Monday, December 5, 2022

আজ বাবরি মসজিদ শাহাদাত দিবস

মুনশী নাঈম:

ভারতের উত্তর প্রদেশের ফৈজাবাদ জেলার অযোধ্যা শহরের রামকোট পর্বতের ওপর অবস্থিত পাঁচ-শতাব্দী-প্রাচীন বাবরি মসজিদ। মোঘল সম্রাট বাবরের আদেশে সেনাপতি মীর বাকি ১৫২৮-২৯ (৯৩৫ হিজরি) খৃস্টাব্দে এ মসজিদ নির্মাণ করেন। মসজিদটি সুলতানি স্থাপত্যের পরিচয় বহন করে।

মোঘল সাম্রাজ্যের শাসকরা ছিলেন শিল্প এবং স্থাপত্যের পৃষ্ঠপোষক। তাদের নির্মিত অনেক সমাধি, মসজিদ ও মাদ্রাসা সূক্ষ্ম নির্মাণকৌশলের নিদর্শন বহন করে। মোঘলদের স্থাপত্য তুঘলক রাজবংশের স্থাপত্যের প্রভাব বহন করে, যার একটি স্বতন্ত্র গঠনশৈলী আছে। ভারতের সর্বত্র মসজিদসমূহের ভিন্ন ভিন্ন গঠনশৈলী আছে যা বিভিন্ন সময়ে নির্মিত হয়েছিল। এই নির্মাণগুলির মধ্যে আদিবাসী শিল্প ঐতিহ্য এবং স্থানীয় কারিগরদের মার্জিত শৈলী ও দক্ষতা উভয়ই প্রকাশ পায়। মসজিদের নির্মাণে আঞ্চলিক বা প্রাদেশিক জলবায়ু, ভূখণ্ড, উপকরণ ইত্যাদি প্রভাব ফেলতো। যার ফলে বঙ্গ, কাশ্মীর ও গুজরাটের মসজিদের মধ্যে বিরাট পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়। যেমন বাবরি মসজিদ জানপুরের সুলতানি স্থাপত্যের পরিচয় বহন করে। পশ্চিম দিক থেকে দেখলে এই মসজিদ জানপুরের আতালা মসজিদ এর সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।

বাবরি মসজিদ তার সংরক্ষিত স্থাপত্য ও স্বতন্ত্র গঠনশৈলীর জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ছিল। মসজিদটি সম্রাট আকবর দ্বারা গৃহীত ইন্দো-ইসলামী গঠনশৈলীর প্রতীক ছিল।

বাবরি মসজিদের জমি নিয়ে বিরোধ

হিন্দুদের দাবি—অযোধ্যার যে স্থানে বাবরি মসজিদ নির্মিত, সে স্থানটি রামের জন্মভূমি। মোঘল সম্রাট বাবরের সেনাপতি মীর বাকি একটি রাম মন্দির ধ্বংস করে বাবরি মসজিদ নির্মাণ করেছেন। তবে এর স্বপক্ষে কোনো ঐতিহাসিক প্রমাণ নেই। তবুও কেবল বিশ্বাসের ওপর ভিত্তি করে ১৮২২ সালে ফৈজাবাদ আদালতের এক কর্মী দাবি করেন, মসজিদটি মন্দিরের ওপর নির্মিত। ১৮৫৫ সালে মসজিদের জমি দখল নিয়ে হৈচৈ হয়। ১৮৫৯ সালে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক প্রশাসন সংঘর্ষ এড়াতে মসজিদের ভূখণ্ডে হিন্দু-মুসলিমের জায়গা দেয়াল তুলে আলাদা করে দেন।

