Tuesday, January 31, 2023

মিশরের আন্তর্জাতিক বইমেলায় নেই বাংলাদেশি স্টল

ফাতেহ ডেস্ক:

মানুষ সাধারণত টেলিভিশন, রেফ্রিজারেটর, গাড়ি, বাড়ির মতো দামি জিনিস কিস্তিতে কিনতে অভ্যস্ত। কিন্তু মিশরে এখন বইও বিক্রি হচ্ছে কিস্তিতে। সব কিছুর দাম আকাশছোঁয়া হয়ে যাওয়ার কারণেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রকাশকরা।

মিশরের কায়রোতে চলছে আন্তর্জাতিক বইমেলা। এই মেলাটি পুরো মধ্যপ্রাচ্যে সবচেয়ে বড় মেলা এবং পৃথিবীর দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক বৃহত্তম বইমেলা। এবারের মেলায় অংশ নিয়েছেন ১ হাজার ৪৭ জন প্রকাশক। এর মধ্যে ৭০৮ জন মিশরীয় এবং ৩৪০ জন বিদেশি। তবে মেলায় ভারত ও পাকিস্তানের স্টল থাকলেও বাংলাদেশি কোনো স্টল নেই।

১৯৬৯ সালে এই বইমেলার যাত্রা শুরু হয়। কায়রো শহর প্রতিষ্ঠার ১০০০ বছর পূর্তি উপলক্ষে তৎকালীন সংস্কৃতিমন্ত্রী এই বইমেলার সূচনা করেন। কালক্রমে এই বইমেলার পরিধি ও সমৃদ্ধি এতটাই বৃদ্ধি পায় যে, বর্তমানে কোন কোন সমীক্ষায় একে পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম বইমেলা স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। প্রতি বছর জানুয়ারিতে শিক্ষাবর্ষের প্রথম পরিক্ষার ছুটিতে এই বইমেলা অনুষ্ঠিত হয়।

কিন্তু এ বছর মেলায় ক্রেতাদের আনাগোনা কম বলে মনে করা হচ্ছে। সে জন্যই ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে কিস্তিতে বই কেনার সুযোগ রাখা হয়েছে।

মিশরে বইমেলাকে কেন্দ্র করে ইসলামী সভ্যতা–সংস্কৃতির বিকাশে অন্যতম ভূমিকা পালন করে আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়। আল আজহারের সুবিশাল প্যাভিলিয়নে প্রকাশিত বই বিক্রির কর্নার ছাড়াও থাকে লেকচার কর্নার, ফতোয়া কর্নার, নারী ও শিশু কর্নার, মাখতুত ও ক্যালিগ্রাফি প্রদর্শনী ও মিডিয়া ডেস্ক। মেলার প্রতিদিন আজহারের প্রবীন শিক্ষকগণ সমসাময়িক মতানৈক্যপূর্ণ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা পেশ করেন। ফতোয়া কর্নারে অভিজ্ঞ মুফতিগণ সারাদিন জনসাধরণের জীবনমুখী নানা জিজ্ঞাসার জবাব দেন। নারী ও শিশু কর্নারে থাকে দাম্পত্যজীবন ঘনিষ্ট শিষ্টাচারমূলক অনুষ্ঠান এবং শিশুদের জন্য চিত্রাঙ্ক –ক্যালিগ্রাফি প্রশিক্ষণ ও ইসলামী ইতিহাসের সচিত্র বর্ণনা।

অর্ধ শতাব্দীকাল ধরে চলে আসা এই বইমেলা এখন আর নিছক বই বিক্রিতেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। বই বিক্রি ছাড়াও এটি এখন সাংস্কৃতিক বিভিন্ন কর্মসূচির কেন্দ্রবিন্দু । সেজন্য সরকারি–বেসরকারি উদ্যোগে বইমেলা মিলনায়তনে চলে সভা–সেমিনার, কবিতার আসর, নাট্যশিল্প, ডকুমেন্টারি সহ সাহিত্যি–সাংস্কৃতিক নানা প্রোগ্রাম। মুসলমানদের পাশাপাশি খ্রিষ্টান ধর্মের অনুসারিদের জন্যও রয়েছে পৃথক ব্যবস্থা।

The post মিশরের আন্তর্জাতিক বইমেলায় নেই বাংলাদেশি স্টল appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%ae%e0%a6%bf%e0%a6%b6%e0%a6%b0%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%86%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%a4%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%9c%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%bf%e0%a6%95-%e0%a6%ac%e0%a6%87%e0%a6%ae%e0%a7%87%e0%a6%b2/

ইসলামীসহ চার ব্যাংকের টাকা ধারের সুকুক বন্ডও ফুরিয়ে গেল

ফাতেহ ডেস্ক:

হাতে থাকা সব সুকুক বন্ড জমা দিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে টাকা ধার করেছে চার ইসলামি ধারার ব্যাংক। ফলে ব্যাংক চারটির কাছে নতুন করে টাকা ধার নেওয়ার মতো আর কোনো ইসলামি বন্ড নেই।

ব্যাংক চারটি হলো ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক ও গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের নিলাম কমিটি গতকাল মঙ্গলবার এই চারটিসহ মোট পাঁচটি ইসলামি ধারার ব্যাংককে ৪ হাজার ৭৬৫ কোটি টাকা ধার দেয়। অন্য ব্যাংকটি হলো সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক। এই ব্যাংকটির কাছে টাকা ধার করার মতো এখনো কিছু ইসলামি বন্ড হাতে রয়েছে।

টাকা ধার নেওয়া একাধিক ইসলামি ব্যাংকের ট্রেজারি বিভাগের কর্মকর্তারা গণমাধ্যমকে বলেন, ইসলামী ব্যাংকের সংকটের কারণে অন্য ইসলামি ধারার ব্যাংকগুলোও তারল্যসংকটে পড়ে গেছে। সময় গড়ালেও এ সংকট কাটছে না। এ জন্য আগে যে টাকা ধার নেওয়া হয়েছে, তার মেয়াদ শেষ হওয়ায় নতুন করে আবার ধার নেওয়া হচ্ছে। শুধু বাড়তি মুনাফার অর্থ কেন্দ্রীয় ব্যাংককে পরিশোধ করতে হচ্ছে।

The post ইসলামীসহ চার ব্যাংকের টাকা ধারের সুকুক বন্ডও ফুরিয়ে গেল appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%87%e0%a6%b8%e0%a6%b2%e0%a6%be%e0%a6%ae%e0%a7%80%e0%a6%b8%e0%a6%b9-%e0%a6%9a%e0%a6%be%e0%a6%b0-%e0%a6%ac%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%82%e0%a6%95%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%9f%e0%a6%be/

পাঠ্যক্রমে ইতিহাস বিকৃতি: যেসব কারণে প্রতিবাদ করছেন ধর্মীয় নেতারা

রাকিবুল হাসান নাঈম:

পাঠ্যপুস্তকে ইসলাম বিদ্বেষ ও মুসলিম ইতিহাস বিকৃতির প্রতিবাদে মুখর হয়ে উঠেছেন মুসলিম ধর্মীয় নেতারা। তারা বলছেন, নাস্তিক্যবাদ ও আরএসএস-এর হিন্দুত্ববাদ দিয়ে ভরে ফেলা হয়েছে শিক্ষার্থীদের সিলেবাস। এই সিলেবাসকে তারা পুরো একটা জাতিকে ধ্বংস করে দেয়ার পরিকল্পনা বলে অভিহিত করেছেন।

যে কারণে প্রতিবাদ করছেন আলেমরা

এ প্রসঙ্গে কথা হয় ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মুফতি ফয়জুল্লাহর সঙ্গে। কদিন আগে বাইতুল মোকাররমের উত্তর গেইটে বর্তমান সিলেবাস বাতিলের দাবিতে বিশাল বিক্ষোভ করেছে তার দল। ফাতেহকে তিনি বলেন, ‘পাঠ্যপুস্তকে যেসব কন্টেন্ট দেয়া হয়েছে, তা সরাসরি ঈমানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। বানর থেকে মানুষ সৃষ্টির ইতিহাস মিথ্যা ইতিহাস। শিশুদেরকে এই ইতিহাস শেখানো মানে ঈমানবিরোধী ইতিহাস শেখানো। কারণ, আল্লাহ বলেছেন, মানুষকে আমি মাটি থেকে সৃষ্টি করেছি। এর বাইরে অন্য কোনো বিশ্বাস একজন মুসলিম ধারণ করতে পারে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘বইগুলোতে মুসলিম ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে। এদেশে মুসলিমদেরকে বানিয়ে দেয়া হয়েছে দখলদারের প্রজন্ম। এতে আত্মপরিচয় সঙ্কট তৈরী হবে শিশুদের মনে। এইযে মুসলিমদের ইতিহাস বদলে দেয়া, বিকৃত এই ইতিহাস যদি প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়, তাহলে মুসলমানদের আগামী প্রজন্ম বিপথগামী হবে। তাই এখন এটা নিয়ে জোর গলায় কথা বলা সময়ের দাবি।’

কথা হয় জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দির সঙ্গে। ফেব্রুয়ারির ৬ তারিখ পাঠ্যপুস্তকে ইতিহাস বিকৃতি ও ইসলাম বিদ্বেষের বিরুদ্ধে আন্দোলনের প্রথম ধাপ হিসেবে সংবাদ সম্মেলন করবে তার দল। ফাতেহকে তিনি বলেন, ‘পাঠ্যপুস্তকের ইসলাম বিদ্বেষ প্রসঙ্গে অনেক আগে থেকেই আমরা প্রতিবাদ করে আসছি। এখনও করছি। কারণ, এবার যে বিষয়গুলো পাঠ্যপুস্তকে ঢুকানো হয়েছে, তা আমাদের ঈমানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। যেমন ডারউইনের মতবাদ। কিছু আমাদের ধর্মীয় কৃষ্টি ও কালচারের বিপরীত। যেমন অস্বাভাবিক যৌনবিকৃতি স্বাভাবিককরণ এবং মুসলিম ইতিহাস বিকৃতি। আক্রমণ হয়েছে দুদিক থেকেই। ঈমান ও কৃষ্টি একসাথে বদলে দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। তাই আমাদেরকে এর বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে হবে। ইতোমধ্যেই আলেম-উলামা, বিভিন্ন ফোরাম-সংগঠন আওয়াজ তুলেছেন। আমরা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।’

তিনি আরও বলেন, ‘এতে কেবল আলেমদের নয়, তাদের সঙ্গে সাধারণ মানুষেরও প্রতিবাদ জানানো উচিত। কারণ, স্কুলে কিন্তু বিশাল একটা অংশ পড়াশোনা করছে। সাধারণত, মাদরাসা থেকে হাইস্কুলে যায় ১০/১২ শতাংশ। বাকিরা সব কিন্তু যায় স্কুল থেকে। সুতরাং, যারা স্কুল থেকে যায়, এসব বিকৃত ইতিহাস পড়ে তারা বিভ্রান্ত হবে। তাই স্কুল-সংশ্লিষ্ট মুসলমানদেরও এর বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলা উচিত বলে মনে করি।’

এ প্রসঙ্গে আরও কথা হয় খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদেরের সঙ্গে। পাঠ্যপুস্তকে ইসলামবিদ্বেষী কন্টেন্টের বিরুদ্ধে তার দল লিখিত প্রতিবাদ জানিয়েছে। ফাতেহকে তিনি বলেন, ‘পাঠ্যপুস্তকে যে ইতিহাস বলা হয়েছে, তা আমাদের শিশুদেরকে ভুলপথে পরিচালিত করবে। তাদের মনে গেঁথে যাবে ভুল ইতিহাস। যেভাবে বইয়ে ফ্রিমিক্সিং এবং জেন্ডারের বিকৃত পরিচয় শেখানো হয়েছে, তাতে সমাজ ধ্বংস হবে৷ এই বইগুলোর কন্টেন্ট আমাদের ঐতিহ্য বিরোধী। কোথাও দাড়ি-টুপি, মসজিদ-জায়নামাজের কথা নেই। এর বিরুদ্ধে এখন আমাদের প্রতিবাদ করতেই হবে। আমরাও আন্দোলনে নামবো।’

বিষয়টিকে ‘রাষ্ট্রদ্রোহী’ মনে করছে হেফাজত

হেফাজত বর্তমান সিলেবাসকে দেখছে হিন্দুত্ববাদী সিলেবাস হিসেবে। এক বিবৃতিতে হেফাজতের নেতৃবৃন্দ বলেছেন, বাংলাদেশের মুসলিম শিশুদের ঈমান-আকিদা ও দেশপ্রেম ধ্বংসের জন্য শিক্ষানীতি প্রণয়নের দায়িত্ব ইসলামবিরোধী শক্তির হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। তারা মুসলমানের সন্তানদের নাস্তিক ও হিন্দুত্ববাদী মানসিকতা তৈরি করার জন্য শিক্ষানীতি প্রণয়ন করেছে। নাস্তিক্যবাদ ও আরএসএস-এর হিন্দুত্ববাদ দিয়ে ভরে ফেলা হয়েছে শিক্ষার্থীদের সিলেবাস।’

সিলেবাস প্রত্যাখ্যান করে হেফাজত বলেছে, ‘আমাদেরকে বারবার আশ্বস্ত করা হয়েছিল, পাঠ্যবইয়ে ইসলামবিরোধী কিছু থাকবে না; কিন্তু সেই কথা রাখা হয়নি। এতে স্পষ্ট যে, পুরো একটা জাতিকে ধ্বংস করে দেয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। আমরা দাবি, যারা এই গুরুতর অপকর্ম করেছে, তাদের সামনে আনা হোক। তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ এনে বিচারের মুখোমুখি করা হোক। একই সাথে এই শিক্ষা সিলেবাসে থাকা ইসলামবিরোধী বিষয়গুলোসহ অসঙ্গতিপূর্ণ সব বিষয় বাতিল করে নতুন সিলেবাস প্রণয়ন করতে হবে। এই সিলেবাসে এক দিনও পাঠদান আমরা মেনে নিতে পারি না।’

হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমীর, ‘কওমী মাদরাসা শিক্ষক পরিষদ-এর সভাপতি অধ্যক্ষ মুহাম্মদ মিজানুর রহমান চৌধুরী বলেন, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির পাঠ্য বইয়ে ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক কুরআন-সুন্নাহ বিরোধী ও মুসলমানদের ঈমান আকীদা বিধ্বংসী বিতর্কিত অনেকগুলো বিষয় যুক্ত করা হয়েছে। বিশেষ করে ‘বাংলা’, ‘ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান (অনুশীলন বই ও অনুসন্ধানী পাঠ)’ বইতে। এতে ইতিহাসের নামে মুসলিম শাসকদেরকে নেতিবাচক ও শোষক হিসেবে উপস্থাপন, মূর্তির নগ্ন ছবিসহ আপত্তিকর অনেক বিষয়কে দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠী মুসলমানদের সামাজিক রীতিনীতির সাথে সাংঘর্ষিক করে উপস্থাপন করা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি মনে করছি, সরকারের ভেতরে ঘাপটি মেরে থাকা স্বার্থন্বেষী গুটিকয়েক লোক এধরনের বিতর্কিত বিষয়গুলো সন্নিবেশ করে এর দায়ভার সরকারের উপর চাপিয়ে গণরোষ সৃষ্টি করে দেশে সাম্প্রদায়িকতা উস্কে দিয়ে দাঙ্গা-হাঙ্গামা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। বিষয়টি দ্রুত বিবেচনায় না নিলে এক সময় তা নিয়ন্ত্রনহীন হয়ে পড়তে পারে বলে মনে করছি। এমন বিতর্কিত বিষয় পাঠ্যপুস্তকে বারবার যুক্ত করে একদিকে ইসলাম ও মুসলমানদেরকে উস্কে দেওয়া হচ্ছে এবং অন্য দিকে রাষ্ট্রের বিপুল পরিমাণ অর্থ নষ্ট করে দেশ ও রাষ্ট্র বিরোধী কাজ করছে।’

The post পাঠ্যক্রমে ইতিহাস বিকৃতি: যেসব কারণে প্রতিবাদ করছেন ধর্মীয় নেতারা appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%aa%e0%a6%be%e0%a6%a0%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%95%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%ae%e0%a7%87-%e0%a6%87%e0%a6%a4%e0%a6%bf%e0%a6%b9%e0%a6%be%e0%a6%b8-%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%95%e0%a7%83%e0%a6%a4-2/

পাঠ্যবইয়ের ভুল সংশোধন : আলাদা দুই কমিটি গঠন

ফাতেহ ডেস্ক:

পাঠ্যবইয়ের ভুল ও দোষী ব্যক্তিদের খুঁজে বের করতে আলাদা সাত সদস্যবিশিষ্ট দুইটি কমিটি গঠন করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রথমটি কারিকুলাম বিশেষজ্ঞ কমিটি ও দ্বিতীয়টি তদন্ত কমিটি। বিশেষজ্ঞ কমিটির মেয়াদ ৩০ দিন ও তদন্ত কমিটির ২১ দিনের। এ সময়ের মধ্যে তাদের তদন্তকাজ শেষ করে প্রতিবেদন জমা দিতে হবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে।

মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) দুই কমিটি সংক্রান্ত অফিস আদেশ জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠনের অফিস আদেশে বলা হয়েছে, ২০২৩ শিক্ষাবর্ষের ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির প্রণীত পাঠ্যপুস্তকের অসংগতি/ভুল চিহ্নিতপূর্বক তা সংশোধনে প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রদানের লক্ষ্যে সাত সদস্যের বিশেষজ্ঞ কমিটি আগামী এক মাসের মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন জমা দেবে।

এ কমিটিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. আব্দুল হালিমকে আহ্বায়ক করা হয়েছে।

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) উপপরিচালক মো. আজিজ উদ্দিন সদস্য সচিব করা হয়েছে। সদস্য হিসেবে রয়েছেন শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক এবং নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. ওয়াহেদুজ্জামান চাঁন, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সদস্য (পাঠ্যপুস্তক) লুৎফর রহমান, কারিগরি মাদরাসা বিভাগের একজন উপসচিব, ইসলামি ফাউন্ডেশনের একজন পরিচালক ও মতিঝিল সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাজমুল নাহার শাহীন।

কমিটির কার্যপরিধিতে বলা হয়েছে, ষষ্ঠ-সপ্তম শ্রেণির প্রণীত পাঠ্যপুস্তকের অসংগতি, ভুল-ত্রুটি চিহ্নিত করে তা সংশোধনে প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রদান, সুপারিশ প্রণয়নে কমিটি প্রয়োজনে আরও ২-৩ জন বিশেষজ্ঞদের মতামত গ্রহণ করে আগামী এক মাসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

অপর কমিটির অফিস আদেশে বলা হয়েছে, ২০২৩ শিক্ষাবর্ষের ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির পাঠ্যপুস্তকে অসংগতি/ভুল তথ্য-উপাত্ত সন্নিবেশ হয়ে থাকলে তা পর্যালোচনাপূর্বক সংশ্লিষ্ট কার্যক্রমে কারো গাফলতি/ইচ্ছেকৃত ভুল ছিল কি না, তা চিহ্নিতকরণপূর্বক সুপারিশসহ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের লক্ষে আগামী তিন সপ্তাহ সময়ব্যাপী সাত সদস্যের কমিটিকে মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

তদন্ত কমিটিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব খালেদা আক্তারকে আহ্বায়ক করে উপসচিব মিজানুর রহমানকে সদস্যসচিব করা হয়েছে। সদস্য হিসেবে যুগ্ম সচিব মোল্লা মিজানুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একজন পরিচালক, কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের একজন উপসচিব, মাউশির পরিচালক অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম খান, বিএফ শাহীন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক আব্দুল মান্নান মিয়াকে রাখা হয়েছে।

The post পাঠ্যবইয়ের ভুল সংশোধন : আলাদা দুই কমিটি গঠন appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%aa%e0%a6%be%e0%a6%a0%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%ac%e0%a6%87%e0%a6%af%e0%a6%bc%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%ad%e0%a7%81%e0%a6%b2-%e0%a6%b8%e0%a6%82%e0%a6%b6%e0%a7%8b%e0%a6%a7%e0%a6%a8-%e0%a6%86/

Monday, January 30, 2023

বাংলাদেশের ৪.৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ অনুমোদন দিল আইএমএফ

ফাতেহ ডেস্ক:

বাংলাদেশকে সাড়ে চার বিলিয়ন ডলার ঋণ দেওয়ার প্রস্তাবটি অনুমোদন দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) নির্বাহী পর্ষদ।

যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে সোমবার রাতে আইএমএফ এর নির্বাহী বোর্ডের সভা বসে। সেখানেই বাংলাদেশের ঋণ প্রস্তাবটি অনুমোদন পেয়েছে।

এর আগে গত ১৬ জানুয়ারি আইএমএফের উপ ব্যবস্থাপনা পরিচালক অ্যান্তইনেত মনসিও সায়েহ তার ঢাকা সফরের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করেন। সেদিন তাদের মধ্যে ঋণের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়।

বাংলাদেশকে সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলার ঋণ দিতে গত নভেম্বরে ঢাকায় কর্মকর্তা পর্যায়ের বৈঠকে প্রাথমিক সমঝোতায় পৌঁছায় আইএমএফ। সেই ঋণচুক্তির শর্তসহ খুঁটিনাটি চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়ার মধ্যেই বাংলাদেশ সফর করেন আইএমএফ এর উপ ব্যবস্থাপনা পরিচালক।

The post বাংলাদেশের ৪.৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ অনুমোদন দিল আইএমএফ appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%82%e0%a6%b2%e0%a6%be%e0%a6%a6%e0%a7%87%e0%a6%b6%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a7%aa-%e0%a7%ab-%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%b2%e0%a6%bf%e0%a6%af%e0%a6%bc%e0%a6%a8-%e0%a6%a1%e0%a6%b2/

আবারও বিদ্যুতের দাম বাড়লো

ফাতেহ ডেস্ক:

ফের পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে বিদুতের দাম বাড়লো। নির্বাহী আদেশে বেড়েছে এ দাম। এজন্য সোমবার (৩০ জানুয়ারি) বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা হয়েছে প্রজ্ঞাপন। নতুন দাম কার্যকর হবে ফেব্রুয়ারি মাস থেকেই।

খুচরা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বেড়েছে ৫ শতাংশ। পাইকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের মূল্য ৬ টাকা ২০ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৮ টাকা ১০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে। পাইকারি (বাল্ক) দাম সব কোম্পানির ক্ষেত্রে প্রতিটি স্তরেই (২৩০, ১৩২ ও ৩৩ কেভি) কিলোওয়াট ঘণ্টায় ৫০ পয়সা বেড়েছে।

সংশোধিত বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) আইনের ক্ষমতা বলে সরকার দ্বিতীয়বারের মতো নির্বাহী আদেশে বিদু্যতের দাম বাড়ালো। বিশেষ ক্ষেত্রে বিইআরসি ছাড়াই ভোক্তা পর্যায়ে জ্বালানি তেল, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম নির্ধারণ, পুনর্নির্ধারণ ও সমন্বয়ে সরকারকে ক্ষমতা দেওয়া দেওয়া হয়েছে ‘বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (সংশোধন) আইন, ২০২৩’-এ। গত ১ ডিসেম্বর অধ্যাদেশটি জারি করা হয়। পরে সংসদ অধিবেশন বসলে সেটি পরিণত করা হয় আইনে। ২২ জানুয়ারি আইনের গেজেট জারি হয়। এ আইনের বলে সরকার প্রতি মাসে গ্যাস বিদ্যুতের দাম সমন্বয়ের (বাড়ানো-কমানো) ঘোষণা দিয়েছে। গত ১৮ জানুয়ারি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে শিল্প, বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বাণিজ্যিক খাতে গ্যাসের দাম প্রতি ইউনিটে সর্বোচ্চ ১৯ টাকা পর্যন্ত বাড়ানোর ঘোষণা দেয় জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ।

বিদ্যুতের নতুন দাম অনুযায়ী, আবাসিকের লাইফ লাইন (৫০ ইউনিট পর্যন্ত বিদু্যৎ ব্যবহারকারী) গ্রাহকদের প্রতি ইউনিটের জন্য ৩ টাকা ৯৩ পয়সার পরিবর্তে ৪ টাকা ১৪ পয়সা দিতে হবে। ৭৫ ইউনিট পর্যন্ত ব্যবহারকারীদের প্রতি ইউনিট ৪ টাকা ৪০ পয়সার জায়গায় দিতে হবে ৪ টাকা ৫২ পয়সা।

এছাড়া আবাসিকের ৭৬ থেকে ২০০ ইউনিট পর্যন্ত প্রতি ইউনিটের দাম ৬ টাকা ১ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৬ টাকা ৩১ পয়সা, ২০১ থেকে ৩০০ ইউনিট পর্যন্ত প্রতি ইউনিট ৬ টাকা ৩০ পয়সা থেকে ৬ টাকা ৬২ পয়সা, ৩০১ থেকে ৪০০ ইউনিট পর্যন্ত প্রতি ইউনিট ৬ টাকা ৬৬ পয়সা থেকে বেড়ে ৬ টাকা ৯৯ পয়সা করা হয়েছে।

এছাড়া ৪০১ থেকে ৬০০ ইউনিট পর্যন্ত আবাসিকের ব্যবহারকারীদের প্রতি ইউনিট ১০ টাকা ৪৪ পয়সার পরিবর্তে ১০ টাকা ৯৬ পয়সা এবং ৬০০ ইউনিটের বেশি ব্যবহারকারীদের প্রতি ইউনিটের দাম ১২ টাকা ৩ পয়সার পরিবর্তে ১২ টাকা ৬৩ পয়সা গুণতে হবে।

সেচ বা কৃষি কাজে ব্যবহৃত পাম্পের ক্ষেত্রে আগে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম ছিল চার টাকা ৩৭ পয়সা। এখন সেটি বেড়ে হয়েছে ৪ টাকা ৫৯ পয়সা।

ক্ষুদ্র শিল্পের ক্ষেত্রে এখন ফ্ল্যাট রেট ৯ টাকা ৪১ পয়সা, অফ পিকে ৮ টাকা ৪৬ পয়সা এবং পিকে ১১ টাকা ২৯ পয়সা। আগে যা ছিল যথাক্রমে ৮ টাকা ৯৬ পয়সা, ৮ টাকা ৬ পয়সা এবং ১০ টাকা ৭৫ পয়সা।

নির্মাণের ক্ষেত্রে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম ১২ টাকা ৬০ পয়সার স্থলে এখন ১৩ টাকা ২৩ পয়সা গুণতে হবে। শিক্ষা, ধর্মীয় ও দাতব্য প্রতিষ্ঠান এবং হাসপাতালের ক্ষেত্রে ইউনিটপ্রতি নতুন দাম ৬ টাকা ৬৪ পয়সা। আগে যা ছিল ৬ টাকা ৩২ পয়সা। রাস্তার বাতি ও পানির পাম্পের ক্ষেত্রে ইউনিট প্রতি বিদ্যুৎ খরচ ৮ টাকা ৯ পয়সার পরিবর্তে ৮ টাকা ৪৯ পয়সা হলো।

ব্যাটারি চার্জিং স্টেশনের ইউনিট প্রতি বিদ্যুতের নতুর দাম ফ্ল্যাট ৮ টাকা ৪২ পয়সা, অফ পিকে ৭ টাকা ৫৮ পয়সা, সুপার অফ পিকে ৬ টাকা ৭৪ পয়সা এবং পিকে ১০ টাকা ৫৩ পয়সা।

এছাড়া ‘বাণিজ্যিক ও অফিস’ শ্রেণিতে ইউনিট প্রতি ফ্ল্যাট রেট ১০ টাকা ৮২ পয়সার পরিবর্তে ১১ টাকা ৩৬ পয়সা, অফ পিকে ৯ টাকা ৭৩ পয়সার পরিবর্তে ১০ টাকা ২২ পয়সা ও পিক সময়ে ১২ টাকা ৯৮ পয়সার পরিবর্তে ১৩ টাকা ৬৩ পয়সা দিতে হবে।

ভর্তুকি কমাতে এর আগে গত বছরের ২১ নভেম্বর পাইকারিতে বিদ্যুতের দাম ১৯ দশমিক ৯২ শতাংশ বাড়ানোর ঘোষণা দেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিইআরসি, যা ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হয়। বিদ্যুতের পাইকারি দাম বাড়ানোর ঘোষণার পরই খুচরায় দাম বাড়াতে আবেদন করে বিতরণ সংস্থাগুলো। সেসব আবেদন কারিগরি কমিটিতে মূল্যায়ন শেষে তা গণশুনানিতে আসে। এরপর গত ১২ জানুয়ারি খুচরা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম ৫ শতাংশ বাড়ানো হয়, যা জানুয়ারি থেকে কার্যকর হয়েছিল।

 

The post আবারও বিদ্যুতের দাম বাড়লো appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%86%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a6%93-%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%a6%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a7%81%e0%a6%a4%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%a6%e0%a6%be%e0%a6%ae-%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%a1%e0%a6%bc/

পাঠ্যক্রমে ইতিহাস বিকৃতি: আলিয়া মাদরাসার শিক্ষকরা বিরক্ত-বিব্রত

রাকিবুল হাসান নাঈম:

নতুন কারিকুলামে রচিত হওয়া ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণীর বইগুলোতে মুসলিম ইতিহাসকে শুধু এড়ি্য়েই যাওয়া হয়নি, বরং মুসলিম ইতিহাসের প্রতি করা হয়েছে এক ধরণের বিষোদগার। বাংলায় প্রায় ৬০০ বছরের মুসলিম শাসনকে অভিহিত করা হয়েছে ‘বিদেশীদের শাসন’ বলে। মুসলিম বিজেতা বখতিয়ার খিলজীকে বলা হয়েছে দখলদার। পাঠ্যবইয়ে মুসলিম ইতিহাসের এই বিকৃতি নিয়ে আলিয়া মাদরাসার শিক্ষকরা বিরক্ত-বিব্রত। তারা বলছেন, বইগুলো পড়লে মনে হবে, এ দেশের ইতিহাসের সঙ্গে ইসলাম ও মুসলমানের কোনো সংযোগই ছিল না। হিন্দুত্ববাদী দৃষ্টিতে বইগুলো লেখা হয়েছে বলেও মন্তব্য করেছেন তারা।

দেখা গেছে, পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণীর বইগুলোর বিভিন্ন অধ্যায়ে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে বাংলার বিভিন্ন সামাজিক আন্দোলনের কথা আনা হয়েছে। কিন্তু এসব আলোচনাতে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে ইসলামী আন্দোলনগুলোকে। শহীদ তিতুমীর এবং ফরায়েজী আন্দোলনের কথা একেবারেই অনুপস্থিত। কোথাও কোন উল্লেখ নেই ১৮৫৭ সালের বিপ্লবে আলেমগণের ভূমিকা এবং আত্মত্যাগের। অন্যদিকে বিভিন্ন শ্রেণীর বইতে বারবার কলকাতাকেন্দ্রিক বেঙ্গল রেনেসাঁ (নবজাগরণ), স্বদেশী আন্দোলন এবং ক্ষুদিরাম-সূর্যসেনদের সশস্ত্র আন্দোলনের কথা এসেছে।

হিন্দুত্ববাদী দৃষ্টিতে লেখা হয়েছে মুসলিম ইতিহাস

হিন্দুত্ববাদী দৃষ্টিতে মুসলিম ইতিহাস লেখা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন পঞ্চগড় নূরুল আলা নূর কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ্য আলহাজ্ব মাওলানা ড. মোঃ আবদুর রহমান। ফাতেহকে তিনি বলেন, ‘বইগুলো পড়লে মনে হবে, এ দেশের ইতিহাসের সঙ্গে ইসলাম ও মুসলমানের কোনো সংযোগই ছিল না। মনে হয়, এদেশের মুসলমানদের শেকড় হিন্দুভূমি ও শাসন থেকে এসেছে। বইগুলো আমি ঘেঁটে দেখেছি। বইগুলোতে যেসব ছবি ব্যবহার করা হয়েছে, সেগুলো দেখে মনে হয়, এদেশে কোনো মুসলিম ঐতিহ্য নেই। নাস্তিকরা সরকারকে বিতর্কিত করার জন্য এসব কাজ করেছে বলে আমার মনে হয়। কারণ, প্রধানমন্ত্রীকে আমি দেখেছি, মুসলিম ইতিহাসের প্রতি তিনি শ্রদ্ধাশীল। তিনি মুসলিম ইতিহাস পড়েন এবং পড়েছেন।’

ড. মোঃ আবদুর রহমান আরও বলেন, ‘এনসিটিবির এক মিটিংয়ে পাঠ্যপুস্তক থেকে ইসলামি ইতিহাস বাদ দেয়ার প্রস্তাব আনা হয়েছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী অনুমতি দেননি। তিনি বলেছেন, আমি মুসলিম ইতিহাস পড়েছি। আমরা মুসলিম। মুসলিম ইতিহাস বাদ যাবে না। সে মিটিংয়ে আমিও ছিলাম। ইসলামি ইতিহাস যেহেতু তারা বাদ দিতে পারেনি, তাই মুসলিম ইতিহাসটাকে বিকৃত করে দিয়েছে। এতে সরকার যেমন বিব্রত, তেমনি আমরাও বিব্রত।’

একই কথা বলেন জামেয়া-ই-আহমাদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদরাসা ষোলশহরের সাবেক অধ্যক্ষ আলহাজ্ব মাওলানা আছিয়র রহমান। ফাতেহকে তিনি বলেন, ‘পাঠ্যপুস্তকে যে ইতিহাস লেখা হয়েছে মুসলিম শাসনামলের, তা বিকৃত। এগুলো শুধু সংশোধন নয়, পরিবর্তন করে নতুন করে সাজাতে হবে। এখানে হিন্দুদের দৃষ্টিতে মুসলিম ইতিহাসকে দেখা হয়েছে। এতে আমরা যেমন বিব্রত, ছাত্র এবং অভিভাবকরাও বিব্রত। যে চক্রটি এই কাজ করেছে, তারা দেশ ও জাতির শত্রু। তারা জাতির সঙ্গে গাদ্দারি করেছে। দেশের মুসলমানদের অজান্তে তাদের পাঠ্যপুস্তকে মুসলিম ইতিহাস বিকৃত করে দিয়েছে।’

এনসিটিবি শুনেনি শিক্ষকদের পরামর্শ

এ প্রসঙ্গে কথা হয় দারুন নাজাত সিদ্দিকিয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আ.খ.ম. আবুবকর সিদ্দীকের সঙ্গে। পাঠ্যপুস্তক ইস্যুতে শুরু থেকেই দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মতবিনিময় করে চলছেন তিনি। ফাতেহকে তিনি বলেন, ‘যখন কারিকুলাম তৈরী হয়, তখন একদিনের একটি মিটিং হয়েছিল। এনসিটিবি আমাদের সামনে যে রূপরেখা তুলে ধরেছিল, তাতে আমরা আপত্তি জানিয়েছিলাম। সমর্থন দেইনি। সেদিন বিষয়টি মিমাংসা হয়নি। পরে তিনদিনের আরেকটি মিটিং হয়। কিন্তু আমরা আমাদের অবস্থান থেকে নড়িনি। এই তিনদিনেও যখন বিষয়টি সুরাহা হয়নি, তখন পরে আবার তিনদিনের মিটিং হয়। কিন্তু আমাদের একটাই কথা ছিল, এই কারিকুলামের সঙ্গে আমরা একমত না। আমরা আমাদের দাবিতে অটল ছিলাম। তাই পরের তিনদিনেও কোনো সমাধান হয়নি। আমাদেরকে তখন জানানো হয়, পরে বিষয়টি নিয়ে আবার আলোচনা করা হবে। কিন্তু তারপর আর আমাদেরকে আপডেট দেয়া হয়নি বা ডাকা হয়নি। পরে শুনি পাঠ্যপুস্তক রচনা করা হয়ে গেছে আমাদের না জানিয়েই।’

তিনি আরও বলেন, ‘পরে যখন পাইলট কার্যক্রমের জন্য বইগুলো দেয়া হয়, তখন আমরা আবার এর বিরোধিতা করি। আমরা শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে তার সামনে আপত্তি তুলে ধরি পয়েন্ট আকারে। তিনি তখন বলেন, আমাদের আপত্তি নিরসন করেই বই ছাপা হচ্ছে। কিন্তু আমরা গোপনে খবর নিয়ে দেখি, শিক্ষামন্ত্রীর পরামর্শ না মেনে এবং আপত্তিকর বিষয় পরিবর্তন না করেই বই ছাপা হচ্ছে। যখন বই ছাপা হলো, তখন আমরা ভাবলাম, কোথাও যখন কাজ হচ্ছে না, প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাই। প্রধানমন্ত্রীর কাছে গেলাম আমরা। তিনি মন দিয়ে আমাদের কথা শুনলেন। আমরা তাকে আবেদন করলাম, বইগুলো যেন বাতিল করে দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী বললেন, এত বই ছাপা হয়েছে। বাতিল তো এক আদেশে করতে পারবো না। তবে সামনে পরিবর্তন করা হবে। আপনি সবাইকে বলেন, আমি বিষয়টি দেখছি। এরপরই দেখা গেছে এনসিটিবি ও শিক্ষামন্ত্রী সংবাদ সম্মেলন করে দুঃখ প্রকাশ করেছে এবং পরিবর্তনের ঘোষণা দিয়েছ। কমিটি করেছে। এটা করেছে প্রধানমন্ত্রীর আদেশে।’

সর্বশেষ উদ্যোগ কী জানতে চাইলে দারুন নাজাতের অধ্যক্ষ বলেন, ‘এখন শুনেছি সংশোধন কমিটিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রফেসরকে রাখা হয়েছে। আমরা তার কাছে যাব। তাকেও বিষয়গুলো বোঝাবো। আমাদের সব করতে হয় নিয়মতান্ত্রীকভাবে। আশা করি, নিয়মতান্ত্রীকভাবে চেষ্টা করে সফল হবো। কারণ, পাঠ্যপুস্তকে ইতিহাস বিকৃতির পেছনে যে চক্রটি কাজ করছে, তারাও কিন্তু কম শক্তিশালী না। তাই চাইলেই হুট করে কিছু হয়ে যাবে না। সময় লাগবে। আমরা দোআ করছি।’

আমূল পরিবর্তন চান শিক্ষকরা

শুধু আপত্তিকর বিষয়গুলোর পরিবর্তন নয়, পাঠ্যপুস্তকের আমূল পরিবর্তন চান শিক্ষকরা। দারুন নাজাত সিদ্দিকিয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আ.খ.ম. আবুবকর সিদ্দীক বলেন, ‘আমরা শুধু কয়েক লাইনের পরিবর্তন চাই না। আমরা পুরো ঢেলে সাজানোর পরামর্শ দিয়েছি। দাবি জানাচ্ছি। সবারই এখন সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে। বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে হবে। ইস্যুর তলে বিষয়টি হারিয়ে গেলে পরিবর্তন হবে না।’

এ প্রসঙ্গে কথা হয় সিলেটের শাহজালাল ইয়াকুবিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ আলহাজ্ব মাওলানা কমর উদ্দিন চৌধুরীর সঙ্গে। ফাতেহকে তিনি বলেন, ‘আমরা পাঠ্যপুস্তকে মুসলিম ইতিহাস বিকৃতি নিয়ে বিব্রত। একটি মুসলিম দেশে মুসলিম ইতিহাস বিকৃত করে পড়ানোর জন্য দেয়া হয়েছে। এটা তো অযৌক্তিক। আমরা পুরো বইয়ের পরিবর্তন চাই, মাত্র কয়েক লাইনের পরিবর্তন চাই না। শুধু মাদরাসার জন্য নয়, স্কুলের জন্যও।’

এ প্রসঙ্গে কথা হয় জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের মহাসচিব এবং শ্রীপুর ভাংনাহাটি রহমানিয়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ আলহাজ্ব মাওলানা শাব্বীর আহমদ মোমতাজীর সঙ্গে। ফাতেহকে তিনি বলেন, ‘আমরা টিম গঠন করেছি। পাঠ্যবইগুলো একেকজনকে ভাগ করে দেয়া হয়েছে। লাইন বাই লাইন পড়ে আমরা নোট করছি। শিক্ষামন্ত্রী যেহেতু বলেছেন আপত্তিগুলো পয়েন্ট করে বলে দিতে, তাই করছি। বই যাচাই শেষ হয়ে গেলে আমরা আমাদের বিস্তারিত আপত্তি শিক্ষামন্ত্রণালয়ে জমা দিব। আমরা চাই পুরো পরিবর্তন। কেবল কয়েক লাইনের পরিবর্তন চাই না।’

