Wednesday, October 28, 2020

ফেসবুক থেকে পদত্যাগে বাধ্য হলেন মুসলিমবিরোধী দাঙ্গায় উস্কানিদাতা আঁখি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

ফেসবুকের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক পাবলিক পলিসি হেড আঁখি দাস আর স্বপদে বহাল থাকতে পারলেন না। পদত্যাগ করতে হলো তাকে। মার্কিন প্রবাবশালী গণমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে উঠে আসে তার মুসলিমবিরোধী দাঙ্গায় উস্কানি এবং নির্বাচনের সময় বিজেপিকে ‘অনৈতিক’ সহায়তা দেয়াসহ নানা কাণ্ড। এরপরই শুরু হয় ফেসবুককে নিয়ে বিতর্ক।

বুধবার (২৮ অক্টোবর) আঁখি দাস পদত্যাগ করেছেন বলে খবর প্রকাশ করে ভারতের স্থানীয় গণমাধ্যম। আঁখি তৃণমূল বিধায়ক তথা প্রাক্তন মন্ত্রী রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়ের পুত্রবধূ। এর আগে তৃণমূলের প্রতি তার পক্ষপাতের অভিযোগ তুলেছিল সিপিএম।

দিল্লিতে মুসলিমবিরোধী দাঙ্গায় উস্কানিতে ফেসবুককে ব্যবহার করে বিজেবি। সে সময় নানা ভুয়া খবর প্রকাশ করে রাজনৈতিক দলটি। ফেসবুকের কর্মীরা এসব খবর আঁখির নজরে আনলেও তিনি তা এড়িয়ে যান এবং সরাতে নিষেধ করেন। যার ফলে দাঙ্গা তীব্র আকার ধারণ করে বলে দাবি করে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল।

আঁখি দাস ছিলেন ফেসবুকের দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম প্রধান কর্মকর্তা। নয় বছর এই সংস্থার সঙ্গে ছিলেন তিনি। বিশাল বাজার তৈরি করেছেন ফেসবুকের। ২০১১ আর ২০২০ এর মাঝে কয়েক গুণ বেড়েছে এখানে ফেসবুক ব্যবহারকারী। কেবল ভারতেই প্রায় ৩০ কোটি মানুষ ফেসবুক ব্যবহার করে। একই সঙ্গে বিস্তর বিতর্কেরও জন্ম দিয়েছিলেন তিনি। বিশেষ করে ভারতে জাতিগতঘৃণা ছড়াতে বিজেপিসহ অনেক শক্তিকে সহায়তা করেছেন বলে তার বিরুদ্ধে অনেকগুলো অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ হতে থাকে। এর মাঝে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনগুলো ছিল নিখুঁত অনুসন্ধানের ফল।

এসব প্রতিবেদন থেকে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিলো, দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিকে ফেসবুক প্রভাবিত করেছে এবং তাতে আঁখি দাসের নির্ধারক ভূমিকা ছিল। বিশেষ করে গত ২-৩ বছর, যখন তিনি টিমটির নীতিনির্ধারক হন। তিনি ফেসবুক থেকে ঘৃণাপূর্ণ অনেক মন্তব্য সরাতে বাধা দিতেন বলেও অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে।

আঁখি ফেসবুকের ভারত, দক্ষিণ এবং মধ্য এশিয়ার নীতিনির্ধারক দলের প্রধান থাকায় তিনি এ ক্ষমতা পেয়েছেন। এসবে লাভবান হয়েছে সরাসরি বিজেপি। আর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ছাড়াও অনেক সাধারণ সংখ্যালঘু।

অনুসন্ধানী প্রতিবেদনগুলোতে ঘটনাবলী ফাঁস হওয়ার পর ফেসবুক কোন সদুত্তর দিতে পারছিল না। ভারতে এসব তদন্তে নেমেছে সংসদীয় একটা কমিটি। যার নেতৃত্বে রয়েছেন শশী থারুর। ওখানকার অনেক মানবাধিকার কর্মীও এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হন। ফল হিসেবে শেষপর্যন্ত আঁখি দাসকে যেতে হয়।

বিজেপির সুপারিশেই আঁখি দাস ২০১১ সালে ফেসবুকে চাকরি পান। তিনি অধীনস্ত কর্মীদের বলেন, যদি বিজেপি’র (ক্ষমতাসীন) কারো বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয় তাহলে ফেসবুকের ব্যবসায় বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটবে। কারণ এখানে সংস্থাটির সবচেয়ে বেশি ব্যবহারকারী রয়েছে। ফেসবুক বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে বর্তমান সময়ে ব্যবহারকারীদের বিভিন্ন পোস্টের কারণে। ভারতে হিন্দু জাতীয়তাবাদীদের দ্বারা বিভিন্ন সময় প্রতিষ্ঠানটির ভায়োলেন্স রুলস ভঙ্গ হচ্ছে। কিন্তু রাজনৈতিক কারণে এ বিষয়ে বিজেপিকে ছাড় দিচ্ছে ফেসবুক।

The post ফেসবুক থেকে পদত্যাগে বাধ্য হলেন মুসলিমবিরোধী দাঙ্গায় উস্কানিদাতা আঁখি appeared first on Fateh24.



source https://fateh24.com/%e0%a6%ab%e0%a7%87%e0%a6%b8%e0%a6%ac%e0%a7%81%e0%a6%95-%e0%a6%a5%e0%a7%87%e0%a6%95%e0%a7%87-%e0%a6%aa%e0%a6%a6%e0%a6%a4%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%97%e0%a7%87-%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%a7/

No comments:

Post a Comment