এরপর ১৯৪৯ সাল পর্যন্ত সবকিছু ঠিকঠাক মতোই চলছিলো। কিন্তু ১৯৪৯ সালে হিন্দু মহাসভার সদস্যরা মসজিদের ভেতরে গোপনে রাম মূর্তি স্থাপন করে। এ নিয়ে মুসলিম এবং হিন্দুদের মাঝে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। আইনের দারস্থ হলে আদালত মসজিদের জায়গাটিকে বিতর্কিত স্থান ঘোষণা দিয়ে সিলগালা করে দেয়। তখন মুসলিম হিন্দু উভয়েই ওই স্থানে প্রবেশাধিকার পেতে আদালতকে মামলা করে। ১৯৫৯ সালে মামলা করে নির্মোহী আখড়া। ১৯৬১ সালে মামলা করে সুন্নী সেন্ট্রাল ওয়াকফ বোর্ড। এরপর আদালত ১৯৮৬ সালের পয়লা ফেব্রুয়ারি ওই স্থানে হিন্দু তীর্থযাত্রীদের প্রবেশাধিকার দিতে সরকারকে নির্দেশ দেয়। সরকারে তখন রাজীব গান্ধী। গান্ধী হিন্দুদের প্রবেশাধিকার দিয়ে মসজিদের তালা খুলে দেয়।

বাবরি মসজিদের শাহাদাত

১৯৯০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বিজেপি নেতা এল. কে. আদভানি রাম রথযাত্রা নামের একটি রাজনৈতিক শোভাযাত্রার আয়োজন করেন। শোভাযাত্রাটি গোটা উত্তর ভারত ঘুরে অযোধ্যাতে এসেছিল। এই শোভাযাত্রা বাবরি মসজিদের জায়গায় প্রস্তাবিত মন্দিরের জন্য সমর্থন আনার জন্য এবং মুসলিমবিরোধী মানসিকতাকে কাজে লাগিয়ে হিন্দু ভোটগুলোকে একটি দলের বাক্সে আনার পক্ষে কাজ করেছিল।

১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ এবং এর সহযোগী সংগঠনগুলো ঐ বিতর্কিত স্থানে আরেক শোভাযাত্রার আয়োজন করে। শোভাযাত্রায় শামিল হয়েছিল দেড় লাখ ভিএইচপি এবং বিজেপি কর সেবক। এছাড়া, অনুষ্ঠানে আদভানি, মুরলি মনোহর জোশি ও উমা ভারতীর মত বিজেপি নেতা ভাষণ দিয়েছিলেন। শোভাযাত্রা চলাকালীন সময়ের প্রথম দিকে জনতা ক্লান্তিহীনভাবে স্লোগান দিচ্ছিল। সহিংসতা প্রতিরোধে স্থাপনাটির চারদিকে পুলিশি বেষ্টনী তৈরি করা হয়েছিল। দুপুরের দিকে এক যুবক বেষ্টনী অতিক্রম করে স্থাপনাটির উপরে চলে যায় এবং গেরুয়া পতাকা উত্তোলন করে। এই ঘটনা ছিল সহিংসতার আগমনবার্তা। এরপর, উন্মত্ত জনতার সামনে পুলিশি বেষ্টনী বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে নি। এরপর, উন্মত্ত জনতা কুঠার, হাতুড়ি এবং গাইতি দিয়ে ইমারতটি ভাঙা শুরু করে। কয়েক ঘণ্টার মাঝে কাদা ও চুনাপাথর দ্বারা নির্মিত ইমারতটি মাটির সাথে মিশে যায়। শহীদ হয় পাঁচ-শতাব্দী-প্রাচীন বাবরি মসজিদ। যার ফলে পুরো ভারত জুড়েই দাঙা ছড়িয়ে পরে। এর জেরে প্রায় ২০০০ মানুষ মারা যায়। যাদের বেশিরভাগই ছিলেন মুসলিম।

বাবরি মসজিদ মামলার রায়

২০০২ সালে বাবরি মসজিদের বিতর্কিত জমির মালিকানা নিয়ে হাইকোর্টে শুনানি শুরু হয়। ২০১০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বরে এলাহাবাদ হাইকোর্ট রায় দেয়—বিতর্কিত জমি সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড, নির্মোহী আখড়া এবং রামলালার মধ্যে সমান ভাগে ভাগ করে দেয়া হোক। এর ফলে এর ফলে হিন্দুরা পায় জমির তিন ভাগের দুই ভাগ। মুসলিমরা এক ভাগ।