The post পাঠ্যক্রমে ইতিহাস বিকৃতি: আলিয়া মাদরাসার শিক্ষকরা বিরক্ত-বিব্রত appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%aa%e0%a6%be%e0%a6%a0%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%95%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%ae%e0%a7%87-%e0%a6%87%e0%a6%a4%e0%a6%bf%e0%a6%b9%e0%a6%be%e0%a6%b8-%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%95%e0%a7%83%e0%a6%a4%e0%a6%bf/

ট্রান্সজেন্ডার হওয়া জন্মগত বিষয় নয়: এর বায়োলজিক্যাল ভিত্তি নেই

ড. মোহাম্মদ সরোয়ার হোসেন:

মানুষের লিঙ্গ পরিচয়-নারী ও পুরুষ-নির্ধারণে সুস্পষ্ট জৈবিক জেনেটিক ভিত্তি আছে। ছেলেদের রয়েছে XY ক্রোমোজোম আর মেয়েদের থাকে XX ক্রোমোজোম। এখানে মূল পার্থক্য হচ্ছে Y ক্রোমোজম, আরও নির্দিষ্ট করে বললে শুধু একটি মাত্র জিন (যা SRY নামে পরিচিত) ছেলে এবং মেয়ে লিঙ্গধারী হবে কিনা তার পার্থক্য গড়ে দেয়। এজন্য এই জিনকে মাস্টার সেক্স রেগুলেটর বা ছেলে-মেয়ে হওয়ার মলিকিউলার সুইচ বলে। সুইচটি যদি সক্রিয় হয় তবে ভ্রুণটি ছেলে হবে। আর যদি সেই SRY জিন কোনো কারণে নষ্ট বা নিষ্ক্রিয় থাকে তবে ভ্রুণটি হবে মেয়ে। জেন্ডার পরিচয়ে (মনের ইচ্ছানুযায়ী যৌন পরিচয়) নির্ণয়ে এমন কোনো জেনেটিক ভিত্তি নেই; অর্থাৎ সুনির্দিষ্ট কোনো জিন বা জেনেটিক মার্কার গত ২০-৩০ বছর শত চেষ্টা করেও বের করা সম্ভব হয়নি।

প্রসঙ্গত, লিঙ্গ পরিবর্তন বা sex change নিয়ে ফিশ মডেলে অনেক গবেষণা হয়েছে। এই রিসার্চ ফিল্ডে আমি পিএইচডি করেছি ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিংগাপুরে। আমার গবেষণার বিষয়বস্তু ছিল জেব্রাফিশ (খুব পপুলার রিসার্চ মডেল) কিভাবে মেয়ে থেকে ছেলে মাছে রূপান্তরিত হয়। আমার পিএইচডি থিসিস পেপার (Molecular Analyses of Gonad Differentiation and Function in Zebrafish ) গুগল সার্চ করে পড়া যাবে। এই ফিশের মানুষের মতো সুনির্দিষ্ট সেক্স ক্রোমোজোম নেই। জন্মের এক পর্যায় পর্যন্ত (প্রথম ৩ সপ্তাহ) সব জেব্রাফিশ মেয়ে হিসেবে বড় হয় এবং পরে কিছু অপরিপক্ক মেয়ে (Juvenile Zebrafish) ফিশ ছেলেতে রূপান্তরিত হয়।

আমার কাজ ছিল মলিকিউলার লেভেলে আসলে কি ঘটে তার রহস্য উন্মোচন করা। মজার ব্যাপার হচ্ছে যে জিনটাতে (Gene) সমস্যা হলে একজন মানুষ হিজড়া হয়ে যায় সেই জিনটি জেব্রাফিশ থেকে প্রথম ক্লোনিং করে তার বিভিন্ন ধরণের বৈশিষ্ট্য এনালাইসিস (Zebrafish Androgen Receptor: Isolation, Molecular, and Biochemical Characterization) করেছিলাম যা ভাল জার্নালে প্রকাশিত হয়েছিল।

অনেক মাছের পোনাকে হরমোন দিয়ে ছেলে বা মেয়েতে পরিবর্তন করা যায়। তেলাপিয়া মাছ চাষে এটি বহুল ব্যবহার হয়। কেননা তেলাপিয়ার সুনির্দিষ্ট সেক্স ক্রমোজোম নেই। মাছে হরমোন ট্রিটমেন্ট লিঙ্গ পরিবর্তন করে যা স্বাভাবিক ছেলে বা মেয়ের তুলনায় কোনো পার্থক্য নেই। কিন্তু মানুষের ক্ষেত্রে ট্রান্সজেন্ডাররা (ট্রান্সসেক্সুয়াল) হরমোন থেরাপী বা অস্ত্রপচার করে ছেলে থেকে মেয়ে অথবা মেয়ে থেকে ছেলেতে রূপান্তিত হলেও ভিতরে অঙ্গের পরিবর্তন করা যায় না। বাহ্যিক অঙ্গকে (যেমন নারী যৌনাঙ্গ) কসমেটিক সার্জারির মাধ্যমে পুরুষাঙ্গের মতো করে তৈরী করা হলেও সেই মহিলা বন্ধ্যা হয়ে যায়, অর্থাৎ শিশু জন্ম দানে কোনো ভূমিকা রাখতে পারে না। অর্থাৎ সেক্স রিডিজাইন সার্জারী জাস্ট মনের ইচ্ছা বাস্তবায়নের জন্য একটা অত্যন্ত ব্যয়বহুল প্রক্রিয়া।

মানুষের জন্ম হতে বাবার শুক্রানু এবং মা’র ডিম্বানু মিলিত হয়ে প্রথমে জাইগোট নামক যে প্রথম একটি কোষ তৈরী হয়, তখনই একজন মানুষের সেক্স বা লিঙ্গ নির্ধারিত হয়ে যায়। অর্থাৎ এটা এতই পারফেক্ট একটা জৈব প্রক্রিয়া।

ট্রান্সজেন্ডাররা আলোচনায় একটি মতবাদকে প্রতিষ্ঠিত করেছিল যে তাদের জেন্ডারও জন্মগতভাবে গর্ভাবস্থায় নির্দিষ্ট হয় (‘Born this way’ hypothesis)। ১৯৯৩ সালে বিশ্বমিডিয়া তোলপাড় হয় অবশেষে গে জিন (Gay Gene) আবিষ্কার হলে তা নিয়ে এলজিবিটি’র জেনেটিক ভিত্তি পাওয়া গেল বলে সে কি উন্মাদনা! আনন্দের অতিশয্যে NATIONAL GAY & LESBIAN TASK FORCE বিবৃতি দেয়- the NIH study… shows that homosexuality is a naturally occurring and common variation among humans….”.

পরবর্তীতে প্রায় ৫ লক্ষ মানুষের জেনেটিক ডাটা এনালাইসিস করে সায়েন্টিফিক মহল সিদ্ধান্তে উপনীত হয় যে, ‘গে জিন’ বলে কিছু পাওয়া যায়নি, জেনেটিক বৈচিত্র্যতা বা ভিন্নতা দিয়ে হোমসেক্সুয়ালি নির্ধারণ করা সম্ভব নয়।

নিউরোবায়োলজিক্যাল (ইমেজিং টেকনোলোজি) গবেষণার মাধ্যমে নারী এবং পুরুষের মস্তিষ্কে পার্থক্য খুঁজে পাওয়া গেছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে ট্রান্সজেন্ডার পরিচয় কি মস্তিষ্কের মাধ্যমে নির্ধারিত? এই প্রশ্নের জবাব খুঁজতে গিয়ে অনেক গবেষণা হয়েছে। প্রসঙ্গত, ১৯৯৫ সালে নেদারল্যান্ডস এর নিউরোবায়োলজিস্ট ডিক সোয়াবের নেতৃত্বে একটি মৌলিক গবেষণা হয়েছিল। তিনি পুরুষ এবং মহিলা মস্তিষ্কের মধ্যে গঠনগত যে পার্থক্য রয়েছে সেই রিসার্চ প্রজেক্টেও জড়িত ছিলেন। ড সোয়াব্রর ট্রান্সজেন্ডারদের লাশের পোস্টমর্টেম থেকে প্রাপ্ত মস্তিষ্কের টিস্যুর নমুনা পরীক্ষা করে কিছুটা আশাজাগানিয়া পার্থক্য খুঁজে পেলেও তা থেকে কোনো সিদ্ধান্তে পৌছা অসম্ভব। তিনি মাত্র ১২ জন মৃত ট্রান্সজেন্ডারের টিস্যু উপর এই কাজটি করেছিলেন। এরপর আরো কিছু নিউরোবায়োলজিক্যাল গবেষণা হয়েছে কিন্তু এ পর্যন্ত দাবী করার মত অগ্রগতি নেই।

বলে রাখা প্রয়োজন, এলজিবিটি আন্দোলন লাইমলাইটে এসেছিল একটি দূর্বল রিসার্চ পেপারের মাধ্যমে। মাত্র ৩০ জন সমকামি এবং ৩০ জন সাধারণ মানুষের উপর স্টাডি করে পরিংখ্যানিকভাবে নেগেটিভ কো-রিলেশন দেখিয়েছিল। এত কম স্যাম্পল সাইজ এবং দূর্বল পরিসংখ্যানের মডেল দিয়ে এ যুগে মোটামুটি জার্নালেও পেপার প্রকাশ করা সম্ভব না। কিন্তু সেই পেপারটির দলিল হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে যে, সমকামিতা কোন মানসিক সমস্যা নয়। সাইকোলজি ফিল্ডে চাইলে নিজের দাবী পূরণ করার যুক্তি বের করা যায়।

ট্রান্সজেন্ডারদের সেই ‘Born this way’ হাইপোথিসিস প্রমাণে ভ্রুণ পর্যায়ে কোন হরমোনগত পার্থক্য বা ভিন্ন দেখা যায় কিনা তা নিয়ে ইন্টারসেক্স (হিজড়া) শিশুদের উপর পর্যাপ্ত রিসার্চ করেও তেমন ভিত্তি দাঁড় করানো সম্ভব হয়নি। এত প্রচেষ্টার পরও ট্রান্সজেন্ডারের কারন খুজে পাওয়া যাচ্ছে না।

তাই এটি নিয়ে বেশী মরিয়া হলে কিন্তু ট্রান্সজেন্ডার কমিউনিটির জন্য ভাল হবে না বলে বিখ্যাত সায়েন্টিফিক ম্যাগাজিন সায়েন্টিফিক আমেরিকান এই শিরোনামে প্রতিবেদন ছাপে- “The Search for a ‘Cause’ of Transness Is Misguided” অর্থাৎ ট্রান্সজেন্ডারের কারন খোঁজা বিপথগামীতার নামান্তর।

লেখক: বায়োমেডিকেল রিসার্চ ফাউন্ডেশন (বিআরএফ) বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক এবং ইনডিপেনডেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক।

The post ট্রান্সজেন্ডার হওয়া জন্মগত বিষয় নয়: এর বায়োলজিক্যাল ভিত্তি নেই appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%9f%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%be%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%b8%e0%a6%9c%e0%a7%87%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%a1%e0%a6%be%e0%a6%b0-%e0%a6%b9%e0%a6%93%e0%a6%af%e0%a6%bc%e0%a6%be-%e0%a6%9c%e0%a6%a8%e0%a7%8d/

Sunday, January 29, 2023

সংবিধান বহির্ভূত সরকার যেন ক্ষমতায় না আসে সেই চেষ্টা করেছি: প্রধানমন্ত্রী

ফাতেহ ডেস্ক:

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় কাজ করছে সরকার। সংবিধানবহির্ভূত সরকার যেন আর ক্ষমতায় আসতে না পারে, আমরা সেই চেষ্টা করেছি। সেই সঙ্গে পুলিশের সাহসী ভূমিকায় দেশ আজ জঙ্গি ও সন্ত্রাস মোকাবিলায় সফল।

পাঁচ বছর পর রোববার রাজশাহী সফর করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সারদায় পুলিশ একাডেমির অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন তিনি। সকালে রাজশাহীর সারদায় পুলিশ একাডেমিতে সহকারী পুলিশ সুপারদের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজে অংশ নেন তিনি।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, দেশের যে কোনো ক্রান্তিকালে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে পুলিশ বাহিনী। তারা কাজ করেছে জঙ্গিবাদ মোকাবিলায়। প্রশংসাও কুড়িয়েছে তারা। এ ছাড়া মঙ্গা মোকাবিলায় কাজ করছে সরকার। ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তেও কাজ চলছে।

বিকালে নগরীর ঐতিহাসিক মাদ্রাসা মাঠে আওয়ামী লীগের জনসভায় যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী। ২৫টি উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন ও ছয়টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। জনসভায় দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দেবেন শেখ হাসিনা। সেখানে এরই মধ্যে জড়ো হয়েছেন হাজারও নেতাকর্মী। প্রধানমন্ত্রীর সফর ঘিরে রাজশাহীতে বিরাজ করছে উচ্ছ্বাস।

The post সংবিধান বহির্ভূত সরকার যেন ক্ষমতায় না আসে সেই চেষ্টা করেছি: প্রধানমন্ত্রী appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%b8%e0%a6%82%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%a7%e0%a6%be%e0%a6%a8-%e0%a6%ac%e0%a6%b9%e0%a6%bf%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%ad%e0%a7%82%e0%a6%a4-%e0%a6%b8%e0%a6%b0%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%b0-%e0%a6%af/

Saturday, January 28, 2023

মুফতি শহিদুল ইসলাম: মানবসেবায় উৎসর্গ যার জীবন

মুনশী নাঈম:

মানব সেবামূলক সংগঠন আল মারকাজুল ইসলামীর (এএমআই) চেয়ারম্যান, নড়াইল-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মুফতি শহিদুল ইসলাম ইন্তেকাল করেছেন। বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ১২টার দিকে মানিকগঞ্জে তার প্রতিষ্ঠিত মাদ্রাসা আবু হুরায়রায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৩ বছর। দীর্ঘদিন ধরে তিনি ডায়াবেটিস, প্রেশারসহ নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন। শুক্রবার (২৭ জানুয়ারি) দুপুর ২টা ৪০ মিনিটে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ চত্বরে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় ইমামতি করেন ফিলিস্তিনের বায়তুল মুকাদ্দাসের ইমাম শায়খ আলী ওমর আল আব্বাসি। পরে কেরানীগঞ্জে তার প্রতিষ্ঠিত জামিআতুল উলুম আল ইসলামিয়া মাদ্রাসার পাশে কবর দেওয়া হয়।

হেফাজতের আমীর আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও মহাসচিব আল্লামা শায়েখ সাজিদুর রহমান বলেছেন, আল মারকাজুল ইসলামীর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান বিশিষ্ট সমাজসেবক মুফতি শহীদুল ইসলামের ইন্তেকালে দেশ একজন বিশিষ্ট আলেম সমাজসেবককে হারিয়েছে। তার মৃত্যুতে দেশ ও ইসলামি অঙ্গনের যে ক্ষতি হয়েছে, তা অপূরণীয়। মারকাজুল ইসলামীর মাধ্যমে তিনি বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের সেবায় অসামান্য অবদান রেখেছেন। তিনি তার সেবামূলক কাজের জন্য আজীবন স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।

এই মানুষটি তার ভূমিকা, সেবা, অবদানে এদেশে একটি শিরোনামে পরিণত হয়েছিলেন। সেবক-আলেম হিসেবে শত্রু-মিত্র দেশের সব পক্ষের মানুষ তাকে চিনতো। বাংলাদেশের আলেম-সমাজের জন্য প্রাতিষ্ঠানিকভাবে সেবার অঙ্গনের দরজা দৃশ্যমানভাবে প্রথমে খুলে দিয়েছেন তিনি। এই লেখায় তার সংক্ষিপ্ত জীবন-বিবরণী তুলে ধরছি।

জন্ম, পড়াশোনা, পরিবার

মুফতি শহীদুল ইসলাম হাফি: ১৫ মার্চ ১৯৬০ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) ফরিদপুরের ঝিলটুলী এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন। পৈত্রিক নিবাস নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলায়। তার পিতা শামসুল হক সরদার।

গোপালগঞ্জের গহরডাঙ্গা মাদ্রাসায় তিনি তার শিক্ষা জীবন শুরু করেন। গওহারডাঙ্গায় হিফজ শেষ করার পর এসে ভর্তি হন জামিয়া মুহাম্মদিয়া যাত্রাবাড়ীতে। সেখানে ডক্টর আসাদুল্লাহ গালিবের কাছে ‘ফিকহে মুহাম্মদী’ অধ্যয়ন করেন। পরবর্তীতে লালবাগ মাদরাসা এবং কামরাঙ্গীরচর মাদরাসায় পড়ে পাকিস্তানের করাচীর বিন্নুরী টাউন মাদ্রাসায় ভর্তি হোন। সেখান থেকে ১৯৮৮ সালে দাওরায়ে হাদিস (মাস্টার্স) শেষ করে ইফতাও (ইসলামি আইনশাস্ত্রের পাণ্ডিত্ত্ব) সম্পন্ন করেন।

ব্যক্তিগত জীবনে তিনি দুই পুত্র ও চার কন্যার জনক ছিলেন। পুত্র দুইজন হলেন: মুফতি তালহা ইসলাম এবং মাওলানা হামজা ইসলাম। হামজা ইসলাম মারকাজের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।

আল-মারকাজুল ইসলামী প্রতিষ্ঠা

তার কর্মজীবনের বড় একটি অধ্যায়জুড়ে রয়েছে সেবাসংস্থা আল-মারকাজুল ইসলামী। বেসরকারি এই সেবা সংস্থা দেশ-বিদেশের ধর্মপ্রাণ মানুষের সাহায্য-সহযোগিতায় বিভিন্ন সেবামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। বিন্নুরী টাউন মাদ্রাসায় অধ্যয়নকালে ১৯৮৮ সালে তিনি আল মারকাজুল ইসলামী প্রতিষ্ঠা করেন। বিভিন্ন দেশের বন্ধুদের পরামর্শে এই সংস্থার প্রথম নামকরণ করেন ‘মুসলিম ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন’। পরে বিন্নুরী টাউনের এক উস্তাযের পরামর্শে ‘আল মারকাযুল ইসলামী বাংলাদেশ’ নাম রাখেন। পাকিস্তানে এ সংস্থার অর্থ জমা রাখতেন শায়খ আব্দুল মালেক হাফি.-এর কাছে।

দেশ-বিদেশের বিভিন্ন ধর্মপ্রাণ ব্যক্তির অর্থ-সহযোগিতা বিশেষ করে সৌদি আরব, কাতার, দুবাই, আরব আমিরাতসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের ধনাঢ্য ব্যক্তিদের সহযোগিতায় মারকাযের বিভিন্ন সেবামূলক কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। নব্বই দশকের শুরুতে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মারকাজের কার্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়। বাবর রোড ও শ্যামলীতে সংস্থাটির নিজস্ব সম্পত্তি রয়েছে। বর্তমানে কেরানীগঞ্জ উপজেলার সিরাজনগর ইউনিয়নে ১৬০ বিঘা জমির ওপর আল মারকাযুল ইসলামীর বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।

এ সংস্থার অধীনে বেশ কয়েকটি কওমি ও মহিলা মাদ্রাসা পরিচালিত হয়। এ ছাড়া মারকাজুল ইসলামী অসংখ্য মসজিদ-মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রেখেছে। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে নলকূপ স্থাপন করে বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করেছে, দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের ফ্রি চিকিৎসার পাশাপাশি ঠোঁট কাটা, তালু কাটা রোগীদের ফ্রি চিকিৎসা করেছে। মারকাজুল ইসলামীর অধীনে মানবসেবামূলক নানা কাজ চালু রয়েছে। হাসপাতাল, অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস, লাশ বহন, লাশের গোসল করানো থেকে শুরু করে বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসের সংক্রমণের সময় মৃতদের দাফন ও সৎকার কার্যক্রম নিয়ে সর্বমহলের ব্যাপক প্রশংসা পায় সংস্থাটি। ১৯৮৮ সালের বন্যার সময় বাংলাদেশের প্রায় সব মাদ্রাসায় চাউল বিতরণ করেছিলেন তিনি।

তিনি মানবসেবার উদ্দেশ্যে বহু এম্বুলেন্স ক্রয় করেছেন। রাজধানী ঢাকায় যে কোনো শীর্ষ আলেমের ইন্তিকাল হলেই আল মারকাযুল ইসলামীর এম্বুলেন্স এসে হাজির হয়ে যায়। এম্বুলেন্সের প্রথম টাকা দিয়েছিলেন তার মা। বিভিন্ন ঘরোয়া আলোচনায় তিনি এ কথা জানিয়েছেন।

