ইফতেখার জামিল :
উনিশ ও বিশ শতকের উল্লেখযোগ্য সময় মুসলিম বিশ্বের অধিকাংশ অঞ্চল ইউরোপিয়ান পরাশক্তি দেশগুলোর দখলে ছিল। যে মুসলমানরা একসময় রোমান ও পারস্য সাম্রাজ্যের প্রভাব খর্ব করে শক্তিশালী সভ্যতা প্রতিষ্ঠা করেছিল, ইকবালের ভাষায়, ‘কখনো আমরা আযান দিছি ইউরোপের ঐ গির্জাতে / কখনো বা তপ্ত বালি আফ্রিকার ঐ সেহরাতে’, সেই মুসলমানদের কেন আজ এই দুরবস্থা? ইতিহাসের যে কোনো পাঠকের মনে এই প্রশ্ন আসাটাই স্বাভাবিক।
গত শতকের মুসলিম চিন্তাবিদগণ নানাভাবে এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেছেন। এর মধ্যে অবিভক্ত উপমহাদেশের প্রখ্যাত কবি ও চিন্তাবিদ আল্লামা মুহাম্মদ ইকবাল ( ১৮৭৭-১৯৩৭) এর নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তিনি তার শিকওয়াহ ও জাওয়াবে শিকওয়াহ কাব্যগ্রন্থে বিশেষভাবে এ প্রশ্নের উত্তর অনুসন্ধানের চেষ্টা করেছেন। ‘ক্ষতিই কেন সইবো বল ? লাভের আশা রাখবো না ? / অতীত নিয়ে থাকবো বসে — ভবিষ্যৎ কি ভাববো না?’
ইকবালের ভাষায়, ‘ হাজারও লোক আছে— যারা তোমার নামে হয় বেজার!/ তবু দেখি তাদের প্রতি তোমার আশিস নিরন্তর / বাজ পড়িতে পড়ে শুধু মুসলমানের মাথার ‘পর! ইকবাল তাই চুপ থাকতে পারেননি—অভিযোগ, আক্ষেপ ও বিক্ষোভে আল্লাহর কাছে শেকায়েত জানিয়েছেন, ‘কণ্ঠবীণা নীরব—তবু ফরিয়াদে পূর্ণ বুক/ ঠোটের কাছে গান আসে তো কেমন করে রইব মূক?’
আত্মতুষ্টি, জড়তা ও বিক্ষুব্ধতা
আমরা যখন কোন সমস্যা, ব্যর্থতা বা বিপর্যয় নিয়ে আলোচনা করি, তখন সাধারণত আমাদের মধ্যে কিছু প্রবণতা দেখা যায়। অনেক ক্ষেত্রেই আমরা আমাদের দায় ও সীমাবদ্ধতা মানতে চাই না। ভুগতে থাকি আত্মতুষ্টিতে, ‘আমাদের মধ্যে কোনো ত্রুটি নেই’। এভাবে আমাদের সংকট, সমস্যা ও বিপর্যয় বাড়তে থাকে। আল্লাহ পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেন, ‘তারা অন্যায় ও অহংকার করে নিদর্শনাবলীকে প্রত্যাখ্যান করল, যদিও তাদের অন্তর এগুলো সত্য বলে বিশ্বাস করেছিল। অতএব দেখুন, অনর্থকারীদের পরিণাম কেমন হয়েছিল?’ ( সূরা নামল ১৪ )
মানবজাতির ইতিহাসে মানুষের মধ্যে আত্মতুষ্টির প্রবল উপস্থিতি দেখা যায়। বস্তুত আমিত্ব, অহংকার ও অহম মানুষের মৌলিক প্রবৃত্তির অংশ। মানুষ চাইলেই একে সহজে অতিক্রম করতে পারে না। তাই তাদের মধ্যে জন্ম নেয় আত্মতুষ্টি। এভাবে মানুষ তার সমস্যা চিহ্নিত করতে ও তার সমাধান অনুসন্ধানে ব্যর্থ হয়। এভাবে ঘনীভূত হয় সম্মিলিত আত্মতুষ্টি— সামগ্রিক পতন। এভাবেই চলতে থাকে সভ্যতার চাকা। ‘এভাবেই আমি সময়কে মানুষের মধ্যে পালাক্রমে আবর্তন ঘটিয়ে থাকি।’ ( সূরা আলে ইমরান, ১৪০)