এর বিরুদ্ধে সব পক্ষই উচ্চ আদালতে আপীল করে। ৯ নভেম্বর, শনিবার, ২০১৯ সালে উচ্চ আদালত নিম্ন আদালতের রায়কে রদ করে ঘোষণা দেয় ২.৭৭ একরের পুরো জমিই এমন একটি ট্রাস্টকে দিতে হবে, যারা হিন্দু মন্দির নির্মাণ করবে। একই সাথে আদালত সরকারকে নির্দেশ দেয় সুন্নী ওয়াকফ বোর্ডকে বিকল্প ৫ একর জমি দিতে হবে মসজির নির্মাণের জন্য এবং সে জমি অযোধ্যায়ই হতে হবে।

এ রায় ঘোষণা করেন ভারতের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈর নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ। পাঁচ সদস্য হলেন-প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ, বিচারপতি শরদ অরবিন্দ বোবদে, বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি অশোক ভূষণ এবং বিচারপতি আবদুল নাজির।

আসলেই কি রাম মন্দিরের ওপর বাবরি মসজিদ নির্মিত হয়েছে?

২০০৩ সালে ভারতের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ যেখানে বাবরি মসজিদ ছিলো, সেখানে খননকাজ চালায়। পরে তারা এলাহবাদ হাইকোর্টকে জানায়, মসজিদের নীচে তিনটি রাম মন্দিরের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে।

কিন্তু ২০১৮ সালের ৬ ডিসেম্বর বাবারি মসজিদ ধ্বংসের ২৬তম বার্ষিকী উপলক্ষে হাফিংটন পোস্টকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রত্নতত্ত্ব বিশেষজ্ঞ সুপ্রিয় ভার্মা ও জয়া মেনন বলেছেন, ভারতের প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের দেয়া তথ্য সঠিক নয়। বাবরি মসজিদের নীচে কোন রাম মন্দির থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

সুপ্রিয় ভার্মা জওহরলাল নেহরু ইউনিভার্সিটির প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক এবং মেনন শিব নাদার ইউনিভার্সিটির ইতিহাস বিভাগের প্রধান। তাঁরা সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডের পক্ষে খননকাজ পর্যবেক্ষণ করছিলেন। তাঁরা খননকাজে পাওয়া তথ্য নিয়ে ২০১০ সালে ইকোনমিক অ্যান্ড পলিটিক্যাল উইকলিতে নিবন্ধ লিখেছিলেন।

সুপ্রিয় ভার্মা ওই সাক্ষাৎকারে বলেন, বিজেপির নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় থাকায় খননকাজে নিয়োজিত বিশেষজ্ঞরা চাপের মধ্যে ছিলেন। তাঁদের আসলে বাধ্য করা হয়েছিল মন্দিরের পক্ষে বলতে। অনুসন্ধানের নেতৃত্বে ছিলেন বি আর মানি, যাঁকে এলাহাবাদ হাইকোর্ট দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিয়েছিলেন। ২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার মানিকে জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক পদে বসায়।

সুপ্রিয় ভার্মার মতে, বাবরি মসজিদের নিচে পুরোনো ছোট মসজিদ ছিল। এর পশ্চিম পাশের দেয়াল, ৫০টি পিলার ও স্থাপত্যশৈলী তারই প্রমাণ। পশ্চিম পাশে দেয়াল দেখলেই বোঝা যায় যে এই পাশে মুখ করে নামাজ পড়া হয়েছে। এর কাঠামো মসজিদের মতো, মন্দিরের মতো নয়।