শিক্ষা বিস্তারে অবদান

বাংলাদেশে আরবী ভাষা-সাহিত্যের জোয়ার তৈরীর পেছনের তার অবদান খাটো করে দেখা যাবে না। তিনি মারকাযুল ইসলামীর অধীনে আরবী সাহিত্য বিভাগ খুলে এর দায়িত্ব অর্পণ করেছিলেন শায়খ শহীদুল্লাহ ফজলুল বারী রহ: এর হাতে। তিনি তার নিপুণ কারিশমায় দেশে আরবি চর্চার জোয়ার তৈরী করেন।

মুফতী শহীদুল ইসলাম আল মারকাযুল ইসলামীর পক্ষ থেকে প্রতি মাসে আরবী ম্যাগাজিন প্রকাশ করতেন। বিভিন্ন ইসলামী রাষ্ট্র থেকে আরবী ভাষার বিভিন্ন কিতাব এনে বাংলাদেশের উলামা-তালাবার মাঝে বিনামূল্যে বিতরণ করতেন। তার ভাষ্যমতে, বিভিন্ন দেশ থেকে আগত কিতাব অনেক সময় মুফতী আবদুর রহমান বসুন্ধরা রহ: এর পরিচালনাধীন আল মারকাযুল ইসলামীতে চলে যেতো।

তিনি দৃষ্টিপ্রতিবন্ধিদের শিক্ষা-দীক্ষার লক্ষ্যে আফ্রিকা থেকে শিক্ষক এনে অন্ধ বিভাগ চালু করেন। যার মাধ্যমে শত শত অন্ধ মানুষ কুরআন এবং দ্বীনী জ্ঞান অর্জন করতে সক্ষম হচ্ছে।

রাজনৈতিক জীবন

তিনি ইসলামী ঐক্যজোট করতেন এবং মজলিসে শূরার সদস্য ছিলেন। পরে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস (২০০১-২০০৯) করেছেন। মজলিসের জ্যেষ্ঠ নায়েবে আমির ছিলেন। ২০১১ সালের ২১ জুলাই দলটির নায়েবে আমিরের পদ থেকে পদত্যাগ করেন। ২০০৯ সালে বাংলাদেশ গণসেবা আন্দোলন নামে একটি রাজনৈতিক দল গঠন করেন। তিনি এ দলের চেয়ারম্যান।

চারদলীয় ঐক্যজোটের অধীনে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের পক্ষ থেকে ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নড়াইল-২ আসনে সাংসদ পদে নির্বাচনে করেন। এ নির্বাচনে শেখ হাসিনা ৪ হাজার ২৩৩ ভোটে জয়ী হয়েছিলেন। পরে শেখ হাসিনা আসনটি ছেড়ে দিলে ২০০২ সালের উপনির্বাচনে তিনি বিজয়ী হন। ২০০৮ সালের নির্বাচনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। এরপর ২০১৪ সালের নির্বাচনে অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকেন। ২০১৮ সালে নড়াইল-২ আসনে একাদশ সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দাখিল করেছিলেন। কিন্তু তাকে মনোনয়ন দেয়া হয়নি।

মুফতি আজিজুল হক কাসেমী স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘মুফতি শহিদুল ইসলাম শাইখুল হাদীস আল্লামা আজিজুল হক রহ.-এর অত্যন্ত প্রিয়ভাজন ছিলেন। চারদলীয় ঐক্যজোটের পক্ষ থেকে ইসলামী ঐক্যজোটকে একটি মন্ত্রীত্বের পদ দিতে চাইলে শায়খুল হাদীস রহ. সে পদটি মুফতী শহীদুল ইসলামকে দেওয়ার আবেদন করেছিলেন। মুফতী সাহেব সে মন্ত্রীত্বের পদ নিতে রাজি হননি। যখন শাইখুল হাদীস আল্লামা আজিজুল হক রহ. ঢাকা পল্টনের মুক্তাঙ্গনে স্বীকৃতির জন্য ডাক দিয়েছিলেন, তখন তিনি শাইখুল হাদীস রহ.-এর ডান হাত ছিলেন। তখনকার সময়ে উলামা-তালাবার খানার ব্যবস্থা তিনিই করতেন। তিনি আমাদেরকে বলেছেন, সে আন্দোলনে প্রথম দিনের প্রথম খাবার ব্যবস্থা করেছিল আমার এক হিন্দু ভক্ত।’

শেষ বিদায়

২৪ জানুয়ারি এএমআই সিটি কেরাণীগঞ্জে অবস্থিত জামিআতুল উলূম আল ইসলামিয়া মাদ্রাসার ২০২৩-এর বার্ষিক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এএমআই -এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মুফতী শহিদুল ইসলাম । মোট ৪টি অধিবেশনে মোট ৯টি বিষয়ে শিক্ষার্থীরা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন। চতুর্থ অধিবেশনে পুরস্কার বিতরণ ও গুণীজনদের মূল্যায়নের মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হয় এ অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে তিনি ছাত্রদের বলেন, ‘তোমারা আমার জন্য দোয়া করবে, আমি শহিদুল ইসলাম যেন শহিদ হয়ে মারা যাই।’

তিনি চলে গেলেন জুমার পবিত্র এক রাতে। রেখে গেলেন তার কর্মবহুল জীবন। যে মানুষের সেবায় জীবন উৎসর্গ করে দিয়েছেন এই আলেম, সে মানুষের দোয়ায় তার কবর হয়ে উঠুক জান্নাত। তার কবরে ঝরে পড়ুক রহমতের শবনম।

The post মুফতি শহিদুল ইসলাম: মানবসেবায় উৎসর্গ যার জীবন appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%ae%e0%a7%81%e0%a6%ab%e0%a6%a4%e0%a6%bf-%e0%a6%b6%e0%a6%b9%e0%a6%bf%e0%a6%a6%e0%a7%81%e0%a6%b2-%e0%a6%87%e0%a6%b8%e0%a6%b2%e0%a6%be%e0%a6%ae-%e0%a6%ae%e0%a6%be%e0%a6%a8%e0%a6%ac%e0%a6%b8/

সুইডেনের পর এবার ডেনমার্কে পোড়ানো হলো পবিত্র কোরআন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

সুইডেনে কট্টর ডানপন্থীদের পবিত্র কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় নিন্দা ও সমালোচনায় মুখর মুসলিম বিশ্ব। এর মধ্যেই এবার ডেনমার্কে পবিত্র কোরআন পোড়ানোর ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার ডেনমার্কের রাজধানী কোপেনহেগেনের পাশে একটি মসজিদের সামনে ও দেশটিতে তুরস্কের দূতাবাসের সামনে এসব ঘটনা ঘটেছে। খবর আল-জাজিরার।

কোপেনহেগেনে পবিত্র কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় যুক্ত ছিলেন রাসমুস পালুদান নামের এক ব্যক্তি। তিনি ডেনমার্কের কট্টর ডানপন্থী রাজনৈতিক দল হার্ড লাইনের নেতা। ২১ জানুয়ারি সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে তুরস্কের দূতাবাসের সামনে পবিত্র কোরআন পোড়ান তিনি। পালুদান সুইডেন ও ডেনমার্কের যৌথ নাগরিক।

গত বছর এপ্রিলে পালুদান ঘোষণা দেন, পবিত্র রমজান মাসে তিনি বিভিন্ন স্থানে ঘুরে ঘুরে পবিত্র কোরআন পোড়াবেন। তাঁর এ ঘোষণায় সুইডেনজুড়ে দাঙ্গা শুরু হয়েছিল। সেই ঘোষণা মোতাবেক তিনি প্রথমে সুইডেনে, এরপর ডেনমার্কে এ কাণ্ড ঘটালেন।

সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমের নর্দার্ন রেলওয়ে স্কয়ার নামের এলাকায় অবস্থিত তুরস্কের দূতাবাস। সম্প্রতি দূতাবাসের সামনে রাসমুস পালুদান নামের এক ব্যক্তি কোরআন শরিফে আগুন দিয়েছেন। পালুদান ডেনমার্কের কট্টর ডানপন্থী রাজনৈতিক দল হার্ড লাইনের নেতা

এ ছাড়া বাংলাদেশ, সৌদি আরব, জর্ডান ও কুয়েতের মতো কয়েকটি মুসলিম দেশও সুইডেনে পবিত্র কোরআন পোড়ানোর এ ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে। বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ইরাক, লেবাননসহ কয়েকটি দেশে এ ঘটনায় বিক্ষোভ হয়েছে। এক বিবৃতিতে পবিত্র কোরআন পোড়ানোর ঘটনাকে ‘ইসলামবিদ্বেষী ও ঘৃণিত’ বলে মন্তব্য করেছে ঢাকার সুইডিশ দূতাবাস।

The post সুইডেনের পর এবার ডেনমার্কে পোড়ানো হলো পবিত্র কোরআন appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%b8%e0%a7%81%e0%a6%87%e0%a6%a1%e0%a7%87%e0%a6%a8%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%aa%e0%a6%b0-%e0%a6%8f%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%b0-%e0%a6%a1%e0%a7%87%e0%a6%a8%e0%a6%ae%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a7%8d/

Thursday, January 26, 2023

রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত ধর্ম : মিসরে যেভাবে পরিচালিত হয় কেন্দ্রীয় ফতোয়া বিভাগ

রাকিবুল হাসান নাঈম:

২০২২ সালে মিসরের কেন্দ্রীয় ফতোয়া বিভাগ দেড় মিলিয়ন ফতোয়া প্রকাশ করেছে। ১৮৯৫ সালে এই বিভাগ প্রতিষ্ঠার পর এটিই সর্বোচ্চ ফতোয়ার সংখ্যা। সরকারি জরিপমতে, এরমধ্যে ৬৩ শতাংশ ফতোয়া পারিবারিক ও সামাজিক সমস্যা সম্পর্কিত। বাকিগুলো চরমপন্থা, ইবাদত, মোআমালা, শিষ্টাচার ও নৈতিকতা সংক্রান্ত। তবে কেন্দ্রীয় ফতোয়া বিভাগ পরিচালিত ফেসবুকের এক জরিপমতে, ৭০ শতাংশ ফতোয়া পারিবারিক ও সামাজিক সমস্যা সম্পর্কিত।

কিন্তু এই ফতোয়াকে মিশরীয়রা কতটুকু বিশ্বাস করে? ২০২০ সালে পরিচালিত মিশরীয় সেন্টার ফর মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক ওপিনিয়ন স্টাডিজের এক সমীক্ষায় দেখা যায়, ৪৬ শতাংশ লোক দারুল ইফতার ফতোয়াকে বিশ্বাস করে না। ৫১ শতাংশ লোকের রাজনৈতিক ফতোয়ায় আস্থা নেই।

মিশরের কেন্দ্রীয় ফতোয়া বিভাগ বিভিন্ন ফতোয়ায় বেশ বিতর্ক সৃষ্টি করে। তাদের ফেসবুক পেইজে তার প্রমাণ বিদ্যমান। শুধু বিভাগই নয়, যারা এই বিভাগের মুফতির পদ গ্রহণ করেন, তারাও বিতর্কের জন্ম দেন। তাদের মধ্যে আছেন প্রাক্তন মুফতি আলি গোমা এবং তার আগে সাইয়্যিদ তানতাভি। ১৯৯৬-২০১০ সালে তিনি আল আজহারের শায়েখ ছিলেন। ছিলেন হোসনি মোবারকের সমর্থক। যেসব সাংবাদিক মোবারক সম্পর্কে সংবাদ প্রকাশ করেছিল, তিনি সেসব সাংবাদিকদের বেত্রাঘাত করার জন্য একটি ফতোয়া জারি করেছিলেন। এমনকি ১৯৯৪ সালে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক এক সম্মেলনের সময় তিনি দারুল ইফতায় একটি জায়নবাদী প্রতিনিধিদলের সম্মানে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন।

আগেকার অনেকের মতো বর্তমান মুফতি শাওকি ইব্রাহিম আল্লাম মিশরের শাসনকে সমর্থন করার জন্য কোনো কসরত রাখেননি। শুধু শত শত বিরোধীদের মৃত্যুদণ্ডের অনুমোদন দিয়েই নয়, সমস্ত বিতর্কিত ধর্মীয় প্রবণতাকে সমর্থন করেও। যখন সরকার ‘মৌখিক তালাক’ বাতিল করতে চেয়েছিল এবং এটিকে ফি-ট্যাক্স সহ নথিভুক্ত একটি বিবাহবিচ্ছেদে পরিণত করতে চেয়েছিল, আল-আজহারের শায়খরা এর বিরোধিতা করেছিলেন। কিন্তু তখন শাওকি ইব্রাহিম স্পষ্টভাবে রাষ্ট্রের পদ্ধতিকে সমর্থন করে বলেছিলেন, ‘মৌখিক বিবাহবিচ্ছেদের আইনী সংশোধন প্রয়োজন।’ তিনি সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইকারী সেনাবাহিনী এবং পুলিশ বাহিনীর উপর ব্যয় করার জন্য জাকাতের অর্থ বিতরণের অনুমোদন দেন।

গত এক দশকে দেশটির দারুল ইফতা রাষ্ট্রের অভিযোজন সমর্থন করার জন্য কয়েক ডজন ফতোয়া জারি করেছে। ফতোয়াগুলো কেবল অভ্যন্তরীণ ইস্যুতেই সীমাবদ্ধ ছিল না। বরং মিশর যখন লিবিয়াতে বাহিনী পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়, তখন দারুল ইফতা তার অবস্থানকে সমর্থন করার জন্য একটি ফতোয়া জারি করে বলে, মিশরীয় সেনাবাহিনী চরমপন্থীদের সাথে লড়াই করছে। যখন তুর্কি সরকার আয়া সুফিয়াকে মসজিদে রূপান্তর করার সিদ্ধান্ত নেয়, মিশরীয় দারুল ইফতা তখন বলে, তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোগান তার সমর্থকদের মন জয় করতে মসজিদ কার্ড ব্যবহার করছেন। এরদোগান দেশে তার অত্যাচার প্রতিষ্ঠা করতে এবং বিদেশে তার ঔপনিবেশিক উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে ন্যায্যতা দিতে ফতোয়া অস্ত্র ব্যবহার করে চলেছেন।

মিশরীয় দারুল ইফতার কাজ কেবল মানুষের ধর্মীয় ও পার্থিব বিষয়ে ফতোয়া জারি করা নয়, যে কাজটি মুফতিরা সর্বদাই শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে করে আসছে। বরং তাদের অন্যতম একটি কাজ হলো, সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প ও কাজকে বৈধতা দেয়া। সরকারের প্রকল্প বাস্তবায়নে ধর্মীয় বয়ান তুলে ধরা। যেন সরকার প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গিয়ে কোনো বাধার সম্মুখীন না হয়।

মোহাম্মদ আলী পাশার যুগ

আধুনিক রাষ্ট্রের নীতিকে বৈধতা দেওয়ার জন্য মুফতি ও শায়খদের ব্যবহার এবং তাদের ফতোয়া ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে মিশরের শাসক মোহাম্মদ আলী পাশার যুগে শুরু হয়। তিনি মিশরে ক্ষমতায় আসার পর আলেম এবং শাসকের মধ্যে বা আরও সাধারণভাবে ধর্ম এবং মিশরীয় রাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি নতুন পর্যায় শুরু হয়। এরপর তারা আর কখনও আগের মতো স্বাধীন থাকেননি। কারণ, মোহাম্মদ আলী পাশাই সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করতেন। আলেমদের প্রভাব একদম হ্রাস হয়ে যায়। যেমন তৎকালীন শাইখুল আজহার আবদুল্লাহ শারকাবি ভয়ানক দুর্গ হত্যাকাণ্ড থেকে পালিয়ে আসা দুজন মামলুক রাজপুত্রকে নিজের বাড়িতে নিরাপত্তা দিয়েছিলেন। তাদের জন্য সুপারিশ করেছিলেন। কিন্তু পাশা তার সুপারিশ গ্রহণ করেননি। শেষ পর্যন্ত রাজপুত্ররা হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়।

মুফতিদের শাসক ও জনসাধারণের মধ্যে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করার অনুমতি দেননি মুহাম্মদ আলী পাশা। সৈয়দ ওমর মাকরাম, যিনি মুহাম্মদ আলীকে গভর্নর হিসাবে বসানোর ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিলেন, তিনি যখন সেই ভূমিকা পালনের জন্য জোর দেন, তখন তাকে তার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তাকে রাজনৈতিক জীবন এবং সমগ্র সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় দৃশ্য থেকে সরিয়ে দেয়া হয়। তৎকালীন মুফতিরা মুহাম্মদ আলীর হাতের পুতুলে পরিণত হয়েছিল।

পাশা যখন আধুনিক পাশ্চাত্যের আদলে একটি সেনাবাহিনী গড়ে তোলার জন্য তার আধুনিকীকরণ প্রকল্প শুরু করেছিলেন, তার নীতিকে বৈধতা দেওয়ার জন্য তার নতুন প্রকল্পের পক্ষে মুফতিদের নিয়োগ করেছিলেন। তার মাথায় ছিল কয়েক বছর আগে পদচ্যুত হওয়া অটোমান শাসক সালিম তৃতীয়ের কথা। তার বিরুদ্ধে মুফতিরা ফতোয়া দিয়েছিল, ‘যে সুলতান পশ্চিমা সিস্টেমে চলতে প্রজাদের বাধ্য করে, সে শাসক হবার যোগ্য নয়।’ এই ফতোয়ার পরই তাকে পদচ্যুত করা হয়।

তখন মুহাম্মদ আলীর একটি শক্তিশালী আইনি সহায়তার প্রয়োজন ছিল। কারণ, তিনি নতুন এক শাসনের দিকে জনগণ ও সৈন্যদের বাধ্য করেছিলেন। তখন তিনি তার স্বপক্ষে কথা বলার জন্য খুঁজে পান মিশরে বসবাসকারী আলজেরিয়ান মুফতি শেখ মুহাম্মদ বিন মাহমুদ আল-জাজারি ইবনে আল-আন্নাবিকে। দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে তার দেশে হানাফী মাযহাবের মুফতির পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন তিনি। তারপর ১৮২০ সালে হজে যান। কিন্তু হজ শেষে তিনি আলজেরিয়ায় আর ফিরে যাননি। মিশরে চলে আসেন। ঊনবিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মুফতিদের একটি দল তার কাছ থেকে জ্ঞান গ্রহণ করেন। তাদের মধ্যে একজন শেখ ইব্রাহিম আল-সাক্কা। মোহাম্মদ আলী শেখ আল-আন্নাবীর বইয়ের একটি সংক্ষিপ্ত রূপ লিখতে বলেন সক্কাকে। ১৮২৬ সালে আন্নাবি সামরিক বাহিনী আধুনিকীকরণের বিষয় নিয়ে বইটি লিখেছিলেন। অনুরূপভাবে যখন পাশা নাগরিক ওয়াকফ সম্পত্তি বাতিলের আইন করার সিদ্ধান্ত নেন, তখন আন্নাবিকে এ বিষয়ে কথা বলার নির্দেশ দেন। আন্নাবি তখন নাগরিক ওয়াকফ সম্পত্তি জায়েজ নেই বলে ফতোয়া দেন। তার ফতোয়ার পরই নাগরিক ওয়াকফ সম্পত্তি বাতিল হয়ে যায়। অথচ এটি ইসলামের সুস্পষ্ট একটি বিধান।

পাশা মিশরীয়দের জীবনে ধর্মীয় ফতোয়ার গুরুত্ব সম্পর্কে খুব সচেতন ছিলেন। তাই তিনি তার সব কাজে মুফতিদের ফতোয়া নিতেন। এমনকি যখন তিনি ১৮৪৬ সালে মিশরে জনসংখ্যার একটি আদমশুমারি পরিচালনা করার সিদ্ধান্ত নেন, তখন পরামর্শসভায় অন্যান্যদের সঙ্গে মুফতিদেরও ডাকেন। আদমশুমারির গুরুত্ব তাদেরকে বুঝান।