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, যদি কোন জাতি তাদের নিজেদের অবস্থা পরিবর্তন না করে, তাহলে আল্লাহ নিজে তাদের অবস্থা পরিবর্তন করেন না। ( সূরা রা’দ, ১১) বস্তুত আমাদের পার্থিব জীবন—এর ঐতিহাসিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বাস্তবতা নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম ও নীতি মেনে চলে। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনে একে সুন্নাতুল্লাহ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। অর্থাৎ মুসলমানদের পতনের যেমন কিছু নির্দিষ্ট কারণ আছে, তেমনিভাবে এর সমাধানেরও আছে কিছু নির্দিষ্ট কৌশল ও কর্মপন্থা।
ইতিহাস দৈব-দুর্ঘটনা দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায় না। ঘটনাচক্রে কোন ঐতিহাসিক ঘটনা ঘটে না—ধারাবাহিক সম্মিলিত পাপ ছাড়া কোন জাতির সামগ্রিক পতন সংঘটিত হয় না। এই সম্মিলিত পাপকে আত্মতুষ্টির ভুল বা অপব্যাখ্যায় অতিক্রম করা সম্ভব নয়। ‘কুচক্র কুচক্রীদেরকেই ঘিরে ধরে। তারা কেবল পূর্ববর্তীদের দশারই অপেক্ষা করছে। অতএব আপনি আল্লাহর বিধানে পরিবর্তন পাবেন না এবং আল্লাহর রীতি-নীতিতে কোন রকম বিচ্যুতিও পাবেন না।’ ( সূরা ফাতির, ৪৩)
যুগে যুগে মহামানবগণ আত্মতুষ্টি, আমিত্ব ও অহমিকার বিষয়ে মানুষকে সতর্ক করেন। যখন সাধারণ মানুষ তাদের কথায় কান না দেয়, তখন তারা সমালোচনায় বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। বিপর্যয় নিশ্চিত জেনে তাদের পক্ষে শান্ত, স্থির ও নিশ্চুপ থাকা সম্ভব হয় না। এভাবে আমরা যুগে যুগে মনীষীদেরকে তাদের সমাজ ও জনপরিসরে অস্থিরতা প্রকাশ করতে দেখি। তাদের এই অস্থিরতা থেকেই জন্ম নেয় সংস্কারের ধারা। ইকবালের ভাষায়, ‘ দিল থেকে যদি আসে কোন বাণী, প্রভাব রাখে সে সুনিশ্চয় / পাখনা না থাক, তবু ঊর্ধ্বে উঠার তকত রয় !’
বিপর্যয় ও সঙ্কটের প্রেক্ষাপটে নবীজির আদর্শ
খোদ নবী কারীম (সাঃ) এবং সাহাবায়ে কেরামের জীবনে বিক্ষুব্ধতার উপস্থিতি দেখতে পাওয়া যায়। আয়াত ও হাদিসের নুসুস দেখলে আমরা দেখবো, সেখানে জাহেলী সমাজের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা হয়েছে। কেননা জাহেলী সমাজ তাদের অজ্ঞতা, মূর্খতা, পাপাচার ও অনুন্নয়ন নিয়ে আত্মতুষ্টিতে ভুগছিল। তারা কোনো পরিবর্তন, প্রশ্ন বা সংস্কারের জন্য প্রস্তুত ছিল না।
