও বিপজ্জনক ছিল পোপ পঞ্চম ক্লেমেন্টের রোম থেকে ফ্রান্সের অ্যাভিগনন শহরে চলে যাওয়া। ১৩৭৮ খ্রিস্টাব্দে পোপ গ্রেগরি একাদশের প্রত্যাবর্তন এবং কাউন্সিলের আবির্ভাব পর্যন্ত পুরো সত্তর বছর ধরে সেখানে পোপতন্ত্র ছিল। ইউরোপীয় চার্চের ইতিহাসে এটি ‘ধর্মীয় বিভেদ’ হিসাবে পরিচিত।

এই ধর্মীয় বিভাজন রোম এবং অ্যাভিগননের মধ্যে দীর্ঘকাল বজায় ছিল। পরে রোম অ্যাভিগননের এই কর্মকে ‘ধর্মদ্রোহিতা’ হিসাবে আখ্যা দিয়ে তাকে নির্মূল করার জন্য যুদ্ধ এবং সংঘাতের জন্ম দেয়। অন্যদিকে ব্রিটিশ এবং অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জন উইক্লিফের নেতৃত্বে ইউরোপে ধর্মতাত্ত্বিকদের কণ্ঠস্বর শোনা যেতে শুরু করে। তারা সেই সময়ে তাদের ঐতিহ্যগত প্রতিদ্বন্দ্বী এবং শত্রু ফ্রান্সে পোপতন্ত্রের স্থানান্তরের সমালোচনাও করে। বরং, ফরাসি রাজার পোপতন্ত্রের শোষণ এবং সেই সময়ে ইংরেজরা পোপতন্ত্রের কাছে যে জমি, অনুদান এবং উপহার পেশ করেছিল তার উপর তার নিয়ন্ত্রণ ইংল্যান্ড এবং রোমের মধ্যে দ্বন্দ্বের বীজ বপন করে। জার্মান ধর্মযাজক এবং ধর্মতত্ত্বের অধ্যাপক “মার্টিন লুথার” এর আবির্ভাব এবং উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম ইউরোপে লুথেরান আন্দোলন ও প্রোটেস্ট্যান্টিজমের বিস্তারের পর এর প্রভাব শীঘ্রই দেখা দেয়।

ইংল্যান্ডে পোপতন্ত্রের বিরুদ্ধে বিপ্লবে জন উইক্লিফের ভূমিকা থাকলেও চেক বোহেমিয়ান ‘জন হুস’ নামক এক ধর্মতাত্ত্বিকেরও একটি প্রভাবশালী ভূমিকা ছিল। তিনি ধর্মীয় সংস্কারের আহ্বান জানিয়েছিলেন এবং সেই যুগে পাদ্রীরা যে পাপের মধ্যে পড়েছিলেন তার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিলেন। পোপতন্ত্রের ক্ষমতা এবং নিয়ন্ত্রণের কারণে তিনি ধর্মদ্রোহিতার জন্য দোষী সাব্যস্ত হন এবং তাকে পুড়িয়ে মারার মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। দণ্ডটি বাস্তবে ১৪১৫ খ্রিস্টাব্দে কার্যকর করা হয়েছিল। এর থেকে সেই যুগে চিন্তা ও রাজনীতিতে ক্যাথলিক চার্চের প্রভাব বুঝা যায়।

মধ্যপ্রাচ্যে ক্রুসেডের সময় শেষ হওয়ার পর চার্চের চিন্তা কেবল অর্থ সংগ্রহ এবং বিলাসিতা ঘিরেই কেন্দ্রীভূত হতে থাকে। পোপের প্রাসাদটিকে তখনকার রাজার সবচেয়ে বিলাসবহুল প্রাসাদের মতো দেখাতো। সেই কারণে, পোপতন্ত্র এবং অনেক ইউরোপীয় রাজার মধ্যে এমন এক সময়ে দ্বন্দ্ব সংঘটিত হয়েছিল যখন অটোমানরা কনস্টান্টিনোপল এবং ইউরোপের পূর্ব ও কেন্দ্রের দিকে অগ্রসর হতে শুরু করেছিল।

অন্যদিকে পোপতন্ত্র সংস্কারের আহ্বানকারী সমস্ত গোষ্ঠীকে, যেমন ওয়ালডেনসিয়ান, অ্যালবিনিয়ান, ললার্ডস, বোহেমিয়ান এবং বাকি গোষ্ঠীগুলিকে নিশ্চিহ্ন করার ক্ষেত্রে মনোযোগ দিয়েছিল।