এভাবেই মিশরে ফতোয়া ক্ষমতার সাথে যুক্ত হয়ে যায়। মুফতিরা হয়ে যান সরকারি মুফতি।

দারুল ইফতা: আমলাতন্ত্রের শক্ত ঘাঁটি

মিশরের রীতি ছিল—চার মাযহাবের মুফতিদের উপস্থিতিতে মুফতি নির্বাচন কর হতো। তাদের মধ্যে সবচেয়ে জ্ঞানী ব্যক্তিদের মধ্য থেকে তাদের মুফতি নির্বাচন করতো। তারপর তাকে গভর্নরের কাছে নিয়ে যেতো। গভর্নর তার মাথায় পাগড়ি পড়িয়ে দিতেন। কিন্তু মোহাম্মদ আলীর শাসনামলে সেই ঐতিহ্যের ইতি ঘটে। তিনি মুফতিদের নিয়োগ ও বরখাস্তের ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করতে শুরু করেন। ওমর মাকরামকে সুপারভিশন ইউনিয়ন থেকে অপসারণ করার ফতোয়ায় স্বাক্ষর করতে অস্বীকার করায় হানাফি মাযহাবের মুফতি শেখ আহমেদ আল-তাহাভিকে তিনি বরখাস্ত করেন।

মোহাম্মদ আলীর শাসনের শেষের দিকে হানাফী মাযহাবের মুফতি ‘মিশরের মুফতি’ হয়ে ওঠেন। রাষ্ট্র, পরিষদ এবং আদালতের কর্মচারী হিসাবে প্রতিষ্ঠানের সাথে মুফতিদের সংযুক্ত করা হয়। বলা হয়, বিচার হবে কেবল হানাফী মাযহাব অনুযায়ী। বিচারক হানাফী না হলেও। এভাবে অন্যান্য মাযহাবের মুফতিদের অবস্থান দুর্বল হয়ে পড়ে। ফতোয়ার ক্ষেত্রে যে বিস্তৃত সুযোগ ছিল, তা হারিয়ে যায়। মানুষ বিভ্রান্ত হয়। কারণ, মিশরে হানাফি মতবাদের খুব বেশি অনুসারী ছিল না। বিশাল একটা অংশ শাফেঈ এবং মালেকি ছিল।

ফাতিমা হাফেজ তার বই ‘ফতোয়া ও আধুনিকতা’য় লিখেন, মুফতিদের তার উদীয়মান আমলাতান্ত্রিক যন্ত্রের সাথে সংযুক্ত করার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের সম্প্রসারণ নতুন সরকারী ফতোয়া সম্প্রসারণের দিকে পরিচালিত করে। আল আজহারের মুফতিরাসহ বিভিন্ন দেশের মুফতিরা যে ফতোয়া দিচ্ছিল, তার সাথে সরকারী ফতোয়াগুলোর বিরোধ ঘটছিল। খেদিভ ইসমাইল ১২৮১/১৮৬৪ সালে এই সমস্যাটি নিয়ে আলোচনা করার জন্য মুফতিদের কাউন্সিল ডাকেন। কাউন্সিলে সিদ্ধান্ত হয়, ‘সরকারি মুফতিরা তাদের সঙ্গে বিশেষায়িত বিষয়ে ফতোয়া দিবেন। তবে অন্যরা এ বিষয়ে লিখিত ফতোয়া দিবেন না। যদি দেন, সেটা গ্রহণযোগ্য হবে না।’

১৮৮০ সাল নাগাদ মুফতিরা বিশাল সরকারী আমলাতান্ত্রিক যন্ত্রপাতির নিছক কর্মচারীতে পরিণত হন। ১৮৮১ সালে হানাফি মুফতিরা আনুষ্ঠানিকভাবে ‘মিশরের মুফতি’ হয়ে উঠেন। ফতোয়া জারি করার প্রক্রিয়াটি আর মুফতির স্বাধীন এখতিয়ারে থাকেনি। বরং এটি রাষ্ট্রের একটি বৈধ প্রতিনিধি হয়ে ‍উঠে।

প্রজাতন্ত্রের সময়ে দারুল ইফতা

১৯৫২ সালে অফিসারদের আন্দোলন এবং আবদেল নাসেরের ক্ষমতায় উত্থানের ফলে মিশরে আলেম এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের মর্যাদায় গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন ঘটে। নতুন সরকার এবং মুসলিম ব্রাদারহুডের মধ্যে তীব্র সংঘর্ষের পর ১৯৬৬ সালে চিন্তাবিদ সাইয়্যিদ কুতুবের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়। তখন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র শায়েখরা সমর্থন এবং বৈধতার সন্ধানে নতুন শাসনের উপযুক্ত অংশীদার হয়ে ওঠেন।

যাইহোক, রাষ্ট্রের মধ্যে নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাকে সমর্থন করার জন্য ধর্ম যে কার্যকরী ভূমিকা পালন করেছিল তা ধরে রেখে নতুন সরকারব্যবস্থা আরও ধর্মনিরপেক্ষতার দিকে অগ্রসর হয়। ২১শে সেপ্টেম্বর ১৯৫৫-এ, শরিয়া আদালতের বিলুপ্তি, খ্রিস্টান এবং ইহুদিদের (মিলিয়ন আদালত) আইন বন্ধ এবং শেষ করে এবং ব্যক্তিগত মামলা পরিচালনার জন্য বিচারকদের দেওয়ানি আদালতে স্থানান্তর করার জন্য একটি আইন পাস করা হয়। তখনই আল-আজহার পুনর্গঠিত আইন জারি হওয়ার সাথে সাথে প্রজাতন্ত্রের মুফতির নেতৃত্বে দারুল ইফতা সরকারী ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়ে যায়। যেসব মুফতিরা বিরোধী মত লালন করতো, তাদেরকে মিডিয়ায় আসতে দেয়া হতো না। মুফতিদের কাজ ছিল জনগণকে রাষ্ট্র কর্তৃক গৃহীত সিদ্ধান্তের দিকে পরিচালিত করা। যেমন জন্মনিয়ন্ত্রণ প্রকল্প।

সুইডিশ গবেষক জ্যাকব স্কোভগার্ড তার ‘মিশর রাষ্ট্রের ইসলাম’ শিরোনামের গবেষণায় বলেন, রাষ্ট্রের সিদ্ধান্তের আইনি ন্যায্যতা খোঁজা হতো মুফাতিদের কাছে। যখন মিশর ১৯৭৯ সালে ইসরায়েলের সাথে শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর করে, যখন প্রজাতন্ত্রের মুফতি শেখ জাদ-আল-হক শান্তি চুক্তিকে সমর্থন করে একটি ফতোয়া জারি করেন এবং এটিকে রাসূলের হুদায়বিয়া চুক্তির সাথে তুলনা করেন। এরপর গ্র্যান্ড মুফতির পদে আসেন শেখ আবদ আল-লতিফ হামজা। তিনি রাজনীতি থেকে দূরে সরে গিয়ে সামাজিক সমস্যা এবং মিশরীয়দের দৈনন্দিন জীবনের দিকে মনোনিবেশ করেছিলেন। ১৯৮৫ সালে জাতীয় পার্টি যখন কার্যত অনির্দিষ্টকালের জন্য শরিয়া আইনের প্রয়োগ স্থগিত করার আইন সংসদ থেকে পাস করিয়ে নেয়, তখন শেখ হামজাহ টু শব্দটি পর্যন্ত করেননি। তবে দুদিন পর এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘তিনি বা আল-আজহারের কেউই রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করবেন না, কারণ তাদের বিচারকদের মতো নিরপেক্ষ হতে হবে।’

স্কোভগার্ড যুক্তি দেন, মুফতি তানতাভির নিয়োগ সম্পূর্ণরূপে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে করা হয়েছিল। তিনি ছিলেন হোসনি মোবারকের প্রতি সম্পূর্ণ অনুগত। তিনি মিশরীয়দের বোঝাতে চেষ্টা করেছিলেন যে, বর্তমান সরকার একটি ইসলামি সরকার। তানতাভি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে ভূমিকা পালন করেছিলেন, তা ছিল মিশরীয় দারুল ইফতাকে পুনর্গঠন করা। এটিকে রাজনৈতিক ব্যবস্থা এবং রাষ্ট্রের প্রতি অনুগত করা।

তানতাভি একজন প্রবীণ ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব হিসাবে তার অনুমিত ভূমিকার বিপরীতে মিশরীয় রাষ্ট্রের রাজনৈতিক মেশিনে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন। ৩০শে ডিসেম্বর ২০০৩-এ, তানতাভি সেই সময়ের ফরাসি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিকোলাস সারকোজিকে আল-আজহারে পেয়ে বলেছিলেন, ‘ফরাসি কর্মকর্তাদের তাদের স্কুলে হিজাব পরা নিষিদ্ধ করার আইন জারি করার অধিকার রয়েছে। কারণ এটি একটি অভ্যন্তরীণ ফরাসি বিষয়।’ ২০০৭ সালে, নিউইয়র্কে জাতিসংঘ কর্তৃক আয়োজিত আন্তঃধর্মীয় সংলাপ সম্মেলনে, ইসরায়েল এবং হোসনি মুবারকের সরকারের মধ্যে সম্পর্ক জোরদার হওয়ার পর, তানতাভি ইহুদিবাদী রাষ্ট্রপতি শিমন পেরেসের সাথে খুব উষ্ণতার সাথে হাত মেলান। তানতাভির যুগে মিশরে ফতোয়া বিভাগ রাষ্ট্রের চাওয়া ফতোয়াগুলোর কারখানায় পরিণত হয়েছিল। মনে হয়েছিল, এটি সরকারি ফতোয়া ছাপানোর ছাপাখানা।

মিসরের সাবেক প্রধান হোসনি মোবারক এবং প্রজাতন্ত্রের মুফতি সাইয়েদ তানতাভি

২০২০ সালের জুলাইয়ে মিশরীয় সংসদ আল-আজহার থেকে দারুল ইফতাকে সম্পূর্ণ আলাদা করার জন্য একটি খসড়া আইন তুলে। বিচার বিভাগের পরিবর্তে মন্ত্রী পরিষদে এর অধিভুক্তি হস্তান্তর করে এবং এটিকে একটি স্বাধীন ধর্মীয় সত্তা হিসাবে বিবেচনা করে। কিন্তু আল-আজহারের প্রতিনিধিরা তা প্রত্যাখ্যান করেন। কারণ তারা এটিকে আল-আজহারের স্বাধীনতার লঙ্ঘন হিসাবে দেখেছিল। আল-আজহারের আপত্তি এবং সংসদে পাস করতে না পারার কারণে শেষ পর্যন্ত আইনটি পাস হয়নি। কিন্তু রাষ্ট্র ও ফতোয়ায় জোট আসলে পুরোদমে এগিয়ে চলেছে। দেশটির দারুল ইফতা এমন একটি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে, যা আল-আজহার থেকে কার্যত স্বাধীন এবং মিশরীয় রাষ্ট্রের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

সূত্র: আল জাজিরা

The post রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত ধর্ম : মিসরে যেভাবে পরিচালিত হয় কেন্দ্রীয় ফতোয়া বিভাগ appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%b0%e0%a6%be%e0%a6%b7%e0%a7%8d%e0%a6%9f%e0%a7%8d%e0%a6%b0-%e0%a6%a8%e0%a6%bf%e0%a6%af%e0%a6%bc%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%a4%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%bf%e0%a6%a4-%e0%a6%a7%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%ae/

Wednesday, January 25, 2023

মুসলিম সভ্যতায় কৌতুক ও কৌতুক অভিনেতা

রাকিবুল হাসান নাঈম:

ইসলাম নিরস কোনো ধর্ম নয়। কঠোর ধর্ম পালনে হাস্যরসকে ইসলাম নিষেধ করেনি। বরং হাসিকে দেখেছে জীবনেরই প্রতিরূপ হিসেবে। রাসুল সা. সাহাবিদের মাঝে মাঝে কৌতুক করে হাসাতেন। সাহাবিরাও হাসতেন। তবে তিনি কখনও মিথ্যা বলে হাসাতেন না। যারা প্রথম শ্রেণীর সাহাবি-তাবেঈ ছিলেন, তারা হাস্যরস জানতেন। হাস্যরস এবং কৌতুককে তারা পাপের কাজ মনে করতেন না।

হাস্যরস বিভিন্ন প্রেক্ষিতে বিভিন্ন উদ্দেশ্যে করা হয়। কখনও করা হয় বিনোদনের জন্য। কখনও করা হয় কাউকে কিছু শেখানোর জন্য। কখনও রাজনৈতিক ও সামাজিক সমালোচনা করার জন্য হাস্যরস ব্যবহার করা হয়। মুসলিম ইতিহাসে শেষ প্রকারের হাস্যরসই বেশি প্রসিদ্ধ ও বিখ্যাত। জাহিজ ছিলেন মুসলমানদের ইতিহাসে সবচেয়ে বিশিষ্ট সামাজিক সমালোচক। তিনি সামাজিক, ধর্মীয় ও রাজনৈতিক সমালোচনায় হাস্যরসের ব্যাপক ব্যবহার করেছেন। আব্বাসীয় খেলাফতকালে ঘটে যাওয়া এক বিশাল সামাজিক পরিবর্তনের শিরোনাম ছিল জাহিজ ও তার ব্যঙ্গাত্মক সাহিত্য। তখন সংস্কৃতি, ধারণা, জাতি এবং ধর্মের বাধাগুলো ভেঙে দেওয়া হয়েছিল। বাগদাদসহ অন্যান্য ইসলামি শহরগুলোতে ছিল বিজ্ঞান, শিল্প, কারুশিল্প এবং বাণিজ্যের আসর। ছিল সাহিত্য মজলিস, বিনোদন আসর এবং কৌতুক মাহফিল।

মুসলিম সমাজে হাস্যরস কেবল চিত্তবিনোদন ছিল না। তারা এটিকে মানসিক, জ্ঞানীয় এবং শৈল্পিক করে তোলার চেষ্টা করেছিল। পরে একটা সময় নগরায়ন ঘটার পর হাস্যরস হয়ে ওঠে বিশেষ এক নৈপুণ্য। এই হাস্যরসই পরিণত হয়ে যায় একটি পেশায়। যে পেশার লোকদের কাজই হলো, মানুষকে হাসানো। এই পেশার লোকদেরকে শেখানো হতো, মানুষকে কিভাবে হাসাতে হয়। মানুষ হাসিয়ে তারা উপর্জনও করতে শুরু করে। সম্পদের প্রসারের সাথে সাথে কৌতুক নির্মাতাদের পরিষদ বহুগুণ বেড়ে যায়। কবি ও লেখকরা এই শিল্পে দক্ষতা অর্জন করে। এভাবে এর কার্যক্রম অনুশীলন ও অধ্যয়নের মাধ্যমে সমাজের সকল শ্রেণিতে ছড়িয়ে পড়ে।

লেখক ও সাহিত্যিকরা হাস্যরস বিষয়ক বই লিখতে শুরু করে। জাহিজ লিখেন ‘আল মুজাহিক ‘, আল-জুবায়ের বিন বকর আল-কুরাশি লিখেন ‘কিতাবুল ফুকাহাতি ওয়াল মুজাহ’, মুহাম্মদ বিন ইসহাক নাদিম তার ফিহিরিস্ত গ্রন্থে হাস্যরস বিষয়ক নয়টি বইয়ের কথা উল্লেখ করেছেন। তবে তিনি এটাও বলেছেন, ‘এই বইগুলোর লেখক জানা নেই।

ইসলাম পূর্ব যুগ

ইসলাম পূর্ব যুগ থেকেই আরবে হাসি ও কৌতুকের একটি সমৃদ্ধ ইতিহাস রয়েছে। কারণ, হাসি-কান্না দুটোই জীবনের সঙ্গে ওৎপ্রোতভাবে জড়িত। সুরা নাজমে আল্লাহ তাআলা বলেছে, ‘তিনিই হাসান, তিনিই কাঁদান; তিনিই মৃত্যু দেন, তিনিই জীবিত করেন।’

অনেক দার্শনিক মানুষের সংজ্ঞাই দিয়েছেন এভাবে: ‘মানুষ এমন প্রাণী, যে নিজে হাসে এবং অন্যকে হাসায়।’ আরবি অভিধানগুলোও হাস্যরস এবং হাসির প্রচুর উপাদানে পরিপূর্ণ। জাহিজ ‘আল বুখালা’ক গ্রন্থে লিখেছেন, আরবের মানুষ তাদের সন্তানের নাম রাখতো ‘যাহহাক’। আরবি অভিধানগুলোও হাস্যরস এবং হাসির প্রচুর উপাদানে পরিপূর্ণ।

প্রাক-ইসলামী যুগে আরবদের ঐতিহ্য হাস্যরস ও হাসির দৃশ্যের বহিঃপ্রকাশ দেখা যায়। ‘হায়াতুল হাইওয়ানিল কুবরা’ গ্রন্থে দিন দামিরি লিখেন, মুজাইনা গোত্র হাসসান ইবনে সাবিতের বাবাকে গ্রেফতার করেছিল। মুক্তিপণ হিসেবে তারা একটি ছাগল চাইলো। কিন্তু সাবেতের কওম ছাগলের কথা শুনে রেগে যায়। কিন্তু শেষমেষ ছাগলই দিতে হয়। তারা যখন ছাগল দিতে আসে, সাবেত তার কওমকে বললেন, ‘তাদের ভাইকে তাদের কাছে দাও। তোমাাদের ভাইকে নিয়ে যাও।’

নবির যুগ

তবে প্রাক-ইসলামি যুগে হাসি, উপহাস এবং কৌতুক যে অর্থে ব্যবহার করা হতো, যেভাবে জ্ঞানীয় এবং সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপটকে ঘিরে আবর্তিত হতো হাস্যরস, ইসলাম এসে এই ধারণাগুলো বদলে দেয়। একটি সুশৃঙ্খল নৈতিক কাঠামোর মধ্যে নিয়ে আসে। রাসুল সা. তার সাহাবিদের সাথে ঠাট্টা-তামাশা করতেন। কেউ অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো, হে আল্লাহর রাসুল, আপনি আমাদের সাথে মজা করছেন! তিনি বললেন, ‘আমি শুধু সত্য বলছি’ (সুনানে তিরমিযী)। ইমাম বুখারী  বকর বিন আবদুল্লাহ আল-মুজনীর সূত্রে ‘আদাবুল মুফরাদ’ গ্রন্থে লিখেন, ‘সাহাবিরা একজন আরেকজনের দিকে তরমুজ নিক্ষেপ করে মজা করতেন।’

কিছু সাহাবি হাস্যরসের জন্য বিখ্যাত হয়েছিলেন। তাদের  একজন নুয়াইমান বিন আমর আল-আনসারী। ইবনে হাজার তার জীবনী লিখেছেন। একবার তিনি একটি জিনিস নিয়ে নবিজির দরবারে এলেন। এসেই বললেন, ‘ইয়া রাসুলাল্লাহ, এই জিনিসটি আপনার জন্য হাদিয়া।’ কিন্তু নুয়াইমান জিনিসের দাম পরিশোধ করেননি। একটু পর বিক্রেতা এসে যখন দাম চাইলো, তিনি বিক্রেতাকে নবিজির কাছে এনে বললেন, ‘জিনিসটির দাম পরিশোধ করে দিন।’ নবিজি বললেন, ‘তুমি আমাকে এটি হাদিয়া দাওনি?’ নুয়াইমান বললেন, ‘আমার ইচ্ছে করছিল জিনিসটি আপনাকে দিতে। কিন্তু আমার কাছে টাকা ছিল না।’ নবিজি হেসে দাম পরিশোধ করে দিলেন।

উমাইয়াদের যুগ

তারপর উমাইয়াদের যুগে ধর্মীয় বাঁধন হালকা হয়ে পড়ে। তখন সমাজের সর্বস্তরে হাস্যরস ছড়িয়ে পড়ে। সমাজের নিচু লোক থেকে শুরু করে শাসকরাও এতে অংশ নেয়। অনেক কবিতা-গদ্যে সেসবের প্রমাণ ছড়িয়ে আছে। প্রখ্যাত মুহাদ্দিস ইমাম শাবি বেশ হাসিঠাট্টা করতেন।

আশআব ইবনে জুবায়ের ছিলেন আব্দুল্লাহ ইবনে জুবায়েরের আজাদকৃত দাস। তিনি বেশ হাসিঠাট্টা করতেন। একবার তিনি তাবেঈদের মজলিসে ছিলেন। তিনি বললেন, আমি একটি হাদিস মুখস্থ করেছি। তাবেঈরা বললেন, কী সেই হাদিস? তিনি বলেন,  নাাফে ইবনে ওমর থেকে, তিনি রাসুল সা. থেকে বর্ণনা করেছেন, যার মধ্যে দুটি গুণ থাকবে, আল্লাহ তায়ালার নিকট সে মুখলিস হিসেবে বিবেচিত হবে। সবাই বললো, কোন দুটি গুণ? তিনি বললেন, একটি নাফে ভুলে গেছেন। একটি আমি ভুলে গেছি!