একবার কুরাইশের কাফের নেতারা নবীজিকে নিয়ন্ত্রণের জন্য পরামর্শসভায় বসেন। তাদের কারো কাছেই ইসলামের প্রভাবের বিষয়টি অজ্ঞাত ছিল না। তারা এর স্বরূপ নির্ধারণে বারবার ব্যর্থ হচ্ছিলেন, কেউ নবীজিকে গণক বলে আখ্যা দিচ্ছিলেন, কেউ বলছিলেন পাগল, আবার কেউ বলছিলেন তিনি কবি। শেষপর্যন্ত সিদ্ধান্ত ছাড়াই ওলিদ বিন মুগীরা নবীজির কাছে যান এবং তাঁকে চিকিৎসার প্রস্তাব দেন। ( ইবনে কাছির, সূরা ফুসসিলাত, আয়াত ৬-৮)
নবী করীম সাঃ দৈনন্দিন জীবন কীভাবে কাটাতেন, সে বর্ণনায় অনেক হাদিস রয়েছে। সেখানে দেখা যায় নবীজি মানুষের পথভ্রষ্টতার আত্মতুষ্টি নিয়ে ছিলেন অত্যন্ত চিন্তিত। নবীজি ছিলেন হাদিসের ভাষায় ‘তাবীলুস সামত’, ‘দায়েমুল ফিকর’ ও ‘মুতাওয়াতিরুল আহযান’ তথা নিশ্চুপ, সদা ভাবিত ও চিন্তিত। ( তারিখে দিমাশক, ৩-৩৩৭) পবিত্র কুরআনে অনেক জায়গায় দেখা যায় যে, আল্লাহ তা’আলা নবীজিকে অতিরিক্ত চিন্তা করতে নিষেধ করেছেন। ‘আপনার জাতি যদি কোরআনে ঈমান না আনে, তাহলে আপনি তো দেখছি, দুঃখ-বেদনায় নিজেকে মেরে ফেলবেন।’ ( সূরা কাহাফ, আয়াত ৬)
এভাবে উম্মতের জন্য চিন্তিত ও বেদনাগ্রস্থ হওয়া নবীজির মৌলিক আদর্শের অন্তর্ভুক্ত। তবে পরবর্তীতে ইসলামি সভ্যতায় মুসলমানদের মধ্যে এই বেদনার প্রবণতা কমে আসে। তারা নিজেদের নিয়ে আত্মতুষ্টিতে ভুগতে থাকেন। আল্লামা মুহাম্মদ ইকবালের কাছে এই নীরবতা ও জড়তা অসহ্যকর মনে হতে থাকে। সেখান থেকেই তিনি তার শেকায়েত-অভিযোগ নামা রচনা করেন।
ইকবালের ‘শিকওয়াহ’ : আনুষঙ্গিক কাঠামো
আল্লামা মুহাম্মদ ইকবালের শিকওয়াহ কবিতাটি সর্বপ্রথম ১৯০৯ সালে প্রকাশিত হয়। ১৯১১ সালে আঞ্জুমানে হেমায়েতুল ইসলামের এক সভায় কবিতাটি পঠিত হয় এবং এর প্রেক্ষিতে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে ইকবালের কাব্যগ্রন্থ বাঙ্গেদারায় কিছু পরিবর্তনসহ কবিতাটি অন্তর্ভুক্ত হয়। গত একশো বছরে যেহেতু মুসলমানদের অবস্থার বিশেষ পরিবর্তন হয়নি, তাই ইকবালের ‘শিকওয়াহ’ কবিতাটি এখনো সমানভাবে প্রাসঙ্গিক।
‘শিকওয়াহ’ শব্দের শাব্দিক অর্থ অভিযোগ। কবিতাটিতে ইকবাল বা সমকালীন মুসলমানদের পক্ষ থেকে আল্লাহর দরবারে অভিযোগনামা পেশ করা হয়েছে। একদিকে মুসলমানরা নিজেদের চিন্তা-আদর্শকে সর্বশ্রেষ্ঠ বলে বিশ্বাস করে, আবার অন্যদিকে পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদের অব্যাহত চাপে মুসলিম সভ্যতার ক্রমবর্ধমান পরাজয়ে মুসলমানদের মধ্যে কাজ করে সংশয় ও অবিশ্বাস — এখান থেকেই আল্লাহর দরবারে ইকবালের শেকায়েতের পদক্ষেপ।
ইকবালের ভাষায় ‘ক্ষতিই কেন সইবো বল ? লাভের আশা রাখবো না ? / অতীত নিয়ে থাকবো বসে — ভবিষ্যৎ কি ভাববো না?’ ইকবাল তার কবিতার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বলেছেন, আদতে সব সচেতন মুসলমানের মনেই বিপর্যয় নিয়ে আক্ষেপ, সন্দেহ ও অবিশ্বাস কাজ করে, ‘কেন আমাদের এই বিপর্যয়?’ , তবে তারা এই আক্ষেপ ও অবিশ্বাস চেপে রাখে। আমি এই কবিতায় তাদের পক্ষ থেকে তিক্ত বাস্তবতা তুলে ধরেছি।