লুথার এবং তার দারুণ প্রভাব

ধর্মীয় ও রাজনৈতিক সংস্কারের জন্য সবচেয়ে বেশি আকাঙ্ক্ষা জেগেছিল যেখানে, তা হলো বর্তমান জার্মানি এবং পোল্যান্ড। ১৪৮৩ সালের ১০ই নভেম্বর উত্তর জার্মানিতে মার্টিন লুথার তিনি একটি দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা চেয়েছিলেন তিনি উকিল কিংবা দার্শনিক হবেন। তাই তিনি এরফুর্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদে ভর্তি হয়েছিলেন। কিন্তু লুথারের মন হঠাৎ পরিবর্তন হয়ে যায়। একটি মনস্তাত্ত্বিক অবস্থা পার করার পরে তিনি প্রার্থনা, তপস্যা এবং সন্ন্যাসবাদের দিকে ঝুঁকে পড়েন। তারপরে তিনি ১৫০৮ খ্রিস্টাব্দ থেকে উইটেনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্মতত্ত্ব পড়ানো শুরু করেন। কিন্তু তার নিজের প্রতি নিজের ঘৃণা ও ভয় কাজ করছিল। তিনি এর থেকে মুক্তি চাচ্ছিলেন। পরে ১৫১০ খ্রিস্টাব্দে যখন তিনি রোম পরিদর্শন করেন, দেখতে পান চার্চের নৈতিক পতন এবং পাদরিদের আনন্দের মধ্যে বিস্তীর্ণ বৈষম্য। দেখতে পান তাদের কথা ও কাজে মিল নেই।

তারপর সমস্যাটি আরও জটিল হয়ে ওঠে যখন পোপ লিও দশম পাপের ক্ষমার বিনিময়ে এবং অটোমান, মামলুক এবং ইসলামিক মাগরেব দেশগুলির বিরুদ্ধে ক্রুসেডে অংশগ্রহণের বিকল্প হিসাবে অর্থ চান। লুথার তখন ভাবেন, পাপ করে অর্থের বিনিময়ে বিধাতার শাস্তি থেকে মুক্তি পাওয়া যায় কথাটি খুবই অন্যায্য। পাপ থেকে পরিত্রাণ কেবল প্রার্থনা এবং উপাসনার মাধ্যমে হওয়া উচিত নয়, বরং ঈশ্বরের প্রশংসা এবং তার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা উচিত, কারণ বিশ্বাস হল ক্ষমার শর্ত। ক্ষমা করার গুণ একমাত্র ঈশ্বরের। এই গুণে পোপের অধিকার নেই।

১৫১৭ খ্রিস্টাব্দের সেই মুহূর্ত থেকে লুথেরান এই মতবাদ ছড়িয়ে পড়ে। অটোমানদের বিরুদ্ধে মোহাকসের যুদ্ধের সময় সাময়িক সময়ের জন্য রোমের চার্চ এই ধারণা স্বীকার করে নেয়। তবে পোপ শীঘ্রই তার স্বীকৃতি প্রত্যাহারও করে নেয়। লুথারের এই চিন্তা জার্মানি এবং সমগ্র ইউরোপ মহাদেশে একটি বুদ্ধিবৃত্তিক এবং বিপ্লবী ভূমিকম্প ঘটায়। পোপতন্ত্রের হৃদয় ইতালিতেও সাধারণ জনগণকে জার্মান, ল্যাটিন এবং অন্যান্য ভাষায় বাইবেলের ব্যাখ্যা দেখতে অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।

মার্টিন লুথারের মৃত্যুর চার বছর আগে ১৫৪২ সালের আগ পর‌্যন্ত এই চিন্তা প্রকাশ্যেই প্রচার করার অনুমতি ছিল। এমনকি ইতালিতেও। মানুষ বুঝে, ক্ষমার গুণ কেবল স্রষ্টার, পাদরিদের নয়।

খ্রিস্টান ঐক্যবাদী আন্দোলন

মার্টিন লুথার গির্জার ইতিহাস এবং ইউরোপের ইতিহাসে ষোড়শ শতাব্দীতে এবং তার পরেও বিপ্লব ঘটিয়েছিলেন। তিনি নিস্তরঙ্গ হ্রদে একটি পাথর নিক্ষেপ করেছিলেন, যেখানে জনগণ এবং রাজনীতিবিদদের উপর পোপদের আধিপত্য ছিল এবং পোপ এবং ধর্মযাজকরা ধন-সম্পদে রাজার মতো ছিল। বিশেষ করে রোমের পোপরা।