ইবনে জাওজি ‘আখবারুয যুরাফা ওয়াল মুতামাজিনিন’ গ্রন্থে লিখেন, এক বেদুঈন কুরআন মুখস্থ করলো। সে চাইছিল, এই কুরআন দিয়ে সে তার উদ্দেশ্য হাসিল করবে। সে এক ব্যক্তির কাছে গেলো। লোকটির সামনে ছিল ডুমুর। বেদুঈনের তাকানো দেখে লোকটি ডুমুরগুলো লুকিয়ে ফেললো। এরপর বেদুঈনকে জিজ্ঞেস করলো, কুরআন পড়তে পারেন? বেদুঈন কুরআন থেকে সুরা তিন পড়ে শোনালো। লোকটি বললো, তিন ফল কোথায়? লোকটি বললো, তোমার কাপড়ের নিচে!

একই গ্রন্থে  ইবনুল জাওজি লিখেন, এক আরবি লোক ইহুদিদের একত্র করে বললো, ঈসা ইবনে মারয়াম সম্পর্কে তোমাদের মতামত কী? তারা বললো, অামরা তাকে শূলে চড়িয়ে হত্যা করেছি। এবার আরবি লোকটি বললো, তোমরা যে তাকে হত্যা করেছো, তার দিয়ত দাও। দিয়ত না দিয়ে তোমরা বের হবে না। অগত্যা সবাইকে দিয়ত দিয়েই বের হতে হলো।

আবু হাইয়ান তাওহিদি লিখেছেন, এক আরবি লোককে দার্শনিকরা জিজ্ঞেস করলো, আপনি উম্মতের স্বার্থে শূলে চড়তে পারবেন? লোকটি বললো, উহু। বরং আমার স্বার্থে উম্মতকে শূলে চড়াতে পারবো।

আব্বাসিদের যুগ

আব্বাসীয় যুগ আবির্ভাবের সাথে সাথে বিভিন্ন জাতির সাথে মুসলমানদের সংহতি গভীরতর হয়েছে। নতুন সামাজিক, ধর্মীয় ও নৈতিক ঘটনা উদ্ভূত হয়েছে এবং জীবনের অর্থনৈতিক পদ্ধতিতে ভিন্নতা এসেছে। এর ফলে লেখক, কবি এবং সাধারণ জনগণ হাস্যরস ও হাসির ক্ষেত্রে প্রবেশ করতে সাহস পায়। তখন হাস্যরস একটি ‘বিনোদন শিল্প’ হয়ে ওঠে। আমির-উমারারা ডুবে যায় আরাম আয়েশে। তারা বসায় গান-বাজনা ও হাস্যরসের আসর।

হাম্বলী বিচারক নাজমুদ্দিন মাকদিসি ‘মুখতাসারু মিনহাজুল কাসিদিন’ গ্রন্থে লিখেন, অনেকে মানুষকে হাসিয়ে টাকা কামাতো।

আব্বাসীয় যুগে ব্যঙ্গাত্মক সাহিত্য এবং লেখকদের শীর্ষস্থানে উঠে আসেন জাহিজ। গবেষক আহমেদ আবদুল গাফফার উবাইদ ‘আদাবুল ফুকাহাতি ইনদাল জাহিজ’ গ্রন্থে উল্লেখ করেন, ‘রসিক কাঠামো ব্যবহার করে তিনি সামাজিক অসুস্থতা এবং নৈতিক ত্রুটিগুলিকে ব্যঙ্গ করেছেন। তার শৈলীতে কটাক্ষ এবং মিষ্টতা দুটোই ছিল। তিনি সামাজিক অসুস্থতা যেমন মিথ্যা, কৃপণতাকে ব্যঙ্গ করেছেন। তিনি গল্পকার ও প্রচারকদের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন, যারা প্রকৃত জ্ঞান অর্জন না করে বয়ান করে জনসাধারণকে বিভ্রান্ত করছিলেন।

জাহিজ ‘আল হাইওয়ান’ গ্রন্থে লিখেন, তার লেখায় হাসি এবং হাস্যরসের অন্তর্ভুক্তি পাঠককে উত্সাহিত এবং আনন্দিত করার উদ্দেশ্যে।

পরে লেখক, ফকিহ এবং ইতিহাসবিদদের কৌতুকের খবর লেখা ও সংগ্রহ করার অনুমতি দেয়া হয়। দেয়া হয় কমিক দৃশ্য আঁকার ক্ষমতাও। ফার্সি লেখক আবদুল্লাহ বিন আল-মুকাফা এই পথের প্রথম প্রদর্শক। তিনি কালিলা ওয়া দিমনাকে অনুবাদ করেন। কালিলা ওয়াদিমনার কাহিনীগুলো মূলত ভারতীয় উপমহাদেশে সংস্কৃত ভাষায় হিতোপদেশ মূলক কাহিনী। কালিলা ওয়াদিমনা দু’টি শৃগালের নাম। এ কাহিনীর আসল উদ্দেশ্য হল গল্পচ্ছলে উপদেশ দেয়া। আব্বাসীয় আমলে ইবনে মুকাফফা একে আরবিতে অনুবাদ করেন। তারপর মাকামাত শিল্পের জন্ম হয় বদিউজ্জামান হামাদানির হাতে। মাকামা হচ্ছে ছোট গল্পের নাম যার মাঝে অলংকারপূর্ণ সাহিত্য ও রসিকতা রয়েছে। এরপর এই কাজে হাত দেন হারিরি বসরি।

যুগে যুগে কমেডিয়ান

সেই যুগে সবচে বেশি প্রসিদ্ধি পেয়েছিল জোহা এবং আল-জাম্মাজ মুহাম্মদ বিন আমর আল-বসরি (২৫০হি.), আবুল আয়না (২৮৩হি.)।  জোহা ছিলেন সেই যুগে এবং পরবর্তী সময়ে জনপ্রিয় হাস্যরসের সবচেয়ে বিখ্যাত ব্যক্তিদের একজন।

দামিরি ‘হায়াতুল হাইওয়ান’ গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন, একদিন কুফার গভর্নর মুসা ইবনে ঈসা হাশেমি (১৬৮হি.) জোহার পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। জোহা তখন মরূভূমিতে মাটি খুড়ছে। মুসা বললেন, কী হয়েছে। মাটি খুড়ছো কেন? জোহা বললো, এখানে কিছু দিরহাম রেখেছিলাম। কিন্তু কোথায় রেখেছি ভুলে গেছি। মুসা বললেন, কোথায় রেখেছো তার চিহ্ন দিয়ে রাখতে। জোহা বললো, চিহ্ন দিয়েছিলাম। যখন দিরহাম রাখি, তখন এখানে মেঘ ছিল মাথার উপর। কিন্তু এখন আলামত খুঁজে পাচ্ছি না!

হাস্যরস এবং ব্যঙ্গাত্মক কর্মকাণ্ড কেবল ইরাকের সীমানায় থেমে থাকেনি। বরং এটি অন্যান্য জাতি, মানুষ এবং দেশেও প্রসারিত হয়েছে। দামেশকের এমন অনেক ঘটনা আছে। মিসরে কৌতুক করে প্রসিদ্ধ হয়েছিল আবু হুরায়রা মিসরি (২৫০হি.)। সে কিতাবের অনুলিপি করতো। মদ-শরাব পান করতো।

হাস্যরস ও কৌতুককেই অনেকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করেছিল। তারমধ্যে একজন হলেন ইরাকের আবু আলকামা নুমাইরি (২২৫হি.)।

খলিফাদের দরবারে

খলিফা ও সুলতানদের দরবারে কৌতুক অভিনেতারা থাকতো। অনেক খলিফা, সুলতান এবং রাজারা তাদের ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের মধ্যে কৌতুক অভিনেতাও রাখতেন। কারণ, কৌতুক শুনে মাঝেমাঝে তারা রাজনৈতিক চিন্তার ক্লান্তি দূর করতেন। জাহিজের লেখা ‘আত তাজ ফি আখলাকিল মুুলুক’ গ্রন্থে খলিফা-সুলতানদের সহযোগী হওয়ার শর্তগুলো তুলে ধরেছেন। তাতে বলেছেন, ‘খলিফা-সুলতানদের সহযোগী হওয়ার জন্য মধ্যপন্থী স্বভাবের হতে হবে। সুস্থ থাকতে হবে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ, স্বভাব-চরিত্র। পারতে হবে কৌতুক ও বিতর্ক।’

দরবারে কৌতুক অভিনেতা রাখার চলটি ইসলামের আবির্ভাবের আগে থেকেই ছিল এবং আরব ও অনারবদের কাছে এটি পরিচিত ছিল। আলেকজান্ডার দ্য ম্যাসেডোনিয়ান (মৃত্যু 323 খ্রিস্টপূর্ব)-এর কৌতুক অভিনেতা ছিল। সাসানিয়ান পারস্য রাজাদেরও ছিল। ঐতিহাসিক আল-মাসুদি ‘মুরুজুয যাহাব’ গ্রন্থে বলেছেন, পারস্যের রাজা সাপুরের একজন কৌতুক অভিনেতা ছিল। তার নাম মারজুবান।

ইসলামের আগে আরব উপদ্বীপেও এই চল দেখেছি। হিরার রাজা নুমানের দুধভাই ছিল সাদ। সাদ কৌতুক বলে লোকদের হাসাতো। সে নুমানকেও কৌতুক বলে হাসাতো। নুমান তার প্রশংসা করতেন।

মনে হয়, রাজা ও খলিফাদের উপহার দেয়া হতো এসব কৌতুক অভিনেতাদের। অনেক অভিনেতা মৃত্যুর পর অনেক টাকাও রেখে গেছে। যেমন মাহমুদ বিন আল-দাব্বাঘ (মৃত্যু ৬১৪ হি ) সুলতান আবি বকর বিন আইয়ুবের কৌতুক অভিনেতা ছিলেন। তিনি প্রচুর সম্পদ রেখে যান। মাকরিজিও এই তথ্য উল্লেখ করেছেন।

খলিফাদেরও অনেকের কৌতুক অভিনেতা ছিল। উমাইয়া খলিফা আবদুল মালেক বিন মারওয়ানের কৌতুক অভিনেতা ছিল আতা। আবু কামিল ছিল ওয়ালিদ বিন আবদুল মালিকের কৌতুক অভিনেতা। ইয়াজিদ ইবনে ওয়ালিদের কৌতুক অভিনেতা ছিল গাদিরি মাদানি।

আব্বাসীয়দের সময়ে শ্রেষ্ঠ রসিক ছিল আবু দালামা জান্দ বিন আল-জাউন আল-আসাদি আল-কুফি। সে আব্বাসীয় খলিফা আবু জাফর আল-মানসুর, তার পুত্র খলিফা আল-মাহদীর নিকটজন ছিল। তিনি প্রায়শই তার কবিতায় নিজেকে, তার কালো স্ত্রী এবং সন্তানদের নিয়ে উপহাস করতেন, যা খলিফা এবং তাদের দলবলকে হাসাতো।

খলিফা হারুন আল-রশিদের রসিক অভিনেতার নাম ছিল ইবনে আবি মারয়াম আল-মাদানী। তিনি খলিফার প্রাসাদে বাস করতেন। তার কৌতুক শুনে খলিফা কখনও ক্লান্ত হতেন না। খলিফা হারুন আল-রশিদের আরেক রসিক অভিনেতার নাম ছিল আল-মুরতামি।

খলিফা আল-মামুন রসিক ব্যক্তিদের ভালোবাসতেন। তাদের মধ্যে একজন হলেন বাগদাদের সুমামা আল মুজহিক। তিনি তার হাস্যরসের জন্য বিখ্যাত ছিলেন।

আব্বাসীয় খলিফা আল-মুতাওয়াক্কিল রসিক ব্যক্তিদের ভালোবাসতেন। তাদের মধ্যে একজন উবাদা মুখান্নাস। খলিফা যেখানেই সফরে যেতেন, তাকে সঙ্গে নিয়ে যেতেন।

সূত্র: আল জাজিরা অবলম্বনে

The post মুসলিম সভ্যতায় কৌতুক ও কৌতুক অভিনেতা appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%ae%e0%a7%81%e0%a6%b8%e0%a6%b2%e0%a6%bf%e0%a6%ae-%e0%a6%b8%e0%a6%ad%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%a4%e0%a6%be%e0%a6%af%e0%a6%bc-%e0%a6%95%e0%a7%8c%e0%a6%a4%e0%a7%81%e0%a6%95-%e0%a6%93-%e0%a6%95/

রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা, ১৯ ফেব্রুয়ারি ভোট

ফাতেহ ডেস্ক:

আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচন। বুধবার (২৫ জানুয়ারি) আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।

তিনি বলেন, সিইসির কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া যাবে ১২ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৪টা পর্যন্ত। মনোনয়নপত্র বাছাই ১৩ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০ টা থেকে যতক্ষণ সময় লাগে। প্রত্যাহার ১৪ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৪টা পর্যন্ত। সংসদ ভবনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ১৯ ফেব্রুয়ারি দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।

আগামী ২৪ এপ্রিল দ্বিতীয় মেয়াদ পূর্ণ হচ্ছে রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদের। পরপর দুই মেয়াদে রাষ্ট্রপতি হয়েছেন তিনি। দেশের সংবিধান অনুযায়ী তার আর রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ নেই। সে কারণে নতুন কাউকে দেখা যাবে তার জায়গায়। সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী, বর্তমান রাষ্ট্রপতির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে ৯০ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচন শেষ করতে হবে।

নিয়ম অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী হতে হলে সংসদ সদস্য হতে হয় না। রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয় এবং সংসদ সদস্যদের ভোটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। সংবিধানের ৪৮(১) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের একজন রাষ্ট্রপতি থাকিবেন, যিনি আইন অনুযায়ী সংসদ-সদস্যগণ কর্তৃক নির্বাচিত হইবেন।

যেহেতু জাতীয় সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ, তাই ধরে নেওয়া হয় তারাই এই পদে প্রার্থী দেবে এবং সেই প্রার্থীই নির্বাচিত হবেন। যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীই হবেন দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি।

রাষ্ট্রপতি নির্বাচন পরিচালনা করবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার, যিনি এ নির্বাচনের ‘নির্বাচনী কর্মকর্তা’। নির্বাচনী কর্মকর্তার কার্যালয়ের (প্রধান নির্বাচন কমিশনারের অফিসে নির্ধারিত দিনে অফিস চলাকালে) মনোনয়নপত্র জমা দিতে হবে। প্রার্থীর সংখ্যা একজনের বেশি না হলে তাকেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করা হবে। আর একাধিক প্রার্থী হলে সংসদের অধিবেশন কক্ষে বিধিমালা অনুযায়ী ভোট হবে।

The post রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা, ১৯ ফেব্রুয়ারি ভোট appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%b0%e0%a6%be%e0%a6%b7%e0%a7%8d%e0%a6%9f%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%aa%e0%a6%a4%e0%a6%bf-%e0%a6%a8%e0%a6%bf%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%9a%e0%a6%a8%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%a4%e0%a6%ab/

Tuesday, January 24, 2023

ইউরোপে কুরআন পোড়ানোর মিছিল, মুসলিম বিশ্বের নিন্দা

মুনশী নাঈম:

নেদারল্যান্ডসের চরমপন্থী ইসলাম বিরোধী ‘পেগিদা’ আন্দোলনের নেতা এডউইন ওয়াগেনসফেল্ড ডাচ শহর হেগের সংসদ ভবনের সামনে পবিত্র কোরআন ছিঁড়ে তাতে আগুন লাগিয়ে দিয়েছেন। গতকাল সোমবার তিনি ‘পশ্চিমের ইসলামিকরণের বিরুদ্ধে দেশপ্রেমিক ইউরোপীয়’ নামক টুইটারে একাউন্টে একটি ভিডিও শেয়ার করেন।

মিডিয়ার রিপোর্ট অনুসারে, ডাচ পুলিশ তাকে এই কাজের জন্য অনুমতি দিয়েছে। তবে শর্ত ছিল, সে মুসলমানদের পবিত্র গ্রন্থ পোড়াতে পারবে না। কিন্তু পরে ভিডিওতে দেখা যায়, সে কোরআনের ছেঁড়া পাতা পুড়িয়ে দেয়। ভিডিওতে ডাচ পুলিশের সদস্যদের ডানপন্থী চরমপন্থীর পিছনে টু শব্দটি না করে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। ২০২২ সালের অক্টোবরে ডাচ পুলিশ এডউইন ওয়াগেনসফেল্ডকে গ্রেপ্তার করেছিল একই অপরাধে। তখন ‘পেগিদা’ সমর্থকদের একটি মিছিলে সে কুরআন পোড়াতে যাচ্ছিল।

এর আগে শনিবার সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে তুরস্কের দূতাবাসের কাছে পুলিশি পাহাড়ায় কুরআন পোড়ায় সুইডিশ চরমপন্থী রাসমুস পালুদান। এর দুদিন পর নেদারল্যান্ডসে এমন ঘটনা ঘটলো।

প্রতিবাদ জানাতে তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আজ মঙ্গলবার তুরস্কে ডাচ রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে। এক বিবৃতিতে আঙ্কারা বলেছে, ‘আঙ্কারায় ডাচ রাষ্ট্রদূতকে আমাদের মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয়েছিল। আমরা এই জঘন্য ও ঘৃণ্য কাজের বিরুদ্ধে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছি। আমরা নেদারল্যান্ডসকে এই ধরনের উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ডের অনুমতি না দিতে বলেছি।’

তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড়

এই ঘটনাটি মুসলমানদের ক্ষুব্ধ করে তুলেছে। আরব ও ইসলামিক দেশগুলো মনে করছে, এই ঘটনা ঘটিয়ে তারা দেড় বিলিয়ন মুসলিমদের অনুভূতি আঘাত করেছে।

গতকাল সোমবার তুরস্কের ধর্মীয় বিষয়ক প্রধান আলী এরবাশ বলেছেন, তার দেশ আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা দায়ের করবে। আদালতে ইসলাম এবং এর প্রতীকগুলির উপর আক্রমণের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাবে।

আজ মঙ্গলবার নিউইয়র্কের তুর্কি সম্প্রদায় সুইডিশ কনস্যুলেটের সামনে একটি প্রতিবাদ বিক্ষোভের আয়োজন করে। জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জার্মানি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য পশ্চিমা দেশগুলোও কুরআন পোড়ানোর নিন্দা করেছে এবং সুইডিশ কর্তৃপক্ষকে এর দিকে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার মুখে সুইডিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী টোবিয়াস বিলস্ট্রম এসব উস্কানিমূলক পদক্ষেপের নিন্দা করে বলেছেন, ইসলামবিরোধী উস্কানিগুলো ভয়ঙ্কর।

সূত্র : আল-জাজিরা

 

The post ইউরোপে কুরআন পোড়ানোর মিছিল, মুসলিম বিশ্বের নিন্দা appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%87%e0%a6%89%e0%a6%b0%e0%a7%8b%e0%a6%aa%e0%a7%87-%e0%a6%95%e0%a7%81%e0%a6%b0%e0%a6%86%e0%a6%a8-%e0%a6%aa%e0%a7%8b%e0%a6%a1%e0%a6%bc%e0%a6%be%e0%a6%a8%e0%a7%8b%e0%a6%b0-%e0%a6%ae%e0%a6%bf/

পাঠ্যক্রম বিতর্ক, দেশের শীর্ষ ইফতা বিভাগগুলো বলছে লিঙ্গপরিবর্তন হারাম

রাকিবুল হাসান নাঈম:

লিঙ্গ পরিবর্তন এবং বিপরীত লিঙ্গের সাদৃশ্য ধারণ করা হারাম বলে ফতোয়া দিয়েছে দেশের শীর্ষ ইফতা বিভাগগুলো। চলতি বছর নতুন কারিকুলামে তৈরী পাঠ্যপুস্তকে লিঙ্গপরিচয় বিকৃতির ইস্যুতে যখন ধর্মীয় মহল প্রতিবাদে সরব, তখনই গুরুত্বপূর্ণ এ ফতোয়া এলো।

ফতোয়ায় বলা হয়েছে, লিঙ্গ পরিবর্তন হারাম। এই বিষয়টিকে শিথিল করে দেখার সুযোগ নেই। পাশাপাশি বিপরীত লিঙ্গের সাদৃশ্য ধারণ করাও হারাম এবং গর্হিত কাজ।

ফতোয়া সংগ্রহ

পাঠ্যক্রম ইস্যুতে নিয়মিতই প্রতিবেদন প্রকাশ করে আসছে ফাতেহ টুয়েন্টি ফোর। এরই ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন ইফতা বিভাগে ‘লিঙ্গ পরিবর্তন’ বিষয়ক ফতোয়া চেয়ে পাঠায় নিউজ পোর্টালটি।

মোটাদাগে সবার কাছে প্রশ্ন করা হয়—লিঙ্গ পরিবর্তন করা জায়েজ কিনা। পুরুষ হয়েও নিজেকে নারী ভাবা, নারী হয়ে নিজেকে পুরুষ ভাবা—বিষয়টি নিয়ে ইসলাম কী বলে?

