ফাতেহ ডেস্ক:
ভারতের দিল্লির লালকেল্লায় পৌঁছে আন্দোলনের পতাকা উড়িয়ে দিয়েছেন আন্দোলনরত কৃষকরা। সংঘর্ষ, কাঁদানে গ্যাস, লাঠি চার্জ। কিছু দিয়েই পুলিশ নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি প্রতিবাদী কৃষকদের। তিন সীমানায় সব ব্যারিকেড ভেঙে চুরমার হয় মঙ্গলবার। পথ পাল্টে লালকেল্লায় গিয়ে কৃষকদের মধ্যে থেকে আওয়াজ ওঠে ‘অকুপাই দিল্লি’।
আজ মঙ্গলবার সকাল পুলিশের ঘোষণা ছিল, ১২টা নাগাদ কৃষকদের ট্রাক্টর মিছিল নির্দিষ্ট তিনটি রুটে গিয়ে আবার উৎসস্থলে ফিরে আসবে। কিন্তু বাস্তবে ঘটল উল্টো। সকাল ৮টা থেকে লাগামছাড়া গতিতে দিল্লির দিকে ধেয়ে আসতে থাকে মিছিল। পুলিশের বাধা কেউ মানেননি। আর তাই নিয়ে উত্তপ্ত হয় দিল্লির নয়ডা মোড়, আইটিও মোড়, এসবিটি এলাকা।
এ সময় ট্রাক্টর উল্টে মারা যান এক কৃষক। পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ চলাকালীন ট্র্যাক্টরটি উল্টে তার মৃত্যু হয় বলে জানা গিয়েছে। তবে কৃষকদের অভিযোগ, দীনদয়াল উপাধ্যায় মার্গে ঢোকার মুখে তাদের পথ আটকায় পুলিশ। এমনকি গুলিও চালানো হয় বলে অভিযোগ। বিক্ষুব্ধদের দাবি, ট্র্যাক্টরটিতে সেই গুলি এসে লাগে। তাতেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায় ট্র্যাক্টরটি। তার নীচে চাপা পড়ে মৃত্যু হয় ওই কৃষকের। মঙ্গলবার দুপুরে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত নিহতের নাম-পরিচয় জানা যায়নি। তবে এই ঘটনায় ক্ষোভ ছড়িয়েছে আন্দোলনকারীদের মধ্যে। এরপরই ব্যারিকেড ভেঙে লালকেল্লায় ঢুকে পড়েন তারা। সেখানে একাধিক স্তম্ভের মাথায় কৃষক সংগঠনের পতাকা ঝুলিয়ে দেন। কেল্লার সামনের খুঁটি বেয়ে উঠে পতাকা টাঙিয়ে দিতে দেখা যায় আন্দোলনকারীদের।
ভারতের ৭২তম প্রজাতন্ত্র দিবসে বিতর্কিত তিন কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে এভাবেই অবরুদ্ধ করা হয় রাজধানী দিল্লি।
এরপর, দিল্লির একা্ংশে বন্ধ করে দেয়া হয় ইন্টারনেট পরিষেবা। আংশিক বন্ধ করা হয় মেট্রো পরিষেবাও। এ সময় দুই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও কৃষক আন্দোলনের নেতারা অনুরোধ করেন শান্তিপূর্ণ পথে আন্দোলন করতে। তবু দুপুর পর্যন্ত কৃষক আন্দোলনের উত্তাপ কমেনি, বরং দিল্লির বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নতুন নতুন সংঘর্ষের খবর পাওয়া যায়। লালকেল্লা থেকে একবার কৃষকদের সরানোর পর, নতুন করে ট্রাক্টরে আরো প্রতিবাদী কৃষকরা এসে ভিড় করেন। ‘শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ’ কোন পর্যায়ে পৌঁছতে পারে, প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন সেটাই দেখল দিল্লি। দুপুরের পর পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে বিশেষ বৈঠকে বসেন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
মঙ্গলবার দুপুরে কেন্দ্রীয় সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের পক্ষ থেকে একটি নির্দেশিকা জারি করে বলা হয়, নিরাপত্তা ও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতেই ইন্টারনেট বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সিঙ্ঘু, গাজিপুর, টিকরি, মুকারবা চক, নাঙ্গলোই-এলাকায় বন্ধ করে দেয়া হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবা। ২৬ জানুয়ারি দুপুর ১২টা থেকে রাত ১২ পর্যন্ত ইন্টারনেট বন্ধ থাকছে। পাশাপাশি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে দিল্লি মেট্রোর বেশ কয়েকটি স্টেশনও। আইটিও মোড়ে যখন প্রাথমিক ঝামেলা হয়, তখনই বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয় একাধিক মেট্রো স্টেশন।
পরিস্থিতি এতটাই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় যে আসরে নামেন কৃষক আন্দোলনের সমর্থক মুখ্যমন্ত্রীরা। রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌত ও পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিংহ কৃষকদের শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন। সংবাদ মাধ্যমে একই স্বর শোনা যায় আন্দোলনের মুখ যোগেন্দ্র যাদব, রাকেশ টিকায়েতদের গলাতেও। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসেনি তাতে।
The post লালকেল্লায় পতাকা উড়াল কৃষকরা, সংঘর্ষে নিহত ১ appeared first on Fateh24.
source https://fateh24.com/%e0%a6%b2%e0%a6%be%e0%a6%b2%e0%a6%95%e0%a7%87%e0%a6%b2%e0%a7%8d%e0%a6%b2%e0%a6%be%e0%a7%9f-%e0%a6%aa%e0%a6%a4%e0%a6%be%e0%a6%95%e0%a6%be-%e0%a6%89%e0%a7%9c%e0%a6%be%e0%a6%b2-%e0%a6%95%e0%a7%83/
No comments:
Post a Comment