কবিতাটি মুসাদ্দাস ধারায় লিখিত। এই ধারাটি উর্দু কবিতায় বিশেষভাবে চর্চিত, মাওলানা হালীর বিখ্যাত মুসাদ্দাসও এই ধারায় লিখিত। মুসাদ্দাস ধারায় প্রতি বন্দ বা শাখায় ছয়টি করে পংক্তি থাকে। ‘শিকওয়াহ’ কবিতাটিতে এমন মোট একত্রিশটি বন্দ বা শাখা আছে। এভাবে কবিতাটিতে মোট একশো ছিয়াশি লাইন বা পংক্তি আছে। প্রায় দুইশ লাইনের কবিতাটিতে ইকবাল পেশ করেছেন তার অভিযোগনামা। পরবর্তীতে ইকবাল নিজেই এই অভিযোগের উত্তর লেখেন। তবে আমরা এই লেখায় সে কবিতার আলোচনা করবো না।
‘খাকাম বদহন হায় মুঝকো’ : ‘শিকওয়াহ’ এর মৌলিক বিষয়বস্তু
শুরুতেই দুই বন্দের মধ্যে ইকবাল অভিযোগনামা পেশের কারণ বর্ণনা করেছেন। ইকবালের ভাষায় মুসলমানরা বিপর্যয়ের এমন চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে গেছে যে, এখন চুপ থাকলে কেবল ব্যক্তিসমষ্টির ক্ষতিই নয়, চুপ থাকাকে এখন বলা যেতে পারে জাতিগত গাদ্দারি। যদিও এভাবে আক্ষেপ-অভিযোগ প্রকাশকে বাহ্যিকভাবে অভদ্রতা-অবাধ্যতা বলে মনে হতে পারে, তবে সামগ্রিক বিপর্যয়ের প্রেক্ষিতে এর কোন বিকল্প নেই।
বস্তুত ইসলামে আল্লাহর সাথে বান্দার বিশেষ সম্পর্ক আছে। এই সম্পর্ক শাসক-শোষিতের সম্পর্ক নয়, দাস-মনিবের সম্পর্কের সাথেও এর তুলনা হতে পারে না, দায়িত্বহীন নেতা বা অমনোযোগী বন্ধুও এই সম্পর্কের সাথে তুলনীয় নয়। মুমিনের সাথে আল্লাহর সম্পর্কের মানে রবের সাথে তার বান্দার মে’রাজ। সম্পর্কের গভীরতা ও প্রেক্ষাপটের বৈচিত্র্য বিবেচনায় এই মে’রাজের ভাষা ও আবেদন বিভিন্ন হতে পারে।
পরবর্তী এগারো বন্দের মধ্যে ইকবাল তার মূল অভিযোগের ভিত্তি পেশ করেছেন। এখানে কবি মানব ইতিহাসে মুসলমানদের ভূমিকা ও গুরুত্বের কথা তুলে ধরেছেন। ইকবালের ভাষায়, এই ধরাতেই ছিল প্রাচীন সভ্য জাতি ইউনানী, / ইহুদী-নাসারারা – জানি মোরা- তাও জানি / কিন্তু বল, তোমার তরে তেগ-তলোয়ার ধরল কে? / বিগড়ে যাওয়া তোমার বিধান কায়েম আবার করলো কে?’
মুসলমানরা কায়েম করেছে সামাজিক সাম্য ও ইনসাফ, ‘ মামুদ-আয়াজ দাঁড়িয়ে যেত এককাতারে একসাথে/ তফাৎ কিছুই থাকত নাক’ মনিব এবং বান্দাতে’। এত কিছুর পরেও মুসলমান জাতির কেন এই বিপর্যয়, কেন এই ভাগ্যবিড়ম্বনা? ‘তবু মোরা নই ওফাদার— এ কী কথা আজ কহ? / মোরা যদি নই ওফাদার, — তুমিও তো দিলদার নহ ! ইকবালের আক্ষেপ তাহলে আরও গভীরে, তার অভিযোগ ও প্রশ্ন , মুসলমানদের বিপর্যয় সমাধানে ধর্মের কি আসলেই কোন ভূমিকা আছে?
