Thursday, September 24, 2020

৩৮০টি আটককেন্দ্রের সন্ধান, উইঘুরদের বাধ্য করা হচ্ছে শ্রমে

ফাতেহ ডেস্ক:

উত্তর পশ্চিমাঞ্চলীয় জিনজিয়ান প্রদেশে চীন পরিচালিত আটক কেন্দ্রগুলো, ধারণার চেয়ে অনেক বড় এবং সেগুলোকে অব্যাহতভাবে প্রসারিত করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) অস্ট্রেলিয়াভিত্তিক একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান এ তথ্য জানিয়েছে।

যদি বেইজিং আটক কেন্দ্রগুলোকে সংখ্যালঘু উইঘুর সম্প্রদায়ের জন্য পুনর্শিক্ষণ কার্যক্রম কেন্দ্র বলে দাবি করছে। তাদের এ দাবিকে মিথ্যচার আখ্যা দিয়েছে নিন্দা জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়।

অস্ট্রেলিয়ান স্ট্র্যাটেজিক পলিসি ইনস্টিটিউট (এএসপিআই) জানিয়েছে, তারা ৩৮০টি’র বেশি সন্দেহজনক আটককেন্দ্র চিহ্নিত করেছে। জাতিসংঘ জানিয়েছে, সেগুলোতে ১০ লাখের বেশি মানুষকে আটকে রাখা হয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তাদের আটক করা হয়। যাদের অধিকাংশ মুসলিম উইঘুর এবং তুর্কিভাষী বাসিন্দা।

চীন বলছে, শিবিরগুলো পেশাগত দক্ষতা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং উগ্রবাদের হুমকির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রচেষ্টার প্রয়োজনীয় অংশ। আটক কেন্দ্রের সংখ্যা আগের হিসেবের চেয়ে ৪০ শতাংশ বেশি বলে অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা হয়।

চীনা কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে অংশ গ্রহণকারীরা ২০১৯ সালের শেষের দিকে পেশাগত দক্ষতা অর্জন শেষে স্নাতক ডিগ্রি পেয়েছে। প্রধান গবেষক নাথান রুশার বলেন, গবেষণায় পাওয়া তথ্য প্রমাণের সঙ্গে বেইজিংয়ের দাবি সাংঘর্ষিক। গবেষণা বলছে, বিচারবহির্ভুতভাবে আটক অনেক বন্দিকে এখন চীনা সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে বন্দি করেছে। তাদেরকে আরো কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টিত আটক কেন্দ্রে স্থানান্তর করেছে।

গবেষকরা, স্যাটেলাইটে পাওয়া ছবি, ভুক্তভোগীদের সাক্ষাতকার, গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন এবং আটক কেন্দ্র নির্মাণে দাফতরিক টেন্ডারের নথিপত্র বিশ্লেষণ করে আটক কেন্দ্রের সংখ্যা নির্ধারণ করেছে। আটককেন্দ্রগুলোতে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা যেমন- সুউচ্চ দেয়াল, পর্যবেক্ষণ টাওয়ার এবং ভেতরে কাঁটাতারের দেয়া ছিল।

৬১টি আটক কেন্দ্রে নতুন নির্মাণ এবং সম্প্রসারণ করা হয়েছে। ২০২০ সালের জুলাইয়ে মধ্যে এ কাজ সম্পন্ন করা হয়। ১৪টির বেশি আটক কেন্দ্র এখনো নির্মাণাধীন।

৭০টি আটক কেন্দ্রের মূল কাঁটা তারের বেড়া বা দেয়াল সরিয়ে ফেলা হয়েছে। সেগুলো অন্য কোনো কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে বা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এএসপিআই জানায়, ৯০ শতাংশ আটক কেন্দ্রের সুরক্ষা অত্যন্ত নিম্নমানের।

জিনজিয়ান ডাটা প্রজেক্টের তথ্যে, আটক কেন্দ্রের বিস্তারিত ছাড়াও ওই অঞ্চলের মসজিদসহ সাংস্কৃতিক স্থাপনার বিস্তারিত তথ্য ছিল। রুশার বলেন, অনেক আটক কেন্দ্রে সম্প্রসারিত করা হয়েছে। সেগুলো শিল্প এলাকার পাশে স্থাপিত। আটক যাদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করা হয়েছে তাদের অত্যাধিক নিরাপত্তা বেষ্টিত শিল্প কারখানাগুলোতে জোরপূর্বক শ্রমে বাধ্য করা হচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

পদ্ধতিগতভাবে জোরপূর্ব শ্রমে বাধ্য করার অভিযোগে জিনজিয়ান থেকে সম্প্রতি পণ্য আমদানি বন্ধের পক্ষে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মার্কিন রাজনৈতিকরা।

সম্প্রতি বেইজিং একটি সাফাইপত্র প্রকাশ করেছে। যেখানে জিনজিয়ানে তাদের ন্যাক্কারজনক কর্মকাণ্ডের পক্ষে গুণকীর্তন করা হয়েছে। বলা হয়, সেখানে বিভিন্ন মেয়াদে প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে অংশ নিয়ে, উন্নত শিক্ষা অর্জন করে সুন্দর জীবনের পথ খুঁজে পেয়েছে অনেকে।

বৃহস্পতিবার চীনা রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম গ্লোবাল টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, অস্ট্রেলিয়ার দু’জন স্কলার ক্লাইভ হ্যামিল্টন এবং অ্যালেক্স জোসকে চীন প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে বেইজিং।

হ্যামিল্টন ক্যানবেরার চার্লস স্টুয়ার্ট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক। অ্যালেক্স জোসকে এএসপিআই-এর গবেষক। বিশ্বে কমিউনিস্ট পার্টির প্রভাব এবং চীনা সামরিক বিশেষজ্ঞ তিনি।

জোসকে চীনে বড় হয়েছেন। এক বিবৃতিতে তিনি জানিয়েছেন, অতিমাত্রায় ঝুঁকির কারণে গেলো কয়েক বছর ধরে তিনি চীনা ভিসার জন্য আবেদনই করেননি। বলেন, চীনা কমিউনিস্ট পার্টির কর্মকাণ্ড যারা তুলে ধরছেন, নতুন এ নিষেধাজ্ঞা তাদের জন্য শাস্তি স্বরূপ।

গ্লোবাল টাইমস তাদের প্রতিবেদনে নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়ে কোনো সূত্রের উদ্ধৃতি দেয়নি। এ ধরনের পদক্ষেপের কোনোর কারণও তারা বিস্তারিত বলেনি।

চলতি মাসের শুরুতে বিদেশি হস্তক্ষেপে যুক্ত থাকায় দু‘জন চীনা শিক্ষাবিদের ভিসা বাতিল করে অস্ট্রেলিয়া।

The post ৩৮০টি আটককেন্দ্রের সন্ধান, উইঘুরদের বাধ্য করা হচ্ছে শ্রমে appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a7%a9%e0%a7%ae%e0%a7%a6%e0%a6%9f%e0%a6%bf-%e0%a6%86%e0%a6%9f%e0%a6%95%e0%a6%95%e0%a7%87%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%a6%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%b8%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%a7%e0%a6%be/

No comments:

Post a Comment