Saturday, November 20, 2021

রেডিওলজি বিভাগের দেড় কোটি টাকার ৩টি মেশিন রাতারাতি উধাও!

ফাতেহ ডেস্ক:

রাজধানীর স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রেডিওলজি অ্যান্ড ইমেজিং বিভাগের জন্য কেনা প্রায় দেড় কোটি টাকার তিনটি আলট্রাসাউন্ড মেশিন উধাও হয়ে গেছে। ২০১৩ ও ২০১৪ সালে কেনা এসব অত্যাধুনিক মেশিনগুলোর মেয়াদ ২০২৩ ও ২০২৪ সাল পর্যন্ত থাকলেও মাত্র তিন বছর ব্যবহার করার পর প্রথমে মেশিনগুলোকে দীর্ঘ সময় অলস ফেলে রাখা হয়। পরে সেগুলো গোডাউনে পাঠানো হয়। পরে গোডাউন থেকে সেগুলো উধাও হয়ে যায়।

জানা গেছে, হাসপাতালের রেডিওলজি অ্যান্ড ইমেজিং ডিপার্টমেন্টের জন্য ২০১৩ সালে স্থানীয় ওয়ার্সী সার্জিক্যাল নামক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ৪১ লাখ ৬০ হাজার টাকায় একটি জি হেলথ কেয়ার ইউএস কোম্পানির আল্ট্রাসাউন্ড মেশিন ক্রয় করা হয় (মডেল নম্বর লজিক পি৫)। এরপর ২০১৪ সালে একই কোম্পানির আরেকটি মেশিন ৪২ লাখ টাকায় ক্রয় করা হয়। এটি হাসপাতালের স্টক লেজার পৃষ্ঠা নম্বর ৪৭-তে লিপিবদ্ধ রয়েছে। একই বছর আরেকটি মেশিন জিটুজি পদ্ধতিতে চায়নার কাছ থেকে অনুদান হিসাবে আসে (মডেল নম্বর জন কেয়ার কিউ ৩ উহান, চায়না)। এটিও হাসপাতালের স্টক লেজারের ৬৯ নম্বর পৃষ্ঠায় লিপিবদ্ধ রয়েছে। এই মেশিনটির দামও ৪৫ লাখ টাকা বলে জানান বিশেষজ্ঞরা। সাধারণত প্রতিটি মেশিনের লাইফটাইম ধরা হয় ১০ বছর। কিন্তু মেশিনগুলো ৩ বছর ব্যবহারের পরই সুপরিকল্পিতভাবে মেশিনগুলো কারণ ছাড়াই ফেলে রাখা হয়। শেষ পর্যন্ত ২০২০ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি মেশিনগুলো গোডাউনে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। মেশিনগুলো প্রধান সহকারী আব্দুর রহিম ভুঁইয়া রিসিভ করেন। এরপর মেশিনগুলো রাতের আঁধারে উধাও হয়ে যায়।

গণমাধ্যমের বিভিন্ন প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, নিয়মানুযায়ী কোনো মেশিন কন্ডেম বা পরিত্যক্ত ঘোষণা করতে ন্যাশনাল ইলেক্ট্রো মেডিক্যাল ইকুইপমেন্ট ওয়ার্কশপের (নিমিউ) বিইআর অনুমোদনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তবে মেশিনগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সারিয়ে তোলার অযোগ্য হলেই তা কন্ডেম করতে হয়। এছাড়া উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করে কনডেম ঘোষণার বিধান রয়েছে। বর্ণিত মেশিন ৩টির ক্ষেত্রে কোনো কিছুই মানা হয়নি।

মেশিনগুলো পাওয়া যাচ্ছে না শুনে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. রাশেদ উন নবী। তিনি জানান, কমিটির প্রতিবেদন পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সূত্রের বরাতে দেশের একটি প্রথম সারির দৈনিক লিখেছে, মেশিনগুলো হাসপাতালে আসার পর থেকেই এগুলো আত্মসাতের জন্য তৎপর হয়ে ওঠে একটি চক্র। চক্রটি সুকৌশলে অকেজো মালামালের সঙ্গে এগুলো রেখে দেওয়ার টার্গেট নিয়ে বারবার কন্ডেম ঘোষণা করার জন্য নিমিউ বরাবর চিঠি লেখে। নিমিউর প্রকৌলশীরা প্রতিবারই মেশিনগুলো পরীক্ষা করে মেশিনগুলো ভালো আছে এবং এগুলো ব্যবহার করার জন্য তাগিদ দেয়। কিন্তু চক্রটি তা কর্ণপাত না করে সুকৌশলে পরিত্যক্ত মালামালের গোডাউনে রেখে দেয়। আইন অনুযায়ী কন্ডেম ঘোষণার আগ পর্যন্ত পরিত্যক্ত কোনো মেশিন গোডাউনে রাখা অবৈধ। তারপরও রহস্যজনক কারণে ওই মূল্যবান মেশিনগুলো পরিত্যক্ত মালামালের সঙ্গে রেখে দেওয়া হয়। একটি সূত্র বলছে, চক্রটি মেশিনগুলো ৫০ লাখ টাকায় বিক্রি করে টাকা ভাগবাটোয়ারা করে নিয়েছে।

The post রেডিওলজি বিভাগের দেড় কোটি টাকার ৩টি মেশিন রাতারাতি উধাও! appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%b0%e0%a7%87%e0%a6%a1%e0%a6%bf%e0%a6%93%e0%a6%b2%e0%a6%9c%e0%a6%bf-%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%ad%e0%a6%be%e0%a6%97%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%a6%e0%a7%87%e0%a7%9c-%e0%a6%95%e0%a7%8b%e0%a6%9f/

No comments:

Post a Comment