ইতোমধ্যে ফাতেহের কাছে ৭টি লিখিত ফতোয়া এবং পাঁচটি মৌখিক ফতোয়া এসেছে। লিখিত ফতোয়া দিয়েছে—জামিয়া কুরআনিয়া আরাবিয়া লালবাগ, আল জামিয়া আল ইসলামিয়া পটিয়া, আল জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী, জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদানিয়া যাত্রাবাড়ী, জামিয়া রাহমানিয়া আজিজিয়া বছিলা, জামিআ আবু বকর সিদ্দীক, উত্তর কাজলা, জামিয়া আরাবিয়া হাজি সাইজুদ্দিন আনওয়ারুল উলুম মাদ্রাসা।

মৌখিক ফতোয়া দিয়েছে—মারকাযুদ দাওয়াহ আল ইসলামিয়া, মারকাযুল ফিকরিল ইসলামী (ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার) বসুন্ধরা, ছারছিনা দারুসসুন্নাত কামিল মাদ্রাসা, সোনাকান্দা দারুল হুদা বহুমুখী কামিল মাদ্রাসা, মাদরাসাতুল হাদীছ, নাজিরবাজার।

লিখিত ফতোয়ায় কী বলা হয়েছে?

লিঙ্গপরিবর্তন হারাম ফতোয়া দিয়ে জামিয়া কুরআনিয়া আরাবিয়া লালবাগ বলেছে, ‘অস্ত্রোপচার করে শুধু দৈহিক অবয়বে যৎসামান্য পরিবর্তন আনা যায়। অর্থাৎ পুরুষের লিঙ্গ কেটে নারীর লিঙ্গ স্থাপন করা যায় বা নারীর লিঙ্গ কেটে পুরুষের লিঙ্গ স্থাপন করা যায়। কিন্তু মৌলিকভাবে ব্যক্তিসত্তার পুরুষত্বকে নারীত্বে কিংবা নারীত্বকে পুরুষত্বে পরিবর্তন করা যায় না। কারণ, সৃষ্টিগতভাবে পুরুষের ক্রোমোজমকে নারীর ক্রোমোজমে কিংবা নারীর ক্রোমোজমকে পুরুষের ক্রোমোজমে পরিবর্তন করা যায় না।’

ফতোয়ায় আরও বলা হয়েছে, ‘লিঙ্গ পরিবর্তন মূলত আল্লাহর সৃষ্টিতে পরিবর্তন। আল্লাহর ফায়সালাকে অস্বীকার করা। শরীয়তের আহকামে সংকট সৃষ্টি করা। কারণ, শরীয়তের বিভিন্ন আহকামে নারী-পুরুষের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। এখানে সংকট হলো—পুরুষের দৈহিক অবয়ব হতে নারীর দৈহিক অবয়বে রূপান্তরিত ব্যক্তিটি শরীয়তের কোন বিধান মতে চলবে? মৌলিকভাবে সে পুরুষ। সে কি পুরুষের বিধান মতে চলবে? বাহ্যিকভাবে সে নারী। সে কি নারীর মতো চলবে? এভাবে নিজ সত্তার পরিচয় সঙ্কট তৈরী হয়। ফলে সামাজিক সত্তার পরিচয়েও জটিলতার সৃষ্টি হয়।’

ফতোয়ায় বলা হয়, ‘এমনিভাবে নারী যদি নিজেকে পুরুষ ভেবে পুরুষের সাদৃশ্য অবলম্বন করে, কিংবা পুরুষ নিজেকে নারী ভেবে নারীর সাদৃশ্য অবলম্বন করে, এটাও জায়েজ নেই।’

লিঙ্গ পরিবর্তন হারাম ফতোয়া দিয়ে আল জামিয়া আল ইসলামিয়া পটিয়া বলেছে, ‘অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সুস্থ মানুষ লিঙ্গ পরিবর্ত করা (পুরুষ থেকে নারী হওয়া কিংবা নারী থেকে পুরুষ হওয়া) সম্পূর্ণ নাজায়েয৷ এমনটি করা অভিশাপের শামিল৷ আল্লাহর সৃষ্টিকে বিকৃত করা, তার সাথে চ্যালেঞ্জ করার নামান্তর৷ শয়তানী প্ররোচনা ছাড়া আর কিছুই নয়৷ ইসলামি শরীয়তে এমন গর্হিত কাজের কোন সুযোগ নেই৷ কুরআনুল কারীমে এসেছে, আল্লাহর সেই ফিতরত অনুযায়ী চলো, যে ফিতরতের উপর তিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহর সৃষ্টিতে কোনো পরিবর্তন সাধন সম্ভব নয়। এটাই সম্পূর্ণ সরল দ্বীন। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ জানে না ( সূরা রুম: ৩০)।’

ফতোয়ায় আরও বলা হয়েছে, ‘আল্লাহ তাআলা পুরুষ ও নারীকে চেনার জন্য পৃথক পৃথক আলামত দিয়ে দিয়েছেন৷ আল্লাহর সে নিদর্শনকে অবজ্ঞা করে যার যার ইচ্ছে মত চলার কোনো সুযোগ নেই৷ লিঙ্গ স্বাধীনতা বলতে ইসলামে এ ধরণের কোন কিছুর অবকাশ নেই৷ কেননা হাদীস শরীফে আল্লাহর সৃষ্টির পরিবর্তনকারীদের উপর অভিশাপ এসেছে৷ সহীহে মুসলিমে হযরত আবদুল্লাহ রাদি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, মানুষের শরীরে চিত্র অঙ্কনকারিণী ও চিত্র অঙ্কন প্রার্থিনী মহিলা, কপালে ভুরুর চুল উৎপাটনকারিণী ও উৎপাটন প্রার্থিনী এবং সৌন্দর্য সুষমা বাড়ানোর জন্যে দাঁতর মাঝে (সুদৃশ্য) ফাঁক সুষমা তৈরিকারিণী- যারা আল্লাহ্‌র সৃজনে বিকৃতি সাধানকারিণী- এদের আল্লাহ তা‘আলা অভিশাপ করেন (সহীহ মুসলিম: হাদীস নং: ২১২৫)। উক্ত হাদীসে যেসব বিষয়ে লানত এসেছে এগুলো ছোট পরিবর্তন মাত্র৷ লিঙ্গ স্বাধীনতা ও পরিবর্তন নামে যা করা হচ্ছে তা আরো বহুগুণে মারাত্মক৷ এগুলোতে আরো ভয়ানক অভিশাপ হবে৷ তাই এমন গর্হিত কাজ থেকে সকলকে বিরত থাকা চাই৷ এটা শুধু মাত্র শয়তানী কর্মকাণ্ড ও মুক্তমনা আচরণ ছাড়া আর কিছুই নয়৷ যারা শিক্ষা সিলেবাসে এসব প্রবেশ করিয়েছে তারা ইসলামারে বিরুদ্ধে কঠিন শড়যন্ত্রে লিপ্ত৷’

জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদানিয়ার ফতোয়ায় বলা হয়েছে, ‘অপারেশন বা কোনো ঔষধ ব্যবহারের মাধ্যমে লিঙ্গ পরিবর্তন করা শরিয়তের বিধান ‘আল্লাহর সৃষ্টি পরিবর্তন’এর অন্তর্ভুক্ত। যা সম্পূর্ণ হারাম ও পরিত্যাজ্য। আর পুরুষ হয়েও নিজেকে নারী ভাবা বা নারী হয়ে নিজেকে পুরুষ ভাবা শরিয়তের দৃষ্টিতে নিষিদ্ধ কাজ। আল্লাহ ও তার রাসুল; এমন নারী-পুরুষের ওপর লানত করেছেন। তাই এসব কাজ এবং চিন্তা থেকে বিরত থাকা আবশ্যক।’

একই ফতোয়া দিয়েছে জামিয়া রাহমানিয়া আজিজিয়া, জামিয়া আবু বকর, দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারি, জামিয়া আরাবিয়া হাজি সাইজুদ্দিন।

লিঙ্গ পরিবর্তনের তালিম দেয়া জায়েজ নেই

এ প্রসঙ্গে কথা হয় মারকাযুদ দাওয়াহ আল ইসলামিয়ার মুহাদ্দিস মাওলানা মুহাম্মদ ইয়াহইয়া সাহেবের সঙ্গে। ফাতেহকে তিনি বলেন, ‘লিঙ্গ পরিবর্তন হারাম। যারা আজকাল জেন্ডার স্বাধীনতার কথা বলে, বলে পুরুষ হয়েও নিজেকে নারী ভাবা যাবে, নারী হয়েও নিজেকে পুরুষ ভাবা যাবে, ইসলামে এর কোনো জায়গা নেই। এগুলো চিন্তার বিকৃতি। পশুত্বসুলভ আচরণ। কোনো সুস্থ মানুষ এসব করতে পারে না।’

একই কথা বলেছেন মারকাযুল ফিকরিল ইসলামী (ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার) বাংলাদেশ-এর মুহতামিম মুফতি আরশাদ রহমানী। ফাতেহকে তিনি বলেন, ‘লিঙ্গ পরিবর্তন মানে আল্লাহর সৃষ্টিকে পরিবর্তন। এটা সরাসরি হারাম। কুরআনেই বলা হয়েছে। আধুনিক সময়ে জেন্ডার স্বাধীনতার নামে যেসব চিন্তা ছড়িয়েছে, সেসব বিকৃতি। ইসলামে এগুলোর কোনো জায়গা নেই।’

পাঠ্যপুস্তকে লিঙ্গপরিচয় বিকৃতি ইস্যুতে কথা বলার জন্য মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয় ছারছীনা দারুস সুন্নাত কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ আলহাজ্ব ড. মাওলানা সৈয়দ মুহা: শরাফত আলীর সঙ্গে। তিনি ফাতেহকে বলেন, ‘লিঙ্গ পরিবর্তন হারাম। এটা কোনোভাবে শিথিল করা যাবে না। এটা সরাসরি আল্লাহর সৃষ্টিকে পরিবর্তন। যে জিনিস হারাম, সে জিনিসে অভ্যস্ত হওয়ার পাঠ তো আমরা শিক্ষার্থীদের দিতে পারি না। যারা চিন্তার বিকৃতি শেখায়, আল্লাহ তাদের হেদায়াত দান করুন।’

সোনাকান্দা দারুল হুদা মাদ্রাসার ফতোয়া বোর্ডের সহ-সভাপতি এবং সোনাকান্দা দরবার শরীফের খলিফা মাওলানা আবূ তাহের মুহাম্মাদ ছালেহ উদ্দিনের সঙ্গে কথা হয় প্রতিবেদকের। ফাতেহকে তিনি বলেন, ‘কোনোভাবেই কোনো সুরতেই লিঙ্গ পরিবর্তনকে জায়েজ করা যাবে না। এটা সরাসরি আল্লাহর সৃষ্টিতে বিকৃতি। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম গায়ে একটা ট্যাটু আঁকতে নিষেধ করেছেন। আর আমরা জেন্ডার স্বাধীনতার কথা বলে লিঙ্গ পরিবর্তনের কথা বলি। এটা আমাদের অধঃপতন। শিক্ষা ব্যবস্থায় এটা ঢুকানো হয়েছে, এটা শিক্ষা ব্যবস্থারও অধঃপতন।

রাজধানীর নাজিরবাজার মাদরাসাতুল হাদীছের প্রিন্সিপাল আবূ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ খান মাদানীর সঙ্গে কথা হয় প্রতিবেদকের। তিনিও একই কথা বলেছেন। তিনি ফাতেহকে বলেন, ‘লিঙ্গ পরিবর্তন হারাম। আর পুরুষ হয়েও নিজেকে নারী ভাবা বা নারী হয়ে নিজেকে পুরুষ ভাবাও হারাম। যারা পুরুষ হয়ে নারীর সাদৃশ্য অবলম্বন করবে, কিংবা নারী হয়ে পুরুষের সাদৃশ্য অবলম্বন করবে, তাদেরকে নবিজি লানত দিয়েছেন।’

উল্লেখ্য, আত্মপরিচয়ের অধীনে লিঙ্গ পরিবর্তন ও ট্রান্সজেন্ডার মতবাদকে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করা হয়েছে নতুন কারিকুলামের বইগুলোতে। ট্র্যান্স হল এমন কেউ যার শারীরিক কোন ইস্যু নেই, কিন্তু সে মনে করে সে ভিন্ন লিঙ্গের মানুষ। অর্থাৎ কোনো পুরুষ মনে করলো সে নারী। এটা মানসনোক অসুস্থতা। যৌন বিকৃতি। বইতে এটাকে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করা হয়েছে। ৭ম শ্রেণীর বইতে বলা হয়েছে, আত্মপরিচয় কত রকম হতে পারে? সেখানে বলা হয়েছে, নারী-পুরুষ ফিক্সড কোনো পরিচয় না। পুরুষাঙ্গ থাকলেও শরীফ যদি মনে করো সে শরীফা, তাহলে সে শরীফা-ই। এটাই আত্মপরিচয়। জৈবিক পরিচয়ে সামাজিক পরিচয়ে সে আবদ্ধ না, আত্মপরিচয়ই তার পরিচয়। পুরুষ হলেই পুরুষের মতোই জীবনযাপন করতে হবে, এমন না। সে যদি নিজেকে মেয়ে মনে করে তাহলে সে মেয়েই।

সব ঘরানার আলেমদের বক্তব্য হলো, পাঠ্যপুস্তকে লিঙ্গপরিচয়ের যে বিকৃতিকে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করা হয়েছে, তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। বইগুলোতে যেভাবে লিঙ্গ পরিচয় শেখানো হয়েছে, তাতে পরিচয় তো স্পষ্ট হবেই না, বরং পরিচয় নিয়ে আরও জটিলতা তৈরী হবে। সামাজিক জীবনে যেমন জটিলতা তৈরী হবে, তেমনি ধর্মীয় জীবনেও জটিলতা তৈরী হবে। শিশুদের আত্মপরিচয়কে এভাবে জটিলতার মুখে ফেলে দেয়া মানে তাদের ধ্বংস ডেকে আনা। তাই পাঠ্যপুস্তক থেকে বিকৃত লিঙ্গ পরিচয়ের পাঠ বাদ দেয়ার জোর দাবি জানিয়েছেন এসব আলেমরা।

The post পাঠ্যক্রম বিতর্ক, দেশের শীর্ষ ইফতা বিভাগগুলো বলছে লিঙ্গপরিবর্তন হারাম appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%aa%e0%a6%be%e0%a6%a0%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%95%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%ae-%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%a4%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%95-%e0%a6%a6%e0%a7%87%e0%a6%b6%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%b6/

Monday, January 23, 2023

পাঠ্যবইয়ে বিবর্তনবাদ: ব্লাসফেমি আইন করে বিচার দাবি জাপা এমপির

ফাতেহ ডেস্ক:

পাঠ্যবইয়ে ডারউইনের বিবর্তনবাদ অন্তর্ভুক্ত করার কঠোর সমালোচনা করেছেন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য গোলাম কিবরিয়া টিপু। তিনি বলেছেন, বানর থেকে মানুষ হয়, এটা ধর্মবিরোধী প্রচার। মুসলমান হিসেবে আমরা আদমের সন্তান। এখানে বানর থেকে মানুষ হওয়ার সুযোগ নেই। এটা ইসলামের প্রতি আঘাত। এ বিষয়ে ব্লাসফেমি আইন করা উচিত।

সোমবার (২৩ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের ভাষণের উপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবে আলোচনায় এসব কথা বলেন টিপু।

শিক্ষার মান উন্নত করার দাবি করে গোলাম কিবরিয়া টিপু বলেন, আমরা দেখলাম ডারউইন থিউরি। বানর থেকে মানুষ হয়। এটা আমাদের ধর্মবিরোধী প্রচার। আমরা মুসলমান। বিশ্বাস করি আমরা আদমের সন্তান। এখানে বানর থেকে মানুষ হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এরা ইসলামের প্রতি আঘাত করেছে। এই দেশে ব্লাসফেমি আইন করা উচিত। জার্মানিতে ব্লাসফেমি আইন আছে। প্রয়োজন হলে তাদেরটা এনে, দেখে, কিছু কাটছাট করে আমাদের দেশে যারা ধর্মবিরোধী কর্মকাণ্ড করে, তাদের বিচার করতে হবে। না হয় দেশে অরাজকতা সৃষ্টি হবে।

তিনি বলেন, কোনো ধর্মপ্রাণ মুসলমান এটা মেনে নেয় না। আপনাদের কাছ পর্যন্ত এ আওয়াজ আসে কি না, জানি না। আমরা বাইরে চলি, মানুষের কথা শুনি। বানর থেকে মানুষ হওয়া নিয়ে মানুষ কি বলে… মানুষ আগ্নেয়গিরির মতো অবস্থায় আছে। প্রতিটি মুসলমানের ধর্মে মতে আঘাত করেছে। পাঠ্যবেইয়ে কারা এসব বিতর্কিত বিষয় দিয়েছে, তা বের করতে একটি কমিশন গঠনের দাবি জানান তিনি।

জাতীয় পার্টির এই সংসদ সদস্য বলেন, সরকারকে বিতর্কিত অবস্থায় ফেলার জন্য, ইচ্ছাকৃতভাবে এটা করেছে। সরকার ব্যাপক উন্নয়ন করেছে। কোনো শত্রুও এটা অস্বীকার করতে পারবে না। এত উন্নয়ন হয়েছে। এই পরিমাণ উন্নয়ন আগে হয় নাই। বড় কাজ করলে সমালোচনা থাকবেই। যে কাজ করে না তার সমালোচনা নাই।

The post পাঠ্যবইয়ে বিবর্তনবাদ: ব্লাসফেমি আইন করে বিচার দাবি জাপা এমপির appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%aa%e0%a6%be%e0%a6%a0%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%ac%e0%a6%87%e0%a6%af%e0%a6%bc%e0%a7%87-%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%ac%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%a4%e0%a6%a8%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%a6-%e0%a6%ac/

Sunday, January 22, 2023

বাকিতে আমদানি হবে রোজার পণ্য

ফাতেহ ডেস্ক:

বাকিতে রোজানির্ভর পণ্য আমদানির সুযোগ দেওয়া হয়েছে। বায়ার্স ও সাপ্লায়ার্স ক্রেডিটের মাধ্যমে এসব পণ্য আমদানি করা যাবে। ডলার সংকট মোকাবিলায় ব্যাংকগুলোকে এ ধরনের ঋণের মাধ্যমে পণ্য আমদানির এলসি খোলার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সাধারণত ৩ থেকে ৪ মাসের মধ্যে এ সংক্রান্ত ঋণ পরিশোধ করতে হয়। কিন্তু এর মেয়াদ ৬ মাস বাড়িয়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ফলে ডিসেম্বর পর্যন্ত বকেয়া ঋণ জুনের মধ্যে পরিশোধের সময় পাওয়া যাবে।

রমজান শুরু হতে বাকি আর মাত্র ২ মাস। এ মাসের পণ্য আমদানির জন্য রোজা শুরুর ৪ থেকে ৫ মাস আগে এলসি খুলতে হয়। কিন্তু ডলার সংকটের কারণে উদ্যোক্তারা এলসি খুলতে পারছিলেন না। গত ১ মাস আগে রোজার পণ্য আমদানিতে এলসি খোলার জন্য বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা দেওয়া হয়। এ খাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ডলার জোগান দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়। কিন্তু তারপরও এলসি খোলা প্রত্যাশিত হারে বাড়ছে না। এ পরিপ্রেক্ষিতে রোজানির্ভর পণ্য আমদানিতে স্বল্পমেয়াদি বৈদেশিক ঋণ নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়।