এটি ছিল খ্রিস্টান একেশ্বরবাদের উত্থান। এই মতবাদকে থামাতে এক কাতারে চলে আসে ক্যাথলিক এবং প্রোটেস্ট্যান্টরা। তারা লুথারের অনুসারীদের ধর্মদ্রোহী এবং অবিশ্বাসী হিসাবে আখ্যা দেয়।

খ্রিস্টান একেশ্বরবাদ আন্দোলন ট্রিনিটি (স্রষ্টার তিন শরীক) অস্বীকারের মাধ্যমে শুরু হয়েছিল। তাদের মতে, মসীহ আ. ছিলেন একজন প্রেরিত নবী বা উচ্চ মর্যাদার একজন মহান ব্যক্তি। তিনি ঈশ্বর নন বা ঈশ্বরের অংশও নন। এই মতবাদে দীক্ষিতদের শীর্ষে ছিলেন স্প্যানিশ বংশোদ্ভূত ধর্মতাত্ত্বিক মিগুয়েল সার্ভেটাস। এই মতবাদ লালন করার দায়ে ১৫৫৩ সালে প্রোটেস্ট্যান্টরা অদ্ভুতভাবে তাকে পুড়িয়ে মারে ধর্মযাজক জন ক্যালভিনের আদেশ অনুসারে।

মিগুয়েল সার্ভেটাসকে পোড়ানো সত্ত্বেও একেশ্বরবাদী আহ্বান চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। খ্রিস্টীয় ষোড়শ শতাব্দীতে ইতালীয় ‘ফাউস্টো সোজিনি’ এই আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত হন। মতবাদ ‘সোজিনিয়ান’ মতবাদ হিসেবে ইউরোপে বিখ্যাত হয়। সোজিনি বলেছিলেন, খ্রীষ্ট বাস্তবে ঈশ্বর হতে পারেন না। এই মতবাদের কারণে ইতালিতে এই মতবাদের অনুসারীদের যুদ্ধ করতে হয়। পরে ১৫৭৯ সালে তারা পোল্যান্ডে চলে যায়।

সোজিনি ‘ট্রিনিটারিয়ান বিরোধী আন্দোলন’-এর মধ্যে বিরোধপূর্ণ দলগুলোর মধ্যে সমন্বয় সাধনের চেষ্টা করেছিলেন। তিনি তার ‘দ্য র‌্যাকোভিয়ান ক্যাটিসিজম’ বইতে এই প্রচেষ্টা প্রমাণ করেছেন। পোলিশ শহর রাকভের সূত্রে তাদেরকে র‌্যাকোভিয়ানও বলা হয়। রাকভ তাদের আন্দোলন এবং কার্যকলাপের কেন্দ্র ছিল।

সোজিনি এবং তার অনুসারীরা একেশ্বরবাদ আন্দোলনকে রাজনীতি থেকে পিঠ বাঁচিয়ে দূরে ছড়িয়ে দিতে সক্ষম হয়েছিল। স্কুল, গির্জা প্রতিষ্ঠান এবং ছাপাখানা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে এই আন্দোলনটি ট্রান্সিলভেনিয়ায়, বর্তমান রোমানিয়াতে পৌঁছে যায়। খ্রিস্টীয় সপ্তদশ শতাব্দীতে আন্দোলনটি জার্মানিতে সমর্থক লাভ করে, যে ভূমি থেকে লুথারানিজমের উৎপত্তি হয়েছিল। আল্টড্রফ বিশ্ববিদ্যালয় ছিল তাদের বৈজ্ঞানিক ও ধর্মতাত্ত্বিক কার্যকলাপের কেন্দ্রবিন্দু।

সোজিনির একেশ্বরবাদ আন্দোলন ইংল্যান্ডের সীমানায় পৌঁছে যায়। বিখ্যাত ইংরেজ কবি ও লেখক জন মিল্টন এটিকে একটি সংস্কার আন্দোলন হিসেবে গ্রহণ করেন। তবে মিলটনের দাওয়াত গ্রহণের দু বছর পর দ্য র‌্যাকোভিয়ান বইটির সমস্ত প্রচারিত কপি বাজেয়াপ্ত এবং পুড়িয়ে ফেলার পক্ষে ইংরেজ পার্লামেন্ট ভোট দেয়। ব্রিটেনে বইটি বাজেয়াপ্ত করা সত্ত্বেও আমস্টারডামে ১৬৮০ খ্রিস্টাব্দে একটি সংশোধিত ল্যাটিন সংস্করণ পাওয়া যায়, যা সুসিনির নাতি আন্দ্রে সম্পাদনা করেছিল। পরে ১৮১৮ সালে এটির ইংরেজি অনুবাদ করা হয়।

