ফাতেহ ডেস্ক:
এক বছর থেমে থেকে পদ্মা আবার আগ্রাসী রূপ ধারণ করেছে। পদ্মার ক্ষুধার্ত স্রোতের গ্রাসে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চারটি মসজিদ, একটি নুরানি মাদ্রাসাসহ শরীয়তপুরের জাজিরা ও নড়িয়া উপজেলার ৪৯৮টি বসতবাড়ি বিলীন হয়ে গেছে।
বুধবার দুপুর ২টার দিকে জেলার নড়িয়া উপজেলার চরআত্রা ইউনিয়নে ৮১ নম্বর বসাকেরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি একতলা ভবন বিলীন হয়ে গেছে পদ্মাগর্ভে। ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে বিদ্যালয়ের অপর দ্বিতল ভবনটিও।
বসাকেরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর হোসেন ও স্থানীয় চিকিৎসক তৌহিদুল ইসলাম জানান, উজানের পানি নামতে শুরু করার পর থেকেই পদ্মাবেষ্টিত জাজিরা ও নড়িয়া উপজেলার নদী তীরবর্তী এলাকায় ভাঙন দেখা দেয়। পদ্মার দুর্গম চরাঞ্চলের শিশুদের প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে ১৯৪২ সালে নড়িয়া উপজেলার চরআত্রা ইউনিয়নের ৮১ নম্বর বসাকেরচর স্কুলটি প্রতিষ্ঠিত হয়। বিলীন হওয়া ভবনটি ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ৩২ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছিল। বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ভবনটিও নদীগর্ভে বিলীন হলে অনিশ্চিত হয়ে পড়বে ৩৭৫ কোমলমতি শিশুর শিক্ষাজীবন।
এদিকে, স্রোতের তোড়ে আজ চরআত্রা ইউনিয়নের বসাকের চরের ৫০টি বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে বলে জানায় স্থানীয় লোকজন।
জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশরাফ উজ্জামান ভুইয়া বলেন, ‘পদ্মার প্রবল স্রোতে এ পর্যন্ত জাজিরা উপজেলার কুণ্ডেরচর, বড়কান্দি ও পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়নের ৪০৩টি বসতবাড়িসহ অনেক ফসলি জমি বিলীন হয়ে গেছে। এরই মধ্যে ভাঙন কবলিতদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে এবং এ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।’
নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জয়ন্তী রুপা রায় বলেন, ‘পদ্মার প্রবল স্রোতে আজ চরআত্রা ইউনিয়নের বসাকেরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একতলা একটি পাকা ভবন পদ্মাগর্ভে বিলীন হয়েছে। ৩০ গজ দূরত্বে থাকা অন্য দ্বিতল ভবনটিও রয়েছে ভাঙন ঝুঁকিতে। এ ছাড়া আজ বসাকেরচরের ৫০টি বসতবাড়ি নদীগর্ভে চলে গেছে। এর আগে আরো ৪৫টি বসতবাড়ি পদ্মায় বিলীন হয়েছে। ভাঙন কবলিতদের তালিকা প্রস্তুত করে তাদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।’
জেলা প্রশাসক কাজী আবু তাহের বলেন, ‘পদ্মার স্রোত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে স্কুল ভবনটি রক্ষায় জিওব্যাগ ডাম্পিং করেছি। কিন্তু শেষ রক্ষা করতে পারিনি। তবে ঝুঁকির বিষয়টি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরকে জানানো ছিল। বর্ষা মৌসুম চলে যাওয়ার পর ওইসব শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা চালু রাখার জন্য এরই মধ্যে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে নির্দেশ ও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ভাঙনকবলিত পরিবারগুলোর তালিকা প্রস্তুত কাজ চলছে। তাদের ঘর নির্মাণের জন্য ঢেউটিন ও নগদ টাকা দেওয়ার বিষয়টিও প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’
The post পদ্মায় বিলীন বিদ্যালয়-মসজিদসহ ৪৯৮ বসতবাড়ি appeared first on Fateh24.
source https://fateh24.com/%e0%a6%aa%e0%a6%a6%e0%a7%8d%e0%a6%ae%e0%a6%be%e0%a7%9f-%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%b2%e0%a7%80%e0%a6%a8-%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%a6%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%b2%e0%a7%9f-%e0%a6%ae%e0%a6%b8/
No comments:
Post a Comment