পরবর্তী সাত বন্দের মধ্যে ইকবাল মুসলমানদের বর্তমান বিপর্যয়ের চিত্র তুলে ধরেছেন। পৃথিবীতে এখন অধিকাংশ ক্ষেত্রে অমুসলিমদের আধিপত্য, মুসলমানরা নিয়মিতভাবে পরাজিত ও নির্যাতিত হচ্ছে। অপরাধ তো অন্যরাও করছে, তবু তাওহীদ ও রেসালতের ধারক-বাহকদের কেন এই বিপর্যয়, ‘ হাজারও লোক আছে— যারা তোমার নামে হয় বেজার!/ তবু দেখি তাদের প্রতি তোমার আশিস নিরন্তর / বাজ পড়িতে পড়ে শুধু মুসলমানের মাথার ‘পর!
ইকবালের আক্ষেপ, ‘ কাফেররা আজ হাসছে বসে, তোমার কি নেই লজ্জাবোধ? তোমার সাধের তৌহিদ হায় হচ্ছে যে আজ তামাম-শোদ !‘। কবি যোগ করেন, ‘কিন্তু একী ! কাফেররা পায় এই ধরাতেই হুর-কসুর, / মুসলমানের বেলায় শুধু ওয়াদা হুরের— স্বর্গপুর”। … ব্যাপারটা কী, এখন কেন দাওনা মোদের তেমন দান?… আজও আছে সেই উম্মত— সেই তুমি আর সেই রসূল / তবু কেন এই অভিশাপ ! বুঝি নাক’ এর মানে— খামাখা দিচ্ছ কেন ব্যথা তোমার প্রেমিকদের প্রাণে?‘
পরবর্তী এগারো বন্দের মধ্যে ইকবাল নানা রুপক ও ইশারায় আক্ষেপ ও অভিযোগ পেশ করেছেন। এখানে ইকবালের কণ্ঠ হয়েছে আরও গভীর ও আবেগে উচ্ছ্বসিত। ‘আরব-দেশের শরাব আমার, পান-পিয়ালা ভিন দেশের / হিন্দের গান হলই বা এ ! হেজাজ পাকের সুর তো এর !’ শেষ বন্দে কবির আহ্বান, ‘ আমার হিয়ার ক্রন্দনে আজ দীর্ণ হোক সবার দিল…
‘কাশ গুলিস্তাঁ মে সমঝতা কোঈ ফরইয়াদ ইস কী’
আল্লামা ইকবাল শিকওয়াহ কবিতায় বাহ্যত আল্লাহর প্রতি অভিযোগ পেশ করলেও মূলত এর প্রার্থিত শ্রোতা মুসলমানরাই। কেননা আল্লাহ পৃথিবীতে মুসলমানদেরকে খলিফা বানিয়ে পাঠিয়েছেন। কোরআন ও সুনানে প্রয়োজনীয় বিধান ও ব্যাখ্যা বয়ান করেছেন। ইকবালের অভিযোগের লক্ষ্য তাই আল্লাহর দরবার নয়—আল্লাহর কাছে প্রার্থনার কৌশলে ইকবাল আসলে মুসলমানদের তিরস্কার করছেন।
ইস গুলিস্তাঁ মে মাগার দেখনেঅলে হী নেহি / দাগ জো সীনে মে রাখতা হু, ও লালে হী নেহি…
The post ‘শিকওয়াহ’ : ইকবালের চোখে মুসলমানদের ভাগ্যবিপর্যয় appeared first on Fateh24.
source https://fateh24.com/%e0%a6%b6%e0%a6%bf%e0%a6%95%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be%e0%a6%b9-%e0%a6%87%e0%a6%95%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%b2%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%9a%e0%a7%8b%e0%a6%96%e0%a7%87-%e0%a6%ae%e0%a7%81%e0%a6%b8/
No comments:
Post a Comment