২০১৯ এর আগস্টে মামলার শুনানির সময় হিন্দু পক্ষের আইনজীবীর কাছে ফের রাম মন্দির থাকার প্রমাণ চায় সুপ্রিম কোর্ট। জবাবে আইনজীবী বিশ্বনাথ ২০০৩ সালের খনন রিপোর্ট তুলে ধরেন। তিনি বলেন, খালি জমির ওপর নির্মাণ হয়নি বাবরি মসজিদ। কোন ধ্বংসাবশেষের ওপরই নির্মাণ হয়েছে। তবে সেই প্রাচীন কাঠামো যে রামের মন্দিরই ছিল, এমন কোনো অকাট্য প্রমাণ যে নেই, তা স্বীকার করে নিয়েছেন বর্ষীয়ান এই আইনজীবী। সাধারণ মানুষের বিশ্বাস ও ‘চূড়ান্ত সম্ভাবনা’কে ভিত্তি করে সেটি রাম মন্দির ছিল বলেই আদালতে যুক্তি তুলে ধরেন রাম লালার আইনজীবী।

৯ নভেম্বর বাবরি মসজিদ মামলার চূড়ান্ত রায় ঘোষণায় প্রধান বিচারপতিও উল্লেখ করেন, বাবরি মসজিদ কোনো খালি জমিতে নির্মিত হয়নি। যে কাঠামোর ধ্বংসাবশেষের ওপর নির্মিত হয়েছে বাবরি মসজিদ, সে কাঠামো মন্দিরের কাঠামো, এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

প্রমাণ না পাওয়া গেলেও আদালত মসজিদের জমিতে মন্দির নির্মাণের আদেশ দেয়। পাশাপাশি অন্য কোথাও মসজিদ নির্মাণের জন্য মুসলমানদেরকে ৫ একর জমি দেয়ার নির্দেশ দেয়। প্রমাণ নয়, এ রায়ে জয় হলো লোকমুখে ছড়িয়ে পড়া রূপকথার।

বাবরি মসজিদ ভাঙার অপরাধে দায়ী কারা

১৯৯২ সালের ডিসেম্বর মাসের ১৬ তারিখে কেন্দ্রীয় সরকার মসজিদ ধ্বংসের বিষয়টি তদন্ত করার জন্য অবসরপ্রাপ্ত উচ্চ আদালত বিচারক মনমোহন সিং লিবারহানের নেতৃত্বে লিবারহান কমিশন গঠন করে। ১৬ বছরে ৩৯৯ বার বৈঠকের পর ২০০৯ সালের ৩০ জুন কমিশন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে ১,০২৯ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। প্রতিবেদন অনুসারে ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বরের ঘটনা ‘অপ্ররোচিত কিংবা অপরিকল্পিত’ ছিল না।

প্রতিবেদনে ৬৮ জন বাবরি মসজিদ ধ্বংসের সাথে জড়িত বলে উল্লেখ করা হয়, যাদের অধিকাংশই ছিলেন বিজেপি নেতা। দোষী ব্যক্তিদের নামের তালিকায় বাজপেয়ী, আদভানি, জোশি এবং বিজয় রাজে স্কিন্দিয়ার নাম ছিল। উত্তর প্রদেশের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী কল্যাণ সিংয়ের সমালোচনা করা হয় প্রতিবেদনটিতে। প্রতিবেদনটিতে সে সময়ে ইমারতটি ভাঙার সময় অযোধ্যার পুলিশ ও প্রশাসনের নিষ্ক্রিয় ভূমিকার কথা উল্লেখ করে হয়েছে। আদভানির নিরাপত্তার অঞ্জু গুপ্তা বলেছেন যে, আদভানি ও জোশির বক্তব্য জনতাকে আরো উন্মত্ত করে তুলেছিল সেদিন। প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়েছে যে ,নেতাদের কাজ তাদের মনের গহীনে বিতর্কিত ইমারতটি ভাঙার সুপ্ত ইচ্ছাকেই ফুটিয়ে তোলে। নয়ত তারা খুব সহজেই ধ্বংসযজ্ঞটি থামাতে পারত।