সোজিনির বই পুড়িয়ে ফেলার পাশাপাশি সুজিনিয়ানরা ১৬৩৮ খ্রিস্টাব্দে ইউরোপে সংগঠিত নৃশংস নিপীড়নের শিকার হয় এবং তাদের অনেককে জীবন্ত পুড়িয়ে ফেলা হয়। এমনকি ১৬৫৮ সালে তাদেরকে ক্যাথলিক ধর্ম গ্রহণ বা নির্বাসনে যাওয়ার বিকল্প দেয়া হয়। পরে সুজিনিয়ানরা উরোপের উপকণ্ঠে ছড়িয়ে পড়ে।

সুজিনিয়ান আন্দোলন পোল্যান্ড থেকে জার্মানি এবং সেখান থেকে ব্রিটেন এবং নেদারল্যান্ডে ছড়িয়ে পড়ে। ১৬৪৮ সালে রাজা জন ক্যাসিমির ক্ষমতায় আসার পরে পোল্যান্ডের ক্যাথলিকরা অল্প সময়ের মধ্যে শক্তি অর্জন করে। জন ছিলেন জেসুইট ক্যাথলিক এবং একই সময়ে একজন কার্ডিনাল। এই কারণেই ক্যাসিমির সুজিনিয়ানদের ধর্মীয় এবং পরে রাজনৈতিকভাবে দমিয়ে দেয়। সুজিনিয়ানদের জোয়ার কমে যায়। তবে তাদের অনুসারীরা গোপন বৈঠকে মিলিত হতো। তাদের মধ্যে কয়েকজন ক্যালভিনিস্ট চার্চে যোগদান করেছিল।

ইউরোপে সুজিনিজমের বিরুদ্ধে ক্যাথলিক এবং প্রোটেস্ট্যান্ট গির্জার এই নিপীড়ন সত্ত্বেও বিখ্যাত ইংরেজ দার্শনিক এবং চিন্তাবিদ এই মতবাদ গ্রহণ করে। তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন জন লক, জোসেফ প্রিস্টলি, বেলশাম।

এই তিনজন ইংল্যান্ডে ট্রিনিটির বিলুপ্তি ঘটিয়েছিলেন। উদাহরণস্বরূপ, ব্রিটিশ ধর্মযাজক এবং রসায়নবিদ জোসেফ প্রিস্টলি খ্রিস্টধর্মকে প্রভাবিত করে এমন বিচ্যুতিগুলির উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছিলেন এবং দুই খণ্ডে ‘খ্রিস্টান ধর্মের বিকৃতির ইতিহাস’ লিখেছিলেন। এই বইটি ইংলিশ চার্চের অনুসারীদেরকে উত্তেজিত করেছিল। কারণ এটি খ্রীষ্টের দেবত্বকে বাতিল করে দিয়েছিল। প্রিস্টলি ১৭৭৪ সালে অক্সিজেন আবিষ্কার করেছিলেন এবং এটি তাকে বৈজ্ঞানিক সম্প্রদায়ের মধ্যে খ্যাতি এনে দিয়েছিল। ফলে তাকে তার খ্রিস্টান একেশ্বরবাদী মতবাদের বিরুদ্ধে বিচার থেকে মুক্তি দেয়া হয়েছিল। তারপর তিনি তার জীবনের শেষ বছরগুলিতে ব্রিটেন থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসনের সিদ্ধান্ত নেন এবং সেখানে ইউনিটেরিয়ান চার্চ প্রতিষ্ঠা করেন।

সোজিনিয়ান একেশ্বরবাদী মতবাদ খ্রিস্টীয় ষোড়শ শতাব্দীতে মার্টিন লুথারের সাথে শুরু হওয়া ধর্মীয় সংস্কার আন্দোলন। এই আন্দোলনের অনুসারীরা যুগে যুগে নির্যাতিত হয়েছিল। যেমন অ্যান্টিওকের বিশপ পল আল-শমেশাতি , অ্যারিয়াসের অধ্যাপক লুসিয়ান, আলেকজান্দ্রিয়ার বুকলিস চার্চের বিশপ।

সূত্র: আল-জাজিরা

The post সোসিনিজম: খ্রিস্টান একেশ্বরবাদী আন্দোলনের ইতকথা appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%b8%e0%a7%8b%e0%a6%b8%e0%a6%bf%e0%a6%a8%e0%a6%bf%e0%a6%9c%e0%a6%ae-%e0%a6%96%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%bf%e0%a6%b8%e0%a7%8d%e0%a6%9f%e0%a6%be%e0%a6%a8-%e0%a6%8f%e0%a6%95%e0%a7%87%e0%a6%b6/