এদিকে ব্রাজিল থেকে বাকিতে চিনি ও ছোলা আমদানিতে কূটনৈতিক যোগাযোগ শুরু হয়েছে। এ খাতে কিছু সমস্যা রয়েছে। সেগুলো সমাধানের জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ব্রাজিলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।

এছাড়া ভারত ও ইন্দোনেশিয়া থেকে বাকিতে পণ্য আমদানির জন্য স্বল্পমেয়াদি ঋণ বাড়াতে ব্যাংক ও উদ্যোক্তাদের মধ্যে যোগাযোগ হচ্ছে। গত অর্থবছরে বাকিতে বায়ার্স ক্রেডিটের (আমদানিকারক যে ঋণের সংস্থান করেন) মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি ভোগ্যপণ্য আমদানি হয়েছে। এছাড়া সাপ্লায়ার্স ক্রেডিট বা সরবরাহ ঋণের আওতায়ও শিল্পপণ্য আমদানি বেড়েছে।

The post বাকিতে আমদানি হবে রোজার পণ্য appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%95%e0%a6%bf%e0%a6%a4%e0%a7%87-%e0%a6%86%e0%a6%ae%e0%a6%a6%e0%a6%be%e0%a6%a8%e0%a6%bf-%e0%a6%b9%e0%a6%ac%e0%a7%87-%e0%a6%b0%e0%a7%8b%e0%a6%9c%e0%a6%be%e0%a6%b0-%e0%a6%aa/

টানা তিন দিন দূষিত শহরের শীর্ষে ঢাকা

ফাতেহ ডেস্ক:

বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় রাজধানী ঢাকা আবারও প্রথম স্থানে উঠে এসেছে। গতকাল রোববারের পর আজ সোমবার সকাল ৮টায় এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) স্কোর ২৯৩ নিয়ে দূষিত শহরের তালিকায় প্রথম স্থান ধরে রেখেছে ঢাকা। এর আগে গত শনিবারও শীর্ষে ছিল ঢাকা। এ নিয়ে টানা তিন দিন তালিকার শীর্ষ অবস্থানে ঢাকা। এর আগে ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে এবং এ বছরে জানুয়ারির শুরু থেকে একাধিকবার তালিকার শীর্ষে ছিল ঢাকা।

দূষিত বাতাসের শহরের একটি তালিকা নিয়মিত প্রকাশ করে বায়ুর মান পর্যবেক্ষণকারী আন্তর্জাতিক প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান আইকিউ এয়ার। আজ সকালে সেই তালিকায় একিউআই ২৯১ ও ২১৬ স্কোর নিয়ে দ্বিতীয় উজবেকিস্তানের তাসখন্দ ও তৃতীয় স্থানে আছে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি।

একিউআই স্কোরে ঢাকা, তাসখন্দ ও নয়াদিল্লির পরেই আছে ভিয়েতনামের হ্যানয় (১৮৯)। এরপর আছে চীনের তিনটি—শহর উহান (১৭৩), চংগিং (১৭১) ও চেংডু (১৭০)।

সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুর মান পর্যবেক্ষণকারী প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান আইকিউ এয়ার দূষিত বাতাসের শহরের এ তালিকা প্রকাশ করে। প্রতিদিনের বাতাসের মান নিয়ে তৈরি করা একিউআই স্কোর একটি নির্দিষ্ট শহরের বাতাস কতটুকু নির্মল বা দূষিত, সে সম্পর্কে মানুষকে তথ্য দেয় এবং তাদের কোনো ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হতে পারে কি না, তা জানায়।

একিউআই স্কোর ১০০ থেকে ২০০ পর্যন্ত ‘অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচিত হয়। একইভাবে একিউআই স্কোর ২০১ থেকে ৩০০ হলে স্বাস্থ্যসতর্কতাসহ জরুরি অবস্থা হিসেবে বিবেচিত হয়। এ অবস্থায় শিশু, প্রবীণ ও অসুস্থ মানুষকে বাড়ির ভেতরে এবং অন্যদের বাড়ির বাইরের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়। এ পরিমাণে বায়ুদূষণ গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।

The post টানা তিন দিন দূষিত শহরের শীর্ষে ঢাকা appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%9f%e0%a6%be%e0%a6%a8%e0%a6%be-%e0%a6%a4%e0%a6%bf%e0%a6%a8-%e0%a6%a6%e0%a6%bf%e0%a6%a8-%e0%a6%a6%e0%a7%82%e0%a6%b7%e0%a6%bf%e0%a6%a4-%e0%a6%b6%e0%a6%b9%e0%a6%b0%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%b6/

আগামী ১৪ মে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

তুরস্কের পরবর্তী পার্লামেন্টারি ও প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে বিশ্বজুড়ে মানুষের আগ্রহের কমতি নেই। অবশেষে সেই জল্পনার অবসান হলো। আগামী ১৪ মে দেশটিতে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। খবর আল-জাজিরার।

শনিবার (২১ জানুয়ারি) উত্তরপশ্চিমাঞ্চলের বুসা প্রদেশে এক যুব সম্মেলনে তিনি নির্বাচনের তারিখ জানান। কিন্তু এই সম্পর্কিত ভিডিওটি প্রকাশিত হয় রোববার।

যুবকদের উদ্দেশ্য এরদোয়ান বলেন, আপনাদের সঙ্গে লক্ষ্য ভাগাভাগি করতে পেরে আমি আল্লাহকে ধন্যবাদ জানাই। ১৪ মে যে নির্বাচন হবে সেখানে এসব যুবকরা প্রথমবারের মতো ভোট দেবে।

কোনো প্রার্থী ৫০ শতাংশের বেশি ভোট না পেলে ২৮ মে দ্বিতীয় দফার নির্বাচন হবে।

২০০৩ সাল থেকে তুরস্কে ক্ষমতায় আছেন এরদোয়ান। যদিও প্রথমে তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে ছিলেন। তারপর ২০১৪ সাল থেকে প্রেসিডেন্ট।

উত্তর আটলান্টিক নিরাপত্তা জোট বা ন্যাটোর মধ্যে তুরস্কের সশস্ত্র বাহিনী হলো দ্বিতীয় বৃহত্তম। দেশটি অশান্ত প্রতিবেশি দেশগুলোতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, বিশেষ করে যুদ্ধ-বিধ্বস্ত সিরিয়ায়। সম্প্রতি দেশটি পশ্চিম বলকান, পূর্ব ভূমধ্যসাগর ও আফ্রিকায় প্রভাব বিস্তার করা শুরু করেছে। সর্বোপরি, এটি কৃষ্ণ সাগর ঘিরে ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। গত বছর তুরস্ক ক্ষুধার্ত বিশ্বে ইউক্রেনীয় শস্য পাঠানোর ব্যাপারে জাতিসংঘের সঙ্গে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করেছিল।

The post আগামী ১৪ মে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%86%e0%a6%97%e0%a6%be%e0%a6%ae%e0%a7%80-%e0%a7%a7%e0%a7%aa-%e0%a6%ae%e0%a7%87-%e0%a6%a4%e0%a7%81%e0%a6%b0%e0%a6%b8%e0%a7%8d%e0%a6%95%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a7%87/

Saturday, January 21, 2023

একুশে বইমেলায় ইসলামি প্রকাশনীগুলো কেন স্টল বরাদ্দ পায় না?

রাকিবুল হাসান নাঈম:

রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের স্মৃতিজড়িত ফেব্রুয়ারির প্রথম দিন ২০২৩ সালের অমর একুশে বইমেলা শুরু করতে যাচ্ছে বাংলা একাডেমি। করোনা অতিমারির কারণে গত দুটি বইমেলা ঐতিহ্যবাহী রীতি অনুসারে ফেব্রুয়ারির প্রথম দিন শুরু হতে পারেনি। এবার মেলার মূল প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘পড় বই গড় দেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’।

বইমেলার স্টল বরাদ্দের আবেদন গ্রহণ শুরু হয়েছিল ৬ ডিসেম্বর, যা শেষ হয়েছে ২০ ডিসেম্বর। ৪৫৩টি প্রতিষ্ঠান আবেদন করেছে। স্টল নং নির্ধারিত না হলেও কে কতটি স্টল পাবে, তা বরাদ্দ দেওয়া দেয়া হয়েছে। এরমধ্যে ইসলামি প্রকাশনীর সংখ্যা নিতান্তই হাতেগোণা। তালিকা পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, ইসলামি প্রকাশনীগুলোর মধ্যে স্টল বরাদ্দ পেয়েছে রাহনুমা প্রকাশনী, হুদহুদ প্রকাশন, সন্দ্বীপন প্রকাশন, বইঘর, বিশ্বকল্যান পাবলিকেশন্স এবং বাড কম্প্রিন্ট এন্ড পাবলিকেশন্স। তারা গত বছরও স্টল বরাদ্দ পেয়েছিল। নতুন কোনো ইসলামি প্রকাশনী এবার বরাদ্দ পায়নি এখন পর্যন্ত।

কেন বাতিল জানা যায় না কারণ

প্রতি বছরই অনেক ইসলামি প্রকাশনী স্টল বরাদ্দ চেয়ে আবেদন জানায়। কিন্তু স্টল বরাদ্দ পায় না। এমনকি কী কারণে স্টল বরাদ্দ পেলো না, তার কারণও জানতে পারে না প্রকাশনী কর্তৃপক্ষ। কারণ না জেনেই প্রতি বছর অবেদন করতে হচ্ছে তাদের। এদের মধ্যে অন্যতম একটি প্রকাশনী হলো গার্ডিয়ান পাবিলিকেশন্স।

এ প্রসঙ্গে কথা হয় গার্ডিয়ান পাবিলিকেশন্সের জিএম নাজমুল হুদার সঙ্গে। তিনি ফাতেহকে বলেন, ‘গত কয়েক বছর ধরেই আমরা স্টল বরাদ্দের আবেদন করে আসছি। ইতোমধ্যে আমাদের বইয়ের সংখ্যা ১৩০। এরমধ্যে চলতি বছরই প্রকাশ করেছি ৩৩টি বই। কিন্তু অন্যবারের মতো এবারও আমরা স্টল বরাদ্দ পাইনি।’

কেন বারবার রিজেক্ট হচ্ছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের জানামতে আমরা সমস্ত প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টসহই আবেদন করেছি। কিন্তু কেন বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে না, তা জানতে পারিনি। জানার কোনো মাধ্যমও নেই। বাংলা একেডেমি কাকে কেন রিজক্টে করা হচ্ছে, তার কোনো ব্যাখ্যা দেয় না। এই ব্যাখ্যা না জানলেও প্রতিবছর আবেদন করে যাচ্ছি। সামনেও আবেদন করে যাব।’

তিনি আরও বলেন, ‘তবে এটা নিয়ে আমরা তেমন চিন্তিত নই। কারণ, আমরা বিশ্বাস করি, আমরা যদি ভালো কন্টেন্ট দেই, তাহলে মানুষ পড়বে। সারা বছরই আমাদের বই বিক্রি হয়। এতটুকু সত্য, একুশে বইমেলায় স্টল পেলে আমাদের আরও প্রচার-প্রসার হতো। তবে সেটা যেহেতু হচ্ছে না, কেন হচ্ছে না সেটাও যেহেতু জানতে পারছি না, তাই বিষয়টি নিয়ে অতটা চিন্তিত নই।’

কেন পাচ্ছে না স্টল?

গত কয়েক বছর ধরেই একুশে বইমেলায় স্টল পেয়ে থাকে বিশ্বকল্যান পাবলিকেশন্স। এর কর্ণধার মুহাম্মদ সাইফুল ইসলামের সঙ্গে কথা হয় প্রতিবেদকের। তার কাছে জানতে চাই, অনেকে বলে বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষ ইসলামি প্রকাশকদের স্টল দেয় না। অথচ আপনি সবসময় মেলায় স্টল পাচ্ছেন। এর পেছনে সবচে বড় ভূমিকা কোন জিনিসের? তিনি ফাতেহকে বলেন, ‘আমরা নিজেদের যোগ্যতাবলে স্টল বরাদ্দ পাই, কারও দয়ায় পাই না। আমাদের কন্টেন্ট দেখেন, বুঝতে পারবেন। আমরা সমাজের মূল স্রোতের সাথে মেশার চেষ্টা করি। দেশের ও দশের কথা বলি। বাংলায় কথা বলি। ইসলামি প্রকাশনীগুলো বাংলা একাডেমিতে যায়ই না। বই মেলায় স্টল পাওয়ার জন্য তারা আবেদনই করে না। তারা মিথ্যাচার করছে যে, বাংলা একাডেমি ইসলামি প্রকাশনাগুলোকে স্টল দেয় না। বাংলা একাডেমির ডিজিসহ আরো উর্ধতন কর্মকর্তাদের সাথে আমি নিজে কথা বলেছি, তাদেরকে আমার অনেক ধর্মপরায়ণ মনে হয়েছে। গত বছর পর্যন্ত বাংলা একাডেমির সচিব ও বই মেলার দায়িত্বে ছিলেন জালাল আহমেদ। তিনি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়েন। এ বছর তিনি রিটায়ার্ড হয়েছেন। ‘

অনেকে আবেদন করে। তবুও স্টল পায় না। কেন পায় না? মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘একটু খতিয়ে দেখুন, তাদের কোনো ট্রেড লাইসেন্সই হয়তো নেই। তারা সরকারকে ঠিক মতো ট্যাক্সও দেয় না। বইতে হাজার হাজার বানান ভুল এবং মনমতো অনুবাদ প্রকাশ করেন তারা। লেখকের সাথে ঝামেলা তো বেধেই থাকে। এমনকি প্রকাশনাগত কোনো আইনও তারা মানেন না। বাংলা ভাষা বাদ দিয়ে উর্দূ নাম দিয়ে যারা বই প্রকাশ করেন, বাংলা একাডেমি কেন তাদের স্টলের জায়গা দেবে! তাদেরকে যে এখনও এই ব্যবসা করতে দিচ্ছে এটাই তো কপাল। বই মেলাতে ইসলামি প্রকাশনীগুলো স্টল না পাওয়ার পিছনে দায়ী তারাই। এর বাহিরে আর আমি কিছুই মনে করি না।’

এবার স্টল পেয়েছে সন্দ্বীপন প্রকাশন। যারা স্টল পাচ্ছে না কেন পাচ্ছে না জানতে চাইলে এর কর্ণধার রুকনুদ্দিন ফাতেহকে বলেন, ‘আমাদের প্রকাশকরা প্রফেশনাল না। অনেকে আবেদন করে ঠিক। কিন্তু দেখা যায়, তাদের ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন করা নেই। সরকারের টেক্স পরিশোধ করা নেই ঠিকমতো। ফলে আবেদন একাডেমি গ্রহণই করে না।’

আবেদনের প্রস্তুতি নিচ্ছে কেউ কেউ

এতবছর আবেদন করেনি। তবে সামনে বছর বইমেলায় স্টল বরাদ্দের জন্য আবেদন করবে মুহাম্মদ পাবলিকেশন। এর কর্ণধার মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ খান ফাতেহকে বলেন, ‘বইমেলায় স্টল বরাদ্দের আবেদন করার জন্য সমস্ত ডকুমেন্টস আমাদের আছে। তবুও আবেদন করিনি।’ কেন করেননি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের দৃষ্টিতে শর্ত পূর্ণ হলেই হবে না, একাডেমি কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিতেও সেটা পূর্ণ লাগতে হবে। তাদের দৃষ্টিতে পূর্ণ না হলে হবে না।’ একডেমিক শর্তের বাইরে ‘কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি’ জিনিসটা কী খোলাসা করেননি তিনি।

তবে বিষয়টি তিনি খোলাসা না করলেও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রকাশক দাবি করেছেন, ‘স্ট্রং লবিং ছাড়া একুশে বইমেলায় স্টল বরাদ্দ পাওয়া যায় না। দেখা যাচ্ছে, সব শর্ত প্রকাশনী পূর্ণ করেছে, কিন্তু লবিং না থাকার কারণে প্রকাশনী স্টল বরাদ্দ পাচ্ছে না।’

এ প্রসঙ্গে কথা হয় একাডেমির পরিচালক (প্রশাসন) ও মেলা কমিটির সদস্যসচিব কে এম মুজাহিদুল ইসলামের সঙ্গে। ইসলামি প্রকাশনীগুলো একাডেমির মেলায় কেন বরাদ্দ পায় না জানতে চাইলে ফাতেহকে তিনি বলেন, ‘স্টল বরাদ্দ পায় না ভুল কথা। বরাদ্দ পায় তারাই, যারা শর্ত মেনে আবেদন করে। শর্ত পূরণ না করলে আবেদন গ্রহণ করা হয় না। এছাড়া বাংলা একাডেমি তাদেরকে স্টল না দেয়ার অন্য কোনো কারণ থাকতে পারে না। ইসলামিক-ননইসলামিক ধরনের বৈষম্য বাংলা একাডেমি সৃষ্টি করে না, ধর্মভিত্তিক বিভাজন হিসেবেও বাংলা একাডেমি কাউকে স্টল দেয় না। বইয়ের গুণগত মান, ৫ বছরে কমপক্ষে নিজস্ব ৫০ টা বই এবং যে বছরে আবেদন করছে সে বছরে ২৫টা বই ছাপছে কি না তা দেখে। এ বিষয়গুলো তো আমরা দেখি না, বইমেলার জন্য আমাদের কমিটি আছে। সে কমিটিতে পুস্তক প্রকাশনা সমিতির সাধারণ সম্পাদক থাকে, প্রতিনিধি থাকে। সকলের মূল্যায়ন বিবেচনায় যে সমস্ত প্রকাশনাগুলোর নাম আসে তাদের স্টল দেয়া হয়।’

এতটুকু বলেই কথা সমাপ্ত করেন মেলা কমিটির সদস্যসচিব। এ প্রসঙ্গে আরও কথা বলার জন্য মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয় মেলা কমিটির সদস্য সাহেদ মন্তাজের সঙ্গে। কিন্তু তিনি জানান, বইমেলা নিয়ে তিনি সঠিক তথ্য দিতে পারবেন না। যা বলার সদস্যসচিবই বলবেন। আর তিনি যদি বলে থাকেন কিছু, তার বাইরে আমার কোনো কথা নেই।

এবারের মেলাও হবে দুটি অংশে। বাংলা একাডেমির মাঠে থাকবে সরকারি–বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার স্টল। সোহরাওয়ার্দী উদ্যান বরাদ্দ থাকবে প্রকাশকদের জন্য। উদ্যানের প্রায় ছয় লাখ বর্গফুট এলাকা নিয়ে হবে মেলার পরিসর। প্রকাশনার সব স্টল থাকবে স্বাধীনতাস্তম্ভের সামনে থেকে উদ্যানের পশ্চিম অংশে। শিশুদের বইয়ের কর্নার থাকবে মুক্তমঞ্চের কাছে। এই অংশে এবার অন্য কোনো স্টল থাকবে না। ফলে যারা শুধু বই কিনতে চান, তাদের আর পূর্ব–পশ্চিম দুই প্রান্ত ঘুরতে হবে না। পূর্ব প্রান্ত অর্থাৎ ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের পাশের অংশে থাকবে খাবারের দোকান, মোড়ক উন্মোচন, লেখক বলছি মঞ্চ, নামাজের স্থান, শৌচাগার ও মেলার সহায়তাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর স্থাপনা। এবার মেলার ভেতরে ক্রেতাদের বসার জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা থাকবে। গাড়ি পার্কিং থাকবে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন প্রান্তের প্রবেশপথের পাশে। এ ছাড়া এবার ক্রেতাদের সুবিধার্থে প্রবেশপথের সামনে বড় আকারের দুটি ডিজিটাল বোর্ডে মেলার দিকনির্দেশনা থাকবে। উপরন্তু প্রতি সারির সামনে স্টলের নম্বর ও প্রকাশকদের পরিচিতিসহ একটি করে ডিজিটাল বোর্ড বসানো হবে। এতে পছন্দের প্রকাশকদের স্টল খুঁজে পাওয়া সহজ হবে।

The post একুশে বইমেলায় ইসলামি প্রকাশনীগুলো কেন স্টল বরাদ্দ পায় না? appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%8f%e0%a6%95%e0%a7%81%e0%a6%b6%e0%a7%87-%e0%a6%ac%e0%a6%87%e0%a6%ae%e0%a7%87%e0%a6%b2%e0%a6%be%e0%a6%af%e0%a6%bc-%e0%a6%87%e0%a6%b8%e0%a6%b2%e0%a6%be%e0%a6%ae%e0%a6%bf-%e0%a6%aa%e0%a7%8d/