২০০৫ সালের মার্ভে একটি বইয়ে সাবেক গোয়েন্দা প্রধান মলয় কৃষ্ণ ধর দাবি করেন যে, রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস), বিজেপি এবং ভিএইচপির নেতারা ইমারতটি ভাঙার দশ মাস পূর্বেই এটি ভাঙার পরিকল্পনা করেছিলেন। বইটিতে ইস্যুটির ব্যাপারে পি. ভি. নরসিমা রাওয়ের পদক্ষেপের সমালোচনা করা হয়। ধর আরো দাবি করেন, তিনি বিজেপি ও সংঘ পরিবারের ব্যক্তিদের একটি বৈঠকের নিরাপত্তা প্রদানের দায়িত্বে ছিলেন এবং বৈঠকটিতে নিঃসন্দেহে তারা (আরএসএস, বিজেপি, ভিএইচপি ১৯৯২ সালে অযোধ্যায় হিন্দুত্বের জিগির তুলে প্রলয় সৃষ্টির নীল নকশা রচনা করেছিলেন। আরএসএস, বিজেপি, ভিএইচপি এবং বৈঠকে উপস্থিত বজরং দলের নেতাদের সবাই সুসংগঠিতভাবে কাজটি সম্পন্ন করতে চাইলেন। তিনি উল্লেখ করেন যে, তিনি ঐ বৈঠকের কথাবার্তা রেকর্ড করে তার উপরের কর্মকর্তার কাছে হস্তান্তর করেছিলেন। ব্যাপারটা তার উপরের কর্মকর্তা প্রধানমন্ত্রী (রাও) এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে (শঙ্কররাও চবন) অবহিত করেছিলেন। তিনি আরো দাবি করেন, এ বিষয়ে কেউ প্রকাশ্যে স্বীকার করুক আর নাই করুক, মনে মনে সবাই স্বীকার করে যে, অযোধ্যার ঘটনা হিন্দুত্বকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করার ক্ষেত্রে অনন্য সুযোগ হিসেবে কাজ করেছে।

২০১৪ সালের এপ্রিল মাসে কোবরাপোস্ট এর একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয় যে, ধ্বংসযজ্ঞটি শুধু উন্মত্ত জনতার কাজ ছিল না, এটা ছিল পূর্ব পরিকল্পিত এবং এর ভিত রচিত প্রচণ্ড গোপনীয়তার মাঝে, যাতে সরকারি গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা এটি সম্পর্কে কোন কথা জানতে না পারে। প্রতিবেদটিতে আরো দাবি করা হয় যে, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এবং শিব সেনার সদস্যরা আলাদা আলাদা ভাবে ইমারতটি ধ্বংসের কয়েক মাস পূর্বেই ইমারতটি ধ্বংসের পরিকল্পনা করেছিল।

বাবরি মসজিদের জমির রায় হয়েছে। কিন্তু ২০২০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বের ১৯৯২ সাল থেকে ২৮ বছর ধরে চলা এই মামলার একপেশে রায় প্রদান করেছে ভারতের বিশেষ আদালত। সেই রায়ে অভিযুক্ত সবাইকে বেকসুর খালাস ঘোষণা করা হয়েছে। লখনউয়ের বিশেষ আদালতে রায় পড়েন বিচারক সুরেন্দ্রকুমার যাদব। বিচারকের যুক্তি ‘ওই কর্মকাণ্ড পূর্বপরিকল্পিত ছিল না’। তথ্যপ্রমাণও যথেষ্ট নয় বলে জানায় আদালত। অভিযুক্ত ৩২ জনকেই সসম্মানে মুক্তি দেওয়া হয়।

The post আজ বাবরি মসজিদ শাহাদাত দিবস appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%86%e0%a6%9c-%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%ac%e0%a6%b0%e0%a6%bf-%e0%a6%ae%e0%a6%b8%e0%a6%9c%e0%a6%bf%e0%a6%a6-%e0%a6%b6%e0%a6%be%e0%a6%b9%e0%a6%be%e0%a6%a6%e0%a6%be%e0%a6%a4-%e0%a6%a6%e0%a6%bf-2/

No comments:

Post a Comment